সাজসজ্জা
এবছর বাগেরহাটে ৬৫২ মণ্ডপে দুর্গাপূজা আয়োজিত
সনাতন ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজাকে ঘিরে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে। প্রতিমা তৈরি শেষে মণ্ডপে মণ্ডপে চলছে সাজসজ্জার কাজ। দুই-একদিনের মধ্যে রংতুলিতে প্রতিমা সাজাবে শিল্পীরা।
এবছর খুলনার বাগেরহাটের সদর উপজেলা, কচুয়া, মোরেলগঞ্জ, শরণখোলা, মোংলা, রামপাল, ফকিরহাট, মোল্লাহাট ও চিতলমারী উপজেলা মিলে জেলার ৯টি উপজেলার ৬৫২টি মণ্ডপে দুর্গোৎসবের আয়োজন চলছে।
আগামী ২০ অক্টোবর বেলতলায় মহাষষ্ঠী পূজার মধ্যে দিয়ে দেবী দুর্গা ঘোড়ায় (ঘটোকে) চড়ে স্বর্গ থেকে মত্তলোকে আসবেন।
এরপর মহাসপ্তমী, মহাঅষ্টমী, মহানবমী ও দশমীতে (২৪ অক্টোবর) বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে আবারও ঘোড়ায় চড়ে তিনি ফিরে যাবেন স্বর্গলোকে।
এদিকে, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আয়োজকদের মধ্যে এবছর নানা ধরনের শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে শারদীয় দুর্গাপূজা আয়োজনের জন্য কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছে জেলা ও পুলিশ প্রশাসন।
আরও পড়ুন: শনিবার মহা ষষ্ঠীর মধ্যদিয়ে শুরু হচ্ছে শারদীয় দুর্গাপূজা
জানা যায়, পূজা উপলক্ষে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত নানা কর্মযজ্ঞ চলছে মণ্ডপে মণ্ডপে। অধিকাংশ মণ্ডপে প্রতিমায় কাদামাটির কাজ শেষ করেছে শিল্পীরা। এখন প্রতিমায় রংয়ের পালা। দর্শনার্থীদের নজর কারতে সাজসজ্জায় নানা উপকরণ ব্যবহার করা হচ্ছে। থিমের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন মন্দিরে সাজসজ্জায় নানা ধরনের উপকরণও ব্যবহার করা হচ্ছে। ভক্তরাও দেবীকে বরণ করতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন।
বাগেরহাট সদর উপজেলার কাঠিগোমতি গ্রামের প্রতিমাশিল্পী (ভাস্কর) মিলন পাল জানান, বংশপরম্পরায় তারা প্রতিমা তৈরির কাজ করে আসছেন। তার দাদা (ঠাকুরদা) ও বাবার পর তিনিও প্রতিমা তৈরি করেন। প্রতিমা তৈরি করে যে অর্থ উপার্জন করে তাই দিয়ে তার সংসার চলে।
বাগেরহাট জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি নিলয় কুমার ভদ্র বলেন, ‘শারদীয় দুর্গোৎসবকে ঘিরে তাদের মাঝে এক ধরনের উদ্বেগ-উৎকন্ঠা এবং ভীতি কাজ করছে। আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে কুচক্রীমহল বিশৃঙ্খলা ঘটাতে পারে এমন আশঙ্কা রয়েছে।’
শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে যাতে দুর্গাপূজা সম্পন্ন করতে পারে এজন্য সরকারের কাছে জোর দাবি ওই কর্মকর্তার।
সভাপতি নিলয় কুমার ভদ্র আরও জানান, এ বছর তারা নিজেরাও পূজামণ্ডবগুলোতে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী দিয়ে নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনী গঠন করেছেন। একই সঙ্গে প্রতিটি মণ্ডপে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে।
দর্শনার্থীদের পূজা মণ্ডপে আসার সময় ভারিব্যাগ বহন না করার পরামর্শ দেন তিনি।
বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেলুর রহমান জানান, পূজা মণ্ডপগুলোতে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ২১৬টি পূজামণ্ডপকে অধিকগুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় নিয়ে সেখানে নিরাপত্তা বাড়ানো হবে। এছাড়া, প্রতিটি পূজামণ্ডপে নিরাপত্তার জন্য সিসি ক্যামেরা এবং নিজস্ব স্বেসেচ্ছাসেবক বাহিনী রাখার জন্য বলা হয়েছে।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহা. খালিদ হোসেন জানান, শারদীয় দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে করতে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে পূজা উদযাপন পরিষদের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সভা করে নানা পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। জেলা থেকে শুরু করে প্রতিটি উপজেলায় কন্ট্রোল রুম খোলা থাকবে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরাও টহলে থাকবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘দশমীর দিন রাত ৮টার মধ্যে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
আরও পড়ুন: বিজয়া দশমী: দেবী বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হল দুর্গাপূজা
কলকাতার কারিগরদের রঙ, ছাঁচে দুর্গাপূজার প্রতিমা
১ বছর আগে