ট্রাইব্যুনাল
দ্বিতীয় আরেকটি ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে: চিফ প্রসিকিউটর
জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য সরকার দ্বিতীয় আরেকটি ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়ে এখন কাজ চলছে।
তাজুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে একটি ট্রাইব্যুনালে বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। নতুন আরেকটি ট্রাইব্যুনাল গঠিত হলে বিচার কার্যক্রম আরও তরান্বিত হবে বলেও জানান চিফ প্রসিকিউটর।
তিনি বলেন, চারটি মামলার তদন্ত চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। মামলাগুলো হলো- আশুলিয়া লাশ পোড়ানোর ঘটনা, চানখারপুল হত্যাকাণ্ডের ঘটনা, রামপুরা কার্নিশে ঝুলে থাকা কিশোরকে গুলির ঘটনা ও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা।
চিফ প্রসিকিউটর বলেন, এসব মামলায় স্বল্পতম সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হতে পারে। তদন্ত প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালে গৃহীত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আনুষ্ঠানিক বিচার প্রক্রিয়া শুরু হবে।
আরও পড়ুন: গুমের তদন্তকারীদের হত্যার জন্য বোমা পুঁতে রাখা হয়েছিল: চিফ প্রসিকিউটর
এক সময় ১৯৭১ সালের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার হওয়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বর্তমানে জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন নির্মূলে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারিক কার্যক্রম চলছে।
প্রসিকিউশন টিমের পক্ষ থেকে জানানো হয়, চিফ প্রসিকিউটরসহ মোট ১৭ জন প্রসিকিউটর রয়েছেন এ ট্রাইব্যুনালে। আর ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় মোট তদন্তকারী কর্মকর্তার সংখ্যা বর্তমানে ২৪ জন।
গত ১০ এপ্রিলের প্রসিকিউশন টিমের পক্ষ থেকে দেয়া তথ্য অনুযায়ী, জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধসহ মোট ৩ শতাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে। যেখানে ৩৯টির তদন্ত কার্যক্রম (কমপ্লেইন্ট রেজিস্টার অনুসারে) চলমান। তদন্তের প্রাথমিক সত্যতার আলোকে মিস কেস হয়েছে ২২টি। এইসব মিস কেসে সর্বমোট অভিযুক্ত ব্যক্তি ১৪১ জন। যাদের মধ্যে গ্রেপ্তার রয়েছেন ৫৪ জন আর গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত পলাতক আসামি ৮৭ জন।
১০ দিন আগে
ট্রাইব্যুনালের নিরপেক্ষতায় নেওয়া পদক্ষেপের বিষয়ে জানতে চেয়েছেন জাতিসংঘের প্রতিনিধিরা
জুলাই-আগস্টে সংঘটিত অপরাধের বিচারপ্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ করতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কী ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে, চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ের কাছে তা জানতে চেয়েছে জাতিসংঘের প্রতিনিধি দল। অন্যদিকে ট্রাইব্যুনালের বিচারপ্রক্রিয়ার প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখতে জাতিসংঘের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়।
রবিবার (১৯ জানুয়ারি) সকালে বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গোয়েন লুইস ও মানবাধিকার বিষয়ক উপদেষ্টা হুমা খান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কার্যালয় পরিদর্শনে আসেন। এ সময় তারা চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলামের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
সাক্ষাৎকালে ট্রাইব্যুনালের অন্য প্রসিকিউটরা উপস্থিত ছিলেন। পরে দুপক্ষের আলোচনার বিষয়বস্তু নিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন চিফ প্রসিকিউটর।
আরও পড়ুন: ক্রসফায়ার ও গুম-খুনের অভিযোগ নিয়ে ট্রাইব্যুনালে বিএনপি
