ট্রাইব্যুনাল
চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু
নব্বইয়ের দশকের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে। দীর্ঘ ২৪ বছর পর রবিবার ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক জাকির হোসেনের আদালতে এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। এদিন সাক্ষ্য দেন মামলার বাদী সোহেল চৌধুরীর ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী।
সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার আসামি ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই ওরফে আব্দুল আজিজসহ ৯ জন। ২০০১ সালের ৩০ অক্টোবর ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।
এ মামলার আসামিরা হলেন- আদনান সিদ্দিকী, ট্রাম্পস ক্লাবের মালিক আফাকুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলাম, ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই ওরফে আব্দুল আজিজ, তারেক সাঈদ মামুন, সেলিম খান, হারুন অর রশীদ ওরফে লেদার লিটন ওরফে বস লিটন, ফারুক আব্বাসী, সানজিদুল ইসলাম ইমন ও আশিষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী।
আজ শুনানি উপলক্ষে কারাগার থেকে মামলার আসামি আশীষ রায় চৌধুরী, সানজিদুল ইসলাম ইমন ও তারিক সাঈদ মামুনকে আদালতে হাজির করা হয়। এছাড়া জামিনে থাকা আসামি ফারুক আব্বাসীও আজ আদালতে হাজির হন।
১৯৯৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর রাজধানীর বনানীতে ট্রাম্পস ক্লাবের নিচে সোহেল চৌধুরীকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তাঁর ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী গুলশান থানায় মামলা করেন।
আরও পড়ুন: অভিনেতা সোহেল চৌধুরী হত্যা: ২৪ বছর পর আসামি গ্রেপ্তার
সোহেল চৌধুরী নিহত হওয়ার পরপরই এ হত্যাকাণ্ডে চলচ্চিত্র প্রযোজক ও ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সম্পৃক্ততার অভিযোগ ওঠে। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, হত্যাকাণ্ডের কয়েক মাস আগে আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে সোহেল চৌধুরীর কথা কাটাকাটি হয়। এর প্রতিশোধ নিতে সোহেল চৌধুরীকে হত্যা করা হয়েছে।
ঘটনার রাতে সোহেল তাঁর বন্ধুদের নিয়ে ট্রাম্পস ক্লাবে ঢোকার চেষ্টা করলে বাধা দেওয়া হয়। রাত আড়াইটার দিকে আবারও তিনি ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেন। তখন সোহেলকে লক্ষ্য করে ইমন, মামুন, লিটন, ফারুক ও আদনান গুলি চালান। আসামিদের মধ্যে আদনান খুনের পরপরই ধরা পড়েছিলেন।
মামলাটির তদন্ত শেষে ১৯৯৯ সালের ৩০ জুলাই গোয়েন্দা পুলিশের সহকারি কমিশনার আবুল কাশেম ব্যাপারী ৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেন। ২০০১ সালের ৩০ অক্টোবর ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। এর দুই বছর পর মামলাটির বিচার দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ঢাকার দুই নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়।
ওই বছরই আসামিদের মধ্যে একজন হাইকোর্টে আপিল করেন। আপিলের পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৩ সাল থেকে দীর্ঘ ১৯ বছর হাইকোর্টের আদেশে মামলাটি স্থগিত ছিল। সর্বশেষ গত ২৭ ফেব্রুয়ারি স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার হলে ফের মামলাটিতে সাক্ষ্যগ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয়।
১৬ বছর আগে ঢাকা মহানগরের পিপি দপ্তর থেকে সোহেল হত্যা মামলার তদন্তে নথিপত্র কেস ডকেট (সিডি) নিয়ে যান পুলিশের তৎকালীন পরিদর্শক ফরিদ উদ্দিন। অনেক খোঁজাখুঁজির পর তাঁর সন্ধান মেলে। তিনি আগেই অবসরে গেছেন। তবে হত্যা মামলার সিডি আজও আদালতে উপস্থাপন করা হয়নি।
আরও পড়ুন: চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা: কারাগারে আশিষ চৌধুরী
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের মামলা নিষ্পত্তি করতে হবে ৯০ কার্যদিবসে
