তৌহিদ হৃদয়
বাংলাদেশের হারে ‘আইসিসির আইনকে’ কাঠগড়ায় তুললেন বিশ্লেষকরা
মাত্র চার রানে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হওয়ার পর আইসিসির আইন নিয়ে সমালোচনা করেন তৌহিদ হৃদয়। ম্যাচশেষে হতাশ কণ্ঠে তাকে বলতে শোনা যায়, ‘আইন তো আর আমার হাতে নেই।’
সোমবার (১০ জুন) দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আম্পায়ারের একটি ভুল সিদ্ধান্তে চার রান পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয় টাইগাররা। কাকতালীয়ভাবে ওই চার রানেই হেরেছে বাংলাদেশ।
ঘটনাটি সপ্তদশ ওভারের। ওটনিয়েল বার্টম্যানের একটি ডেলিভারি মাহমুদউল্লাহর প্যাডে লেগে পেছন দিয়ে সীমানা পার হয়ে যায়। তবে বল প্যাডে লাগার পর ফিল্ডারদের দুর্বল আবেদনেও আঙুল তুলতে দেরি করেননি আম্পায়ার। পরে রিভিউ নিয়ে অবশ্য বেঁচে যান মাহমুদউল্লাহ। তবে ওই চার রান আর বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে যোগ হয়নি।
আইসিসির নিয়ম অনুসারে, আম্পায়ার আউট দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বলটি ডেড বল হিসেবে গণ্য হবে। ফলে চার রান থেকে বঞ্চিত হয় বাংলাদেশ। অথচ বলটি আউট ছিল না।
আরও পড়ুন: নিজের আউটটি এখনও পোড়াচ্ছে তৌহিদ হৃদয়কে
এই নিয়মের কঠোর সমালোচনা করেছেন বেশ কয়েকজন সাবেক ক্রিকেটার।
ইএসপিএন ক্রিকইনফোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ক্ষোভ ঝেড়েছেন তামিম। তিনি বলেন, ‘আইসিসি চাইলেই এই আইন পরিবর্তন করে বিতর্ক এড়াতে পারে।’
এই ধরনের পরিস্থিতিতে বলের গতিবিধি ও ব্যাটারদের রান নেওয়া পর্যন্ত আম্পায়ার অপেক্ষা করতে পারেন বলে মত তার।
‘আপনার হাতে তো সময় আছে। আপনি চাইলেই ২ সেকেন্ড অপেক্ষা করে দেখতে পারেন, বল কোথায় যাচ্ছে, বাউন্ডারি হলো কি না। এসব দেখেও আপনি সিদ্ধান্ত জানাতে পারেন।’
তামিমের মতে, ব্যাটসম্যান যদি আউট না হন, তাহলে ওই বলে হওয়া রান দেওয়া উচিত।
তিনি বলেন, ‘আমার কথা হয়তো সমর্থকদের মতো শোনাচ্ছে। তবে চিন্তা করলে দেখবেন, ওই ৪ রান খুব গুরুত্বপূর্ণ হতে পারত। ধারাভাষ্যকাররাও এটি নিয়ে কথা বলছিলেন।
‘আমি মনে করি, আইসিসি এ ব্যাপারে ভেবে দেখতে পারে। চাইলেই এটি এড়ানো সম্ভব। এমন নয় যে, খুব বড় কোনো পরিবর্তন করতে হবে তাদের।’
ক্রিকইনফোর ওই আয়োজনে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক বোলার মরনে মরকেলের কণ্ঠেও শোনা যায় একই সুর।
তামিমের কথায় সমর্থন দিয়ে তিনি বলেন, ‘এমন হলে (পরিবর্তন) ফিল্ডাররাও বাউন্ডারি বা এক-দুই রানগুলো ঠেকানোর চেষ্টা করবে। খেলায় অবশ্যই কিছু একটা পরিবর্তন প্রয়োজন। আশা করছি, বিশ্বকাপের পর এটি নিয়ে ভাবা হবে।’
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পাকিস্তানের সাবেক পেসার ওয়াকার ইউনুসও এই নিয়মের সমালোচনা করেছেন।
আইসিসির নিয়মের বলি হয়ে বাংলাদেশের হারে আক্ষেপ করে তিনি বলেন, ‘এলবিডব্লিউতে ডেড বলের বিতর্কিত নিয়মটির ব্যাপারে (আইসিসির) পুনর্বিবেচনা করা উচিত। এ কারণে একটি অল্প রানের থ্রিলার ম্যাচ (দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে) হেরে গেল বাংলাদেশ।’
ম্যাচ শেষে সাংবাদিকদের অভিযোগে প্রথম সাড়া দেন হৃদয়। তিনি বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, এত টানটান একটি ম্যাচে আমাদের জন্য এটা একেবারেই ভালো কল ছিল না। আম্পায়ার আউট দিয়েছিলেন, কিন্তু এটা আমাদের জন্য বেশ খরুচে হয়ে গেল। এই চার রান পেলে ম্যাচের দৃশ্যপট বদলে যেতে পারত।’
আরও পড়ুন: উত্তেজনার পারদ চড়িয়ে হেরে গেল বাংলাদেশ
তিনি বলেন, ‘এই ধরনের একটি ভেন্যুতে যেখানে লো স্কোরিং ম্যাচ হচ্ছে, এই চার রান বা দুটি ওয়াইডের কল, যা আমাদের পক্ষে দেওয়া হলো না- এমন জায়গাগুলোতে (আম্পায়ারের) আরও উন্নতির জায়গা আছে।’
ক্রিকবাজের ম্যাচ-পরবর্তী আলোচনায়ও এ বিষয়টি নিয়ে বিশদ ব্যাখ্যা দেন নিউ জিল্যান্ডের সাবেক অলরাউন্ডার ও প্রখ্যাত ধারাভাষ্যকার সাইমন ডুল।
তিনি বলেন, ‘একবার ভাবুন তো, ফাইনাল ম্যাচে এমন কিছু হলো আর ভারত এর ভুক্তভোগী!
