গণফোরাম
সরকারবিরোধী আন্দোলনে ঐক্যমত্যে বিএনপি-গণফোরাম
বিএনপি ও মোস্তফা মহসিন মন্টুর নেতৃত্বাধীন গণফোরামের একটি অংশ মঙ্গলবার সংলাপে বসে সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে যুগপৎ আন্দোলনে ঐক্যমত্যে পৌঁছেছে।
রাজধানীর আরামবাগে গণফোরামের কার্যালয়ে এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও গণফোরাম সভাপতি মোস্তফা মহসিন মন্টু নিজ নিজ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন।
আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ফখরুল বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও গণমুখী সরকার প্রতিষ্ঠায় জাতীয় ঐক্য গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তাদের চলমান সংলাপের অংশ হিসেবে গণফোরাম নেতাদের সঙ্গে কথা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘বর্তমান দানবীয় শাসনব্যবস্থাকে উৎখাতের জন্য অন্য সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে একযোগে আন্দোলন করার জন্য আমরা ঐকমত্যে পৌঁছেছি যা আমাদের সকল অর্জনকে ধ্বংস করছে।’
আরও পড়ুন: সরকারবিরোধী আন্দোলনে ঐক্যমতে বিএনপি-জাসদ
বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব বলেন, একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা এবং সব দলের মতামতের ভিত্তিতে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের কথা বলেছেন তারা।
সেই নির্বাচনের পর, তিনি বলেছিলেন যে তাদের দলের রাষ্ট্র সংস্কার এবং ধ্বংসপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান পুনর্গঠনের আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি জাতীয় সরকার গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে।
মন্টু বলেন, তারা জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য জাতীয় ঐক্য তৈরি করে বর্তমান শাসনকে পরাজিত করতে চান এবং এভাবে দেশের জনগণের মালিকানা পুনরুদ্ধার করতে চান।
বিগত দুটি জাতীয় নির্বাচন গ্রহণযোগ্য নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্যভাবে হতে পারে না বলে বিশ্বাস করেন তিনি। তাই আমরা চাই আগামী সাধারণ নির্বাচন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হোক।
২৪ মে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য গড়ে তোলার লক্ষ্যে নাগরিক ঐক্যের সঙ্গে প্রথম বৈঠকের মাধ্যমে বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে অন্যান্য বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করে।
দলটি লেবার পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর), ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (জাগপা), ন্যাপ (ভাসানী), মুসলিম লীগ, ইসলামী ঐক্যজোট এবং জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনা করেছে। সাম্যবাদী দল ও ডেমোক্রেটিক লীগ (ডিএল), বাংলাদেশ পিপলস লীগ, বাংলাদেশ ন্যাপের সঙ্গেও বৈঠক করে।
আরও পড়ুন: লোডশেডিংয়ের পেছনে সরকারের ‘মেগা’ দুর্নীতি, লুটপাট: বিএনপি
অপকর্মের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান ড.কামালের
গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন জনগণকে অপকর্ম ও অনৈতিক কাজের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন অনৈতিক কাজ ও অপকর্মের কারণে দেশ ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করুন এবং এ ধরনের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সোচ্চার হোন।’
বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত নতুন রাজনৈতিক দল ‘নৈতিক সমাজ’ এর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও প্রথম কাউন্সিলে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে দেয়া বক্তব্যে এসব কথা বলেন ড. কামাল।
তিনি বলেন, দেশকে অনৈতিক ও অপকর্ম থেকে মুক্ত করতে হবে। আমরা আশা করি আপনারা সবাই দেশে আইনের শাসন, জন-নিরাপত্তা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাবেন।
আরও পড়ুন: নির্দলীয় সরকার চান ড. কামাল
