বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা
ঘূর্ণিঝড়ের সময় বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা এড়াতে মন্ত্রণালয়ের নিরাপত্তা পরামর্শ
বাংলাদেশে আঘাত হেনেছে ঘূর্ণিঝড় রিমাল। এ প্রভাবে দেশজুড়ে বিদ্যুৎ বিভ্রাট। বিদ্যুতের সমস্যার সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুতের সংযোগ থেকে দুর্ঘটনার সম্ভাবনাও রয়েছে। তেমন কোনো সম্ভাবনা দেখলে বিদ্যুৎ বিলের কাগজের পেছনে দেওয়া অভিযোগ কেন্দ্রগুলোর মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার আহ্বান জানিয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়।
এছাড়াও সবাইকে নিরাপদ থাকার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়ে সবাইকে অনুসরণ করতে বলা হয়েছে-
১. ছেঁড়া তার এড়িয়ে চলুন
কোনো ছেঁড়া তার চোখে পড়লে স্পর্শ করবেন না বা সরানোর চেষ্টা করবেন না। তাৎক্ষণিক নিকটবর্তী বিদ্যুৎ অফিসকে জানাবেন।
আরও পড়ুন: খুলনায় ঘূর্ণিঝড়ে গাছ উপড়ে পড়ে যুবকের মৃত্যু
২. বিদ্যুৎ লাইনের ওপর গাছ দেখলে ধরবেন না
বিদ্যুৎ লাইনের ওপর গাছ বা গাছের ডালপালা বা অন্য কোনো বস্তু পড়ে থাকতে দেখলে বিদ্যুৎ অফিসে জানান।
৩. ঝড়-বৃষ্টিকালে বৈদ্যুতিক খুঁটি বা তার ধরবেন না
ঝড়, বৃষ্টি, বজ্রপাত বা যে কোনো ভেজা বৈদ্যুতিক খুঁটি বা টানা তার স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকুন।
৪. মিটারের কভার তার পরীক্ষা
মিটারের কভার তার পরীক্ষা করে দেখবেন কোনো ক্ষতি হয়েছে কি না। তার ছিঁড়ে বা কেটে গেলে নিজে ঠিক করার চেষ্টা না করে বিদ্যুৎ অফিসে যোগাযোগ করুন। কোনো কভার তারে কাপড় শুকাতে দিবেন না।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে উপকূলীয় জেলাগুলোতে নিহত ৭
৫. বিদ্যুৎ কর্মীদের সহযোগিতা করুন
প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় সবাইকে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে এগিয়ে আসতে হবে। যেকোনো কাজে বিদ্যুৎ কর্মীরা সহযোগিতা চাইলে সহযোগিতা করতে চেষ্টা করুন।
বিদ্যুৎ সংক্রান্ত যেকোনো প্রয়োজনে ১৬৯৯৯ নম্বরে যোগাযোগ করুন।
পল্লী এলাকায় বিদ্যুতের সমস্যায় যোগাযোগের জন্য সার্বক্ষণিক খোলা থাকবে যে নাম্বারগুলো-
পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের সেন্ট্রাল কন্ট্রোল রুমের নম্বর ০১৭৯২-৬২৩৪৬৭, ০২-৮৯০০৫৭৫,
ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি-
বরিশাল অঞ্চল- ০১৭১৩-৮৫০২১৮,
খুলনা অঞ্চল- ০১৭১৩-৮৫০২১১,
পটুয়াখালী অঞ্চল- ০১৭১৩-৮৫০২১৯
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় রিমালে বিদ্যুৎহীন ২ কোটি ২২ লাখ মানুষ
৬ মাস আগে
শিশুদের বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা থেকে দূরে রাখতে করণীয়
১১ হাজার ভোল্টের ট্রান্সমিশন কেবলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে হাত থেকে কব্জি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে ৭ বছর বয়সী এক শিশুর। ঘটনাটি কুমিল্লার সংরাইশ নামক একটি এলাকার; ঘটেছে বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি)। শিশুটি বর্তমানে চিকিৎসাধীন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে।
শুধু প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোই নয়; দেশের আধুনিক শহরগুলোও মুক্ত নয় এমন নির্মম দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকে। বিশেষ করে আবাসিক এলাকাগুলো যেখানে উচ্চ ভোল্টের বৈদ্যুতিক যন্ত্রাংশ দ্বারা পরিবেষ্টিত, সেখানে শিশুর খেলার জায়গাটি নিমেষেই পরিণত হতে পারে মরণফাঁদে। এমনকি ঘরের ভেতরটাও এই ঝুঁকির বাইরে নয়। তাই শিশুর নিরাপদ বিচরণক্ষেত্র নিশ্চিত করতে অনতিবিলম্বে প্রয়োজন জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের।
এই পরিপ্রেক্ষিতে চলুন দেখে নিই, ঘরের ভেতরে ও বাইরে উভয় ক্ষেত্রে বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা থেকে শিশুর জীবন বাঁচাতে কি কি উপায় অবলম্বন করা যেতে পারে।
