ভুক্তভোগী
বিএনপির বিচার দাবিতে নির্যাতনের শিকার দুই প্রজন্মের ভুক্তভোগীদের মানববন্ধন
১৯৭৭ সালে জিয়াউর রহমানে শাসনামলে অনেক সৈনিককে ঘুম থেকে তুলে নিয়ে বিচার ছাড়াই ফাঁসি দিয়ে হত্যা করা হয়েছিল বলে দাবি করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
বিএনপির শাসনামলে নির্যাতনের কারণে দলের নেতাদের বিচার দাবিতে অনুষ্ঠিত এক মানববন্ধনে এ দাবি করেন তথ্যমন্ত্রী।
১৯৭৫ ও ২০১৩ সাল পরবর্তী সময়ে বিএনপির হাতে নির্যাতন ও হত্যার ঘটনায় দলটির নেতাদের বিচারের দাবি করেছেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা। বুধবার দুপুর ১২টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে এ দাবি জানান তারা।
২০১৪ সালে অগ্নিসন্ত্রাসের শিকার ভুক্তভোগীদের সংগঠন ‘অগ্নি সন্ত্রাসের আর্তনাদ’ ও ১৯৭৭ সালে জিয়ার শাসনামলে বিনাবিচারে গণহত্যার শিকার ভুক্তভোগী পরিবারের সংগঠন 'মায়ের কান্না' এ মানববন্ধন আয়োজন করে।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধু পরিষদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কমিটির কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৭ সালে মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন হয়েছিল। ঘুমন্ত সৈনিকদের তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কোনো বিচার ছাড়াই জেল-ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। এমনকি নামের মিল থাকায় একজনের বদলে আরেকজনকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। আবার এমনও ঘটনা ঘটেছে, বিচারের রায়ের আগেই ফাঁসির দেওয়া হয়েছে।
২০১৩ সালে বিএনপির আন্দোলনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সে সময় নিরাপরাধ সাধারণ মানুষকে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে পোড়ানো হয়েছে। গাড়িতে পেট্রোলবোমা মেরে ট্রাক জ্বালিয়ে দিয়েছে। এই নির্মমতার জন্য দায়ী বিএনপির নেতারা। তাদের বিচার হতে হবে।
২০১৪ সালে বিএনপির আন্দোলন থেকে ছোড়া আগুনে নিহত হন নাহিদ হাসান নামে একজন। তার মা রুনি বেগম বলেন, ‘আমার ছেলে জ্যাকেট কিনতে ঢাকা এসেছিল। শাহবাগে বাসে পেট্রোল বোমা মেরে আগুনে পুড়িয়ে তাকে হত্যা করা হয়। বিএনপি-জামায়াত আমার ছেলেকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে।’
তিনি বলেন, আমি আমার সন্তানকে দেখতেও পারিনি। ছেলে হত্যার বিচার চাই।
২০১৩ সালে রাজশাহীর শালবাগান এলাকায় দায়িত্ব পালন করছিলেন বাংলাদেশ পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বলেন, আমি সেখানে পেশাগত দায়িত্ব পালন করছিলাম। জামায়াত শিবির হরতাল করতে গিয়ে আমার উপর অতর্কিত হামলা চালায়। আমাকে তারা নির্মমভাবে হত্যার চেষ্টা করে। হেলমেট, ইট, পাথর, লাঠি দিয়ে মারে। আমি সরকারের কাছে এই সন্ত্রাসীদের বিচার চাই।
আরও পড়ুন: নির্বাচন নিয়ে উদ্বেগের কোনো কথা বলেনি ইইউ: ওবায়দুল কাদের
‘মায়ের কান্না’র আহ্বায়ক কামরুজ্জামান লেলিন বলেন, জিয়াউর রহমান দেশের সামরিক বাহিনীর উপর গণহত্যা চালিয়ে ছিলেন। সৈনিকদের এক কক্ষে বন্দি করে রাখা, উলঙ্গ করে নির্যাতন করার মতো ঘটনা ঘটিয়েছিলেন। সেগুলোর নথিপত্র দেখলে সেই নির্মমতার চিত্র বোঝা যায়। সেই ঘটনার ৪০ বছর পেরিয়ে যাচ্ছে। অথচ এখনও বিচার পাইনি।
তিনি বলেন, এখন অনেকেই মানবাধিকারের কথা বলেন। অথচ আমরা কতটা মানবাধিকার বঞ্চিত সেটির দিকে কারো নজর নেই। আমরা আমাদের স্বজন হারানোর বিচার চাই।
মায়ের কান্না’র সদস্য আলেয়া বেগম বলেন, রাতে আমার স্বামী অফিসে যান। কিন্তু আর ফেরেননি। আমি জিয়াউর রহমানের কাছে যাই। কিন্তু তার গেটের পুলিশ আমাকে লাথি মেরে সরিয়ে দেয়। তিন মাস পর চিঠি দিয়ে জানায় আমার স্বামী জেলে মারা গেছে। তার মরদেহ পাইনি, কবরটাও দেখিনি কোনোদিন। আমার সন্তানরা তাদের বাবার মুখ দেখেনি। আমি আমার স্বামী হত্যার বিচার চাই।
আরও পড়ুন: চিফ হিট অফিসারকে নিয়ে মন্তব্য: ঢাবিতে ফখরুলের কুশপুত্তলিকা দাহ
১ বছর আগে
