হিজবুল্লাহ
হিজবুল্লাহর মিডিয়া প্রধানকে হত্যার দাবি ইসরায়েলের
হিজবুল্লাহর মিডিয়া বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ আফিফকে হত্যার দাবি করেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।
রবিবার মধ্যবৈরুতে একটি বিমান হামলার দায়িত্ব স্বীকার করে মোহাম্মদ আফিফকে হত্যা দাবি জানায় ইসরায়েল।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, ভবন খালি করার বিষয়ে কোনো পূর্ব সতর্কতা ছাড়াই রবিবার দুপুরে রাস আল-নাবা জেলায় একটি বহুতল ভবনে আঘাত হানে ইসায়েলি বাহিনী। এ হামলায় অন্তত চারজন নিহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: আরও এক হিজবুল্লাহ নেতাকে হত্যার দাবি ইসরায়েলের
আফিফ ১৯৮০-এর দশকে হিজবুল্লাহতে যোগ দেন এবং গোষ্ঠীর প্রয়াত নেতা হাসান নাসরাল্লাহর মিডিয়া উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেন। নাসরাল্লাহকে সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে হত্যা করে ইসরায়েল।
এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী এই হামলাকে 'গোয়েন্দা তথ্যভিত্তিক হামলা' হিসেবে বর্ণনা করেছে। তারা অভিযোগে করে, আফিফ 'অপপ্রচার ও মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধে ব্যবহারের জন্য মাঠের ফুটেজ সংগ্রহ করতে হিজবুল্লাহর কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন।’
আরও পড়ুন: সীমান্তে ১৭ ইসরায়েলি সেনা হত্যার দাবি হিজবুল্লাহর
৩ দিন আগে
ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৪৪৮
ইসরায়েল-হিজবুল্লাহ সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে লেবাননে ইসরায়েলি বিমান হামলায় এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ২ হাজার ৪৪৮ জন। আহতের সংখ্যা ১১ হাজার ৪৭১।
লেবাননের মন্ত্রী পরিষদের দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ইউনিটের এক প্রতিবেদনে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় লেবাননে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ৩০ জন নিহত ও ১৩৫ জন আহত হয়েছেন।
বিভিন্ন এলাকায় ৮২টি জায়গায় বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণ চালিয়েছে ইসরায়েল।
বিশেষ করে দক্ষিণ লেবাননে হামলার মাত্রা বেড়েছে। লেবাননে ইসরায়েলের ‘আগ্রাসন’ শুরুর পর থেকে এই এলাকায় ১০ হাজার ৪১৫ বার হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাস্তুচ্যুত জন্য ১ হাজার ৯৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এর মধ্যে ৯০১টি এরই মধ্যে সর্বোচ্চ ধারণক্ষমতা অতিক্রম করেছে।
ইসরায়েলি হামলা শুরুর পর ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে ৩ লাখ ৩৭ হাজার ৯৭২ জন সিরীয় নাগরিক এবং ১ লাখ ৩৮ হাজার ৫ জন লেবাননের নাগরিক সীমান্ত অতিক্রম করে সিরিয়ায় প্রবেশ করেছে বলে জানিয়েছে লেবাননের জাতীয় নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষ।
গত বছরের ৭ অক্টোবর গাজায় হামাস-ইসরায়েল সংঘাতের সমর্থনে ৮ অক্টোবর ইসরায়েলের বিপক্ষে প্রতিরোধ গড়তে থাকে হিজবুল্লাহ। লেবানন-ইসরায়েল সীমান্তে ক্রমাগত সংঘাত বাড়তে থাকায় ওই অঞ্চলে বৃহৎ পরিসরে সংঘাতের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
১ মাস আগে
ইরানের হামলার প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার নেতানিয়াহুর
ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলাকে গুরুতর ভুল হিসেবে বর্ণনা করে প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
মঙ্গলবার ইসরায়েলে ১৮০টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে ইরান। এর প্রতিক্রিয়ায় নেতানিয়াহু এক বিবৃতিতে এ অঙ্গীকার জানান।
