ঈদুল আজহা ২০২৪
মেহজাবীন অভিনীত ভিকি জাহেদের ‘তিথিডোর’ নিয়ে কেন এত আলোচনা
ঈদুল আজহা ২০২৪-এর চতুর্থ দিন ২০ জুন চ্যানেল আই প্রাইম ইউটিউব চ্যানেলে মুক্তি পায় ‘তিথিডোর’। টেলিফিল্মটি ছিল রোমান্টিক-কমেডি নির্ভর ঈদ আয়োজনের একটি ভিন্ন পরিবেশনা। ভিকি জাহেদের নির্দেশনায় নাম ভূমিকায় দেখা গেছে ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরীকে। তার সাবলীল অভিনয়ে টেলিফিল্মের সংবেদনশীল গল্প স্পর্শ করেছে দর্শকদের মন। মুক্তির পর থেকে তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটছে গোটা সামাজিক মাধ্যম জুড়ে। চলুন, এই হৈচৈ-এর নেপথ্যের কারণটি জেনে নেওয়া যাক-
‘তিথিডোর’ নাট্য বৃত্তান্ত
চিরাচরিত নাট্যশৈলীর বাইরে গিয়ে ভিন্ন ধারার নাটক নির্মাণে বর্তমান সময়ে সবচেয়ে সুপরিচিত নাম ভিকি জাহেদ। তারই পরিচালনায় টেলিফিল্মটির শ্রেষ্ঠাংশে ছিলেন মেহজাবীন চৌধুরী, আবুল হায়াত, প্রান্তর দস্তিদার, আশা মজিদ রোজী, শামীমা নাজনীন এবং শিশু শিল্পী দিবা সাজ্জাদ।
গল্প ও চিত্রনাট্য লিখেছেন জাহান সুলতানা। এছাড়া টেলিফিল্মের অন্যান্য কারিগরি দায়িত্বে নিয়োজিত ছিল ভিকির পুরনো টিম। তাদের মধ্যে চিত্রগ্রহণে ছিলেন বিদ্রোহী দীপন এবং সম্পাদনা, ভিএফএক্স, রঙ ও আবহ সঙ্গীত বিন্যাসে কাজ করেছেন অর্ণব হাসনাত।
আরও পড়ুন: ইতালির ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে পুরস্কৃত হলো 'ময়না'
তিথিডোর: একজন নারীর জীবনের টানাপোড়েনের গল্প
সামাজিক নানা টানাপোড়েনের মাঝে নিশাত নামের ৩০ বছর বয়সী এক তরুণীর জীবনের মানে খুঁজে পাওয়ার গল্প তিথিডোর। শুরুটা হয় মুষলধারে পড়ন্ত বৃষ্টি দেখার সময় চায়ে সেই বৃষ্টির পানি মিশিয়ে তাতে চুমুক দেওয়া দিয়ে। এমন ভালো লাগা রোমান্টিক দৃশ্য ক্রমশ এগিয়ে ক্লাইমেক্সে উপনীত হয় চরম হতাশায়।
নিজের সর্বস্ব দিয়ে ভালোবাসার মানুষটিকে অন্য সম্পর্কে জড়াতে দেখে নিশাতের পুরো পৃথিবীটা ধ্বংস হতে শুরু করে। বয়স বেড়ে যাওয়ার কারণে বিয়ে সংক্রান্ত বিড়ম্বনায় পরিবারের কাছেও ঠাঁই মেলে না তার। অন্যদিকে বিয়ের মিথ্যে নাটক সাজিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে সে একা একটা বাসা ভাড়া নিয়ে থাকছে। ধীরে ধীরে বেঁচে থাকার স্পৃহা হারিয়ে ফেলতে থাকে নিশাত।