ব্রিফিংয়ে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, আমাদের এই ট্রাইব্যুনালের বিচার ও তদন্ত প্রক্রিয়া কেমন এগোচ্ছে? কোনো সমস্যা আমাদের আছে কি না? তাদের পক্ষ থেকে কোনো সাহায্য-সহযোগিতা বা সমন্বয় দরকার কি না?—এইসব বিষয় তারা জানতে চেয়েছেন। এছাড়া বিচার প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ করার ব্যপারে আমরা কী ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছি, কী কী কাজ করছি, এসব ব্যপারে কোনো সহযোগিতার দরকার আছে কি না—এসব বিষয় নিয়ে তাদের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, আলোচনা শেষে তাদের কাছে আমরা অনুরোধ করেছি, আমাদের প্রসিকিউশন ও তদন্ত সংস্থাকে প্রশিক্ষিত করতে সহযোগিতার জন্য। তারা যদি এবিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করে সেটা আমাদের জন্য সহায়ক হবে।
বিচার প্রক্রিয়ার প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করার জন্য জাতিসংঘ প্রতিনিধিদের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে এবং তারাও অনুরোধে সাড়া দিয়েছেন বলে জানান তিনি।
তাজুল ইসলাম বলেন, ‘এর আগে প্রসিকিউশন ও তদন্ত সংস্থার সমন্বয়ে আমাদের একটা ট্রেনিং সেশন হয়েছে। ভবিষ্যতে তারা আরও ট্রেনিংয়ের আয়োজন করবে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধায়নে, সে আশ্বাস দিয়েছেন। প্রযুক্তিগত সহযোগিতার আশ্বাসও দিয়েছেন।’
আরও পড়ুন: ডা. ফয়েজ হত্যা : হাসিনাসহ ৪১ জনের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ
‘তারা আমাদের জানিয়েছেন যে, যেহেতু বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে বিচারের ব্যাপারে আকাঙ্ক্ষা আছে। যে অপরাধ এখানে হয়েছে বা যারা স্বজন হারিয়েছেন, তাদের বিচারপ্রাপ্তির অধিকার আছে। ফলে বিচারটা যাতে ভালোভাবে হয় সেজন্য যত দ্রুত সম্ভব জাতিসংঘ সমর্থন জানাবে।’
তিনি আরও বলেন, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত দেওয়ার বিষয়ে ভারত এখনও কোনো জবাব দেয়নি। না দিলেও আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। বিচারপ্রক্রিয়া তার নিজস্ব প্রক্রিয়া অনুসরণ করে চলবে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত গণহত্যা এবং বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে সংঘটিত গুম, খুনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার করা হচ্ছে।
১০৪ দিন আগে
ক্রসফায়ার ও গুম-খুনের অভিযোগ নিয়ে ট্রাইব্যুনালে বিএনপি
গেল সতেরো বছরে দুই হাজার ২৭৬ জন নেতাকর্মীকে ক্রসফায়ার ও ১৫৩ জনকে গুম-খুনের অভিযোগ আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে দাখিল করেছে বিএনপি।
বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন শাখায় আলাদা দুটি অভিযোগ জমা দেন দলটির মামলা সংগ্রহ তথ্য সেলের সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন খান।
এতে বলা হয়, ২০০৮ থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত সারাদেশে দুই হাজার ২৭৬ জন নেতাকর্মীকে ক্রসফায়ারে হত্যা করা হয়েছে। আর গুম-খুনের শিকার হয়েছেন ১৫৩ জন।
এই ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের অভিযুক্ত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনাসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে মাইকেল চাকমার অভিযোগ
সালাহউদ্দিন জানান, আওয়ামী লীগের আমলে বিএনপিকে নির্মূল করতে দলটির নেতাকর্মীদের ক্রসফায়ার করা হয়েছে। এছাড়া বিএনপির সাবেক নেতা ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলমসহ ১৫৩ জনকে গুম করা হয়ছে। সেই ঘটনায় আলাদা অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এই ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এই অপকর্মে জড়িত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য যারা জড়িত ছিল, তাদের নামও এখানে উল্লেখ করা হয়েছে।
