রাফিনিয়া
নাটকীয় বেনফিকা-বার্সা ম্যাচে হলো যেসব রেকর্ড
ফুটবলপাড়ায় গতরাতের পাগলাটে ম্যাচের রেশ এখনও পুরোপুরি কাটেনি। বার্সেলোনা সমর্থকদের অনেকে এখনও স্বপ্নের মধ্যে ডুবে আছেন। এর মাঝে চলুন দেখে নেই, চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ওই ম্যাচটি কতগুলো রেকর্ডে নাম তুলল।
বেনফিকাকে ৫-৪ গোলে হারানোর রাতে জোড়া গোল করেন রাফিনিয়া। এর মাধ্যমে চলতি মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে তার গোলসংখ্যা বেড়ে হলো ৮টি। এর ফলে চলতি মৌসুমে সর্বোচ্চ গোলদাতাদের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে বসেছেন তিনি। ৯ গোল করে তালিকার শীর্ষে তারই সতীর্থ রবের্ট লেভানডোভস্কি। তিনিও ম্যাচটিতে পেয়েছেন জোড়া গোলের দেখা।
গোল করায় দ্বিতীয় স্থানে থাকলেও গোলে অবদান রাখার তালিকায় সবাইকে ছাড়িয়ে গেছেন ব্রাজিলীয় ফরোয়ার্ড। আট গোলের পাশাপাশি তিনটি অ্যাসিস্টের কল্যাণে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের চলতি আসরে মোট ১১ গোলে অবদান রেখেছেন তিনি।
রাফিনিয়ার প্রথম গোলটি ছিল ডি-বক্সের বাইরে থেকে হেডারে করা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসের মাত্র তৃতীয় গোল। সেটিও দেখা গেল এক যুগ পর। সবশেষ ২০০৩ সালে আয়াক্সের বিপক্ষে বক্সের বাইরে থেকে হেডারে লক্ষ্যভেদ করেন ক্লাব ব্রুজের নরওয়ে স্ট্রাইকার রুনে লাঙ্গে।
আরও পড়ুন: ভাগ্যের পালাবদলের রাতে ৯ গোলের থ্রিলারে শেষ হাসি বার্সেলোনার
গতরাতে পেনাল্টি থেকে জোড়া গোল আদায় করে নতুন উচ্চতায় উঠেছেন রবের্ট লেভানডোভস্কি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে পেনাল্টি থেকে গোল করায় লিওনেল মেসিকে (১৮) ছাড়িয়ে ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর রেকর্ড স্পর্শ করেছেন এই পোলিশ। স্পট কিক থেকে গোল করার রেকর্ডে ১৯ গোল নিয়ে রোনালদোর সঙ্গে এখন যৌথভাবে শীর্ষে রয়েছেন লেভা। সামনের ম্যাচগুলোতে পেনাল্টি গোলে রূপান্তর করতে পারলেই সবাইকে ছাড়িয়ে যাবেন তিনি।
ইউরোপীয় এই প্রতিযোগিতার নাম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ করার পর থেকে মাত্র পঞ্চম খেলোয়াড় হিসেবে হ্যাটট্রিকের দেখা পেয়েও ম্যাচ হেরেছেন ভাঙ্গেলিস পাভলিদিস।
২০০৩ সালে সর্বপ্রথম এমন দুর্ভাগ্যজনক কীর্তি গড়েন ব্রাজিল কিংকদন্তি রোনালদো নাজারিও। সে বছর ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে হ্যাটট্রিক করেও রিয়াল মাদ্রিদকে ম্যাচ জেতাতে ব্যর্থ হন তিনি; ৪-৩ গোলে ম্যাচটিতে জয় পায় ইউনাইটেড। এরপর ২০১০ সালে সান সিরোতে ইন্টার মিলানের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেও টটেনহ্যামকে জেতাতে পারেননি গ্যারেথ বেল; ওই ম্যচটিও ৪-৩ গোলে শেষ হয়। ২০২০ সালে তুরস্কের মিডফিল্ডার ইরফান কাভেচি ইস্তানবুল বাসাকসেহিরের জার্সিতে হ্যাটট্রিক করেন, তবুও লাইপসিগের কাছে ৪-৩ গোলে হারে তার দল। পরের বছর কপাল পোড়ে ক্রিস্তোফার এনকুঙ্কুর। ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে ক্লাব ক্যারিয়ারে নিজের প্রথম হ্যাটট্রিক পেলেও লাইপসিগ ম্যাচটি হারে ৬-৩ ব্যবধানে। এ মৌসুমে সেইসব অভাগাদের দলে নাম লেখালেন পাভলিদিস।
ম্যাচ হারলেও গতরাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ইতিহাসের তৃতীয় দ্রুততম হ্যাটট্রিক (৩০ মিনিট) করেছেন এই গ্রিক ফরোয়ার্ড। এই তালিকায়ও শীর্ষে রয়েছেন লেভানডোভস্কি। ২০২২ সালে রেডবুল জালৎসবুর্গের বিপক্ষে ৭-১ গোলে বায়ার্নের জয়ের ম্যাচে মাত্র ২৩ মিনিটে হ্যাটট্রিক করেন এই স্ট্রাইকার। এছাড়া ১৯৯৬ সালে এসি মিলানের হয়ে ২৪ মিনিটে নরওয়ের ক্লাব রোজেনবর্গের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করে তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন ইতালিয়ান স্ট্রাইকার মার্কো সিমোনে।
আরও পড়ুন: ধ্রুপদী ফুটবলের রাতে গৌরবময় সময়ে ফেরার ইঙ্গিত বার্সেলোনার
