কোপা দেল রে
ব্রাজিলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত ‘নিয়ে ফেলেছেন’ আনচেলত্তি
চলতি মৌসুমে অসংখ্যবার সাংবাদিকদের একটি প্রশ্নের জবাব দিতে দিতে জেরবার হয়েছেন কার্লো আনচেলত্তি—রিয়াল মাদ্রিদ থেকে আপনার সরে যাওয়ার বিষয়ে কী বলবেন? মৌসুমের শেষের দিকে এসে একের পর এক ব্যর্থতায় এই প্রশ্নবাণে আরও বেশি বিদ্ধ হতে হচ্ছে এই ইতালিয়ান কোচকে। তবে কোপা দেল রের ফাইনালে বার্সেলোনার কাছে রিয়ালের হারের পর সিদ্ধান্তটি তিনি নিয়েই ফেলেছেন—আর নয়, সরে যাওয়ার সময় এসেছে।
শনিবার রাতে চরম উত্তেজনাপূর্ণ এল ক্লাসিকো ফাইনালে বার্সেলোনার কাছে ৩-২ গোলে হেরে কোপা দেল রের শিরোপা হাতছাড়া হয়েছে রিয়াল মাদ্রিদের। তার আগে গত ১৬ এপ্রিল আর্সেনালের কাছে দ্বিতীয়বার হেরে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে বিদায় নিতে হয় গতবারের চ্যাম্পিয়নদের।
বার্সেলোনার কাছেই স্প্যানিশ সুপার কাপও খোয়ানোর পর লা লিগায়ও খুব বেশি সুবিধাজনক অবস্থানে নেই আনচেলত্তির দল। পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা কাতালানদের চেয়ে চার পয়েন্টে পিছিয়ে দলটি। সামনে আর পাঁচটি ম্যাচ থাকলেও তার একটি আবার রয়েছে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে, তাদের মাঠেই। ফলে লিগ জয় বার্সেলোনার জন্য যতটা সহজ এবার, ঠিক ততটাই কঠিন হয়ে পড়েছে বর্তমান লা লিগা চ্যাম্পিয়নদের জন্য। আর তাতে করে শিরোপাহীন এক মৌসুম কাটানোর আশঙ্কায় পড়েছে ইউরোপের অত্যন্ত প্রভাবশালী এই ক্লাবটি।
একের পর এক শিরোপা হাতছাড়া হওয়ায় মাঝেমধ্যেই রিয়াল মাদ্রিদের ডাগআউটে আনচেলত্তির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে ছিটকে যাওয়ার রাতেই তিনি তাৎক্ষণিক বরখাস্ত হতে পারেন বলে গুঞ্জন ওঠে। তেমন কিছু হলে সবসময় তৈরি আছেন বলেও সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন আনচেলত্তি। তবে কোপা দেল রের ফাইনাল পর্যন্ত দেখার অপেক্ষায় ছিল সবাই। এমনকি এই ট্রফিটি জিততে পারলে চুক্তির বাকি সময়টুকুও, অর্থাৎ ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত তিনি রিয়ালে টিকে যেতে পারেন বলে সমালোচক মহলে আলোচিত হয়। কিন্তু হতাশাজনক হারে সব হিসাব উল্টে গেছে।
এর মাঝে খবর এলো, বরখাস্ত হওয়া তো পরের কথা, তিনি নিজেই নাকি রিয়াল মাদ্রিদ ছাড়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন।
এ বিষয়ে দ্য অ্যাথলেটিকের রিয়াল মাদ্রিদ বিটের সাংবাদিক মারিও কর্তেগানা লিখেছেন, লা লিগার যে পাঁচ ম্যাচের খেলা বাকি, তা সম্পন্ন করেই রিয়াল মাদ্রিদ ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আনচেলত্তি। তার পরবর্তী গন্তব্য ব্রাজিল। জুন মাসের আন্তর্জাতিক বিরতি শুরু হওয়ার আগেই দেশটির জাতীয় দলের দায়িত্ব নিতে চলেছেন তিনি।
আর তা-ই যদি হয়, তাহলে আসন্ন জুন-জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত হতে চলা ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে রিয়াল মাদ্রিদের ডাগআউটে দেখা যাবে না ৬৫ বছর বয়সী এই ইতালিয়ান কোচকে।
আরও পড়ুন: অগ্নিঝরা ফাইনাল জিতে কোপা দেল রের শিরোপা পুনরুদ্ধার করল বার্সেলোনা
ব্রাজিলের সঙ্গে আনচেলত্তির সংযোগের এই বিষয়টি অবশ্য একেবারে নতুন নয়। গত দুই বছর ধরে রিয়াল বসকে জাতীয় দলের দায়িত্ব দেওয়ার চেষ্টায় রয়েছে ব্রাজিল। এ নিয়ে একাধিকবার তার ক্যাম্পের সঙ্গে যোগাযোগও করেছে দেশটির সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
এদিকে, ট্রান্সফার গুরু ফাব্রিৎসিও রোমানো জানিয়েছিলেন, সবশেষ সান্তিয়াগো বের্নাবেউতে আর্সেনালের বিপক্ষে হারের ওই ম্যাচের আগে ব্রাজিলের একজন দূত মাদ্রিদে আসেন। ম্যাচটির পর আনচেলত্তির ক্যাম্পের সঙ্গে যোগাযোগও করেন তিনি। তবে কোপা দেল রের ফাইনাল সামনে থাকায় তার অপেক্ষা বাড়ে।
দিয়েগো ফের্নান্দেস নামের ওই ব্রাজিলীয় ব্যবসায়ী শনিবার লা কার্তুহা স্টেডিয়ামেও উপস্থিত ছিলেন বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে দ্য অ্যাথলেটিক। এমনকি রিয়াল মাদ্রিদের সঙ্গে চুক্তির প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকেই আনচেলত্তির সঙ্গে তিনি মিটিং করেছেন বলেও খবরে বলা হয়েছে। আর সেখানেই আনচেলত্তি ব্রাজিল জাতীয় দলের দায়িত্ব নেওয়ার ব্যাপারে সম্মতি দিয়েছেন বলে লিখেছেন কর্তেগানা।
ট্রেনিং গ্রাউন্ড সূত্রের বরাত দিয়ে এই সংবাদিক জানিয়েছেন, ইতোমধ্যেই ক্লাব ছাড়ার ইচ্ছার কথা ড্রেসিংরুম সদস্যদের জানিয়ে দিয়েছেন রিয়াল বস আনচেলত্তি। আশা করা হচ্ছে, জুন মাসেই তিনি ব্রাজিল জাতীয় দলের দায়িত্ব নেবেন। ফলে এই গ্রীষ্মে অনুষ্ঠিত হতে চলা ক্লাব বিশ্বকাপে তাকে কোচ হিসেবে পাবে না রিয়াল।