১১৪ দিন আগে
শেখ হাসিনাসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে মাইকেল চাকমার অভিযোগ
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) নেতা মাইকেল চাকমা।
সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে তিনি এ অভিযোগ দায়ের করেন। প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আল নোমান অভিযোগটি গ্রহণ করেন।
এ সময় মাইকেল চাকমার সঙ্গে ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক, অধিকারকর্মী রেহনুমা আহমেদ।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, শেখ হাসিনাসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মাইকেল চাকমা অভিযোগ দাখিল করেছেন। এছাড়া বাকি আটজনই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য।
এর আগে গত ১৮ ডিসেম্বর ট্রাইব্যুনালে এসে প্রসিকিউশনে মৌখিক অভিযোগ করেন মাইকেল চাকমা। অভিযোগ দায়ের করার পর সেদিন মাইকেল চাকমা সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘আমি মনে করি যে প্রতিহিংসার আমি শিকার হয়েছি, প্রধান আসামি হিসেবে আমার গুমের জন্য শেখ হাসিনাকেই দায়ী করছি। তার সঙ্গে আরও যারা জড়িত ছিল, তাকে যারা সহযোগিতা করেছে তাদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ দিয়েছি।’
পরে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা মাইকেল চাকমার অভিযোগ আমলে নিয়েছি। এখন থেকেই তার অভিযোগের তদন্ত শুরু করব।’
২০১৯ সালের ৯ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর এলাকা থেকে সাংগঠনিক কাজ শেষে ঢাকায় ফেরার পথে মাইকেল চাকমা গুমের শিকার হন।
আরও পড়ুন: থার্ড টার্মিনাল প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করবে দুদক
মাইকেলকে উদ্ধারের দাবিতে ইউপিডিএফ ও তার সহযোগী সংগঠন, প্রগতিশীল ও মানবাধিকার সংগঠন, শিক্ষক-নাগরিক সমাজসহ পরিবারের লোকজন বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছেন। মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা ব্যক্তিরাও মাইকেলের সন্ধান দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে আসছিল।
পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের ও মাইকেলের সন্ধান চেয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করা হলেও তাকে উদ্ধারে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বিগত সরকার।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দীর্ঘ ৫ বছর ৩ মাস পর গত ৭ আগস্ট অবরুদ্ধ দশা থেকে মুক্তি পান মাইকেল চাকমা।
ওইদিন ভোরের দিকে চট্টগ্রামের একটি স্থানে তাকে চোখ বাঁধা অবস্থায় ছেড়ে দেওয়া হয়।
১২৪ দিন আগে
হাসিনার বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রচার নিষিদ্ধ করল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল
জুলাই-আগস্ট গণহত্যা মামলার প্রধান আসামি ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সব ধরনের বিদ্বেষমূলক বক্তব্য গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
একইসঙ্গে শেখ হাসিনা আগে যত বিদ্বেষমূলক বক্তব্য দিয়েছেন তা সব মাধ্যম থেকে সরাতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
প্রসিকিউশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে দুই বিচারপতির ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন।
ট্র্যাইব্যুনালে প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানিতে ছিলেন প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম, বি এম সুলতান মাহমুদ, গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামিম ও প্রসিকিউটর আবদুল্লাহ আল মামুন।
