বঙ্গবন্ধু বৃত্তি
এসআইডিএস ও আফ্রিকান এলডিসি থেকে ১০ ক্যাডেটকে বঙ্গবন্ধু বৃত্তি প্রদান
ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশনের (আইএমও) মাধ্যমে বিদেশিদের জন্য দেশের ৫টি সরকারি মেরিন একাডেমিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে ক্যাডেট প্রশিক্ষণ বৃত্তি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ।
উন্নয়নশীল ছোট দ্বীপ রাষ্ট্র (এসআইডিএস) এবং আফ্রিকার স্বল্পোন্নত দেশগুলোর (এলডিসি) ১০ জন ক্যাডেটকে এই বৃত্তি দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন আইএমওর মহাসচিব আর্সেনিও অ্যান্তোনিও ডমিনগুয়েজ। এ সময় এই প্রস্তাবের বিষয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে জানান, এই প্রস্তাব সানন্দে গ্রহণ করেছে জাতিসংঘের মেরিন এজেন্সি আইএমও।
আরও পড়ুন: আইএমও'র প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের অব্যাহত সম্পৃক্ততা ও নেতৃত্বের প্রত্যাশা করছি: সংস্থাটির প্রধান
বৈঠকে জাহাজ নির্মাণ, জাহাজ পুনর্ব্যবহার, সমুদ্রে সংঘটিত অপরাধ ও জলবায়ু ইস্যুসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
আইএমওর আনুষ্ঠানিক নথিতে বাংলাদেশের মেরিন একাডেমিতে লিঙ্গ ভারসাম্য উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অতীতে মেরিন একাডেমিতে কোনো নারী ক্যাডেট ছিল না। তবে তার সরকার মেরিন একাডেমিতে মেয়েদের সুযোগ তৈরি করেছে এবং অনেক মেয়ে একাডেমিতে ভর্তি হচ্ছে।
জাহাজ রিসাইক্লিং শিল্প সম্পর্কে আইএমও মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশ সবচেয়ে বড় জাহাজ রিসাইক্লিং দেশ। গত জুনে হংকং কনভেনশনে সম্মতি দিয়ে পরিবেশগতভাবে নিরাপদ জাহাজ রিসাইক্লিংয়ে নিজেদের প্রতিশ্রুতির সর্বোচ্চ রক্ষা করেছে বাংলাদেশ।
জাতিসংঘের শিপিং এজেন্সি ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশনের (আইএমও) হংকং কনভেনশনের লক্ষ্য হচ্ছে জাহাজগুলো তাদের কর্মক্ষমতার সময় পার হলে পুনর্ব্যবহার করা হয়, তখন তা মানব স্বাস্থ্য, সুরক্ষা ও পরিবেশের জন্য কোনো অপ্রয়োজনীয় ঝুঁকি তৈরি করে না তা নিশ্চিত করা।
বাংলাদেশে নিরাপদ জাহাজ রিসাইক্লিং জোরদার করতে জাতিসংঘের বিশেষায়িত সংস্থা আইএমওর সহায়তা কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, 'আমরা জাহাজ নির্মাণ ও জাহাজ রিসাইক্লিংয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়াচ্ছি এবং আমরা আইএমওর সহায়তা চাই।’
আরও পড়ুন: আইএমও'র কাউন্সিল সদস্য নির্বাচিত বাংলাদেশ
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ জাহাজ নির্মাণে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে কারণ সরকারের পাশাপাশি বেসরকারিভাবেও এখানে জাহাজ নির্মাণ করছে এবং ইউরোপের দেশগুলোতেও বাংলাদেশি জাহাজ রপ্তানি হচ্ছে।
সমুদ্র পরিবহন ব্যবস্থা বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে নিরাপদ নৌপথ নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন প্রধানমন্ত্রী।
এ সময় সম্প্রতি সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে অপহৃত বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর দ্রুত মুক্তিতে আইএমওর ভূমিকায় সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।
বঙ্গোপসাগরে নিরাপত্তার বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, 'আমরা সবাই মিলে এখানে জলদস্যুদের নিয়ন্ত্রণ করি এবং অন্যান্য স্থানেও এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।’
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌযান চলাচলের ক্ষেত্রেও নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়িয়েছে এবং সফলভাবে হতাহতের সংখ্যা হ্রাস করেছে।
সরকার ঘূর্ণিঝড় ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগে হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনার চেষ্টা করছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
এ সময় আইএমও মহাসচিব জানান, আইএমও মানব ও মাদক পাচারসহ সামুদ্রিক অপরাধ নিয়ে কাজ করছে।
বৈঠকে আরও ছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর অ্যাম্বাসেডর অ্যাট-লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, মুখ্য সচিব এম তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, আইএমওর সহসভাপতি সাঈদা মুনা তাসনিম এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিট) রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) খুরশীদ আলম।
আরও পড়ুন: মেরিন সেক্টরে বিশাল সম্ভাবনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
৫৭৮ দিন আগে