পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ
ইসরায়েলির পুরস্কার নিয়ে গণহত্যার পক্ষ নিয়েছেন ড. ইউনূস: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ইউনূস সেন্টারের ‘মিথ্যাচার’ ও ইসরায়েলি ভাস্করের কাছ থেকে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের পুরস্কার পাওয়াকে ‘অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক’ বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময়কালে এ মন্তব্য করেন তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ সময় বলেন, ‘আমি খুব অবাক হয়েছি..... এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক।’
তিনি বলেন, গাজায় শিশু ও নারীসহ মানুষ হত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের বিরুদ্ধে অধ্যাপক ইউনূসের কাছ থেকে প্রতিবাদের একটি শব্দও শোনা যায়নি।
হাসান বলেন, ‘গাজার এই পরিস্থিতিতে অধ্যাপক ইউনূস একজন ইসরায়েলির কাছ থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেন। এটা কী? এটার কী মানে? এর মানে কি তারা গাজায় ইসরাইলি হত্যাকাণ্ডকে সমর্থন করছে?’
তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূসকে ইউনেস্কো পুরস্কৃত করেনি, এটা ইউনূস সেন্টার মিথ্যা প্রচার করেছে।
ইউনূস সেন্টারের মিথ্যাচারের ঘটনা এটিই প্রথম নয়, এর আগেও তারা একই ধরনের মিথ্যাচার করেছে বলে মন্তব্য করেন ড. হাছান।
আরও পড়ুন: ইউনেস্কো পুরস্কার পাননি ড. ইউনূস: মহিবুল হাসান
এর আগে গত বুধবার বাংলাদেশ সচিবালয়ে বাংলাদেশ ইউনেস্কো কমিশনের চেয়ারম্যান ও শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে 'দ্যা ট্রি অব পিস' পুরস্কার দেয়নি ইউনেস্কো।
তিনি বলেন, আজারবাইজানের গঞ্জাভি ফাউন্ডেশনের আমন্ত্রণে ড. ইউনূসকে একজন ইসরায়েলি ভাস্কর 'ট্রি অব পিস’ পুরস্কারে ভূষিত করেছেন।
মন্ত্রী বলেন, ইউনেস্কো থেকে পুরস্কার পেয়েছেন বলে ড. ইউনূস যে দাবি করেছেন তা অসত্য।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘ইউনেস্কো পুরস্কার নিয়ে ইউনূস সেন্টার যে তথ্য প্রচার করেছে তা অসত্য ও বিভ্রান্তিকর। সঠিক রেকর্ড তুলে আনা জরুরি; যাতে কোনো ভুল তথ্য আমাদের দেশের সুনাম নষ্ট না করে। এটা বাংলাদেশের জন্য অপমানজনক বিধায় এ বিষয়ে ইউনেস্কো সদর দপ্তরে ব্যাখ্যা পাঠানো হবে।’
আরও পড়ুন: ইউনূসকে নিয়ে ওয়াশিংটন পোস্টে বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়েছে, বিবৃতি নয়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ইউনূস সেন্টার ইউনেস্কো পুরস্কার নিয়ে মিথ্যা দাবি অব্যাহত রাখলে আইনি পদক্ষেপের হুঁশিয়ারিও দেন মন্ত্রী। তিনি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ড. ইউনূস এবং বাংলাদেশ উভয়ের সুনাম যাতে ক্ষুণ্ন না হয় সেজন্য অবিলম্বে এ ধরনের বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার বন্ধ করার আহ্বান জানান।
তবে তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে ইউনূস সেন্টারের মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: কোনো অপরাধ করিনি, শঙ্কিত কেন হবো: দুদক কার্যালয়ে ড. ইউনূস
গাজায় গণহত্যা মানব সভ্যতার কলঙ্কজনক অধ্যায়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ফিলিস্তিনে ৭ অক্টোবরের পর থেকে যেভাবে শিশু, নারী ও সাধারণ মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে সেটি মানব সভ্যতার জন্য একটি কলঙ্কজনক অধ্যায়। এখনই যদি আমরা এটি বন্ধ করতে না পারি, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে আমরা দায়ী হয়ে থাকব।
রবিবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে যুক্তরাষ্ট্র উত্থাপিত গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে রাশিয়া ও চীনের ভেটোদানের বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হয়।
