বাংলাদেশ-ইইউ
অপতথ্য ও মিথ্যা রোধে একযোগে কাজ করবে বাংলাদেশ-ইইউ: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
অপতথ্য ও মিথ্যা তথ্য রোধে বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন একযোগে কাজ করবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ইইউ তো বটেই, পুরো বিশ্বজুড়ে অপতথ্য ও মিথ্যা তথ্য মানুষকে ডিজিটাল ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে। প্রযুক্তি ব্যবহার করে এসব অপতথ্য ও মিথ্যা তথ্য তৈরি ও প্রচার করা হচ্ছে।
রবিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউর রাষ্ট্রদূত হোয়াইটলির সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান প্রতিমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে ভূমিকা রাখছে বেতার: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
তিনি বলেন, আগামী কিছু দিনের মধ্যে মানুষকে যে বিষয়গুলো সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে ফেলবে তার মধ্যে অপপ্রচার, মিথ্যা তথ্য ও অপতথ্য অন্যতম। এ ধারণাটা বিশ্বজুড়ে আছে। সে জায়গায় বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন কীভাবে পারস্পারিক সহযোগিতা করতে পারে সে বিষয়ে রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে কথা হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশের ব্যাপারে ইইউর সমর্থন, সহযোগিতা, অংশীদারিত্বের বিষয়েও কথা হয়েছে। অপতথ্য ও মিথ্যা তথ্য কীভাবে অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যবস্থার মাধ্যমে চিহ্নিত করতে পারি সে বিষয়ে কথা হয়েছে।
ইইউ কী ধরনের সহযোগিতা করবে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আরাফাত বলেন, ধারণা বিনিময় করা, প্রযুক্তিগত সহযোগিতা থাকবে।
গোটা বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন যুদ্ধ-বিগ্রহের কারণে সাংবাদিকদের ঝুঁকির মধ্যে পড়ার বিষয়ে ইইউ রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আলাপ হয়েছে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতার বিষয়ে ইইউ রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, ইইউ রাষ্ট্রদূত এ বিষয়ে ইউরোপে বিভিন্ন ধরনের চ্যালেঞ্জের কথা বলেছেন। আমাদের দেশে আরও কোথায় উন্নতি করতে পারি, কোথায় কোথায় আমাদের সুযোগ আছে এ বিষয়গুলো নিয়ে তার সঙ্গে আলাপ হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, গণমাধ্যমের বিস্তৃতি উদার করতে গিয়ে গণমাধ্যমে বিশৃঙ্খলা প্রবেশ করেছে বলে পেশাদার সাংবাদিকরা বলছেন। সরকার সাংবাদিকতা, গণমাধ্যমের জায়গা, রাজনীতির ক্ষেত্রে সব জায়গায় একটা স্বাস্থ্যকর পরিবেশ চায়। গণতন্ত্র মানে আইনের শাসনও। গণতন্ত্র মানে সবকিছুর স্বাধীনতা আছে এবং আইনের শাসন হলো আমি কী কী করতে পারি না। দুটি বিষয়ের একটি চমৎকার ভারসাম্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুন: সাংবাদিকতার যোগ্যতা নির্ধারণের দাবির সঙ্গে সরকার একমত: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
১০ মাস আগে
নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বাংলাদেশ-ইইউ'র ৪০০ কোটি ইউরোর চুক্তি সই
গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামে ইইউ ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক সম্প্রসারণ ও উন্নয়নে নতুন অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতা চুক্তির বিষয়ে আলোচনা শুরু করেছেন ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেয়েন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার (২৫ অক্টোবর) বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে শীর্ষ পর্যায়ের এই আলোচনা শুরু হয়।
সেই উপলক্ষে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতের টেকসই সবুজ রূপান্তরে অবদান রাখতে নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্পের জন্য ৪০০ মিলিয়ন ইউরোর চুক্তি সই করেছে ইইউ’র ইউরোপিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (ইআইবি) ও বাংলাদেশ। এটি দেশের জলবায়ু প্রশমন লক্ষ্যমাত্রা পূরণের লক্ষ্যেও করা হয়েছে।
শিক্ষা সহায়তা, নিরাপদ কাজ, সবুজায়ন, ই-গভর্নেন্স ও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধে সহায়তার জন্য ৭০ কোটি ইউরো মূল্যের পাঁচটি অতিরিক্ত সহযোগিতামূলক পদক্ষেপও চালু করা হয়েছে।
