বাঁধ ভাঙা
চিলমারীতে বাঁধ ভাঙা আতঙ্কে ৩০ গ্রামের মানুষ
কুড়িগ্রামের চিলমারীতে ব্রহ্মপুত্রের পানির তোড়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও তীর রক্ষা প্রকল্পে দেখা দিয়েছে ধস। হুমকির মুখে রানীগঞ্জ ইউনিয়নের ৩০টি গ্রামসহ হাজারো একর ফসলি জমি।
বাঁধ ভেঙে গেলে চিলমারী উপজেলা সদরসহ প্রায় শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হতে পারে। এই আতঙ্কে চোখে ঘুম নেই তীরবর্তী মানুষের। বাঁধ ও ডানতীর রক্ষা প্রকল্পে কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেই। পানি উন্নয়ন বোর্ড নামমাত্র কয়েকটি জিও ব্যাগ ফেলে লোক দেখানো কাজ করছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
তারা বলছে, শুষ্ক মৌসুমে জিও ব্যাগ অথবা ব্লক দিয়ে তীর রক্ষা করা হলে বন্যার সময় কোনো ধরনের ঝুঁকি থাকত না।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে বন্যায় ৩৪১ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ, পানিবন্দি সোয়া ১ লাখ মানুষ
সরেজমিনে দেখা যায়, চিলমারীর ব্রহ্মপুত্র নদ তীরবর্তী কাঁচকোল এলাকায় বন্যায় পানি বেড়ে ফুলে-ফেঁপে উঠছে ব্রহ্মপুত্র। ব্রহ্মপুত্রের পানির তীব্র স্রোতে উপজেলার রানীগঞ্জ ইউনিয়নের কাঁচকোল স্লুইসগেট সংলগ্ন এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও ডানতীর রক্ষা প্রকল্পে দেখা দিয়েছে ধস। পানির তোড়ে দেবে গেছে প্রায় ৩০ মিটার পিচিং, ভেঙে গেছে বাঁধ। ডানতীর রক্ষা প্রকল্পে ধস দেখা দেওয়ায় হুমকির মুখে হাজারো একর ফসলি জমি। এছাড়া রানীগঞ্জ ইউনিয়নের সড়কটারী, শিমুল তলা বাঁধ গ্রাম, পাঁচাগ্রাম, পূর্ব ভাটিয়া পাড়াসহ প্রায় ৩০টি গ্রাম। শুধু তাই নয় এই তীর রক্ষা বাঁধ ভেঙে গেলে নিমিষেই তলিয়ে যাবে উপজেলা সদরসহ প্রায় শতাধিক গ্রাম। তীর রক্ষা প্রকল্পে ধস দেখা দেওয়ায় ভাঙন ও প্লাবিত হওয়ার আতঙ্কে লক্ষাধিক মানুষ।
কাঁচকোল এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, ভাঙন বা ধস দেখা দিলে পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজ শুরু করে এবং জিও ব্যাগ ফেলা শুরু করে। সেই কাজেও ধীরগতি ও সঠিক পরিকল্পনার অভাবে বারবার এই ধস ও ভাঙনের আতঙ্কে পড়ে এলাকাবাসী।
তারা আরও বলেন, এই বাঁধ ভেঙে গেলে শুধু রানীগঞ্জ নয় উপজেলা সদরও পড়বে হুমকির মুখে। শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়ে পানিবন্দি হবে লক্ষাধিক মানুষ।
রানীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মঞ্জুরুল ইসলাম জানান, পানির প্রবল স্রোতে এই ধস দেখা দিয়েছে। বাঁধসহ ডানতীর রক্ষা প্রকল্পে পানি উন্নয়ন বোর্ড যে বস্তা দিয়ে ডাম্পিং করছে এটি অত্যন্ত নিম্নমানের। এর সঙ্গে বালুগুলোও ভালো না।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রুকুনুজ্জামান শাহীন বলেন, আপাতত জরুরিভিত্তিতে জিও ব্যাগ ছাড়া হাতে কিছু নেই। তবে আমি মনে করি শুষ্ক মৌসুমে যদি এই কাজ করা যেত তাহলে কোনো চিন্তা থাকত না।
এক প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন, আসলে অবৈধভাবে যেখানে সেখানে বালু উত্তোলন করায় নদী ভাঙছে। দ্রুত বালু উত্তোলন বন্ধ করতে হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিনহাজুল ইসলাম জানান, তীর ঘেঁষে কিংবা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, যেসব এলাকায় বাঁধ ধসে গেছে, সেসব এলাকায় জিও ব্যাগ ডাম্পিং কাজ চলছে। আশা করি আর সমস্যা হবে না।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, দেড় লাখ মানুষ পানিবন্দি
৪ মাস আগে