চার গোল হজম করেও ইউরোপের এই এলিট লিগের ইতিহাসের মাত্র দ্বিতীয় দল হিসেবে গতরাতে ম্যাচ জয়ের রেকর্ড গড়েছে বার্সেলোনা। এর আগে ২০০৪ সালের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্বের ম্যাচে টটেনহ্যামকে একই স্কোরলাইনে হারিয়ে রেকর্ড গড়ে আর্সেনাল।
তবে দুই গোলে পিছিয়ে পড়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এই প্রথম কোনো ম্যাচ জিতল বার্সেলোনা।
এছাড়া চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ম্যাচ জয়ের ক্ষেত্রে (অন্তত ১০ ম্যাচ) এখন সবার উপরে হান্সি ফ্লিক। বায়ার্ন মিউনিখ ও বার্সেলোনা মিলিয়ে ২৪ ম্যাচ খেলেছে তার দল, যার ২১টিই জিতেছেন তিনি; এছাড়া ড্র করেছেন একটি ও হেরেছেন মাত্র দুটি ম্যাচ। সব মিলিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এখন পর্যন্ত ৮৮ শতাংশ ম্যাচ জয়ের রেকর্ড এই জার্মান কোচের।
৩ সপ্তাহ আগে
ভাগ্যের পালাবদলের রাতে ৯ গোলের থ্রিলারে শেষ হাসি বার্সেলোনার
খ্যাতিমান কোনো নাট্যকার বা সিনেমার গল্পলেখককেও যেন হারিয়ে দিল বেনফিকা-বার্সেলোনা ম্যাচ। একের পর এক দৃশ্যপট পরিবর্তন, বারবার ভাগ্যদেবীর রসিকতা, ২ গোলে পিছিয়ে পড়ার পর জানুয়ারির শীতে বৃষ্টির হানা, ব্যবধান কমিয়ে ফের ২ গোলে পিছিয়ে পড়া এবং একেবারে শেষ মুহূর্তে হারতে গিয়েও অকল্পনীয়ভাবে জিতে যাওয়া— বিশ্বের দুর্দান্ত সব থ্রিলার গল্পের চেয়ে কোনো অংশেই কম কিছু ছিল না। এসবের জেরে পুরোটা সময় আনন্দে টইটম্বুর থেকে ম্যাচশেষে গোমড়া মুখে মাঠ ছাড়তে হয়েছে বেনফিকার সমর্থকদের। ‘অবিচার করা হয়েছে’ ভেবে রাতের ঘুম তাদের হবে কি না, বলা মুশকিল।
পর্তুগালের দা লুস স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার রাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সপ্তম রাউন্ডের ম্যাচে স্বাগতিকদের ৫-৪ গোলে হারিয়েছে বার্সেলোনা।
এর ফলে সাত ম্যাচে ৬ জয়ে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই টেবিলের চূড়ায় থাকা লিভারপুলের সঙ্গে শেষ ষোলো নিশ্চিত করেছে হান্সি ফ্লিকের শিষ্যরা।
ভানগেলিস পাভলিদিসের প্রথমার্ধের হ্যাটট্রিকের পর দ্বিতীয়ার্ধে রোনালদ আরাউহোর আত্মঘাতী গোল, সব মিলিয়ে চার গোল করে বেনফিকা। অপরদিকে, দুই অর্ধে পেনাল্টি থেকে দুই গোল করেন রবের্ট লেভানডোভস্কি এবং এরিক গার্সিয়ার একটি ও রাফিনিয়ার জোড়া গোলে জয় নিশ্চিত করে বার্সেলোনা।
এদিন খেলা শুরুর পরপরই বেনফিকার দুর্দান্ত একটি আক্রমণে গোল খেয়ে বসে বার্সেলোনা। দ্বিতীয় মিনিটে নিজেদের অর্ধ থেকে সতীর্থের কাছ থেকে আসা উড়ন্ত পাস ধরে বাঁ পাশ দিয়ে এগিয়ে গিয়ে প্রতিপক্ষের বক্সের মধ্যে ক্রস দেন আলভারো কারেরাস। অসাধারণ ভলিতে প্রথম স্পর্শেই তা থেকে সমর্থকদের উল্লাসের উপলক্ষ এনে দেন পাভলিদিস।
আরও পড়ুন: দ্বিতীয়ার্ধের চরম নাটকীয়তা শেষে ডর্টমুন্ড বধ বার্সেলোনার
গোল খাওয়ার পর আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলা শুরু করে বার্সেলোনা, অপরদিকে বেনফিকাও সফরকারীদের ছেড়ে কথা বলার মনোভাব দেখায় না। ফলে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে উত্তেজনার পারদ চড়ে খেলায়।
এরই ধারাবাহিকতায় ম্যাচের ত্রয়োদশ মিনিটে পেনাল্টি থেকে পাওয়া গোলে সমতায় ফেরে কাতালান জায়ান্টরা। বেনফিকার বক্সের মধ্যে বল নিয়ে ঢোকার পর আলেহান্দ্রো বালদের শট প্রতিহত করতে গিয়ে তার পায়ে পাড়া দিয়ে বসেন দলটির পর্তুগিজ ডিফেন্ডার তমাস আরাউহো।
শুরুতে বার্সেলোনার খেলোয়াড়রা আবেদন করেনি, রেফারিও গুরুত্ব দেনটি বিষয়টিতে। তবে কিছুক্ষণ পর ভিএআর বক্স থেকে রেফারিকে রিভিউ দেখার কথা জানানো হয়। এরপর টাচলাইন মনিটর থেকে রিভিউ দেখে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি, আর নিখুঁত স্পট কিকে দলকে সমতায় ফেরান লেভানডোভস্কি।
৩ সপ্তাহ আগে
বেতিসকেও ৫ গোল দিয়ে কোপা দেল রের কোয়ার্টারে বার্সেলোনা
স্প্যানিশ সুপার কাপের ফাইনালে গত রবিবার রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে যেখানে শেষ করেছিল বার্সেলোনা, কোপা দেল রের ম্যাচে বেতিসের বিপক্ষে যেন সেখান থেকেই শুরু করল তারা। আর কাতালানদের পারফরম্যান্সের আগুনে রিয়ালের মতো পুড়ে ছাই হলো মানুয়েল পেল্লেগ্রিনির শিষ্যরা।