ঠিক এমন সময়েই আকস্মিকভাবে আবির্ভাব ঘটে এক দেবশিশু- দিবার। নিশাত যে বিল্ডিংয়ে থাকে সে বিল্ডিংয়ে নতুন এসেছে। সব সময় হাসিখুশি থাকা মেয়েটি দেখা হলেই নিশাতের মন খারাপের কারণ জানতে চায়। সে জানায় তার মা বলেছে, মন খারাপ থাকলে জীবনের সব সুন্দর জিনিসগুলোর লিস্ট করতে।
আরও পড়ুন: 'প্রিয় মালতী' হতে যাচ্ছে মেহজাবীন চৌধুরীর প্রথম সিনেমা
নিশাত যখন চূড়ান্তভাবে নিজের জীবনকে শেষ করে দিতে উদ্যত হয়, তখনি সে জানতে পারে দিবা মরণব্যাধি লিউকেমিয়ায় আক্রান্ত। হাসপাতালে দিবাকে দেখতে গেলে শিশুটি তাকে বলে, এখন সে আর সেই লিস্ট করতে পারছে না। লিস্টে আরও সুন্দর জিনিস যোগ করতে তার নিশাতের সাহায্য দরকার। এই অনুরোধ রেখে এক সময় চলে মারা যায় শিশুটি। কিন্তু নিশাতকে দিয়ে যায় বেঁচে থাকার অমূল্য নির্যাস।
এই নির্যাসে এক চিমটি টনিক যোগ করে দেয় শামসুর রহমান নামের ৮০ বছরের বৃদ্ধ। তার ভাষায়- ‘প্রতিটা বয়সেরই একটা আলাদা সৌন্দর্য আছে।’
তার সঙ্গে কথোপকথনে নিশাত বুঝতে পারে জীবন শুধুমাত্র কিছু নির্দিষ্ট পাওয়ার মাঝে সীমাবদ্ধ নয়। জীবনটা অনেক বৈচিত্র্যময় এবং অনেক সুন্দর সুন্দর জিনিসে ভরপুর। আর এই প্রত্যেকটি সৌন্দর্যের মূল্য রয়েছে। এই উপলব্ধির পর সব দুঃখ ভুলে নিশাত আনন্দের খোঁজার মাঝে দিন যাপনের সিদ্ধান্ত নেয়।
আরও পড়ুন: আসছে তাহসান-মিথিলার ওয়েব সিরিজ ‘বাজি’
দর্শকদের প্রতিক্রিয়ার চিত্রপট
টেলিফিল্মটির পেছনে ভিকি জাহেদের নির্মাণশৈলী এবং মেহজাবীনের অভিনয়ের ভূয়সী প্রশংসায় মুখর দেশের নেটিজেন পাড়া। সাম্প্রতিক সময়ের অভিনেত্রীর অধিকাংশ কাজগুলোর মতো এটিও ছিল গতানুগতিক ধারা বহির্ভূত।
চরিত্রের প্রয়োজনে বিষাদের প্রতিটি দৃষ্টিকোণ ফুটে উঠেছে মেহজাবীনের অভিনয়ে। নারীপ্রধান টেলিফিল্মটির পুরোটাতেই মিশে ছিল নারীত্বের বিষণ্নতার আবহ। বাংলাদেশের নাট্যাঙ্গনে এরকম কাজের নজির খুব একটা দেখা যায় না। এমনি অনবদ্য পরিবেশনাকে সাদরে গ্রহণ করেছেন নাট্যপ্রেমীরা। বিশেষ করে নারী দর্শকরা নিশাতের মাঝে অবিকল খুঁজে পেয়েছেন নিজেদের।
অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দুঃখ-ভারাক্রান্ত বিষয়গুলো অগোচরেই থেকে যায়। মুখে হাসি রেখেও অনেক নারীই দিনের পর দিন বিষণ্নতাকে নীরবে বয়ে বেড়ান। এই টেলিফিল্মটি সেই সব নিঃশব্দ কান্নাকে যেন এক নিমেষে উগড়ে দেয়ার ইন্ধন জুগিয়েছে। সামাজিক মাধ্যম জুড়ে তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে নারী দর্শকদের মন্তব্যে।