ইরানের দাবি, লেবাননে হিজবুল্লাহর ওপর সাম্প্রতিক ইসরায়েলি হামলার প্রতিশোধ হিসেবে এ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে। গাজা সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলে রকেট হামলা চালিয়ে আসছে ইরান সমর্থিত জঙ্গি গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ।
এর আগে ওই দিন সকালে ইসরায়েল দক্ষিণ লেবাননে স্থল অভিযান শুরু করে।
ইসরায়েলজুড়ে বিমান হামলার সাইরেন বেজে উঠলে স্থানীয় বাসিন্দাদের দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে পাঠানো হয়।
দেশটির ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বেশকিছু ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বয়স করতে পারলেও ইসরায়েলের মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলে কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে। এতে দুইজন আহত হয়েছে।
ইসরায়েলের চ্যানেল থার্টিন টিভি নিউজ জানিয়েছে, ইরান থেকে অন্তত ২০০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে। বিকট বিস্ফোরণের শব্দও শোনা গেছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে লাখ লাখ বাসিন্দাকে আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।
ইসরায়েলের উদ্ধারকারী সংস্থাগুলো জানায়, শ্রাপনেলের আঘাতে তেল আবিবে দুইজন সামান্য আহত হয়েছে। শহরের উত্তরাঞ্চলে একটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
দেশের আকাশসীমা বন্ধ ঘোষণা করেছে ইসরায়েলের বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। নিরাপত্তাজনিত কারণে জর্ডান ও ইরাকের নিকটবর্তী দেশগুলোও তাদের আকাশসীমা সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করে বিমান চলাচল স্থগিত করেছে।
এদিকে ইরানের রাষ্ট্রীয় আইআরআইবি টিভির প্রতিবেদনে জানা যায়, ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি) অর্ধশতক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইসরাইলকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছে।
এক বিবৃতিতে আইআরজিসি জানায়, হামাসপ্রধান ইসমাইল হানিয়া, হিজবুল্লাহর শীর্ষ নেতা সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ ও আইআরজিসির জ্যেষ্ঠ কমান্ডার আব্বাস নিলফোরুশানকে হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে এবং মার্কিন সহায়তা নিয়ে লেবানন ও ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে আক্রমণ বাড়াতে থাকায় এ হামলা চালানো হয়েছে।
আইআরজিসি আরও জানায়, সেনাবাহিনী ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় ইরানের সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের অনুমোদন এবং সশস্ত্র বাহিনীর জেনারেল স্টাফের নির্দেশনার পর এ অভিযান চালানো হয়।
আইআরজিসি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, ইসরায়েল যদি প্রতিশোধ নিতে ইরানে হামলা চালায় তাহলে দেশটিকে আরও ধ্বংসাত্মক হামলার মুখোমুখি হতে হবে।
অন্যদিকে পশ্চিম তীরে জেরিকোর কাছে এক ফিলিস্তিনি ব্যক্তির মৃত্যুর খবর দেন ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা। যদিও এই ক্ষেপণাস্ত্র ইরান থেকে ছোড়া না ইসরায়েলের তা স্পষ্ট নয়।
ইসরায়েলে ইরানের এই হামলা দুই দেশ ও তাদের আঞ্চলিক মিত্রদের মধ্যে সংঘাত তীব্র করে দিলো যার প্রভাবে মধ্যপ্রাচ্যে একটি বড় আকারের যুদ্ধের আশঙ্কা বাড়ছে।
১ মাস আগে
লেবাননে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৪৯২
লেবাননে ইসরায়েলি হামলায় নারী ও শিশুসহ ৪৯২ জনের মৃত্যু হয়েছে। ২০০৬ সালের ইসরায়েল-হিজবুল্লাহ যুদ্ধের পর এটিই সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা।
