ত্রিপুরার ডুম্বুর বাঁধ
বাংলাদেশে বন্যার জন্য ত্রিপুরার ডুম্বুর বাঁধ দায়ী নয়: নয়াদিল্লি
বাংলাদেশের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত। তবে বন্যার কারণ হিসেবে বাংলাদেশে যা বলা হচ্ছে তা তথ্যগতভাবে সঠিক নয় বলে দাবি দেশটির।
বৃহস্পতিবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘আমরা দেখছি ত্রিপুরার গোমতী নদীর উজানে ডুম্বুর বাঁধ খুলে দেওয়ায় বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলের জেলাগুলোতে বর্তমান বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করা হচ্ছে। এটি তথ্যগতভাবে সঠিক নয়।’
তারা আরও জানায়, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যবর্তী অভিন্ন নদীগুলোতে হওয়া বন্যা দুই দেশের অভিন্ন সমস্যা যা জনগণের দুর্ভোগের কারণ এবং এর সমাধানে পারস্পরিক সহযোগিতা প্রয়োজন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত গোমতী নদীর নিকটবর্তী এলাকায় গত কয়েকদিন ধরে বছরের সবচেয়ে ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। বাংলাদেশে বন্যা মূলত বাঁধের নিচের দিকের এই বড় জলাভূমির পানির কারণে হয়েছে।
যেহেতু দুটি দেশের মধ্যে ৫৪টি অভিন্ন আন্তঃসীমান্ত নদী রয়েছে, তাই নদীর পানি সহযোগিতা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ বলে মনে করে ভারত।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, 'আমরা দ্বিপক্ষীয় পরামর্শ ও প্রযুক্তিগত আলোচনার মাধ্যমে পানিসম্পদ ও নদীর পানি ব্যবস্থাপনার সমস্যা ও পারস্পরিক উদ্বেগের সমাধান করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
ডুম্বুর বাঁধ বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত থেকে বেশ দূরে- বাংলাদেশ থেকে ১২০ কিলোমিটার উজানে অবস্থিত। এটি একটি কম উচ্চতার (প্রায় ৩০ মিটার) বাঁধ যা এক গ্রিডে সরবরাহের বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। বাংলাদেশও ত্রিপুরা থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ নিয়ে থাকে।
প্রায় ১২০ কিলোমিটার নদীর গতিপথ বরাবর অমরপুর, সোনামুড়া এবং সোনামুড়া ২ এ ভারতের তিনটি জলস্তর পর্যবেক্ষণ ক্ষেত্র রয়েছে।
গত ২১ আগস্ট থেকে পুরো ত্রিপুরা ও বাংলাদেশের আশপাশের জেলাগুলোতে ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, পানির পরিমাণ বেড়ে যায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে পানি চলে গিয়েছে।
অমরপুর স্টেশনটি দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের একটি অংশ যেখানে বাংলাদেশের বন্যা সঠিক পরিস্থিতি জানানো হচ্ছে। ২১ আগস্ট বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টির পর থেকেই তথ্য দেওয়া হচ্ছে মাঝে কিছু সময় বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে তথ্য দেওয়া ব্যাহত হয়েছিল।
মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সময়ও জরুরি ভিত্তিতে তথ্য পাঠাতে অন্যান্য উপায়ে যোগাযোগ বজায় রাখার চেষ্টা করেছি আমরা।’
এদিকে বৃহস্পতিবার বিকালে পূর্বনির্ধারিত সূচি অনুযায়ী প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মার সাক্ষাতের কথা রয়েছে।
সৌজন্য সাক্ষাৎকালে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
৩ মাস আগে