খুলনায় বিয়ের আশ্বাসে ধর্ষণ, আদালতে অভিযুক্তের সঙ্গে ভুক্তভোগীর বিয়ে
খুলনায় আদালতের এজলাসে বিয়ের আশ্বাসে ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তির সঙ্গে ভুক্তভোগীকে বিয়ে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে।
সোমবার (১৩ মার্চ) দুপুরে খুলনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক আব্দুস ছালাম খান বিয়ের আদেশ দিলে কাজীর মাধ্যমে বিয়ে সম্পন্ন করা হয়।
খুলনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট ফরিদ আহমেদ বলেন, ২০২০ সালে ভুক্তভোগীর সঙ্গে রাজু শেখের পরিচয়ের পর প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। এরপর ভুক্তভোগীর আগের ঘরের ছেলেসহ তাকে নিয়ে ভাড়া বাসায় স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বসবাস করে।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় বিয়ের আশ্বাসে বাড়ি থেকে বেরিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার কিশোরী, গ্রেপ্তার ৫
এসময় বিয়ের আশ্বাসে ধর্ষণ করায় ভুক্তভোগী অন্তঃস্বত্ত্বা হয়ে পড়ে। অভিযুক্ত রাজু তাকে সন্তান নষ্ট করতে বলে এবং এরপর থেকে ভুক্তভোগীর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। পরে ভুক্তভোগী জানতে পারে ২০২১ সালের ১৬ জুন রাজু অন্য মেয়েকে বিয়ে করেছে। ভুক্তভোগী রাজুকে ফোন দিলে রিসিভ করতো না। একবার শুধু ফোন রিসিভ করে তার গর্ভের সন্তান নষ্ট করে ফেলতে বলে।
এরপর ২০২১ সালের ২০ জুন ভুক্তভোগী লবণচরা থানায় মামলা করে।
সেই মামলায় আজ বিচারক ভুক্তভোগীর সঙ্গে রাজুর বিয়ের আদেশ দেন এবং কাজীর মাধ্যমে বিয়ে সম্পন্ন করা হয়।
আরও পড়ুন: বিয়ের আশ্বাসে রোগীকে ধর্ষণের অভিযোগে চিকিৎসক গ্রেপ্তার
১ বছর আগে
ভুক্তভোগী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে কাজ করছে পুলিশের সাইবার টিম
ভুল নম্বরে চলে যাওয়া টাকা ও প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়া অর্থ ফিরিয়ে দেয়া এবং চুরি বা হারিয়ে যাওয়া মোবাইল ফোন উদ্ধারসহ বিভিন্ন সেবামূলক কাজ করছে খুলনা সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল।
তথ্যপ্রযুক্তির যথোপযুক্ত ব্যবহারের মাধ্যমে এবং নিজেদের ঐকান্তিক চেষ্টায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে উদ্ধার করে ভুক্তভোগী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে কাজ করছে পুলিশের এই টিম।
খুলনা সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল সূত্রে জানা গেছে, গত ২২ মে খুলনা জেলার বটিয়াঘাটা থানা এলাকার তাজমুল হক একটি নম্বরে বিকাশে ১০ হাজার টাকা ক্যাশ ইন করতে গিয়ে একটি ডিজিট ভুল করলে ওই টাকা অন্য নম্বরে চলে যায়। তার এলাকার বিট পুলিশিংয়ের দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যের মাধ্যমে তিনি জানতে পারেন যে খুলনা জেলার সাইবার সেল এ বিষয়ে কাজ করে ভুক্তভোগী লোকজনকে সহায়তা করে থাকে। তখন তিনি বিষয়টি নিয়ে বটিয়াঘাটা থানায় একটি জিডি করেন।
আরও পড়ুন: গরমে ঠাকুরগাঁওয়ে কদর বেড়েছে তালশাঁসের
একই রকম ঘটনায় মো. শরিফুল ইসলামের সাত হাজার টাকা ভুল নম্বরে চলে যাওয়ার বিষয়ে তিনি ফুলতলা থানায় ২১ মে একটি জিডি করেন। সাইবার টিমের চেষ্টা ও তথ্যপ্রযুক্তির যথোপযুক্ত ব্যবহারের মাধ্যমে বটিয়াঘাটা ও ফুলতলা থানার সহায়তায় তাজমুল ও শরিফুলের মোট ১৭ হাজার টাকা উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। তারা উদ্ধার হওয়া টাকা পেয়ে উচ্ছ্বসিত হন এবং পুলিশের এই কাজের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।
পুলিশের খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, খুলনা রেঞ্জের আওতাধীন খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, যশোর, ঝিনাইদহ, মাগুরা, নড়াইল, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর এই ১০ জেলায় সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল কাজ করছে। ১০টি ইউনিটে দক্ষতার সঙ্গে কাজ করছেন ৯৪ জন সদস্য। ২০২১ সালের ৪ নভেম্বর থেকে সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল চালু হয়।
খুলনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) সুশান্ত সরকার জানান, খুলনা সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল উদ্বোধনের পর থেকে গত ৩১ মে পর্যন্ত মোট প্রাপ্ত অভিযোগ বা জিডির সংখ্যা ৪৭৩টি। এর মধ্যে ২৭৯টি নিষ্পত্তির সংখ্যা। বাকিগুলো প্রক্রিয়াধীন।
তিনি বলেন, খুলনা পুলিশ সুপারের নির্দেশনা অনুযায়ী সাইবার টিম মানুষের সেবা প্রদানে কাজ করে চলেছেন। তাদের অভিযোগ বা জিডি আমলে নিয়ে দৈনন্দিন এসব কাজ করে যাচ্ছে। গত ৬ জুন রূপসা, পাইকগাছা, ডুমুরিয়া ও দিঘলিয়া থানা এলাকা থেকে হারানো ১৩টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করে ভুক্তভোগীদের হস্তান্তর করা হয়েছে। এভাবে প্রতিনিয়ত কাজ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: নিজেদের প্রচেষ্টায় স্বাবলম্বী হচ্ছে শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, সম্প্রতি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ফাহিম রহমান রাফি নামে এক শিক্ষার্থীর মোবাইল ফোন হারিয়ে যায়। তিনি থানায় জিডি করার পর খুলনা সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম অফিসে এসে অভিযোগ দেয়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় তার মোবাইল ফোনটি কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে উদ্ধার করা হয়।
২ বছর আগে
জিআরপি থানায় ধর্ষণ: সেই পুলিশ পরিদর্শক কারাগারে
খুলনার আলোচিত ধর্ষণ মামলার আসামি ও সাবেক রেলওয়ে পুলিশ পরিদর্শক উছমান গনি পাঠানকে কারাগারে প্রেরণ করেছেন আদালত। রবিবার উপস্থিত হয়ে জামিনের আবেদন করলে মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মাহমুদা খাতুন তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই আদালতের বেঞ্চ সহকারী আবুল কালাম আজাদ।
আদালত সূত্র ও মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, ভুক্তভোগী ২০১৯ সালের ৮ আগস্ট বৃহস্পতিবার যশোরে ভাইয়ের বাড়িতে বেড়াতে যান। পরের দিন যশোর থেকে ট্রেনে করে খুলনার উদ্দেশে রওনা দেন। ট্রেনে ওঠার পর টয়লেট থেকে বের হওয়ার পর একজন নারী পুলিশসহ আরও দুজন পুলিশ তাকে কোন কিছু না বলে আটক করে। ওই সময় উপস্থিত নারী পুলিশ তাকে চড় মারে। এতে তার বাম চোখ কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
দুপুরের দিকে ট্রেন খুলনায় পৌঁছালে তাকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়। এ সময় ভুক্তভোগী ওই নারীর সাথে কন্যা সন্তান ছিল। রাতে পুলিশ পরিদর্শক উছমান গনি থানায় আসলে আটক হওয়া নারী বলেন, আমার কাছে পুলিশ কোন কিছু পায়নি তবে কেন আমাকে আটক রাখা হয়েছে। হাজত থেকে বের করে তাকে অফিস রুমে নেয়া হয়। তখন পুলিশ কর্মকর্তা অন্যান্য পুলিশ সদস্যকে বাইরে রেখে দরজা বন্ধ করে দিতে বলে।
এ সময় পুলিশ কর্মকর্তা তার শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিতে থাকে এবং এক সময়ে তাকে ফ্লোরে ফেলে দেয়। পরে চিৎকার করলে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।
রাত ১টার দিকে আবারও থানায় আসেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা। রেলওয়ে থানার এক ডিউটি অফিসার রাতে চোখ বেধে তাকে ওসির রুমে দিয়ে আসেন। চোখের বাধন খোলার পর ওই নারীকে ধর্ষণ করেন খুলনা জিআরপি থানা পুলিশ পরিদর্শক উছমান গনি পাঠান। পরে মামলা না করার হুমকি দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয় তাকে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী খুলনা রেলওয়ে থানার পুলিশ পরিদর্শকসহ আরও কয়েকজন পুলিশ সদস্যের নামে রেলওয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন।
পরে ২০২০ সালের ১৬ জানুয়ারি উছমান গনির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল ককরে পুলিশ। তবে অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তারা এ ঘটনার সাথে জড়িত নয় বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়। বর্তমানে মামলাটি আদালতে বিচারাধীন।
