রোড ট্রাফিক
ঢাকা রোড ট্রাফিক সেফটির যৌথ সমন্বয় কমিটির সভা অনুষ্ঠিত
রাজধানীতে নিরাপদ ট্রাফিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে ঢাকা রোড ট্রাফিক সেফটি প্রজেক্টের (ডিআরএসপি) চতুর্থ যৌথ সমন্বয় কমিটির (জেসিসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ঢাকায় সড়ক নিরাপত্তা কর্মসূচি বাস্তবায়নে পুলিশের সক্ষমতা জোরদার করতে ২০২২ সালের মার্চ থেকে ডিআরএসপি বাস্তবায়ন করছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। এ প্রকল্পে ডিএমপিকে সহায়তা করছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)।
আরও পড়ুন: সেবা সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের অভাবে ঢাকায় জলাবদ্ধতার ভয়ংকর রূপ
ডিআরএসপি প্রকল্প পরিচালক ও অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় জাইকা বিশেষজ্ঞ দলের (জেইটি) প্রকল্প নেতা ইয়োশিহিসা আসাদা প্রকল্পের রূপরেখা ও বর্তমান অবস্থা তুলে ধরেন। রাজধানীতে নিরাপদ ট্রাফিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে সিটি কর্পোরেশন এবং সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষসহ যৌথ সমন্বয় কমিটির সব সদস্যদের সহযোগিতার ওপর জোর দেন তিনি।
এ সময় মুনিবুর রহমান বলেন, ঢাকাবাসীদের জন্য যানজট পরিস্থিতি সহনীয় করাই এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য। আমাদের ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে কাজ করতে হবে যাতে আমরা জনগণকে আশার আলো দেখাতে পারি।
জেসিসি সভায় ডিএমপির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও জাইকা বিশেষজ্ঞ দলের সদস্যরা গত ছয় মাসের অগ্রগতি তুলে ধরেন। এছাড়াও ডিআরএসপির তিনটি আউটপুট- ট্রাফিক নিরাপত্তা শিক্ষা, ট্রাফিক দুর্ঘটনা প্রতিবেদন ও ট্রাফিক আইন ও প্রয়োগের বিষয়টি নিয়েও আলোচনা করেন তারা।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (ট্রাফিক অ্যাডমিন অ্যান্ড রিসার্চ) কাজী রোমানা নাসরিন বলেন, ট্রাফিক নিরাপত্তা শিক্ষা নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে এরই মধ্যে তিনটি বিদ্যালয়ে ব্যবহারিক ও অংশগ্রহণমূলক শিক্ষা কর্মসূচি (পিপিইপি) চালু করা হয়েছে। এছাড়াও ঢাকার সব ট্রাফিক বিভাগগুলোর বিদ্যালয়গুলোতেও এই কর্মসূচি শুরু করা হবে বলে জানান তিনি।
রোমানা আরও জানান, সড়ক নিরাপত্তা সচেতনতা বৃদ্ধিতে একসঙ্গে কাজ করতে ডিএমপি ও সিসিমপুর (এসডব্লিউবি) একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করেছে।
ডিআরএসপির দ্বিতীয় আউটপুট ট্রাফিক দুর্ঘটনা প্রতিবেদনের বিষয়ে ডিএমপির সিস্টেম অ্যানালিস্ট শারমিন আফরোজ বলেন, দুর্ঘটনার তথ্য সংগ্রহে ব্যবহৃত ডাটাবেজ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস অব রোড ক্র্যাশ (ডিএআরসি) সফটওয়্যারটি আরও উন্নত করা হয়েছে। রেসপন্ডিং অফিসার্স অবজারভেশন ফর্ম (আরওওএফ) কাজটিকে আরও সহজ করে তুলেছে । ডিএআরসির মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে ক্র্যাশ সাইটে এই ফর্মটি পূরণ করা যায়। এছাড়াও জিপিএস থেকে নেওয়া তথ্য ও ছবি সংগ্রহ করার সুযোগও রয়েছে।
আরও পড়ুন: মূল্যায়ন পদ্ধতি ও কারিকুলাম সংক্রান্ত সমন্বয় কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত
এছাড়াও ডিআরএসপির আউটপুট ৩-এর অধীনে বাস চালক ও বাসযাত্রীদের ট্রাফিক আইন মেনে চলার গুরুত্ব বুঝাতে রাজধানীর কাকলীতে বাস থামার স্থানে একটি পাইলট প্রকল্প চালানো হয় বলে জানান যুগ্ম কমিশনার (ট্রাফিক-উত্তর) আবু রায়হান মুহাম্মদ সালেহ।
এই প্রকল্পে দেখা যায় ৯৭ শতাংশ বাস চালক স্বীকার করেছে এই স্থানে ট্রাফিক নিরাপত্তা বেড়েছে এবং তারা এই ট্রাফিক আইন মেনে চলার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। এবার নিরাপদ পথচারী পারাপারে সচেতনতা তৈরিতে আরেকটি প্রকল্প শুরুর কথা ভাবছে ডিআরএসপি।
সভায় সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ে একটি মিডিয়া ফেলোশিপ প্রোগ্রাম শুরু করার ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে ডিআরএসপির জনসংযোগ কার্যক্রম তুলে ধরেন জেলা প্রশাসক (মিডিয়া ও জনসংযোগ) মোহাম্মদ ফারুক হোসেন। এ সময় তেজগাঁওয়ের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর আলম ভারতের হায়দ্রাবাদে প্রশিক্ষণের ফলাফল তুলে ধরেন।
জাইকা সদর দপ্তরের অবকাঠামো ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিচালক ইয়াসুহিরো সুহারা জাপানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ডিএমপি ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ঢাকার সড়কে জাপানের ট্রাফিক পদ্ধতিগুলোর কার্যকরভাবে ব্যবহার করবেন বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
গৃহীত উদ্যোগগুলো নাগরিকদের উপকারে আসবে আশা প্রকাশ করে ছয় মাস পর জেসিসির পরবর্তী সভায় পরিকল্পনাগুলোর অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করা হবে জানিয়ে সভার সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য সময়টা ভালো নয়: জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী
৯ মাস আগে