সোমবার ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে বিমান হামলা শুরু করে।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হামলায় ৩৫ শিশু ও ৫৮ নারীসহ ৪৯২ জন নিহত এবং ১ হাজার ৬৪৫ জন আহত হয়েছে।
হামলার আগে দক্ষিণ ও পূর্ব লেবাননের বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার জন্য সতর্ক করে ইসরায়েল। সতর্কতাবার্তা পেয়ে হাজার হাজার লেবানিজ দক্ষিণাঞ্চল ছাড়তে শুরু করে।
আরও পড়ুন: ইসরায়েলি বিমান হামলায় হিজবুল্লাহর শীর্ষ নেতা নিহত
একটি রেকর্ডেড বার্তায় বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে নিতে দেওয়া সতর্কবাতার কথা উল্লেখ করে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, ‘এই সতর্কতা গুরুত্ব সহকারে নিন। এখনই বিপজ্জনক স্থানগুলো থেকে সরে আসুন। আমাদের অভিযান শেষ হলে আপনারা নিরাপদে নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে যেতে পারবেন।’
লেবাননের গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, সোমবার স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে ক্ষুদেবার্তা আসে, ‘আপনি যদি হিজবুল্লাহর জন্য অস্ত্র রাখা আছে এমন কোনো ভবনে থাকেন, তাহলে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ওই এলাকা থেকে সরে যান।’
লেবাননের তথ্যমন্ত্রী জিয়াদ মাকারিও জানান, তার কার্যালয়ও এমন একটি রেকর্ড করা বার্তা পেয়েছে যাতে লোকজনকে ভবন ছেড়ে চলে যেতে বলা হয়েছে।
সোমবারের বিমান হামলায় হিজবুল্লাহর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল দানিয়েল হাগারি।
তিনি বলেন, ইসরায়েল প্রয়োজনে লেবাননে স্থল অভিযান চালাতে প্রস্তুত রয়েছে। লেবাননের সীমান্ত থেকে হিজবুল্লাহকে হটিয়ে দিতে ‘প্রয়োজনীয় সবকিছু’ করবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যুদ্ধ চাই না। তবে কেউ যাতে হুমকি দেওয়ার সুযোগ না পায় সে ব্যবস্থা করছি। এই মিশনে সাফল্য অর্জনে যা যা করা দরকার আমরা তা করব।’
গত বছরের অক্টোবর থেকে হিজবুল্লাহ ইসরায়েলে প্রায় ৯ হাজার রকেট ও ড্রোন নিক্ষেপ করেছে জানিয়ে এসময় হাগারি বলেন, শুধু সোমবারই অন্তত ২৫০টি ড্রোন নিক্ষেপ করেছে তারা।
হিজবুল্লাহ দক্ষিণ লেবাননকে যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানায়, সোমবার ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান হিজবুল্লাহর ১ হাজার ৬০০ লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে। এতে ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র, দূর ও স্বল্প পাল্লার রকেট ও ড্রোন ধ্বংস হয়েছে।
ইসরায়েলের দাবি, হিজবুল্লাহর কাছে প্রায় দেড় লাখ রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে যার মধ্যে গাইডেড মিসাইল ও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রও রয়েছে যা ইসরায়েলের যেকোনো স্থানে আঘাত হানতে সক্ষম।
এর আগে সোমবার সন্ধ্যায় বৈরুতে হামলা চালানোর বিষয়টি নিশ্চিত করলেও এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু প্রকাশ করেনি ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।
লেবাননের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ন্যাশনাল নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলীয় বেইর আল-আবেদ এলাকায় তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে। এ ঘটনায় ছয়জন আহত হয় বলে হিজবুল্লাহর আল-মানার টেলিভিশনের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়।
আরও পড়ুন:ইসরায়েলের হামলার জবাবে শতাধিক রকেট নিক্ষেপ হিজবুল্লাহর