আরও পড়ুন: ঈদুল আজহা ২০২৪ এ মুক্তির অপেক্ষায় কিছু চমকপ্রদ বাংলা নাটক
শারীরিক যন্ত্রণা নিয়ে অনেক আলাপ-আলোচনা হলেও মানসিক স্বাস্থ্যের জটিলতাগুলো বরাবরই এড়িয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু মনোকষ্ট যত ঘনীভূত হয়, ততই তা শরীরের ওপর প্রভাব ফেলতে শুরু করে। তাছাড়া আত্মহত্যার প্রবণতাও বর্তমান সমাজের একটি ভয়াবহ সমস্যা। এর নিরসনকল্পে অবিলম্বে হতাশার রসদগুলো আলোচনার মঞ্চে নিয়ে আসা জরুরি। ‘তিথিডোর’ যেন তারই এক মাইলফলক নাটকীয় মোড়কে।
সেই ধারাবাহিকতায় মেহজাবীন নিজেও একজন নারী অভিনেত্রী হিসেবে দায়বদ্ধতার জায়গা থেকেই এই কাজটি করেছেন। এ ধরনের গল্প যত মানব সম্মুখে আসবে তত এ নিয়ে কথা হবে। আর গঠনমূলক আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যাগুলো সমাধানের মুখ দেখবে।
আর তাই জীবনযুদ্ধে জর্জরিত অনেক নারী দর্শক নিজেদের অনুপ্রেরণার কথা অকপটে স্বীকার করেছেন। বিশেষত সম্পর্কের জটিলতায় জর্জরিত মধ্যবয়স্ক নারীরা ব্যক্ত করেছেন সামাজিক মর্যাদা হারানোর কথা। একদিকে শরীরে বয়সের ছাপের সঙ্গে বাড়তে থাকা মানুষের কটু কথা, অন্যদিকে মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়েদের স্বনির্ভরশীলতা নিয়ে বিতর্ক।
আরও পড়ুন: কিরণ রাওয়ের ‘লাপাতা লেডিস’ নিয়ে যে কারণে এত আলোচনা
এই সূত্রে দর্শকদের মন্তব্যে আরও উঠে এসেছে মেয়ে সন্তানের প্রতি মা-বাবাদের বৈষম্যের কথা। তথাকথিত সামাজিক নিয়মের তাড়নায় এই একুশ শতকেও একটি মানব সত্ত্বা হিসেবে নারীদের রীতিমত যুদ্ধ করতে হয়। এমনকি ভালোবাসার মানুষটির কাছ থেকেও মেলে না কাঙ্ক্ষিত আচরণ।
প্রতিটি জীবনমুখী উপাদানের পরিবেশনার পর সুন্দর সমাপ্তিটা শুধু ভালো লাগাই দেয়নি, উৎসাহ জুগিয়েছে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের। মূলত এই বার্তাই পূর্ণতা দেয় একটি নাটকের। টেলিফিল্মটিকে বিশাল সেই অর্জনে ভূষিত করে একজন দর্শক ঐতিহাসিক শ্লোকের বেষ্টনীতে তার মন্তব্য আওড়েছেন এভাবে, ‘দুনিয়ায় মর্যাদা নিয়ে বেঁচে থাকাটাই আসল।’
শেষাংশ