আরও পড়ুন: ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়ে দেশের বাজারকে অস্থিতিশীল করাই বিএনপির উদ্দেশ্য: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা প্রতিনিয়ত এ নিয়ে মনোবেদনায় ভুগছি এবং বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় এর প্রতিবাদ অব্যাহত আছে। যুক্তরাষ্ট্রে, কানাডায়, যুক্তরাজ্যে, আয়ারল্যান্ডে, কন্টিনেন্টাল ইউরোপে, অস্ট্রেলিয়ায় প্রতিবাদ চলছে। কারণ মানুষ এই অপরাধের বিরুদ্ধে।’
ড. হাছান বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব কিছুটা আশার আলো জাগিয়েছিল, কিন্তু ফিলিস্তিনি প্রতিনিধিদের মতে সেই প্রস্তাবে কিছু ত্রুটি ছিল। রাশিয়া ও চীনের ভেটোদানের কারণ বোধগম্য নয়, কিন্তু আমরা চাই অবিলম্বে যুদ্ধ বিরতি হোক, এই বর্বরতা বন্ধ হোক।’
আরও পড়ুন: ভুটানের বিনিয়োগকারীদের জন্য কুড়িগ্রামে ১৯০ একর জমি দেবে বাংলাদেশ
ভুটানের বিনিয়োগকারীদের জন্য কুড়িগ্রামে ১৯০ একর জমি দেবে বাংলাদেশ, আলোচনা চলছে জলবিদ্যুৎ আমদানির
ভুটানের বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল করতে কুড়িগ্রামে ১৯০ একর জমি বরাদ্দ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ভুটান থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানি করতে চায়। আর এ বিদ্যুৎ ভারতের মধ্য দিয়ে আনতে হবে। তাই ত্রিপক্ষীয় চুক্তি প্রয়োজন।
রবিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, 'আমরা এ বিষয়ে আলোচনা করছি।’
তিনি বলেন, সেখানে ভুটানের ২৫ হাজার মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ নেপাল থেকেও জলবিদ্যুৎ আমদানি করবে এবং এ বিষয়ে প্রাথমিক পদক্ষেপগুলো নির্ধারণ করা হয়েছে।
হাছান মাহমুদ বলেন, শুভেচ্ছা স্বরুপ বাংলাদেশ থিম্পুতে একটি বার্ন ইউনিট নির্মাণ করবে, যা দেশের সক্ষমতারও বহিঃপ্রকাশ।
তিনি ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুকের সফর সম্পর্কেও জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ সময় বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে তিনটি নতুন সমঝোতা স্মারক সই হবে। এ ছাড়া সাংস্কৃতিক বিনিময় সংক্রান্ত আরও একটি সমঝোতা স্মারক নবায়ন করা হবে।
১৯৭১ সাল থেকে বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে যে দৃঢ় সম্পর্ক গড়ে উঠেছে তার ই ধারাবাহিকতায় চার দিনের সফরে ভুটানের রাজার সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী, স্বাস্থ্য, শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী এবং ভুটানের রানী সোমবার সকালে ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
হাছান মাহমুদ বলেন, 'ভুটানের সঙ্গে আমাদের বহুমুখী সম্পর্ক রয়েছে।’
রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন এবং ফার্স্ট লেডি গান স্যালুট ও গার্ড অব অনার দিয়ে বাদশাহকে অভ্যর্থনা জানাবেন।
সোমবার সকাল ১০টায় একটি বিশেষ ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে রাজার।
বিমানবন্দরে আনুষ্ঠানিকতা শেষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে যাবেন তিনি।
আরও পড়ুন: ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়ে দেশের বাজারকে অস্থিতিশীল করাই বিএনপির উদ্দেশ্য: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
সোমবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করবেন ভুটানের রাজা। তারা দুজনের মধ্যে বৈঠক হবে।
বৈঠকের পর দুই পক্ষের মধ্যে বেশ কয়েকটি সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।
একই দিন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের আগে রাজার সঙ্গে তার বাসভবনে সাক্ষাৎ করবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
মঙ্গলবার রাজা সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে যাবেন।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটও পরিদর্শন করবেন রাজা।
তিনি বঙ্গভবনে যাবেন, সেখানে রাষ্ট্রপতি ও ফার্স্ট লেডি তাকে অভ্যর্থনা জানাবেন। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টায় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠক করবেন রাজা।