এক্ষেত্রে বিকল্প কোচের সন্ধানে নামতে হবে মাদ্রিদ জায়ান্টদের। দলটির সাবেক অধিনায়ক ও বায়ের লেভারকুজেনের বর্তমান কোচ শাবি আলোনসোকে বের্নাবেউতে টানার ইচ্ছার কথা জানা গিয়েছিল গত গ্রীষ্মেই। কিন্তু জার্মান ক্লাবটিতে তার কাজ তখনও শেষ হয়নি জানিয়ে তখন লেভারকুজেনেই থেকে গিয়েছিলেন আলোনসো। আনচেলত্তি যদি সত্যি সত্যিই চলে যান, সেক্ষেত্রে আলোনসো যদি নতুন মৌসুম শুরু হওয়ার আগে আসতে না পারেন, তবে অন্তর্বর্তী কোচ হিসেবে ক্লাব বিশ্বকাপে রিয়ালের টাচলাইনে দেখা যেতে পারে রিয়াল মাদ্রিদের ফুটবল বিভাগের পরিচালক সান্তিয়াগো সোলারিকে। অন্তত স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম মার্কাসহ দেশটির একাধিক ক্রীড়া সাংবাদিকের মত তা-ই। ফাব্রিৎসিও রোমানো ও কর্তেগানাও বলছেন একই কথা।
আসন্ন কয়েক ঘণ্টা রিয়াল মাদ্রিদের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ হতে চলেছে। সোমবার ক্লাব কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসার কথা আনচেলত্তি ও তার ক্যাম্পের। সেখানেই আনচেলত্তির থাকা-না থাকার বিষয়টির ফয়সালা হয়ে যেতে পারে।
আরও পড়ুন: ব্যাপক তোড়জোড় করেও হেরে গেল রিয়াল, সেমিফাইনালে আর্সেনাল
কর্তেগানা বলছেন, মূলত দায়িত্ব ছাড়ার বিষয়েই রিয়াল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধানে আসবেন এই কোচ। এরপরই তিনি ব্রাজিল ফুটবল ফেডারেশনের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হবেন। এমনকি ২০২৬ ফিফা বিশ্বকাপ পর্যন্ত ব্রাজিল ফুটবল দলের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হবেন বলে মৌখিকভাবে সম্মতও নাকি হয়েছেন।
অন্যদিকে, বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ৪-১ গোলে হারের পর গত ২৮ মার্চ কোচ দরিভাল জুনিয়রকে বরখাস্ত করে ব্রাজিলিয়ান ফুটবল ফেডারেশন। তারপর থেকে অভিভাবকহীন রয়েছে দেশটির জাতীয় ফুটবল দল। ফলে জুনের আন্তর্জাতিক বিরতি শুরুর আগে ফেডারেশন যদি আনচেলত্তিকে দায়িত্ব অপর্ণ করতে ব্যর্থ হয়, সেক্ষেত্রে বিকল্প নামও ঠিক করে রেখেছে তারা। এক্ষেত্রে তাদের প্রথম পছন্দ সৌদি ক্লাব আল হিলালের কোচ হোর্গে হেসুস।
পিএসজি ছেড়ে ২০১৩ সালে প্রথমবার রিয়াল মাদ্রিদের হাল ধরেন আনচেলত্তি। ২০১৫ সাল পর্যন্ত বের্নাবেউতে কাটানোর পর বায়ার্ন মিউনিখ-নাপোলি-এভারটন ঘুরে ফের ২০২১ সালে রিয়ালে জিনেদিন জিদানের স্থলাভিষিক্ত হন এই ইতালিয়ান।
দুই দফায় তিনটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, দুটি লা লিগাসহ রিয়ালকে মোট ১৫টি শিরোপা জিতিয়েছেন তিনি। বর্ণিল রিয়াল মাদ্রিদ ক্যারিয়ারে আনচেলত্তি দলটিকে সম্ভাব্য সব শিরোপার স্বাদ পাইয়েছেন, যার মধ্যে রয়েছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ (৩), লা লিগা (২), কোপা দেল রে (২), স্প্যানিশ সুপার কাপ (২), উয়েফা সুপার কাপ (৩), ক্লাব বিশ্বকাপ (২) ও ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপ (১)।
আরও পড়ুন: আক্রমণভাগে পরিবর্তন আসায় দলে ভারসাম্যের অভাব দেখছেন আনচেলত্তি
৬ দিন আগে
অগ্নিঝরা ফাইনাল জিতে কোপা দেল রের শিরোপা পুনরুদ্ধার করল বার্সেলোনা
চার মৌসুম ধরে কোপা দেল রের শিরোপা খুঁজে চলা বার্সেলোনা মাঠে নামার আগেই রেফারিকাণ্ডে বিতর্ক ওঠে চরমে। তারপর খেলতে নেমে একের পর এক বিতর্কিত সিদ্ধান্ত, নাটকীয় পালাবদলের মধ্যে দিয়ে ম্যাচ যখন টাইব্রেকারের দিকে গড়াচ্ছে, তখনই কোথা হতে উড়ে এসে গোল করে বসলেন জুল কুন্দে, আর তাতেই দীর্ঘ দিনের অধরা শিরোপা নিয়ে উদযাপনে মাতল কাতালান জায়ান্টরা।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাতে সেভিলের লা কার্তুহা স্টেডিয়ামে রিয়াল মাদ্রিদকে ৩-২ গোলে হারিয়ে কোপা দেল রে শিরোপা পুনরুদ্ধার করেছে বার্সেলোনা। এর ফলে কোপার ৩২তম ট্রফি জয়ের উল্লাসে মেতেছে এই টুর্নামেন্টের রাজারা।
এদিন ম্যাচের শুরু থেকে নিজেদের খুঁজে চলা রিয়ালের ওপর ছড়ি ঘুরিয়ে ২৭তম মিনিটে দুর্দান্ত এক বুলেট শটে বার্সাকে লিড এনে দেন পেদ্রি। গোলটির কারিগর ছিলেন বার্সার ১৭ বছর বয়সী তারকা উইঙ্গার লামিন ইয়ামাল।
গোল খেয়ে ম্যাচের আধঘণ্টা পার হওয়ার পর থেকে ঘুরে দাঁড়াতে থাকে রিয়াল মাদ্রিদ। বিরতির সময় রদ্রিগোকে বসিয়ে কিলিয়ান এমবাপ্পেকে মাঠে নামিয়ে দিলে দলটির আক্রমণে ধার আরও বাড়ে। তারপর ৫৫তম মিনিটে লুকা মদ্রিচ ও আর্দা গুলের দলে ভারসাম্য এনে দেয়। এর ফলস্বরূপ ৭০ ও ৭৭তম মিনিটে এমবাপ্পে ও অরেলিয়েঁ চুয়ামেনি দুই গোল করে রিয়ালকে এগিয়ে নেন।
তবে বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি সেই লিড। ৮৪তম মিনিটে লামিন ইয়ামালের আরও একটি অ্যাসিস্ট থেকে অসাধারণ এক গোল করে বার্সাকে ম্যাচে ফেরান ফেররান তোরেস।
এরপর ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে গড়ালে দুই দলই জয়সূচক গোলটির সন্ধানে জোর চেষ্টা চালায়, কিন্তু ১১৬তম মিনিটে মদ্রিচের দুর্বল পাস আর ব্রাহিম দিয়াসের গড়িমসির সুযোগ নেন কুন্দে। ছুটে গিয়ে বল লুফে নিয়ে খানিকটা এগিয়ে গিয়েই রিয়ালের ডি-বক্সের বাইরে থেকে নেন চমৎকার একটি শট, আর তা ঝাঁপিয়ে পড়া থিবো কোর্তোয়াকে পরাস্ত করে জালে আছড়ে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে উল্লাস ছড়িয়ে যায় বার্সার ডাগআউট থেকে শুরু করে গ্যালারির অর্ধেক অংশে।