সব মিলিয়ে ‘তিথিডোর’ ভিকি জাহেদের আরও একটি অনবদ্য নির্মাণ, যা আরও গভীরতা দিয়েছে মেহজাবীন চৌধুরীর বৈচিত্র্যপূর্ণ অভিনয় নৈপুণ্যে। আর এই নির্মাতা-অভিনেত্রীর জুটির ভূমিকায় প্রাণ পেয়েছে হাজারও নারীর হৃদয় নিঙড়ানো আর্তনাদের গল্প। নানা দৃষ্টিকোণ থেকে একজন আশাহত নারীর নিঃশব্দ দিনাতিপাতের কেবল অকাট্য পরিবেশনাই নয়, টেলিফিল্মটির সফলতা ছিল একটি ইতিবাচক সমাধানে পৌঁছানো। আর তাই দর্শকরা নিজের জীবনের সঙ্গে শুধু মিলই খুঁজে পাননি, সেই সাথে দীর্ঘদিন ধরে বিভ্রান্ত হয়ে ঘুরে ফিরে খুঁজে পেয়েছেন সঠিক পথটি।
আরও পড়ুন: ঈদুল আজহা ২০২৪ এ বাংলাদেশি যেসব সিনেমা মুক্তির অপেক্ষায়
৪ মাস আগে
পশু কুরবানির পর ঘর ও আশপাশের পরিবেশ পরিষ্কার রাখবেন যেভাবে
পবিত্র ঈদুল আজহায় বিপুলসংখ্যক পশু কুরবানি হয় দেশজুড়ে। স্বভাবতই এখানে গুরুত্ববহ হয়ে ওঠে কুরবানি-পরবর্তী শহর পরিষ্কারের বিষয়টি। পশু জবাইয়ের পর সঠিকভাবে তার বর্জ্য নিষ্কাশন না হওয়ার দরুণ শহরবাসীকেই পোহাতে হয় হাজারও ভোগান্তি। বিগত বছরগুলোতে মশাবাহিত রোগের উপদ্রব বাড়াতে পরিবেশজনিত এই জটিলতা আশঙ্কাজনক হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাছাড়া ধর্মীয় দিক থেকেও পরিবেশ আবর্জনামুক্ত রাখা প্রত্যেক কুরবানি পালনকারীর ঈমানি দায়িত্ব। তাই চলুন, পশু কুরবানির পর বাসা ও তার চারপাশ বর্জ্যমুক্ত রাখার কয়েকটি উপায় জেনে নেওয়া যাক।
ঈদুল আজহায় পশু কুরবানির পর বর্জ্য অপসারণের ১০টি উপায়
একটি উপযুক্ত স্থান নির্বাচন
শহর বা গ্রাম নির্বিশেষে একটি নির্দিষ্ট এলাকার লোকজন আলাদাভাবে কুরবানি না দিয়ে কয়েকজন একসঙ্গে হয়ে একটি নির্দিষ্ট স্থানে কুরবানি করা উত্তম। মূলত বসতবাড়ি থেকে যথাসম্ভব দূরে এমন একটি স্থান নির্বাচন করা উচিৎ, যেখান থেকে সহজেই পশুর বর্জ্য নিষ্কাশন করা যায়। এতে করে সিটি করপোরেশন কর্মীরা দ্রুত সময়ে বর্জ্য অপসারণের কাজ করতে পারবে।
এ সময় খেয়াল রাখা উচিৎ, স্থানটি যেন চলাচলের রাস্তার উপরে না হয়। সাধারণত খোলামেলা পরিবেশে পশুর জীবাণু বেশি ছড়াতে পারে না।
যারা সবার সঙ্গে একত্রিত হয়ে নির্দিষ্ট স্থানটিতে কুরবানি দিতে পারছেন না, তারা তাদের পশুর বর্জ্যগুলো নিজ দায়িত্বে কাছাকাছি ডাস্টবিনে ফেলে আসবেন।
আরও পড়ুন: ঈদুল আজহায় ডিপ ফ্রিজ খুঁজছেন? যেসব বিষয় জানা প্রয়োজন
পশুর রক্ত পরিষ্কার
