বিদ্যুৎবিহীন
ঘূর্ণিঝড় রিমাল: ১ কোটি ৭২ লাখ গ্রাহক এখনো বিদ্যুৎবিহীন
রবিবার ঘূর্ণিঝড় রিমাল আঘাত হানার পর বিদ্যুৎ বিভাগের বিভিন্ন সংস্থার নেওয়া পদক্ষেপের পরও এখনো ১ কোটি ৭২ লাখ গ্রাহক বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৮ মে) বিদ্যুৎ বিভাগের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঝড়ে মোট ৩ কোটি ৩ লাখ গ্রাহক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ১ কোটি ৩১ লাখ গ্রাহকের বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়েছে এবং ১ কোটি ৭২ লাখ গ্রাহক এখনো বিদ্যুৎহীন রয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বুধবার (২৯ মে) সকালের মধ্যে ৩৩ কেভি ও ১১ কেভি লাইন চালু করার মাধ্যমে ৮০ শতাংশ গ্রাহকের বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে এবং মঙ্গলবার রাতের মধ্যে ৬০ শতাংশ গ্রাহক বিদ্যুৎ পাবেন।
আরও পড়ুন: ইতালির ওয়ার্ক ভিসা: মূল পাসপোর্ট জমা ছাড়াই আবেদন করতে পারবেন বাংলাদেশিরা
বাকি ২০ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহককে তাদের সেবা বন্ধ থাকায় অপেক্ষা করতে হবে এবং তাদের মিটার মেরামতের জন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিদ্যুৎ বিভাগ জানিয়েছে, রিমালের ক্ষয়ক্ষতি প্রতিকারে ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী উদ্যোগের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বিআরইবি) তার ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতাধীন এলাকায় এবং পশ্চিমাঞ্চল বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি (ডব্লিউজেডপিডিসি) নিজস্ব কার্যক্রম পরিচালনা করা এলাকায় সরেজমিন তদারকির মাধ্যমে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
ক্ষয়ক্ষতির বিবরণ দিয়ে বিদ্যুৎ বিভাগ জানায়, ৩৩টি কেভি ফিডারের মধ্যে মোট ৭৬৬টি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার মধ্যে ৪৫৫টি মেরামত ও ৩১১টি এখনো মেরামত করা হয়নি। এছাড়া ৩৩/১১ কেভির ১ হাজার ১০৫টি উপকেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৬৫৪টি মেরামত করা হয়েছে এবং ৪৫১টি এখনো মেরামত করা হয়নি।
১১টি কেভি ফিডারের মধ্যে মোট ৬ হাজার ২৩৫টি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার মধ্যে ২ হাজার ৩৮৪টি মেরামত করা হয়েছে এবং বাকি ৩ হাজার ৮৫১টি মেরামত বাকি রয়েছে। মোট ৩ হাজার ৮৩৩টি বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে পড়েছে, ২ হাজার ৫৬৭টি পুনস্থাপন করা হয়েছে এবং বাকি ১ হাজার ২৬৬টি এখনো পুনস্থাপন করা হয়নি। ২ হাজার ৮১৮টি বিতরণ ট্রান্সফরমার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যার মধ্যে ১ হাজার ৬৯৬টি সচল করা হয়েছে এবং বাকি ১ হাজা ১২২টি এখনো সচল করা হয়নি।
প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে ১০৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকার বিদ্যুৎ অবকাঠামোর ক্ষতি হয়েছে।
বিআরইবির ঠিকাদারসহ ৩০ হাজারের বেশি জনবল মাঠে কাজ করছে।
ডব্লিউজেডপিডিসির মোট গ্রাহক ১৫ লাখ ৪৮ হাজার, যার মধ্যে ১৪ লাখ ৩ হাজার গ্রাহককে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করা হয়েছে এবং ১ লাখ ৪৪ হাজার গ্রাহককে এখনো বিদ্যুৎ পুনরায় সরবরাহ শুরু করা হয়নি। আর রিমালে ডব্লিউজেডপিডিসির ৫ কোটি ৭ লাখ টাকার অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন: বেনজীর ও তার পরিবারের সদস্যদের বিও হিসাব জব্দ করেছে বিএসইসি
১৩-২০ গ্রেডের সরকারি কর্মকর্তা নিয়োগ পদ্ধতি পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত শিগগিরই: মন্ত্রী
৬ মাস আগে
ঘূর্ণিঝড় রিমাল: ২ দিন ধরে বিদ্যুৎবিহীন মেহেরপুরের অনেক মানুষ
ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে দুই দিন ধরে বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছেন মেহেরপুরের অসংখ্য মানুষ। এরসঙ্গে মোবাইল ফোনে নেই চার্জ, তার সঙ্গে আছে নেটওয়ার্ক সমস্যাও।
রবিবার (২৬ মে) সন্ধ্যায় শুরু হওয়া ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবের পর থেকেই বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন জেলার বাসিন্দারা।
আরও পড়ুন: ঢাকা থেকে লঞ্চ চলাচল পুনরায় শুরু
সোমবার(২৭ মে) দিবাগত রাতে মেহেরপুর জেলা শহর ও গাংনী পৌরসভাবাসী সামান্য বিদ্যুৎ পেলেও এখন পর্যন্ত গ্রামগুলো রয়েছে অন্ধকারে।