পড়ুন: চট্টগ্রামে বাসের সঙ্গে পুলিশভ্যানের ধাক্কা, ১৩ শিল্প পুলিশ আহত
চট্টগ্রামে সড়ক দুর্ঘটনায় পুলিশের এএসআই নিহত
২ বছর আগে
কারাগারেই ভুক্তভোগীকে বিয়ে করলেন ধর্ষণ মামলার আসামি
ধর্ষণ মামলায় খুলনা জেলা কারাগারে থাকা এক আসামির সঙ্গে সেফ হোমে থাকা হাজতির বিয়ে দিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ। রবিবার দুপুর আড়াইটার দিকে কারাবন্দি রায়পাড়ার রফিকুল ইসলাম বাবুর সঙ্গে একই এলাকার সুখমনির বিয়ে হয়।
খুলনা কারাগারের ডেপুটি জেলার মো. ফখরউদ্দিন বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশনায় উভয়ের বিয়ের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। এ সময় বর-কনের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
পড়ুন: বিয়ের দাবিতে সেনা সদস্যের বাড়িতে প্রেমিকার অবস্থান
কারাগার সূত্রে জানা যায়, সুপ্রিম কোর্ট অব বাংলাদেশ, হাইকোর্ট বিভাগের ক্রিমিনাল মিস কেস নং-৬৯৯৯/২০২২-এর নির্দেশনা মোতাবেক ভুক্তভোগী সুখমনি এবং হাজতি বন্দি মো. রফিকুল ইসলাম বাবু কারাগারে থাকা অবস্থায় বিয়ের কাজ সম্পন্নের নির্দেশনার প্রেক্ষিতে রবিবার (১০ এপ্রিল) দুপুর আড়াইটার দিকে কারাগারের অফিস কক্ষে খুলনা জেলা বিবাহ রেজিস্ট্রারের উপস্থিতিতে তাদের বিবাহ কার্য সম্পন্ন করা হয়।
খুলনা কারাগারের সুপার মো. ওমর ফারুক জানান, হাইকোর্টের নির্দেশনায় এ বিয়ে সম্পন্ন হয়। আসামি খুলনার কারাগারেই ছিল। সুখমনিও কারাগারের হাজতি। তবে সে নিরাপত্তা হেফাজতের হওয়ায় তাকে বাগেরহাট সেফ হোমে রাখা হয়েছিল। বিয়ের জন্য দুই দিন আগে সুখমনিকে এখানে আনা হয়।
তিনি জানান, হাইকোর্টের অনুমতি ও দুই পক্ষের অভিভাবকদের উপস্থিতিতে বিয়ে সম্পন্ন হয়।
ওই কিশোরীর বাল্যবিয়ের বিষয়ে বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা খুলনার সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট মো. মোমিনুল হক বলেন, ‘বাল্যবিয়ে নিরোধ আইনের ১৯ ধারা অনুযায়ী আদালতের অনুমতি ও উভয়ের অভিভাবকদের সম্মতিতে বিশেষ ব্যবস্থায় এ ধরনের বিয়ে দেয়া যায়।’
তিনি বলেন, ‘ছেলেটি ছিল ওই বাড়ির কেয়ারটেকার। আর মেয়েটিকে ওই বাড়িতে কাজ করতো। ঘটনার সময় মেয়ে দুই মাসের অন্তঃসত্তা ছিল। এ কারণে মেয়েটির অনাগত সন্তানের জীবন রক্ষায় নিরাপত্তা হেফাজতে রাখার আবেদন জানালে আদালত তা আমলে নেন। এ কারণে মেয়েটি বাগেরহাট সেফ হোমে ছিল।’
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ১৪ ডিসেম্বর খুলনা থানার মামলায় হাজতি বন্দি মো. রফিকুল ইসলাম বাবু ওই বছরের ১৭ ডিসেম্বর থেকে খুলনা জেলা কারাগারে অন্তরীণ ছিলেন।
পড়ুন: পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীর সঙ্গে ছেলের বিয়ে, সেই শিক্ষিকা সাময়িক বরখাস্ত
২ বছর আগে
কক্সবাজারে ২ ‘অপহরণকারী’ আটক, ভুক্তভোগী উদ্ধার
কক্সবাজারের হোটেল-মোটেল জোন এলাকা থেকে দুজন অপহরণকারীকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ানের (র্যাব) সদস্যরা। এসময় মো. হাবিবুল্লাহ (৫৫) নামে একজন ভুক্তভোগী উদ্ধার করা হয়।
সোমবার সকাল পৌনে ১১টায় র্যাব-১৫ এর সিনিয়র সহাকরী পরিচালক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আবু সালাম চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: নাটোরে তাঁতী লীগের সভাপতি আটক
আটকরা হলেন, মহেশখালীর শাপলাপুর ইউনিয়নের দিনেশপুর এলাকার মো. নাসিমের ছেলে মো. ইকবাল হাসান (৩২) ও সদরের পাহাড়তলী এলাকার মো. নুরুল হকের ছেলে মো. রাশেদুল হক (৩৪)।
র্যাব জানায়, অভিযোগের ভিত্তিতে রবিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে কক্সবাজার হোটেল-মোটেল জোন এলাকা থেকে র্যাবের একটি দল একজন ভুক্তভোগীকে উদ্ধারসহ অপহরণকারী চক্রের দুই সদস্যকে আটক করা হয়। এ সময় তাদের কয়েকজন সহযোগী পালিয়ে যায়।
আরও পড়ুন: সিলেটে ২ নেপালি নাগরিক আটক
আটকদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে যে, তারা ১৪ নভেম্বর মাগরিবের নামাজের পর ভুক্তভোগীকে অপহরণ করে সুগন্ধা বিচ পয়েন্ট সংলগ্ন হোটেল-মোটেল জোনে আটকে রেখে তার পরিবারের কাছে মুক্তিপণ হিসেবে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করে, অন্যথায় তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।
আটকদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য কক্সবাজার সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছে র্যাব।
৩ বছর আগে
৯৯৯ এ কল: শিশু ধর্ষণের অভিযোগে চাচাতো ভাই আটক
জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ রবিবার বিকালে এক বাবার ফোন কলে তার শিশু কন্যাকে ধর্ষণের অভিযোগে ভুক্তভোগীর চাচাতো ভাইকে আটক করেছে দিনাজপুরের কোতোয়ালী থানার পুলিশ।
আটক রাব্বিকুল ইসলাম নয়ন (২০) দিনাজপুরের বড়াইপুরের মো. রশিদুল ইসলামের ছেলে ও উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণির শিক্ষার্থী। সম্পর্কে ভুক্তভোগীর চাচাতো ভাই ।
আরও পড়ুন: ৯৯৯ এ কল : শিশু ধর্ষণের অভিযোগে চাচাতো ভাই আটক
একজন কলার দিনাজপুরের কোতোয়ালী থানা বড়াইপুর থেকে ফোন করে জানান, ৯ বছর বয়সী দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী তার শিশুকন্যা এক নিকটাত্মীয় কর্তৃক যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে। কলার ৯৯৯ এর কাছে জরুরিভাবে আইনি সহায়তা দেয়ার জন্য অনুরোধ জানান।
৯৯৯ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি কোতোয়ালী থানায় জানিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। সংবাদ পেয়ে কোতোয়ালী থানা পুলিশের একটি দল দ্রুত ঘটনাস্থলে যায়। ৯৯৯ পুলিশ ডিসপাচার সহকারী উপ পরিদর্শক (এ এস আই) আল মামুন সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ এবং কলারের সাথে যোগাযোগ করে পুলিশী অভিযানের আপডেট নিতে শুরু করেন।
আরও পড়ুন: ৯৯৯ এ কল: সমুদ্রে বিকল ট্রলার থেকে ১৫ মৎস্যজীবী উদ্ধার
পরে কোতোয়ালী থানার উপ পরিদর্শক (এস আই) মো. জসীম ৯৯৯ কে ফোনে জানান, তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে ভুক্তভোগী শিশুর সাথে কথা বলে ধর্ষণের সত্যতা নিশ্চিত হওয়ার পর অভিযুক্ত রাব্বিকুল ইসলাম নয়নকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।
এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা রুজু করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ৯৯৯ এ কল: ৩০ কেজি ওজনের অজগর উদ্ধার
৩ বছর আগে
চাঁদপুরে ২ বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে কিশোর আটক
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলায় দুই বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে ১৫ বছর বয়সী এক কিশোরকে আটক করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার ভুক্তভোগীর বাবা এ ঘটনায় ফরিদগঞ্জ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়েরের পর অভিযুক্ত কিশোরকে আটক করে আদালতে পাঠায় পুলিশ।
রবিবার উপজেলার গুপ্টি পশ্চিম ইউনিয়নের ষোলদানা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: ‘ধর্ষণে’ ব্যর্থ হয়ে শিশুর হাড় ভেঙে দেয়ার অভিযোগ
শিশুটি বর্তমানে মা বাবার হেফাজতে আছে।
থানায় দায়েরকৃত অভিযোগ থেকে জানা যায়, গুপ্টি পশ্চিম ইউনিয়নের ষোলদানা গ্রামের মাছ ব্যবসায়ীর শিশু কন্যাকে (২ বছর) একই বাড়ির অভিযুক্ত কিশোর নিজ ঘরে নিয়ে ধর্ষণ করে। এসময় শিশুটি চিৎকার দিলে তার মা তাকে খোঁজার এক পর্যায়ে ওই কিশোরের ঘরে গেলে, শিশুটির মাকে দেখে ওই কিশোর ঘর থেকে দৌড়ে পালিয়ে যায়।
আরও পড়ুন: সিলেটে কিশোরী ধর্ষণের অভিযোগে কিশোর গ্রেপ্তার
পরে শিশুটিকে কান্নারত দেখে দ্রুত স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যায় তার পরিবার। অবস্থা গুরুতর দেখে তারা পরদিন চাঁদপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে শিশুটিকে। শিশুটি কিছুটা সুস্থ হলে, হাসপাতাল থেকে ডিউটি ডাক্তার সোমবার রাতে পুলিশকে ব্যাপারটি জানায়।
