বাঁধ
সিরাজগঞ্জে যমুনার তীর সংরক্ষণ বাঁধে ৭০ মিটার ধস
সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলার মেঘাই উত্তরপাড়ার যমুনার তীর সংরক্ষণ বাঁধে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। এরইমধ্যে বাঁধটির ৭০ মিটার এলাকা ধসে নদীগর্ভে চলে গিয়েছে।
রবিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে বাঁধ ধস রোধে কাজ করছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
আরও পড়ুন: কক্সবাজারে পাহাড় ধস ও ট্রলারডুবিতে নিহত ১২, নিখোঁজ ৫ শতাধিক জেলে
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী (হেডকোয়ার্টার) নাজমুল হোসাইন বলেন, শনিবার রাত থেকেই এই ধস দেখা দিয়েছে। নদীতে প্রবল স্রোতের কারণে বাঁধের তলদেশ থেকে মাটি সরে গিয়ে ভাঙন দেখা দেয়। এর ফলে বাঁধের ৭০ মিটার এলাকা নদীগর্ভে চলে যায়।
তিনি আরও বলেন, জিও ব্যাগ ফেলে বাঁধ ধস রোধ করার চেষ্টা চলছে। বাঁধ ধসে গেলে ভাটি এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আশা করছি সেখানে আর ভাঙার সম্ভাবনা নেই।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে বিপুল টাকা ব্যয়ে কাজিপুর উপজেলার যমুনা নদীর মেঘাই তীর সংরক্ষণ বাঁধ নির্মাণ করা হয়।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড় ধসে তিন ভাইয়ের মৃত্যু
কক্সবাজারে পাহাড় ধসে ২ শিশু কন্যাসহ মায়ের মৃত্যু
৩ মাস আগে
ফারাক্কা বাঁধের গেট খুলে দেওয়ার গুজব ও ভুয়া ভিডিও প্রত্যাখান দিল্লির
ফারাক্কা বাঁধ সম্পর্কে ভারত বলেছে, ভুল বোঝাবুঝি তৈরি করার জন্য ভুয়া ভিডিও, গুজব এবং ভীতি ছড়ানোর খবর দেখেছে তারা। যা সত্য দিয়ে দৃঢ়ভাবে মোকাবিলা করা উচিত।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, 'আমরা গণমাধ্যমে ফারাক্কা ব্যারেজ গেট খুলে দেওয়ার খবর দেখেছি, যার ফলে নদীর স্বাভাবিক গতিপথে ১১ লাখ কিউসেকেরও বেশি পানি গঙ্গা ও পদ্মা নদীতে প্রবাহিত হবে।’
তিনি বলেন, উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে গঙ্গা নদীর অববাহিকায় প্রবাহ বৃদ্ধি একটি স্বাভাবিক মৌসুমি ঘটনা।
আরও পড়ুন: অভিন্ন নদীর পানি ছাড়ার আগে আগাম বার্তা দেয়নি ভারত: সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান
মুখপাত্র বলেন, ‘এটি বুঝতে হবে যে, ফারাক্কা শুধু একটি ব্যারেজ মাত্র, বাঁধ নয়। যখনই পানির স্তর জলাশয়ের নির্দিষ্ট স্তরে পৌঁছায়, তখন পানির প্রবাহ অতিক্রম করে।’
তিনি বলেন, ফারাক্কা খালে ৪০ হাজার কিউসেক পানি প্রবাহিত করার একটি কাঠামো মাত্র। এটি মূল গঙ্গা বা পদ্মা নদীর গেট দিয়ে সাবধানে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এতে ভারসাম্যপূর্ণ পানি মূল নদীতে বাংলাদেশের দিকে প্রবাহিত হয়।
প্রটোকল অনুযায়ী নিয়মিত ও সময়মতো যৌথ নদী কমিশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে তথ্য আদান-প্রদান করা হয়। এবারও তা করা হয়েছে বলে জানান মুখপাত্র।
আরও পড়ুন: ভারতীয় ভিসা সেন্টারে বিক্ষোভ: নিরাপত্তা বাড়ানোর দাবি ভারতের
৩ মাস আগে
ফেনীর ২ উপজেলার বাঁধ ভেঙে প্লাবিত ৭৪ গ্রাম, পানিবন্দি ২৮ হাজার পরিবার
ফেনীর ফুলগাজী ও পরশুরাম জেলার মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনীয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ১৫টি স্থানে ভাঙনের ফলে ৭৪টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
এতে করে ২৮ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এছাড়া ৬৪ পরিবারকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