ব্রাসেলসের বক্তব্যে প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেয়েন বলেন, 'ইইউ ও বাংলাদেশ ৫০ বছর ধরে নির্ভরযোগ্য ও বিশ্বস্ত অংশীদার। এখন, গ্লোবাল গেটওয়ের অধীনে সবুজ রূপান্তরের সুযোগগুলো কাজে লাগাতে আমরা এই অংশীদারিত্বকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। ইউরোপীয় কমিশন, ইআইবি ও বাংলাদেশ নবায়ণযোগ্য জ্বালানি সহায়তা এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় একযোগে কাজ করবে। এই ৪০০ মিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগ বাংলাদেশের জনগণ ও অর্থনীতিতে পরিবর্তন আনবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, 'আমরা আত্মবিশ্বাসী যে এই উদ্যোগ বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোকে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা, অবকাঠামোগত ঘাটতি দূরীকরণ, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, ডিজিটাল উদ্ভাবন, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং আরও অনেক কিছুতে বিনিয়োগ করতে সক্ষম করবে। গ্লোবাল গেটওয়ে বন্ধুত্বের, অংশীদারিত্বের, বিশ্বাসের, স্বার্থসংশ্লিষ্ট পারস্পরিক নির্ভরশীলতার একটি প্রতীক।
নবায়ণযোগ্য জ্বালানি প্রকল্পগুলোর জন্য ইইউ এবং ইআইবি (৩৯৫ মিলিয়ন) ইউরোর মধ্যে ঘোষিত ৪০০ মিলিয়ন ইউরোর অংশীদারিত্বের মধ্যে সাড়ে ৩০০ মিলিয়ন ইউরোর ইইউ-গ্যারান্টিযুক্ত ইআইবি ঋণ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যা প্রযুক্তিগত সহায়তা এবং বিনিয়োগ অনুদানসহ ৪৫ মিলিয়ন ইউরোর মিশ্রণ সহায়তা প্যাকেজের পরিপূরক।
আরও পড়ুন: মঙ্গলবার বেলজিয়াম সফরে যাবেন প্রধানমন্ত্রী
উপরন্তু, ১২ মিলিয়ন ইউরো মূল্যের গ্রিন এনার্জি ট্রানজিশন প্রকল্প, যার মধ্যে ৭ মিলিয়ন ইউরো রয়েছে যা জার্মানির সহ-অর্থায়নে পরিচালিত হয়, যার লক্ষ্য একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সবুজ জ্বালানি রূপান্তরকে সহজতর করার নীতি, আইনি কাঠামো এবং বিনিয়োগের পরিবেশে কাজ করা।
প্রকল্পগুলো মূলত ইউটিলিটি স্কেল সৌর ফোটোভোলটাইক এবং উপকূলীয় বায়ু প্রকল্প এবং সম্ভাব্য সম্পর্কিত ব্যাটারি শক্তি সঞ্চয় ব্যবস্থার সমন্বয়ে সমগ্র বাংলাদেশে জ্বালানি ও গ্রামীণ উন্নয়নে অ্যাক্সেস বাড়াতে অবদান রাখবে।
এই কার্যক্রম বাংলাদেশে আনুমানিক ৭৫০ মেগাওয়াট নবায়নযোগ্য জ্বালানি সক্ষমতা স্থাপনে অবদান রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিনিয়োগগুলো বিদ্যুৎ বিতরণ ও বিকেন্দ্রীকরণের উন্নতি করবে, শেষ পর্যন্ত জাতীয় ও সম্ভাব্য আঞ্চলিক, সংযোগ ও সহনশীলতা বাড়াবে।
কারিগরি সহায়তার অংশ হিসেবে, ইইউ একই জমিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং খাদ্য উৎপাদন, সৌর শক্তি, হাইব্রিড সৌর শক্তি/বায়ু ও ব্যাটারিচালিত সৌরশক্তি একত্রিত করার উপায়সহ প্রকল্প প্রস্তাবগুলো পরীক্ষা করতে সহায়তা করবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সব অংশীজনদের সহিংসতা ও ভীতি প্রদর্শন থেকে বিরত থাকার আহ্বান অব্যাহত রাখবে যুক্তরাষ্ট্র
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে সৌর প্রকল্প ও উপকূলীয় বায়ু প্রকল্প জাতীয় গ্রিডের সঙ্গে সংযুক্ত করা হবে।
গ্রিন এনার্জি ট্রানজিশনের জন্য অংশীদারিত্ব বাংলাদেশি আইনি কাঠামো তৈরিতে সহায়তা করবে যা অন্তর্ভুক্তিমূলক সবুজ জ্বালানি রূপান্তরের জন্য বিনিয়োগকে উৎসাহিত করবে এবং জ্বালানি খাতে নারী পেশাদারদের কর্মসংস্থানের সুযোগও উন্নত করবে।
গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামে ইইউ ও বাংলাদেশের মধ্যে শিক্ষা খাতের (৩০ মিলিয়ন ইউরো), নিরাপদ কাজের কর্মসূচির উন্নয়নে, সবুজ নির্মাণ, কার্যকর ডিজিটাল গভর্নেন্স জোরদার এবং দেশের উন্মুক্ত স্থানে লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা রোধে (প্রতিটি ক্ষেত্রে ১০ মিলিয়ন ইউরো) সহযোগিতার জন্য অতিরিক্ত ৭০ মিলিয়ন ইউরোর একটি প্যাকেজ সই হয়।
এ বছর ইইউ-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকী। এই সময়ে ইইউ বাংলাদেশের বিশ্বস্ত উন্নয়ন, বাণিজ্য ও মানবিক অংশীদার হয়েছে।
এই পাঁচ দশকে রাজনীতি, বাণিজ্য, উন্নয়ন, জলবায়ু পরিবর্তন ও কানেক্টিভিটির সমন্বয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও বাংলাদেশের মধ্যকার সম্পর্ক বহুমাত্রিক হয়ে উঠেছে।
আরও পড়ুন: যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের সঙ্গে আইসিটি প্রতিমন্ত্রীর সাক্ষাৎ
১ বছর আগে