আরও পড়ুন: প্রেমের ফাঁদে ফেলে প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণ
এ ব্যাপারে ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শহিদ হোসেন ইউএনবিকে জানান, ভুক্তভোগী নিতান্তই শিশু। তাই সর্তকতার সাথে মামলা দায়ের পূর্বক মঙ্গলবার অভিযুক্তকে চাঁদপুর আদালতে পাঠানো হয়েছে।
আদালত অভিযুক্ত কিশোর কোথায় রাখবে তা এখনও নিশ্চিত হয়নি বলেও জানান ওসি।
৩ বছর আগে
আপনজনদের হাতে ইন্টারনেটে যৌন নিপীড়নের শিকার ৬৯ শতাংশ
ইন্টারনেটে একান্ত ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি-ভিডিও ছড়ানোর মাধ্যমে যৌন নিপীড়নে ভুক্তভোগীদের ৬৯ দশমিক ৪৮ শতাংশই আপনজনদের হাতে শিকার হন।
এর মধ্যে ৩৩ দশমিক ৭৭ শতাংশ ক্ষেত্রে ভুক্তভোগী ও অপরাধীর মধ্যে প্রেম ঘটিত সম্পর্কের তথ্য উঠে এসেছে এবং ৩৫ দশমিক ৭১ শতাংশ ঘটনায় অপরাধী ভুক্তভোগীর পূর্বপরিচিত।
প্রযুক্তির নিয়ন্ত্রিত ব্যবহার বিষয়ে দেশের তৃণমূল পর্যায় থেকে সচেতনতামূলক কার্যক্রম জোরদার করা না হলে এই সামাজিক ব্যাধি মারাত্মক আকার ধারণ করবে বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন:ইন্টারনেটে নারীর নিরাপত্তায় পুলিশের নতুন শাখা
রবিবার প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরেছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশন।
‘বাংলাদেশে প্রযুক্তির অপব্যবহারের মাধ্যমে যৌন নিপীড়ন’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন তৈরি করেন সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) চ্যাপ্টারের গবেষণা সেলের সদস্যরা।
দেশের জাতীয় ও আঞ্চলিক পত্রিকাগুলো থেকে সংগৃহীত ২০২০ সালের জানুয়ারি-ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৫৪টি অপরাধের ঘটনা বিশ্লেষণ করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়।
আরও পড়ুন:অশ্লীল ছবি প্রকাশের হুমকি দিয়ে চাঁদা দাবি, মাগুরায় যুবক গ্রেপ্তার
এ উপলক্ষে রবিবার সকাল ১১টায় আয়োজিত ওয়েবিনারে সংগঠনের সভাপতি কাজী মুস্তাফিজের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নূর মোহাম্মদ, ঢাবির অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান খন্দকার ফারজানা রহমান, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক প্রকৌশলী সৈয়দ জাহিদ হোসেন, ঢাকা মহানগর পুলিশের সাইবার নিরাপত্তা ও অপরাধ ইউনিটের সিনিয়র সহকারী কমিশনার সাইদ নাসিরুল্লাহ ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তানজিম আল ইসলাম।
গবেষণা প্রতিবেদনের বিস্তারিত তুলে ধরেন সংগঠনের রিসার্চ সেলের আহ্বায়ক, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিরভার্সিটির সিনিয়র লেকচারার মনিরা নাজমী জাহান।
অধ্যাপক ড. নূর মোহাম্মদ বলেন, এ ধরনের অপরাধ প্রতিরোধে কিশোর বয়স থেকে সন্তানদের মধ্যে যথাযথ প্যারেন্টিং খুব গুরুত্বপূর্ণ। পিতামাতা দুজনেই চাকরিজীবী হলে সন্তানদের মনিটরিং করা কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। তরুণ-তরুণীদের স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ধারাবাহিক যথাযথ সেক্স এডুকেশন খুব প্রয়োজন। একই সাথে ধর্মীয়-সামাজিক শিক্ষা ও সময়ের যথাযথ ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত কাজ দিতে হবে তরুণদের।
খন্দকার ফারজানা রহমান বলেন, অপরাধের মাত্রায় বছরের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পরিস্থিতির কারণে ভিন্নতা দেখা যায়। বর্তমানে কোভিড পরিস্থিতিতে লকডাউনের কারণে অনলাইন কার্যক্রম বেড়েছে। ফলে এ ধরনের অপরাধ করার জন্য সময় বেশি পাচ্ছে। এজন্য অপরাধ প্রতিরোধে বেশি বেশি সচেতনতামূলক কর্মসূচি নেয়া প্রয়োজন।
আরও পড়ুন:নওগাঁয় কলেজছাত্রীর অশ্লীল ছবি ইন্টারনেটে প্রচারের হুমকি, যুবক গ্রেপ্তার