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের অভিযোগ সংশ্লিষ্ট মামলার অভিযোগপত্র বিচারিক আদালতে পাওয়ার ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশনা দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। প্রধান বিচারপতির আদেশে বুধবার এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উপরোক্ত বিষয়ে নির্দেশিত হয়ে জানানো যাচ্ছে যে, দেশের সব অধস্তন ফৌজদারী আদালত এবং ট্রাইব্যুনালে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের মামলার অভিযোগপত্র বিচারিক আদালতে প্রাপ্তির ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে আবশ্যিকভাবে মামলা নিষ্পত্তির নির্দেশনা দেয়া হলো। এই সময়সীমার মধ্যে নিষ্পত্তি করতে ব্যর্থ হলে তার কারণ উল্লেখপূর্বক ব্যাখ্যা সুপ্রিম কোর্টে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হলো।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে: প্রধানমন্ত্রী
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি জোরদারে কাজ করুন: রাষ্ট্রপতি
ঢাবি’র দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে গবেষণায় চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ সত্য নয়
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি’র) দুই শিক্ষক সামিয়া রহমান ও সৈয়দ মাহফুজুল হক মারজানের গবেষণা প্রবন্ধকে দুর্বল ও মানহীন বলে অভিহিত করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুসন্ধান ট্রাইব্যুনাল। তবে প্রবন্ধে দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে চৌর্যবৃত্তির যে অভিযোগ আনা হয়েছিল তার সত্যতা পাওয়া যায়নি বলেও জানিয়েছে ট্রাইব্যুনাল।
এ প্রসঙ্গে ট্রাইব্যুনাল বলেছে, ‘লেখকদ্বয় অভিযুক্ত প্রবন্ধটিতে প্রতি পাতায় ফুট নোট উল্লেখ করেনি। কিন্তু প্রতি প্যারায় উদ্বৃতির পূর্বে মিশেল ফুকো ও এডওয়ার্ড সাইদের নাম উল্লেখ করেছেন। এছাড়া প্রবন্ধটির শেষেও রেফারেন্সে মিশেল ফুকো ও এডওয়ার্ড সাইদের রেফারেন্স দিয়েছেন। প্রবন্ধের কোথাও মিশেল ফুকো ও এডওয়ার্ড সাইদের কোন উদ্বৃতিকে লেখকদ্বয় নিজের উদ্বৃতি বলে দাবি করেননি তাই তাদের কার্যক্রমকে সরাসরি চৌর্যবৃত্তির অভিযোগে অভিযুক্ত করা যায় না।’
এছাড়া ওই দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে গঠিত তদন্ত কমিটি তদন্তের নামে যে সময়ক্ষেপণ করেছে সেটাও তাদের রিপোর্টে তুলে ধরেছে ট্রাইব্যুনাল।
ট্রাইব্যুনালের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০১৭ সালে দুই শিক্ষকের প্রবন্ধ নিয়ে অভিযোগ উত্থাপিত হয়। তদন্ত শেষ হয় ২০১৯ সালে এবং ট্রাইবুনাল গঠিত হয় ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে। এতো দীর্ঘমেয়াদী তদন্তের ফলে এ বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্নভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করার সুযোগ পেয়েছে। একইভাবে অভিযুক্ত শিক্ষকদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিডিয়া ট্রায়াল হয়েছে যা কখনো ন্যায় বিচারের জন্য কাম্য নয়। এত দীর্ঘসূত্রিতা মূলত ন্যায়বিচারকে পরাভূত করেছে এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের প্রতি ন্যায় বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রেও বাঁধার সৃষ্টি হয়েছে।
আরও পড়ুন: সামিয়া রহমানের পদাবনতির সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ নয়: হাইকোর্ট
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্লাহর নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের ট্রাইব্যুালের প্রতিবেদনে এসব পর্যালোচনা তুলে ধরা হয়েছে। এই প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই দুই শিক্ষকের পদাবনতির সিদ্ধান্ত জানায় ঢাবি’র সিন্ডিকেট। যার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন সামিয়া রহমান। ওই রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ৫ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট এ সংক্রান্ত যাবতীয় নথি দাখিল করতে ঢাবি কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়া হয়। সে অনুযায়ী বৃহস্পতিবার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের বেঞ্চে ট্রাইব্যুনালের এই প্রতিবেদন দাখিল করে ঢাবি কর্তৃপক্ষ।