বার্সেলোনার অলিম্পিক স্টেডিয়ামে বুধবার রাতে কোপা দেল রের শেষ ষোলোর ম্যাচে রিয়াল বেতিসকে ৫-১ গোলে বিধ্বস্ত করেছে হান্সি ফ্লিকের শিষ্যরা। ফলে টানা দুই ম্যাচে প্রতিপক্ষের জালে ৫ গোল পাঠাল দলটি।
এদিন বার্সেলোনার হয়ে গোলের দেখা পেয়েছেন পৃথক পাঁচ ফুটবলার— গাভি, জুল কুন্দে, রাফিনিয়া, ফেররান তোরেস ও লামিন ইয়ামাল। অন্যদিকে, পেনাল্টি থেকে বেতিসের একমাত্র গোলটি করেন বার্সা থেকে ধারে খেলা ব্রাজিলীয় ফরোয়ার্ড ভিতর রকে।
সুপার কাপ এল ক্লাসিকোর পর এদিন আরও দুর্দান্ত পারফরম্যান্স উপহার দিয়েছেন লামিন ইয়ামাল। ম্যাচসেরার পুরস্কারও তাই উঠেছে তার হাতেই।
আরও পড়ুন: রিয়ালকে ৫ গোল দিয়ে সুপার কাপ জিতল ১০ জনের বার্সেলোনা
গাভির গোলে ম্যাচের শুরুতেই এদিন এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। তৃতীয় মিনিটে মাঝমাঠ থেকে দানি অলমোকে দারুণ একটি পাস বাড়ান পেদ্রি, বক্সের সামান্য বাইরে থেকে ভেতরে ঢুকতে থাকা গাভিকে ডিফেন্সচেরা পাস দেন সম্প্রতি নিবন্ধন জটিলতায় পড়া এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার, আর তা থেকে গোল করে দলকে লিড এনে দেন ২০ বছর বয়সী গাভি।
তিন মিডফিল্ডারের নৈপুণ্যে গোল পেয়ে আরও আক্রমণাত্মক খেলতে থাকে বার্সেলোনা। অষ্টম মিনিটে জুল কুন্দের বক্সের মধ্যে পাঠানো বল ধরে পেনাল্টি স্পটের কাছ থেকে শট নেন অলমো। তবে অসাধারণ দক্ষতায় ঝাঁপিয়ে পড়ে তা ঠেকিয়ে দেন বেতিস গোলরক্ষক ফ্রান ভিয়েইতেস।
আক্রমণের মালা গাঁথার একপর্যায়ে অলমোর আরও একটি শট গোলপোস্টে লেগে ফিরে আসে। ২০তম মিনিটে নেওয়া ওই শটটি ফিরে এলে তা পেয়ে যান রাফিনিয়া, কিন্তু তিনিও লক্ষ্যভেদ করতে ব্যর্থ হন।
তবে এর সাত মিনিট পর দুর্দান্ত বার্সেলোনাকে আর আটকে রাখতে পারেনি বেতিসের ডিফেন্ডাররা। এবারও গোলের কারিগর সেই পেদ্রি।
মাঝমাঠের কিছুটা সামনে থেকে এগোতে থাকা কুন্দের উদ্দেশে পাস দেন পেদ্রি, তবে তা না ধরে ডামি দিয়ে দ্রুত বক্সে ঢুকে পড়েন এই উইংব্যাক। আর পেছনে থাকা লামিন ইয়ামাল প্রথম ছোঁয়াতেই দারুণ এক ফ্লিকে কুন্দের কাছে পাঠিয়ে দেন বল। তা নামিয়ে ঠিকানা খুঁজে নেন ২৬ বছর বয়সী ফরাসি ডিফেন্ডার।
এরপর প্রথমার্ধের যোগ করা চার মিনিটের প্রথম মিনিটে ভালো একটি সুযোগ তৈরি করে বেতিস। তবে সেই শটটি দিক পরিবর্তন করলেও বিপরীত দিকে পড়তে পড়তে হাত উঁচু করে কোনোরকমে তা ফিরিয়ে দেন বার্সেলোনা গোলরক্ষক ইনিয়াকি পেনিয়া।
শেষ মিনিটে লামিন-কুন্দে যুগলবন্দীতে আরও একটি গোল পায় বার্সেলোনা, তবে ভিএআর রিভিউতে অফসাইড ধরা পড়লে ব্যবধান ২-০ রেখেই বিরতিতে যায় সদ্য স্প্যানিশ সুপার কাপ চ্যাম্পিয়নরা।
৪ সপ্তাহ আগে
ধ্রুপদী ফুটবলের রাতে গৌরবময় সময়ে ফেরার ইঙ্গিত বার্সেলোনার
হাজারো সংকটের মাঝেও কীভাবে লক্ষ্যে অটল থেকে, মাথা ঠান্ডা রেখে জয় ছিনিয়ে আনতে হয়, তা-ই যেন দেখিয়ে চলেছেন হান্সি ফ্লিক। একের পর এক খেলোয়াড়ের চোট এবং ক্লাবের আর্থিক সংকটে নতুন খেলোয়াড় না পেয়ে একাডেমি লা মাসিয়া থেকে যুবাদের মূল দলে এনে জোড়াতালি দিয়ে শিষ্যদের মাঠে নামিয়ে চলেছেন এই জার্মান কোচ। অথচ এমনই তার দলের পারফরম্যান্স যা কোটি বার্সাভক্তকে ভুলিয়ে দেয়— দলটি ঠিক কতটা সংকটের মধ্যে সময় পার করছে। আর তেমনই এক স্মরণীয় ম্যাচ তিনি উপহার দিলেন রবিবার রাতেও।
সবশেষ কয়েক ম্যাচ উত্থান-পতনের মধ্যে দিয়ে আসার মাঝে দানি অলমো ও পাউ ভিক্তরের নিবন্ধন নিয়ে জটিলতা, রোনালদ আরাউহোর দল ছাড়ার গুঞ্জন— সব মিলিয়ে ঝটিকাসংকুল সময়ের মাঝে কে ভেবেছিল, এই বার্সেলোনা সম্প্রতি ছন্দে ফিরতে শুরু করা রিয়াল মাদ্রিদকে ৫-২ গোলে বিধ্বস্ত করবে? তাও আবার শেষের অন্তত ৪০ মিনিট দশজন নিয়ে খেলে? অথচ মাঠের খেলায় সেটিই বাস্তবতা হয়ে ধরা দিল। আর হাজারো সমস্যার মাঝে লাল-নীল জার্সির মায়ায় পড়া বিশ্বব্যাপী কোটি কুলেরের হৃদয় বিগলিত করা একটি রাত উপহার দিল দলটি।
পড়তে পড়তে অনেকেরই হয়তো চোখ ভরে উঠবে, কিন্তু মরুর বুকে যে বিজয়গাঁথা বার্সেলোনা রচনা করল, তা কি এসব উপমার তুলনায় কম কিছু?