শনিবার (৩ আগস্ট) বিকালে দিকে নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার ২২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাইবো) থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ফেনী বিলোনিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কটি ফুলগাজী এবং পরশুরাম অংশে প্লাবিত হওয়ায় কার্যত জেলা সদরের সঙ্গে উপজেলার সড়কপথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এছাড়া পানি ঢুকে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। এদিকে মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার ১৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানিবন্দি পরিবারের সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে বন্যায় ৩৪১ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ, পানিবন্দি সোয়া ১ লাখ মানুষ
ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া ভূইয়া বলেন, ‘গত ১ জুলাই প্রথম বন্যার কবলে পড়েছিল ফেনীর ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলাবাসী। পরে শুক্রবার (২ আগস্ট) দ্বিতীয় দফায় মুহুরী, কহুয় ও ছিলনিয়া নদীর বাঁধ ভেঙে আবারও বন্যার কবলে পড়েছে এ দুই উপজেলার বাসিন্দা। টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে এসব নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। মুহুরী, সিলোনিয়া, কহুয়া নদীর পানি বেড়েছে ফুলগাজী উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে।’
এতে ফুলগাজী ইউনিয়নের নিলক্ষী, গাবতলা, মনতলা, গোসাইপুর, শ্রীপুর, বাসুরা, দেড়পারা, উত্তর দৌলতপুর, মুন্সিরহাট ইউনিয়নের বদরপুর, মান্দারপুর, করইয়া, কালিকাপুর, নোয়াপুর, পৈথারা, জাম্মুরা, ফকিরের খিল, কমুয়া, বালুয়া, চানপুর, দক্ষিণ তাড়ালিয়া, দক্ষিণ শ্রীপুর, কুতুবপুর, ফতেহপুর, উত্তর আনন্দপুর, দরবারপুরের জগৎপুর, বসন্তপুর, ধলীয়া, চকবস্তা, উত্তর শ্রীপুর, বড়ইয়া, পশ্চিম দরবারপুর, পূর্ব দরবারপুর, আমজাদহাটের তালবারিয়া, উত্তরধর্মপুর, দক্ষিণ ধর্মপুর, মনিপুর, ইসলামিয়া বাজার, আনন্দপুর ইউনিয়নের বন্দুয়া, দৌলতপুর, তালপুকুরিয়া, জিএম হাট ইউনিয়নের মধ্যম শ্রীচন্দ্রপুরসহ মোট ৪৩টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
পরশুরাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফরোজা হাবিব শাপলা বলেন, ‘অতিবৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের কারণে পরশুরাম উপজেলায় বন্যায় পৌরসভার বেড়াবাড়ি এবং বাউরখুমা দুইটি স্থানে ভাঙন সৃষ্টি হয়। এতে করে বাউরখুমা, বাউরপাথর, বিলোনিয়া, দুবলাচাঁদ, বেড়াবাড়িয়া, উত্তর গুথুমা, কোলাপাড়া এবং বাসপদুয়া গ্রামে প্রায় সাত হাজার পরিবার পানিবন্দি রয়েছে।
মির্জানগর ইউনিয়নের পশ্চিম মির্জানগর এবং কাউতলী দুইটি স্থানে ভাঙনের ফলে উত্তর মনিপুর, দক্ষিণ মণিপুর, কালী কৃষ্ণনগর, গদানগর, উত্তর কাউতলী, দক্ষিণ কাউতলী, দাসপাড়া, চম্পকনগর, মেলাঘর, গ্রামের প্রায় দুই হাজার পরিবার পানিবন্দি রয়েছে।
আরও পড়ুন: টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত খাগড়াছড়ি পৌর এলাকা, পানিবন্দি শত শত পরিবার
চিথলিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ শালধর, মালীপাথর, পশ্চিম অলকার দুইটি স্থানসহ মোট চার স্থানে ভাঙনের সৃষ্টি হয়। এতে করে পূর্ব অলকা, পশ্চিম অলকা, নোয়াপুর, ধনীকুন্ডা, দক্ষিণ শালধর, জংঙ্গলঘোনা, কুন্ডেরপাড়, মালীপাথর ও পাগলীরকুল গ্রামে প্রায় ৯ হাজার পরিবার পানিবন্দি রয়েছে। বক্সমাহমুদ ইউনিয়নের টেটেশ্বর এবং সাতকুচিয়া নামক দুইটি স্থানে ভাঙনের সৃষ্টি হয়। এতে করে সাতকুচিয়া জমিয়ারগাঁও, বাঘমারা, চারিগ্রাম টেটেশ্বর, কহুয়া, তালবাড়িয়া গ্রামে প্রায় দুই হাজার পরিবার পানিবন্দি।
এদিকে ফুলগাজী উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৩০০ পরিবারকে খাবার বিতরণ ও আরও ২৫০ প্যাকেট খাবার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ১৩ মেট্রিক টন চাউল বিতরন ও ৫ মেট্রিক টন মজুদ রাখা হয়েছে। এছাড়া পরশুরাম উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৫৫০ প্যাকেট খাবার বিতরণ করা হয়েছে।
৪ মাস আগে
