মিধিলি
ফেনীতে ঘূর্ণিঝড় মিধিলি: গাছ পড়ে যোগাযোগ বন্ধ
ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে ফেনী শহর ও উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ঝড়ে গাছ ভেঙে সড়কে উপড়ে পড়েছে। এতে সড়কে যান চলাচল ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি বিদ্যুৎহীন অবস্থায় দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
এদিকে রাতে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গাছ কেটে যান চলাচল স্বাভাবিক করে। অন্যদিকে ঝড়ো বাতাসে ২৮২ হেক্টর জমিতে পাকা ও আধপাকা আমন ধান নুয়ে পড়েছে। গাছ ভেঙে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বৈদ্যুতিক খুঁটি। এতে জেলার বেশিরভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।
অন্যদিকে জেলায় শীতকালীন সবজি আবাদ হয়েছে দুই হাজার ৩৯২ হেক্টর, দুর্যোগের কবলে পড়েছে ২৩ হেক্টর। সরিষা আবাদ হয়েছে ২০ হেক্টর জমিতে, দুর্যোগ কবলিত দুই হেক্টর জমির সরিষা।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় মিধিলি: উপকূলবর্তী ফায়ার স্টেশনগুলোতে উচ্চ সতর্কতা জারি
এ ছাড়া দুর্যোগের কবলে পড়েছে আধা হেক্টর জমির খেসারি। ঝড়ের কারণে ধানের তেমন ক্ষতি না হলেও রবিশস্য আবাদ পিছিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় মিধিলি ও ভারতীয় উজানের পানিতে মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে ফুলগাজী বাজার প্লাবিত হয়েছে। শনিবার ভোরে ফুলগাজীর ভেতরের বাজার (কাঁচা বাজার) সংলগ্ন এলাকায় মুহুরী নদীর পানি গার্ডারের নিচ দিয়ে প্রবেশ করে। এতে ফেনী-পরশুরাম সড়কের কিছু অংশ পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্লাবিত হয়।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আরিফুর রহমান জানান, পরশুরামের শালধরে একটি বাঁধের মেরামত কাজ চলছিল। সেখানে বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়ে লোকালয়ে কিছুটা পানি প্রবেশ করেছে। পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে গেছে।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সুত্রে জানা যায়, দমকা হাওয়ায় জেলায় ৫৫টি ঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনটি ঘরের চাল উড়ে গেছে।
ফেনী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জিএম হাওলাদার মো. ফজলুর রহমান বলেন, বৃষ্টির সঙ্গে দমকা হাওয়া ও গাছ ভেঙে পড়ে ৫৫টি বৈদ্যুতিক খুঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ১৭২টি স্থানে বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, বিদ্যুৎহীন অবস্থায় দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। জেলার প্রায় ৬০ শতাংশ জায়গায় এখনো বিদ্যুৎ সংযোগ সচল হয়নি। বিদ্যুৎ কর্মীরা নিরবচ্ছিন্ন কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
ফেনীর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক একরাম উদ্দিন বলেন, দুর্যোগ আক্রান্ত আমন ফসলি জমির মধ্যে ফেনী সদর উপজেলায় ১১০ হেক্টর, ছাগলনাইয়ায় ৭০ হেক্টর, ফুলগাজীতে ১৫ হেক্টর, পরশুরামে ২০ হেক্টর, দাগনভূঞায় ১৭ হেক্টর ও সোনাগাজীতে ৫০ হেক্টর।
এছাড়া শীতকালীন সবজি ও সরিষা চাষ হয়েছে ফেনী সদর উপজেলায় ৬ হেক্টর, ছাগলনাইয়ায় সাড়ে ৪ হেক্টর, ফুলগাজীতে আড়াই হেক্টর, পরশুরামে ২ হেক্টর, দাগনভ‚ঞায় ৫ হেক্টর, সোনাগাজীতে ৫ হেক্টর, খেসারি আধা হেক্টর। ফেনীতে ১৭ নভেম্বর বৃষ্টিপাত হয়েছে ১৭ দশমিক ৩৩ মিলিমিটার ও ১৮ নভেম্বর বৃষ্টিপাত হয়েছে ৬১ দশমিক ৩৩ মিলিমিটার।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় মিধিলি'র প্রভাবে ঢাকার বাতাসের মানে উন্নতি
তিনি আরও বলেন, ঝড়ো বাতাসের কবলে ধান হেলে পড়েছে।আক্রান্ত ধানের স্তর দানা ও পাকা পর্যায়ে রয়েছে। সবজি ও অন্যান্য আক্রান্ত ফসল আর বৃষ্টি না হলে সম্পূর্ণ ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা নেই।
পরশুরামের বীরচন্দ্র নগর এলাকার কৃষক মো. আলী বলেন, ফলন ভালো হলেও আমন ধান ঘরে তুলতে পারব কি না জানি না। বাতাসে ২০ শতকের বেশি জমির ধান নুয়ে পড়েছে। এছাড়া সকাল থেকে বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক নেই। সবকিছু স্বাভাবিক না হলে আমাদের দুর্ভোগ আরও বাড়বে।
ফেনী সদর উপজেলার কালিদহ ইউনিয়েনের কে. পাহালিয়া এগ্রোর উদ্যোক্তা মো. মজিবুল হক রিপন বলেন, ঝড়ে এগ্রো ফার্মে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। একশর বেশি পেঁপে গাছ ভেঙে পড়েছে। প্রতিটি গাছে এক-দেড় মণ পেঁপে ছিল।
ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানিয়া ভূইয়া বলেন, সড়কের যেসব স্থানে গাছ পড়েছে তা রাতে থেকে সরানোর কাজ শুরু হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস গাছ সরিয়ে যানচলাচল স্বাভাবিক করেছে।
সোনাগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুল হাসান বলেন, পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের জন্য ২৪ ঘণ্টার কন্ট্রোল রুম খোলা রয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি চিহ্নিত হলে সহযোগিতা দেওয়া হবে।
ফেনী জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার বলেন, মিধিলির প্রভাবে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের কাজ চলছে। ঘর ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে টিন দিয়ে সহযোগিতা করবে জেলা প্রশাসন। এই মুহুর্তে নগদ ২১ লাখ টাকা ও প্রায় ৮৯০ টন চাল রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, শিশু ও গো-খাদ্যের জন্য ১০ লাখ টাকা করে বরাদ্দ রয়েছে। গত বছরের ৪২ বান্ডেল টিন আছে যা অনুমতি সাপেক্ষে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় মিধিলি: সারা দেশে ৫১টি স্থানে ভেঙে পড়া গাছ সরিয়েছে ফায়ার সার্ভিস
১১ মাস আগে
ঘূর্ণিঝড় মিধিলি: উপকূলবর্তী ফায়ার স্টেশনগুলোতে উচ্চ সতর্কতা জারি
দুর্যোগপ্রবণ এলাকায় ঘূর্ণিঝড় মিধিলির জন্য প্রস্তুত থাকতে বাসিন্দাদের ক্রমাগত সতর্ক করছে মোট ৫১টি ফায়ার স্টেশন।
ঘূর্ণিঝড়ের আগে, চলাকালীন ও ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী সব ধরনের কার্যক্রম সমন্বয়ের জন্য ঢাকায় ফায়ার সার্ভিসের সদর দপ্তরে একটি কেন্দ্রীয় মনিটরিং সেল স্থাপন করা হয়েছে।
এ ছাড়া খুলনা, চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের নিয়ন্ত্রণ কক্ষগুলো সার্বক্ষণিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। খুলনায় বিভাগীয় মনিটরিং সেল গঠন করা হয়েছে।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিরাপত্তা সেবা বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় ফায়ার সার্ভিস সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিনের নির্দেশনা অনুযায়ী উপকূলীয় অঞ্চলের ১৩টি জেলার ৫১টি ফায়ার স্টেশনের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সতর্ক ডিউটিতে রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় মিধিলি: চট্টগ্রামে পাহাড় ধসের আশঙ্কায় মাইকিং
দুর্যোগপ্রবণ এলাকায় জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রতিটি ফায়ার স্টেশনে সার্চ ও রেসকিউ টিম, ফার্স্ট এইড টিম ও ওয়াটার রেসকিউ টিম প্রস্তুত রয়েছে।
অ্যাম্বুলেন্স, চেইন করাত, হাত করাত, রোটারি রেসকিউ করাত, স্প্রেডার, মেগাফোন, রাম জ্যাক বা এয়ার লিফটিং ব্যাগ, ফার্স্ট এইড বক্স, প্রয়োজনীয় সংখ্যক অগ্নিনির্বাপক এবং উদ্ধার সরঞ্জামসহ অন্যান্য সরঞ্জাম প্রস্তুত রয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবকদের সহায়তায় রাস্তাগুলোকে যান চলাচলের উপযোগী করতে ঘূর্ণিঝড়-পরবর্তী অনুসন্ধান ও উদ্ধার কাজে নিয়োজিত থাকবে।
এসব এলাকায় জান-মালের সুরক্ষা সংক্রান্ত যেকোনো কাজের জন্য দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা ফায়ার সার্ভিস ব্যবহার করা যায়।
সব আশ্রয়কেন্দ্রের পাশাপাশি সাধারণ মানুষ প্রয়োজনে উপকূলীয় ফায়ার স্টেশনেও আশ্রয় নিতে পারে। ফায়ার সার্ভিস মনিটরিং সেল, সেন্ট্রাল কন্ট্রোল রুম এবং সব বিভাগীয় কন্ট্রোল রুম ২৪ ঘন্টা খবর সংগ্রহে নিয়োজিত থাকবে।
যেকোনো জরুরি প্রয়োজনে নিকটস্থ ফায়ার স্টেশন, বিভাগীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ, কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের হটলাইন নম্বর ১৬১৬৩ বা কেন্দ্রীয় মনিটরিং সেলের জরুরি মোবাইল নম্বর ০১৭৩০৩৩৬৬৯৯-এ কল করার জন্য সবাইকে অনুরোধ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় মিধিলি: অভ্যন্তরীণ নৌযান চলাচল বন্ধ
ঘূর্ণিঝড় মিধিলি: চট্টগ্রাম বন্দরে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত
১১ মাস আগে
ঘূর্ণিঝড় মিধিলি: চট্টগ্রামে পাহাড় ধসের আশঙ্কায় মাইকিং
ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে চট্টগ্রামে পাহাড় ধসের আশঙ্কা থাকায় শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) পাহাড়ের পাদদেশের ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে মাইকিং করছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) ও জেলা প্রশাসন।
সকাল থেকে আকবর শাহ এক নম্বর, দুই নম্বর, তিন নম্বর ঝিল ও বিজয়নগর, লালখান বাজার মতিঝর্ণা এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উমর ফারুক বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে পাহাড় ধসের আশঙ্কায় পাহাড় অধ্যুষিত এলাকার জনসাধারণকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে সচেতনতামূলক মাইকিং করা হচ্ছে। এ ছাড়া পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় মিধিলির সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে দামপাড়া এলাকায় চসিকের বিদ্যুৎ বিভাগে চালু করা হয়েছে জরুরি কন্ট্রোল রুম।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় মিধিলি: চট্টগ্রাম বন্দরে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত
শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) চসিকের পক্ষ থেকে দেওয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দুর্যোগকাল শেষ না হওয়া পর্যন্ত কন্ট্রোল রুম থেকে ২৪ ঘণ্টা দুর্যোগকবলিত জনগণের প্রয়োজনীয় সেবা দেওয়া হবে। কন্ট্রোল রুমের নম্বর- ০২৩৩৩৩৫৩৬৪৯।
চসিকের গৃহীত পদক্ষেপ সম্পর্কে মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, বৃহস্পতিবার রাতেই ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের নিজ নিজ ওয়ার্ডের ঝুকিপূর্ণ এলাকায় অবস্থানরত জনসাধারণকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়ার বিষয়টি আন্তরিকতার সঙ্গে তদারক করতে নির্দেশ দিয়েছি। তিনি আরও বলেন, চসিকের সব বিভাগ দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে সক্রিয় আছে। এ ছাড়া, মাইকিংসহ ঝুকিপূর্ণ এলাকা থেকে লোক সরিয়ে নিতে রেড ক্রিসেন্টও সহযোগিতা করছে।
আরও পড়ুন: মোংলা-পায়রা উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করেছে ঘূর্ণিঝড় 'মিধিলি'
ঘূর্ণিঝড় মিধিলি: সন্ধ্যা নাগাদ মোংলা-পায়রা উপকূল অতিক্রম করতে পারে
১১ মাস আগে
ঘূর্ণিঝড় মিধিলি: চট্টগ্রাম বন্দরে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত
বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড় মিধিলির সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি থেকে বাঁচতে শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) চট্টগ্রাম বন্দরে দ্বিতীয় সবোর্চ্চ ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত জারি করা হয়েছে। একইসঙ্গে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে সব ধরনের পণ্য উঠা-নামা।
বন্দরে অবস্থানরত সব বিদেশি জাহাজের শ্রমিক-কর্মচারীদেরও নিরাপদে নামিয়ে আনা হয়েছে নিরাপদ আশ্রয়ে।
সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে বন্দরের জেটিতে অবস্থানরত ২২টি জাহাজকে গভীর সমুদ্রে চলে যেতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে, বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড় মিধিলি শুক্রবার সন্ধ্যা নাগাদ খেপুপাড়ার কাছ দিয়ে মোংলা-পায়রা উপকূল অতিক্রম করতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আর ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রভাগ আজ দুপুর নাগাদ উপকূল অতিক্রম শুরু করতে পারে।
আরও পড়ুন: নভেম্বরের বৃষ্টিতে ভিজছে ঢাকা
এদিকে পণ্যবাহী জাহাজ বহির্নোঙরে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বন্দরে পণ্যভর্তি কনটেইনার ও যন্ত্রপাতি সুরক্ষিত রাখার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক আজিজুর রহমান জানিয়েছেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় মিধিলি আরও উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে আজ শুক্রবার দুপুর নাগাদ ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রভাগ উপকূল অতিক্রম করবে। আর সন্ধ্যা নাগাদ পটুয়াখালীর খেপুপাড়ার কাছ দিয়ে মোংলা-পায়রা উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
এ সময় উপকূলীয় জেলা, অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩-৫ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ু তাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘন্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।
