কোটা সংস্কার
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গণহত্যার তদন্ত করবে 'জাতীয় গণতদন্ত কমিশন'
কোটা সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে সম্পর্কিত সাংবিধানিক, আইনি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের গুরুতর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে একটি 'জাতীয় গণতদন্ত কমিশন' গঠন করা হয়েছে।
সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান কমিশনের যুগ্ম সদস্যসচিব তানজীমউদ্দিন খান ও মাহা মির্জা।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘১৬ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে শিক্ষার্থীদের বেধড়ক পিটিয়ে সহিংসতার সূত্রপাত করা হয়। বিশেষ করে এই সহিংসতার প্রতিবাদে সারা বাংলাদেশে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ পথে নেমে এলে রংপুরে আবু সাঈদকে সরাসরি বুকে গুলি করা হয়। কিন্তু পুলিশ যখন মামলা করে, তখন সাধারণ ছাত্র ও জনগণকে দায়ী করা হয়। এতে গোটা তদন্তপ্রক্রিয়া নিয়ে সাধারণ নাগরিকদের মনে প্রশ্ন উঠেছে এবং এসব ঘটনায় সত্য উদ্ঘাটনের দাবি উঠেছে।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এ ঘটনায় সংবাদপত্রের হিসাবে অন্তত ২০৯ জনের মৃত্যুর সংবাদ প্রকাশিত হলেও সরকারি হিসাবে তা ১৪৭ জন। নির্যাতন, গুলিবর্ষণ, গণগ্রেপ্তারসহ বিভিন্নভাবে আন্দোলন নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা হয়েছে যার ফলে সংবিধান, প্রচলিত আইন ও চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে।
আরও পড়ুন: কোটা সংস্কার আন্দোলনে সহিংসতায় নিহত ১৪৭: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
এসব ঘটনার কারণ উদ্ঘাটন, সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের লক্ষ্যে দেশের শিক্ষক, আইনজীবী, সংস্কৃতিকর্মী ও সাধারণ অভিভাবকদের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের কয়েকজন প্রথিতযশা ব্যক্তির সমন্বয়ে ‘জাতীয় গণতদন্ত কমিশন’ গঠন করা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মো. আব্দুল মতিনের নেতৃত্বে কমিশনের সদস্যরা হলেন- মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান, সাংবাদিক আবু সাইয়িদ খান, অধ্যাপক গীতিআরা নাসরিন, সাংবাদিক আশরাফ কায়সার, আইনজীবী অনীক আর হক, অধ্যাপক তানজিমউদ্দিন খান এবং লেখক ও গবেষক মাহা মির্জা।
কমিশনের যুগ্ম সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন বিচারপতি মো. আব্দুল মতিন ও সুলতানা কামাল, আর সদস্যসচিব হিসেবে যৌথভাবে কাজ করবেন অধ্যাপক তানজিমউদ্দিন খান ও মাহা মির্জা।
এ ছাড়া, এই গণতদন্ত কমিশনে উপদেষ্টা হিসেবে থাকবেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী তোবারক হোসেন, সারা হোসেন, বিশিষ্ট আইন বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক, অধ্যাপক সলিমুল্লাহ্ খান, শিক্ষক কাজী মাহফুজুল হক সুপন, আইনের অধ্যাপক সাইমুম রেজা তালুকদার, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী রাশনা ইমাম ও জ্যোতির্ময় বড়ুয়া।
আরও পড়ুন: 'নিরাপত্তার জন্য' কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়কদের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে: ডিবি প্রধান হারুন
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ১ জুলাই থেকে সংগঠিত বিভিন্ন সহিংসতা, নির্যাতন, হত্যা, গুলিবর্ষণ, হুমকি, মামলা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অডিও, ভিডিও, ফটোগ্রাফ ও লেখাসহ সব ধরনের তথ্য কমিশনের কাছে পাঠাতে আহ্বান জানিয়েছে জাতীয় গণতদন্ত কমিশন।
সোমবার রাতে আইনজীবী অনীক আর হক নিজ ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লেখেন, কমিশন তার কাজে ‘যারা সাক্ষ্য দেবে তাদের গোপনীয়তা বজায় রাখবে’। এতে আরও বেশি মানুষ তাদের কাছে থাকা তথ্য সরবরাহ করতে এগিয়ে আসার ব্যাপারে উৎসাহিত হবে যেসব তথ্য গুরুত্বপূর্ণও হতে পারে।
'দু-একদিনের মধ্যে' কমিশনের টার্মস অব রেফারেন্স ও কল ফর এভিডেন্স প্রকাশ করা হবে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: কোটা আন্দোলনে সহিংসতা ও হত্যাকাণ্ডের বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
৩ মাস আগে
'নিরাপত্তার জন্য' কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়কদের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে: ডিবি প্রধান হারুন
কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়করা নিরাপদে রয়েছেন বলে তাদের পরিবারকে নিশ্চিত করেছেন ডিবি প্রধান হারুন-অর-রশীদ।
তিনি বলেন, তাদের আপনজনরা নিরাপদে আছেন, উদ্বেগের কোনো কারণ নেই।
রবিবার নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে হারুন বলেন, 'সমন্বয়কারীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে আমাদের হেফাজতে নিয়েছি। আমরা তাদের পরিবারকে আশ্বস্ত করছি যে চিন্তার কোনো কারণ নেই। আমরা তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছি এবং তাদের পরিবারকেও আশ্বস্ত করতে হবে।’
আরও পড়ুন: ‘নয়াপল্টন কার্যালয় ভাঙচুর’: ডিবি প্রধান ও আরও ৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের বিএনপির
এর আগে শুক্রবার তিন সমন্বয়ককে এবং শনিবার সন্ধ্যায় আরও দুজনকে ডিবি কার্যালয়ে আনা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হারুন বলেন, 'যারা ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে, বিভিন্ন স্থাপনায় অগ্নিসংযোগ করেছে এবং জামায়াত-শিবিরের দুর্বৃত্তদের গ্রেপ্তার করা আমাদের দায়িত্ব।’
তিনি জোর দিয়ে বলেন, 'কেউ যদি অনিরাপদ বোধ করে এবং প্রকাশ করে যেকোনো মুহূর্তে তার ক্ষতি হতে পারে, তবে তাকে নিরাপদে আনা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। আমরা কেন তাদের নিরাপত্তার দিকে নজর দিচ্ছি তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। মনে রাখতে হবে, নিরীহ ছাত্রদের মধ্যে অনুপ্রবেশ ও সহিংসতা উসকে দিয়ে গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করার লক্ষ্যে যে ঘৃণ্য গোষ্ঠী রয়েছে, এরা তাদের দ্বারা পরিবেষ্টিত ছিল।’
ডিবি প্রধান বলেন, 'শিক্ষার্থীদের আন্দোলন বা আন্দোলনের যাতে কোনো ক্ষতি না হয়, সেজন্য আমরা সমন্বয়কারীদের সুরক্ষার জন্য ডিবি হেফাজতে নিয়েছি।’
তাদের কতদিন হেফাজতে রাখা হবে- সে সম্পর্কে হারুন বলেন, 'এ বিষয়ে আমরা সমন্বয়কারী ও তাদের পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করব।’
আরও পড়ুন: পুলিশ কনস্টেবল হত্যা মামলায় বিএনপি নেতা আমীর খসরুকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে: ডিবি প্রধান হারুন
সমন্বয়কারীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'নিরাপত্তার জন্য তারা আমাদের সঙ্গে থাকলেও তাদের সঙ্গে আমাদের নানা আলোচনা হয়েছে। আমরা জানতে চেয়েছি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের সময় কারা তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছে এবং কারা তাদের উসকানি দিয়েছে। তারা আমাদের কিছু নাম ও নম্বর দিয়েছে।’
ডিবি হেফাজতে নির্যাতনের গুজব প্রসঙ্গে হারুন বলেন, 'আমার দেশ ছেড়ে পালানোর মিথ্যা দাবিসহ ফেসবুকে অনেক গুজব ছড়ানো হচ্ছে। এমন গুজবে বিশ্বাস করার কোনো কারণ নেই। যারা এই গুজব ছড়াচ্ছে তাদের লক্ষ্য বেশি মন্তব্য পাওয়া এবং অর্থ উপার্জন করা। আমাদের হেফাজতে থাকা ব্যক্তিদের সঙ্গে আমরা কোনো দুর্ব্যবহার করিনি।’
পুলিশ নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হতে বাধা দিতে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে- বিভিন্ন মহলের এমন অভিযোগের জবাবে হারুন বলেন, 'এসব গুজবে বিশ্বাস করবেন না। আইনের স্বার্থে আমরা অতীতে ২৮ অক্টোবরের সহিংসতায় জড়িতসহ অনেককে গ্রেপ্তার করেছি। তখন আমাদের কর্মকাণ্ড নিয়ে কেউ প্রশ্ন তোলেনি। আজ, আমরা তাদের সুরক্ষার জন্য ব্যক্তিদের হেফাজতে নিয়েছি এবং এই গুজব বিশ্বাস করা উচিত নয়।’
পরিবার ও শিক্ষকদের পারিবারিক চ্যানেলের মাধ্যমে নিরাপত্তা দেওয়ার অনুরোধের বিষয়ে জানতে চাইলে হারুন বলেন, 'আমরা এ ধরনের কোনো অনুরোধ পাইনি। আমরা শুধু তাদের নিরাপত্তার কথা ভেবে হেফাজতে নিয়েছি এবং তাদের আন্দোলন সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন করেছি।’
আরও পড়ুন: ডিবি প্রধান ও আরও ৯জনের বিরুদ্ধে বিএনপির অভিযোগ আদালতে খারিজ
৩ মাস আগে
কোটা সংস্কার আন্দোলনের ১৫ দিনে ঢাকায় গ্রেপ্তার ২৫৩৬: ডিএমপি
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভের ঘটনায় রাজধানীতে ২ হাজার ৫৩৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের এডিসি কে এন রায় নিয়তি জানান, গত ১২ থেকে ২৬ জুলাই পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
এছাড়া কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সাম্প্রতিক সহিংসতার ঘটনায় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ২৯০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সদস্যরা।