ঢেপা-পুনর্ভবার তীরে ২৬ কি.মি. বাঁধ হবে: নৌপ্রতিমন্ত্রী
নৌপ্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, দিনাজপুরের বিরলের ধর্মপুর, কামদেবপুর থেকে ঠাকুরগাঁও পর্যন্ত ঢেপা ও পুনর্ভবা নদীর তীরে ২৬ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ করা হবে।
শনিবার (২৬ আগস্ট) দিনাজপুরে বিআইডব্লিউটিএ’র অফিস ভবন, তুলাই নদীতে রাবার ড্যাম, পুনর্ভবা নদীর তীরে ওয়াকওয়ে নির্মাণ এবং এসব উন্নয়ন কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। দিনাজপুরের বিরল উপজেলার খোসালডাংগী হাট এলাকায় এ অনু্ষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
তিনি বলেন, ২৬ কিলোমিটার বাঁধের উপর রাস্তা নির্মাণের জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরকে জানানো হয়েছে। এ নদীর পাড় শুধু দিনাজপুরের মধ্যে নয়, সারাদেশের মধ্যে সবচেয়ে সৌন্দর্যমণ্ডিত নদীর পাড় হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, এ নদীর পাড়ে ভারতবর্ষের প্রাচীনতম 'কান্তজির মন্দির' আছে। যে মন্দির দেখার জন্য পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ আসে।
আরও পড়ুন: ঈদযাত্রা পুরোটাই ভাল ও আনন্দদায়ক হয়েছে: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
তিনি বলেন, ইতিহাসের অমর সাক্ষী রাজবাড়ি আছে। পুনর্ভবা ও ঢেপা নদীর দুই পাড় সুন্দর করে সাজাব। যেন দুই পাড়ের মানুষ উপভোগ করতে পারে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ, দিনাজপুরের মানুষ তাদের প্রাচীন ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে ধরে রেখেছে, আমরা সেভাবে সাজাতে চাচ্ছি। জেলা প্রশাসককে সেভাবে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একইভাবে দিনাজপুরের রামসাগর, সুখ সাগর, আনন্দ সাগরসহ প্রাচীনতম যেসব পুকুর আছে সেসব পুকুর অপরূপ সাজে সজ্জিত করা হবে, যেন দিনাজপুর একটি সুন্দর দর্শনীয় জেলায় পরিণত হয়।
তিনি আরও বলেন, দিনাজপুরের লিচু পৃথিবীর বিখ্যাত। চাঁদপুরে 'ইলিশের বাড়ি' করা হয়েছে; দিনাজপুরে 'লিচু বাড়ি' করা যায় কি না সেই পদক্ষেপ নিতে জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি কাজ করছেন।
আগামী দিনে দিনাজপুরের 'লিচু বাড়ি' জন্য সারাদেশের মানুষ দিনাজপুরে আসবে এবং আসার পথে রামসাগর, সুখ সাগর, আনন্দ সাগর, কান্তজির মন্দির, রাজবাড়ি পরিদর্শন করবেন।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বিশ্বব্যাংক আইএমএফ, বিভিন্ন দাতাগোষ্ঠী আমেরিকা, ইউরোপ বিভিন্ন শর্ত জুড়ে দিতে চায় যেন শেখ হাসিনাকে কাবু করতে পারে। শেখ হাসিনা কী কাবু হবার লোক! তিনি কাবু হবেন না। কারণ তিনি বাংলার মানুষের ভালোবাসায় ঋণী। আমেরিকা বলেন, ইউরোপ বলেন, পশ্চিমা বলেন- কেউ শেখ হাসিনাকে কাবু করতে পারবে না।
নৌপ্রতিমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনা স্মার্ট ও উন্নত বাংলাদেশ গড়ার রূপরেখা দিয়েছেন। যারা শেখ হাসিনা কে কাবু করতে চায়- আগামী নির্বাচনে ব্যালটের মাধ্যমে এসব ষড়যন্ত্রের জবাব দেব।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজকে বাংলাদেশকে অপরূপ সাজে সজ্জিত করেছেন। শেখ হাসিনাকে ব্রিকস সম্মেলন, ডি-৮ সম্মেলন এবং আন্তর্জাতিক ফোরামে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। বাংলাদেশকে তিনি তুলে নিয়ে এসেছেন।
বিআইডব্লিউটিএ'র চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন- বিআইডব্লিউটিএ'র সদস্য (প্রকৌশল) ড. এ কে এম আজাদুর রহমান, জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদ, পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ এবং প্রকল্প পরিচালক মো. সাইদুর রহমান।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর সাহসী নেতৃত্ব ছিল বলে দেশ স্বাধীন হয়েছে: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় আগামী দিনের ‘শোকেস’ মন্ত্রণালয়ে পরিণত হতে যাচ্ছে: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