ওই গোলেই ম্যাচটি জিতে নেয় বার্সেলোনা। আর চরম হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় রিয়াল মাদ্রিদের খেলোয়াড়দের। অবশ্য ম্যাচের শেষদিকে বেঞ্চে থাকা আন্টোনিও রুয়েডিগার ও লুকাস ভাসকেসের পাওয়া দুটি লাল কার্ড সঙ্গী হয় তাদের।
ফলে সুপার কাপের পর কোপা দেল রের ফাইনালেও চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদকে বঞ্চিত করে টানা দুই শিরোপা ঘরে তুলল হান্সি ফ্লিকের শিষ্যরা। সেইসঙ্গে চলতি মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে তিন বারের দেখায় তিনটি ম্যাচই বার্সেলোনার কাছে হেরে গেল আনচেলত্তির শিষ্যরা।
আর কোয়াড্রাপল মিশনে সুপার কাপের পর কোপা দেল রে জয় করে অর্ধেক পথ পাড়ি দিয়ে ফেলল কাতালান জায়ান্টরা। এখন তাদের সামনে কেবল লা লিগা ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ।
লা লিগাতেও অবশ্য রিয়াল মাদ্রিদ ফাঁড়া কাটাতে হবে ফ্লিকের দলকে, তবে সেখানে চ্যালেঞ্জ অত কঠিন নয়। শুধু হার এড়িয়ে বাকি চারটি ম্যাচে আট পয়েন্ট সংগ্রহ করলেই চলবে। আর চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে ওঠায় দীর্ঘদিন ধরে অধরা এলিট ওই ট্রফিটি জিততে তাদের প্রয়োজন তিনটি ম্যাচ ভালোভাবে উৎরে যাওয়া।
মৌসুমের শেষভাগে এসে ক্লান্ত-বিধ্বস্ত দল নিয়ে তার কতটা পূরণ করতে পারবেন হান্সি ফ্লিক, তা এখন অজানা। তবে ওসব হিসাব আজ করছে বার্সেলোনা; কোপা দেল রে জিতে আজ কেবলই তাদের উদযাপনের সময়।
আরও পড়ুন: ফিরে আসা কাকে বলে, দেখিয়ে দিল বার্সেলোনা
ধ্রুপদী ফুটবলের রাতে গৌরবময় সময়ে ফেরার ইঙ্গিত বার্সেলোনার
রিয়ালকে ৫ গোল দিয়ে সুপার কাপ জিতল ১০ জনের বার্সেলোনা
৭ দিন আগে
মৌসুম শেষ কামাভিঙ্গার, ফাইনালে আলাবাকে নিয়ে সংশয়ে রিয়াল
গেতাফের বিপক্ষে কোনোরকমে জিতে লা লিগার শিরোপার দৌড়ে টিকে থাকলেও কোপা দেল রের ফাইনালের আগে দুঃসংবাদ দিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। চোটের কারণে মৌসুম শেষ হয়ে গেছে মিডফিল্ডার এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গার। এছাড়া ফাইনালে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছেন ডিফেন্ডার দাভিদ আলাবাও।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) রাতে আরদা গুলেরের গোলে গেতাফেকে ১-০ ব্যবধানে হারায় রিয়াল মাদ্রিদ। আলাবা শুরুর একাদশে থেকে ম্যাচ শুরু করলেও দ্বিতীয়ার্ধে বদলি নামেন কামাভিঙ্গা। তবে দুজনকেই মাঠ ছাড়তে হয় অস্বস্তি নিয়ে।
ম্যাচশেষে আনচেলত্তি জানান, কামাভিঙ্গা ও আলাবা পেশিতে টান পেয়েছেন। ফলে বার্সেলোনার বিপক্ষে ফাইনালে তাদের পাওয়ার আশা করছেন না তিনি।
কোচের সেই আশঙ্কা সত্যি করে আজ (বৃহস্পতিবার) এক বিবৃতিতে রিয়াল মাদ্রিদ জানিয়েছে, কামাভিঙ্গার বাঁ পায়ের অ্যাডাক্টর টেন্ডন সম্পূর্ণ ছিঁড়ে গেছে। ফলে অন্তত তিন মাস মাঠের বাইরে থাকতে হবে এই মিডফিল্ডারকে।
এর ফলে মৌসুমই শেষ হয়ে গেছে এই ফরাসি মিডফিল্ডারের। এমনকি আসন্ন ক্লাব বিশ্বকাপও খেলতে পারবেন না তিনি।
স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম কোপের রিয়াল মাদ্রিদ বিটের সাংবাদিক আরানচা রদ্রিগেস জানিয়েছেন, তিন মাস মাঠের বাইরে থাকতে হবে কামাভিঙ্গাকে। আগস্টের মাঝামাঝি লা লিগার পরবর্তী মৌসুম শুরুর হওয়ার সময় দলে ফিরবেন এই মিডফিল্ডার।
আরও পড়ুন: একাধিক সুযোগ নষ্ট করে গেতাফের হার, লড়াইয়ে টিকে রইল রিয়াল
কামাভিঙ্গাকে স্থায়ীভাবে হারালেও আলাবাকে নিয়ে যে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন আনচেলত্তি, সে বিষয়ে অবশ্য কিছুটা স্বস্তির খবর মিলেছে।
আরানচা জানিয়েছেন, আলাবার চোট ততটা গুরুতর নয়। আগামীকাল (শুক্রবার) তিনি যদি খুব বেশি অসুস্থ বোধ না করেন, তাহলে দলের সঙ্গে সেভিলে যেতে পারেন।
সেভিলের লা কার্তুহা স্টেডিয়ামে শনিবার কোপা দেল রের ফাইনালে মাঠে নামবে রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনা। এই ম্যাচের আগে কামাভিঙ্গার ছিটকে যাওয়া ও আলাবাকে নিয়ে সংশয় থাকায় রিয়ালের লেফট ব্যাক পজিশনে এখন একমাত্র নাম ফ্রান গার্সিয়া। তবে চলতি মৌসুমে তার পারফরম্যান্স খুব বেশি আশা জাগানিয়া নয়। ফলে ১৭ বছর বয়সেই ফুটবল বিশ্বের আলো কেড়ে নেওয়া লামিন ইয়ামালকে আটকাতে কী কৌশল অবলম্বন করবেন আনচেলত্তি, তার ওপর দলের সাফল্য অনেকাংশে নির্ভর করছে।
ফাইনাল ম্যাচে দলটির বেশ কয়েকজন খেলোয়াড় খেলতে পারবেন না। এদের মধ্যে দানি কারভাহাল ও এদের মিলিতাও চোট পেয়ে বেশ আগেই এই মৌসুমের জন্য দলের বাইরে চলে গেছেন। সেই তালিকায় এবার যুক্ত হলেন কামাভিঙ্গা। তাছাড়া দাভিদ আলাবা ও ফেরলঁ মঁদির খেলা নিয়েও রয়েছে সংশয়। পাশাপাশি চোটের কারণে কিলিয়ান এমবাপ্পে শনিবারের ফাইনালে খেলতে পারবেন কি না, তা এখনও নিশ্চিত নয়।
