টাইম ফ্লাইস
টাইম ফ্লাইস: ফ্রিদা কাহলো চরিত্রে আসছেন অ্যাডল্ফ খান
কিংবদন্তি চিত্রশিল্পী ফ্রিদা কাহলো চরিত্রে আসছেন প্রতিভাবান স্টাইল ডিজাইনার অ্যাডল্ফ খান। সাধারণত পর্দার পেছনেই কাজ করা এই ফ্যাশন শিল্পী তার নৈপুণ্য প্রদর্শন করবেন টাইম ফ্লাইস নামক একটি ফ্যাশন চলচ্চিত্রে।
পুরুষ হয়েও একজন নারী ব্যক্তিত্বকে চিত্রায়নের দুঃসাহসিক কাজটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিলেন অ্যাডল্ফ। শ্যুটিংসহ নির্মাণের যাবতীয় কাজ শেষে ইতোমধ্যে বেরিয়ে গেছে চলচ্চিত্রের টিজার পোস্টার। খুব কাছের মানুষজন ছাড়া অনেকেই চিনতে পারেননি ফ্রিদা কাহলোর মেকাপে থাকা অ্যাডল্ফকে।
অবশেষে ব্যক্তিগত সাক্ষাতকারের মাধ্যমে ভক্তদের সামনে তিনি প্রকাশ করেন নিজের অভিনয়ের কথা। চলুন, মুক্তির জন্য অপেক্ষমান এই সৃষ্টিশীল কাজটির ব্যাপারে কিছু জেনে নেয়া যাক।
টাইম ফ্লাইস: ফ্রিদা কাহলোর প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি
ফ্রিদা কাহলোর প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়ে নির্মিত ফ্যাশন ফিল্ম টাইম ফ্লাইস-এর পরিচালক স্বনামধন্য ফ্যাশন ডিজাইনার শাহরুখ আমিন টিঙ্কু। প্রতি বছরই বাংলাদেশ ফ্যাশন উইকে তার ডিজাইনের প্রদর্শনী থাকে। তার অন্যান্য ফিল্মগুলোর মধ্যে রয়েছে- আলমিরা, ফ্লাওয়ার পাওয়ার ও ইভিনিং রোজ।
অ্যাডল্ফ খানের মেকাপে কাজ করেছেন মনির্স বিউটি লাউঞ্জ-এর মনির হোসেন। আর পুরো সিনেমাটোগ্রাফির কাজ করেছেন মামুনুর হোসেন বিপু।
আরও পড়ুন: সালমান-ক্যাটরিনার 'টাইগার থ্রি' নিয়ে কেন এত বিতর্ক
মডেল হিসেবে অ্যাডল্ফকে নেওয়ার মূল কারণ তার চেহারার সঙ্গে এক অদ্ভূত মিল আছে ফ্রিদার চেহারার। এছাড়াও বিশ্ব জোড়া লাখ লাখ ডিজাইনারের মত অ্যাডল্ফও মনে প্রাণে লালন করেন এই মার্কিনী চিত্রশিল্পীকে।
চলতি সপ্তাহেই দর্শকদের দেখার জন্য উন্মুক্ত করা হবে ফিল্মটি।
অ্যাডল্ফ খান: প্রতিভাবান স্টাইল ডিজাইনার
পড়াশোনা কম্পিউটার প্রকৌশল নিয়ে হলেও মিডিয়ার প্রতি ভালবাসা থেকেই ফ্যাশন জগতে পদার্পণ অ্যাডল্ফ খানের। শুরুটা হয় প্রথমে মডেলিং দিয়েই। পাশাপাশি বেশ কিছু র্যাম্প শো’তে কোরিওগ্রাফার হিসেবে কাজ করতে থাকেন।
কয়েক বছর ধরে তিনি চিত্রনায়িকা নিপুণের ছবিগুলোর স্টাইল ডিজাইনার ছিলেন। এছাড়া ‘অটোগ্রাফ’ নামে তার নিজেরও একটি ফ্যাশন হাউজ রয়েছে।
আরও পড়ুন: নতুন চমক নিয়ে ‘দ্য মার্ভেলস’ আসছে বাংলাদেশে
মডেলিংয়ে সহজাত হয়ে ওঠার সময়েই ২০১১ সালে প্রতিষ্ঠা করেন তার নিজের অ্যাডলফ খান গ্রুমিং স্টুডিও। ধীরে ধীরে তিনি একাধারে হয়ে ওঠেন কোরিওগ্রাফার, ডিজাইনার ও গ্রুমার।
এর বাইরে তার আরও একটি পরিচয় আছে, আর তা হচ্ছে অভিনয়। আবু সাইয়ীদ পরিচালিত ‘জীবনমৃত্যু’, পার্থ সরকারের ‘আমাদের শার্লক হোমস’, নরেশ ভূঁইয়ার নির্দেশনায় ‘নীল অপরাজিতা ও উইপোকা’সহ বেশকিছু টিভি নাটকে তিনি অভিনয় করেছেন।
ইলোরা গহরের টেলিফিল্ম ‘উষ্ণীষ’ ও চলচ্চিত্র ‘উপনিষদ’-এ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় ছিলেন তিনি।
বর্তমানে নিজের নতুন ডিজাইনিং ফার্ম- রয়্যাল রেওয়াজ নিয়ে বেশ ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন অ্যাডল্ফ।
আরও পড়ুন: সামথিং লাইক অ্যান অটোবায়োগ্রাফি: তিশা-ফারুকীর জীবনের প্রতিচ্ছবি?