‘আমি জানি, খেলার নিয়ম পুরোপুরি বদলে ফেলা কঠিন। তবে এটা তেমন কোনো আইন নয়। কিছু একটা পরিবর্তন অবশ্যই দরকার।
‘ওই বল কোনোভাবেই স্ট্যাম্পে লাগত না, অথচ আম্পায়ার সঙ্গে সঙ্গে আঙুল তুলে দিলেন। এটা অনেকটা বন্দুকের ট্রিগারে চাপ দেওয়ার মতো। খুবই বাজে সিদ্ধান্ত ছিল।’
উল্লেখ্য, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষ প্রথম ম্যাচে জিতলেও দ্বিতীয় ম্যাচটি হেরে খানিকটা পিছিয়ে গেছে বাংলাদেশ। এতে বাকি তিন দলেরই লাভ হয়েছে। শেষ আটে উঠতে তাই আগামী ১৩ ও ১৬ জুন যথাক্রমে নেদারল্যান্ডস ও নেপালের বিপক্ষে জয়ের বিকল্প নেই বাংলাদেশের সামনে।
৬ মাস আগে
নিজের আউটটি এখনও পোড়াচ্ছে তৌহিদ হৃদয়কে
দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে মাত্র চার রানের হার বাংলাদেশি ভক্তদের হৃদয়ে গভীর ক্ষতের সৃষ্টি করেছে। এমন হারে মানসিকভাবে ভুগছে টিম টাইগারও।
নিজের আউটটি নিয়ে এখনও কষ্টে রয়েছেন তৌহিদ হৃদয়। ওই সময় তার ওই আউটটি ছিল ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট। তিনিও মনে করেন, তার আউটটিই ম্যাচের ভাগ্য পরিবর্তন করে দিয়েছে।
দুই বলে যখন ৬ রান প্রয়োজন, সেসময় মহারাজের ফুলটস ডেলিভারিতে ব্যাটি চালিয়ে লং-অনে ধরা পড়েন মাহমুদুল্লাহ। এরপরই পরাজয়ের গ্লানিতে ডোবে বাংলাদেশ।
আরও পড়ুন: উত্তেজনার পারদ চড়িয়ে হেরে গেল বাংলাদেশ
ম্যাচ শেষে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ রান করা হৃদয় বলেন, ‘ম্যাচটি আমার শেষ করে আসা উচিৎ ছিল। আমার আউট হওয়াটাই ম্যাচ হারের মুহূর্ত ছিল বলে আমি মনে করি।’
১১৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাটর করতে নেমে শুরুতেই কয়েকটি উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এরপর দলকে টেনে তুলে জয়ের স্বপ্ন দেখান হৃদয় ও মাহমুদুল্লাহ। একেবারে কাছাকাছি চলেও গিয়েছিলেন তারা। কিন্তু শেষের দিকে খেই হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ, আর তার খেসারত দিতে হয়েছে হেরে।
উল্লেখ্য, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে এখনও জয় পায়নি বাংলাদেশ। এই ম্যাচের আগে আটবারের দেখায় প্রতিবারই টাইগারদের হতাশ করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত চারবার দেখা হয়েছে দুই দলের। ২০০৭ সালের প্রথম আসরে ৭ স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে উইকেটে হারে বাংলাদেশ। ২০২১ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত আসরে ৬ উইকেটে, ২০২২ সালে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত আসরে ১০৪ রানে এবং ২০২৪ সালের ১০ জুনের এই ম্যাচে মাত্র চার রানে হেরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম জয়ের স্বাদবঞ্চিত হলো নাজমুল হোসেন শান্তর বাংলাদেশ।
আরও পড়ুন: শেষ আটে যেতে পাকিস্তানের সামনে যে সমীকরণ
বিশ্বকাপের এই চার ম্যাচের বাইরে দুই দলের আরও পাঁচবার দেখা হয়েছে। ২০০৮ সালে জোহানেসবার্গে ১২ রানে, ২০১৫ সালে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ১৫ রানে ও ৩১ রানে, ২০১৭ সালে ব্লোয়েমফন্টেইনে ২০ রানে ও পচেফস্ট্রুমে ৮৩ রানে হারে বাংলাদেশ।
এই ম্যাচ হেরে শেষ আটে উঠতে তাই আগামী ১৩ ও ১৬ জুন যথাক্রমে নেদারল্যান্ডস ও নেপালের বিপক্ষে জয়ের বিকল্প নেই বাংলাদেশের সামনে।
৬ মাস আগে
ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে ইতিহাস গড়তে চায় বাংলাদেশ
অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের ফাইনালে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ভারতের বিপক্ষে স্বাভাবিক খেলাটাই খেলতে চায় জুনিয়র টাইগাররা। আর এতেই টুর্নামেন্ট জুড়ে অপরাজিত থাকা আকবর আলীরা শেষ ম্যাচটিও জিতে শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট পড়তে চান।
৪ বছর আগে