স্ট্রিট ফুড খাওয়ার নিরাপদ উপায়
নিরাপদে স্ট্রিট ফুড খাওয়ার ১০টি উপায়
অনন্য স্বাদ ছাড়াও বিভিন্ন অঞ্চলের স্ট্রিট ফুডের সঙ্গে মিশে থাকে স্থানীয় ঐতিহ্য। আবাসিক ও অনাবাসিক এলাকাগুলোতে নির্বিশেষে গড়ে ওঠা খাবারের ছোট্ট দোকানগুলোর থাকে ব্যাপক জনপ্রিয়তা। আবার কোনো কোনো খাবারের রন্ধন প্রণালী ও উপকরণ একচ্ছত্রভাবে শুধু একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলেই পাওয়া যায়। আর এই আবহ গোটা জেলার মধ্যে খাবারসহ দোকানটিকে প্রসিদ্ধ করে তোলে। কিন্তু এই প্রসিদ্ধির সান্নিধ্য পেতে গিয়ে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সম্মুখীন হতে হয় স্বাস্থ্য ঝুঁকির। কেননা রাস্তার পাশের এই খাবারগুলো নানা ধরনের দূষিত পদার্থের সংস্পর্শে থাকে। এছাড়া রন্ধন প্রণালী ও পরিবেশনের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার মধ্যেও থাকে যথেষ্ট ঘাটতি। তাই সুস্বাদু হলেও খাবারগুলো চেখে দেখার আগেই সাবধান হওয়া জরুরি। চলুন, ঝুঁকি এড়িয়ে নিরাপদে স্ট্রিট ফুড খাওয়ার কিছু উপায় জেনে নেওয়া যাক-
স্ট্রিট ফুড খাওয়ার ১০টি নিরাপদ উপায়
জনপ্রিয়তার পাশাপাশি গ্রাহকদের ভিন্নতা
একটি খালি স্টলের চেয়ে দীর্ঘ লাইন থাকা স্টল ভালো। আপাতদৃষ্টে ভিড় থাকা মানে উচ্চ চাহিদাকেই বোঝায়। আর এই একই কারণে জনপ্রিয় স্টলগুলোর নাম মুখে মুখে রটে যায়। কেবল ভালো স্বাদই নয়, অধিক লোকসমাগমের পেছনে একটি বড় কারণ থাকে খাবারের গুণগত মান। সাধারণত লোকজন সেই দোকানেই ভিড় জমান, যেখানকার খাবারের প্রতি তাদের নির্ভরতা আছে।
কিন্তু এর থেকেও আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে- স্টলটিতে কারা খেতে যাচ্ছেন। মুলত স্টলের গ্রাহকদের মধ্যে যত বেশি বৈচিত্র্য থাকবে স্টলটি তত বেশি নিরাপদ। বিশেষ করে ভিড়ের মধ্যে নারী ও শিশুসহ পরিবার নিয়ে খেতে আসা লোকেরাও থাকলে অনায়াসেই সেই স্টলগুলো সেরা পছন্দ হতে পারে।
আরো পড়ুন: চিনির কিছু স্বাস্থ্যকর প্রাকৃতিক বিকল্প
স্টলের অবস্থান
মূল পণ্য খাবার হওয়ায় দোকানের চারপাশের পরিবেশ অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। ডাস্টবিন এবং কলকারখানার পেছনে বর্জ্য বা রাসায়নিক নিষ্কাশনের জায়গায় আশেপাশে হলে সে স্টল এড়িয়ে চলতে হবে। নির্মাণাধীন ভবনের আশেপাশে এবং উচ্চ ট্রাফিক থাকা রাস্তার ফেরিগুলোতে বিক্রি হওয়া খাবার অধিক দূষণের শিকার হয়। এছাড়া স্টলের কাছে খোলা ম্যানহোল বা জমে থাকা পানি থাকলে সেই স্টলের খাবার না খাওয়াই ভালো।
স্বচ্ছ এবং আবৃত স্টোর