অন্যদিকে, এই ম্যাচের আগে বার্সেলোনা যে খুব ভালো অবস্থায় আছে, তা নয়। চোটের কারণে কাতালান দলটিও আছে বিপদে।
আরও পড়ুন: কষ্টের জয়ে এগিয়ে যাওয়ার রাতে বার্সেলোনা শিবিরে দুঃসংবাদ
লেগানেসের বিপক্ষে চলতি মাসের ১২ তারিখের ম্যাচে হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পেয়ে তিন সপ্তাহের জন্য মাঠের বাইরে চলে যান দলটির নিয়মিত একাদশের লেফট ব্যাক আলেহান্দ্রো বালদে। এরপর সেল্তা ভিগোর বিপক্ষে শনিবার (১৯ এপ্রিল) হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে পড়েন চলতি মৌসুমে বার্সার সর্বোচ্চ গোলদাতা রবের্ট লেভানডোভস্কিও। শুধু কোপার ফাইনালই নয়, ইন্টার মিলানের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালের দুই লেগেও তাকে না পাওয়া শঙ্কায় আছেন হান্সি ফ্লিক।
এছাড়া, পেশির চোটে অনেক আগেই মৌসুম শেষ হয়ে গেছে দলটির মাঝমাঠের দুই খেলোয়াড় মার্ক বের্নাল ও মার্ক কাসাদোর। ডিফেন্ডার আন্দ্রেয়াস ক্রিস্টেনসেন ও গোলরক্ষক মার্ক আন্দ্রে টের স্টেগেন অনুশীলনে ফিরলেও পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মধ্যেই আছেন তারা। মাঠে ফিরতে তাদের আরও কিছুটা দেরি আছে।
তাছাড়া বার্সেলোনার লা লিগা, কোপা দেল রে ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগে টানা ম্যাচ খেলার ধকল থাকলেও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে ছিটকে যাওয়ায় কিছুটা হলেও বেশি বিশ্রামের সুযোগ মিলবে রিয়াল মাদ্রিদের। সব মিলিয়ে দলের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের ছাড়াই কোপার ফাইনালে শনিবার রাতে মাঠে নামতে হচ্ছে দুই দলকে। ফলে দুই কোচের কৌশল ও ম্যাচ ব্যবস্থাপনার ওপর নির্ভর করছে কাদের হাতে উঠতে চলেছে এবারের কোপা দেল রে।
আরও পড়ুন: গুরুত্বপূর্ণ সময়ে লেভানডোভস্কির চোট, বিপদে বার্সেলোনা
৯ দিন আগে
একাধিক সুযোগ নষ্ট করে গেতাফের হার, লড়াইয়ে টিকে রইল রিয়াল
৩৬ শতাংশ পজেশন রেখেও ২০টি শট নিয়ে তার ছয়টি লক্ষ্যে রাখল গেতাফে। ম্যাচজুড়ে গোল করার চারটি পরিষ্কার সুযোগও তৈরি করল তারা। তবে গোল আর করা হয়ে উঠল না। বিপরীতে ১৪টি শটের সাতটি লক্ষ্যে রেখে দুটি পরিষ্কার সুযোগ তৈরি করে তা থেকেই ঠিকানা খুঁজে নিল রিয়াল মাদ্রিদ। আর তাতেই কোনোমতে ম্যাচ জিতে নিয়ে শিরোপার লড়াই আরও এক ধাপ এগিয়ে নিল কার্লো আনচেলত্তির দল।
বুধবার রাতে গেতাফের কলিসেউম স্টেডিয়ামে লা লিগার ৩৩তম রাউন্ডের ম্যাচটি ১-০ গোলে জিতেছে রিয়াল মাদ্রিদ।
আগের রাতে মায়োর্কাকে একই ব্যবধানে হারানোয় রিয়ালের সঙ্গে বার্সেলোনার পয়েন্ট ব্যবধান বেড়ে হয় সাত। তাই নিজেদের ম্যাচটি হারা তো দূর, ড্র করলেও লিগ শিরোপার লড়াই থেকে একপ্রকার ছিটকে যেত আনচেলত্তির দল। তবে জিতে সেই ব্যবধান ফের চারে নামিয়ে তা হতে দেয়নি গতবারের চ্যাম্পিয়নরা।
৩৩ ম্যাচে ২৪ জয় ও চার ড্রয়ে বার্সেলোনার পয়েন্ট ৭৬। সমান সংখ্যক ম্যাচে ২২ জয় ও ৬ ড্রয়ে নিজেদের পয়েন্ট ৭২-এ উত্তীর্ণ করেছে রিয়াল।
আরও পড়ুন: মায়োর্কার ওপর ছড়ি ঘুরিয়ে ফাইনালের প্রস্তুতি সারল বার্সেলোনা
শনিবারের কোপা দেল রের ফাইনালে দলের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়দের ফিট রাখতে বার্সার মতোই বেশ কয়েকজনকে বিশ্রামে রেখে একাদশ সাজান আনচেলত্তি।
চোটের কারণে এই ম্যাচে কিলিয়ান এমবাপ্পের না খেলার কথা জানা গিয়েছিল আগেই। এছাড়া আন্টোনিও রুয়েডিগার, জুড বেলিংহ্যাম, এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গা, লুকা মদ্রিচ ও রদ্রিগোকে এদিন বেঞ্চে রাখেন রিয়াল বস। এর ফলে ভিনিসিয়ুসের সঙ্গে আক্রমণভাগে খেলার সুযোগ পান ব্রাহিম দিয়াস ও এন্দ্রিক। মাঝমাঠে খেলতে নামেন আরদা গুলেরও।
একাদশে অদল-বদল হলেও প্রথমার্ধে অসাধারণ পারফর্ম করে রিয়াল মাদ্রিদ। অবশ্য তাদের সমানে জবাব দিয়ে যাচ্ছিল গেতাফেও।
তবে ২১তম মিনিটে গুলেরের চমৎকার এক গোলে এগিয়ে যায় রিয়াল। এ সময় ব্রাহিমের শট গোলরক্ষক ফিরিয়ে দিলে পরমুহূর্তে বক্সের বাইরে বল পেয়ে যান গুলের। জায়গা বানিয়ে নিয়েই ২০ গজ দূর থেকে জোরালো শট নেন এই তরুণ তুর্কি, গোলরক্ষক দাভিদ সরিয়া ঝাঁপিয়ে তাতে হাত ছোঁয়ালেও আটকাতে ব্যর্থ হন।
৩২তম মিনিটে দ্বিতীয় গোলটিও পেয়েই গিয়েছিল রিয়াল। এন্দ্রিকের শট সরিয়া প্রতিহত করলেও তা গোলের দিকে অগ্রসর হচ্ছিল। তবে শেষ মুহূর্তে গোললাইন থেকে বল ক্লিয়ার করেন গেতাফের এক ডিফেন্ডার।
১০ দিন আগে
মায়োর্কার ওপর ছড়ি ঘুরিয়ে ফাইনালের প্রস্তুতি সারল বার্সেলোনা
পুরো ম্যাচজুড়ে শট নিল চল্লিশটি, অথচ গোল পেল মাত্র একটি। হ্যাঁ, আপনি ঠিকই পড়ছেন। এমনটিই ঘটেছে মায়োর্কার বিপক্ষে বার্সেলোনার ম্যাচে। ফিনিশিংয়ে ব্যর্থতার এমনই এক রাতে অবশ্য জিতেই মাঠ ছেড়েছে কাতালানরা।