এর আগে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আবেদন করা হয় বলে বৃহস্পতিবার সকালে সাংবাদিকদের জানান ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর আবদুল্লাহ আল নোমান।
পরে গাজী এম এইচ তামিম সাংবাদিকদের বলেন, ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা এবং প্রসিকিউশনের অধীনে কোনো মামলার তদন্তকালে কোনো আসামি এমন কোনো বিদ্বেষমূলক বক্তব্য দিতে পারবে না মর্মে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করছে সরকার: আইন উপদেষ্টা
এ মামলার একজন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা বক্তব্য দিয়েছেন। সেসব বচক্তব্যের মাধ্যমে সাক্ষীদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। হেট স্পিপ শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা বিশ্বে অপরাধ। সেগুলো বন্ধে এবং অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে আছে সেসব হেট স্পিস সরাতে নির্দেশ দিয়েছেন।
গত ১৪ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয়। ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পান হাইকোর্টের বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদার। আর সদস্য হিসেবে নিয়োগ পান হাইকোর্টের বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ ও অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মহিতুল হক এনাম চৌধুরী। এর আগে চিফ প্রসিকিউটরসহ প্রসিকিউশন ও তদন্ত সংস্থা নিয়োগ দেওয়া হয়।
এরপর জুলাই গণহত্যার অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনা, তার মন্ত্রীসভার সদস্য, পুলিশ সদস্যসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। পরবর্তীতে গ্রেপ্তার কয়েকজন মন্ত্রীসভার সদস্য, পুলিশ সদস্যসহ সংশ্লিষ্টদের ট্রাইব্যুনালে হাজিরও করা হয়। বর্তমানে শেখ হাসিনাসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।
গত ১৮ নভেম্বর জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা দুই মামলায় শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদেরসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত এক মাসের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।
তদন্ত শেষ করে আগামী ১৭ ডিসেম্বর প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। এছাড়া আদালতে হাজির করা আনিসুল হকসহ ১৩ জনকে ট্রাইব্যুনালের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে আটক রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: সাবেক আইজিপি মামুনসহ ৮ জন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে
১৪৯ দিন আগে
ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনাসহ ২২৭ জনের বিরুদ্ধে গণহত্যার ৫ অভিযোগ
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হত্যা, গণহত্যা ও নির্যাতনের অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ২২৭ আসামির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঁচটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এর আগে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার কাছে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ১২টি অভিযোগ দায়ের করা হয়।
রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার চিফ প্রসিকিউটর বরাবর অভিযোগগুলো দায়ের করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ২৫ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলার প্রতিবাদ ডিআরইউয়ের
গত ২০ জুলাই সকালে ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের ওপর গুলিতে কলেজছাত্র শহীদ নুরে আলম সিদ্দিকী রাকিব ও শহীদ জুবায়েরকে হত্যার ঘটনায় রাকিবের বাবা আব্দুল হালিম ও জুবায়েরের বাবা আনোয়ার উদ্দিন শেখ হাসিনাসহ ৬৫ জনকে আসামি করে অভিযোগটি দায়ের করেন।