১ বছর আগে
সিত্রাংয়ের প্রভাবে দুই হাজার মানুষ পানিবন্দি, মেরামত হচ্ছে ভেঙ্গে যাওয়া বাঁধ
ঘুর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে বাগেরহাটে দুই গ্রামের দুই হাজার মানুষ এখনও পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। এছাড়া সদর উপজেলার মাঝিডাঙ্গা এলাকায় ভৈরব নদের বাঁধের একাংশ ভেঙে মাঝিডাঙ্গা ও পোলঘাট গ্রামে পানি ঢুকে পড়ে।
বুধবার সকালে ভৈরব নদের পাড়ে গিয়ে দেখা গেছে, তিনদিন ধরে ওই দুটি গ্রামের প্রায় দুই হাজার মানুষের বাড়িঘরে পানি জমে আছে। অনেকের বাড়িতে চুলায় পানি জমে থাকায় রান্না বন্ধ রয়েছে।
বাঁধের গোড়া থেকে মাটি কেটে নিয়ে ভাঙা বাঁধ মেরামত করা হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই বাঁধ মেরামত করানো হচ্ছে।
আরও পড়ুন: সিত্রাং তাণ্ডবে ফরিদপুরে ২ বাসের ওপর ভেঙে পড়ল বিশাল বিলবোর্ড
এছাড়া জেলার বিভিন্ন এলাকায় জমে থাকা বৃষ্টি আর জোয়ারের পানি নামতে শুরু করেছে।
বাগেরহাট সদর উপজেলা নির্বহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ মুছাব্বেরুল ইসলাম জানান, জোয়ারের পানি যাতে গ্রামে প্রবেশ করতে না পারে এজন্য জরুরি ভিত্তিতে ভাঙা বাঁধ মাটি দিয়ে মেরামত করা হচ্ছে।
শিগগিরই টেকসই ভাবে ওই বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে।
কাড়াপাড়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জাহাঙ্গির হাওলাদার জানান, এক বছরে নদীতে অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে ভৈরব নদের ওই একই এলাকায় তিনবার বাঁধ ভেঙে যায়। ওই ভাঙা স্থান থেকে পানি প্রবেশ করে মাঝিডাঙ্গা ও পোলঘাট গ্রামে। ওই দুই গ্রামের রাস্তাঘাট, ফসল, ধানখেত, মৎস্যঘের ও বাড়িঘর ডুবে থাকে।
মানুষের দুর্ভোগের শেষ থাকে না। স্থায়ী টেকসই বাঁধ নির্মাণের জন্য তারা দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়েছে আসছে।
বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুম বিল্লাহ জানান, জেলায় তাদের মোট ৩৪০ কিলোমিটার ভেড়িবাঁধ রয়েছে। এরমধ্যে ৩০ কিলোমিটার বাঁধ ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। আর ১০০ কিলোমিটার বাঁধ রয়েছে যা, স্বাভাবিকের চেয়ে জোয়ারে পানি বৃদ্ধি পেলে ওই বাঁধ উপচে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করবে।
জেলার বিভিন্ন এলাকায় নদী পাড়ে চার কোটি টাকা ব্যয়ে বাঁধ নির্মাণের জন্য তারা একটি প্রস্তাবনা উর্ধতন কর্মকর্তাদের কাছে পাঠিয়েছে। এখনও পর্যন্ত তার সম্ভাব্যতা যাচাই হয়নি।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান জানান, ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ দ্রæত মেরামতের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া জেলার বিভিন্ন এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের প্রয়োজনীয় সহয়তা দেয়া হচ্ছে।
জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, জেলায় ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে দুই হাজার ১৪০টি বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৩২২টি সম্পূর্ণ এবং ১৮১৮টি আংশিক ক্ষতি হয়।
বাগেরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আজিজুর রহমান জানান, জেলায় এক হাজার ৩৮০ হেক্টর জমির ধানসহ ফসল পানিতে আক্রান্ত হয়। এরইমধ্যে অধিকাংশ জমির পানি নেমে গেছে। ফসলের তেমন ক্ষতির সম্ভাবনা নেই।
বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জানান, জেলায় প্রায় এক হাজার মৎস্যঘের এবং ৮০০ পুকুর ডুবে চিংড়িসহ সাদা মাছ ভেসে গেছে। ক্ষতির পরিমাণ প্রায় দুই কোটি টাকা।
আরও পড়ুন: সিত্রাং তাণ্ডবে কেরানীগঞ্জে দুটি ভবন হেলে পড়েছে
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের আঘাতে সারাদেশে ২৬ জনের মৃত্যু
২ বছর আগে
সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ঝুঁকিপুর্ণ বাঁধের কাজ করতে হবে: পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী
সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ঝুঁকিপুর্ণ বাঁধের কাজ করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক। তিনি বলেছেন, সামনে বন্যার আশংকা রয়েছে। মাঠ পর্যায় পরিদর্শন বাড়িয়ে ঝুঁকিপুর্ণ স্থান চিহ্নিত করে কাজ করতে হবে। সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ঝুঁকিপুর্ণ বাঁধের কাজ করতে হবে। এছাড়া নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পসমূহের বাস্তবায়নের নির্দেশসহ ব্যর্থতার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের হুঁশিয়ারি দেয়া হয়।
বুধবার পানি ভবনের সম্মেলন কক্ষে ২০২২-২৩ অর্থ বছরে বাস্তবায়নাধীন এডিপিভূক্ত প্রকল্পসমূহের অগ্রগতি পর্যালোচনা সভায় তিনি প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
জাহিদ ফারুক বলেন, আসন্ন বন্যায় ক্ষতি আরও কমাতে হবে। এর জন্য আগাম প্রস্তুতিসহ ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ ও স্থান চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। মেধা, সততা ও মানবিকতার সমন্বয়ে কাজ করতে হবে। এর মাধ্যমেই বন্যার ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলা সম্ভব। তাছাড়া বন্যা-পরবর্তী সময়ে বন্যাকবলিত এলাকার মানুষের স্বাস্থ্যসেবা জোরদার করাও জরুরি। মনে রাখতে হবে, বন্যার ক্ষয়ক্ষতি লাঘবে আগাম প্রস্তুতি একটি কার্যকর উপায়।
তিনি বলেন, যথাসময়ে প্রকল্প বাস্তবায়নেরও তাগিদ দেয়া হয়। এছাড়া কোথায়ও বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হলে সঙ্গে সঙ্গে তা সংস্কারের দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। যে যে এলাকায় বন্যার আশঙ্কা আছে সেখানকার প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের যৌথভাবে কাজ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সরকার বন্যা মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে মানুষের দুর্ভোগ ও ক্ষয়ক্ষতি যথাসম্ভব কমিয়ে আনার ব্যাপারে সচেতন ভূমিকা পালন করছে।
আরও পড়ুন: দেশে ১০০০ খাল খননের পরিকল্পনা রয়েছে: পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী
প্রতিমন্ত্রীর সভাপতিত্বে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের পর্যালোচনা সভায় আটটি প্রকল্প নিয়ে আলোচনা হয়।
১) ১৪৮৩২.৫৩ লাখ টাকা ব্যয়ে দোহার-মারিচর-নারিশাবাজার প্রকল্পের ইতোমধ্যে ৪৭ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।
২) নোয়াখালী জেলার জলাবদ্ধতা নিরসনে বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও নিষ্কাশন ব্যবস্থার জন্য ৩২৪৯৮.৮৫ লাখ টাকার প্রকল্পের ৭৫.৫৫ শতাংশ শেষ হয়েছে।
৩) চট্টগ্রাম মহানগরীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ জলাবদ্ধতা নিরসন ও নিষ্কাশনে ১৬২০৭৩.৫০ লাখ টাকার প্রকল্পের ১৫ শতাংশ কাজ সমাপ্ত হয়েছে।
৪) কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী-উলিপুর-ব্রক্ষ্মপুত্র নদীর ডান তীর ভাঙ্গন রোধে ৪৪৮৩১ লাখ টাকার প্রকল্পের ৬৮.৮৭ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।
৫) ৭২২০০ লাখ টাকা ব্যয়ে রাজশাহী জেলার চারঘাট ও বাঘা উপজেলায় পদ্মা নদী ভাঙন থেকে রক্ষা প্রকল্পের ৩১.১ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।
৬) ভৈরব নদীর (মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা) পুনঃখনন কাজ ২৮.৩০ শতাংশ শেষ হয়েছে।
৭) বরিশালের কির্তনখোলা নদীর ভাঙন থেকে বরিশাল সদর উপজেলাধীন চরবাড়ীয়া এলাকা রক্ষা প্রকল্পের ৮৮ শতাংশ শেষ হয়েছে।
৮) সীমান্ত নদী সংরক্ষণ ও উন্নয়ন প্রকল্প ব্যয় ৪৬৬৫৯.৪৪লাখ টাকা এবং প্রকল্পের ৭২ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।
