স্থানীয় ইউপি সদস্য
যুবককে গাছে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ স্থানীয় ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে
ফরিদপুরে বিয়ে বহির্ভূত প্রেমে বাধা দেওয়ায় এক যুবককে গাছের সঙ্গে বেঁধে পেটানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে স্থানীয় ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে।
পরে গুরুতর আহত ওই যুবককে পুলিশ উদ্ধার করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ট্রমা সেন্টারে ভর্তি করেছে।
স্থানীয়রা জানায়, গত ১২ জুন রাতে ফরিদপুর সদর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের বড় মাধবপুর গ্রামের বাসিন্দা আনোয়ার খাঁনের ছেলে দেলোয়ার খাঁনকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যান স্থানীয় ইউপি সদস্য মনিরুজ্জামান আবেদ, শাহীনসহ তার সহযোগীরা।
দেলোয়ারকে নিয়ে যাওয়া হয় মাজেদ মল্লিকের বাড়িতে। সেখানে নিয়ে গাছের সঙ্গে দেলোয়ারকে বেঁধে নির্মমভাবে মারধর করা হয়।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় ৩ শিশুকে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ এনে ইউপি মেম্বারের বিরুদ্ধে মামলা
পরে দেলোয়ারের পরিবারের সদস্যরা ৯৯৯ ফোন দিলে পুলিশ গিয়ে উদ্ধার করে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ট্রমা সেন্টারে ভর্তি করে।
দেলোয়ার খাঁন বলেন, সৌদি প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে শাহিন নামের এক যুবকের পরোকীয়ার সম্পর্কের কথা জেনে প্রতিবাদ করি। এরই জের ধরে আমার বাড়িতে এসে হাজির হয় ইউপি সদস্য মনিরুজ্জামান আবেদ, শাহিনসহ তাদের সহযোগীরা।
তিনি আরও বলেন, বাইরে থেকে আমাকে ডাকতে থাকে ও দরজা খুলতে বলে। আমি বলি সকালে শুনব। একপর্যায়ে আমি দরজা খুললে মেম্বারসহ সবাই আমাকে জোর করে ধরে নিয়ে যায় মাজেদ মল্লিকের বাড়িতে।
তিনি বলেন, এরপর ওই বাড়ির একটি গাছের সঙ্গে আমাকে বেঁধে বেদম মারধর করে। আমার দুই পা ও বাম হাত ভেঙে ফেলা হয়, মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানেও আঘাত করা হয়েছে।
পরে পরিবারের সদস্যরা ৯৯৯ ফোন দিলে পুলিশ গিয়ে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে বলে জানান দেলোয়ার খাঁন।
দেলোয়ার খাঁন আরও বরেন, এ ঘটনায় শুক্রবার ইউপি সদস্য মনিরুজ্জামান আবেদকে প্রধান আসামি করে ৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ১২ জনের বিরুদ্ধে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দিয়েছি। এখন পর্যন্ত জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
দেলোয়ার খাঁনের স্ত্রী মিরা আক্তার বলেন, মেম্বার আবেদ রাতে যখন আমার স্বামীকে ডাকতে আসে তখন আমরা বাধা দিলে আমার ও বাড়িতে থাকা নারদের উপর হামলা চালায়। এসময় আমাদের বসতবাড়িতেও হামলা চালায় তারা। পরে আমার স্বামীকে নিয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, পরে ৯৯৯ ফোন দিলে পুলিশ তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ট্রমা সেন্টারে ভর্তি করে। আমরা হাসপাতালে থাকায় রাতে বাড়ির মোটর খুলে নিয়ে গেছে। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
আরও পড়ুন: বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নারীকে নির্যাতন, গ্রেপ্তার ৪
এদিকে স্থানীয় ইউপি সদস্য মনিরুজ্জামান আবেদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া সম্ভব হয়নি।
তবে কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম বাশারুল আলম বাদশা বলেন, দেলোয়ারের চুরি করার অভ্যাস আছে। দীর্ঘদিন সে স্থানীয়দের মালামাল চুরি করে।
তিনি আরও বলেন, সে একজন চোর। ঘটনার রাতেও সে চুরি করতে গিয়ে ধরা পরে এলাকাবাসীর হাতে, এরপর তাকে মারধর করে স্থানীয়রা।
ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. হুমায়ূন কবীরের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি ছুটিতে আছেন জানিয়ে উপপরিচালকের সঙ্গে কথা বলতে বলেন।
উপপরিচালক ডা. দীপক কুমার বিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।
ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) শৈলেন চাকমা বলেন, এঘটনায় ইউপি সদস্য মনিরুজ্জামান আবেদকে প্রধান আসামি করে ৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ১২ জনের বিরুদ্ধে ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় অভিযোগ দিয়েছেন দেলোয়ার খাঁন।
তিনি আরও বলেন, মারধরের ঘটনায় অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরও পড়ুন: প্রেমিক যুগলকে নির্যাতন: ইউপি চেয়ারম্যান সাময়িক বরখাস্ত
৫ মাস আগে