বন্যাদুর্গত এলাকা
গবাদিপশুর জন্য ত্রাণ নিয়ে বন্যাদুর্গত এলাকায় বাকৃবি শিক্ষার্থীরা
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া দুই জেলা ফেনী ও মৌলভীবাজারে গবাদিপশুর জন্য ত্রাণ হিসেবে প্রায় ৬ টন পশুখাদ্য, চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় ওষুধের ব্যবস্থা করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ভেটেরিনারি অনুষদ ও পশুপালন অনুষদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
শনিবার (৩১ আগস্ট) বাকৃবির ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থী ও গবাদিপশুর ত্রাণবিষয়ক সমন্বয়ক রাকিব রনি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এসময় রাকিব রনি বলেন, আমরা মোট ৬ টন পশুখাদ্য সংগ্রহ করছি। এর মধ্যে শিক্ষার্থীদের একটি দল শুক্রবার (৩০ আগস্ট) আড়াই টন পশুখাদ্য নিয়ে মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় গিয়েছে। এছাড়া গত ২৮ আগস্ট শিক্ষার্থীদের আরেকটি দল ৩ টন পশুখাদ্য নিয়ে ফেনীর ফুলগাজী, পরশুরাম, ছাগলনাইয়ায় গিয়েছে। এছাড়া বাকি আধা টন পশুখাদ্য দেশের অন্যান্য বন্যাকবলিত অঞ্চলে দেওয়া হবে।
গবাদিপশুর ত্রাণবিষয়ক সমন্বয়ক আরও বলেন, বাকৃবির শিক্ষার্থী হিসেবে শুধু মানুষ নয়, আমরা প্রাণীদের পাশেও দাঁড়াব। সেক্ষেত্রে আমরা একটি ব্যতিক্রমধর্মী আয়োজন করেছি।
আরও পড়ুন: দিনব্যাপী আয়োজনে বাকৃবির ৬৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত
জরুরি ভিত্তিতে বন্যাকবলিত এলাকায় ৪টি সেবা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা
১. অসুস্থ প্রাণীগুলোকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া।
২. যেসব প্রাণীর ডায়রিয়া, ইলেক্ট্রোলাইটের ঘাটতি, পুষ্টি সমস্যা তাদের রুচিবর্ধক এবং ভিটামিন ও মিনারেল সাপ্লাই দেওয়া।
৩. পশুখাদ্য সরবরাহ করা।
৪. পরে খামারিদের কোনো সমস্যা হলে টেলিমেডিসিন সেবা দেওয়া।
ত্রাণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো সম্পর্কে জানা যায়, সংগৃহীত পশুখাদ্যের সবচেয়ে বড় যোগানদাতা সিপি বাংলাদেশ।
ইনোভা, মিনার এগ্রো ও লোকাল কিছু পেট কোম্পানি পশুখাদ্য পাঠিয়েছে। স্কয়ার, একমি, এসিআই, এসকেএফ ও বায়োল্যাব ওষুধের যোগান দিয়েছে।
টেলিমেডিসিন সেবা সম্পর্কে ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থী মাশশারাত মালিহা বলেন, খামারিদের ভেটেরিনারিয়ানদের নাম্বার দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে গবাদি পশুগুলো যদি কোনো সমস্যার সম্মুখীন হয় তবে ফোনে যোগাযোগের মাধ্যমে খামারিরা আমাদের কাছ থেকে পরামর্শ নিতে পারবে।
ভেটেরিনারি অনুষদের মাইক্রোবায়োলজি এন্ড হাইজিন বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুবুল প্রতীক সিদ্দিক বলেন, দেশের বেশ কয়েকটি জেলা বন্যাকবলিত। সেখানে মানুষের পাশাপাশি গবাদিপশুগুলোও দুর্বিষহ জীবন যাপন করছে। প্রচুর পোলট্রি ফার্ম, এ্যানিমেল ফার্ম ধ্বংস হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিসেবে তারা সমাজের সেবা করার সুযোগ পেয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকেও সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
ফেনীতে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ফেনীর ৩টি বন্যা দুর্গত এলাকা ফুলগাজী, পশুরাম ও ছাগলনাইয়া উপজেলাযর প্রায় ৯০০ খামারিদের মাঝে পশুখাদ্য, ওষুধ ও কয়েকটি খামার পরিদর্শন ও বিভিন্ন টেকনিকেল পরামর্শ দেওয় হয়েছে।
আরও পড়ুন: প্রথম নারী পরিচালক পেল বাকৃবির আইকিউএসি
উক্ত এলাকাগুলোর বেশিরভাগ জায়গায় মানুষের খাদ্যের অপর্যাপ্ত না হলেও, পশুখাদ্যের অপর্যাপ্ততার বিষয়টি নিশ্চিত করেন উপস্থিত খামারিরা ও ফেনীর জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর।
ফেনী জেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. মোজাম্মেল হক ইউএনবিকে বলেন, বাকৃবির শিক্ষার্থীরা ফেনী জেলার বন্যাদুর্গত ৩টি উপজেলায় প্রাণীদের পশুখাদ্য, চিকিৎসা ও ওষুধ সেবা প্রদান করেছে। শিক্ষার্থীদের এই কার্যক্রমে ওই এলাকার খামারিরা ব্যাপকভাবে উপকৃত হয়েছে।
৩ মাস আগে