রাষ্ট্রপতি সফররত রাজপরিবারের সম্মানে ইফতার ও নৈশভোজের আয়োজন করবেন।
বুধবার সকালে রানী জেটসুন পেমা ওয়াংচুক ও ভুটানের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা একটি বিশেষ ফ্লাইটে ভুটানের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন।
বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ রেহানা ও পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বিমানবন্দরে তাদের বিদায় জানাবেন।
ভুটানের রাজা পদ্মা সেতু ও নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে বাংলাদেশ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন করবেন।
বৃহস্পতিবার রাজা কুড়িগ্রামের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন করবেন।
একই দিন বিকেলে সোনাহাট স্থলবন্দর হয়ে আসামের গোলকগঞ্জের উদ্দেশে বাংলাদেশ ভূখণ্ড ত্যাগ করবেন।
সেখানে তাকে বিদায় জানাবেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
ভুটানের চতুর্থ রাজা জিগমে সিংগে ওয়াংচুক সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়ে এক চিঠিতে বলেন, তার গতিশীল ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশে শান্তি, স্থিতিশীলতা বিরাজের পাশাপাশি অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক উন্নয়ন হয়েছে।
তিনি ভুটানকে 'ঘনিষ্ঠ বন্ধু' হিসেবে উল্লেখ করেন।
১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর ভুটানের তৃতীয় রাজা টেলিগ্রামের মাধ্যমে বাংলাদেশকে স্বীকৃতির বার্তা পাঠান। এর মধ্যে দিয়ে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদানকারী প্রথম দেশ ভুটান।
সেই থেকে বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে একটি বিশেষ বহুমাত্রিক দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক রয়েছে। স্বাধীনতার পরপরই ভুটান সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের উদ্যোগ নেয়। এর ফলে ১৯৭৩ সালের ১২ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন: দেশকে মগের মুল্লুক বানাতে ব্যর্থ হয়ে খেই হারিয়েছে বিএনপি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়ে দেশের বাজারকে অস্থিতিশীল করাই বিএনপির উদ্দেশ্য: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়ে দেশের বাজারকে অস্থিতিশীল করা ও দ্রব্যমূল্য বাড়ানোই বিএনপির উদ্দেশ্য বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে অনেক পণ্যই ভারত থেকে আসে। হাজার হাজার কিলোমিটার সীমান্তে বৈধভাবে কিছু সীমান্ত বাণিজ্যও হয়। বিএনপির ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাকের মূল উদ্দেশ্য দেশের বাজারকে অস্থিতিশীল করে তোলা ও দ্রব্যমূল্য বাড়ানো, যাতে জনগণের ভোগান্তি হয়।’
শনিবার (২৩ মার্চ) দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে জেলার উন্নয়ন সমন্বয় সভায় বক্তৃতা শেষে বিএনপিসহ কয়েকটি দলের ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক সম্পর্কে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: দেশকে মগের মুল্লুক বানাতে ব্যর্থ হয়ে খেই হারিয়েছে বিএনপি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'আপনারা ভারত থেকে আসা পেয়াঁজ খাবেন, আপনাদের নেত্রী ভারত থেকে আসা শাড়ি পরিধান করবেন, আপনাদের মাঠের নেত্রীরাও ভারতীয় শাড়ি পরবেন, ভারত থেকে আসা গরুর মাংস দিয়ে আপনারা ইফতার করবেন, সেহেরি খাবেন, ভারতে চিকিৎসা নিতে যাবেন, আবার আপনারা ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দেবেন - এগুলো হিপোক্রেসি ছাড়া অন্য কিছু নয়। বিএনপির আসল উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশে বাজার অস্থিতিশীল করে পণ্যের মূল্য বাড়ানো।'
ড. হাছান বলেন, 'ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক যারা দিয়েছে, তাদের সঙ্গে শামিল হয়ে রিজভী সাহেব নিজের পরনের শালটিও জ্বালিয়ে দিয়েছে। আসলে শালটি ভারত থেকে কিনেছিল, নাকি বঙ্গবাজার থেকে কিনেছে আমি জানি না।'