আরও পড়ুন: আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত করার অপতৎপরতা কঠোরভাবে মোকাবিলা করা হবে: ডিএমপি কমিশনার
র্যাব সদর দপ্তরের গণমাধ্যম শাখার এএসপি ইমরান খান জানান, শনিবার সকাল পর্যন্ত এ অভিযান চালানো হয়।
অভিযানে ৭১ জনকে ঢাকা থেকে এবং বাকিদের ঢাকার বাইরে থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, হামলাকারী ও নাশকতাকারীরা চিহ্নিত না হওয়া পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান চলবে।
রংপুর শিল্পকলা মিলনায়তনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, 'তারা যেই হোক না কেন, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) প্রধান হারুন-অর-রশীদ বলেছেন, কোটা আন্দোলনের নামে যারা নাশকতা করেছে এবং পুলিশ কর্মকর্তাদের হত্যা করেছে তারা যেখানেই থাকুক না কেন কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
আরও পড়ুন: ৩ পুলিশ সদস্যকে হত্যায় জড়িতরা ছাড় পাবে না: ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার
শুক্রবার ডিবি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ডিবি প্রধান বলেন, যারা পুলিশ কর্মকর্তাদের হত্যা করেছে, বেসামরিক মানুষকে হত্যা করেছে এবং মেট্রোরেলসহ সরকারি স্থাপনায় নাশকতা চালিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যারা এসব কর্মকাণ্ডে নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং এগুলোতে অর্থায়ন করেছেন বা আর্থিক লেনদেনে সহায়তা করেছেন তাদের ছাড় দেওয়া হবে না, তারা যেখানেই থাকুক না কেন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে সারাদেশে অন্তত দুই হাজার বিরোধী নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি অবিলম্বে গ্রেপ্তার নেতাকর্মীদের মুক্তি দাবি করেন।
ফখরুল বলেন, 'এ পর্যন্ত আমরা জানতে পেরেছি আমাদের প্রায় দুই হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
তবে সরকার যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ করে দেওয়ায় গ্রেপ্তার ও হতাহতের সঠিক তথ্য তাদের কাছে এখনও নেই বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: কোটা আন্দোলনে রাজধানীতে আহত ১২ পুলিশ: ডিএমপি
৩ মাস আগে
সহিংসতায় জড়িতদের খুঁজে বের করে শাস্তি নিশ্চিত করুন: বিটিভি পরিদর্শনকালে প্রধানমন্ত্রী
সাম্প্রতিক সহিংসতায় জড়িতদের দেশের প্রতিটি প্রান্ত থেকে খুঁজে বের করে শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিতে সরকারকে সহযোগিতা করতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, 'আমি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাই, যারা এই ধ্বংসযজ্ঞের সঙ্গে জড়িত তাদের খুঁজে বের করে শাস্তি নিশ্চিত করতে সহযোগিতা করুন।’
শুক্রবার (২৬ জুলাই) সকালে রাজধানীর রামপুরায় বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ভবনের ক্ষয়ক্ষতি পরিদর্শনকালে এ আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: বিটিভি ভবনের ক্ষয়ক্ষতি পরিদর্শনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
সম্প্রতি সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলাকালে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের দেওয়া আগুনে বিটিভি ভবনের বিভিন্ন অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের সন্ত্রাসীরা সারাদেশ থেকে জড়ো হয়ে রাজধানীতে এসব হামলা চালিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘কোটাবিরোধী আন্দোলনকে কাজে লাগিয়ে তারা এসব করেছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন বিটিভিকে ক্যামেরাসহ সর্বাধুনিক প্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ করেন তিনি। ২০০৯ সালে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর তিনি টেলিভিশন সেন্টারটিকে আরও আধুনিকায়ন করেন।
তিনি আরও বলেন, ‘কিন্তু এখন বাংলার মানুষ একাত্তরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নারকীয় ধ্বংসযজ্ঞের মতো ভয়াবহ দৃশ্য দেখছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীও টেলিভিশনে হামলা চালায়নি। কিন্তু এই হামলাকারীরা টেলিভিশনে আগুন ধরিয়ে দিয়ে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে; ধ্বংসের হাত থেকে কিছুই রেহাই পায়নি।
