দ্বিপক্ষীয় সফর
প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর: ৭ ফেব্রুয়ারি দিল্লি যাচ্ছেন হাছান মাহমুদ
দুই দেশের সম্পর্ক আরও জোরদার করতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর করছেন ভারতে। আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি দেশটির রাজধানী নয়াদিল্লির উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন,‘এটি তিন দিনের সফর হতে পারে।’সফরের আলোচ্যসূচি এখনও চূড়ান্ত হয়নি বলেও জানান তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্করের আমন্ত্রণে তিনি এ সফর করবেন।
সফরকালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক করবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'এখনই কিছুই ঠিক হয়নি। এ বিষয়ে কিছু বলা যাবে না।’
এর আগে উভয়ের সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদকে নয়াদিল্লি সফরের আমন্ত্রণ জানান জয়শঙ্কর।
সোমবার ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পক্ষে এই আমন্ত্রণ জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা। সে সময় আমন্ত্রণ গ্রহণ করে শিগগিরই দিল্লি সফর করবেন বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনই রোহিঙ্গা সমস্যার একমাত্র সমাধান: ইইউ রাষ্ট্রদূতকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী
গতকাল রাতে উগান্ডায় বহুপক্ষীয় সফরে যাওয়ার কথা ছিল মাহমুদের। ঘণ্টা দুয়েক পর তিনি জানতে পারেন, কুয়াশা ও দৃশ্যমানতা কম থাকায় বিমান ছাড়ছে না। ন্যাম সম্মেলনের ফাঁকে আজ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক হওয়ার কথা ছিল।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণের পর ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনারের সঙ্গে বৈঠকটি ছিল হাছান মাহমুদের প্রথম কূটনৈতিক ব্যস্ততা।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ৭ জানুয়ারি বাংলাদেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক এবং সফলভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন হাইকমিশনার।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষক এবং ঢাকা সফররত বিদেশি গণমাধ্যমকর্মীরা নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে গম রপ্তানি করতে চায় রাশিয়া, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্প্রসারণে আলোচনা
১০ মাস আগে
অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরদার করতে রবিবার ঢাকায় আসছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ দ্বিপক্ষীয় সফরে রবিবার সন্ধ্যায় ঢাকায় পৌঁছালে তাকে লাল গালিচায় স্বাগত জানাবে বাংলাদেশ।
নয়াদিল্লিতে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণ শেষে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ঢাকায় আসছেন।
শনিবার এক কর্মকর্তা ইউএনবিকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে জি-২০ সফর শেষে বিকাল সাড়ে ৩টায় দেশে ফেরার কথা রয়েছে এবং সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁকে অভ্যর্থনা জানাবেন।
১৯৯০ সালের ২২ থেকে ২৪ ফেব্রুয়ারি ফ্রান্সের সাবেক প্রেসিডেন্ট মিত্রান্দের বাংলাদেশ সফরের পর ম্যাক্রোঁই প্রথম নেতা যিনি বাংলাদেশ সফর করছেন।
প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ সোমবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে শেখ হাসিনার সঙ্গে একটি শীর্ষ বৈঠক করবেন। এর আগে রবিবার সন্ধ্যায় অতিথির সম্মানে প্রধানমন্ত্রী আয়োজিত ভোজসভায় যোগ দেবেন তিনি।
উভয় নেতা কয়েকটি দ্বিপক্ষীয় চুক্তি সই এবং একটি যৌথ সংবাদ সম্মেলন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
সোমবার সকালে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন ম্যাক্রোঁ।