সোমালি দস্যুদের হাত থেকে নাবিক ও জাহাজ উদ্ধার তৎপরতা
সোমালিয়ার জলদস্যুদের কাছে জিম্মি জাহাজ ও নাবিকদের উদ্ধারে সরকারের পক্ষ থেকে কী ধরনের ভূমিকা রাখা হচ্ছে- সাংবাদিকদের প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গতবার যখন এমভি জাহান মনি হাইজ্যাক হয়েছিল তাদের মুক্ত করতে ১০০ দিন সময় লেগেছিল। এখন যতদ্রুত সম্ভব তাদের মুক্ত করার চেষ্টাই আমরা করছি। এখানে অবস্থানকারী নাবিক ও জাহাজের যাতে কোনো ক্ষতি না হয়, সেভাবেই আমরা উদ্ধার করার চেষ্টা করছি।
তিনি বলেন, ‘জাহাজের মধ্যে কয়লা আছে। কয়লা একটি দাহ্য পদার্থ। সুতরাং এমন কিছু করা যাবে না যাতে করে দাহ্য পদার্থ হুমকির সম্মুখীন হয়, জাহাজের ক্ষতি হয়। সেভাবেই আমরা এগুচ্ছি এবং যারা জাহাজটি হাইজ্যাক করেছে, তারা এরই মধ্যে মালিক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও এ ব্যাপারে আমাদের সহযোগিতা করছে এবং আপনারা নাবিকদের পরিবারের সঙ্গে কথা বললেও জানতে পারবেন তারাও অনেকটা আশ্বস্ত। আশা করছি, আমরা সহসাই নাবিকদের উদ্ধার করতে পারব।’
চট্টগ্রাম উন্নয়ন সমন্বয় সভায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এর আগে চট্টগ্রামের উন্নয়ন সমন্বয় সভায় জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। আন্তঃদপ্তর সমন্বয়ের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানান ড. হাছান।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রকল্প শেষ হতে আরও আড়াই বছর বাকি আছে। এই আড়াই বছর সময়ের মধ্যে জনগণের যাতে কোনো ভোগান্তি না হয় সেটির ওপর গুরুত্ব দিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। একইসঙ্গে এই প্রকল্প শেষ হওয়ার পর যাতে নিয়মিতভাবে মেনটেইনেন্স করা হয় সেটিকেও গুরুত্ব দিয়ে আমরা আলোচনা করেছি।
আরও পড়ুন: দেশে উৎপাদিত শস্য ও খাদ্য গ্রহণে উৎসাহিত করতে কর্মসূচির আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
তিনি বলেন, আপনারা জেনে খুশি হবেন, আজকে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বে-টার্মিনালের জন্য এরই মধ্যে পাঁচশ একর জায়গা প্রধানমন্ত্রী বিনামূল্যে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেছেন। আরও তিনশ একরের বেশি জায়গা তারা পাবে, সেটির জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ আবেদন করেছে। এরই মধ্যে ডিপি ওর্য়াল্ড ও সিঙ্গাপুর পোর্ট অথরিটির সঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দর এমওইউ স্বাক্ষর করেছে।
তিনি আরও বলেন, এখানে তিনটি ভাগে কাজ হবে। একটি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ করবে, আরেকটি সিঙ্গাপুর বন্দর কর্তৃপক্ষ করবে, আরেকটি ডিপি ওয়ার্ল্ড করবে। ওয়ার্ল্ড ব্যাংকসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠানও সেখানে যুক্ত হচ্ছে। এটা একটি বড় অগ্রগতি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বে-টার্মিনাল হলে সেটি চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ে আরও বড় একটি নতুন বন্দর হবে, যেটি সমগ্র বাংলাদেশের জন্য একটি নতুন সম্পদ হবে এবং একইসঙ্গে এই বে-টার্মিনাল দিয়ে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যসমূহের পণ্য সরবরাহ আমরা করতে পারব। এছাড়া চট্টগ্রামে পাহাড়কাটা বন্ধ ও যানজট নিরসনসহ সার্বিক অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা ও প্রতি তিন মাস পরপর সমন্বয় সভা করার সিদ্ধান্তের কথা জানান হাছান মাহমুদ।
চট্টগ্রামের ডেপুটি কমিশনার আবুল বাশার মো. ফখরুজ্জামানের সঞ্চালনায় চট্টগ্রামের উন্নয়নসংক্রান্ত সমন্বয় সভায় অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়েশা খান, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী নজরুল ইসলাম চৌধুরী, সংসদ সদস্য মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, মহিউদ্দিন বাচ্চু, এম এ ছালাম, এম এ মোতালেব সিআইপি, বিভাগীয় কমিশনার তোফায়েল ইসলাম, ডিআইজি নুরে আলম মিনা, সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ওয়ান ইলেভেনের কুশীলবরা ঘাপটি মেরে আছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