মঙ্গলবার রাতে লা লিগার ৩৩তম রাউন্ডের ম্যাচে ঘরের মাঠে মায়োর্কাকে ১-০ গোলে হারিয়েছে বার্সেলোনা। ম্যাচের একমাত্র গোলটি করেন দানি অলমো।
গত ১৫ বছরে লা লিগার কোনো দল এক ম্যাচে এত বেশি (৪০) শট নিতে পারেনি। ফ্লিকের বার্সেলোনার সৌজন্যে সেই বিরল ঘটনার সাক্ষী হলো ফুটবল বিশ্ব।
চোটে খেলোয়াড়দের অনুপস্থিতি এবং আসন্ন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচগুলোর কথা মাথায় রেখে টানা ম্যাচ খেলা একাদশের নিয়মিত খেলোয়াড়দের ছয়জনকে বদল করে নতুন একাদশ সাজিয়ে এদিন শিষ্যদের মাঠে নামান হান্সি ফ্লিক। তবে তাতে তার দলের পারফরম্যান্সে ভাটা পড়েনি।
অপরদিকে, গত কয়েক মৌসুম ধরে কোনোরকমে অবনমন এড়ানো মায়োর্কা চলতি মৌসুমে দারুণ পারফর্ম করে চলেছে। লিগ টেবিলের সাতে থাকা এই দলটির পারফরম্যান্স ছিল একেবারেই হতাশাজনক। ফলে তাদের ওপর পুরো ম্যাচজুড়ে ছড়ি ঘুরিয়েছে বার্সেলোনা।
৭৮ শতাংশ পজেশন ধরে রেখে ম্যাচজুড়ে মোট ৪০টি শট নেয় দলটি, যার ১৩টি ছিল লক্ষ্যে। অপরদিকে, মাত্র চারটি শট নিলেও একটিও লক্ষ্যে রাখতে পারেনি মায়োর্কা।
এর ফলে এক গোলের ব্যবধানে ম্যাচ জিতলেও আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে থেকে আগামী শনিবার অনুষ্ঠিত হতে চলা কোপা দেল রের ফাইনালের প্রস্তুতি সেরেছে কাতালান জায়ান্টরা। সেই সঙ্গে অনিয়মিত খেলোয়াড়দেরও ঝালিয়ে নেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন ফ্লিক।
চোটে ছিটকে যাওয়া লেভানডোভস্কি এবং রাফিনিয়াকে বিশ্রামে রাখায় এদিন কপাল খোলে আনসু ফাতির। তাকে বাঁ পাশে রেখে ফেররান তোরেস ও লামিন ইয়ামালকে নিয়ে আক্রমণ ত্রয়ী সাজান ফ্লিক।
আরও পড়ুন: গুরুত্বপূর্ণ সময়ে লেভানডোভস্কির চোট, বিপদে বার্সেলোনা
মাঠে নেমে প্রথম মিনিটেই গোলের উদ্দেশ্যে শট নেন ফাতি, তবে শটটি মায়োর্কার রক্ষণে আটকে যায়। এরপর সপ্তম থেকে নবম মিনিটের মধ্যে লামিনের দুটি ও ফেররানের একটি শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। দ্বাদশ মিনিটে ফেররান ও লামিনের জোড়া শট প্রতিহত করেন মায়োর্কা গোলরক্ষক লেও রোমান। সতীর্থের বাড়ানো থ্রু বল ধরে এগিয়ে গিয়ে প্রতিপক্ষের ডি-বক্সের সামনে থেকে জোরালো শট নেন ফেররান, গোলরক্ষক বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে তা ফিরিয়ে দিলে বল চলে আসে ডানপাশে থাকা লামিনের পায়ে। তিনি সেখান থেকে শট নিলেও বল লুফে নেন রোমান।
অষ্টাদশ মিনিটের শুরুতে দুর্দান্ত এক পাল্টা আক্রমণে উঠে গোল করার দারুণ এক সুযোগ তৈরি করে মায়োর্কা। তবে গোলমুখে বাড়ানো নিচু ক্রসে পা ছোঁয়াতে ব্যর্থ হওয়ায় এগিয়ে যাওয়ার সুযোগবঞ্চিত দলটি।
২৬তম মিনিটে গোল পেয়েই গিয়েছিলেন অলমো, কিন্তু তার অসাধারণ টোকায় গোলের উদ্দেশে বাড়ানো বলের দিক পরিবর্তন করে দেন রোমান। ২৯তম মিনিটে আত্মঘাতী গোল খাওয়া থেকে দলকে রক্ষা করেন তিনি। পরের মুহূর্তেই গাভির নেওয়া জোরালো শট ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে। তার কয়েক মুহূর্ত পর গোলমুখে বল পেয়েও বাইরে মারেন আরাউহো।
এই সময় থেকে মোটামুটি পাঁচ মিনিট মায়োর্কার খেলোয়াড়দের ওপর বুলডোজার চালাতে থাকে বার্সার খেলোয়াড়রা। একের পর এক আক্রমণ, শটে গোল আদায়ের জোরালো প্রচেষ্টা চালাতে থাকে দলটি। কিন্তু কোনোমতে বার্সার আক্রমণগুলো প্রতিহত করে ম্যাচে নিজেদের ধরে রাখে মায়োর্কা।
চল্লিশতম মিনিটে আরও একবার দুর্দান্ত আক্রমণ শানিয়ে তিন তিনবার গোলে শট নেন বার্সেলোনার খেলোয়াড়রা, তবে এবারও মায়োর্কার ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হন রোমান। ৪৪তম মিনিটে বাঁ পাশ থেকে বক্সে ঢুকে নেওয়া ফাতির শট পোস্টঘেঁষে বেরিয়ে যায়।
ফিরতি বল থেকেই আক্রমণে উঠে বার্সার রক্ষণ ভেঙে এগিয়ে গিয়ে গোল করেন আন্তোনিও সানচেস, তবে শেষ পর্যন্ত তা অফসাইডে কাটা পড়ে।
আরও পড়ুন: হারের শঙ্কা জাগিয়েও সাত গোলের থ্রিলার জিতল বার্সেলোনা
এর কিছুক্ষণ পর বিরতিতে যায় দুদল। বিরতির আগে প্রতিপক্ষকে চোখ রাঙিয়ে অসংখ্য সুযোগ তৈরি করলেও গোল আদায় করতে ব্যর্থ হয় স্বাগতিকরা। ৭৮ শতাংশ সময় পজেশন রেখে প্রথমার্ধে মোট ২৪টি শট নেয় বার্সেলোনা, যার ৬টি লক্ষ্যে ছিল। প্রথমার্ধে তিনিট ‘বিগ চান্স’ তৈরি করে দলটি, কিন্তু স্কোরবোর্ডে কিছুই যোগ করতে পারে না। অপরদিকে, নিজেদের ঘর সামলাতে ব্যস্ত থাকা মায়োর্কার আক্রমণের খাতা ছিল একেবারে শূন্য।
১১ দিন আগে
গুরুত্বপূর্ণ সময়ে লেভানডোভস্কির চোট, বিপদে বার্সেলোনা
আর্থিক সংকটের কারণে স্কোয়াডের ব্যাপ্তি বাড়াতে না পারার ফল এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে বার্সেলোনা। মৌসুমের শেষে এসে যখন সম্ভাব্য সবগুলো শিরোপা জয়ের সম্ভাবনা দলটির জন্য জোরালো হচ্ছে, ঠিক তখনই টানা ম্যাচ খেলে চলায় একের পর এক দলের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়রা চোট পেয়ে ছিটকে যাচ্ছেন।
শনিবার (২০ এপ্রিল) রাতে ঘরের মাঠে অসাধারণ এক প্রত্যাবর্তনে সেল্তা ভিগোর কাছ থেকে জয় ছিনিয়ে নেয় হান্সি ফ্লিকের দল।
