ক্ষমতার অপব্যবহার
মাগুরায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ
মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলার চরমহেশপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জীবন কুমার মণ্ডলের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগ রয়েছে, তিনি যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী এডহক কমিটির নতুন সভাপতি জিনাত সুলতানার কাছে দায়িত্ব হস্তান্তরে ইচ্ছাকৃতভাবে সময়ক্ষেপণ করছেন।
যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের অনুমোদনে বিদ্যালয় পরিদর্শক ড. মো. কামরুজ্জামানের সই করা ৩ জুনের প্রজ্ঞাপনে জিনাত সুলতানাকে চরমহেশপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি হিসেবে মনোনীত করা হয়। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে, প্রধান শিক্ষক জীবন কুমার মণ্ডল বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে দায়িত্ব হস্তান্তর না করে সময়ক্ষেপণ করছেন।
আরও পড়ুন: নারীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগে বিএনপি নেতাকে গাছের সঙ্গে বাঁধল গ্রামবাসী
সভাপতি জিনাত সুলতানা জানান, বোর্ডের আদেশ অনুযায়ী এখনও কোনো সভা আহ্বান করা হয়নি। প্রধান শিক্ষকের পছন্দের ব্যক্তি সভাপতি না হওয়ায় দায়িত্ব হস্তান্তরে বাধা দিচ্ছেন। বরং তিনি নিজের মেয়াদোত্তীর্ণ অবস্থায়ও কর্তৃত্ব ধরে রাখতে চাইছেন এবং বিভিন্ন স্থানে লবিং করছেন।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, বিগত সরকারের সময়ে তিনি নিজের অনুগত ব্যক্তিদের কমিটিতে বসিয়ে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগে অনিয়ম ও অর্থ লেনদেন করেছেন। বর্তমানে আমি দায়িত্ব নিলে সে সুযোগ আর থাকবে না বলেই হয়তো বাধা সৃষ্টি করছেন।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক জীবন কুমার মণ্ডল বলেন, ‘গত ২ জুলাই আমি সভা আহ্বান করেছিলাম। কিন্তু স্থানীয় বিএনপির কয়েকজন নেতার হস্তক্ষেপে তা সম্ভব হয়নি। তারা বিষয়টি নিজেরা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন। আশা করি শিগগিরই সমাধান হবে।’
তবে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুল গণি বলেন, ‘যেহেতু বোর্ড কর্তৃক সভাপতি মনোনীত হয়েছেন, প্রধান শিক্ষকের উচিত সভা আহ্বান করে দায়িত্ব হস্তান্তর করা। বিষয়টি আমার নজরে আসার পর তাকে তা জানানো হয়েছে। কিন্তু তিনি দায়িত্ব পালনের পরিবর্তে রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করছেন, যা সরকারি নীতিমালার পরিপন্থী।’
এ ঘটনায় বিদ্যালয় ও এলাকাবাসীর মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তারা দ্রুত বোর্ডের নির্দেশনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে বিদ্যালয়ে স্বচ্ছ প্রশাসনিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন।
১৪৪ দিন আগে
আইন প্রয়োগকারীদের অপব্যবহারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা রাখতে হবে: নজরুল
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, প্রতিটি আইনে এমন কঠোর বিধান থাকতে হবে, যাতে আইন প্রয়োগ করতে গিয়ে কেউ ক্ষমতার অপব্যবহার করলে বা আইন লঙ্ঘন করলে, তাকে জবাবদিহির আওতায় আনা যায়।
তিনি বলেন, ‘আমার মতে, প্রতিটি আইনে একটি বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকা উচিত—যারা আইন প্রয়োগের দায়িত্বে রয়েছেন, তারা যদি ইচ্ছাকৃতভাবে আইন প্রয়োগে ভুল করেন বা অন্যায়ভাবে আইন লঙ্ঘন করে জনগণকে নিপীড়ন করেন, তাহলে তাদের জন্য শাস্তির বিধান থাকতে হবে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য শনিবার (৫ জুলাই) ঢাকায় নাগরিক ঐক্য আয়োজিত ‘সাইবার নিরাপত্তা অধ্যাদেশ ২০২৫’ শীর্ষক এক সেমিনারে এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানটি হয় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে।
তিনি বলেন, ‘যখন প্রভাবশালী অবস্থানে থাকা ব্যক্তিরা আইন ভঙ্গ করেন বা জনগণের স্বার্থ রক্ষা করতে ব্যর্থ হন, তখন তাদের জবাবদিহির আওতায় আনতে ও শাস্তি নিশ্চিত করতে আইনি প্রক্রিয়া থাকা আবশ্যক।’