নওপাড়া গ্রামের আসাদুজ্জামান ও রহমত আলী বলেন, দুই দিন যাবৎ বিদ্যুৎ নেই। চার্জের অভাবে মোবাইল ফোনগুলোও বন্ধ হয়ে গেছে। অনেকের বাড়িতে পানি নেই। বাড়ির টিউবওয়েলগুলো অকেজো। বিদ্যুৎচালিত মোটরের উপর পানির সরবরাহ নির্ভর করে। দুইদিন বিদ্যুৎ না থাকায় অকেজো হয়ে গেছে জনজীবন।
মেহেরপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির গাংনী জোনাল অফিসের এজিএম কম সবুজ মোল্ল্যাহ বলেন, রিমালের প্রভাবে এখন পর্যন্ত বিদ্যুতের একটি খুটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া লাইনের ওপর প্রচুর পরিমাণ গাছের ডালপালা ভেঙ্গে পড়েছে। যে কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে। গাছের ডালপালা সরানোর পর লাইন দিতে পারব। সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি পুনসংযোগ দিতে।
গাংনী উপজেলার গাঁড়াডোব গ্রামের পোল্টি খামারি মিজানুর রহমান জানান, রবিবার রাত থেকে বিদ্যুৎ নেই। খামারের মুরগির বাচ্চা নিয়ে বিপদে পড়ে গেলাম। দ্রুত বিদ্যুৎ না পেলে বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হবো।
মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক (ডিডি) কৃষিবিদ বিজয় কুমার হালদার বলেন, রিমালের প্রভাবে জেলায় ৪৫ হেক্টর জমির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে গত দুই দিনের বৃষ্টিপাত কৃষকদের জন্য আশির্বাদ হয়েছে। মাঠের অন্যান্য ফসল বিশেষ করে পাটের ব্যাপক উপকার হয়েছে।
মেহেরপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার স্বদেশ কুমারের মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় রিমাল: পটুয়াখালীতে মাছের ঘের, পুকুরসহ ৭৬০টি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত
ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডব: শরীয়তপুরে বিদ্যুৎহীন সাড়ে ৩ লাখ মানুষ
৬ মাস আগে
কুড়িগ্রামে এক মাস ধরে বিদ্যুৎবিহীন ৮ হাজার গ্রাহক
কুড়িগ্রামের নারায়ণপুর ও যাত্রাপুর ইউনিয়নে প্রায় এক মাস ধরে বিদ্যুৎবিহীন আছেন পল্লী বিদ্যুতের আট হাজার গ্রাহক।
সংযোগ থাকলেও বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, সাংসারিক কাজকর্ম ও শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা বিঘ্নিত হচ্ছে। এসব মানুষের বাড়িতে কুপিই (বাতি) এখন শেষ ভরসা।
কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির তথ্য অনুযায়ী, নাগেশ্বরীর মাদারগঞ্জ এলাকা থেকে চরাঞ্চলের দিকে স্থাপিত সাবমেরিন ক্যাবলে ত্রুটি দেখা দিয়েছে। এতে নাগেশ্বরী উপজেলার নারায়ণপুর এবং সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়নের বেশ কিছু চরাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। ক্যাবলে ত্রুটি চিহ্নিত করার কাজ চলছে। তবে নদীর পানি বাড়তে থাকায় মেরামতকাজ বিঘ্নিত হচ্ছে।
বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হতে আরও সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন অফিস।
আরও পড়ুন: তীব্র গরম ও লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ নারায়ণগঞ্জের জনজীবন
নারায়ণপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. আব্দুল মালেক বলেন, গত এক মাস ধরে আমাদের এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। বিদ্যুৎ না থাকায় আমরা খুবই ভোগান্তিতে পড়ছি। দোকানপাটে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারছি না। সন্তানদের লেখাপড়ায় খুবই সমস্যা হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. নুর ইসলাম বলেন, বিদ্যুতের কারণে সেচপাম্প বন্ধ। ধানখেতে পানি দিতে শ্যালো মেশিন সেট করছে অনেকে। এ ছাড়া, একটি মোবাইল চার্জ দিতে যেতে হয় সোলারের দোকান কিংবা জেনারেটরে। এসব জায়গায় মোবাইল চার্জ দিতে ২০-৩০ টাকা লাগে।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি, কুড়িগ্রামের জেনারেল ম্যানেজার মো. মহিতুল ইসলাম বলেন, সাবমেরিন ভূগর্ভস্থ লাইনে ত্রুটি থাকার কারণে এমন পরিস্থিতি হয়েছে। আমরা ত্রুটি শনাক্তের চেষ্টা করছি। নদীতে পানি বাড়ার কারণে কাজ দুদিন বন্ধ ছিল। আমারা আশা করছি পরশু থেকে আবারও কাজ শুরু হবে।
আরও পড়ুন: দেশজুড়ে তীব্র লোডশেডিংয়ে চরম দুর্ভোগে সাধারণ মানুষ
বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে যাওয়ায় আবারও বাড়ছে লোডশেডিং
১ বছর আগে