দুই বছর পর লা লিগা শিরোপা ঘরে তুলতে শুধু এই ম্যাচটি নয়, লিগের অবশিষ্ট ম্যাচগুলোতেও জয়ের বিকল্প নেই কাতালানদের। তাছাড়া আগামী শনিবার কোপা দেল রের ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদের মুখোমুখি হবে তারা। এরপর ১ ও ৭ মে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ সেরি-আ চ্যাম্পিয়ন ইন্টার মিলান। ১১ মে-ই আবার লিগে রিয়ালকে ঘরের মাঠে আতিথ্য দেবে বার্সেলোনা। সব মিলিয়ে মহা গুরুত্বপূর্ণ কয়েক সপ্তাহ অপেক্ষা করছে দলটির সামনে।
আরও পড়ুন: হারের শঙ্কা জাগিয়েও সাত গোলের থ্রিলার জিতল বার্সেলোনা
মৌসুমজুড়ে যে পারফরম্যান্স উপহার দিয়ে এই পর্যায়ে এসেছে হান্সি ফ্লিকের দল, তাতে বার্সা সমর্থক থেকে শুরু করে ফুটবল সমালোচক—সবার কাছেই এ মৌসুমের সম্ভাব্য সব শিরোপার অন্যতম শক্তিশালী দাবিদার কাতালান জায়ান্টরা।
তবে নতুন ফরমেটের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ এবং সব প্রতিযোগিতায় এখন পর্যন্ত টিকে থাকায় পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়ার ফুসরত পাচ্ছেন না দলটির খেলোয়াড়রা, যার প্রভাব পড়ছে তাদের শরীরে। আর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ক্রমেই তা প্রকাশিত হয়ে এখন বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে দলটির জন্য।
সেল্তা ম্যাচে পায়ের পেশিতে টান লাগায় ৭৮তম মিনিটে মাঠ ছাড়েন দলের সর্বোচ্চ গোলদাতা রবের্ট লেভানডোভস্কি। এরপর আজ (রবিবার) তার স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর ভক্তদের দুঃসংবাদ শুনিয়েছে বার্সেলোনা। ক্লাবের বিবৃতিতে তার হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পাওয়ার খবর নিশ্চিত করা হয়েছে।
এই চোটের ফলে অন্তত তিন সপ্তাহ তাকে মাঠের বাইরে থাকতে হবে বলে একাধিক স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে। তা সত্যি হলে কোপা দেল রের মতো গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে তাকে পাবেন না ফ্লিক। তাছাড়া চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালের দুই লেগে তার খেলা নিয়েও তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।
আরও পড়ুন: ফিরে আসা কাকে বলে, দেখিয়ে দিল বার্সেলোনা
গত সপ্তাহে লিগ ম্যাচে চোটে পড়েন দলটির লেফট ব্যাক আলেহান্দ্রো বালদে। তিনিও হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পেয়ে তিন সপ্তাহের জন্য মাঠের বাইরে চলে গেছেন।
বালদের অনুপস্থিতিতে বার্সার রক্ষণ খানিকটা দুর্বল হয়ে গেছে। মাঠের খেলায় তা স্পষ্টতই চোখে পড়ে। এদিকে, দলটির সব শিরোপা জয়ের সম্ভাবনাকে সব শিরোপা হাতছাড়া হওয়ার আশঙ্কায় পরিণত করেছে লেভানডোভস্কির অনুপস্থিতি।
১৩ দিন আগে
কষ্টের জয়ে এগিয়ে যাওয়ার রাতে বার্সেলোনা শিবিরে দুঃসংবাদ
বলের দখলে আধিপত্য বিস্তার করলেও ধারহীন আক্রমণেরে কারণে ম্যাচজুড়ে ভুগতে হলো বার্সেলোনাকে। তবে ভাগ্যের ছোঁয়ায় প্রতিপক্ষের দেওয়া আত্মঘাতী গোল ও তাদের বেশ কয়েকটি আক্রমণ থেকে বেঁচে যাওয়ায় তিন পয়েন্ট নিয়েই মাঠ ছেড়েছে কাতালানরা।
মাদ্রিদের বুতার্কে স্টেডিয়ামে শনিবার (১২ এপ্রিল) রাতে লা লিগার ৩১তম রাউন্ডের ম্যাচটি ১-০ গোলে জিতেছে বার্সেলোনা।
এতে করে ২২ জয় ও চার ড্রয়ে ৭০ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে থাকা রিয়াল মাদ্রিদের চেয়ে সাত পয়েন্টে এগিয়ে গেছে হান্সি ফ্লিকের দল। এক ম্যাচ কম খেলে ৬৩ পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে রয়েছে গতবারের চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদ।
লিগে প্রথম দেখায় ঘরের মাঠে লেগানেসের বিপক্ষে একই ব্যবধানে হারে বার্সেলোনা। ফিরতি লেগে এসে তার প্রতিশোধ নিল তারা।
অবশ্য ঠিক প্রতিশোধ বলা চলে না। কারণ মাঠে প্রতিপক্ষের ওপর ছড়ি ঘোরালেও তেমনভাবে সুযোগ তৈরি করতে পারেনি দলটি। অন্যদিকে বেশ কয়েকটি দারুণ আক্রমণ শানিয়েছিল লেগানেস, তা থেকে গোলও আদায় করতে পারত দলটি। মাঝে একবার বল জালেও জড়িয়েছিল তারা, কিন্তু অফসাইডে গোলটি বাতিল হয়ে যায়। শেষের দিকে সময়ক্ষেপণ করে ওই এক গোলের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ার জন্য শিষ্যদের ইঙ্গিত করতে দেখা যায় ফ্লিককে। শেষ পর্যন্ত হয়েছেও তাই।
হারলেও ম্যাচ শেষে তাই কিছুটা তৃপ্তি ঝরেছে লেগানেস কোচ বোর্হা হিমেনেসের কণ্ঠেও, ‘আজ আমরা বার্সেলোনার মতো একটি দলকে সময় নষ্ট করতে এবং শেষের বাঁশি চাইতে বাধ্য করেছি।’
এই জয়ে শীর্ষস্থান মজবুত করে লিগ শিরোপা জয়ের দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল কাতালান জায়ান্টরা।
তবে পূর্ণ তিন পয়েন্ট অর্জনের রাতের স্বস্তিতে নেই দলটি। চোট পেয়ে প্রথমার্ধে বিরতির আগে মাঠ ছাড়তে হয় বার্সার তরুণ ফুলব্যাক আলেহান্দ্রো বালদেকে।
২১ দিন আগে
আতলেতিকোকে বিদায় করল বার্সেলোনা, কোপায় এল ক্লাসিকো ফাইনাল