সভায় পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার, অতিরিক্ত সচিব মিজানুর রহমান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহপরিচালক বজলুর রশিদ, অতিরিক্ত মহাপরিচালকরা, প্রধানকৌশলীরা এবং মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অতিরিক্ত সচিব এস.এম. রেজাউল মোস্তফা কামাল সভার কার্যবিবরণী উপস্থাপন করেন।
আরও পড়ুন: ভোলাসহ উপকূল রক্ষায় বাঁধের উচ্চতা বাড়াতে সমীক্ষা চলছে: পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী
বন্যা মোকাবিলায় ১৩৯ পোল্ডার তৈরি করা হবে: পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী
২ বছর আগে
সাতক্ষীরায় প্রায় সাড়ে ৩ হাজার পরিবার পানিবন্দি
জোয়ারের পানির স্রোতে খোলপেটুয়া নদীর বাঁধ ভেঙে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার ১০টি গ্রামের প্রায় সাড়ে তিন হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ বিশেষ করে নারী ও শিশুরা খাদ্য, পানীয় জল এবং তীব্র স্বাস্থ্য সংকটে পড়েছে। এছাড়া জোয়ারের পানিতে এক হাজার একর মাছের ঘের ও ফসলি জমি ভেসে গেছে, এতে কৃষকদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, প্রবল জোয়ারের চাপে পশ্চিম দুর্গাবাটির সাইক্লোনশ্লেটার সংলগ্ন এলাকায় খোলপেটুয়া নদীর ২০০ ফুট এলাকাজুড়ে উপকুল রক্ষা বেড়িবাঁধ ভেঙে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এতে প্রায় সাড়ে তিন হাজার পরিবারের হাজার হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগের শিকার হয়।
আরও পড়ুন: বন্যায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১১০: স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
শিগগিরই ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ সংস্কার করা না হলে উপজেলার নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হবে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড স্থানীয়দের সহযোগিতায় ইতোমধ্যে বাঁধের পাইলিং কাজ শুরু করেছে।
সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. হুমায়ুন কবির, শ্যামনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম আতাউল হক দোলন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়ের, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আক্তার হোসেন, বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম প্রমুখ ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে বন্যায় ১৪০ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি
ডিসি হুমায়ুন কবির জানান, জরুরি ভিত্তিতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে খাওয়ার পানি ও খাদ্য সহায়তা দেয়া হবে। এছাড়া এলাকার মানুষ যেন স্থায়ী সমাধান পায় সেজন্য ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ সংস্কারের ব্যবস্থা নেয়া হবে।
২ বছর আগে
সুনামগঞ্জের হাওর এলাকায় ভাঙল আরেকটি বাঁধ
সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলায় রবিবার ভোরে বাঁধ ভেঙে ছায়ার হাওরে পানি উপচে পড়া শুরু হয়েছে। ফলে হাওর এলাকার কৃষকদের ধান কাটা আরও কঠিন হয়ে পড়েছে।
এমন অবস্থায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলাকে দায়ী করেছেন স্থানীয় লোকজন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের স্থানীয় কার্যালয়ের মতে, এ বছর ছায়ার হাওরে চার হাজার ৬৩৭ হেক্টর জমি বোরো চাষের আওতায় আনা হয়েছে এবং ইতোমধ্যে হাওর এলাকার ৯৫ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে।
কিন্তু স্থানীয় কৃষকদের দাবি, তারা হাওরের ১৫ শতাংশ ফসল তুলতে ব্যর্থ হয়েছেন।
আরও পড়ুন: আগাম প্রস্তুতির কারণে এবার হাওরে ক্ষতি কম হয়েছে: পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী
উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের কৃষক তকবির হোসেন জানান, ধান কাটা শ্রমিকের অভাবে তিনি তার জমির ৩০ শতাংশ ফসল তুলতে পারেননি।
শাল্লা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তালেব জানান, রবিবার ভোরে ছায়ার হাওর বাঁধের একটি অংশ ধসে পড়ে অনেক এলাকা প্লাবিত হয়েছে। তবে বেড়িবাঁধের মূল অংশ অক্ষত আছে।
সম্প্রতি ভারতের মেঘালয় ও চেরাপুঞ্জিতে প্রবল বর্ষণে পাহাড়ি ঢল ও উজান থেকে নেমে আসা পানির কারণে আকস্মিক বন্যার কবলে পড়ে সুনামগঞ্জ হাওর অঞ্চল।
বোরো ফসলি জমির বিস্তীর্ণ অংশ প্লাবিত হওয়ায় কৃষকদের ক্ষতি কমাতে তাড়াতাড়ি ফসল তুলতে বাধ্য হচ্ছেন কৃষকরা।
আরও পড়ুন: বন্যার পানি হাওরে ঢুকে ফসলহানির আশঙ্কা সুনামগঞ্জের কৃষকদের
২ বছর আগে
‘বাঁধের কাজ ভালো হওয়ায় এবার ক্ষতির পরিমাণ কম হয়েছে’
পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক বলেছেন, সুনামগঞ্জে এ বছর ২০১৭ সালের চেয়েও বেশি পানি হয়েছে। তবে বাঁধের কাজ ভালো হওয়ায় ক্ষতির পরিমাণ কম হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত পাঁচ হাজার হেক্টর ফসলের ক্ষতি হয়েছে। বৃহস্পতিবার প্রতিমন্ত্রী সুনামগঞ্জ জেলার শান্তিগঞ্জ, জগন্নাথপুর ও দিরাই উপজেলার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হাওর পরিদর্শন করে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দেন।এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মিজানুর রহমান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক ফজলুর রশিদ, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পূর্ব) মাহবুবর রহমান,পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী (উত্তর-পূর্বাঞ্চল) এস এম শহিদুল ইসলাম ও জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন।
তিনি বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা কর্মচারীর বাঁধ রক্ষায় সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। শত শত শ্রমিকও প্রতিনিয়ত কাজ করছে। বাঁধের গোড়ায় মাটি ভর্তি বস্তাও ফেলা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ রক্ষায়ও কাজ করা হচ্ছে।
প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক বলেন, মার্চ মাসের ৩০ তারিখ প্রথম দফা পাহাড়ি ঢল নামতে শুরু করে। নদ-নদী ও হাওরে ব্যাপক পরিমাণে পানি বৃদ্ধি পায়। উজানের মেঘালয় ও চেরাপুঞ্জির ভারী বৃষ্টিতে সুনামগঞ্জের নদ-নদী ও হাওড়ে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ঢলের পানি হাওড়ের পাড় উপচে তাহেরপুর উপজেলার বর্ধিত গুরমার হাওড়ে ঢুকছে। সর্বশেষ রবিবার রাতে দিরাই উপজেলায় হুরামন্দিরা হাওরে পানি ঢোকে। এখানে জমি আছে এক হাজার হেক্টর, ক্ষতি হয়েছে ২০০ হেক্টরের।
আরও পড়ুন: ভোলাসহ উপকূল রক্ষায় বাঁধের উচ্চতা বাড়াতে সমীক্ষা চলছে: পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের পাশে আছেন। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের বিভিন্ন প্রণোদনা ও খাদ্য সহায়তা দেয়া হবে। আগামী বোরো মৌসুমে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের বিনামূল্যে বীজ, সার দেয়া হবে। এছাড়া,সারা বছর ধরে ভিজিএফসহ বিভিন্ন খাদ্য সহায়তা দেয়া হবে, যাতে খাদ্যের জন্য কেউ কষ্ট না করে। কৃষকবান্ধব সরকার হাওর অঞ্চলে ৭০ ভাগ ভর্তুকিতে ধান কাটার যন্ত্র কম্বাইন হারভেস্টার ও রিপার কৃষকদের দিচ্ছে যাতে করে উৎপাদন খরচ কম লাগে।কৃষি বিভাগের তথ্য মতে এ পর্যন্ত ১৭টি ছোট–বড় হাওর ও বিলের পাঁচ হাজার ৬৬০ হেক্টর জমির ধান তলিয়ে গেছে। প্রথম দফা পাহাড়ি ঢলের ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই আবার দ্বিতীয় দফায় ঢল নামতে শুরু করেছে। বুধবার সকাল পর্যন্ত জেলায় ধান কাটা হয়েছে ৮৪ হাজার ৭৪৮ হেক্টর জমির। যা মোট ধানের ২৪ ভাগ। এবার হাওর ধান চাষাবাদ হয়েছে দুই লাখ ২২ হেক্টর জমিতে। ধান উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ছিল ১৪ লাখ মেট্রিক টন। আমরা কৃষকদেরকে বলছি, ৮০ ভাগ ধান পাকলে কাটার জন্য।