লেবাননের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ফিরাস আবিয়াদ বলেন, এর আগে হাসপাতাল, চিকিৎসাকেন্দ্র ও অ্যাম্বুলেন্সে হামলা চালানো হয়। এ কারণে সরকার দেশের বেশিরভাগ স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়।
এর পাশাপাশি বাস্তুচ্যুতদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
দক্ষিণ লেবানন ও পূর্বের বেকা ভ্যালিতে ইসরায়েলি হামলা বাড়তে থাকায় দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় হাসপাতালগুলোকে অতি জরুরি ছাড়া সব ধরনের অস্ত্রোপচার বন্ধ রাখতে বলেছে। হামলায় আহতদের দ্রুত চিকিৎসা দেওয়ার উদ্দেশ্যেই এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া, সিরিয়ার পাশে লেবাননের পূর্ব সীমান্তের উপত্যকাবেষ্টিত এলাকাগুলোতেও বিমান হামলা চালানো হচ্ছে। ওই অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে হিজবুল্লাহর ঘাঁটি রয়েছে, যা ১৯৮২ সালে লেবাননে ইসরায়েলের হামলা ও দখলের পরিপ্রেক্ষিতে ইরানের বিপ্লবী গার্ডের সহায়তায় তৈরি হয়েছিল।
এদিকে, ইসরায়েল সীমান্তের কাছে দক্ষিণ লেবাননে সংঘাতের মাত্রা বাড়তে থাকায় জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী তাদের টহল বন্ধ করে দিয়েছে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির এক মুখপাত্র। গোলাগুলি অব্যাহত থাকায় এরই মধ্যে সীমান্তের উভয় পাশের বাসিন্দারাও ওই এলাকাগুলো থেকে সরে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
ইসরায়েলের সামরিক শাখার প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল হারজি হালেভি বলেন, হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে অভিযানের ‘পরবর্তী পর্যায়ের’ প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েল। হিজবুল্লাহর ঘাঁটিগুলোতে বিমান হামলা চালানো হচ্ছে।
এদিকে, হামলার জবাবে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে দেড় শতাধিক রকেট, ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে হিজবুল্লাহ।
যদিও হিজবুল্লাহর পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা ইসরায়েলের দিকে অর্ধশতাধিক রকেট নিক্ষেপ করেছে; এমনকি, সামরিক ঘাঁটিগুলোতেও হামলা চালিয়েছে।
এমন সময় এই ক্রমবর্ধমান হামলা-পাল্টা হামলা থেকে যুদ্ধ শুরু হওয়ার শঙ্কা দেখা দিচ্ছে, যখন গাজায় হামাসের সঙ্গে যুদ্ধ করছে ইসরায়েল। তবে হামাসের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে হামলা অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার করেছে হিজবুল্লাহ।
আরও পড়ুন: লেবাননে পেজার বিস্ফোরণ ইসরায়েলের যুদ্ধ ঘোষণা শামিল: হিজবুল্লাহ প্রধান
এ ব্যাপারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের একজন মুখপাত্র বলেছেন, লেবাননে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে সংঘাত নিয়ে মার্কিন প্রশাসন উদ্বিগ্ন। ইসরায়েল ও গাজার মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হলে এই উত্তেজনা কমে আসতে পারে বলেও মত তার।
সবার স্বার্থে দ্রুত ও কূটনৈতিকভাবে এই সমস্যার সমাধান করা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি কারিন জ্যাঁ-পিয়েরে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, উত্তেজনা কমানো ও যুদ্ধ ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য অনেক দেশ ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহ উভয়ের জন্য অন্য সমাধান নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী।
এর আগে, শুক্রবার বৈরুতের উপকণ্ঠে ইসরায়েলি বিমান হামলায় হিজবুল্লাহর এক শীর্ষ সামরিক কমান্ডার এবং বেশ কয়েকজন যোদ্ধা নিহত হন। ওই হামলায় নারী ও শিশুসহ অর্ধশতাধিক বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়।