১ মাস আগে
রিয়ালকে ৫ গোল দিয়ে সুপার কাপ জিতল ১০ জনের বার্সেলোনা
আর্থিক সংকটে পড়ে খেলোয়াড় নিবন্ধন করাতে না পারা নিয়ে সম্প্রতি সমালোচনা আর ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের স্বীকার হলেও রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে ফের জ্বলে উঠল বার্সেলোনা। আর তাতে ম্যাচের শেষের ৩০ মিনিটের বেশি সময় একজন খেলোয়ড় কম নিয়ে খেলেও চির প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিধ্বস্ত করে স্প্যানিশ সুপার কাপের শিরোপা জিতল হান্সি ফ্লিকের শিষ্যরা।
রবিবার (১২ জানুয়ারি) রাতে সৌদি আরবের জেদ্দায় সুপার কাপের ফাইনালে শিরোপাধারী রিয়াল মাদ্রিদকে ৫ গোল দিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনা। অবশ্য জয়ের পথে দুটি গোল হজমও করতে হয়েছে তাদের।
এই হারে সুপার কাপ জয়ের হিসাবে বার্সেলোনাকে এ বছর আর ছোঁয়ার প্রতীক্ষা আরও দীর্ঘ হলো রিয়াল মাদ্রিদের (১৩)। অপরদিকে, জিতে রিয়ালের সঙ্গে ব্যবধান আরও বাড়িয়ে নিল (১৫) ব্লাউগ্রানা খ্যাত দলটি।
এদিন ম্যাচের পঞ্চম মিনিটেই গোল করে রিয়ালকে এগিয়ে নেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। তারপর কোথায় যেন হারিয়ে যায় দলটির সমন্বয়, সেইসঙ্গে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না তাদের রক্ষণভাগও। আর দলীয় প্রচেষ্টা, সতীর্থদের দারুণ বোঝাপড়া আর নির্ভুল ফিনিশিংয়ে একের পর এক গোল করতে থাকে কাতালান জায়ান্টরা।
এরই ধারাবাহিকতায় ম্যাচের ২২তম মিনিটে দলকে সমতায় ফেরান লামিন ইয়ামাল। এরপর ৩৬তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে লেভানডোভস্কির গোলে প্রথমবার এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। তারপর ৩৯ ও ৪৮তম মিনিটে রাফিনিয়ার জোড়া গোল ও প্রথমার্ধের যোগ করা দশম মিনিটে আলেহান্দ্রো বালদের গোলে ব্যাবধান ৫-১ করে ফেলে তারা।
আরও পড়ুন: হেরে বার্সেলোনার রেকর্ড ভাঙার স্বপ্ন ধূলিসাৎ রিয়ালের
দশজনের দলে পরিণত হওয়ার পর ৬০তম মিনিটে একটি গোল পরিশোধ করেন রদ্রিগো। এরপর বার্সেলোনা রক্ষণে মনোযোগ দিলে আর গোল করা হয়ে ওঠে না কোনো দলেরই। ফলে ৫-২ গোলে শেষ হয় ম্যাচ।
এর ফলে সুপার কাপ জয়ের পাশাপাশি চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত দুবারের দেখায় দুবারই বড় ব্যবধানে চির প্রতিদ্বন্দ্বীদের হারাল বার্সেলোনা। গত ২৭ অক্টোবর লা লিগায় সান্তিয়াগো বের্নাবেউতে অনুষ্ঠিত প্রথম এল ক্লাসিকো ৪-০ গোলে হেরেছিল কার্লো আনচেলত্তির শিষ্যরা।
এদিকে, দায়িত্ব নেওয়ার পর বার্সেলোনাকে প্রথম শিরোপা জেতালেন হান্সি ফ্লিক। সেইসঙ্গে দুটি এল ক্লাসিকোতে ডাগআউটে থেকে দুটিই জিতলেন এই জার্মান কোচ।
বার্সেলোনার পরবর্তী ম্যাচ আগামী বুধবার (১৫ জানুয়ারি)। কোপা দেল রের শেষ ষোলোর ওই ম্যাচে রিয়াল বেতিসের বিপক্ষে মাঠে নামবে কাতালানরা। একদিন পর সেল্তা ভিগোকে আতিথ্য দেবে রিয়াল মাদ্রিদ।
১ মাস আগে
দ্বিতীয়ার্ধের চরম নাটকীয়তা শেষে ডর্টমুন্ড বধ বার্সেলোনার
বার্সেলোনা-ডর্টমুন্ড ম্যাচ মানেই যেন সুন্দর ফুটবল, আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ পসরা ও গোলের উচ্ছ্বাসের সমন্বয়ে জমজমাট এক লড়াই। এবারও তার ব্যতিক্রম হলো না। তবে উপভোগ্য ফুটবল উপহার দিয়েও নিয়তি মেনে শেষ পর্যন্ত ব্যথার মালা গলায় পরতে হয়েছে কালো-হলুদ জার্সিধারীদেরই।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে বার্সেলোনা ও ডর্টমুন্ডের মুখোমুখি হওয়া সাম্প্রতিক মৌসুমগুলোতে নিয়মিত ঘটনা হয়ে গেছে। এরই ধারাবাহিকতায় জিগনাল ইদুনা পার্কে স্বাগকিতদের ৩-২ গোলে হারিয়েছে কাতালান জায়ান্টরা।
ম্যাচের নাটক, উত্তেজনা, উল্লাস- সবই হয়েছে দ্বিতীয়ার্ধে। তাই বলে প্রথমার্ধ যে ম্যাড়মেড়ে ছিল, মোটেও তা নয়।