আরও পড়ুন: মোংলা-পায়রা উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করেছে ঘূর্ণিঝড় 'মিধিলি'
ঘূর্ণিঝড় মিধিলি: সন্ধ্যা নাগাদ মোংলা-পায়রা উপকূল অতিক্রম করতে পারে
১১ মাস আগে
ঘূর্ণিঝড় মিধিলি: অভ্যন্তরীণ নৌযান চলাচল বন্ধ
ঘূর্ণিঝড় 'মিধিলি' উপকূলের দিকে অগ্রসর হওয়ায় শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে অভ্যন্তরীণ ও উপকূলীয় সব রুটে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।
পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ নির্দেশনা বহাল থাকবে বলে জানিয়েছে বিআইটিডব্লিউএ।
উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় ঘূর্ণিঝড় 'মিধিলি' অবস্থান করায় পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলেছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় মিধিলি: চট্টগ্রামে ৬০৯টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত
এদিকে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরগুলোকেও ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়টি উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে শুক্রবার সন্ধ্যার মধ্যে খেপুপাড়ার কাছে মোংলা-পায়রা উপকূল অতিক্রম করতে পারে। আর ঘূর্ণিঝড়টি শুক্রবার দুপুরের মধ্যে উপকূল অতিক্রম শুরু করতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর (বিএমডি)।
আরও পড়ুন: মোংলা-পায়রা উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করেছে ঘূর্ণিঝড় 'মিধিলি'
১১ মাস আগে
মোংলা-পায়রা উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করেছে ঘূর্ণিঝড় 'মিধিলি'
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় 'মিধিলি' উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় (২১ দশমিক ২ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯ দশমিক ২ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) অবস্থান করছে।
শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) অধিদপ্তর আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি আজ দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৩১০ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৩১০ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১৫০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল।
এতে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রভাগ আজ দুপুরে পটুয়াখালীর খেপুপাড়ার কাছ দিয়ে মোংলা-পায়রা উপকূল অতিক্রম শুরু করেছে এবং আরো উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে আজ সন্ধ্যা নাগাদ অতিক্রম সম্পন্ন করতে পারে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং এর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের উপর দিয়ে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ ভারী (৪৪-৮৮ মিলিমিটার) থেকে অতিভারী (৮৯ মিলিমিটার বা এর বেশি) বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় মিধিলি: চট্টগ্রামে ৬০৯টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।
এদিকে, পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা লক্ষ্মীপুর, ফেনী, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩-৫ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ু তাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় মিধিলি: সন্ধ্যা নাগাদ মোংলা-পায়রা উপকূল অতিক্রম করতে পারে
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে ভারী (৪৪-৮৮ মিলিমিটার) থেকে অতি ভারী (৮৯ মিলিমিটার বা এর বেশি) বর্ষণ হতে পারে।
অতি ভারী বর্ষণের প্রভাবে চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমি ধ্বস হতে পারে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
অন্যদিকে, আবহাওয়া অধিদপ্তরের আজ সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, খুলনা, যশোর, কুষ্টিয়া, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার অঞ্চলসমূহের উপর দিয়ে পূর্ব বা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ৩ নম্বর নৌ বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
এছাড়া, দেশের অন্যত্র একই দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: টেকনাফে মাটির দেয়াল ধসে একই পরিবারের ৪ জন নিহত
১১ মাস আগে