গত সপ্তাহে লেবাননের বিভিন্ন জায়গায়, বিশেষ করে হিজবুল্লাহর ব্যবহৃত হাজার হাজার যোগাযোগ ডিভাইস পেজার বিস্ফোরিত হয়। ওই ঘটনায় ৩৯ জন নিহত এবং প্রায় তিন হাজার মানুষ আহত হয় যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক। এই হামলায় লেবানন ইসরায়েলকে অভিযুক্ত করলেও এ বিষয়ে তাদের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: বৈরুতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত বেড়ে ৪৫
১ মাস আগে
লেবাননে ইসরায়েলি হামলায় হিজবুল্লাহর সিনিয়র কমান্ডার নিহত
লেবাননের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর টায়ারে ইসরায়েলি বিমান হামলায় হিজবুল্লাহর এক সামরিক নেতা নিহত হয়েছেন।
বুধবার (৩ জুলাই) টায়ারের আল-হোশ এলাকায় একটি বেসামরিক গাড়ি লক্ষ্য করে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী হামলা চালায় বলে জানিয়েছে লেবাননের একটি সামরিক সূত্র।
সূত্র জানায়, একটি ইসরায়েলি ড্রোন আকাশ থেকে গাড়িটির পর দুটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। এতে গাড়িটি পুড়ে যায়, সেইসঙ্গে গাড়ির চালক ও যাত্রী নিহত হন।
ওই গাড়ির চালক ছিলেন হিজবুল্লাহর একটি সামরিক ইউনিটের কমান্ডার, যার ডাকনাম হজ আবু নিমাহ। দক্ষিণ লেবাননের হাদ্দাথা গ্রামের বাসিন্দা নিমাহ দেশটির দক্ষিণ সীমান্ত এলাকার পশ্চিম ও কেন্দ্রীয় সেক্টরের সীমান্তরেখায় কাজ করতেন।
এ ঘটনায় হিজবুল্লাহর পক্ষ থেকে এখনও কোনো মন্তব্য আসেনি।
আরও পড়ুন: গাজায় ‘খুব শিগগির’ অভিযান বন্ধের ঘোষণা দিয়ে লেবাননে যুদ্ধ শুরুর ইঙ্গিত ইসরায়েলের
সূত্র আরও জানায়, দক্ষিণ লেবাননের গ্রাম ও শহরে তিনটি বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। এসময় সীমান্তের পাঁচটি গ্রাম ও শহরে অন্তত ৩০টি শেল নিক্ষেপ করে তারা।
২০২৩ সালে ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে হামলা করার সময় থেকেই হামলা শুরু করেছে হিজবুল্লাহ। এরপর থেকে প্রায় প্রতিদিনই ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে গুলি বিনিময় চলছে। তবে ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীটির সঙ্গে লড়াই সম্প্রতি তীব্র আকার ধারণ করেছে। এটি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, তা একটি পূর্ণ যুদ্ধের রূপ নিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
হিজবুল্লাহ হামাসের চেয়ে অনেক শক্তিশালী। তাদের সঙ্গে নতুন করে যুদ্ধ শুরু হলে ইরানও তাতে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িয়ে পড়তে পারে। ফলে তারাও ইসরালের ব্যাপক ক্ষতিসাধন করতে পারে। সর্বোপরি, এটি একটি বড় পর্যায়ের আঞ্চলিক যুদ্ধের রূপ নিতে পারে।
সম্প্রতি হিজবুল্লাহর মোকাবিলায় ইসরায়েলের উত্তর সীমান্তে সৈন্য জড়ো করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
এ ব্যাপারে হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরাল্লাহ ইসরায়েলকে সতর্ক করে বলেন, আমাদের কাছে নতুন এমন অস্ত্র ও গোয়েন্দা সক্ষমতা রয়েছে, যা ইসরায়েলের গভীরে আরও গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করার সক্ষমতা রাখে।
আরও পড়ুন: লেবাননে মার্কিন দূতাবাসে বন্দুকধারীর হামলা
জবাবে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারাও হিজবুল্লাহকে তাদের পূর্ণ সক্ষমতা দেখায়নি। যুদ্ধ শুরু হলে লেবাননও আরেকটি গাজায় পরিণত হবে।
তবে হিজবুল্লাহর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গাজায় যুদ্ধবিরতি হলেই কেবল ইসরায়েলে হামলা বন্ধ করা হবে।
৪ মাস আগে