১৯ জুলাই বাড্ডা ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে ছাত্র মো. মারুফ হোসেনকে (১৯) পুলিশ গুলি করে হত্যার অভিযোগে তার বাবা মোহাম্মদ ইদ্রিস শেখ হাসিনাসহ ২৮ জনকে আসামি করে অভিযোগ দায়ের করেন।
১৯ জুলাই উত্তরা আব্দুল্লাপুর এলাকায় এইচএসসি পরীক্ষার্থী শহীদ ফয়সাল সরকারকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে তার বাবা শফিকুল ইসলাম সরকার শেখ হাসিনাসহ অজ্ঞাত আসামি করে অভিযোগ দায়ের করেন।
১৯ জুলাই মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বর এলাকায় দশম শ্রেণির ছাত্র শহীদ মাহফুজুর রহমানকে (১৫) গুলি করে হত্যার অভিযোগে তার বাবা আব্দুল মান্নান শেখ হাসিনাসহ ৭৬ জনকে আসামি করে অভিযোগ দায়ের করেন।
গত ৫ আগস্ট উত্তরা (আজমপুর ফুটওভার ব্রিজের পূর্ব পাশে) সপ্তম শ্রেণির ছাত্র শহীদ সামিউ আমান নুরকে (১৩) গুলি করে হত্যার অভিযোগে তার বাবা মোহাম্মদ আমানুল্লাহ শেখ হাসিনাসহ ৫৮ জনকে আসামি করে অভিযোগ দায়ের করেন।
মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন, ১৯৭৩ এর ৩(২) ও ৪(১) (২) ধারা অনুযায়ী গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ঢালাও হত্যা মামলা অন্তর্বর্তী সরকারের স্বাধীন সাংবাদিকতার প্রতিশ্রুতির লঙ্ঘন’
দিনাজপুরে শেখ হাসিনাসহ ৫৯ জনের নামে মামলা
২৩০ দিন আগে
ফারহান হত্যার ঘটনায় হাসিনাসহ ৩৪ জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে ঘিরে গত ১৮ জুলাই পুলিশের গুলিতে রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের ছাত্র ফারহান ফাইয়াজ হত্যার ঘটনায় শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের, আনিসুল হকসহ ৩৪ জনের বিরুদ্ধে হত্যা ও গণহত্যার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) ফারহানের বাবা শহিদুল ইসলাম ভুঁইয়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় এ অভিযোগ দাখিল করেন।
তদন্ত সংস্থার উপপরিচালক (প্রশাসন) আতাউর রহমান বলেন, অভিযোগটি প্রসিকিউশনে জমা দেওয়া হয়েছে। পরে আমাদের কাছে আসবে।
আরও পড়ুন: সিলেটে শেখ হাসিনাসহ ৯১ জনের নামে হত্যা মামলা
মামলার অন্য আসামিরা হলো- সাবেক মেয়র ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস, সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুবলীগের সভাপতি শেখ ফজলে শামস পরশ, ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ওয়ালী আসিফ ইনান, পুলিশ কর্মকর্তা বিপ্লব কুমারসহ ৩৪ জন।
তাদের বিরুদ্ধে হত্যা ও গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযোগ দাখিলকালে ফারহানের বাবা-মা ও বোন সায়মা ইসলাম ফারিন উপস্থিত ছিলেন।
নিহতের বোন সায়মা ইসলাম ফারিন বলেন, ভাই আমাদের ছেড়ে চলে যাওয়ার পর আমি আর সাধারণ জীবনযাপনে ফিরতে পারিনি। প্রতিটি ক্ষণে ভাইয়ের স্মৃতি ভেসে ওঠে। ওর জন্য আমার মন সারাক্ষণ কাঁদে।
তিনি আরও বলেন, এখন পর্যন্ত পড়ালেখা শুরু করতে পারিনি। আদালতে এসেছি ভাইয়ের হত্যার যেন বিচার হয়। বিচার যেন ঝুলে না থাকে।
মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন, ১৯৭৩ এর ৩(২) ও ৪(১) (২) ধারা অনুযায়ী গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১৮ জুলাই পুলিশের গুলিতে নিহত হন ফারহান ফাইয়াজ।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর গণহত্যার ঘটনায় এ পর্যন্ত তদন্ত সংস্থায় মোট ১২টি অভিযোগ জমা হয়েছে।
এর মধ্যে ১১টি সাম্প্রতিক সময়ের গণহত্যার ঘটনায় ও একটি ২০১৩ সালে ৫ মে শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশের ঘটনায়।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনা চাইলে বিদেশি আইনজীবী নিয়োগ দিতে পারেন: চিফ প্রসিকিউটর
ফেনীতে ৮ হত্যা মামলায় হাসিনাসহ আসামি ৩০৩৭ জন