এদিন ম্যাচের তৃতীয় মিনিটেই পরপর দুটি দারুণ সুযোগ পায় বার্সেলোনা। তবে ফিনিশিংয়ের অভাবে সুযোগগুলো মাঠে মারা যায়।
আক্রমণ-প্রতি আক্রমণে ম্যাচ এগিয়ে যাওয়ার মাঝে ত্রয়োদশ মিনিটে ফের আরেকটি সুযোগ তৈরি করে কাতালানরা। পাল্টা আক্রমণে উঠে বিপরীত পাশ ধরে অনেকটা ফাঁকায় এগোতে থাকা রাফিনিয়ার উদ্দেশে পায়ের পাতা দিয়ে বাঁকানো সিগনেচার পাস দেন লামিন ইয়ামাল। তবে সেবারও ফিনিংশের অভাবে সুযোগ হারায় দলটি।
চার মিনিট পর গোল করতে পারতেন মার্সেল জাবিৎসার, তবে সতীর্থের পাসে গতি থাকায় সুবিধা করতে পারেননি ডর্টমুন্ডের এই অস্ট্রিয়ান মিডফিল্ডার।
ম্যাচের শুরুতে বার্সাকে চেপে ধরার চেষ্টা করলেও সময় অতিবাহিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় হান্সি ফ্লিকের শিষ্যরা। আর তটস্থ হয়ে তাদের স্পেস কমিয়ে দিতে এবং সুযোগ পেলেই ক্ষিপ্র গতিতে আক্রমণে ওঠার চেষ্টায় থাকে নুরি সাহিনের শিষ্যরা।
ভুগতে ভুগতে ৪০তম মিনিটের শুরুতে দারুণ একটি আক্রমণে উঠে গোল পেয়েই গিয়েছিল ডর্টমুন্ড, কিন্তু সতীর্থের কাছ থেকে আসা উড়ন্ত ক্রসে মাথা লাগিয়েও ইনিয়াকি পেনিয়াকে পরাস্ত করতে ব্যর্থ হন সেরহু গিরাসি।
প্রথমার্ধে বলের ওপর একক আধিপত্য ধরে রাখলেও আক্রমণে খানিকটা নিষ্প্রভ ছিল বার্সা। ফলে গোলের উদ্দেশ্যে ৮টি শট নিয়ে তার তিনটি লক্ষ্যে রেখেও কাজের কাজ করতে ব্যর্থ হয় তারা।
অপরদিকে, প্রায় পুরোটা সময়জুড়ে রক্ষণ সামলানো ডর্টমুন্ড মাঝেমধ্যে দুয়েকটি সুযোগ তৈরি করলেও বার্সার অফসাইড ফাঁদ কিংবা ডিফেন্ডারদের নৈপুণ্যে বারবারই হতাশ হয়। ফলে স্কোরলাইনে কোনো পরিবর্তন না আনতে পেরেই বিরতিতে যায় দুদল।
২ মাস আগে
হেরে ১২৬তম বছর শুরু বার্সেলোনার
২৪ ঘণ্টাও হয়নি জমকালো আয়োজনে ক্লাব প্রতিষ্ঠার ১২৫তম বার্ষিকী উদযাপন করেছে বার্সেলোনা। এর মধ্যেই পুচকে লাস পালমাসের কাছে হেরে বসেছে তারা।
শনিবার লা লিগার ১৫ রাউন্ডের ম্যাচে ঘরের মাঠে পয়েন্ট টেবিলের তলানির দিকে থাকা লাস পালমাসের কাছে ২-১ গোলে হেরে গেছে হান্সি ফ্লিকের দল।
এর ফলে ১৫ ম্যাচে ১১ জয় ও ১ ড্রয়ে ৩৪ পয়েন্ট নিয়ে আপাতত টেবিলের চূড়ায় থাকলেও শীর্ষস্থান নড়বড়ে হয়ে গেছে বার্সেলোনার। দুই ম্যাচ কম খেলে ৩০ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বর্তমান লা লিগা চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদ। ওই দুই ম্যাচ জিতে ব্লাউগ্রানাদের টপকে শীর্ষস্থান দখল করার দারুণ সুযোগ এসেছে কার্লো আনচেলত্তির শিষ্যদের কাছে।
এই হারের ফলে লা লিগায় সবশেষ তিন ম্যাচ টানা জয়বঞ্চিত রইল বার্সেলোনা। এর মধ্যে মাত্র এক ম্যাচ ড্র করে এক পয়েন্ট অর্জন করেছে তারা। ফলে সবশেষ তিন ম্যাচে তাদের অর্জন কেবল ওই একটি পয়েন্ট।
এদিন প্রথমার্ধে সফরকারীদের ওপর ছড়ি ঘুরিয়েও কাজের কাজ করতে ব্যর্থ হয় বার্সেলোনা। ফলে স্কোরলাইনে কোনো পরিবর্তন আনতে না পেরেই বিরতিতে যায় দুদল। তবে বিরতি থেকে ফিরেই এগিয়ে যায় লাস পালমাস।
ম্যাচের ৪৯তম মিনিটে পাল্টা আক্রমণে উঠে সতীর্থের লং পাস ধরে ডান পাশ দিয়ে বক্সে ঢোকার মুখে কোনাকুনি জোরালো শট নেন সান্দ্রো রামিরেস। বল ঝাঁপিয়ে পড়া ইনিয়াকি পেনিয়ার নাগালের বাইরে দিয়ে গিয়ে জালে জড়িয়ে যায়। ফলে খেলায় আধিপত্য দেখাতে না পারলেও এগিয়ে যায় সফরকারীরা।
পিছিয়ে পড়ার পর প্রতিপক্ষকে আরও চেপে ধরে বার্সেলোনা। এরই ধাবাহিকতায় ম্যাচের ৬১তম মিনিটে স্বাগতিকদের সমতায় ফেরান রাফিনিয়া।
প্রতিপক্ষের বক্সের সামনে বার্সেলোনা বল নিয়ে নাড়াচাড়া করার মাঝে হঠাৎ কিছুক্ষণের জন্য মনোযোগ হারায় লাস পালমাস। এই সুযোগে পেদ্রির কাছ থেকে বল ধরেই বক্সের বেশ বাইরে থেকে বুলেট শটে পোস্টঘেঁষে লক্ষ্যভেদ করেন ২৭ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড।