উল্লেখ্য, সুনামগঞ্জ জেলার ১২টি উপজেলার বিভিন্ন হাওড়ে ৭২৭টি প্রকল্পে ১শ২২ কোটি টাকায় ৫শ৩৬ কিলোমিটার ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারকাজ হয়েছে। এ বাঁধ নির্মাণকাজের সময়সীমা ছিল ১৫ ডিসেম্বর থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু সময় বাড়িয়েও বাঁধের কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ করা যায়নি। এছাড়া হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধের কাজে অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের চূড়ান্ত প্রতিবেদন দুই-তিন দিনের মধ্যে মন্ত্রণালয়ে জমা দেবে তদন্ত কমিটি।
আরও পড়ুন: বন্যা মোকাবিলায় ১৩৯ পোল্ডার তৈরি করা হবে: পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী
দেশে ১০০০ খাল খননের পরিকল্পনা রয়েছে: পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী
২ বছর আগে
টাঙ্গুয়ার হাওরে বাঁধ ভেঙে পানির নিচে ১০০ একর ফসল
সুনামগঞ্জে সুরমাসহ বিভিন্ন নদীর পানি বেড়ে একের পর এক বাঁধ ভাঙছে। আর এতে তলিয়ে যাচ্ছে হাওরপাড়ের কৃষকদের বোরো ফসল।
সর্বশেষ শুক্রবার দুপুরে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার টাঙ্গুয়ার হাওরের আরও একটি বাঁধ ভেঙে প্রায় ১০০ একর বোরো ফসল পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এদিন উপজেলার এরাইল্লা কোনা মনদিয়াতা বাঁধটি ভেঙে এ ফসলহানির ঘটনা ঘটে।
হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধে বিপর্যয় দেখা দেয়ায় মাথায় হাত পড়েছে ওই অঞ্চলের কৃষকদের।
বাঁধ ভাঙার বিষয়টি নিশ্চিত করে তাহিরপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা রায়হান কবীর বলেন, টাঙ্গুয়ার হাওরের যে বাঁধটি ভেঙেছে, সেটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের নয়। আমরা ঘটনাস্থলে যাচ্ছি। পরে বিস্তারিত বলতে পারবো।
স্থানীয় কৃষক বিলাল মিয়া বলেন, ‘বাঁধ দিয়া কিতা (কি) লাভ হইলো, আমরা ত ফসল ঘরে তুলতে পারলাম না। এখন ছেলে-মেয়ে নিয়া সারাবছর কীভাবে কাটামু।’
কৃষক নানু মিয়া বলেন, ‘সরকার শত কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণের জন্য। কিন্তু সে টাকা দিয়ে পিআইসির (প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি) সদস্যরা ঠিকমতো কাজ করেন না। ঠিকমতো কাজ করলে এতো অল্প পানিতে বাঁধ ভাঙতো না।’
আরও পড়ুন: কোমর পানিতে বোরো ধান কাটছে চরাঞ্চলের চাষিরা
অপর কৃষক দিলোয়ার মিয়া বলেন, ‘তাহিরপুরের এরাইল্লা কোনা মনদিয়াতা বাঁধ ভেঙে পানি এতে তলিয়ে গেছে একশো একর বোরো ফসল। আমরা নিঃস্ব হয়ে গেলাম। গত এক সপ্তাহে জেলার তাহিরপুর, ধর্মপাশা, শাল্লা ও দিরাই এই চার উপজেলায় নয়টি বাঁধ ভেঙে কয়েক হাজার হেক্টর বোরো ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে।’
গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় সেসব অঞ্চলের কৃষকের মনে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছিল। কিন্তু উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে আবারও নতুন একটি বাঁধ ভেঙে গেছে। এতে বোরো ফসলের ক্ষতি নিয়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে কৃষকদের মাঝে।
গত এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে জেলার ১১টি উপজেলায় ফাটল দেখা দেয়া বাঁধগুলো দিনরাত পাহারায় রেখেছে হাওর পাড়ের মানুষেরা।
গত ১ এপ্রিল তাহিরপুরের নজরখালী বাঁধ ভেঙে ১২০ হেক্টর বোরো ফসল তলিয়ে যায়। এরপর একে একে আরও আটটি বাঁধ ভেঙে যায়। এছাড়াও জেলার ছোট-বড় সব হাওরে ফসলরক্ষা বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে।
আরও পড়ুন: হাওরে পানি বাড়ছে, আতঙ্কে কাঁচা ধান কাটছে কৃষক
সিলেটে ৪০০ বিঘা বোরো খেত প্লাবিত
২ বছর আগে