২৩৫ দিন আগে
চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু
নব্বইয়ের দশকের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে। দীর্ঘ ২৪ বছর পর রবিবার ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক জাকির হোসেনের আদালতে এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। এদিন সাক্ষ্য দেন মামলার বাদী সোহেল চৌধুরীর ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী।
সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার আসামি ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই ওরফে আব্দুল আজিজসহ ৯ জন। ২০০১ সালের ৩০ অক্টোবর ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।
এ মামলার আসামিরা হলেন- আদনান সিদ্দিকী, ট্রাম্পস ক্লাবের মালিক আফাকুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলাম, ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই ওরফে আব্দুল আজিজ, তারেক সাঈদ মামুন, সেলিম খান, হারুন অর রশীদ ওরফে লেদার লিটন ওরফে বস লিটন, ফারুক আব্বাসী, সানজিদুল ইসলাম ইমন ও আশিষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী।
আজ শুনানি উপলক্ষে কারাগার থেকে মামলার আসামি আশীষ রায় চৌধুরী, সানজিদুল ইসলাম ইমন ও তারিক সাঈদ মামুনকে আদালতে হাজির করা হয়। এছাড়া জামিনে থাকা আসামি ফারুক আব্বাসীও আজ আদালতে হাজির হন।
১৯৯৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর রাজধানীর বনানীতে ট্রাম্পস ক্লাবের নিচে সোহেল চৌধুরীকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তাঁর ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী গুলশান থানায় মামলা করেন।
আরও পড়ুন: অভিনেতা সোহেল চৌধুরী হত্যা: ২৪ বছর পর আসামি গ্রেপ্তার
সোহেল চৌধুরী নিহত হওয়ার পরপরই এ হত্যাকাণ্ডে চলচ্চিত্র প্রযোজক ও ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সম্পৃক্ততার অভিযোগ ওঠে। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, হত্যাকাণ্ডের কয়েক মাস আগে আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে সোহেল চৌধুরীর কথা কাটাকাটি হয়। এর প্রতিশোধ নিতে সোহেল চৌধুরীকে হত্যা করা হয়েছে।
ঘটনার রাতে সোহেল তাঁর বন্ধুদের নিয়ে ট্রাম্পস ক্লাবে ঢোকার চেষ্টা করলে বাধা দেওয়া হয়। রাত আড়াইটার দিকে আবারও তিনি ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেন। তখন সোহেলকে লক্ষ্য করে ইমন, মামুন, লিটন, ফারুক ও আদনান গুলি চালান। আসামিদের মধ্যে আদনান খুনের পরপরই ধরা পড়েছিলেন।
মামলাটির তদন্ত শেষে ১৯৯৯ সালের ৩০ জুলাই গোয়েন্দা পুলিশের সহকারি কমিশনার আবুল কাশেম ব্যাপারী ৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেন। ২০০১ সালের ৩০ অক্টোবর ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। এর দুই বছর পর মামলাটির বিচার দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ঢাকার দুই নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়।
ওই বছরই আসামিদের মধ্যে একজন হাইকোর্টে আপিল করেন। আপিলের পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৩ সাল থেকে দীর্ঘ ১৯ বছর হাইকোর্টের আদেশে মামলাটি স্থগিত ছিল। সর্বশেষ গত ২৭ ফেব্রুয়ারি স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার হলে ফের মামলাটিতে সাক্ষ্যগ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয়।
১৬ বছর আগে ঢাকা মহানগরের পিপি দপ্তর থেকে সোহেল হত্যা মামলার তদন্তে নথিপত্র কেস ডকেট (সিডি) নিয়ে যান পুলিশের তৎকালীন পরিদর্শক ফরিদ উদ্দিন। অনেক খোঁজাখুঁজির পর তাঁর সন্ধান মেলে। তিনি আগেই অবসরে গেছেন। তবে হত্যা মামলার সিডি আজও আদালতে উপস্থাপন করা হয়নি।
আরও পড়ুন: চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা: কারাগারে আশিষ চৌধুরী