প্রত্যেক বাঙালির জন্য গর্বের মেট্রোরেলেও তারা ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ওরা কারা? এরা কি এ দেশের মানুষ? যারা দেশকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে এসব হামলা চালিয়েছে, তারা কি এ দেশে জন্মেছে?’
এরা পানি শোধনাগার, পয়োনিষ্কাশন ট্রিটমেন্ট প্লান্ট ও সিটি করপোরেশনের ময়লার ট্রাকেও হামলা চালিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা এমন স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে যা জনগণের সেবায় নিয়োজিত।
এ সময় হামলাকারীদের মানসিকতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন প্রধানমন্ত্রী।
২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে বিএনপি-জামায়াতের অগ্নিসন্ত্রাসের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, সহিংসতার সময় প্রায় ৩ হাজার ৮০০ পরিবহন গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।
এবারের অগ্নিসন্ত্রাসের চরিত্র ভিন্ন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এবার তারা গানপাউডার ব্যবহার করেছে, তাই কিছুক্ষণের মধ্যে এসব জিনিস পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।’
বাংলাদেশ এখন বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, 'আমরা যখন বাংলাদেশকে একটি মর্যাদার আসনে নিয়ে গেছি, তখন এটা (ধ্বংসযজ্ঞ) কি এর (সরকারের সাফল্য) পুরস্কার? তারা যে প্রতিষ্ঠানগুলো পুড়িয়ে দিয়েছে সেগুলোর সুফল কি তারা ভোগ করেনি?
সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার চাহিদার তুলনায় কোটা অনেক কমিয়ে দিয়েছে। কিন্তু লক্ষ্য করা গেছে মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের বিরুদ্ধে তাদের তীব্র ক্ষোভ।
তিনি বলেন, ‘আপাতদৃষ্টিতে ৯৮ শতাংশ চাকরি মেধার ভিত্তিতে হবে কারণ (প্রথম প্রজন্মের) মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ৫ শতাংশ কোটার বেশিরভাগই অব্যবহৃত থাকবে। তারপরও তারা (আন্দোলনকারীরা) সন্তুষ্ট নয়।’
তার বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত ১৪ জুলাই তার সংবাদ সম্মেলনের ছয়-সাত ঘণ্টা পর হঠাৎ করেই তারা নিজেদের রাজাকার পরিচয় দিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন।
তিনি বলেন, ‘আমি তাদের রাজাকার বলিনি। তারাই স্লোগানে নিজেদের রাজাকার পরিচয় দেয়।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, লন্ডনে তার দলের নেতাদের ওপর হামলা হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করায় সংযুক্ত আরব আমিরাতে ৫৭ বাংলাদেশিকে এবং সৌদি আরবে ২০ বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
যেহেতু তারা ওইসব দেশের আইন অনুযায়ী সাজা পেয়েছে, তাই সেখানে বাংলাদেশের কিছু করার নেই বলে উল্লেখ করেন তিনি।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে আরও ২০-২২ লাখ বাংলাদেশি শ্রমিকের নিরাপদ ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করে শেখ হাসিনা এসব ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে তাৎক্ষণিকভাবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বার্তা পাঠিয়েছেন বলে জানান।
তিনি বলেন, সহিংসতা ও ধ্বংসযজ্ঞ ভয়াবহ জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করেছে। তাদের জীবন ও জীবিকাকে প্রভাবিত করেছে এবং বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ন করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাই দোষীদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর দায়িত্ব এদেশের মানুষের ওপর তুলে দিলাম। বিভ্রান্তি ও অপপ্রচার চালিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করতে দেওয়া উচিত নয় তাদের (বিক্ষোভকারীদের)।’
এসময় রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন কেন্দ্রটির ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত এবং বিটিভির মহাপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলমসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এছাড়াও রাজধানীর রামপুরায় একই প্রাঙ্গণে অবস্থিত বিটিভি ভবন ও বিটিভির প্রধান কার্যালয়ে ক্ষয়ক্ষতির চিত্র নিয়ে একটি ভিডিও প্রেজেন্টেশন দেখানো হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিরপুর ১০ নম্বরে ক্ষতিগ্রস্ত মেট্রোরেল স্টেশন পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: অপরাধীদের রুখতে জনগণকে এগিয়ে আসতে হবে: মেট্রোরেলে তাণ্ডব প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী
৩ মাস আগে
বিটিভি ভবনের ক্ষয়ক্ষতি পরিদর্শনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
সম্প্রতি সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলাকালে হামলায় বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ভবনের ক্ষয়ক্ষতি পরিদর্শন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শুক্রবার (২৬ জুলাই) সকালে তিনি অজ্ঞাত ব্যক্তিদের দেওয়া আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত বিটিভি ভবনের বিভিন্ন অংশ পরিদর্শন করেন।
আরও পড়ুন: মিরপুর-১০ নম্বরে ক্ষতিগ্রস্ত মেট্রোরেল স্টেশন পরিদর্শন করলেন প্রধানমন্ত্রী
এসময় রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন কেন্দ্রটির ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেন বিটিভির মহাপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলমসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এছাড়াও রাজধানীর রামপুরায় একই প্রাঙ্গণে অবস্থিত বিটিভি ভবন ও বিটিভির প্রধান কার্যালয়ে ক্ষয়ক্ষতির চিত্র নিয়ে একটি ভিডিও প্রেজেন্টেশন দেখানো হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিরপুর ১০ নম্বরে ক্ষতিগ্রস্ত মেট্রোরেল স্টেশন পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: অপরাধীদের রুখতে জনগণকে এগিয়ে আসতে হবে: মেট্রোরেলে তাণ্ডব প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী
৩ মাস আগে
মিরপুর-১০ নম্বরে ক্ষতিগ্রস্ত মেট্রোরেল স্টেশন পরিদর্শন করলেন প্রধানমন্ত্রী
মিরপুর-১০ নম্বরে ক্ষতিগ্রস্ত মেট্রোরেল স্টেশন পরিদর্শন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট অস্থিরতার সময় ভাঙচুরের শিকার স্টেশনের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শনে যান তিনি।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) এ পরিদর্শনের সময় মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনের ক্ষয়ক্ষতি এবং পুনরায় চালুর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিস্তারিত তুলে ধরেন ঢাকা মাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া মেট্রো স্টেশনে ভাঙচুর চালিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা।
এর আগে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে গত ১৮ জুলাই মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
তদন্ত কমিটি ১০ কার্যদিবসের মধ্যে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ যাচাইয়ের প্রতিবেদন জমা দিলেই পুনরায় মেট্রোরেল চালুর সময়সূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানান ডিএমটিসিএলের কর্মকর্তারা।
এর আগে গত ২২ জুলাই মেট্রোরেলের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণে এবং কবে নাগাদ এটি আবার চালু করা যায় তা নির্ধারণে মেট্রোরেল এমআরটি লাইন-৬ প্রকল্পের অতিরিক্ত পরিচালক অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ জাকারিয়াকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
দেশের বহুল প্রতীক্ষিত মেট্রোরেল উদ্বোধনের প্রায় দুই মাস পর ২০২৩ সালের ১ মার্চ জনসাধারণের জন্য মেট্রো স্টেশনটি খুলে দেয় সরকার।
প্রকল্পের মূল নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালে।
দেশের প্রথম মেট্রোরেল প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা। এই প্রকল্পে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) ১৯ হাজার ৭১৯ কোটি টাকা ঋণ দেয় আর বাকি অর্থায়ন করে বাংলাদেশ সরকার।
শুরুতে এ প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ছিল প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা। মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত অতিরিক্ত ১ দশমিক ৬ কিলোমিটার অংশ নির্মাণ, প্রতিটি স্টেশনের জন্য নতুন জমি অধিগ্রহণ এবং বিভিন্ন নতুন সুযোগ-সুবিধা সংযোজনের কারণে ব্যয় বেড়ে যায়।
২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর মেট্রোরেলের এমআরটি-৬ লাইনের উত্তরা-আগারগাঁও অংশের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
৩ মাস আগে
পুনরায় আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত যবিপ্রবি বন্ধ ঘোষণা