দেশে উৎপাদিত শস্য ও খাদ্য গ্রহণে উৎসাহিত করতে কর্মসূচির আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
দেশে উৎপাদিত শস্য ও খাদ্য গ্রহণে মানুষকে উৎসাহিত করা ও জনসচেতনতা বাড়াতে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির প্রতিনিধিকে সেমিনার ও উদ্বুদ্ধকরণ কর্মসূচি গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
বৃহস্পতিবার বিকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির দেশ প্রতিনিধি ডোমেনিকো স্কালপেলির সঙ্গে সাক্ষাতে এ আহ্বান জানান তিনি।
পৃথক বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন জাতিসংঘ নারী সংস্থার দেশ প্রতিনিধি গীতাঞ্জলি সিং।
দুই কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভের সঙ্গে খাদ্য ব্যবস্থাপনা ও নারী উন্নয়ন বিষয়ে মত বিনিময় করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
বৈঠকে হাছান মাহমুদ বলেন, বিশ্বের সর্বোচ্চ জনঘনত্ব আর সর্বনিম্ন মাথাপিছু জমির বাংলাদেশে খাদ্যশস্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা এবং খাদ্য নিরাপত্তা বজায় রাখতে আবাদযোগ্য জমির সর্বোচ্চ ব্যবহারের বিকল্প নেই। মালিকানা চিহ্নিত করতে জমির মধ্যে 'আইল' দেওয়ায় বহু জমি চাষের আওতা থেকে বাদ পড়ে যায়। এই ক্ষতির হাত থেকে রক্ষার বিষয়েও ডব্লিউএফপিকে উদ্ভাবনী পদক্ষেপ গ্রহণের পরামর্শ দেন মন্ত্রী।
বিষয়গুলোতে গুরুত্ব দেবেন বলে জানান ডব্লিউএফপির কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ডোমেনিকো স্কালপেলি।
বৈঠকে তিনি বিদ্যালয় পর্যায়ে ও রোহিঙ্গাদের জন্য তার সংস্থার খাদ্য কর্মসূচির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন: দ. কোরিয়ার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে চুক্তির কথা ভাবছে বাংলাদেশ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
২০১১ সাল থেকে পরিচালিত স্কুল ফিডিং প্রোগ্রাম ও পরবর্তীতে রোহিঙ্গাদের জন্য ডব্লিউএফপির খাদ্য সহায়তা কর্মসূচির প্রশংসা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
বিএনপি জনগণের নয়, বিদেশিদের সহযোগিতা চায়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, এটিই দুঃখজনক যে বিএনপি জনগণের কোনো সহযোগিতা চায় না, বিদেশিদের সহযোগিতা চায়।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান বিদেশিদের সাহায্য চেয়েছেন বলে সাংবাদিকরা উল্লেখ করলে মঙ্গলবার দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ কথা বলেন মন্ত্রী।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'আওয়ামী লীগ সরকারকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিতে গিয়ে বিএনপি নিজেই ধপাস করে পড়ে এখন হাঁটা শুরু করেছে। হেঁটে হেঁটে লিফলেট বিতরণ করছে। দলটাকে টিকিয়ে রাখা, অস্তিত্ব জানান দেওয়ার জন্যই মঈন খান এ সব কথা বলছেন।'
তিনি বলেন, 'শেখ হাসিনার সরকার অত্যন্ত শক্ত ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে এবং আওয়ামী লীগের ভিত জনগণের গভীরে প্রোথিত।'
হাছান মাহমুদ বলেন, 'বিএনপিই এখন নড়েবড়ে হয়ে গেছে। তাদের নেতাদের ওপর কর্মীদের কোনো আস্থা নেই। মূল নেতাদের ওপর কেন্দ্রীয় নেতাদের আস্থা নেই। তাদের এখন নেতৃত্বের টানাপোড়ন চলছে।'
এ সময় সাংবাদিকরা বিএনপির স্থায়ী কমিটির অপর সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় 'বরই না খেজুর দিয়ে ইফতার হবে- সেটিও সরকার বলে দেবে' এমন মন্তব্য করেছেন উল্লেখ করলে মন্ত্রী হাছান বলেন, 'সরকার এটি বলেনি, এটি ব্যক্তিগত অভিমত। বরং সাধারণ মানুষ যাতে সুলভ মূল্যে পণ্যসামগ্রী পায় সেজন্য সরকার নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। ব্যবসায়ীরা যেন অহেতুক ইফতার পণ্যসামগ্রীরও মূল্যবৃদ্ধি না করতে পারে, সেজন্যও নানা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।'
হাছান মাহমুদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন রমজানে যেন অহেতুক কোনো ব্যয় না করা হয়, অহেতুক কোনো ইফতার পার্টিও না করা হয় বরং সেই টাকা যেন সাধারণ মানুষের মাঝে দেওয়া হয়। সে হিসেবে আমি আমার এলাকায় এবং সব সংসদ সদস্য ও নেতারা যার যার এলাকায় সাধারণ মানুষের মাঝে ইফতার সামগ্রী বিতরণ করছি।
তিনি বলেন, অপরদিকে বিএনপি রমজানের প্রথম দিনেই ইফতার পার্টি করে সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখলাম বিএনপি কোথাও কোথাও ইফতার পার্টির নামে চাঁদাবাজিও করছে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজের নাবিকদের সুস্থ ফেরত আনার বিষয়ে সরকার বদ্ধপরিকর বলে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের প্রচেষ্টা হচ্ছে সম্ভাব্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে নাবিক এবং জাহাজ দুটোকেই মুক্ত করা।’
মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী যারা দেশে অবস্থান করছে তাদের প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তাদের আগের মতোই ফেরত পাঠানোর বিষয়ে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে।
'জিম্মি নাবিক ও জাহাজ বিষয়ে সংবাদ প্রচারে সাংবাদিকদের দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
সোমালিয়ায় জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ ও ২৩ নাবিকের বিষয়ে সংবাদ প্রচারের ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, 'বাংলাদেশের টেলিভিশনে কী দেখাচ্ছে, কী হচ্ছে সেটা কিন্তু যারা জিম্মি করেছে তারা দেখে, স্যাটেলাইটের মাধ্যমে বাংলাদেশের সব টেলিভিশন দেখার সুযোগ আছে। যখন এই বিষয়টাকে অতি গুরুত্ব দেওয়া হয়, জিম্মিদের পরিবারের প্রতিক্রিয়া যখন ওরা দেখে, তখন অপহরণকারীদের অবস্থান আরও অনমনীয় হয় ও হচ্ছে। এতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।'
শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর দেওয়ানজি পুকুর লেনের ওয়াইএনটি সেন্টারে মত বিনিময়কালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: নাগরিকত্ব আইন ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বিষয়ে সবারই আরও সতর্ক হওয়া দরকার উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের মূল লক্ষ্য তো নাবিকদের ও জাহাজটাকে মুক্ত করা। সুতরাং আমরা সবাই নিজ নিজ জায়গা থেকে যদি দায়িত্বশীল আচরণ করি তাহলে এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ সহজ হবে।’
ড. হাছান বলেন, এটি নিয়ে সরকার কাজ করছে, অতীতেও সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে ১০০ দিনের মাথায় একই কোম্পানির জাহাজ এবং নাবিকদের মুক্ত করা সম্ভব হয়েছিল। এখনো আমরা আশা করছি আমাদের যে সমন্বিত প্রচেষ্টা আছে, সুস্থভাবে নাবিকদের ও জাহাজটাকে মুক্ত করে নিয়ে আসতে পারব।
আরও পড়ুন: নাবিক ও জিম্মি জাহাজ মুক্ত করতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে সরকার: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
নাগরিকত্ব আইন ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ভারতের নাগরিকত্ব আইন তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয় উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশ প্রতিবেশী দেশ হিসেবে বিষয়টি দেখছে।
তিনি বলেন, ‘ভারতের নতুন নাগরিকত্ব আইন সিটিজেনশিপ এমেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট (সিএএ) তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। যেহেতু বাংলাদেশ প্রতিবেশী দেশ, সেই হিসেবে আমরা বিষয়টির দিকে নজর রাখছি।’
শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর দেওয়ানজি পুকুর লেনের ওয়াইএনটি সেন্টারে মত বিনিময়কালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: নাবিক ও জিম্মি জাহাজ মুক্ত করতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে সরকার: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
যুক্তরাষ্ট্রের একটি দপ্তর আবারও বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করেছে – এ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো দপ্তর তাদের মতামত দিতেই পারে। তারা বলেছে, বিরোধী দল অংশ নেয়নি। বাংলাদেশে ৪৪টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মধ্যে ২৯টি রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। কোনো বিশেষ রাজনৈতিক দলের অংশ নেওয়া বা না নেওয়ার দায় সরকারের ওপর বর্তায় না, সেটি সেই দলের দায়িত্ব।’
তিনি বলেন, 'সেই দল বরং নির্বাচন প্রতিহত করার ডাক দিয়েছিল, সেই লক্ষ্যে দেশে সহিংসতার আশ্রয় নিয়েছিল এবং সেই সহিংসতার সঙ্গে যারা যুক্ত ছিল, তাদেরই শুধু গ্রেপ্তার করা হয়েছে।'
হাছান বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্ব এবং সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে তারা কাজ করছে। আমরাও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ করতে এবং আমাদের যে বহুমাত্রিক সম্পর্ক, সেটিকে আরও বিস্তৃত করার লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। সামনের দিনগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দেশে ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একসঙ্গে কাজ করার লক্ষ্যে এগোচ্ছি।’
যেকোনো দেশের ভিন্নমতকে বাংলাদেশ সম্মান করে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশিরভাগ রাষ্ট্র আমাদের সঙ্গে ভবিষ্যতে সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছে। পৃথিবীর প্রায় ৮০টি দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছে। এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টও প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে সম্পর্ক দ্বিতীয় পর্যায়ে উন্নিত করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছে। সুতরাং আমাদের বিবেচনায় এই অঞ্চলের নিরিখে অত্যন্ত সুন্দর, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে।’
আরও পড়ুন: পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ
মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষীদের ফেরত পাঠাতে কাজ করছে সরকার: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, মিয়ানমার থেকে আবারও যেসব সীমান্তরক্ষী বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে, আগের মতোই তাদের ফেরত পাঠানোর লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময়কালে এ কথা জানান তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ দিন দুপুর পর্যন্ত নতুন করে মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ১৭৭ জন বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে, কয়েকজন বেসামরিক নাগরিক আসার চেষ্টা করেছিল তাদের ফেরত পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এর আগেও মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী ও সেনাবাহিনীর সদস্য এবং তাদের পরিবারের কয়েকজন সদস্য আশ্রয় নিয়েছিল। মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে আমরা তাদের ফেরত পাঠিয়েছি। এবারও তাই করা হচ্ছে। মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিশেষ করে সীমান্তবর্তী অঞ্চলে সৃষ্ট পরিস্থিতির জন্যই বারবার এমন অবস্থা তৈরি হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া বিজিপি সদস্যের সংখ্যা ১৭৯
মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে ডাকা হবে কি না- এ প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, তাদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রয়েছে। প্রয়োজনে রাষ্ট্রদূতকে ডাকা হবে, এখনও ডাকা হয়নি।
