ঢাকা মেট্রোরেলের এমআরটি পাস
ঢাকা মেট্রোরেলের এমআরটি, র্যাপিড পাস পাওয়ার উপায়
২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর উত্তরা থেকে আগারগাঁও এমআরটি (মাস র্যাপিড ট্রানজিট)-৬ চালুর মধ্য দিয়ে মেট্রো যুগে প্রবেশ করে বাংলাদেশ। গত ৪ নভেম্বর চালু হয়েছে উত্তরা থেকে মতিঝিল মেট্রো রেলপথ। যানজটমুক্ত এই পরিবহন ব্যবস্থা প্রতিদিন-ই রক্ষা করছে লাখ লাখ কর্মঘণ্টা। উন্নত এই পরিষেবা গ্রহণকে সহজ ও সাবলীল করতে এর টিকেট পদ্ধতিতেও আনা হয়েছে অত্যাধুনিকতা। প্রথম দিকে ছিল এসজেটি (সিঙ্গেল জার্নি ট্রান্সপোর্ট) বা সিঙ্গেল পাস এবং এমআরটি পাস। ২০২৩-এর সেপ্টেম্বর থেকে এগুলোর সঙ্গে সংযোজিত হয় র্যাপিড পাস। আজকের নিবন্ধের মূল আলোচনা এমআরটি এবং র্যাপিড পাস পাওয়ার উপায় নিয়ে। চলুন, স্থায়ী যাত্রার জন্য প্রস্তুতকৃত এবং কাগুজে টিকেটের বিকল্প পরিবহন কার্ড দুটির ব্যাপারে বিস্তারিত জেনে নিই।
এমআরটি পাস কি
এই নতুন টিকেট ব্যবস্থাটি বুঝতে হলে প্রথমে জানতে হবে এনএফসি (নেয়ার-ফীল্ড কম্যুনিকেশন) প্রযুক্তির ব্যাপারে। এটি এমন একটি প্রযুক্তি যার মাধ্যমে সংযোগ স্থাপন বা খুব কম দূরত্বের মধ্যে সংযোগ বিহীনভাবে একাধিক ইলেক্ট্রনিক ডিভাইসের মধ্যে তথ্য স্থানান্তর করা যায়। এটি বিশ্বব্যাপী স্মার্টকার্ড এবং কার্ড রিডার বা গ্রাহক যন্ত্রের ইন্টারফেসকে তথ্য স্থানান্তরের জন্য সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে ব্যবহার করা হয়।
মাস র্যাপিড ট্রানজিট বা এমআরটি পাস এই এনএফসি প্রযুক্তি ভিত্তিক ইলেক্ট্রনিক চিপ সম্বলিত একটি স্মার্ট কার্ড। ঢাকা মাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) বারবার টিকেট কাটার বিকল্প হিসেবে চালু করেছে এই স্থায়ী যাত্রা কার্ডটি।
এতে টাকা রিচার্জ করে ইচ্ছে মতো মেট্রোরেল ভ্রমণ করা যাবে। ঝামেলা বিহীন ভাড়া পরিশোধের উদ্দেশ্যে তৈরি করা এই কার্ডটির মেয়াদ থাকছে ১০ বছর।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ সরকারকে ৫৫ কোটি টাকা দিয়ে মেট্রোরেলের ঋণের প্রথম কিস্তি পরিশোধ
এমআরটি পাস পাওয়ার উপায়
মেট্রোরেলের যে কোনও স্টেশনের টিকেট কাটার মেশিনের কাছে অ্যাক্সেস ফেয়ার অফিস বা কাস্টমার সার্ভিস সেন্টার থেকে ক্রয় করা যাচ্ছে এমআরটি পাস কার্ড। প্রথম দিকে পাস নেয়ার সময়সীমা সকাল সাড়ে ৭ টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত থাকলেও এখন দুপুর ১২টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত করা হয়েছে।
এমআরটি পাসের জন্য নিবন্ধন প্রক্রিয়া
এই স্থায়ী যাত্রা কার্ডটি করার সময় শুধুমাত্র একটি নথি প্রয়োজন হবে, আর সেটা হচ্ছে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি কার্ড)। তবে বিকল্প হিসেবে জন্ম নিবন্ধন বা ড্রাইভিং লাইসেন্স কিংবা পাসপোর্ট; যে কোনও একটি সরবরাহ করা যেতে পারে।
স্টেশনের যেখানে টিকেট কাটা হয় তার কাছাকাছি রয়েছে অ্যাক্সেস ফেয়ার অফিস বা কাস্টমার সার্ভিস সেন্টার। সেখানে গিয়ে দায়িত্বরত কর্মকর্তাকে পাস কার্ড নেয়ার ব্যাপারটি জানানো হলে তারা একটি ফর্ম সরবরাহ করবে।
এবার এনআইডি অনুসারে নাম, পিতা বা স্বামীর নাম, মাতার নাম, জন্ম তারিখ, নিজের জেলা, এনআইডি সংখ্যা প্রভৃতি তথ্যগুলো দিয়ে ফর্মটি পূরণ করতে হবে। এগুলো বাদে অন্যান্য যে তথ্যাদির দিতে হবে সেগুলো হলো- লিঙ্গ, জাতীয়তা, এবং মোবাইল নাম্বার। সবশেষে ফর্মের নিচের শেষ প্রান্তে নির্দিষ্ট স্থানে সই ও তারিখ দিয়ে পূরণকৃত ফর্মটি কর্মকর্তার নিকট জমা দিতে হবে।
আরও পড়ুন: মেট্রোরেল ও পদ্মা সেতু প্রমাণ করে আ. লীগ কথায় নয় কাজে বিশ্বাসী: কাদের
এই নিবন্ধন প্রক্রিয়াটি ঘরে বসেও সম্পন্ন করা যাবে। পাস কার্ডের নিবন্ধন ফর্ম ডাউনলোড করা যাবে মেট্রোরেলের ওয়েবসাইট থেকে। অতঃপর তা পূরণ করে কাছাকাছি স্টেশনে গিয়ে জমা দিয়ে আসতে হবে।
ফর্ম জমা দেয়ার ২ থেকে ৩ মিনিটের মধ্যেই কর্মকর্তা তথ্য যাচাই পূর্বক একটি সক্রিয় যাত্রা কার্ড প্রদান করবেন। চাইলে সঙ্গে সঙ্গে এটি দিয়ে এন্ট্রি গেইটে পাঞ্চ করে মেট্রোরেলে প্রবেশ করা যাবে।
এমআরটি পাস ফি
ফর্ম জমা দেয়ার সময় কার্ড প্রক্রিয়াকরণ ফি বাবদ ৫০০ টাকা প্রদান করতে হবে। এই খরচের মধ্যে ২০০ টাকা হচ্ছে কার্ডের মূল্য। আর বাকি ৩০০ টাকা থাকবে নিবন্ধনকারির কার্ডে ব্যবহারযোগ্য ব্যালেন্স হিসেবে।
১ বছর আগে