ড. কামাল নৈতিক সমাজের কাউন্সিলের সর্বাত্মক সাফল্য কামনা করেন এবং দলের নেতা-কর্মীদের জনগণের অধিকার ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।
গত বছরের ৩০ মার্চ মেজর জেনারেল (অব.) এ এম এস এ আমিন রাজনীতিতে ন্যায়পরায়ণ নেতৃত্ব ও নৈতিক মূল্যবোধ তৈরির লক্ষ্যে ‘নৈতিক সমাজ’ গঠন করেন।
এ সময় নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, বর্তমান সরকার নীতিহীন। কারণ তারা ভোট ডাকাতি করে জোর করে ক্ষমতা দখল করেছে। বাংলাদেশের যে কোনো জায়গায় কাউকে জিজ্ঞেস করলেই বলবে, এই সরকার নীতিহীন।
সব নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের অস্বাভাবিক ও অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধি ঠেকাতে সরকারের ব্যর্থতার জন্য তিনি কঠোর সমালোচনা করেন।
মান্না বলেন, চাল, আটা, তেল, পেঁয়াজের মতো অত্যাবশ্যক খাদ্যদ্রব্য কিনতে টিসিবির পণ্য বিক্রি করা ট্রাকের পেছনে মানুষ সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছে, কারণ পণ্যের আকাশছোঁয়া দামের কারণে তাদের জীবন সংগ্রাম করতে হচ্ছে।
আওয়ামী লীগের শাসনামলে ১৯৭৪ সালে দেশে বড় দুর্ভিক্ষ দেখা দেয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, একই দল এখন ক্ষমতায় থাকায় এখনও একই অবস্থা বিরাজ করছে।
নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের কথাও তুলে ধরেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক।
আরও পড়ুন: ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথ দখলের আহ্বান ড. কামালের
সরকারকে ‘ক্ষমতাচ্যুত’ করতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন চান ড. কামাল
গণফোরামের দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ১৫
রাজধানীতে একটি গ্রুপের কাউন্সিলকে কেন্দ্র করে গণফোরামের দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। শনিবার এ ঘটনায় অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন।
তবে দলের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন অসুস্থ থাকায় সেখানে উপস্থিত ছিলেন না।
গত বছরের ৩ ডিসেম্বর দলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ড. কামাল হোসেনকে বাদ দিয়ে একটি কাউন্সিলের মাধ্যমে মোস্তফা মহসিন মন্টুর নেতৃত্বে দলের ১৫৭ সদস্যের নতুন কমিটি গঠন করায় গণফোরাম বিভক্ত হয়ে পড়ে।
ড. কামাল ও মোকাব্বির খান এমপির নেতৃত্বে আরেকটি দল শনিবার সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে কাউন্সিল করার কথা ছিল এবং মন্টুর নেতৃত্বাধীন গ্রুপ একই সময়ে ক্লাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করে।
মন্টুর নেতৃত্বাধীন গ্রুপের কিছু নেতাকর্মী মোকাব্বিরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিতে দিতে কাউন্সিল ভেন্যুতে প্রবেশ করলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এর আগে গণফোরাম থেকে যাদের বহিষ্কার করা হয়েছিল, তারা 'পরিকল্পিতভাবে' কাউন্সিলে হামলা করেছে বলে অভিযোগ করেছেন মোকাব্বির।
হামলায় তাদের ১৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি।
মোকাব্বির বলেন, ‘আমরা গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে কাউন্সিল আয়োজন করেছি। এটা পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি। কিন্তু কিছু দুর্বৃত্ত কাউন্সিলে হামলা করে, এতে আমিসহ আমাদের অনেককে আহত করেছে।’
যোগাযোগ করা হলে মোস্তফা মহসিন মন্টু দাবি করেন, তার অনুসারীদের কেউ কাউন্সিল ভেন্যুতে প্রবেশ করেনি।
তিনি বলেন, ‘সুব্রত চৌধুরী ও আমিসহ আমাদের সিনিয়র নেতারা আজ (শনিবার) প্রেসক্লাবেও যাননি। আমাদের মহানগর কমিটি দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে একটি মানববন্ধনের আয়োজন করে এবং তারা তাদের কর্মসূচী শেষে চলে যায়।’
কাউন্সিল আহ্বানকারীদের সাথে ড. কামাল হোসেনের কোনো সম্পর্ক নেই বলেও মন্টু দাবি করেন।
পড়ুন: ইসি নিয়ে সংলাপ: ৩ দফা দাবি গণফোরাম ও বিকল্পধারার
বিভক্ত হলো গণফোরাম, নতুন অংশের সভাপতি মন্টু