নজরুল বলেন, ‘শুধু কাগজে আইন লেখা বা ভাষাকে সুন্দর করলেই হয় না। যারা আইন প্রয়োগ করবেন, তারা যদি সেই আইনকে ব্যবহার করে জনগণকে দমন করেন, আর তাদের বিচার করার কোনো উপায় না থাকে, তাহলে সেই আইনের কোনো বাস্তব মূল্য থাকে না।’
বিএনপি এই নেতা সাইবার নিরাপত্তা অধ্যাদেশ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, কিছু পরিবর্তন আনা হলেও এই আইন এখনো জনগণের প্রয়োজন পূরণে ব্যর্থ।
তিনি দেশের শ্রম আইন বাস্তবায়নের দুর্বলতা নিয়েও সমালোচনা করেন। নজরুল বলেন, ২০০৬ সালে শ্রম আইন ও শ্রম আদালত আইন একীভূত করার আগে দেশে অনেক শ্রম আইন ছিল। ‘আপনি যদি আইনটি পড়েন, তাহলে মনে হবে এটি একটি চমৎকার আইন। কিন্তু আপনি যদি এর বাস্তবায়ন দেখেন, তা অত্যন্ত হতাশাজনক।’
তিনি বলেন, ‘আইনে স্পষ্টভাবে বলা আছে, প্রত্যেক শ্রমিককে নিয়োগপত্র দিতে হবে। কিন্তু বাংলাদেশে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ শ্রমিক এখনো নিয়োগপত্র পান না। তাদের চাকরির শর্তও স্পষ্ট নয়। তাদের বার্ধক্যভাতা নেই, ছুটি নেই, এবং আইনে যেসব সুবিধা লেখা আছে, তার কিছুই তারা পান না।’
নজরুল ইসলাম বলেন, কৃষিশ্রমিকদের জন্য ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করা আছে, কিন্তু তা বাস্তবায়নের কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেই। যারা কম মজুরি দেয়, তাদের শাস্তির ব্যবস্থাও কার্যকর নয়।
তিনি বলেন, দেশে অনেক আইন অস্পষ্ট, আর এই অস্পষ্টতা অনেক সময় কর্তৃপক্ষ বা আইন প্রয়োগকারীরা জনসাধারণকে হয়রানির জন্য কাজে লাগান।
নজরুল বলেন, ‘বাংলাদেশে নারী, যুবক, শিশু ও শ্রমিকদের জন্য অনেক আইন আছে, কিন্তু তাদের অধিকাংশই এসব আইন সম্পর্কে জানেন না। যাদের জন্য এই আইনগুলো প্রণয়ন করা হয়েছে, তারাই তা বোঝেন না বা এর সুফল পান না।’
তিনি সব রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন ও পেশাজীবী প্রতিনিধিদের প্রতি আহ্বান জানান যেন তারা জনগণের মধ্যে আইনি সচেতনতা সৃষ্টি করেন, জনগণকে তাদের অধিকার বোঝান, বিদ্যমান আইনের ত্রুটিগুলো ব্যাখ্যা করেন এবং সেই ত্রুটিগুলো সংশোধনের কাজে জনগণকে সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত করেন।
নজরুল জোর দিয়ে বলেন, জনগণ যেন আইনে থাকা অধিকারগুলো ভোগ করতে পারেন এবং যেসব অধিকার থেকে তারা এখনও বঞ্চিত, তা অর্জনের জন্য লড়াই করতে পারেন—এই বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।
আরও পড়ুন: ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত হয়নি: আইন মন্ত্রণালয়
১৫৩ দিন আগে
দুর্নীতি: হাসিনা-রেহানাসহ ৫৩ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা
ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাজউক থেকে ৩০ কাঠা প্লট গ্রহণের পৃথক তিন মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের চার সদস্যসহ ৫৩ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
রবিবার (১৩ এপ্রিল) ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত দুদকের দেওয়া চার্জশিট আমলে গ্রহণ করে এমন আদেশ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনা, পুতুলসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা, রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি, মেয়ে টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিকসহ ৫৩ জনের বিরুদ্ধে এই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। পলাতক থাকায় আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
আদালতে দুদকের প্রসিকিউশন বিভাগের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তার করা গেল কি না, সে বিষয়ে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য ২৭ এপ্রিল দিন ধার্য করেছে আদালত।
প্লট দুর্নীতির আরেক মামলায় এর আগে গত ১০ এপ্রিল শেখ হাসিনা, তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে একই আদালত।
২৩৬ দিন আগে
বিএনপি ফিরলে ক্ষমতার অপব্যবহার ও স্বৈরাচার দমনের অঙ্গীকার তারেকের
