কৌশলগত মাইলফলক
বাংলাদেশে ইফাদের নতুন কার্যালয় কৌশলগত মাইলফলক: ভাইস প্রেসিডেন্ট
ইন্টারন্যাশনাল ফান্ড ফর এগ্রিকালচারাল ডেভেলপমেন্টের (ইফাদ) ভাইস প্রেসিডেন্ট জেরার্ডাইন মুকেশিমানা বলেছেন, বাংলাদেশে ইফাদের নতুন কার্যালয় তাদের অংশীদারদের আরও ঘনিষ্ঠ হওয়া, শক্তিশালী সহযোগিতা জোরদার করা এবং বাংলাদেশের গ্রামীণ এলাকায় কার্যকর পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে একটি কৌশলগত মাইলফলক।
বৃহস্পতিবার (২ মে) মুকেশিমানা বাংলাদেশে তার প্রথম আনুষ্ঠানিক সফরে বাংলাদেশে একটি নতুন কান্ট্রি অফিস উদ্বোধন করেছেন। এটি বাংলাদেশের গ্রামীণ উন্নয়ন প্রচেষ্টায় ইফাদের স্থায়ী প্রতিশ্রুতিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিল।
আরও পড়ুন: ৭ হাজার ২১৪ কোটি টাকার প্রকল্পের জন্য ঋণ আলোচনা শেষ করেছে ইফাদ ও বাংলাদেশ
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মুকেশিমানা বলেন, 'গত সপ্তাহ ধরে আমি দেখেছি কীভাবে ইফাদ এবং বাংলাদেশ সরকার ক্ষুদ্র কৃষকদের- বিশেষত নারী ও তরুণদের ক্ষমতায়নে জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে তাদের আয় বৃদ্ধি করতে এবং তাদের সম্প্রদায়ের জন্য আরও পুষ্টিকর খাদ্য উৎপাদনে একসঙ্গে কাজ করেছে।’
উপরাষ্ট্রপতির নেতৃত্বে ইফাদ প্রতিনিধিদল এর আগে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে ইফাদের অর্থায়নে পরিচালিত প্রকল্পগুলো পরিদর্শন করেন। এসময় তারা নীলফামারী ও ঠাকুরগাঁও জেলায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ও পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকও করেন।
তারা ক্ষুদ্র কৃষক এবং কৃষি ব্যবসায়ীসহ প্রকল্পে অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিল।
ইফাদের সহায়তার মাধ্যমে এই সম্প্রদায়গুলো অর্থ, অন্তর্ভুক্তিকরণ, প্রশিক্ষণ ও বাজার সংযোগের তথ্যের মতো গুরুত্বপূর্ণ সংস্থানগুলোতে সুবিধাপ্রাপ্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, আজ যখন আমরা বাংলাদেশে ইফাদের নতুন কান্ট্রি অফিস খুললাম, আমরা গ্রামীণ উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে তাদের অঙ্গীকারকে সাধুবাদ জানাই। এই মাইলফলক সম্প্রদায়ের ক্ষমতায়ন এবং স্থায়িত্ব বাড়ার জন্য আমাদের অভিন্ন উৎসর্গকে তুলে ধরে।
বাংলাদেশ সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ও উইং প্রধান (সমন্বয় ও নরডিক) মো. হাফিজুর রহমান বলেন, ইফাদকে এই নতুন যাত্রার জন্য স্বাগত জানাই।
আরও পড়ুন: উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশের সক্ষমতার প্রশংসা ইফাদ প্রেসিডেন্টের
ইফাদের এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক রিহানা রিফাত রাজা বলেন, ‘এই অফিসের উদ্বোধন গ্রামীণ জনগণের উন্নত জীবন ও জীবিকা গড়ে তোলার পথে ইফাদ এবং বাংলাদেশ একসঙ্গে যা অর্জন করেছে তা উদযাপনের একটি সুযোগ। তিনি বলেন, এটি ক্রমাগত উন্নয়ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টা জোরদারে কান্ট্রি টিমের মধ্যে নতুন উদ্যম ও উদ্দীপনার ইঙ্গিত দেয়।’
তিনি বলেন, যেহেতু ইফাদ বাংলাদেশে তার উপস্থিতি জোরদার করছে এবং আর্থিক সম্পদ সম্প্রসারণ করছে, তাই এটি সরকার, দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় দাতা সংস্থা এবং বেসরকারি খাতের সঙ্গে বর্ধিত অংশীদারিত্বের মাধ্যমে বৃহত্তর প্রভাবের অপার সম্ভাবনাকে স্বীকৃতি দিয়েছে।
ইফাদ-সহায়ক হস্তক্ষেপ গ্রামীণ অর্থায়নে সহজ ও সাশ্রয়ী প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা এবং অবকাঠামো উন্নয়ন বাড়ানো থেকে শুরু করে জলবায়ু-স্মার্ট কৃষি চর্চার প্রচার পর্যন্ত সবকিছুতে বিনিয়োগ করেছে।
ইফাদ বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর আরনড হ্যামেলিয়ার্স বলেন, 'নতুন এই স্থানটি ২০৩০ সালের মধ্যে দারিদ্র্য বিমোচন এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে ইফাদের প্রতিশ্রুতির গভীরতার ইঙ্গিত।’
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ইফাদ-এর ভাইস প্রেসিডেন্টের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা স্টেফানি মিকালেফ, বাংলাদেশে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ জিয়াওকুন শি এবং বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি বাংলাদেশের প্রতিনিধি ডোমেনিকো স্ক্যালপেলি।
১৯৭৮ সাল থেকে ইফাদ বাংলাদেশ সরকারকে তার উচ্চাভিলাষী পল্লী উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়তা করে আসছে। বিগত ৪৫ বছরে ইফাদ দেশের ৩৭টি প্রকল্পে ১ কোটি ১০ লাখেরও বেশি পরিবারের জীবন ও জীবিকার উন্নয়নে ৩৯০ কোটি মার্কিন ডলার অর্থায়ন করেছে।
আরও পড়ুন: গম ও ভোজ্য তেলের উৎপাদন বাড়াতে ইফাদের সহায়তা চেয়েছে বাংলাদেশ
৩২৬ দিন আগে