ঢাকায় ফ্রান্সের দূতাবাস বলেছে, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে বিশেষ করে ফ্রান্সের প্রযুক্তি ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের ওপর ভিত্তি করে ব্যবসা সম্প্রসারণে উভয় পক্ষের ক্রমবর্ধমান আগ্রহ দেখে আমরা রোমাঞ্চিত।’
ফ্রান্সের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর এই সফর দু'দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরদার করতে কিছু প্রকল্প বাস্তবায়নের সুযোগ হবে।
আরও পড়ুন: আলোচনার মাধ্যমে অমীমাংসিত দ্বিপক্ষীয় সমস্যা সমাধানে একমত হাসিনা-মোদি
১৯৯০ সালের শুরু থেকে উভয় দেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্ক অনেক দূর এগিয়েছে।
বাংলাদেশ ও ফ্রান্সের মধ্যে মোট বাণিজ্য ২১০ মিলিয়ন ইউরো থেকে ৪ দশমিক ৯ বিলিয়ন ইউরোতে উন্নীত হয়েছে এবং ফ্রান্স রপ্তানির ক্ষেত্রে পঞ্চম দেশ।
ফরাসি কোম্পানিগুলো এখন প্রকৌশল, জ্বালানি, মহাকাশ ও পানি খাতসহ বিভিন্ন খাতের সঙ্গে জড়িত।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, বাংলাদেশ ও ফ্রান্স সরকার আন্তরিকভাবে আশা করছে- ফরাসি প্রেসিডেন্টের বাংলাদেশ সফর দু'দেশের মধ্যকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে।
ফরাসি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে থাকবেন ইউরোপ ও পররাষ্ট্রবিষয়ক মন্ত্রী ক্যাথরিন কোলোনা।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর আমন্ত্রণে ২০২১ সালের নভেম্বরে ফ্রান্স সফর করেন শেখ হাসিনা।
ফ্রান্স এই সফরকে দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে গভীর করার সুযোগ হিসেবে দেখছে।
ফরাসি সরকার সোমবার এই সফরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। একই সঙ্গে তারা বলে, বাংলাদেশ এমন একটি দেশ যেটি 'দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করছে এবং অংশীদারিত্বে বৈচিত্র্য আনতে চায়'।
আরও পড়ুন: সিপিএ নিয়ে আলোচনা করতে আগ্রহী শেখ হাসিনা-মোদি
তারা আরও বলেছে, ‘বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশ ও ফ্রান্স দারুণ একতা দেখিয়ে থাকে, বিশেষ করে প্যারিস এজেন্ডা ফর পিপলস অ্যান্ড দ্য প্ল্যানেটের কাঠামোয়। যা বাংলাদেশ সক্রিয়ভাবে সমর্থন করে।’
যেহেতু বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে রয়েছে, তাই প্রেসিডেন্ট মানবিক দিক বিবেচনায়, বিশেষত নিয়মিত বন্যার সম্মুখীন হওয়ায় দেশটির পাশে দাঁড়াতে ফ্রান্সের দৃঢ় সংকল্পের কথা বলবেন।
শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সংহতি কার্যক্রমে বাংলাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ অবদানকারী দেশ।
চলতি গ্রীষ্মে প্যারিসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে স্বাগত জানানো এবং পাপুয়া নিউ গিনি, ভানুয়াতু ও শ্রীলঙ্গা সফরের পর ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে ফরাসি কৌশলের প্রয়োগ বাংলাদেশে অব্যাহত রাখবেন প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, বাংলাদেশ ও ফ্রান্স জলবায়ু পরিবর্তন ও নিয়ন্ত্রিত অভিবাসনের মতো বিষয় নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর উপায় নিয়ে আলোচনা করবে।
বাংলাদেশ ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি উত্থাপন করবে এবং প্রাসঙ্গিক তহবিলকে ব্যাপকভাবে কার্যকর করবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘নারীর ক্ষমতায়ন, ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি এবং নিয়ন্ত্রিত অভিবাসন- এগুলো স্বাভাবিক বিষয়। জলবায়ু পরিবর্তন একটি বড় সমস্যা। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়েছেন।’
ফরাসি প্রেসিডেন্টের সোমবার দুপুর ২টায় ঢাকা ত্যাগের কথা রয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বিমানবন্দরে তাকে বিদায় জানাবেন।
আরও পড়ুন: নয়াদিল্লিতে জি-২০ সম্মেলন: বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
১ বছর আগে