ইসি নিয়ে সংলাপ: ৩ দফা দাবি গণফোরাম ও বিকল্পধারার
নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন নিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে চলমান আলোচনায় অংশ নিয়ে তিন দফা সুপারিশ পেশ করেন গণফোরাম ও বিকল্পধারা বাংলাদেশ।
রবিবার বিকেলে গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি মোকাব্বির খানের নেতৃত্বে আট সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল বঙ্গভবনের দরবার হলে অনুষ্ঠিত এ আলোচনায় অংশ নেয়।
বঙ্গভবনে তাদের স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্রপতি মো.আবদুল হামিদ বলেন, একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত নেয়াই এই আলোচনার লক্ষ্য।
তিনি বলেন, রাজনীতিবিদদের অনুকরণীয় এমন কিছু করা দরকার, যা থেকে নতুন প্রজন্ম শিক্ষা নিয়ে নিজেদের গড়ে তুলতে পারে।
আলোচনাকালে গণফোরামের প্রতিনিধিদল নিরপেক্ষ ও শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন প্রণয়নসহ কয়েকটি প্রস্তাব দেয়। তারা আশা করেন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে রাষ্ট্রপতির চলমান এ সংলাপ একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।
আরও পড়ুন: ইসি গঠনে দ্রুত আইন প্রণয়নের প্রস্তাব নাকচ আইনমন্ত্রীর
বিভক্ত হলো গণফোরাম, নতুন অংশের সভাপতি মন্টু
গণফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ড. কামাল হোসেনকে বাদ দিয়ে শুক্রবার ১৫৭ সদস্যের আরেক অংশের নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর ফলে আনুষ্ঠানিকভাবে এখন গণফোরাম বিভক্ত হয়ে গেল।
ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলে দলটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু ও সাবেক নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরীকে যথাক্রমে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক করা হয়।
কাউন্সিল সভা শেষে দলের ১৫৭ সদস্যের নতুন কমিটির নাম ঘোষণা করেন দলের সাবেক নির্বাহী সভাপতি অধ্যাপক আবু সাইয়িদ।
তিনি বলেন, কাউন্সিলরদের মতামতের ভিত্তিতে নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কামাল হোসেন বা তার অনুগত কাউকেই এই কমিটিতে রাখা হয়নি।
১৫৭ সদস্যের কমিটির মধ্যে সাত সদস্যের নির্বাহী কমিটি এবং ২০ সদস্যের প্রেসিডিয়াম সদস্য রয়েছে।
কার্যনির্বাহী কমিটির সাত সদস্য হলেন- মোস্তফা মহসিন মন্টু, অধ্যাপক আবু সাঈদ, সুব্রত চৌধুরী, জগলুল হায়দার আফ্রিক, মহসিন রশিদ, মহিউদ্দিন আবদুল কাদের ও আইয়ুব খান ফারুক।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর ড. কামাল হোসেন আওয়ামী লীগ থেকে বের হয়ে গিয়ে ১৯৯৩ সালে গণফোরাম প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
ড. কামাল শুরু থেকেই দলের সভাপতি পদে রয়েছেন।
২০১৯ সালের ২৬ এপ্রিল অনুষ্ঠিত পঞ্চম কাউন্সিলের পর থেকে দলের নেতাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। সেই কাউন্সিলে গঠিত কমিটিতে তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টুসহ দলের অনেক নেতা বাদ পড়েছিলেন। একই বছরের ৫ মে দলের সভাপতি ড. কামাল হোসেন মোস্তফা মহসিন মন্টুকে বাদ দিয়ে ড. রেজা কিবরিয়াকে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক করেন, যা দলের নেতাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব আরও বেড়ে যায়।
আরও পড়ুন: গণফোরাম ছাড়লেন রেজা কিবরিয়া
মন্টুসহ ৪ জনকে ‘শোকজ’ দিল ড. কামালের গণফোরাম
নির্দলীয় সরকার চান ড. কামাল
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নির্দলীয় সরকারের অধীনে নেয়ার দাবি জানিয়ে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, বিএনপির সঙ্গে গড়া নির্বাচনী জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট পুনরায় সক্রিয় করার সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নির্দলীয় সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হওয়ার দাবি জানাই। কেননা এর আগে আমরা দেখেছি দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য হয় না।’
শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলন করে এসব কথা বলেন গণফোরাম সভাপতি।
আরও পড়ুন: ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথ দখলের আহ্বান ড. কামালের
ড. কামাল বলেন, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন নিয়ে তাদের তিক্ত অভিজ্ঞতা রয়েছে। ‘নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে আমরা নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ নির্বাচন আশা করতে পারি।’
গণফোরাম প্রধান বলেন, বিষয়টি জনসম্মুখে নিয়ে আসার জন্য তারা নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবি উত্থাপন করেছেন।
সংবিধানে নির্দলীয় সরকার নিয়ে কোনো ধারা নেই; এ বিষয়টিতে তার মনোযোগ আকর্ষণ করা হলে ড. কামাল বলেন, জনগণের দাবির মুখে এটি সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।
আরও পড়ুন: সরকারকে ‘ক্ষমতাচ্যুত’ করতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন চান ড. কামাল
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকার যদি তাদের দাবি না মেনে নেয় তাহলে একটি সংকট সৃষ্টি করা হবে এবং একটি শক্তিশালী আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট পুনরায় সক্রিয়করণ
ড. কামাল বলেছেন, যদিও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট একটি নিষ্ক্রিয় প্লাটফর্মে পরিণত হয়েছে। তবুও এখনও এটাকে সক্রিয় করার সম্ভাবনা আছে।
তিনি বলেন, ‘ওই অর্থে ঐক্যফ্রেন্টের কোনো অস্তিত্ব এখন নেই। তবে এটাকে পুনরায় সক্রিয় করার সুযোগ আছে।’
গণফোরাম সভাপতি বলেন, ঐক্যফ্রন্টকে সক্রিয় করতে তারা আলোচনায় বসবেন ও পরবর্তীতে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
২০১৮ সালের ১৩ অক্টোবর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হয়। তারা ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হওয়া জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে অংশ নেয় এবং সব মিলিয়ে নির্বাচনে আটটি আসনে জয় লাভ করে। এর মধ্যে ছয় আসনে বিএনপি এবং গণফোরাম জয় লাভ করে দুই আসনে।
নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন প্রণয়ন
ড. কামাল বলেছেন, সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন করার চেয়ে আইন প্রণয়নের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন করা ভালো। ‘সার্চ কমিটি নিরপেক্ষ হতে পারে না যদি না এটি নিরপেক্ষ ব্যক্তির দ্বারা গঠিত হয়।’
তিনি বলেন, ‘আইনের অধীনে নির্বাচন কমিশন গঠন করার পক্ষে আমরা। আমরা মনে করি, আইন প্রণয়ন করে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনের একটি সুযোগ আছে।’
জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি ও পরিবহনের ভাড়া বাড়ার পরে সকল নিত্য পণ্যের দাম বৃদ্ধিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ড. কামাল। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম হ্রাস করতে সরকারকে ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান করেন তিনি।
এছাড়া ড. কামাল বলেছেন, ৪ ডিসেম্বর তাদের দলীয় সম্মেলন করার পরিকল্পনা ছিল। তবে তারা এটি আগামী জানুয়ারি মাসের শেষে করতে পারেন।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়া ভালো আছেন: ফখরুল
ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথ দখলের আহ্বান ড. কামালের
দেশ ‘পুরোপুরি স্বৈরতন্ত্রের নিয়ন্ত্রণে’ রয়েছে উল্লেখ করে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন রাজনৈতিক দলগুলোকে এ সরকার উৎখাত করতে ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথ দখলের আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘জনগণ তাদের অধিকার থেকে বঞ্ছিত। বর্তমান সরকারের প্রতি তাদের কোনো ভরসা নেই। তারা (সরকার) জোর করে ক্ষমতা দখল করে আছে। দেশে এখন পুরো স্বৈরতন্ত্র বিরাজ করছে।’
শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে গণসংহতি আন্দোলনের সম্মেলন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট এই রাজনীতিক বলেন, দেশকে ‘স্বৈরতন্ত্র’ থেকে রক্ষা করতে জনগণের ঐক্য এখন অপরিহার্য।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়া ভালো আছেন: ফখরুল
তিনি বলেন, ‘জনগণ আন্দোলনের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত। রাজনৈতিন দলগুলো তাদের ঐক্যবদ্ধ করতে পারলে জনগণ রাজপথে নেমে আসবে। রাজপথের সংগ্রামের মাধ্যমে আমাদের জনগণ দেশের মালিকানা ফেরত পাবে।’
বর্তমান সরকারের দেশ পরিচালনার নৈতিক অধিকার নেই বলেও দাবি করেন ড. কামাল।
এদিকে এ অনুষ্ঠানে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী অভিযোগ করেছেন সরকার দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘প্রতিটা ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় না। নির্বাচনী ব্যবস্থা পুনরুজ্জীবিত করতে আমাদের সব জায়গায় জাগ্রত করতে হবে। আমাদের এই সরকারকে উচ্ছেদ করতেই হবে।’
এ সময় তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের উৎখাত নিশ্চিত করতে রাজপথে শক্তিশালী আন্দোলনের বিকল্প নেই।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘একটা পরিবর্তন আনতে আন্দোলনই আমাদের একমাত্র পথ। আমি বিশ্বাস করি, এখানে যে সকল জাতীয় নেতা আছেন তারা একসঙ্গে রাজপথ দখল নিলে একটা পরিবর্তন আসবে।’
পড়ুন: নির্বাচনী মাঠ খালি করছে সরকার: ফখরুল
সরকারকে ‘ক্ষমতাচ্যুত’ করতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন চান ড. কামাল
সরকারকে ‘ক্ষমতাচ্যুত’ করতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন চান গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন। তিনি বলেছেন, ‘মানুষকে দুঃশাসন ও স্বৈরশাসন থেকে বাঁচাতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে বর্তমান সরকারকে ‘ক্ষমতাচ্যুত’ করতে হবে। আমরা দু:শাসন ও স্বৈরশাসনের শিকার। আমাদের অবশ্যই এর থেকে মুক্ত হতে হবে। আমরা এভাবে দেশ চালাতে দিতে পারি না। মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে একটি আন্দোলনের মাধ্যমে আমাদের অবশ্যই পরিবর্তন আনতে হবে।’
রবিবার গণফোরামের ২৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় ড. কামাল এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার দুর্নীতিতে লিপ্ত হয়ে বিপুল অর্থ চুরি করেছে। তারা বিপুল সম্পদ সংগ্রহ করেছে। আমাদের এই শাসককে অপসারণ করতে হবে।’
জনগণের শক্তিতে দেশকে বাঁচাতে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে ড. কামাল বলেন, ‘মানুষের মধ্যে ঐক্য আছে। কিন্তু বিরোধী দলগুলোকে জনসাধারণের ম্যান্ডেট দিয়ে সরকার গঠনের জন্য এটিকে শক্তিশালী করতে হবে। আমাদের এখনই এটি শুরু করতে হবে। কারণ অনেক সময় ইতোমধ্যে কেটে গেছে।’
তিনি বলেন, ‘মানুষ এখন বুঝতে পারে যে দমন -পীড়ন ও দুঃশাসন থেকে মুক্তি পেতে তাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে পাকিস্তানিদের প্রতিরোধ করেছি। আমি বিশ্বাস করি যে যদি আমরা এখন সেই ঐক্য ব্যবহার করি, তাহলে আমরা অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারবো। আমরা ঘরে ঘরে এবং মাঠে মাঠে গিয়ে আন্দোলনের জন্য মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করব।’
আরও পড়ুন: সরকার হটাতে শক্তিশালী জোট চান ফখরুল
স্বাধীনতাবিরোধীদের প্রশ্রয়দাতাদের রাজনীতি করার অধিকার নেই: তথ্যমন্ত্রী
গণফোরামের সব বহিষ্কার ‘অকার্যকর’: ড. কামাল
গণফোরামকে ঐক্যবদ্ধ রাখার পদক্ষেপ হিসেবে বিগত কয়েক মাসে অভ্যন্তরীণ ভুল বোঝাবুঝির কারণে ঘটে যাওয়া সব বহিষ্কার-পাল্টা বহিষ্কার ‘অকার্যকর’ বলে জানিয়েছেন দলটির সভাপতি ড. কামাল হোসেন।
গণতন্ত্র অবশ্যই কার্যকর হতে হবে: ড. কামাল
গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন শনিবার বলেছেন, গণতন্ত্রকে অবশ্যই কার্যকর করতে হবে যাতে দেশের মানুষ তাদের মৌলিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারে।