ঘুম চক্র
সার্কেডিয়ান রিদম বা দেহ ঘড়ি নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি
ঘুমিয়ে থাকার সময় মস্তিষ্কে নতুন তথ্য জানা ও তা মনে রাখার জন্য কার্যক্ষমতার বিকাশ ঘটতে থাকে। একই সঙ্গে শরীরের অভ্যন্তরের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মাঝে সঞ্চার হতে থাকে নতুন কর্মোদ্দীপনার। ঘুমের এই পরিব্যাপ্তি বাধাগ্রস্ত হলে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে সমগ্র দেহে। পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে দৈনন্দিন কাজ এবং রোগ প্রতিরোধের জন্য শরীর তার প্রয়োজনীয় শক্তি তৈরিতে বাধা পায়। তাই প্রকৃতিগতভাবেই মানবদেহের চাহিদা থাকে ঘুমের জন্য একটি রুটিন মেনে চলার। আর এখানেই আসে সার্কেডিয়ান রিদম বা দেহ ঘড়ি নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি। চলুন, এ সংক্রান্ত স্বাস্থ্য সমস্যাগুলো বিশ্লেষণের মাধ্যমে জেনে নিই কীভাবে সার্কেডিয়ান ছন্দ নিয়ন্ত্রণ করবেন।
সার্কেডিয়ান রিদম কি?
ল্যাটিন শব্দ সির্কা যার অর্থ ‘চক্র’, এবং ডাইস- যার অর্থ ‘দিন’। এই শব্দ দুটির সমন্বয় থেকে উদ্ভব ‘সার্কেডিয়ান’ শব্দের। সার্কেডিয়ান ছন্দ বা দেহ ঘড়ি এমন এক প্রক্রিয়া, যা সন্তান প্রসব করতে পারে এমন জীব প্রজাতির প্রকৃতি ও পরিবেশকে প্রভাবিত করে। একটি সার্কেডিয়ান চক্রের প্রতি ২৪ ঘণ্টায় পুনরাবৃত্তি ঘটে। এর ছন্দগুলো নিয়ন্ত্রিত হয় সার্কেডিয়ান ঘড়ির মাধ্যমে, যার উদ্দেশ্য জৈবিক প্রক্রিয়াগুলোর মাঝে সুনির্দিষ্ট স্পন্দন ধরে রাখা। এই স্পন্দন প্রাণীর সর্বাধিক সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য সঠিক সময় নির্ধারণ করে। শুধু মানুষেই নয়, এই প্রক্রিয়া দেখা যায় অন্যান্য প্রাণী, উদ্ভিদ, ছত্রাক, এমনকি সায়ানোব্যাকটেরিয়ার ক্ষেত্রেও।
সার্কেডিয়ান চক্র কীভাবে কাজ করে
সারা শরীরের প্রত্যেকটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ এবং গ্রন্থির প্রক্রিয়া একটি নির্দিষ্ট স্পন্দনে সম্পাদিত হয়। এগুলোকে প্রতিটি প্রক্রিয়ার আনুষঙ্গিক সময়সূচী বা ঘড়ি বলা যেতে পারে। এই সবগুলো ঘড়ির পরিচালনায় থাকে একটি মাস্টার ক্লক, যেটি থাকে মস্তিষ্কে। চিকিৎসা শাস্ত্রে এর নাম সুপ্রাকিয়াসমেটিক নিউক্লিয়াস (এসসিএন)।
আরও পড়ুন: জিমে অনুশীলনের সময় সম্ভাব্য দুর্ঘটনা এড়ানোর উপায়
স্পষ্টভাবে বলতে গেলে এই মাস্টার ঘড়ি পূর্ণ চক্র সম্পন্ন করে ২৪ ঘণ্টার কিছুটা বেশি সময়ে। প্রায় ১২ থেকে ১৮ মিনিট কম ধরে মাস্টার ঘড়িকে পৃথিবীর ২৪ ঘণ্টা ঘূর্ণনের সঙ্গে সামঞ্জস্য করা হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই চক্র তরুণ এবং কিশোর-কিশোরীদের জন্য প্রযোজ্য। সার্কেডিয়ান ছন্দের সময়গুলো নির্ধারিত হয় তার চারপাশের পরিবেশ থেকে প্রাপ্ত সংকেত অনুসারে। এই সংকেতগুলোকে বলা হয় সাইটগিবার্স , যেটি মূলত একটি জার্মান শব্দ, যার অর্থ ‘সময় রক্ষক’।
সার্কেডিয়ান চক্রের সময় নির্ধারণকারী এই সাইটগিবারগুলো হলোঃ
- প্রাকৃতিক আলো এবং অন্ধকার
- খাদ্যাভ্যাস
- শরীর চর্চা
- পরিবার, আত্মীয়, বন্ধু-বান্ধব, বা সহকর্মীদের সঙ্গে সময় কাটানো
- প্রাত্যহিক জীবন ধারণ
- মানসিক চাপ
আরও পড়ুন: ব্লু জোন রহস্য: রোগহীন দীর্ঘজীবী সম্প্রদায়ের খোঁজে
সাইটগিবারগুলো মস্তিষ্কে হরমোন নিঃসরণের মাধ্যমে শরীরের টিস্যুগুলোতে রাসায়নিক সংকেত প্রেরণকে উদ্দীপিত করে। আর এর মধ্য দিয়েই খাদ্যের শক্তিতে রূপান্তর, শরীরের তাপমাত্রার ওঠানামা, এবং ঘুমাতে যাওয়া বা জেগে ওঠার সময়গুলো পরিচালিত হয়।
বিভিন্ন ধরনের সার্কেডিয়ান রিদম অসঙ্গতি
ডিলেইড স্লিপ-ওয়েক ফেজ ডিসঅর্ডার
এই সমস্যায় ব্যক্তি ঘুমানোর উদ্দেশ্যে যে মুহূর্তে শুয়ে পড়েন সে সময় থেকে অনেক দেরিতে তার ঘুম আসে। একইভাবে সময় মতো ঘুম থেকে ওঠার ক্ষেত্রেও অসুবিধা হয়।
জেট ল্যাগ ব্যাধি
ভ্রমণের সময় ভিন্ন ভিন্ন টাইম জোনে থাকার কারণে এই জটিলতা হয়ে থাকে। যে দেশগুলোতে দিন ও রাতের সময়সূচির মাঝে বিরাট পার্থক্য, সে দেশগুলোতে ভ্রমণের ক্ষেত্রে দেহ ঘড়ির এরকম ছন্দ পতন হয়।
আরও পড়ুন: অ্যান্টিবায়োটিক-এর অপপ্রয়োগ: কেন অ্যান্টিবায়োটিক আর কাজ করছে না?
শিফট ওয়ার্ক স্লিপ ডিসঅর্ডার
রাতের শিফটে যারা কাজ করেন বা যাদের কাজের সময় প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হয়, তাদের এ ধরণের জটিলতা দেখা দেয়। কাজের প্রকৃতির কারণে পারিপার্শ্বিক পরিবেশেরও পরিবর্তন হয়, যা স্বাস্থ্যকর ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়।
ইরেগুলার স্লিপ-ওয়েক রিদম ডিসঅর্ডার
ঘুম সংক্রান্ত এই দুর্লভ জটিলতায় প্রতিদিনের ঘুমের টাইম টেবিলটা থাকে আলাদা। একদিন হয়ত শুধু দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘুম হলো, পরের দিন আবার তা বদলে হয়ে গেলো রাত ১২টা থেকে সকাল ১০টা। অপ্রত্যাশিত এই ঘুম চক্রটি নিরবচ্ছিন্নভাবে প্রতিদিন কোনও নির্দিষ্ট সময়সীমা পায় না।
নন-টুয়েন্টি ফোর-আওয়ার স্লিপ-ওয়েক রিদম ডিসঅর্ডার
এই ডিসঅর্ডারে ধীরে ধীরে ঘুমের সময়সীমার স্থানান্তর ঘটে। প্রতিদিন একটু একটু করে প্রলম্বিত এই সমস্যাটি এক সময় ২৪ ঘণ্টার চক্রের বাইরে চলে যায়। ফলে দেখা যায় ঘুম রাতের পরিবর্তে পরের দিন দুপুরের দিকে আসছে। এমনকি এই ঘুমের বিলম্বটা মাত্রাতিরিক্ত হয়ে পরের দিন সন্ধ্যা বা রাত পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে।
আরও পড়ুন: চোখ উঠা রোগের লক্ষণ, কারণ, প্রতিকার ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা
অ্যাডভান্স্ড স্লিপ-ওয়েক ফেজ ডিসঅর্ডার
এই সমস্যায় অপ্রত্যাশিতভাবে কাঙ্ক্ষিত সময়ের অনেক আগে ঘুম চলে আসতে পারে বা ঘুম ভেঙে যেতে পারে। কতক্ষণ জেগে বা ঘুমিয়ে থাকা হয়েছে এখানে সেটা মুখ্য নয়। সন্ধ্যায় জেগে থাকাটা খুব কঠিন হতে পারে, আবার বেশি রাত করে ঘুমিয়েও খুব ভোরে ঘুম ভেঙে যায়।
দেহ ঘড়ির ছন্দ পতনের কারণ
জিনগত কারণ
মস্তিষ্ক বা হরমোনকে প্রভাবিত করে এমন জিনগত অবস্থা সার্কেডিয়ান ছন্দ পতনকে রীতিমত ব্যাধিতে রূপ দিতে পারে। স্মিথ-ম্যাজেনিস সিন্ড্রোম ঠিক এমনি একটি জেনেটিক অবস্থা, যা শরীরের মেলাটোনিন হরমোন তৈরির উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এই হরমোনটি একটি মানুষকে ঘুমাতে সাহায্য করে। স্মিথ-ম্যাজেনিস প্রবণতা ঘুমের প্যাটার্নকে সম্পূর্ণরূপে বিপরীত করে দিতে পারে, যার ফলে সারা দিন ঘুম এবং সারা রাত অনিদ্রা হতে পারে।
মস্তিষ্কের কার্যকলাপে বাধাগ্রস্ত হওয়া
বাহ্যিক গুরুতর কোনও আঘাতে মাথা ফেটে যাওয়া, ট্রমা, অবক্ষয়জনিত মস্তিষ্কের রোগ দেহের সামগ্রিক জৈবিক সময়কে নষ্ট করতে পারে। পাশাপাশি ভাইরাস সংক্রমণ বা বিষক্রিয়ার ফলে মস্তিষ্কের টিস্যুগুলোতে সৃষ্ট প্রদাহ স্লিপ ডিসঅর্ডারের দিকে ধাবিত করতে পারে।
আরও পড়ুন: আত্মহত্যার প্রবণতা: কারণ, প্রতিকার ও প্রতিরোধ
দৃষ্টি প্রতিবন্ধকতা
মস্তিষ্কের অভ্যন্তরে হাইপোথ্যালামাস নামে একটি অঞ্চল রয়েছে। মস্তিষ্কের কোষের (নিউরন) একটি নির্দিষ্ট ক্লাস্টারের এই আবাসস্থলটি হচ্ছে সেই মাস্টার ক্লক বা এসসিএন। চোখের সঙ্গে এর সরাসরি সংযোগ থাকে। তাই এর কার্যকারিতার জন্য দিনের প্রাকৃতিক আলো একটি অপরিহার্য বিষয়। চোখের রেটিনা বা স্নায়ুতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হলে জৈবিক ঘড়ি গুরুতর ভাবে ক্ষতির মুখে পড়ে।
ঘন ঘন ভ্রমণ
যে কোনও অচেনা পরিবেশে মানিয়ে নেওয়ার মতো অভিযোজন ক্ষমতা মানুষের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য। এরপরেও মাত্রাতিরিক্ত ভিন্ন টাইম জোনের স্থানগুলোতে ভ্রমণ করা জেট ল্যাগের উদ্ভব ঘটাতে পারে। একই টাইম জোনের ক্ষেত্রেও এটা হতে পারে, কেননা নিরবচ্ছিন্ন ঘুমের জন্য একটি স্থায়ী পরিবেশও প্রয়োজন।
কর্মক্ষেত্রের পরিবেশ
দিনের বদলে রাতে কাজ করা বা কাজের সময়সীমা দিনের একটি নির্দিষ্ট সময়ে স্থায়ী না হলে শিফট ওয়ার্ক স্লিপ ডিসঅর্ডার হয়। এছাড়া সদ্য নবজাতকের বাবা-মাদেরও এই জটিলতা হয়। কেননা শিশুর যত্নের জন্য রাতের পর রাত তাদের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গু সম্পর্কে ১০টি প্রচলিত ধারণা: জেনে নিন সঠিক তথ্য
অস্বাস্থ্যকর ঘুমের অভ্যাস
জৈবিক ঘড়ির সুষ্ঠ স্পন্দনের জন্য দিনের প্রাকৃতিক আলোর সান্নিধ্যে থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অন্যদিকে রাতের বেলা কৃত্রিম আলো স্বাস্থ্যকর ঘুমের জন্য ক্ষতিকর। টিভি স্ক্রিন, অ্যালার্ম ঘড়ি, স্মার্টফোন, ও কম্পিউটার মনিটর এই কৃত্রিম আলোর একটি উপযুক্ত উৎস। নিয়মিত রাত জেগে টিভি দেখা বা কম্পিউটার কিংবা স্মার্টফোন চালানো চোখকে সেই কৃত্রিম আলোর সংস্পর্শে রাখে। অন্যদিকে রাতের ঘুমটি দিনে হওয়ার কারণে চোখ দিনের প্রথম সূর্যালোক থেকে বঞ্চিত হয়। এরকম জীবন ধারণে অভ্যস্ত ব্যক্তিরা সার্কেডিয়ান স্পন্দন ব্যাধির ক্ষেত্রে অনেক বেশি ঝুঁকিপূর্ণ।
হরমোনের পরিবর্তন
নারীদের তুলনায় পুরুষদের স্লিপ ডিসঅর্ডারগুলো হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তবে হরমোনের পরিবর্তনের সাপেক্ষে নারীদের গর্ভাবস্থায় বা প্রসব পরবর্তী সময়ে জৈবিক ঘড়ির অসঙ্গতিগুলো দেখা দিতে পারে।
আরও পড়ুন: সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাক: কারণ, লক্ষণ ও প্রতিরোধ
সার্কেডিয়ান রিদম অসঙ্গতির লক্ষণ
ছন্দ পতনের উপসর্গগুলো মূলত ব্যধি বা অসঙ্গতিগুলোর ধরণের সঙ্গে পরিবর্তিত হয়। গড়পড়তায় যে লক্ষণগুলো দৃশ্যমান হয়, সেগুলো হচ্ছেঃ
- দীর্ঘক্ষণ শুয়ে থাকার পরেও ঘুম না আসা
- এক টানা ঘুম না হয়ে বারবার ঘুম ভেঙে যাওয়া
- বিশেষ করে মাঝরাতে বা ভোরে ঘুম না আসা
- আকস্মিকভাবে কাঙ্ক্ষিত সময়ের আগেই ঘুম ভাঙার পর আর ঘুম না আসা
- ঘুমের জড়তার কারণে হাঁটতে সমস্যা হওয়া
- দিনের বেলায় তন্দ্রা বা হাইপার-সোমনিয়া
- দিনের বেলা কোনো কিছুতে মনোনিবেশ করতে সমস্যা, নিজের চারপাশ সম্পর্কে অসতর্ক থাকা
- দীর্ঘক্ষণ যাবৎ ক্লান্ত বোধ
- অসহনীয় মাথাব্যথা
- অযাচিত বিরক্তি এবং তা থেকে হতাশার উদ্রেক
আরও পড়ুন: নারীদের চেয়ে পুরুষদের আত্মহত্যার হার বেশি যে কারণে
সার্কেডিয়ান রিদম রিসেট করার উপায়
খুব ভোরে সূর্যালোকের সংস্পর্শে যাওয়া
সদ্য উদয় হওয়া সূর্যের আলো চোখের স্বাস্থ্য উন্নত করে। এর জন্য খুব সকালে উন্মুক্ত জায়গায় হাঁটাহাঁটি করা যেতে পারে। এতে করে আলো ও অন্ধকারের জন্য নির্ধারিত জৈবিক ছন্দগুলো পুনঃস্থাপিত হয়।
সঠিক সময়ে খাবার গ্রহণ
ঘুমের সময়সূচির মতো ক্ষুধা এবং বিপাক প্রক্রিয়াও সার্কেডিয়ান ছন্দের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। সকালে ঘুম থেকে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে নাস্তা খাওয়া জরুরি। একই সঙ্গে রাতের খাবার খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘুমাতে না যেয়ে খাবার হজমের জন্য সময় দেওয়া আবশ্যক। পাশাপাশি খেয়াল রাখা জরুরি যে, রাতের খাবার যেন খুব বেশি দেরি হয়ে না যায়। খাদ্য গ্রহণের এই অভ্যাসটি নিয়মিত বজায় রাখার মাধ্যমে জৈবিক স্পন্দন আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব।
ক্যাফেইন সীমিত করা
ঘুমের জড়তা বা ক্লান্তি দূর করলেও ক্যাফেইন ঘুমকে ব্যাহত করে। তাই ক্যাফেইন কখন এবং কত পরিমাণে নেওয়া হচ্ছে দুটোই সমান গুরুত্বপূর্ণ। সকালে নাস্তার পরে, বিকালে নাস্তার সঙ্গে পরিমিত পরিমাণে চা-কফি নেওয়া যেতে পারে। তবে সন্ধ্যার পরে এ ধরণের পানীয় গ্রহণ সীমিত করা উচিত।
আরও পড়ুন: মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ: কারণ, লক্ষণ ও প্রতিরোধ
খুব দেরিতে ব্যায়াম না করা
ঘুমাতে যাওয়ার আগে বা তার কাছাকাছি সময়টা শরীর চর্চার জন্য উপযুক্ত নয়। এটি নিরবচ্ছিন্ন ঘুমের জন্য ক্ষতিকর, বিশেষ করে যদি খুব সকালে ওঠার তাড়া থাকে। সকাল সকাল ব্যয়ামের ক্ষেত্রেও অনিয়মিত হলে স্বাস্থ্যকর ঘুমে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। সুতরাং খুব সকাল কিংবা ঘুমাতে যাওয়ার অনেক আগে যে সময়েই হোক না কেন, ব্যয়াম হতে হবে প্রতিদিনি একটি নির্দিষ্ট সময়ে।
কৃত্রিম আলো এড়িয়ে চলা
টিভি, স্মার্টফোন, কম্পিউটার এবং ট্যাবলেটের মতো ডিজিটাল ডিভাইসগুলো থেকে নির্গত নীল আলো চোখের জন্য ক্ষতিকর। অনেক সময় ধরে এই ডিভাইসগুলোর ব্যবহার করা দীর্ঘ মেয়াদে স্থায়ীভাবে অনিদ্রা সৃষ্টি করে। তাই ঘুমানোর কয়েক ঘণ্টা আগে থেকে এগুলো বন্ধ করে রাখা উচিত। এছাড়া অন্যান্য উইন্ডোর লাইটগুলোও ঘুমের আগে নিভিয়ে ফেলা উত্তম।
শেষাংশ
সার্কেডিয়ান রিদম বা দেহ ঘড়ি নিয়ন্ত্রণের মাঝে নিহিত রয়েছে মানসিক ও শারীরিক সুস্থতার চাবিকাঠি। অন্যান্য বয়স অপেক্ষা কর্মোদ্দীপনা বেশি থাকলেও কিশোর ও তরুণ বয়সীদের ক্ষেত্রে ছন্দ পতনের আশঙ্কা বেশি। অনিয়মিত ঘুমের প্রতিরোধকল্পে কর্মক্ষেত্রের পরিবেশ ও মাত্রাতিরিক্ত ভ্রমণ যতটা সম্ভব নিয়ন্ত্রণের মধ্যে নিয়ে আসাটা জরুরি। সেই সঙ্গে খাদ্য গ্রহণ এবং শরীর চর্চার সময়ানুবর্তিতা সামগ্রিকভাবে ছন্দ ফিরিয়ে আনতে পারে জৈবিক ঘড়িতে।
আরও পড়ুন: অটিজম কী? অটিজম সচেতনতা ও সহমর্মিতা কেন জরুরি?
৬ মাস আগে