৯৭৯ দিন আগে
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের মামলা নিষ্পত্তি করতে হবে ৯০ কার্যদিবসে
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের অভিযোগ সংশ্লিষ্ট মামলার অভিযোগপত্র বিচারিক আদালতে পাওয়ার ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশনা দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। প্রধান বিচারপতির আদেশে বুধবার এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উপরোক্ত বিষয়ে নির্দেশিত হয়ে জানানো যাচ্ছে যে, দেশের সব অধস্তন ফৌজদারী আদালত এবং ট্রাইব্যুনালে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের মামলার অভিযোগপত্র বিচারিক আদালতে প্রাপ্তির ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে আবশ্যিকভাবে মামলা নিষ্পত্তির নির্দেশনা দেয়া হলো। এই সময়সীমার মধ্যে নিষ্পত্তি করতে ব্যর্থ হলে তার কারণ উল্লেখপূর্বক ব্যাখ্যা সুপ্রিম কোর্টে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হলো।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে: প্রধানমন্ত্রী
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি জোরদারে কাজ করুন: রাষ্ট্রপতি
১২৪৯ দিন আগে
ঢাবি’র দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে গবেষণায় চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ সত্য নয়
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি’র) দুই শিক্ষক সামিয়া রহমান ও সৈয়দ মাহফুজুল হক মারজানের গবেষণা প্রবন্ধকে দুর্বল ও মানহীন বলে অভিহিত করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুসন্ধান ট্রাইব্যুনাল। তবে প্রবন্ধে দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে চৌর্যবৃত্তির যে অভিযোগ আনা হয়েছিল তার সত্যতা পাওয়া যায়নি বলেও জানিয়েছে ট্রাইব্যুনাল।
এ প্রসঙ্গে ট্রাইব্যুনাল বলেছে, ‘লেখকদ্বয় অভিযুক্ত প্রবন্ধটিতে প্রতি পাতায় ফুট নোট উল্লেখ করেনি। কিন্তু প্রতি প্যারায় উদ্বৃতির পূর্বে মিশেল ফুকো ও এডওয়ার্ড সাইদের নাম উল্লেখ করেছেন। এছাড়া প্রবন্ধটির শেষেও রেফারেন্সে মিশেল ফুকো ও এডওয়ার্ড সাইদের রেফারেন্স দিয়েছেন। প্রবন্ধের কোথাও মিশেল ফুকো ও এডওয়ার্ড সাইদের কোন উদ্বৃতিকে লেখকদ্বয় নিজের উদ্বৃতি বলে দাবি করেননি তাই তাদের কার্যক্রমকে সরাসরি চৌর্যবৃত্তির অভিযোগে অভিযুক্ত করা যায় না।’
এছাড়া ওই দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে গঠিত তদন্ত কমিটি তদন্তের নামে যে সময়ক্ষেপণ করেছে সেটাও তাদের রিপোর্টে তুলে ধরেছে ট্রাইব্যুনাল।
ট্রাইব্যুনালের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০১৭ সালে দুই শিক্ষকের প্রবন্ধ নিয়ে অভিযোগ উত্থাপিত হয়। তদন্ত শেষ হয় ২০১৯ সালে এবং ট্রাইবুনাল গঠিত হয় ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে। এতো দীর্ঘমেয়াদী তদন্তের ফলে এ বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্নভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করার সুযোগ পেয়েছে। একইভাবে অভিযুক্ত শিক্ষকদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিডিয়া ট্রায়াল হয়েছে যা কখনো ন্যায় বিচারের জন্য কাম্য নয়। এত দীর্ঘসূত্রিতা মূলত ন্যায়বিচারকে পরাভূত করেছে এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের প্রতি ন্যায় বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রেও বাঁধার সৃষ্টি হয়েছে।
আরও পড়ুন: সামিয়া রহমানের পদাবনতির সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ নয়: হাইকোর্ট