কম্পিউটার নেটওয়ার্ক প্রকৌশলী সৈয়দ জাহিদ হোসেন বলেন, অপরাধের শিকার হওয়ার পর ভুক্তভোগীরা বেশিরভাগই সামাজিক কারণে আপনজনদের সঙ্গে আলোচনা করে না। এটি একদমই উচিত নয়। ঘটনার শুরুতেই কাউকে না জানালে পরবর্তীতে বিষয়টি আরও জটিল হয়ে যায়। এটি সচেতনতার গুরুত্বপূর্ণ অংশ। নিজ নিজ জায়গা থেকে অপরাধ প্রতিরোধে আওয়াজ তুলতে হবে, তাহলে অপরাধের প্রবণতা কমবে।
সৈয়দ নাসিরুল্লাহ বলেন, আইন না জানার কারণে অনেকে অপরাধে জড়িয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে ব্যাপক সচেতনতামূলক কাজ করা প্রয়োজন। কারিগরী জ্ঞান যাদের রয়েছে তাদের অপরাধ করার প্রবণতা বেশি। সাধারণত মধ্যবয়সীরা এর মধ্যে পড়ে। প্রতি থানায় সাইবার ইউনিট করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। এটি হলে অপরাধ আরও নিয়ন্ত্রণ হবে।
তানজিম আল ইসলাম বলেন, বিচারপ্রার্থীদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে পুলিশ, আইনজীবী ও বিচারকদের জন্য সাইবার অপরাধ বিষয়ক পেশাগত দক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণমূলক কর্মসূচি খুব প্রয়োজন। এছাড়া সাইবার অপরাধের বিচার কার্যক্রম কেন দীর্ঘায়িত হচ্ছে এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই নিয়ে গবেষণা হতে পারে।
গবেষণায় গত এক বছরে পুরো দেশব্যাপী এ ধরনের অপরাধপ্রবণতা, অপরাধীর আদ্যোপান্ত, ভুক্তভোগীর অবস্থান ও হয়রানির মাত্রা এবং সামগ্রিক অর্থে সাইবার স্পেসে ব্যক্তির নিরাপত্তার মতো বিষয়গুলো উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সাইবার স্পেসে যৌন নিপীড়নের ক্ষেত্রে ৯২ দশমিক ২০ শতাংশ ভুক্তভোগীই নারী। এর মধ্যে ১৮ থেকে ৩০ বছর বয়স্ক ভুক্তভোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি, যা প্রায় ৫৬.৪৯ শতাংশ এবং ৩২.৪৭ শতাংশ অপ্রাপ্তবয়স্ক (১৮ বছরের নিচে)। জেন্ডারভিত্তিক ভুক্তভোগীর বয়স বিশ্লেষণে দেখা গেছে ১৮ থেকে ৩০ বছর এবং ১৮ বছরের নিচে পুরুষের তুলনায় নারী ভুক্তভোগীর সংখ্যা অনেক বেশি। কিন্তু ৩০ বছরের বেশি বয়স্ক ভুক্তভোগীর ক্ষেত্রে পুরুষের সংখ্যা বেশি।
অঞ্চলভেদে ভুক্তভোগীর সংখ্যা:
সবচেয়ে বেশি যৌন নিপীড়নের সংবাদ পাওয়া গেছে ঢাকা বিভাগে, যার পরিমাণ ৩৩.১২ শতাংশ। এর পরেই ১৬.৮৮ শতাংশ নিয়েই অবস্থান করছে চট্টগ্রাম। এছাড়া জেলা অনুযায়ী যৌন নিপীড়নের অধিকাংশ ঘটনা বিভাগীয় শহরে ঘটছে।
যৌন নিপীড়নের ধরন ও পরিণতি:
ব্যক্তিগত ছবি-ভিডিও প্রচারের ভয় দেখিয়ে যৌন নিপীড়নমূলক অপরাধ প্রবণতার মধ্যে যৌন হয়রানি, ধর্ষণ, আত্মহত্যা, আত্মহত্যার চেষ্টা, যৌনপণ, হত্যা-চেষ্টার মতো ঘটনাগুলোকে পরিসংখ্যানমূলক বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, হয়রানিমূলক যৌন নিপীড়নের সংখ্যা শতকরা ৬২ দশমিক ৯৯ শতাংশ, যা সর্বাপেক্ষা বেশি। অন্যদিকে ধর্ষণের শিকার ভুক্তভোগীর সংখ্যা শতকরা ১৫ দশমিক ৫৮ শতাংশ, যৌনপণ ১৩.৬৪ শতাংশ, আত্মহত্যা ৩.২৫ শতাংশ, আত্মহত্যার চেষ্টা ১.৯৫ শতাংশ, খুনের চেষ্টা ০.৬৫ শতাংশ এবং অন্যান্য ১.৯৫ শতাংশ ।
সাইবার স্পেসে যৌন নিপীড়নমূলক কর্মকাণ্ড ছড়িয়ে দেয়ার মাধ্যম:
সাইবার স্পেসে যৌন নিপীড়নমূলক কর্মকাণ্ড (ছবি ও ভিডিও) ছড়িয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে এবং ভুক্তভোগীকে নিষ্ক্রিয় কিংবা হয়রানিমূলক পরিস্থিতিতে ফেলতে নিপীড়নকারী গোপনে, চাপ প্রয়োগ করে কিংবা প্রতারণা-প্রলোভনের আশ্রয় নিয়ে বিভিন্ন আপত্তিকর বিকৃত কন্টেন্ট সংগ্রহ করতে যে মাধ্যমগুলো হাতিয়ার হিসেবে ব্যাবহার করে তার বিশ্লেষণমূলক পরিসংখ্যান তুলে ধরলে দেখা যায় যে ভিডিও এবং স্থির চিত্র আকারে ধারনকৃত কন্টেন্টের সংখ্যা যথাক্রমে ৫১.৯১ শতাংশ এবং ৩৫.৫২ শতাংশ, যা অন্যান্য মাধ্যমের বিবেচনায় তুলনামূলক সর্বাধিক।
যৌন নিপীড়নমূলক কন্টেন্টগুলোর মধ্যে ৩৫.৭১ শতাংশ প্রকাশ্যে সাইবার স্পেসে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে, বিশেষ করে বিভিন্ন প্রকার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে । ৪০.৯১ শতাংশক্ষেত্রে যৌন নিপীড়নকারী কন্টেন্ট ব্যক্তিগতভাবে ভুক্তভোগীকে দেখিয়ে তার উদ্দেশ্য হাসিলের চেষ্টা করেছে। এ ক্ষেত্রে পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে সর্বাধিক সংখ্যক কন্টেন্ট সংগ্রহ করা হচ্ছে। এর জন্য নিপীড়নকারী আশ্রয় নিচ্ছে বিভিন্ন প্রকারের কূট কৌশল ও প্রতারণার।