পশু জবাইয়ের পর প্রথম কাজ হচ্ছে পশুর রক্ত সরিয়ে ফেলা। এর জন্য রক্ত সম্পূর্ণ ঝরে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। অতঃপর পর্যাপ্ত পানি দিয়ে রক্ত ধুয়ে ফেলতে হবে। রক্ত অপসারণের জন্য কাছাকাছি কোনো ড্রেন ব্যবহারের সময় সতর্ক থাকতে হবে যেন রক্তের সঙ্গে কোনো কঠিন বর্জ্য ড্রেনের মুখ বন্ধ করে না দেয়। তরল রক্ত দ্রুত সরিয়ে ফেলার পর রক্তের দাগ ও দুর্গন্ধ দূর করার জন্য জীবাণুনাশক ব্যবহার করতে হবে।
বর্জ্য খোলা স্থানে না রাখা
পশুর রক্তসহ অন্যান্য কঠিন ও তরল বর্জ্য উন্মুক্ত স্থানে রাখা ঠিক নয়। কেননা এতে রক্ত আর নাড়ি-ভুঁড়ি বাতাসের সংস্পর্শে এসে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই দুর্গন্ধ ছড়ায়। এগুলো গর্ত করে ভেতরে রেখে মাটিচাপা দিতে হবে, অথবা সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়িতে রেখে আসতে হবে। গাড়ি আসার আগ পর্যন্ত কোনো পলিব্যাগে ভরে কাছাকাছি কোনো ডাস্টবিনে যেয়ে ফেলে আসা যেতে পারে।
গর্ত করা
পশুর দেহের উচ্ছিষ্ট ও বর্জ্য নিষ্কাশনের উত্তম পন্থা হলো মাটিতে গর্ত করে পুঁতে ফেলা। অন্যথায় যেখানে-সেখানে ফেলে রাখলে তাতে পচন ধরে মারাত্মক দুর্গন্ধ ছড়াবে। এই পরিবেশ দূষণ পরবর্তীতে নানান রোগের কারণ হতে পারে। তাই কুরবানির আগেই নিকটবর্তী কোনো মাঠ বা পরিত্যক্ত জায়গায় ৩ থেকে ৪ ফুট গর্ত তৈরি করে রাখা উচিৎ।
জবাই পর্ব শেষে পশুর শরীরের যাবতীয় উচ্ছিষ্ট এক করে সেই গর্তে ফেলে তার ওপর ব্লিচিং পাউডার, চুন, বা ফাম-৩০ নামক জীবাণুনাশক ছড়াতে হবে। সবশেষে খড়কুটা ও কাঁটা জাতীয় কিছু ডালপালা দিয়ে আবৃত করে শক্ত করে মাটিচাপা দিতে হবে। এটি এক দিক থেকে বর্জ্য অপসারণের জন্য কার্যকর, অন্যদিকে জৈব সার হিসেবে শস্যক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্য উপযোগী। মাটিচাপার দেয়ার পর তার ওপর কিছু মোটা তুষ ছিটিয়ে দিলে পরে কুকুর বা বিড়াল মাটি গর্ত করে ময়লা তুলতে পারবে না।
আরও পড়ুন: ফ্রিজের দুর্গন্ধ দূর করার ঘরোয়া উপায়
৪ মাস আগে
ঈদুল আজহা ২০২৪ এ মুক্তির অপেক্ষায় কিছু চমকপ্রদ বাংলা নাটক
বিশেষ দিবসগুলোর মতো ঈদের মৌসুমে বাংলাদেশের নাট্যাঙ্গন তার সেরা আকর্ষণগুলো মেলে ধরে। স্বভাবতই এই আয়োজনে অভিজ্ঞতা পাওয়া যায় শ্রেষ্ঠ নাট্য নির্মাণ ও অভিনয়শৈলীর। এদিকে টিভি চ্যানেলগুলোর পাশাপাশি প্রডাকশন হাউসগুলোর ইউটিউব চ্যানেলগুলোও মেতে উঠে নির্মল বিনোদনের উৎসবে। আর তারই আগমনী বার্তায় নাট্যপ্রেমীদের উন্মাদনা বাড়তে থাকে প্রিয় তারকাদের দেখার জন্য। এছাড়া প্রতিবারের মতো এবারও ঈদুল আজহা ২০২৪ এ থাকছে দারুণ কিছু নাটক। চলুন, সেগুলোর মধ্য থেকে সবচেয়ে বেশি আলোচিত নাটকগুলো এক নজরে দেখে নেওয়া যাক।
