দৃষ্টিনন্দন স্ট্রিট আর্ট
দৃষ্টিনন্দন স্ট্রিট আর্টে পোস্টার লাগালে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি ডিএনসিসি মেয়রের
রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে যেসব দৃষ্টিনন্দন শিল্পকর্ম (স্ট্রিট আর্ট) বা গ্রাফিতি আঁকা করা হয়েছে, সেগুলোর উপর পোস্টার লাগালে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, 'আমরা শহরকে দৃষ্টিনন্দন করার অনেক কাজই করি। কিন্তু দুঃখের বিষয়, সে কাজগুলো কিছুদিন পরেই পোস্টারের আড়ালে ঢেকে যায়। মহাখালীতে যে দৃষ্টিনন্দন স্ট্রিট আর্ট করা হয়েছে, তার ওপর আমি কোনো পোস্টার দেখতে চাই না। যে পোস্টার লাগাবে তাকে সবাই মিলে প্রত্যাখান করব। এত সুন্দর চিত্রকর্মে পোস্টার লাগালে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেব। পোস্টার লাগিয়ে এই শহরকে নোংরা করার অধিকার কারো নেই। যারা পরিবেশ নষ্ট করে, তাদের ধিক্কার জানাতে হবে।'
আরও পড়ুন: উন্নয়নকৃত মাঠ ও পার্ক রক্ষায় ডিএনসিসি মেয়রের আহ্বান
সোমবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মহাখালী ফ্লাইওভারে দৃষ্টিনন্দন স্ট্রিট আর্ট পরিদর্শন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডিএনসিসি মেয়র এসব কথা বলেন।
উল্লেখ্য, ডিএনসিসির উদ্যোগে বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশের সহযোগিতায় বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে মহাখালী ফ্লাইওভারে স্ট্রিট আর্ট শুরু হয়েছে। স্বাধীনতার মাস মার্চের মধ্যে পুরো মহাখালী ফ্লাইওভারের স্ট্রিট আর্ট সম্পন্ন করা হবে।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, 'আমরা এই শহরে কীভাবে সুস্থ থাকতে পারি সেই চেষ্টা করি। অনেকে দেখেছেন মগবাজার ফ্লাইওভারের পিলারগুলো পোস্টারে ছেয়ে থাকত। আমরা সেখানে দৃষ্টিনন্দন গ্রাফিতি এঁকে দিয়েছি। ঈদের সময় দেখলাম একজন বাবা তার ছোট মেয়েকে নিয়ে সেই গ্রাফিতির সামনে ছবি তুলছে। এটাই আমাদের স্বার্থকতা।’
ডিএনসিসি মেয়র আরও বলেন, 'আমরা একটি সুস্থ, সচল ও আধুনিক ঢাকা চাই। বিজয়ের মাসে মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণ করে বলতে চাই ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে স্বাধীন বাংলাদেশ দেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার দায়িত্ব আমাদের। নির্বাচন এলেই ঢাকা শহর পোস্টারে ঢেকে যায়। স্মার্ট বাংলাদেশে আমরা কেন ডিজিটাল ক্যাম্পেইন করতে পারছি না? নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে প্রজ্ঞাপন দিয়েছে। আমি সবাইকে অনুরোধ করতে চাই—নির্দিষ্ট স্থান ছাড়া পোস্টার লাগানো যাবে না।'
তিনি বলেন, 'মুক্তিযোদ্ধারা চেয়েছিলেন লাল সবুজের পতাকা। তাঁরা চেয়েছিলেন বাংলাদেশ একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হবে। আমরা পরাধীন থাকব না। কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে স্বাধীনতা মানেই রাস্তায় ময়লা ফেলে দেওয়া না। স্বাধীনতা মানেই আইন ভঙ্গ করা না। স্বাধীনতা মানেই লাল লাইট জ্বলার পরেও গাড়ি চালানো না। দেশটাকে ও শহরটাকে রক্ষার দায়িত্ব আমাদেরই নিতে হবে।'
মহাখালী ফ্লাইওভারের স্ট্রিট আর্ট রক্ষায় জনগণকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে মেয়র বলেন, এতো কষ্ট করে, এতো খরচ করে নান্দনিকভাবে সাজানো হচ্ছে। এটি রক্ষা করতে নগরবাসীকে এগিয়ে আসতে হবে, কাউন্সিলরদের এগিয়ে আসতে হবে।
বলেন, 'কাউলা এক্সপ্রেসওয়ের নিচের প্লে জোন শিগগিরই চালু করে দেওয়া হবে। মহাখালী ফ্লাইওভারের নিচে ফাকা জায়গায় টেবিল টেনিস বোর্ড এবং দাবা খেলার বোর্ডের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে।’
বক্তৃতা শেষে ডিএনসিসি মেয়র নিজে রঙ তুলির মাধ্যমে আর্ট করে চিত্রশিল্পীদের উৎসাহিত করেন।
পরিদর্শনকালে ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ আমিরুল ইসলাম, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জুলকার নায়ন, প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মাকসুদ হাসেম, চিত্রশিল্পী মনিরুজ্জামান প্রমুখ।
আরও পড়ুন: বস্তিতে বসবাসকারী শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তির ঘোষণা ডিএনসিসি মেয়রের
শহর গড়তে তরুণদের এগিয়ে আসার আহ্বান ডিএনসিসি মেয়রের
১০ মাস আগে