বাংলা হোটেলসহ রাস্তার অধিকাংশ ফুড কোর্টগুলো পথচারীদের প্রলুব্ধ করার জন্য তাদের পণ্যগুলো উন্মুক্ত করে রাখে। এই খাবারগুলো যে কতক্ষণ যাবৎ এরকম খোলা অবস্থায় রয়েছে তা জানার কোনো উপায় নেই। টাটকা বানিয়েই কোনো খাবার ঢেকে না রাখলে দূষিত পদার্থের সংস্পর্শে আসে। আর দীর্ঘক্ষণ রাখা হলে তা অনেক আগেই কুখাদ্যে পরিণত হয়।
অপরদিকে এমন অনেক স্টল দেখা যায় যেগুলো চারপাশ থেকে কাঁচ দিয়ে ঘেরা; শুধু যিনি রান্না করছেন তার দিকে অংশটা খোলা। শতভাগ না হলেও এগুলো উন্মুক্ত স্টলগুলো থেকে উত্তম। এখানে গ্রাহকরা খালি চোখেই খাবারগুলোর বর্তমান অবস্থা বা কিভাবে তা বানানো হচ্ছে- তা দেখতে পারেন।
আরো পড়ুন: রেস্তোরাঁ-শপিং মলে প্রবেশের আগে যে বিষয়গুলোতে সাবধান থাকা জরুরি
রান্নার জন্য ভেতরে রাখা উপকরণগুলো সঠিকভাবে ঢেকে রাখা হলে নিরাপত্তা আরও একধাপ বেড়ে যায়।
সদ্য তৈরি করা খাবার
স্ট্রিট ফুড খাওয়ার সেরা উপায় হচ্ছে সেই স্টলগুলোতে যাওয়া যেগুলো অর্ডার করার পর তাৎক্ষণিকভাবে খাবার বানিয়ে দেয়। সময় বেশি লাগলেও এই স্টলগুলোকেই অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। ইতোমধ্যে যে খাবারগুলো বানিয়ে রাখা হয়েছে সেগুলো এড়িয়ে যেতে হবে। কেননা এগুলোর খাদ্যবাহিত রোগজীবাণুতে পরিপূর্ণ হওয়ার আশঙ্কা থাকে, যা হজমজনিত বিভিন্ন সমস্যার কারণ হতে পারে।
যারা আচার পছন্দ করেন, তাদের রাস্তার পাশে বিক্রি হওয়া আচারগুলো থেকে দূরে থাকা উচিত। অনেক আগে বানানো থাকায় ইতোমধ্যে সেগুলো ব্যাকটেরিয়ার প্রজনন ক্ষেত্রে পরিণত হয়। এমনকি আচারযুক্ত অন্যান্য খাবারও শরীরের জন্য ভালো নয়।
আরো পড়ুন: গরুর দুধের বিকল্প হিসেবে খেতে পারেন যেসব স্বাস্থ্যসম্মত খাবার
ভিড় থাকা দোকানগুলোতে পরিবেশনে তাড়াহুড়ো করায় খাবার কাঁচা থেকে যাচ্ছে কি না সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
রাঁধুনির পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা
ঘরের ভেতর-বাহির নির্বিশেষে যিনি খাবার বানানোর দায়িত্বে আছেন তার পরিষ্কার থাকা অপরিহার্য। ভ্রাম্যমাণ কিচেনের পেছনে বিক্রেতাকে হাতে গ্লাভ্স এবং মাথায় লম্বা টুপি পরিহিত অবস্থায় দেখা গেলে এটি একটি ভালো লক্ষণ। তবে এই গ্লাভ্স নিয়মিত পরিবর্তন করা হচ্ছে কি না সেদিকে খেয়াল দেওয়া দরকার। আবার এই গ্লাভ্স পরিহিত অবস্থায় খাবার তৈরি এবং টাকা লেনদেন করা উচিত নয়। অনেক দোকানে একজন খাবারের দায়িত্বে থাকেন, আরেকজন পরিচালনা করেন লেনদেনের দিকটা। এমন পরিষেবা উন্নত দোকানের পরিচায়ক।
বিক্রেতা তার বাসনপত্র কোথায় পরিষ্কার করছেন এবং রান্নার তেল কীভাবে রাখছেন সেগুলো খুঁটিয়ে দেখা দরকার।পাশাপাশি স্টলের আশেপাশে খাবারের উচ্ছিষ্ট পড়ে স্তূপ হয়ে থাকাটা রাঁধুনির অপরিচ্ছন্নতার কথা জানান দেয়।
আরো পড়ুন: তীব্র গরমে পানিশূন্যতা প্রতিরোধে উপকারী শাকসবজি
৫ মাস আগে