ইউরোপিয়ান
ইউরোপিয়ান চলচ্চিত্র উৎসব ২০২৩-এর পর্দা উঠছে
তরুণ ইউরোপিয়ান ও বাংলাদেশি চলচ্চিত্র নির্মাতাদের প্রতিভা প্রদর্শন করে রবিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে শুরু হয়েছে পাঁচ দিনব্যাপী ইউরোপীয় চলচ্চিত্র উৎসব।
‘এ সেলিব্রেশন অব ইউরোপিয়ান অ্যান্ড বাংলাদেশি ইয়ং সিনেমা’- ট্যাগলাইন নিয়ে বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) আয়োজিত এই উৎসবের প্রধান সহযোগী হিসেবে দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকা।
রবিবার সন্ধ্যায় ঢাকায় ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলির পরিচালনায় একটি চমকপ্রদ আলোচনা পর্বের মাধ্যমে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হয়।
আরও পড়ুন: আর পারছি না রাষ্ট্র: ওমর সানি
'চলচ্চিত্রে তারুণ্য'- শীর্ষক আলোচনায় অংশ নেন প্রথম আলোর নির্বাহী সম্পাদক ও কবি সাজ্জাদ শরীফ, প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা অমিতাভ রেজা চৌধুরী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ভিজ্যুয়াল নৃবিজ্ঞান ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও চলচ্চিত্র কর্মী সিমিন ইবনাত ধরিত্রী।
প্যানেল আলোচনায় সাজ্জাদ শরীফ বলেন, ‘আমাদের চলচ্চিত্র শিল্পের জন্য এমন একটি আনন্দময় সময়ে এই উৎসবটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে এবং আমাদের তরুণ চলচ্চিত্র নির্মাতারা সমাজের অজানা অভিজ্ঞতা উপস্থাপন করে নতুন ভাষার সন্ধান করছেন। তারা আমাদের সিনেমার বাধাগুলো পরিবর্তন করার জন্য উন্মুখ। এই ধরনের উৎসব আমাদের গাইড করতে এবং সাহায্য করতে পারে।’
চলচ্চিত্র নির্মাতা অমিতাভ রেজা চৌধুরী বলেন, ‘আমি যখনই আমাদের নতুন প্রজন্মের লোকদের জিজ্ঞেস করি, তাদের অধিকাংশই বলে যে তারা দেশ ছেড়ে চলে যেতে চায়। আমাদের এমন একটি পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে, যাতে দেশে তারা তাদের প্রতিভা দিয়ে উন্নতি করতে পারে। যদি আমাদের সিনেমা আমাদের গল্প বলতে না পারে বা আমাদের জীবন এবং আমাদের নিজস্ব প্রেক্ষাপটের সঙ্গে অনুরণিত না হতে পারে, তবে এই সমস্যাটি আমাদের মাঝে থেকেই যাবে এবং আমাদের নতুন প্রজন্মের চলচ্চিত্র নির্মাতাদের গাইড করার জন্য আমাদের বিশ্বব্যাপী চলচ্চিত্র প্রশিক্ষক-সহযোগীদের সমর্থন প্রয়োজন।’
সাইমন ইবনাত ধরিত্রী বলেন, তরুণদের জীবনে সিনেমার প্রভাব খুবই প্রবল এবং সিনেমা দর্শকদের বিনোদনের পাশাপাশি বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা ও সামাজিক সচেতনতার ক্ষেত্রেও কার্যকর হতে পারে।
উদ্বোধনী প্যানেল আলোচনার পর ডাচ চলচ্চিত্র ‘ম্যালি ক্যান ফ্লাই’ প্রদর্শনের মাধ্যমে উৎসবের চলচ্চিত্র প্রদর্শন শুরু হয়।
এরপর প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান এই চলচ্চিত্র উৎসব আয়োজনের জন্য বাংলাদেশে ইইউ দূতাবাসের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, গোয়েথে-ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ, অ্যালায়েন্স ফ্রাঙ্কেস ডি ঢাকা এবং ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশসহ সহযোগী আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান।
এর আগে উৎসব কর্তৃপক্ষ সৃজনশীল কাজের মাধ্যমে ইউরোপ ও বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যকে সমৃদ্ধ করতে তরুণ চলচ্চিত্র নির্মাতাদের নিয়ে একটি 'মাস্টারক্লাস' আয়োজন করেছিল।
গত শুক্র ও শনিবার পরিচালক সৈয়দা নিগার বানু, চিত্রগ্রাহক অপু রোজারিও এবং চলচ্চিত্র নির্মাতা অমিতাভ রেজা চৌধুরী এবং পিপলু আর খান ঢাকার ব্রিটিশ কাউন্সিলে মাস্টারক্লাস পরিচালনা করেন।
রবিবার উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব প্রশিক্ষককে সম্মাননা দের ঢাকায় ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি ও প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান।
উৎসবের অংশ হিসেবে একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয় এবং চলচ্চিত্র নির্মাতাদের তিনটি বিভাগে সম্মানিত করা হয়। তরুণ পরিচালক মোস্তফা মনোয়ার তার ‘যাত্রী’ ছবির জন্য সেরা গল্পের পুরস্কার পেয়েছেন এবং ‘আশ্লেষা’ ছবির জন্য সেরা পরিচালকের পুরস্কার পেয়েছেন আকিব মাহমুদ।
উৎসবে মেহেদী হাসান জোসেফের স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘পোস্টার’ সেরা চলচ্চিত্রের মর্যাদা পায় এবং চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর মাধ্যমে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।
বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন ঢাকায় নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান এবং চরকি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেদোয়ান রনি।
২৩শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সারাদেশের বিভিন্ন স্থানে চলচ্চিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে। যার মধ্যে রয়েছে অ্যালায়েন্স ফ্রাঙ্কেস ডি ঢাকা, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট, ডাচ ক্লাব, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহীর বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় এবং ময়মনসিংহের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে।
আরও পড়ুন: নেটফ্লিক্সে বাঁধনের ‘খুফিয়া’ আসছে ৫ অক্টোবর
বিরতির পর ফিরছেন পরীমণি
১ বছর আগে