দেশের উদ্ভূত সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তাজনিত কারণে পুনরায় আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি) বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
বুধবার সকালে যবিপ্রবির প্রশাসনিক ভবনের সম্মেলন কক্ষে যবিপ্রবির সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরাম রিজেন্ট বোর্ডের ১০২তম জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
সভায় বিকাল ৪টার মধ্যে ছাত্রদের ও আগামীকাল সকাল ১০টার মধ্যে ছাত্রীদের হলত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়।
যবিপ্রবির উপাচার্য ও রিজেন্ট বোর্ডের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও দেশের উদ্ভূত পরিস্থিতি বিবেচনায় শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
একইসঙ্গে ছেলেদের আবাসিক হল বিকেল ৪টার মধ্যে এবং মেয়েদের আবাসিক হল আগামীকাল সকাল ১০টার মধ্যে ত্যাগ করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
৪ মাস আগে
কোটা সংস্কার: সারা দেশে পুলিশ-ছাত্রলীগের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে নিহত ৬
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সারা দেশে শিক্ষার্থী, পুলিশ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে ছয়জন নিহত ও শত শত আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) সংঘর্ষে চট্টগ্রামে তিনজন, ঢাকায় দুইজন ও রংপুরে একজন নিহত হয়েছেন।
চট্টগ্রামের ষোলশহর থেকে মুরাদপুর এলাকায় কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন।
চট্টগ্রাম কলেজের ছাত্র আকরাম (২৪) ও পথচারী ফারুক (৩৫) নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার সাইফুল ইসলাম। তবে তাৎক্ষণিকভাবে নিহত একজনের পরিচয় জানা যায়নি।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের দ্বাদশ ব্যাচের ছাত্র আবু সাঈদ (২২) বিকালে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে নিহত হন।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের মধ্যে ঢাকা কলেজের সামনে অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবকের (আনুমানিক ২৫) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আকাশ ও মামুন নামে দুই পথচারী ঢাকা কলেজ এলাকা থেকে লাশ নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন।
এছাড়া ঢাকার সায়েন্সল্যাব এলাকায় আহত এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। তার মৃত্যুর সঠিক কারণ এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: কোটা আন্দোলন: চট্টগ্রামে ছাত্রলীগের সঙ্গে সংঘর্ষে তিনজন নিহত
৪ মাস আগে
কোটা সংস্কারে সরকার সর্বোচ্চ আদালতকে পাশ কাটিয়ে কিছুই করবে না: আইনমন্ত্রী
কোটা সংস্কারে সরকার সর্বোচ্চ আদালতকে পাশ কাটিয়ে কিছুই করবে না বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেছেন, ‘কোটার বিষয়ে সর্বোচ্চ আদালত যে রায় দেবে সরকার সেটা বিবেচনা করবে, সেটার প্রতিপালন করার চেষ্টা করবে।’
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ২০১৮ সালে কোটা বাতিল করেন। এরপর সাত থেকে আটজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হাইকোর্টে মামলা করেন। আজ যারা কোটা আন্দোলন করছেন, তারা তো হাইকোর্টে যাননি। হঠাৎ একদিন যখন হাইকোর্টের রায়ের কথা পত্রিকায় বের হয়েছে, তখন তারা আন্দোলনে নেমে পড়েছেন। তারা হাইকোর্টে না গিয়ে রাস্তায় আন্দোলনে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’
প্রশ্ন উঠেছে, কোটা আদালতের বিষয় নয়, সরকারের বিষয়- উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আদালতে যখন একটি বিষয় যায়, তখন সরকার অপেক্ষা করে আদালত কী বলে। তারপর সরকারের পদক্ষেপ নেওয়ার সময় হয়। তাই কোটার বিষয়ে সরকার আদালতের রায় পর্যন্ত অপেক্ষা করবে। সরকার বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালতকে সম্মান করবে।’
আরও পড়ুন: হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছেন আইনমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদকারী ছাত্রছাত্রীরা চাইলে আইনজীবীর মাধ্যমে তাদের বক্তব্য আদালতের সামনে তুলে ধরতে পারেন। আদালত মূল দরখাস্ত বিবেচনা, নিষ্পত্তিকালে তাদের বক্তব্য বিবেচনায় নেবেন। সর্বোচ্চ আদালত তাদের এ আশ্বাস পর্যন্ত দিয়েছেন। তারপরও এ আন্দোলন করার কোনো প্রয়োজনীয়তা আছে? আন্দোলনের যে স্লোগান দেওয়া হচ্ছে, এর প্রয়োজনীয়তা থাকে?’