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্লাহর নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের ট্রাইব্যুালের প্রতিবেদনে এসব পর্যালোচনা তুলে ধরা হয়েছে। এই প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই দুই শিক্ষকের পদাবনতির সিদ্ধান্ত জানায় ঢাবি’র সিন্ডিকেট। যার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন সামিয়া রহমান। ওই রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ৫ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট এ সংক্রান্ত যাবতীয় নথি দাখিল করতে ঢাবি কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়া হয়। সে অনুযায়ী বৃহস্পতিবার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের বেঞ্চে ট্রাইব্যুনালের এই প্রতিবেদন দাখিল করে ঢাবি কর্তৃপক্ষ।
২০১৬ সালের ডিসেম্বরে সামিয়া রহমান ও মারজানের যৌথভাবে লেখা 'এ নিউ ডাইমেনশন অব কলোনিয়ালিজম অ্যান্ড পপ কালচার: এ কেস স্ট্যাডি অব দ্য কালচারাল ইমপেরিয়ালিজম' শিরোনামের আট পৃষ্ঠার একটি গবেষণা প্রবন্ধ বিশ্ববিদ্যালয়ের 'সোশ্যাল সায়েন্স রিভিউ' জার্নালে প্রকাশিত হয়। এটি ১৯৮২ সালের শিকাগো ইউনিভার্সিটির জার্নাল 'ক্রিটিক্যাল ইনকোয়ারি'তে প্রকাশিত ফরাসি দার্শনিক মিশেল ফুকোর 'দ্য সাবজেক্ট অ্যান্ড পাওয়ার' নামের একটি নিবন্ধ থেকে প্রায় পাঁচ পৃষ্ঠা হুবহু নকল বলে অভিযোগ ওঠে। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে এক লিখিত অভিযোগে মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে এই চুরির কথা জানিয়েছিল ইউনিভার্সিটি অব শিকাগো প্রেস।
আরও পড়ুন: ঢাবিতে সশরীরে ক্লাস-পরীক্ষা শুরু
শুধু মিশেল ফুকোরই নয়, বুদ্ধিজীবী এডওয়ার্ড সাঈদের 'কালচার অ্যান্ড ইমপেরিয়ালিজম' গ্রন্থের পাতার পর পাতাও সামিয়া ও মারজান হুবহু নকল করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক নাসরিন আহমেদকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট। দীর্ঘদিন তদন্ত শেষে গত বছর ওই কমিটি প্রতিবেদন জমা দেয়। ওই প্রতিবেদনে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় গত ২৯ অক্টোবর তাদের একাডেমিক অপরাধের শাস্তির সুপারিশ করতে আইন অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন ও সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক মো. রহমত উল্লাহকে আহবায়ক করে একটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। ট্রাইব্যুনাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে শাস্তির বিষয়ে সুপারিশ জমা দিলে গত ২৮ জানুয়ারি সিন্ডিকেটের সভায় পদাবনতির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এই সুপারিশের পরই শিক্ষক সামিয়া রহমানকে সহযোগী অধ্যাপক থেকে এক ধাপ নামিয়ে সহকারী অধ্যাপক করে দেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট এবং প্রভাষক সৈয়দ মাহফুজুল হক মারজানকে শিক্ষা ছুটি শেষে চাকরিতে যোগদানের পর দুই বছর একই পদে রাখার নির্দেশ দেয়া হয়। পরে এই সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে সামিয়া রহমান হাইকোর্টে রিট করেন। এই রিটের প্রাথমিক শুনানি করে গত ৫ সেপ্টেম্বর সামিয়া রহমানকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় পদাবনতি দেয়ার সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। চার সপ্তাহের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিসহ সংশ্লিষ্টদের এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়। একইসঙ্গে হাইকোর্ট সামিয়া রহমান সংক্রান্ত সব নথিও তলব করেন।
আরও পড়ুন: ঢাবিতে ‘আলী রীয়াজ স্নাতকোত্তর গবেষণা পুরস্কার ট্রাস্ট ফান্ড’ গঠন
সামিয়া রহমানের আইনজীবী ব্যারিস্টার হাসান এম এস আজিম বলেন, তলবের পরিপ্রেক্ষিতে সামিয়া রহমান সংক্রান্ত সব নথি ও অন্যান্য প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে। আদালত আগামী রবিবার শুনানির দিন ঠিক করেছেন।
১২৯০ দিন আগে