নুরজাহান বেগম
ছাত্র আন্দোলনে আহত ১৪ জন বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন: স্বাস্থ্য উপদেষ্টা
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম বলেছেন, শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা ৬৭ জন চিকিৎসা নিয়েছেন, তারা অনেকে চলে গেছেন আবার হয়তো ফলোআপে আসবেন।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, বর্তমানে ১৪ জন বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন। এর মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর। তাকে বিদেশে নেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানান তিনি।
শনিবার (৫ অক্টোবর) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের দেখতে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে গেলে সেখানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: সারাদেশে ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধ ২২ দিন: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা
তিনি বলেন, চিকিৎসকরা জানিয়েছেন একজনের অবস্থা বেশি খারাপ হওয়ায় এখানে আর চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব নয়। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে পাঠানো হবে। আমরা রাশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, জাপানসহ কয়েকটি দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি।
তিনি আরও বলেন, আপনারা তো বুঝতে পারছেন, এখানে চিকিৎসার ব্যাপারে অনেক ব্যয় ছিল, সেগুলো নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা এই চিকিৎসার টাকা নেবে না বলে আমাদের জানিয়েছেন। দেশের বাইরে আমাদের তাকে পাঠানোর আলোচনা চলছে, তবে কোন দেশে পাঠানো হবে সে বিষয়টি এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, আপনারা জানেন কয়েকদিন আগে চীনের একটি চিকিৎসক দল বাংলাদেশে এসেছিল, তাদের কয়েকজনের ব্যাপারে অবজারভেশন ছিল, তারা আবার সেটি চীনে গিয়ে আমাদের জানাবে। চীনের চিকিৎসক দল জানিয়েছে, বাংলাদেশের চিকিৎসকরা তাদের ভালোমানের চিকিৎসা দিয়েছে। নেপালের ৩ সদস্যের একটি চক্ষু চিকিৎসক দল আমাদের দেশে আছে।
আন্দোলনে আহত অনেকে চিকিৎসার টাকা পাচ্ছে না বলে অভিযোগে আসছে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার মনে হয় এই কথা ঠিক নয়। আমরা ৮ আগস্ট দায়িত্ব নেওয়ার পর ঘোষণা দিয়েছি অর্থাৎ সরকার বলেছে আপাতত সব চিকিৎসার ব্যয় সরকার নেবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা সব হাসপাতাল থেকে তালিকা নিয়ে সেই অনুযায়ী আহত রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছি। তাদের কাছে জিজ্ঞেস করুন, চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় কারো কোনো টাকা পয়সা দিতে হয়েছে কি না। আমাদের কাছে এমন কোনো কমপ্লেইন নেই, যদি কোনো কমপ্লেইন থাকে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
ডেঙ্গু প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা স্থানীয় সরকার বিভাগের সঙ্গে কথা বলেছি এবং কয়েক দফা বৈঠক করেছি। এখানে দুইটি বিষয় আছে, একটি হচ্ছে চিকিৎসা সেবা দেওয়া, আরেকটি হচ্ছে সচেতনতা। কুর্মিটোলা হাসপাতাল, ডিএনসিসি হাসপাতাল, কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে শয্যার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে এবং এখানে অতিরিক্ত চিকিৎসকও দেওয়া হয়েছে। এখানে কয়েকটি টিম করে দেওয়া হয়েছে। জনগণ যদি সচেতন হয় তাহলে ডেঙ্গু প্রতিরোধ করা সম্ভব।
আরও পড়ুন: আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা অপরিকল্পিত: শিক্ষা উপদেষ্টা
২ মাস আগে
শাটডাউন তুলে নিতে চিকিৎসকদের প্রতি অনুরোধ স্বাস্থ্য উপদেষ্টার