এবারের কুরবানী ঈদে যে নাটকগুলো দর্শকপ্রিয়তা পাওয়ার অপেক্ষায়
মাস্তান
ছোট পর্দার জনপ্রিয় তারকা মুশফিক আর ফারহান ও তানিয়া বৃষ্টিকে নিয়ে রুবেল আনুশ নির্মাণ করেছেন ‘মাস্তান’।
নাটকের কাহিনি, চিত্রনাট্য ও সংলাপে রয়েছেন আব্রাহাম তামিম।
এখানে ‘মাস্তান’ মূলত একটি গরুর নাম। মূল গল্প হলো- এই গৃহপালিত প্রাণীকে নিয়ে হলেও এখানে আছে প্রেম ও বিরহ।
মুশফিক-বৃষ্টি জুটির ছাড়াও নাটকের শ্রেষ্ঠাংশে রয়েছেন মনিরা মিঠু ও সমু চৌধুরী। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সিএমভির ব্যানারে নাটকটি প্রযোজনা করেছেন এসকে সাহেদ আলী পাপ্পু।
আরও পড়ুন: ঈদুল আজহা ২০২৪ এ বাংলাদেশি যেসব সিনেমা মুক্তির অপেক্ষায়
মাকড়সা
এই নাটকের মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো ছোট পর্দায় জুটি হলেন সাবিলা নূর ও শ্যামল মাওলা। পরস্পরের প্রতি খুবই যত্নশীল এক দম্পতির গল্প দিয়েই ঘটে কাহিনির সূত্রপাত। কিন্তু অদ্ভূতভাবে একটি সুখবরের উপর ভিত্তি করে তাদের জীবন এক ভয়াবহ মোড় নেয়।
রেবেকা সুলতানা কেয়ার গল্প ও চিত্রনাট্যে নাটকটি পরিচালনা করেছেন উদীয়মান নাট্য নির্মাতা রাগিব রায়হান পিয়াল।
রাত বাকি
সাবিলা নূরের আরও একটি নাটক এবার ভক্তদের হৈচৈয়ের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। সেটা হচ্ছে মুরসালিন শুভর ‘রাত বাকি’।
এখানে সাবিলার বিপরীতে দেখা যাবে এইচবিও অরিজিনাল সিরিজ ‘ইনভিজিবল স্টোরিস’- খ্যাত অভিনেতা সুদীপ বিশ্বাস দ্বীপকে।
আরও পড়ুন: কারিনা-টাবু ও কৃতির ক্রু: তিন প্রজন্মের তিন নায়িকার রম্য সিনেমা
ভেতরে বাহিরে
স্বনামধন্য নাট্য নির্দেশক মিজানুর রহমান আরিয়ানের ত্রিভুজ প্রেমের গল্প ‘ভেতরে বাহিরে’। প্রধান চরিত্রে দেখা যাবে জোভান আহমেদ, তানজিম সাইয়ারা তটিনী ও জুনায়েদ বোগদাদী।
নতুন হলেও খুব কম সময়ের মধ্যে জনপ্রিয়তা পেয়েছেন তটিনী ও জুনায়েদ। তাই প্রতিষ্ঠিত অভিনেতা জোভানের সঙ্গে এই দুই উদীয়মান তারকার মিথস্ক্রিয়া দেখতে মুখিয়ে আছেন নাট্যপ্রেমীরা।
নূর