বৈদ্যুতিক শক থেকে শিশুদের রক্ষা করার উপায়
ঘরের ভেতরে প্রয়োজনীয় সাবধানতা
দেয়ালের বৈদ্যুতিক সকেটগুলো আবৃত রাখা
ঘরের দেয়ালের নিচের দিকে প্রায় সময় দেখা যায় বিদ্যুৎ সংযোগের উৎসগুলো অনাবৃত থাকে। এছাড়া ব্যবহার শেষে প্লাগ খুলে ফেলার পর সেগুলো অনাবৃত অবস্থাতেই রেখে দেওয়া হয়। এগুলো বাচ্চাদের হাতের নাগালেই থাকে। খেলার ছলে এগুলোর ছোট গর্তগুলোতে বাচ্চাদের হাত চলে যেতে পারে। এমন অনর্থ থেকে বাঁচতে বৈদ্যুতিক আউটলেট কভার বা সেফটি প্লাগের আবির্ভাব।
আরও পড়ুন: শহরে রান্নার জন্য গ্যাসের চুলার সেরা কয়েকটি বিকল্প
প্লাগগুলো মূলত টু পিং ও থ্রি পিং সকেটের জন্য সামঞ্জস্য করে তৈরি করা হয়। আর কভারের ক্ষেত্রে বর্তমানের অত্যাধুনিক স্লাইডিং আবরণীগুলো ব্যবহার শেষে কোনো অ্যাডাপ্টারের প্লাগ খুলে ফেলার সঙ্গে সঙ্গেই স্বয়ংক্রিয়ভাবেই সকেটটিকে ঢেকে ফেলে। এতে করে বিদ্যুৎ সংযোগের গর্তগুলো আবৃত হয়ে যায় এবং তাতে বাচ্চাদের হাত পড়লেও কোনো বিপদের আশঙ্কা থাকে না।
বিদ্যুতের কেবলগুলো গুছিয়ে রাখা
শুধু নিরাপত্তার জন্য নয়, ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে কেবল অর্গানাইজার। এলোমেলো করে ছড়ানো-ছিটানো কেবল বা তারগুলোতে বাচ্চাদের ছোট ছোট হাত-পা জড়িয়ে যেতে পারে। বিশেষ করে চঞ্চল শিশুরা ছুটে বেড়াতে যেয়ে এগুলোতে পা জড়িয়ে পড়ে যেয়ে আঘাত পেতে পারে। আর কোনো একটিতে ছোট্ট কোনো চিড় বা লিকেজ থাকলে তা মারাত্মক দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। তাই নিদেনপক্ষে দড়ি বা ফিতে দিয়ে কেবল বা তারগুলোকে বেধে পরিপাটি করে রাখা উচিৎ।
তাছাড়া এখন অধিকাংশ ইলেকট্রনিক পণ্যের সঙ্গে এগুলোর কেবল গুছিয়ে রাখার জন্য ছোট ছোট প্লাস্টিকের তার সরবরাহ করা হয়। এগুলোর যথাযথ সদ্ব্যবহার করে তার বা কেবলগুলো আড়াল করে রাখা উচিৎ। কর্ড সংগঠক ব্যবহার করে বা অতিরিক্ত কর্ডের দৈর্ঘ্য বেঁধে দড়িগুলোকে সংগঠিত এবং নাগালের বাইরে রাখুন। এটি দড়িতে ছিটকে যাওয়ার বা টানার ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।
আরও পড়ুন: নিপাহ ভাইরাস সতর্কতা: কাঁচা খেজুরের রস খাওয়ার ঝুঁকি
ওভারলোড না করা
একটি আউটলেটে একাধিক ডিভাইস ব্যবহারের উপায় থাকলেও তার সুবিধা নেওয়া উচিৎ নয়। বিশেষ করে উচ্চ পাওয়ার রেটিংয়ের বৈদ্যুতিক আসবাব একটি আউটলেটে একটির বেশি ব্যবহার করা ঠিক নয়। এতে আউটলেটগুলো অতিরিক্ত গরম হয়ে সকেটের পেছনে তার বা আসবাবের কেবল পুড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এছাড়া শর্ট সার্কিট হলে একসঙ্গে একাধিক যন্ত্র নষ্ট হওয়ারও আশঙ্কা থাকে।
বিদ্যুতের প্রতিটি সংযোগের ত্রুটিহীনতা নিশ্চিত করা
ঘরের প্রতিটি বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ঠিক মতো কাজ করছে কি না তা রুটিন মাফিক যাচাই করা হলে সময় মতো ত্রুটিগুলো চোখে পড়বে। এতে করে যন্ত্রপাতিগুলো রক্ষণাবেক্ষণের আওতায় থাকবে। সেই সঙ্গে নিশ্চিত হবে প্রত্যেকটির নিরবচ্ছিন্ন ব্যবহার। আর ঘরের ভেতরে শিশুর খেলার জায়গাটিও হবে ঝুঁকি মুক্ত।
বৈদ্যুতিক যন্ত্রাদিকে কোনোভাবেই পানির সংস্পর্শে না আনা
রান্নাঘর ও টয়লেটের বৈদ্যুতিক আউটলেটগুলোকে কোনোভাবেই ভেজা রাখা যাবে না। প্রয়োজনে নিয়মিত শুকনা কাপড় দিয়ে মুছে রাখতে হবে। দিনের অধিকাংশ সময়ই এই স্থানগুলোতে পানির কাজ থাকে। ফলে যে কোনো ভুলে মেঝেতে পানি পড়ে তা গড়িয়ে চলে আসতে পারে ডাইনিং বা অন্যান্য ঘরগুলোতে। পরিণতিতে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে শিশুর খেলে বেড়ানোর জায়গাটি।
ফ্রিজ বা ওভেনের মতো উচ্চ ভোল্টেজের যন্ত্রপাতির পেছনের স্থান কোনোভাবেই যেন পানির সান্নিধ্যে না আসে। এগুলোর কেবলে হঠাৎ পানি লেগে গেলে দ্রুত পাওয়ার অফ করে শুকনো কাপড় দিয়ে তা মুছে নিতে হবে।
আরও পড়ুন: তীব্র শীতে পোষা প্রাণীর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় করণীয়
১০ মাস আগে