তবে সমতায় ফিরলেও বার্সার হাই লাইন ডিফেন্স ভেঙে ৬ মিনিট পর ফের এগিয়ে যায় লাস পালমাস। মাঝমাঠ থেকে বার্সার ডিফেন্স লাইনে অপেক্ষা করা ফাবিও সিলভার কাছে চমৎকার একটি উড়ন্ত পাস দেন হাভিয়ের মুনিয়োস। পাস ধরে ক্ষিপ্র গতিতে এগিয়ে গিয়ে বক্সের বাইরে থেকে জোরালো শটে পেনিয়াকে বোকা বানান সিলভা।
দ্বিতীয়বার পিছিয়ে পড়ার পর ৭০ ও ৭১তম মিনিটে দুবার গোলের সুযোগ তৈরি করেন যথাক্রমে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে নামা লামিন ইয়ামাল ও রাফিনিয়া। তবে পালমাস গোলরক্ষক জ্যাসপার সিলিসেনের নৈপুণ্যে দুবারই হতাশ হন তারা।
ম্যাচের ৭৮তম মিনিটে অবশ্য ফেররান তোরেসের গোলে ফের সমতায় ফেরে বার্সেলোনা, তবে অফসাইডে গোলটি বাতিল হয়ে যায়।
এরপর আরও কয়েকবার চেষ্টা করেও গোল আদায় করতে না পারলে ১২৫তম প্রতিবার্ষিকীর উদযাপন মাটি করে মাঠ ছাড়তে হয় ফ্লিকের শিষ্যদের।
রবিবার রাতে টেবিলের আরেক তলানির দল গেতাফের বিপক্ষে মাঠে নামবে রিয়াল মাদ্রিদ। ম্যাচটি জিতে বার্সেলোনার সঙ্গে ব্যবধান কমানোর দারুণ সুযোগ থাকবে চ্যাম্পিয়নদের। এর আগে আজ রাতে রিয়াল ভায়াদোলিদের বিপক্ষে জিততে পারলে বার্সার সঙ্গে ব্যবধান কমাতে পারবে আতলেতিকো মাদ্রিদও।
২ মাস আগে
রেড স্টারের মাঠে বার্সেলোনার গোল উৎসব
হান্সি ফ্লিকের বার্সেলোনার সামনে যে দলই আসছে একেবারে পিষে যাচ্ছে। আজও তার ব্যতিক্রম হলো না। ঘরের মাঠে বার্সাকে আতিথ্য দিয়ে গোলবন্যায় ভাসল রেড স্টার বেলগ্রেদ।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের চতুর্থ রাউন্ডের ম্যাচে রেড স্টার বেলগ্রেদের বিপক্ষে ৫-২ গোলের বড় জয় পেয়েছে বার্সেলোনা।
কাতালান ক্লাবটির হয়ে এদিন জোড়া গোল করেন রবের্ট লেভানডোভস্কি। অন্য তিনটি গোল আসে ইনিগো মার্তিনেস, রাফিনিয়া ও ফেরমিন লোপেসের পা থেকে।
অন্যদিকে, দুই অর্ধে স্বাগতিকদের গোল দুটি করেন বেলগ্রেদের কঙ্গো ফরোয়ার্ড সিলাস ও অ্যাঙ্গোলান মিডিফিল্ডার ফেলিসিও মিলসন।
জোড়া গোলে চলতি মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে চার ম্যাচে লেভানডোভস্কির গোলসংখ্যা হলো ৫টি। আর সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে বার্সার জার্সিতে ১৬ ম্যাচে ১৯ গোল করলেন ৩৬ বছর বয়সী স্ট্রাইকার।
আরও পড়ুন: এস্পানিওলকে উড়িয়ে কাতালুনিয়া ডার্বিও বার্সেলোনার
এর ফলে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ক্যারিয়ারে লেভানডোভস্কির গোলসংখ্যা পৌঁছেছে ৯৯-তে। আর এক গোল পেলেই তৃতীয় খেলোয়াড় হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসের একশ বা তার বেশি গোলদাতাদের তালিকায় নাম লেখাবেন তিনি। এখন পর্যন্ত ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো ও লিওনেল মেসি ছাড়া গোলের শতক পার করতে পারেননি কেউ।
এছাড়া একটি গোলের পাশাপাশি জোড়া অ্যাসিস্ট করেন রাফিনিয়া। এতে করে চলতি মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে চার ম্যাচে ৫ গোল ও দুটি অ্যাসিস্টসহ মোট ৭ গোলে অবদান রাখলেন এই ব্রাজিলীয়। আর সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ক্লাবের হয়ে ১৬ ম্যাচে ২০ গোলে (১২ গোল ও ৮ অ্যাসিস্ট) অবদান রাখলেন তিনি, জাতীয় দলের হিসাব ধরলে সংখ্যাটি দাঁড়ায় ১৮ ম্যাচে ২২ গোলে অবদান (১৪ গোল ও ৮ অ্যাসিস্ট)।
২০২৪ সালে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে রাফিনিয়ার মোট গোলসংখ্যা দাঁড়াল ৮টি। ২০১৯ সালে লিওনেল মেসির পর প্রথম বার্সা খেলোয়াড় হিসেবে এক পঞ্জিকাবর্ষে ৮টি বা তার বেশি গোলে অবদান রাখলেন রাফিনিয়া। অথচ চ্যাম্পিয়ন্স লিগে প্রথম দশ ম্যাচে তার গোলসংখ্যা ছিল শূন্য।
এছাড়াও, বার্সেলোনার পক্ষে এদিন অ্যাসিস্টের হ্যাটট্রিক করেছেন ফরাসি ফুলব্যাক জুল কুন্দে।