মুশফিক আর ফারহান অভিনীত এই নাটকের বিশেষত্ব হচ্ছে ম্যাক্স নামের একটি পোষা কুকুর। এই ম্যাক্সকে নিয়েই নাটকটির গল্প। পোষ্য প্রাণীর প্রতি ভালোবাসার পাশাপাশি এখানে দেখা যাবে আন্ডারওয়ার্ল্ডের কিছু নির্মম বাস্তবতা। অবয়ব সিদ্দিকীর চিত্রনাট্যে নাটকটি পরিচালনা করেছেন তৌফিকুল ইসলাম।
মুশফিকের প্রধান সহশিল্পী হিসেবে থাকছেন অর্চিতা স্পর্শিয়া। সিএমভির ব্যানারে নির্মিত নাটকটি প্রচার হবে প্রতিষ্ঠানটির ইউটিউব চ্যানেলে।
আরও পড়ুন: অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ: অপূর্বর পাশে সহকর্মীরা
৪ মাস আগে
ঈদুল আজহা ২০২৪ এ বাংলাদেশি যেসব সিনেমা মুক্তির অপেক্ষায়
গত ঈদের রেকর্ড বজায় রেখে আসন্ন ঈদুল আজহাতেও মুক্তির মিছিলে শামিল হয়েছে বেশ কিছু বাংলাদেশি চলচ্চিত্র। বিগ বাজেটের ব্যবসানির্ভর সিনেমা থেকে শুরু করে নতুন কাজও রয়েছে এই তালিকায়। ঈদের উৎসব মুখরতা নতুন ছবি দেখার আনন্দকে বাড়িয়ে দেয় দ্বিগুণ। আর এই উদ্দেশ্যেই ঈদকে কেন্দ্র করে পুঞ্জীভূত হতে থাকে বড় পর্দার আয়োজন। চলুন, এবারের ঈদুল আজহায় মুক্তির অপেক্ষায় থাকা ঢালিউড সিনেমাগুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
২০২৪ ঈদুল আজহায় মুক্তি পাচ্ছে যেসব বাংলাদেশি চলচ্চিত্র
তুফান
ঢালিউড সুপারস্টার শাকিব খান অভিনীত এই অ্যাকশন চলচ্চিত্রটির পরিচালনায় রয়েছেন ‘পোড়ামন ২’ ও ‘দহন’ খ্যাত নির্মাতা রায়হান রাফী। প্রযোজনায় রয়েছে ভারতের এসভিএফ এবং বাংলাদেশের চরকি এবং আলফা আই। শাকিব ছাড়াও ‘তুফানে’ দেখা যাবে দুই বাংলার সাড়া জাগানো সব অভিনয়শিল্পীদের। তারা হলেন চঞ্চল চৌধুরী, ফজলুর রহমান বাবু, মিমি চক্রবর্তী, যীশু সেনগুপ্ত, মাসুমা রহমান নাবিলা এবং মিশা সওদাগর।
গত ২৮ মে শাকিব খানের সিনেমা ক্যারিয়ারের ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে মুক্তি দেওয়া হয় ছবিটির প্রথম গান ‘লাগে উরা ধুরা’। প্রীতম হাসানের সুর, সংগীতায়োজন ও গায়কীতে গানটি সামাজিক মাধ্যম জুড়ে বেশ সাড়া ফেলে।
আরও পড়ুন: শাকিব খানের 'তুফান' চলচ্চিত্রের চমকপ্রদ কিছু তথ্য
ময়ূরাক্ষী
২০১৯ সালে ‘নোলক’ এর পর থেকে প্রায় ৪ বছরের বিরতির পর ‘ময়ূরাক্ষীর’ মাধ্যমে আবারও প্রেক্ষাগৃহে ফিরছেন চিত্রনায়িকা ববি। প্রেম ও প্রতারণা কেন্দ্রিক গল্পের আবর্তে ছবিটি নির্মিত হয়েছে গোলাম রাব্বানীর গল্প, চিত্রনাট্য ও সংলাপে। রাশিদ পলাশ পরিচালিত ছবিটির প্রধান চরিত্রে ববির সঙ্গে জুটি হিসেবে আছেন সুদীপ বিশ্বাস দ্বীপ। এছাড়া অন্যান্যদের মধ্যে রয়েছেন সাদিয়া মাহি, সমু চৌধুরী, সুমিত সেনগুপ্ত, দীপক সুমন এবং ফারজানা ছবি।