সব প্রতিযোগিতা থেকে কার্যত ছিটকে যাওয়ায় কেবল কোপা দেল রে-ই ছিল আতলেতিকো মাদ্রিদের সামনে একমাত্র শিরোপা। ফলে ফাইনালে উঠতে যে দলটি চেষ্টার কোনো ত্রুটি রাখবে না, তা আগেই আন্দাজ করেছিলেন অনেকে। তবে চেষ্টা চালালেও ধারহীন ফিনিশিংয়ে সাফল্য পায়নি দিয়েগো সিমিওনের শিষ্যরা। হেরে বিদায় নিতে হয়েছে তাদের।
বুধবার রিয়াদ এয়ার মেত্রোপলিতানোয় কোপা দেল রের দ্বিতীয় সেমিফাইনালের ফিরতি লেগে বার্সেলোনার কাছে ১-০ গোলে হেরেছে লস রোহিব্লাঙ্কোসরা।
২৭তম মিনিটে ম্যাচের এক মাত্র গোলটি করেন ফেররান তোরেস। অবশ্য দ্বিতীয়ার্ধে একবার জালে বল পাঠান আতলেতিকোর অলেকসান্দার সোরলথ, কিন্তু অফসাইডের কারণে গোলটি আর গোনায় ধরা হয়নি। ফলে ৫-৪ অগ্রগামিতায় ফাইনাল নিশ্চিত করেছে হান্সি ফ্লিকের দল।
আরও পড়ুন: ৮ গোলের রোমাঞ্চকর লড়াই ড্র করেও ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদ
ম্যাচজুড়ে এদিন বেশ কয়েকবার বার্সেলোনার ওপর প্রবল চাপ সৃষ্টি করলেও একটি শটও লক্ষ্যে রাখতে পারেনি আতলেতিকো মাদ্রিদ। তাদের নেওয়া মোট ৬টি শটের পাঁচটি ছিল পোস্টের বাইরে, অন্যটি রক্ষণে কাটা পড়ে। অপরদিকে, বার্সেলোনার ১৪টি শটের পাঁচটি লক্ষ্যে ছিল।
গত ফেব্রুয়ারিতে প্রথম লেগের ম্যাচে শুরুর ৬ মিনিটের মধ্যে ২ গোল খেয়ে বসা বার্সেলোনা ঘুরে দাঁড়িয়ে ৮৩ মিনিট পর্যন্ত ৪-২ গোলে এগিয়ে ছিল। কিন্তু শেষ দিকে দুই গোল করে ম্যাচটি ৪-৪ গোলের সমতায় শেষ করে আতলেতিকো। ফলে ফিরতি এই লেগের ওপরই নির্ভর করছিল সেমিফাইনালের ভাগ্য। তাতে শেষ হাসি ফুটল কাতালান জায়ান্টদের মুখে।
এই জয়ে ২০২৫ সালে অপরাজেয় যাত্রা অব্যাহত রইল বার্সেলোনার। নতুন বছরে ২১টি ম্যাচ খেলে এখনও হারের মুখ দেখেনি দলটি। এর মধ্যে মাত্র দুটি ম্যাচ ড্র করেছে তারা, বাকি সবগুলোতে পেয়েছে জয়ের দেখা।
এছাড়া অবসর থেকে ফেরার পর বার্সেলোনার জার্সি গায়ে জড়িয়ে ১৯ ম্যাচ খেলে ফেলেছেন গোলরক্ষক ভয়চিয়েখ স্টান্সনি, যার ১৭ জিতেছেন এবং দুটি ম্যাচ ড্র হয়। এর মধ্যে ১০ ম্যাচে ক্লিনশিট ধরে রেখেছেন এই পোলিশ গোলরক্ষক।
৩১ দিন আগে
৮ গোলের রোমাঞ্চকর লড়াই ড্র করেও ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদ
বারবার এগিয়ে গিয়েও পা হড়কাতে বসা রিয়াল মাদ্রিদ প্রত্যাবর্তনের আরও একটি গল্প লিখে যখন ফাইনালের পথ ধরেছে, তখন যোগ করা সময়ে ফের গোল করে আরও একবার ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিলেন মিকেল ওইয়ারসাবাল। তবে অতিরিক্ত সময় শেষে ম্যাচ যখন টাইব্রেকারের দিকে এগোচ্ছে, তখন শেষ গোলটি করে রিয়ালকে ফাইনালে পৌঁছে দিলেন আন্টোনিও রুয়েডিগার।
অতি সংক্ষেপে কোপা দেল রের প্রথম সেমিফাইনালের ফিরতি লেগের বর্ণনা মোটামুটি এমনই। মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) রাতে রিয়াল সোসিয়েদাদের বিপক্ষে সান্তিয়াগো বের্নাবেউতে অনুষ্ঠিত ম্যাচটি ৪-৪ গোলে ড্র করেছে রিয়াল মাদ্রিদ।
তবে দুই লেগ মিলিয়ে ব্যবধান হয়ে থাকল প্রথম লেগে রিয়ালের করা একমাত্র গোলটি। ওই গোলের সুবাদে অগ্রগামিতায় ৫-৪ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে ফাইনাল নিশ্চিত করেছে কার্লো আনচেলত্তির শিষ্যরা।
এদিন ম্যাচের শুরু থেকে সোসিয়েদাদকে চেপে ধরে অগ্রগামিতায় দ্বিতীয়বারের মতো এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা শুরু করে রিয়াল মাদ্রিদ। তবে ষোড়শ মিনিটে দুর্দান্ত এক পাল্টা আক্রমণে উঠে ঘরের মাঠের সমর্থকদের স্তব্ধ করে দেন আন্দের বারেনেচিয়া।
পাবলো মারিনের হেডারে বাড়ানো পাস ধরে ক্ষিপ্র গতিতে এগিয়ে গিয়ে ওয়ান-অন-ওয়ানে আন্দ্রেই লুনিনকে পরাস্ত করেন এই স্প্যানিশ। ফলে রিয়ালের প্রথম লেগের অগ্রগামিতা ফিরতি লেগের শুরুতেই মিলিয়ে যায়।
তবে ৩০তম মিনিটে এন্দ্রিকের একক নৈপুণ্যে উল্লাসে মাতে বের্নাবেউ। ফলে আবারও লিড নেয় রিয়াল। এরপর দ্বিতীয়ার্ধে কোনোভাবেই আর এগিয়ে যাওয়া হয়ে উঠছিল না স্বাগতিকদের। অন্যদিকে, চাপে কোণঠাসা লা রিয়াল সমতায় ফেরার কথা যেন ভুলেই গিয়েছিল। এর মাঝে আক্রমণে ধার বাড়াতে এন্দ্রিককে উঠিয়ে কিলিয়ান এমবাপ্পেকে নামান আনচেলত্তি। তবে ৭২তম মিনিটে উল্টো এক আত্মঘাতী গোল খেয়ে বসে রিয়াল মাদ্রিদ।
আরও পড়ুন: আট গোলের থ্রিলারে শেষ হাসি আতলেতিকো মাদ্রিদের
প্রতিপক্ষের বক্সে ঢুকে দুরূহ কোণ থেকে দূরের পোস্টের দিকে শট নেন মারিন। গোলমুখ থেকে তা ক্লিয়ার করতে গেলে ডাভিড আলাবার পায়ে লেগে জালে জড়িয়ে যায়। ফলে অগ্রগামিতায় ২-২-এ সমতায় ফিরে পায়ের তলায় মাটি খুঁজে পায় সোসিয়েদাদ।
দ্বিতীয়বার সমতায় ফেরার আট মিনিট পর গোল করে লা রিয়ালকে জয়ের বন্দর দেখান ওইয়ারসাবাল। এবারও দুর্ভাগা আলাবার পায়ে লেগে ঠিকানা খুঁজে নেয় ওইয়ারসাবালের শট।
ম্যাচের তখন আর মিনিট দশেক বাকি। এ সময় প্রথমবারের মতো এগিয়ে যায় ইমানোলের শিষ্যরা। তবে অবিশ্বাস্যভাবে চার মিনিটে দুই গোল করে ম্যাচভাগ্য নিজেদের দিকে ঘুরিয়ে নেয় মাদ্রিদ।
