অর্থবহ
এটি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে 'অর্থবহ সম্পর্কের' ভিত্তি: পররাষ্ট্র সচিব
পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিন বলেছেন, দেশের আর্থিক খাতের সংস্কার নিয়ে বিস্তৃতভাবে আলোচনা করেছে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র। একই সঙ্গে এই আলোচনাকে অর্থবহ সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ভিত্তি হিসেবে উল্লেখ করেছেন তিনি।
রবিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় একাধিক বৈঠকে কী বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে সে সম্পর্কে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন তিনি।
জসীম উদ্দিন বলেন, ‘আমরা মনে করি এটি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অর্থবহ সম্পর্কের একটি ভিত্তি। আমরা ভবিষ্যতে বিভিন্ন স্তরে এই আলোচনাকে এগিয়ে নিয়ে যাব। এগিয়ে যাওয়ার জন্য এটি একটি ভালো ভিত্তি।’
আরও পড়ুন: ১৫ মিনিটের মধ্যে পরিবারকে বিদায় জানিয়ে বিজিবি সদস্যদের মৃত্যুকে আলিঙ্গন করতে বলেছিল হামলাকারীরা: বিটিভিতে হামলা প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র সচিব
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, তারা আর্থিক খাতের সংস্কার নিয়ে বিস্তৃতভাবে আলোচনা করেছেন এবং প্রাথমিকভাবে অর্থ পাচারের বিষয়টি নিয়েও আলোচনা করেছেন। কারণ বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রে মার্কিন দক্ষতা ব্যবহার করতে পারে।
তিনি বলেন, ‘সবে শুরু হয়েছে আলোচনা। চূড়ান্ত রূপ পেতে কিছুটা সময় লাগতে পারে।’ মার্কিন পক্ষ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার ইচ্ছা পুনর্ব্যক্ত করেছে।
বাংলাদেশ আর্থিক খাতে সংস্কারের জন্য কিছু খাত চিহ্নিত করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এসব খাতে তাদের সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
'আলোচনা অব্যাহত থাকবে' উল্লেখ করে জসীম বলেন, বাংলাদেশ মার্কিন প্রতিনিধি দলকে শ্রম ক্ষেত্রে গৃহীত পদক্ষেপের বিষয়ে জানিয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্র উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হিসেবে দেখছে।
সফররত মার্কিন প্রতিনিধি দলটি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস, পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এবং অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে বৈঠক করে। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করেন পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিন।
ভারত সম্পর্কিত কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করার জন্য আলাদা প্ল্যাটফর্ম রয়েছে। ‘তাই এ ধরনের কোনো বিষয় এখানে আলোচিত হয়নি।’
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসের বৈঠকের সম্ভাবনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে গেলে কোনো দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন না।
তিনি বলেন, সেখানে দেখা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যদি তাদের সময়সূচি মিলে যায় তবে তারা একে অপরের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ হতে পারে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের ২৭তম পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিন
বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্টের আন্তর্জাতিক অর্থবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রেন্ট নেইমান, যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু, এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ, প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিকবিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিন বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের দেখা ভেঠকের পর যুক্তরাষ্ট্রে পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করে খুব ভালো লাগছে। আমরা আমাদের অংশীদার বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক সুযোগ সম্প্রসারণ, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা তৈরি, মানবাধিকার সমুন্নত রাখা এবং জলবায়ু ঝুঁকি প্রশমনে সহায়তা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
মার্কিন প্রতিনিধি দলটি অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেছে। তারা বাংলাদেশের নতুন গতিশীলতা ও প্রবৃদ্ধির পথে সমর্থন করে বলে জানায়।
অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের পর ঢাকার মার্কিন দূতাবাস বলেছে, ‘আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে সম্পৃক্ততাসহ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষের প্রচেষ্টাকে কেন্দ্র করে শীর্ষ অর্থনৈতিক নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে আমাদের সম্পৃক্ততা।’
গত ৮ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর বাংলাদেশে এটাই প্রথম যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দল।
যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও উন্নয়ন প্রয়োজনে সহায়তা করতে পারে তা নিয়ে আলোচনা করেন যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের কর্মকর্তারা।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, দুই দেশের মধ্যে শ্রম সংস্কার, বাণিজ্য সহজীকরণ, রোহিঙ্গা সংকট এবং জিএসপি সুবিধা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
আরও পড়ুন: পররাষ্ট্র সচিবের নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনা করবেন খুরশেদ আলম: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
১ মাস আগে
সবার জীবনকে অর্থবহ করতে চাই: প্রধানমন্ত্রী
জনগণকে তার সরকারের প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস রাখার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি দেশের প্রতিটি নাগরিকের জীবনকে অর্থবহ করতে চাই।’
তিনি বলেন, ‘আমি প্রত্যেকের জীবনকে অর্থবহ করতে চাই এবং এইভাবে আমার বাবার অসমাপ্ত কাজগুলো সম্পূর্ণ করে তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে চাই।’
বৃহস্পতিবার বহুল প্রত্যাশিত সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করার সময় তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে একটি ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে পেনশন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন।
অংশগ্রহণকারী ও সুবিধাভোগীরা তিনটি জেলা-গোপালগঞ্জ, বাগেরহাট এবং রংপুর এবং সৌদি আরবের জেদ্দায় বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে যুক্ত ছিলেন।
দেশের ১৮ বছরের বেশি বয়সী সকল নাগরিককে পেনশন সুবিধার আওতায় আনার লক্ষ্যে সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করা হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ে বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশে পরিণত করেছিলেন এবং বঙ্গবন্ধুর পদাঙ্ক অনুসরণ করে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের উন্নয়ন মডেল অন্যদের অনুপ্রাণিত করতে পারে: বিশ্বব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক
তিনি বলেন, ইনশাআল্লাহ বাংলাদেশ উন্নয়নশীল থেকে উন্নত দেশে রূপান্তরিত হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণের আস্থা, বিশ্বাস ও ভালোবাসা তার শক্তির উৎস। ‘সুতরাং, এই বিশ্বাস এবং আস্থা রাখুন। আমি আপনার কাছ থেকে এটা চাই।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে অনেক আঘাতের সম্মুখীন হতে হয়েছে -- কোভিড-১৯ মহামারি, ইউক্রেন যুদ্ধের আঘাত, অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞা এবং বিশ্বব্যাপী উচ্চ মূল্যস্ফীতি, সেইসঙ্গে অগ্নিসংযোগ সহিংসতা।
তিনি বলেন, যেহেতু জনগণ আমাদের সঙ্গে আছে, তাই প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মহামারি এবং মানবসৃষ্ট দুর্যোগ সবকিছু মোকাবিলা করে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
সর্বজনীন পেনশন প্রকল্পকে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক কর্মসূচি হিসেবে বর্ণনা করে তিনি বলেন, তার সরকার এমনকি তৃণমূল ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষকে তাদের উন্নয়ন পরিকল্পনার আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সর্বজনীন পেনশন স্কিম উদ্বোধনের দিনটি সত্যিই বাংলাদেশের জন্য একটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ দিন। তিনি বলেন, দিনটি বাংলাদেশের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
অংশগ্রহণকারী নাগরিকদের জন্য আজীবন পেনশন সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য সর্বজনীন পেনশন প্রকল্পের অধীনে মোট ছয়টি পরিকল্পিত প্যাকেজের মধ্যে প্রগতি, সুরক্ষা, সমতা এবং প্রবাসী নামে চারটি প্যাকেজ প্রাথমিকভাবে চালু করা হলো।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত করতে নির্বাচন নিয়ে আগ্রহ দেখাচ্ছে বিদেশি শক্তি: প্রধানমন্ত্রী
প্রগতি প্যাকেজ বেসরকারি চাকরিজীবীদের অন্তর্ভুক্ত করবে, অন্যদিকে সুরক্ষা স্ব-কর্মসংস্থান ব্যক্তিদের জন্য, নিম্ন আয়ের লোকদের জন্য সমতা এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য প্রবাসী প্যাকেজ গঠন করা হয়েছে। আর বাকি দুটি প্যাকেজ পরে চালু করা হবে।
১৮ বছরের বেশি বয়সী যেকোনো নাগরিক ৬০ বছর বয়সে না পৌঁছানো পর্যন্ত কিস্তি পরিশোধ করে অবসর জীবনের সময় পেনশন সুবিধা পেতে সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অংশগ্রহণ করতে পারেন।
৫০ বছরেরও বেশি বয়সী একজন ব্যক্তি এই স্কিমে যোগ দিতে পারেন তবে ব্যক্তিকে একটানা ১০ বছর ধরে কিস্তি দিতে হবে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এম তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন এবং স্বাগত বক্তব্য দেন অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন।
অনুষ্ঠানে, সর্বজনীন পেনশন স্কিমের উপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়।
আরও পড়ুন: সর্বজনীন পেনশন স্কিম উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
১ বছর আগে