আরও পড়ুন: রাফিনিয়ার হ্যাটট্রিকে ৯ বছর পর বায়ার্নকে হারাল বার্সেলোনা
আর মোনাকোর কাছে হেরে আসর শুরুর পর টানা তিন ম্যাচে চার বা তার বেশি গোল করে জিতল বার্সেলোনা। ১৯৫৯-৬০ মৌসুমের পর এই প্রথম ইউরোপীয় প্রতিযোগিতায় টানা তিন ম্যাচে চার বা এর বেশি গোল করল কাতালান জায়ান্টরা।
লা লিগা ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ মিলিয়ে সবশেষ টানা সাত ম্যাচ জয়ের পথে প্রতিপক্ষের জালে মোট ২৯ বার বল পাঠাল ফ্লিকের শিষ্যরা।
অন্যদিকে, এই মৌসুমে সার্বিয়ার শীর্ষ লিগে এখনও পর্যন্ত একমাত্র দল হিসেবে অপরাজিত থাকা বেলগ্রেদ চ্যাম্পিয়ন্স লিগে চার ম্যাচের সবগুলোতেই পেল হারের স্বাদ। সবশেষ তিন ম্যাচে মোট ১৪ গোল হজম করল তারা।
চতুর্থ রাউন্ডের খেলা শেষে টানা তিন জয়ে ৯ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের ষষ্ঠ স্থানে উঠে গিয়েছে বার্সেলোনা। তাদের উপরে থাকা পাঁচ দলই চলতি আসরে এখনও অপরাজিত। সমান দশ পয়েন্ট নিয়ে গোল ব্যবধানের কারণে পঞ্চম, চতুর্থ, তৃতীয় ও দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে যথাক্রমে ইন্টার মিলান, ব্রেস্ত, মোনাকো ও স্পোর্তিং। আর সবগুলো ম্যাচ জিতে পূর্ণ ১২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের চূড়ায় লিভারপুল।
আরও পড়ুন: ইয়াং বয়েজের বিপক্ষে বার্সেলোনার দাপুটে জয়
দিনের অপর ম্যাচে নিজেদের মাঠে আর্সেনালের বিপক্ষে ১-০ গোলে জিতেছে ইন্টার মিলান। একই ব্যবধানে বেনফিকাকে হারিয়েছে বায়ার্ন মিউনিখ। তবে ঘরের মাঠে আতলেতিকো মাদ্রিদের কাছে ২-১ গোলে হেরে গেছে পিএসজি। এছাড়া চলতি মৌসুমে প্রথম হারের স্বাদ পেয়েছে উনাই এমেরির অ্যাস্টন ভিলাও।
৩ মাস আগে
এবার রিয়ালের মাঠেই বর্ণবিদ্বেষের শিকার বার্সার তিন খেলোয়াড়
প্রতিপক্ষের সমর্থকদের কাছ থেকে বর্ণবাদী স্লোগান শুনতে শুনতে জেরবার রিয়াল মাদ্রিদের ব্রাজিলীয় ফরোয়ার্ড ভিনিসিউস জুনিয়র। এ নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই তার; এমনকি রিয়ালের সমর্থকরাও ভিনিসিউসের পক্ষ নিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘৃণ্য এ আচরণের সমালোচনায় মুখর থাকেন। এবার সান্তিয়াগো বের্নাবেউতে সেই রিয়াল সমর্থকদের কাছেই বর্ণবিদ্বেষের শিকার হয়েছেন বার্সেলোনার তিন খেলোয়াড়।
ঘটনাটি ঘটে শনিবার রাতে এল ক্লাসিকো চলাকালে। ৪-০ গোলে বার্সার কাছে বিধ্বস্ত হওয়ার ওই রাতে ম্যাচের ৭৭তম মিনিটে রাফিনিয়ার অ্যাসিস্টে তৃতীয় গোলটি করেন বার্সেলোনার ১৭ বছর বয়সী প্রতিভাবান উইঙ্গার লামিন ইয়ামাল।
এল ক্লাসিকোতে সর্বকনিষ্ঠ ফুটবলার হিসেবে গোলের রেকর্ড করে মাঠেই উদযাপন শুরু করেন তিনি। এ সময় গ্যালারি থেকে তার উদ্দেশে বর্ণবাদী স্লোগান দিতে শুরু করে রিয়ালের কিছু সমর্থক। এমনকি ম্যাচের শেষ দিকে যখন রাফিনিয়ার সঙ্গে কর্নার কিক নিতে যান লামিন, তখন উচ্ছৃঙ্খল সমর্থকরা আরও বেপরোয়া হয়ে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন।
ম্যাচের পর স্পেনের ক্রীড়াবিষয়ক সংবাদমাধ্যম রেলেভো জানায়, শুধু লামিন নন; আনসু ফাতি ও আলেহান্দ্রো বালদেও গ্যালারি থেকে বর্ণবিদ্বেষের শিকার হয়েছেন।
এ ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে গোটা স্প্যানিশ প্রশাসন। সমর্থকদের এমন আচরণে লজ্জা প্রকাশ করে এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ।
এছাড়া এ ঘটনার পেছনের কারিগরদের চিহ্নিত করতে ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু করা হয়েছে বলে ক্লাবটির পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বর্ণবাদ পরিস্থিতির উন্নতি না হলে স্পেনে বিশ্বকাপ চান না ভিনিসিউস