ঢাকা মেডিকেল কলেজে (ঢামেক) চিকিৎসকদের মারধর ও ভাঙচুরের ঘটনায় সারাদেশে চিকিৎসকদের ডাকা শাটডাউন তুলে নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম।
এসময় উপদেষ্টা বলেন, ইতোমধ্যে দুইটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। যারা অভিযোগ করেছেন চিকিৎসা ঠিক মতো হয়নি তাদের জন্য একটা। আর যারা ডাক্তারদের গায়ে হাত তুলেছে, সেটা দেখার জন্য আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। দায়ীদের আইনের আওতায় আনা হবে।
রবিবার (১ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা এ আহ্বান জানান। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগীদের স্বজনদের হামলার পরিপ্রেক্ষিতে চিকিৎসকরা সারাদেশের শাটডাউন কর্মসূচি দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: বিজ্ঞান গবেষণায় দেশকে ভালো অবস্থানে নিয়ে যেতে চাই: উপদেষ্টা
চিকিৎসকদের উদ্দেশ্যে উপদেষ্টা বলেন, ‘তোমরা আমার সন্তানের মতো। শাটডাউন তুলে নাও। মানুষের সেবা করার জন্য এসেছ। নিজেকে উজাড় করে দিয়েছ। আবারও উজাড় করে দাও। এছাড়া তোমরা প্রমাণ কর, মানুষের সেবার জন্য এসেছ। মানুষের দুঃখে তোমাদের মন কাঁদে, তাদের জন্য তোমরা আছ। এটাই তোমাদের কাছে আমার বিনীত অনুরোধ।’
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, প্রথমে ঢামেকে একজন ছাত্র মারা যায়। যেকোনো মৃত্যু মানুষের জন্য সত্যি পীড়াদায়ক। ডাক্তাররা সাধ্যমতো চেষ্টা করেছেন কিন্তু তাকে বাঁচানো যায়নি। কারণ তার মাথায় বড় আঘাত ছিল। ছাত্রটি মারা যাওয়ার পর তার আত্মীয়-স্বজন সেখানে গণ্ডগোল শুরু করেন। হাসপাতালের পরিচালক তাদের বোঝানোর চেষ্টা করেন- এখানে আমাদের গাফিলতি থাকলে আমরা সুস্থ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব। তারা এই কথায় কর্ণপাত না করে আমাদের ডাক্তারদের ওপর হাত তোলে। এভাবে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া ঠিক হয়নি। এটা অন্যায়।
তিনি বলেন, এরপর কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যকে ঢাকা মেডিকেলে আনা হয়। কিন্তু অন্য গ্রুপ তার চিকিৎসা দিতে বাধা দেয়। কিন্তু পরে সেও মারা যায়। এরপর বিষ খাওয়া রোগী একজন ঢাকা মেডিকেলে মারা যায়।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের ভুলে গেলে চলবে না কোভিডের সময় ডাক্তাররা দিন নেই, রাত নেই সেবা করে গেছে। এখন যে বন্যা দেখা দিয়েছে সেখানেও ডাক্তাররা দিনরাত খেটে সেবা দিয়ে যাচ্ছে। কথায় কথায় তাদের গায়ে হাত তোলা এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।’
নুরজাহান বেগম বলেন, যারা এ কাজ করেছে, আমি এ ঘটনায় নিন্দা জানাই। আমি আমার সব ডাক্তারকে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, নিশ্চয়ই সিসিটিভি ফুটেজে এগুলো আছে, সেই ফুটেজ বিশ্লেষণ করে আমি তাদের আইনের আওতায় আনব এটা আমার অঙ্গীকার।
তিনি বলেন, ‘আমি জনগণকে বলব- এই ডাক্তাররা আপনার সন্তানের মত। কারো ছেলে, কারো ভাই, তাদের জন্য একটু মানবিক হন। আবেগের বশে আমি কারো গায়ে হাত তুলে দিলাম, এটা ঠিক নয়। আইনটা নিজের হাতে তুলে নিলে দেশ আর দেশ থাকে না। বিশৃঙ্খল হয়ে যায়।’
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘ডাক্তাররা শাটডাউন ঘোষণা করেছে। চিকিৎসা সেবা না পেলে কেউ টিকতে পারবে? দেশ ঠিক থাকবে? থাকবে না। আমি সবাইকে অনুরোধ করব আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না।’
যারা শাটডাউন ডেকেছে তাদের সঙ্গে কথা বলার জন্য যাবেন জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, আমি আশা করি তারা আমার কথা শুনবেন।
আরও পড়ুন: ৭ ইসলামি দলের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনায় বেশির ভাগ দলের দাবি নির্বাচনের সময়সীমা
৩ মাস আগে