৮২তম মিনিটে বেলিংহ্যাম ও ৮৬তম মিনিটে অরেলিয়েঁ চুয়ামেনি গোল করে চকিতে রিয়ালকে এগিয়ে নেন। অগ্রগামিতায় ফল তখন রিয়াল মাদ্রিদের পক্ষে, ৪-৩।
কিন্তু না! যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে ফের সোসিয়েদাদের ত্রাতা হয়ে ওঠেন ওইয়ারসাবাল। ফলে ৪-৩ গোলে সোসিয়েদাদ ম্যাচে এগিয়ে থাকলেও ৪-৪ অগ্রগামিতায় অতিরিক্ত সময়ে গড়ায় খেলা।
আরও পড়ুন: কোপা দেল রে: আরও একটি এল ক্লাসিকো ফাইনালের সম্ভাবনা
অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধে কেউ গোল না পাওয়ার পর দ্বিতীয়ার্ধেও সেই ধারা অব্যাহত থাকে। শেষে ম্যাচ যখন টাইব্রেকারের দিকে গড়াচ্ছে, তখনই গর্জন করে ওঠে বের্নাবেউ।
১১৫তম মিনিটে কর্নার থেকে আর্দা গুলেরের নেওয়া ক্রসে হেড দিয়ে রিয়ালকে কাঙ্ক্ষিত জয়সূচক গোলটি এনে দেন রুয়েডিগার। এরপর আর সোসিয়েদাদের ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব হয়নি। ফলে ফাইনালে পা রাখে রিয়াল মাদ্রিদ। আর মাদ্রিদ জায়ান্টদের তাদের মাঠে এসে চার গোল দিয়েও হতাশা নিয়ে ঘরে ফিরতে হয় সোসিয়েদাদকে।
দ্বিতীয় সেমিফাইনালের ফিরতি লেগে বুধবার রাতে মাঠে নামবে আতলেতিকো মাদ্রিদ ও বার্সেলোনা। প্রথম লেগে এই দুই দলের লড়াই শেষ হয় ৪-৪ ড্রয়ে। ফলে ফিরতি লেগে জয়ী দলই ফাইনালে রিয়ালের মুখোমুখি হবে।
৩২ দিন আগে
পাঁচ ম্যাচ নিষিদ্ধ আতলেতিকোর আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড
অবশেষে আশঙ্কাই সত্যি হলো। রেফারিকে অপমানজনক কথা বলায় লাল কার্ডের শাস্তিসসহ মোট পাঁচ ম্যাচের নিষেধাজ্ঞায় পড়েছেন আতলেতিকো মাদ্রিদের আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড আনহেল কোররেয়াকে।
ঘটনাটি এই রবিবারের (৯ মার্চ)। সেদিন গেতাফের মাঠে গিয়ে জিতে লা লিগার পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে ওঠার সুযোগ ছিল দিয়েগো সিমিওনের শিষ্যদের। ম্যাচের ৭৫তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল পেয়ে এগিয়ে গিয়েও ৮৮তম ও যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে গোল খেয়ে ম্যাচ হেরে সুযোগ হাতছাড়া করে দলটি।
তবে প্রথম গোল খাওয়ার কয়েক সেকেন্ড আগে গেতাফে ডিফেন্ডার দিয়েনেকে ফাউল করে প্রথমে হলুদ কার্ড দেখেন কোররেয়া। পরে ভিএআর রিভিউতে তা লাল কার্ডে উন্নীত হলে মাঠ ছাড়তে হয় এই ফরোয়ার্ডকে।
লাল কার্ডে সিদ্ধান্ত শুনে নিয়ন্ত্রণ হারান কোররেয়া। রেফারির সঙ্গে তর্ক জুড়ে দেন। এরপর তিনি যখন মাঠ ছাড়ছেন, তখনও রেফারিকে কিছু বলতে বলতে চলে যেতে দেখা যায় তাকে।
আরও পড়ুন: প্রথমে গোল পেয়েও হেরে সুযোগ হাতছাড়া করল আতলেতিকো
পরে স্প্যানিশ মিডিয়ায় দেওয়া সাক্ষাৎকারে রেফারি গিয়েরমো কুয়াদ্রা ফের্নান্দেস জানান, কোররেয়া তাকে অশ্লীল ভাষায় গালি দিয়েছেন। সেসব কথার প্রতিটি শব্দ তিনি তৎক্ষণাৎ নিজের নোটবুকে টুকে রাখেন এবং ম্যাচ শেষে লিগ কর্তৃপক্ষের কাছে তা উপস্থাপন করেছেন।
পরে অবশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্ট করে রেফারির সঙ্গে করা আচরণের জন্য ক্ষমা চান আতলেতিকো ফরোয়ার্ড।
তবে কোররেয়ার বিরুদ্ধে যেসব শব্দ প্রয়োগের অভিযোগ রেফারি তোলেন, তা সত্যি হয়ে থাকলে আইন অনুসারে তিনি সর্বোচ্চ ১২ ম্যাচের নিষেধাজ্ঞায় পড়তে পারেন বলে ফুটবল পাড়ায় আলোচানা-সমালোচনা হয়। অবশ্য সর্বোচ্চ শাস্তি না পেলেও অন্তত পাঁচ ম্যাচের নিষেধাজ্ঞায় তিনি যে পড়বেন, অনেকেই এ ব্যাপারে মত দেন।
অবশেষে অভিযোগ বিশ্লেষণ করে তাকে স্পেনের ঘরোয়া লিগে পরবর্তী পাঁচ ম্যাচ নিষিদ্ধ করেছে দেশটির ফুটবল ফেডারেশন। এই পাঁচ ম্যাচের প্রথমটি লাল কার্ডের শাস্তি হিসেবে এবং রেফারির সঙ্গে অভব্য আচরণের জন্য বাকি চার ম্যাচের শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
এর ফলে, লা লিগা ও কোপা দেল রেতে আসন্ন ম্যাচগুলোতে তাকে পাবে না আতলেতিকো মাদ্রিদ। এর মধ্যে আগামী রবিবার লা লিগার টেবিলের চূড়ায় থাকা বার্সেলোনার বিপক্ষে ম্যাচটি খেলতে পারবেন না আনহেল। এরপর লিগে এস্পানিওলের বিপক্ষে ম্যাচেও তিনি থাকতে পারবেন না।
আরও পড়ুন: আতলেতিকোর অপরাজেয় যাত্রা থামিয়ে ‘মাইলফলক’ রাঙাল রিয়াল
আতলেতিকোর তৃতীয় ম্যাচটি কোপা দেল রেতে। সেমিফাইনালের ফিরতি লেগে বার্সেলোনার বিপক্ষে ফের তাকে বাদ রেখে স্কোয়াড সাজাতে হবে দিয়েগো সিমিওনেকে। এরপর লা লিগায় সেভিয়া ও রিয়াল ভায়াদোলিদের বিপক্ষে দুটি ম্যাচেও তাকে খেলতে দেখা যাবে না।
তবে এই নিষেধাজ্ঞা স্পেনের বাইরে আরোপ না হওয়ায় চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলোর ফিরতি লোগে আজ (বুধবার) রাতে নগর প্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে খেলতে বাধা নেই দলটির।
প্রথম লেগে সান্তিয়াগো বের্নাবেউতে ২-১ গোলে হারে আতলেতিকো। ফলে ফিরতি লেগে আজ রাতের ম্যাচটি জয়ের বিকল্প নেই তাদের সামনে।
৫২ দিন আগে