আরব আমিরাতে বাংলাদেশিদের কর্মসংস্থান সহজীকরণের প্রস্তাব পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য ভিসা পুনরায় চালু, ভিসা পদ্ধতি সহজ এবং এক নিয়োগকর্তার কাছ থেকে অন্য নিয়োগকর্তার কাছে ওয়ার্ক পারমিট স্থানান্তর সহজীকরণের প্রস্তাব করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
দেশটির মানবসম্পদ ও এমিরেটাইজেশন বিষয়ক মন্ত্রী ড. আব্দুল রহমান আল আওয়ারের সঙ্গে বৈঠকে এ অনুরোধ জানান দেশটিতে সফররত পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
শুক্রবার সকালে দুবাইয়ে মানবসম্পদমন্ত্রীর কার্যালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট দ্বিপাক্ষিক বিষয়ের মধ্যে আমিরাতে বাংলাদেশি স্নাতক নার্স, কেয়ারগিভার, স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক টেকনিশিয়ান, কৃষিবিদসহ বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রে বাংলাদেশি নাগরিকদের নিয়োগের বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
আরও পড়ুন: সৌদি প্রবাসীদেরকে বৈধ পথে রেমিটেন্স পাঠাতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান
এ সময় বাংলাদেশি কর্মীদের কর্মসংস্থানে কোনো বাধা নেই জানিয়ে আমিরাতের মানবসম্পদমন্ত্রী বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকার প্রযুক্তিচালিত চাকরির বাজারের চাহিদার ভিত্তিতে দক্ষ কর্মী নিয়োগের ওপর জোর দিচ্ছে।
তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতের কর্মী নিয়োগ ও ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়া করার জন্য এআই এবং সম্পর্কিত সফ্টওয়্যার ব্যবহার সম্পর্কে জানান এবং চাকরি প্রার্থীদের দক্ষতা যাচাই পদ্ধতি তুলে ধরেন।
এই প্রেক্ষাপটে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান আমিরাত-গামী কর্মীবাহিনীর দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগ সম্পর্কে জানান। পাশাপাশি বাংলাদেশি কর্মীদের প্রস্তুত করতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভাষা প্রশিক্ষক নিয়োগের কথাও জানান।
আরও পড়ুন: জলবায়ু অভিবাসী ও শরণার্থীদের সংজ্ঞা পরিবর্তন করতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান
বৈঠকে মন্ত্রী ড. হাছান কুয়েত সরকারের বাংলাদেশি নার্স নিয়োগের কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশ থেকে যোগ্য নার্স ও চিকিৎসা পেশাজীবী নিয়োগের জন্য আমিরাত পক্ষকে অনুরোধ করেন।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের মন্ত্রী প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে ঢাকায় আসন্ন যৌথ কারিগরি কমিটির বৈঠকে কুয়েতি নিয়োগের মডেল পরীক্ষা করবেন বলে আশ্বাস দেন।
উভয় পক্ষ সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশি প্রবাসীদের কল্যাণমূলক বিষয় নিয়েও আলোচনা করেছেন।
বৈঠকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. আবু জাফর, দুবাইয়ে নিযুক্ত কনসাল জেনারেল এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পশ্চিম এশিয়া শাখার মহাপরিচালক উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: আমাদের সম্পর্কের নতুন অধ্যায় সৃষ্টি করতে চাই: মার্কিন প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী
এ দিন সন্ধ্যায় আবুধাবির আল আইন শহরের রয়্যাল প্যালেসে সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ আবদুল্লাহ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠানের কথা রয়েছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে দুই দিনের সফরে মন্ত্রী ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে সেখানে বাংলাদেশি প্রবাসীদের সঙ্গে একটি কমিউনিটি মিটিংয়ে যোগ দেবেন এবং অন্যান্য বিশিষ্টজনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ধর্মবিষয়ক সম্পাদক সিরাজুল মোস্তফা মন্ত্রীর সঙ্গে রয়েছেন।
আরও পড়ুন: বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা করার লক্ষ্য রয়েছে বাংলাদেশের: পররাষ্ট্রমন্ত্রী