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে ইনডেমনিটি আইনের ধারাবাহিকতায় আমরা কিন্তু এখন ছাত্রদের মুখে স্লোগানের কথা শুনছি। যারা আন্দোলন করছেন, তারা যদি- আমি কে, তুমি কে, আমরা বাঙালি, আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান- বলতেন তাহলে আমি অবশ্যই বলতাম তারা সঠিক পথে আছেন।’
আনিসুল হক বলেন, ‘যৌক্তিক কথা প্রধানমন্ত্রী শুনবেন। জনগণের জন্য যেটি ভালো হয়, সেটি প্রধানমন্ত্রী করবেন, কিন্তু তার সরকার আদর্শ থেকে বিচ্যুত হবে না। সেই আদর্শ হলো বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।’
‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে কেউ নষ্ট করতে পারবে না। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কেউ অসম্মান করতে পারবে না। এ চেতনা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। এ চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ২০৪১ সালে উন্নত বাংলাদেশ এবং একটি আইনের শাসনে প্রতিষ্ঠিত দেশ হিসেবে পরিচিত করার সংগ্রামে লিপ্ত হতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাংলাদেশে বিচারহীনতার জন্ম দিয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সম্পূর্ণভাবে বিনষ্ট করে দেওয়ার হাতিয়ার হয়েছিল। এই অধ্যাদেশ জন্ম দিয়েছিল- বাংলাদেশে রাজাকার, আল-বদর এবং নিজামী মুজাহিদরাই থাকবে, মুক্তিযোদ্ধারা থাকবে না।’
ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স বাংলাদেশের অনেক ক্ষতি করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালের ১২ই নভেম্বর এই অর্ডিন্যান্স বাতিল করে প্রমাণ করে দেন যে, বাংলাদেশের জনগণ এই অর্ডিন্যান্স সহ্য করবে না।’
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে সংসদ সদস্য তারানা হালিম, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. রাশিদ আসকারী, বঙ্গবন্ধু গবেষক মো. হাফিজুর রহমান, সাংবাদিক নেতা মানিক লাল ঘোষ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত স্বাধীনতাবিরোধীদের প্রেতাত্মারা: আইনমন্ত্রী
কোটা নিয়ে সব পক্ষের বক্তব্য শুনে ন্যায়বিচার করবেন আদালত: আইনমন্ত্রী
৪ মাস আগে
কোটা সংস্কারের দাবিতে ওসমানী মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
কোটা সংস্কারের দাবিতে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেছেন। এসময় প্লে-কার্ড হাতে নিয়ে অবস্থান নেন তারা। ক্লাস-পরীক্ষাও বর্জন করেন শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) সকাল থেকেই মেডিকেল কলেজের গোলচত্বরে অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা।
কোটা না মেধা, মেধা মেধা, বঙ্গবন্ধুর বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই স্লোগানে মুখরিত হয় ওসমানী মেডিকেল কলেজ প্রাঙ্গন। কলেজের গোলচত্ত্বর থেকে কোটা সংস্কারের দাবিতে শতাধিক শিক্ষার্থীর বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে।
এ সময় কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের মুখোমুখি অবস্থান নেয় ছাত্রলীগ।
আরও পড়ুন: কোটা আন্দোলন: বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে শিক্ষার্থী নিহত
৪ মাস আগে