বিরোধী দলকে দমন-পীড়ন
তেজগাঁওয়ে ট্রেনে অগ্নিসংযোগ বিরোধী দলকে দমন-পীড়ন করার ষড়যন্ত্র: গণতন্ত্র মঞ্চ
চলমান এক দফা আন্দোলন দমনে সরকারি চক্রান্তের অংশ হিসেবে রাজধানীতে একটি ট্রেনে আগুন দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে কয়েকটি বিরোধী রাজনৈতিক দলের জোট গণতন্ত্র মঞ্চ।
মঙ্গলবার(১৯ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষ নেতা ও গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি এ অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, 'আমরা এখন দেখছি এই সরকার কতটা ষড়যন্ত্র করতে পারে। আজ (মঙ্গলবার) তেজগাঁওয়ে একটি চলন্ত ট্রেনে আগুন দেওয়া হয়েছে, এতে কয়েকজন নিহত ও অনেকে আহত হয়েছেন। আমরা দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই, চলমান আন্দোলনের সঙ্গে এ ধরনের নাশকতার কোনো সম্পর্ক নেই।’
সাকি বলেন, সরকার নাশকতার মাধ্যমে বিরোধী দলের চলমান আন্দোলনকে কলঙ্কিত করার চেষ্টা করছে। ‘তারা (সরকার) নাশকতা সৃষ্টি করে আন্দোলন দমন করতে চায়।’
তিনি বলেন, পরিকল্পিতভাবে উসকানি দিয়ে গত ২৮ অক্টোবর সরকারের এজেন্ট ও সমর্থকদের মাধ্যমে সহিংসতা সৃষ্টি ও নৃশংসভাবে এক পুলিশ সদস্যকে হত্যার পর বিরোধী দলের ওপর দোষ চাপিয়ে সর্বাত্মক দমন-পীড়ন শুরু করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: নির্বাচনের তফসিলের নিন্দা করে 'লাল কার্ড' দেখাল এবি পার্টি
সাকি বলেন, আন্দোলন দমনে বিএনপি ও গণতন্ত্র মঞ্চের শত শত নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
তিনি বলেন, 'আমরা আগেও বলেছি, তারা (সরকার) বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের জেলে রেখে আন্দোলন দমন করতে চায়। এখন ক্ষমতাসীন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য কৃষিমন্ত্রী টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে ঠান্ডা মাথায় বলেছেন, তারা সুপরিকল্পিতভাবে বিএনপিসহ আমাদের বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের কারাগারে রেখেছে।’
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও জনগণের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য চলমান আন্দোলনকে কোনো শক্তি ও দমন-পীড়ন থামাতে পারবে না বলে সতর্ক করেন সাকি।
তিনি বলেন, 'আমরা রাস্তায় নামব এবং যদি আপনাদের (সরকারের) সাহস থাকে তাহলে আমাদের বাধা দিন। আমরা আপনাদের বাধাকে ভয় পাই না এবং আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। আমরা যথাসময়ে কর্মসূচি ঘোষণা করব।’
আরও পড়ুন: যুক্তফ্রন্ট গঠন করে জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেয়ার ঘোষণা সৈয়দ ইব্রাহিমের
নির্বাচন কে সামনে রেখে বিরোধী দলের সমাবেশ ও রাজনৈতিক কর্মসূচির ওপর নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিজয়নগর থেকে তোপখানা সড়ক পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল বের করেন গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা-কর্মীরা। পরে তারা জেপিসির সামনে সমাবেশ করেন।
বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক ট্রেনে অগ্নিসংযোগের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে এর নিরপেক্ষ তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির দাবি জানান।
ভিক্ষুকের মতো ক্ষমতাসীন দলের কাছ থেকে আগাম ২৫ থেকে ২৬টি আসন নিয়ে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় জাতীয় পার্টির সমালোচনা করেন তিনি।
তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জাতীয় সংসদে কে বিরোধী দল হবে তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এটা খুবই স্পষ্ট যে জনগণ এটাকে নির্বাচন হিসেবে দেখছে না। এই নির্বাচনে জনগণের আগ্রহ নেই।
যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা আরব বসন্তের আদলে বাংলাদেশের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে বলে রাশিয়ার অভিযোগের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশে বাঙালি বসন্ত হবে।
বাংলাদেশের বসন্তের জন্য মানুষ প্রস্তুত হচ্ছে। জনগণের তীব্র ক্ষোভ বাংলাদেশে যে কোনো সময় গণঅভ্যুত্থানের কারণ হতে পারে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
বিএনপি, ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমন্বয় জোট, গণঅধিকার পরিষদ, এলডিপি, লেবার পার্টি, গণফোরাম ও পিপলস পার্টি সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হরতালের সমর্থনে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মিছিল করেছে।
আরও পড়ুন: যাত্রাবাড়ীতে জামায়াতের মানববন্ধন ছত্রভঙ্গ করেছে পুলিশ
১ বছর আগে