জনগণকে তার সরকারের প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস রাখার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি দেশের প্রতিটি নাগরিকের জীবনকে অর্থবহ করতে চাই।’
তিনি বলেন, ‘আমি প্রত্যেকের জীবনকে অর্থবহ করতে চাই এবং এইভাবে আমার বাবার অসমাপ্ত কাজগুলো সম্পূর্ণ করে তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে চাই।’
বৃহস্পতিবার বহুল প্রত্যাশিত সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করার সময় তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে একটি ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে পেনশন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন।
অংশগ্রহণকারী ও সুবিধাভোগীরা তিনটি জেলা-গোপালগঞ্জ, বাগেরহাট এবং রংপুর এবং সৌদি আরবের জেদ্দায় বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে যুক্ত ছিলেন।
দেশের ১৮ বছরের বেশি বয়সী সকল নাগরিককে পেনশন সুবিধার আওতায় আনার লক্ষ্যে সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করা হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ে বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশে পরিণত করেছিলেন এবং বঙ্গবন্ধুর পদাঙ্ক অনুসরণ করে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের উন্নয়ন মডেল অন্যদের অনুপ্রাণিত করতে পারে: বিশ্বব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক
তিনি বলেন, ইনশাআল্লাহ বাংলাদেশ উন্নয়নশীল থেকে উন্নত দেশে রূপান্তরিত হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণের আস্থা, বিশ্বাস ও ভালোবাসা তার শক্তির উৎস। ‘সুতরাং, এই বিশ্বাস এবং আস্থা রাখুন। আমি আপনার কাছ থেকে এটা চাই।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে অনেক আঘাতের সম্মুখীন হতে হয়েছে -- কোভিড-১৯ মহামারি, ইউক্রেন যুদ্ধের আঘাত, অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞা এবং বিশ্বব্যাপী উচ্চ মূল্যস্ফীতি, সেইসঙ্গে অগ্নিসংযোগ সহিংসতা।
তিনি বলেন, যেহেতু জনগণ আমাদের সঙ্গে আছে, তাই প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মহামারি এবং মানবসৃষ্ট দুর্যোগ সবকিছু মোকাবিলা করে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
সর্বজনীন পেনশন প্রকল্পকে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক কর্মসূচি হিসেবে বর্ণনা করে তিনি বলেন, তার সরকার এমনকি তৃণমূল ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষকে তাদের উন্নয়ন পরিকল্পনার আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সর্বজনীন পেনশন স্কিম উদ্বোধনের দিনটি সত্যিই বাংলাদেশের জন্য একটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ দিন। তিনি বলেন, দিনটি বাংলাদেশের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
অংশগ্রহণকারী নাগরিকদের জন্য আজীবন পেনশন সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য সর্বজনীন পেনশন প্রকল্পের অধীনে মোট ছয়টি পরিকল্পিত প্যাকেজের মধ্যে প্রগতি, সুরক্ষা, সমতা এবং প্রবাসী নামে চারটি প্যাকেজ প্রাথমিকভাবে চালু করা হলো।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত করতে নির্বাচন নিয়ে আগ্রহ দেখাচ্ছে বিদেশি শক্তি: প্রধানমন্ত্রী
প্রগতি প্যাকেজ বেসরকারি চাকরিজীবীদের অন্তর্ভুক্ত করবে, অন্যদিকে সুরক্ষা স্ব-কর্মসংস্থান ব্যক্তিদের জন্য, নিম্ন আয়ের লোকদের জন্য সমতা এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য প্রবাসী প্যাকেজ গঠন করা হয়েছে। আর বাকি দুটি প্যাকেজ পরে চালু করা হবে।
১৮ বছরের বেশি বয়সী যেকোনো নাগরিক ৬০ বছর বয়সে না পৌঁছানো পর্যন্ত কিস্তি পরিশোধ করে অবসর জীবনের সময় পেনশন সুবিধা পেতে সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অংশগ্রহণ করতে পারেন।
৫০ বছরেরও বেশি বয়সী একজন ব্যক্তি এই স্কিমে যোগ দিতে পারেন তবে ব্যক্তিকে একটানা ১০ বছর ধরে কিস্তি দিতে হবে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এম তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন এবং স্বাগত বক্তব্য দেন অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন।
অনুষ্ঠানে, সর্বজনীন পেনশন স্কিমের উপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়।