২০১৬ সালের ডিসেম্বরে সামিয়া রহমান ও মারজানের যৌথভাবে লেখা 'এ নিউ ডাইমেনশন অব কলোনিয়ালিজম অ্যান্ড পপ কালচার: এ কেস স্ট্যাডি অব দ্য কালচারাল ইমপেরিয়ালিজম' শিরোনামের আট পৃষ্ঠার একটি গবেষণা প্রবন্ধ বিশ্ববিদ্যালয়ের 'সোশ্যাল সায়েন্স রিভিউ' জার্নালে প্রকাশিত হয়। এটি ১৯৮২ সালের শিকাগো ইউনিভার্সিটির জার্নাল 'ক্রিটিক্যাল ইনকোয়ারি'তে প্রকাশিত ফরাসি দার্শনিক মিশেল ফুকোর 'দ্য সাবজেক্ট অ্যান্ড পাওয়ার' নামের একটি নিবন্ধ থেকে প্রায় পাঁচ পৃষ্ঠা হুবহু নকল বলে অভিযোগ ওঠে। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে এক লিখিত অভিযোগে মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে এই চুরির কথা জানিয়েছিল ইউনিভার্সিটি অব শিকাগো প্রেস।
আরও পড়ুন: ঢাবিতে সশরীরে ক্লাস-পরীক্ষা শুরু
শুধু মিশেল ফুকোরই নয়, বুদ্ধিজীবী এডওয়ার্ড সাঈদের 'কালচার অ্যান্ড ইমপেরিয়ালিজম' গ্রন্থের পাতার পর পাতাও সামিয়া ও মারজান হুবহু নকল করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক নাসরিন আহমেদকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট। দীর্ঘদিন তদন্ত শেষে গত বছর ওই কমিটি প্রতিবেদন জমা দেয়। ওই প্রতিবেদনে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় গত ২৯ অক্টোবর তাদের একাডেমিক অপরাধের শাস্তির সুপারিশ করতে আইন অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন ও সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক মো. রহমত উল্লাহকে আহবায়ক করে একটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। ট্রাইব্যুনাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে শাস্তির বিষয়ে সুপারিশ জমা দিলে গত ২৮ জানুয়ারি সিন্ডিকেটের সভায় পদাবনতির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এই সুপারিশের পরই শিক্ষক সামিয়া রহমানকে সহযোগী অধ্যাপক থেকে এক ধাপ নামিয়ে সহকারী অধ্যাপক করে দেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট এবং প্রভাষক সৈয়দ মাহফুজুল হক মারজানকে শিক্ষা ছুটি শেষে চাকরিতে যোগদানের পর দুই বছর একই পদে রাখার নির্দেশ দেয়া হয়। পরে এই সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে সামিয়া রহমান হাইকোর্টে রিট করেন। এই রিটের প্রাথমিক শুনানি করে গত ৫ সেপ্টেম্বর সামিয়া রহমানকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় পদাবনতি দেয়ার সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। চার সপ্তাহের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিসহ সংশ্লিষ্টদের এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়। একইসঙ্গে হাইকোর্ট সামিয়া রহমান সংক্রান্ত সব নথিও তলব করেন।
আরও পড়ুন: ঢাবিতে ‘আলী রীয়াজ স্নাতকোত্তর গবেষণা পুরস্কার ট্রাস্ট ফান্ড’ গঠন
সামিয়া রহমানের আইনজীবী ব্যারিস্টার হাসান এম এস আজিম বলেন, তলবের পরিপ্রেক্ষিতে সামিয়া রহমান সংক্রান্ত সব নথি ও অন্যান্য প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে। আদালত আগামী রবিবার শুনানির দিন ঠিক করেছেন।
ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার সমন্বয়ক হাননান খান আর নেই
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার সমম্বয়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাননান খান মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর।
মাদক মামলার আলাদা ট্রাইব্যুনাল নয়, মন্ত্রিসভায় বিল অনুমোদন
মাদক সংক্রান্ত অপরাধের বিচার নির্দিষ্ট আদালতে করার জন্য মন্ত্রিসভা সোমবার একটি সংশোধিত বিলের খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে। এতে মাদক মামলা বিচারের জন্য আলাদা ট্রাইব্যুনাল স্থাপনের ধারাটি তুলে দেয়া হয়েছে।