শহীদ আবু সাঈদ
শহীদ আবু সাঈদ স্মরণে বেরোবিতে আন্তঃবিভাগ বিতর্ক প্রতিযোগিতার উদ্বোধন
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘অন্যায়ের বিরুদ্ধে, তর্কের নির্ভীক বিস্ফোরণ’ এই প্রতিপাদ্যে দুই দিনব্যাপী শহীদ আবু সাঈদ স্মরণে আন্তঃবিভাগ বিতর্ক প্রতিযোগিতা-২০২৫ এর উদ্বোধন করা হয়েছে।
শুক্রবার (১১ জুলাই) দুপুরে একাডেমিক ভবন-২ এর ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে বিতর্ক প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. শওকাত আলী।
তিনি বলেন, শহীদ আবু সাঈদের স্মৃতিকে ধারণ করে আমরা আজ এই আন্তঃবিভাগ বিতর্ক প্রতিযোগিতার সূচনা করেছি, যা যুক্তিবাদী মননের এক উজ্জ্বল অনুশীলন।
উপাচার্য বলেন, আবু সাঈদ সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে জীবন উৎসর্গ করেছেন। তার আদর্শ আমাদের তরুণ প্রজন্মকে ন্যায্যতা, যুক্তি এবং মানবিকতার পথে এগিয়ে চলার প্রেরণা যোগাবে। আগামী প্রজন্ম যাতে আবু সাঈদের আদর্শকে লালন করতে পারে, বুকে ধারণ করতে পারে, এজন্যই আমরা নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করছি আবু সাঈদকে নিয়ে। আবু সাঈদ এখন আমাদের প্রেরণা, আমাদের আলোর দিশারি।
পড়ুন: ছেলের কবরের পাশে দিন কাটে আবু সাঈদের মায়ের, বিচার নিয়ে সংশয় শহীদ আবু সাঈদ স্মরণে আন্তঃবিভাগ বিতর্ক প্রতিযোগিতার আহ্বায়ক ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. ইলিয়াছ প্রামানিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রংপুর জেলার প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল।
এ সময় তিনি বলেন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ আবু সাঈদ স্মরণে আয়োজিত আন্তঃবিভাগ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় উপস্থিত থাকতে পেরে আমি আনন্দিত। বিশ্ববিদ্যালয় হলো চিন্তা, যুক্তি ও বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশের ক্ষেত্র। আমি আশা করি এই বিতর্ক প্রতিযোগিতা ভবিষ্যত নেতৃত্ব তৈরিতে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আবু সাঈদ যেমন সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন, এমন বিতর্ক আমাদের উৎসাহ বাড়াবে।
বিতর্ক প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. মো. হারুন-অর রশিদ। শহীদ আবু সাঈদ স্মরণে আন্তঃবিভাগ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২২টি বিভাগ অংশ নিয়েছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
১৪৬ দিন আগে
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে শহীদ আবু সাঈদের পরিবারের সাক্ষাৎ
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ আবু সাঈদের দুই ভাই রমজান আলী ও আবু হোসেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।
বুধবার (৬ নভেম্বর) ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তারা অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
গত সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে অধ্যাপক ইউনূস তার ঐতিহাসিক ভাষণে আবু সাঈদ ও অন্যান্য শহীদদের আত্মত্যাগের কথা যখন বলছিলেন, তখন আবু সাঈদের পরিবার কান্নায় ভেঙে পড়েন বলে জানান তারা।
শহীদ আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলী অধ্যাপক ইউনূসকে বলেন, ‘বিপ্লবে তার বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা আপনি তুলে ধরেছেন এবং প্রধান উপদেষ্টা হওয়ার একদিন পরই রংপুরে আমাদের গ্রামে আমাদের সঙ্গে দেখা করায় আমরা সম্মানিত বোধ করেছি।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগ ও দ. কোরিয়ায় শ্রমিক নিয়োগ করুন: রাষ্ট্রদূতকে অধ্যাপক ইউনূস
আজ মঞ্চে প্রেসিডেন্সিয়াল গার্ড রেজিমেন্ট (পিজিআর) প্রধান উপদেষ্টাকে গার্ড স্যালুট দেওয়ার সময় দুই ভাইও মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।
রমজান আলী বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আমরা মঞ্চে দাঁড়িয়েছিলাম এবং সৈন্যরা আমাদেরকে গার্ড স্যালুট দিয়ে সম্মান জানিয়েছে। এসময় আমাদের কেমন লেগেছে তা আমি বলতে পারব না।’
বৈঠকে তারা আবু সাঈদ হত্যা মামলার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন। হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিও চান তারা।
তারা শহীদ আবু সাঈদের নামে একটি ফাউন্ডেশন তৈরির কথাও জানান এবং গ্রামে একটি ‘মডেল মসজিদ’ ও একটি মেডিকেল কলেজ তৈরির আশা প্রকাশ করেন। এই বিষয়ে সহায়তার জন্য দুটি মন্ত্রণালয়ের কাছে আবেদন করা হয়েছে বলেও জানান তারা।
ছোট ভাই আবু হোসেন বলেন, ‘ফাউন্ডেশনটি দরিদ্র এবং জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে আহতদের জন্য কাজ করবে।’
অধ্যাপক ইউনূস শহীদ আবু সাঈদের পরিবারের জন্য সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পুলিশকে হত্যাকাণ্ডের তদন্ত দ্রুত শেষ করতে এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছে।
আরও পড়ুন: স্বল্প সময়ের জন্যও বাংলাদেশে আ. লীগের কোনো স্থান নেই: ফিনান্সিয়াল টাইমসকে ড. ইউনূস
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘শহীদ আবু সাঈদ জাতির জন্য যা করেছেন তা বাংলাদেশ কখনো ভুলবে না। তার আত্মত্যাগ স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থানে বিরাট ভূমিকা রেখেছিল।’
আবু সাঈদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা জানান, তাদের জন্য তার দরজা সবসময় খোলা থাকবে।
‘আমি সবসময় তোমার সঙ্গে থাকব। তোমার বাবা-মাকে আমার সালাম জানাবে,’ বলেন তিনি।
গত ১৬ জুলাই পুলিশের গুলিতে নিহত হন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। অধ্যাপক ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার ঠিক একদিন পর গত ৯ আগস্ট রংপুরে আবু সাঈদের বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করেন। তিনি শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারতও করেন।
আরও পড়ুন: অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশের সাফল্যের সম্ভাবনায় ভারতের সর্বোত্তম স্বার্থ
৩৯৪ দিন আগে