ফ্রিদা কাহলো: যিনি আত্ম-প্রতিকৃতিতে আঁকতেন জীবনের ছবি
পুরো নাম ম্যাগডালেনা কারমেন ফ্রিদা কাহলো ই ক্যালডেরোন। জন্ম ১৯০৭ সালের ৬ই জুলাই, মেক্সিকোতে।
নিজের প্রতিকৃতি আঁকার মধ্য দিয়ে তিনি বিশ্ব জুড়ে খ্যাতি লাভ করেন। নিজের জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো তাঁর মনের উপর যে প্রভাব ফেলতো সেগুলোকেই কাহলো ফুটিয়ে তুলতেন নিজের প্রতিকৃতিতে।
তিনি আজীবন বিভিন্ন স্বাস্থ্যজনিত জটিলতায় ভুগেছেন, যার বেশিভাগেরই মুল কারণ তার শৈশবে ঘটে যাওয়া এক সড়ক দুর্ঘটনা। এমনকি তাকে মাতৃত্বও হারাতে হয়েছিলো। সব মিলিয়ে শারীরিক ও মানসিক অসুস্থতার কারণে তিনি সব দিক থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিলেন। তাঁর একমাত্র বন্ধু ছিলো রঙ-তুলি আর ক্যানভাস।
মেক্সিকোর সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সম্বলিত তাঁর চিত্রগুলো আন্তর্জাতিকভাবে সমাদৃত হয়েছিলো। শুধু তাই নয়; কাহলোর বিষাদ মাখা ছবিগুলো ভিন্ন ভিন্ন অন্তদৃর্ষ্টির অবতারণা করেছিল। নারীর অভিজ্ঞতা ও রুপের আপোষহীন প্রকাশের জন্য কখনো সেগুলোর অর্থ দাড়িয়েছে নারীত্বের প্রতীক হিসেবে। কখনো চিত্রকর্মগুলোকে চিহ্নিত করা হয়েছে অর্বাচীন শিল্প বা লোকশিল্প হিসেবে। এমনকি রাজনৈতিক বেড়াজালেও জড়ানো হয়েছিলো তাঁর কাজগুলোকে।
আরও পড়ুন: সর্বোচ্চ আয়কারী ১০ দক্ষিণ ভারতীয় চলচ্চিত্র
পরাবাস্তববাদ হিসেবে আখ্যা দেওয়া এক মতবাদকে কাহলো স্পষ্টভাবে অস্বীকার করে বলেছিলেন যে, তাঁর ছবিগুলো বাস্তব অবস্থার প্রবল প্রতিফলন।
১৯৫৪ সালের ১৩ জুলাই মাত্র ৪৭ বছর বয়সে মারা যান এই চিত্রশিল্পী।
শেষাংশ
একদম প্রাথমিক পর্যায়ের স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র হলেও বাংলাদেশে ফ্রিদা কাহলোর এটিই প্রথম চিত্রায়ন। এই পরিপ্রেক্ষিতে, অভিনয়টি অ্যাডল্ফ খানের ক্যারিয়ারের জন্য নিঃসন্দেহে এক তাৎপর্যপূর্ণ কাজ হয়ে থাকবে। বেশভূষা অলঙ্করণের শিল্পী ও এই অঙ্গনে আগত নতুন অনুসারীদের জন্য এক বিস্তৃত মাইলফলক তো বটেই! সেই সাথে মুলধারার অথবা নিদেনপক্ষে স্বাধীন পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণের আবেদন রেখে যাবে এই ফ্যাশন চলচ্চিত্রটি।
আরও পড়ুন: ওয়েব সিরিজে জুটি বাঁধলেন শুভ ও সোহিনী
১ বছর আগে