এ ঘটনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে লা লিগা কর্তৃপক্ষও তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে। স্পেনের বর্ণবাদবিরোধী সংস্থার কাছে অভিযোগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।
লা লিগা তাদের বিবৃতিতে বলেছে, ‘বার্সেলোনার খেলোয়াড়দের উদ্দেশে ওঠা বর্ণবাদী স্লোগান নিয়ে স্পেনের জাতীয় পুলিশের হেট ক্রাইম ইউনিটে অভিযোগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে লা লিগা। পাশাপাশি স্টেট অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিসের হেট ক্রাইমস অ্যান্ড ডিসক্রিমিনেশন ইউনিটের সমন্বয়কারী প্রসিকিউটরকেও এ বিষয়ে অবহিত করা হবে।’
‘লা লিগা সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে এবং স্টেডিয়ামের ভেতরে ও বাইরে যেকোনো ধরনের বর্ণবাদী আচরণ ও ঘৃণা দূর করতে নিজেদের অঙ্গীকারে অটল রয়েছে।’
৩ মাস আগে
হেরে বার্সেলোনার রেকর্ড ভাঙার স্বপ্ন ধূলিসাৎ রিয়ালের
সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ে খেলা শুরুর পর থেকে প্রায় ৭৮ হাজার রিয়াল মাদ্রিদ সমর্থকের যে বিশাল গর্জনে বুক কেঁপে কেঁপে উঠছিল বার্সেলোনার তরুণ খেলোয়াড়দের, দ্বিতীয়ার্ধের কিছুক্ষণ পর থেকে সেই উল্লাস কোথায় যেন মিলিয়ে গেল, আর এক কোনায় থাকা মাত্র ৪০০ ব্লাউগ্রানা সমর্থকের চিৎকার ছাপিয়ে গেল গোটা গ্যালারির স্তব্ধতা। বার্সেলোনাকে আরও একবার হারিয়ে, কিংবা অন্তত হার এড়িয়ে বার্সারই টানা জয়ের রেকর্ড ভাঙার যে স্বপ্ন নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন ভিনিসিউস-এমবাপ্পে-বেলিংহ্যামরা, ম্যাচ শেষ হওয়ার আগেই সেই স্বপ্ন ভেঙে খান খান হয়ে গেল।
সান্তিয়াগো বের্নাবেউতে লা লিগায় মৌসুমের প্রথম এল ক্লাসিকোতে রিয়ালের মাঠেই বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত করেছে হান্সি ফ্লিকের ছোঁয়ায় বদলে যাওয়া বার্সেলোনা।
২০২২ সালের ২০ মার্চের পর ঘরের মাঠে এটিই রিয়ালের সবচেয়ে বড় হার। ওই ম্যাচটিও তারা হেরেছিল বার্সেলোনার কাছেই, একই ব্যবধানে।
এছাড়া সব মিলিয়ে টানা চার ম্যাচ জেতার পর এদিন বার্সার কাছে হারল রিয়াল মাদ্রিদ। ২০২৩ সালের ২৯ জুলাই সর্বশেষ রিয়ালকে ৩-০ গোলে হারিয়েছিল শাভি এরনান্দেসের শিষ্যরা।
আরও পড়ুন: সেভিয়াকে বিধ্বস্ত করে এল ক্লাসিকোর প্রস্তুতি সারল বার্সেলোনা
চলতি মৌসুমে ভালো শুরু না পেলেও নানাভাবে হার এড়িয়ে লা লিগায় টানা ৪২ ম্যাচ অপরাজিত ছিল রিয়াল মাদ্রিদ। সর্বশেষ ম্যাচে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে দুই গোলে পিছিয়ে পড়েও দুর্দান্তভাবে ঘরে দাঁড়িয়ে ৫-২ গোলে জিতে দারুণভাবে এল ক্লাসিকোর প্রস্তুতিও সারে কার্লো আনচেলত্তির দল। তবে ক্লাসিকোতে বড় হারে সব প্রস্তুতি ধূলায় মিশে গেছে দলটির। অন্যদিকে, রিয়ালকে হারিয়ে নিজেদের রেকর্ড অক্ষত রেখেছে বার্সেলোনা।
এই ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে এসে ভিনিসিউস-এমবাপ্পের মতো ক্ষিপ্র গতির খেলোয়াড়দের আটকানোর কৌশল বাতলে দিয়েছিলেন বার্সা বস ফ্লিক। সেই কৌশল অবলম্বন করেই রিয়ালের বিষদাঁত বের করতে দেননি এই জার্মান।
ম্যাচে শুধু এমবাপ্পেই ৮ বার বার্সার অফসাইডের ফাঁদে পড়েছেন। ফরাসি এই স্ট্রাইকারের নৈপুণ্যে ম্যাচের ৩০তম মিনিটে এগিয়েও গিয়েছিল রিয়াল, তবে অফসাইডে কাটা পড়ে তার গোলটি।
আরও পড়ুন: রিয়ালের অগ্নিঝরা ফুটবলে পুড়ে ছাই ডর্টমুন্ড
প্রথমার্ধে মাঠে তেমনভাবে প্রভাব বিস্তার করতে না পারলেও দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই নিজেদের জাত চেনাতে শুরু করে রিয়ালের খেলোয়াড়রা। তবে বলের দখল, গতি নিয়ন্ত্রণ, রক্ষণ, কাউন্টার প্রেসিং ও ফিনিশিংয়ে তাদের চেয়ে পরিষ্কারভাবে এগিয়ে ছিল বার্সেলোনার খেলোয়াড়রা; আর এর ফলও পেয়েছে তারা।
৩ মাস আগে