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, তার দল ক্ষমতায় গেলে বাংলাদেশকে এমনভাবে গড়ে তুলবে, যাতে প্রধানমন্ত্রীও যেন ক্ষমতার অপব্যবহার করতে না পারেন বা স্বৈরাচারী হিসেবে আবির্ভূত হতে না পারেন।
বৃহস্পতিবার লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এক সেমিনারে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, জনগণের মৌলিক মানবাধিকার, মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করে বিএনপি দেশকে গণতান্ত্রিক ও মানবিক রাষ্ট্রে রূপান্তর করবে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, 'আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করব, যাতে কোনো ব্যক্তি, এমনকি প্রধানমন্ত্রীও ভবিষ্যতে বাংলাদেশে ক্ষমতার অপব্যবহার করতে না পারেন।’
তিনি আরও বলেন, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়-এটি নিশ্চিত করতে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে শুরু করে সরকারের প্রতিটি স্তর পর্যন্ত জবাবদিহি ও আইনের শাসন সমুন্নত রাখতে হবে।
আরও পড়ুন: তারেকের জন্মদিন পালনের কর্মসূচি নেই বিএনপির
রাজনৈতিক মতাদর্শের পার্থক্য থাকলেও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে, এরই মধ্যে দেশে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য গড়ে উঠেছে বলে উল্লেখ করেন তারেক রহমান।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ পুনর্গঠনে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ, যাতে স্বৈরাচারী বা ফ্যাসিবাদীরা আর কখনো মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে।’
কেউ কোনো নাগরিকের অধিকার ও স্বাধীনতা লঙ্ঘন করতে পারবে না-এমন বাংলাদেশ গড়াই বিএনপির ভিশন বলে মন্তব্য করেন তারেক রহমান।
তিনি বলেন, 'আমরা সবাই নিরাপদ ও সুরক্ষিত বাংলাদেশ চাই। জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটবে এবং নির্বাচিত ও জবাবদিহিমূলক সরকার জনগণের মালিকানা ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করবে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসনামলে তথাকথিত উন্নয়নের রাজনীতি দেখেছে জাতি; যার মূলে ছিল দুর্নীতি, দুঃশাসন ও দুর্বৃত্তায়ন।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি যদি জনগণের ভোটে সরকার গঠন করে, তাহলে জনগণের ক্ষমতায়ন ও অংশীদারিত্বের রাজনীতি দেখতে পাবেন। আইনের শাসন, মানবাধিকার ও বাকস্বাধীনতাই হবে আমাদের রাষ্ট্র পরিচালনার ভিত্তি।’
রাজধানীর একটি হোটেলে রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারের ৩১ দফা রূপরেখা নিয়ে সেমিনারের আয়োজন করে বিএনপি। সেমিনারে ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন বিদেশি মিশনের কূটনীতিক, সুশীল সমাজের সদস্য এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে যুগপৎ আন্দোলন চলাকালে অর্ধশতাধিক দলের সঙ্গে ৩১ দফা রাষ্ট্রীয় সংস্কার প্রস্তাব প্রস্তুত করেছিল বিএনপি।
তিনি বলেন, হাসিনার শাসনের পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ইতোমধ্যে রাষ্ট্রীয় সংস্কার তদারকির জন্য বিভিন্ন কমিশন গঠন করেছে।
বিএনপি নেতা বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, এসব কমিশন থেকে যেসব সংস্কার প্রস্তাব উঠে আসবে, তা ৩১ দফার রূপরেখার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে। তাই আমরা ৩১ দফা রূপরেখা আবারও জনগণের সামনে তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
২০২৩ সালের ১৩ জুলাই সংবিধান ও রাষ্ট্র ব্যবস্থার 'সংস্কার' এবং জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তি নিশ্চিতের লক্ষ্যে ৩১ দফা রূপরেখা ঘোষণা করে বিএনপি। আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে যুগপৎ আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী অন্যান্য দলের সঙ্গে পরামর্শ করে এই প্রস্তাব তৈরি করা হয়।
আরও পড়ুন: গণতন্ত্র ও ভোটাধিকারই জাতীয় সমস্যা সমাধানের চাবিকাঠি: তারেক
৩৮৫ দিন আগে