ছবির সংগীত পরিচালনা ও গায়কীতে ছিলেন জাহিদ নিরব। তার সহ-কণ্ঠশিল্পী হিসেবে আরও ছিলেন পুর্ণতা, মুহিন খান ও তরসা। আজ ইন্টারন্যাশনালের অধীনে চলচ্চিত্রটির প্রযোজনায় ছিলেন চৌধুরী নিজাম নিশো।
আরও পড়ুন: ইতালির গালফ অব নেপলস ইনডিপেন্ডেন্ট ফিল্ম ফেস্টিভালের দশম অধিবেশনে মনোনীত ‘ময়না’
রঙবাজার
এবারের ঈদে পরিচালক রাশিদ পলাশের আরও একটি ছবি মুক্তির মিছিলে রয়েছে, যার নাম রঙবাজার। তামজিদ অতুলের গল্পে সিনেমাটির চিত্রনাট্য ও সংলাপ গড়েছেন গোলাম রাব্বানী।
৯০ দশকের শেষের দিকে যৌনকর্মীদের আবাসস্থল উচ্ছেদ নিয়ে একটি ঘটনা দেশজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। এর উপর ভিত্তি করেই রচিত হয়েছে লাইভ টেকনোলজি প্রযোজিত সিনেমাটির গল্প।
‘রঙবাজার’ এর অভিনয়শিল্পীরা হলেন, মৌসুমী হামিদ, শম্পা রেজা, নাজনীন চুমকি, তানজিকা আমিন, শাজাহান সম্রাট, লুৎফুর রহমান জর্জ, জান্নাতুল ফেরদৌস পিয়া, বড়দা মিঠু, মাসুম রেজয়ান, কনিকা এবং কানিজ।
আরও পড়ুন: কিরণ রাওয়ের ‘লাপাতা লেডিস’ নিয়ে যে কারণে এত আলোচনা
নীলচক্র
গত রোজার ঈদে গিয়াস উদ্দিন সেলিমের ‘কাজলরেখা’ এর মাধ্যমে চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে মন্দিরা চক্রবর্তীর। সিনেমাটির নাম ভূমিকায় তার অভিনয় ব্যাপক নজর কাড়ে দর্শক ও সমালোচকদের। ‘কাজলরেখার’ রেশ কাটতে না কাটতেই মন্দিরা কুরবানীর ঈদে হাজির হচ্ছেন ‘নীলচক্রে’। এবার তিনি জুটিবদ্ধ হবেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত নায়ক আরিফিন শুভর সঙ্গে। সম্প্রতি প্রকাশিত সিনেমার ফার্স্ট লুক ইতোমধ্যে দর্শকদের নিকট বেশ প্রশংসিত হয়েছে।
ফিল্ম ফায়োস প্রোডাকশনের প্রযোজনায় সিনেমাটির পরিচালনায় রয়েছেন মিঠু খান। তিনি নাজিম উদ দৌলার সঙ্গে যৌথভাবে ছবিটির কাহিনী বিন্যাস ও চিত্রনাট্যও লিখেছেন।
শুভ-মন্দিরা জুটি ছাড়া এখানে আরও দেখা যাবে ফজলুর রহমান বাবু, শাহেদ আলী, দীপান্বিতা মার্টিন, মনির আহমেদ শাকিল এবং টাইগার রবিকে।
আরও পড়ুন: 'প্রিয় মালতী' হতে যাচ্ছে মেহজাবীন চৌধুরীর প্রথম সিনেমা
৫ মাস আগে