ভুক্তভোগী এবং অপরাধীর মধ্যে সম্পর্ক:
ভুক্তভোগী এবং অপরাধীর মধ্যেকার বিদ্যমান সম্পর্ক বিবেচনায় নিলে দেখা যাচ্ছে যে, ৩৫.৭১ শতাংশ ক্ষেত্রে অপরাধী ভুক্তভোগীর পূর্বপরিচিত। এছাড়া প্রায় ৩৩.৭৭ শতাংশ ক্ষেত্রে ভুক্তভোগী এবং অপরাধীর মধ্যে প্রেম ঘটিত সম্পর্ক বিদ্যমান ছিল। অন্যদিকে অপরিচিত নিপীড়নকারীর দ্বারা আক্রান্ত ভুক্তভোগীর সংখ্যা শতকরা ১৪.২৯ শতাংশ।
যৌন নিপীড়নের কারণ:
যৌন নিপীড়নের ক্ষেত্রে মূল উদ্দেশ্য হিসেবে যৌন সম্পর্ক স্থাপনকে অন্যতম মুখ্য কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে গবেষণা প্রতিবেদনে, যা ৬৩.০৭ শতাংশ ঘটনায় পাওয়া গেছে। পাশাপাশি কারণ হিসেবে প্রতিশোধমূলক প্রবৃত্তি ৬.২৫ শতাংশ ক্ষেত্রে, অর্থ-সম্পদ হাতিয়ে নেয়ার প্রবণতা ২৩.৮৬ শতাংশ ক্ষেত্রে।
এছাড়াও চাকরির বদলি সংক্রান্ত তদবির, খামখেয়ালিপনা এবং অন্যান্য বিবিধ কারণগুলো প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে যথাক্রমে ০.৫৭, ০.৫৭ এবং ৫.৬৮ শতাংশ ক্ষেত্রে ।
প্রযুক্তির অপব্যবহার নিয়ন্ত্রণে সুপারিশ:
প্রযুক্তির অপব্যবহার নিয়ন্ত্রণে উন্নত দেশগুলোর আদলে নারী ও শিশুদের ইন্টারনেট ব্যবহার সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ণ ও সচেতনতা তৈরিসহ ১১টি সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে গবেষণা প্রতিবেদনে। অন্যান্য সুপারিশের মধ্যে রয়েছে গণমাধ্যমে ব্যাপক সচেতনতামূলক প্রচার, প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা, যথাযথ প্রক্রিয়ায় সেক্স-এডুকেশন বৃদ্ধি, ধর্মীয় অনুশাসন ও ধর্মীয় শিক্ষা নিশ্চিত করা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে প্রশিক্ষিত জনবল বৃদ্ধি, ভুক্তভোগী ও আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার মধ্যে যথাযথ সমন্বয় নিশ্চিত করা, বেকারত্ব দূরীকরণ ও অপরাধপ্রবণ বয়সসীমা নির্ধারণের মাধ্যমে তরুণদের দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তর করা, পর্ণোগ্রাফিক আগ্রাসন ও অপসংস্কৃতির আগ্রাসন বন্ধে দেশীয় সুস্থ সংস্কৃতির বিকাশ ও পৃষ্ঠপোষকতা, সন্তানদের সাইবার এক্টিভিটির ওপর পিতামাতার নজরদারি।
৩ বছর আগে
নড়াইলে মানব পাচারের অভিযোগে ২ তরুণ আটক
নড়াইলে মানব পাচারের অভিযোগে দুই তরুণকে আটক করেছে পুলিশ।
রবিবার নড়াইল পুলিশ সুপার কার্যালয়ে পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায় এক সংবাদ সম্মেলনে তথ্য জানান।
আরও পড়ুন: ‘মানব পাচারকারী চক্রের’ ৩ সদস্য গ্রেপ্তার, ৩ রোহিঙ্গা উদ্ধার
এ সময় জেলা পুলিশের পদস্থ কর্মকর্তারা, ভুক্তভোগী ও আটকরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ছাদে ফুলের টবে গাঁজা চাষ: ১৯০টি চারাসহ আটক ১
জানা গেছে, জেলার কালিয়া উপজেলার খড়রিয়া গ্রামের রাজ্জাক মোল্যার ছেলে জসীম মোল্যা (১৬) ও প্রতিবেশী এনামুল শেখ (২০) একই গ্রামের ভ্যান চালক জালাল শেখের কন্যা মালিনা (১২) ও প্রতিবেশী অন্তরা আক্তার টুকটুকিকে(১৩) বিয়ে ও ভালো কাজের প্রলোভন দেখিয়ে খুলনায় যেতে বলে। শুক্রবার জসিম ও এনামুল নড়াইল থেকে ওই দুই মেয়ের হাতে ২০০ টাকা দিয়ে খুলনার ফুলতলা চৌরঙ্গী হোটেলে যাওয়ার জন্য যাত্রীবাহী বাসে তুলে দেয়। কথামতো মালিনা ও টুকটুকি চৌরঙ্গী হোটেলের সামনে পৌঁছালে হোটেলের ম্যানেজার আনাস শেখ (১৫ ) ও শুকুর আলীর সাথে কথা বলতে থাকে। এ সময় তাদের কথাবার্তা ও আচরণ স্থানীয় কয়েকজন পথচারীর সন্দেহ হলে তারা ফুলতলা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে। পরে হোটেলের ম্যানেজার আনাস শেখ (১৫) এবং তার তথ্য মতে জসিমকে আটক করে।
আরও পড়ুন: ইয়াবাসহ মাগুরায় যুবক আটক
এ ঘটনায় মালিনার বাবা জালাল শেখ শনিবার কালিয়া থানায় ৪ জনকে আসামি করে মানব পাচার প্রতিরোধ আইন-২০১২ মামলা করেন।
৩ বছর আগে