পুলিশ ভেরিফিকেশন
অনলাইনে আবেদন করে পুলিশ ভেরিফিকেশন ছাড়া ই-পাসপোর্ট পাওয়ার উপায়
ই-পাসপোর্ট পরিষেবায় বাতিল করা হয়েছে পুলিশ ভেরিফিকেশন। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ তারিখে পরিপত্র জারির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করে বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ। এখন থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র বা ন্যাশনাল আইডি (এনআইডি) কার্ড-এ বিদ্যমান তথ্যের ভিত্তিতে সরবরাহ করা হবে ই-পাসপোর্ট। অপ্রাপ্ত বয়স্ক ও প্রবাসি বাংলাদেশি নাগরিকদের ক্ষেত্রে অধিকাংশ সময় এনআইডি কার্ড করার সুযোগ থাকে। তাই এই দুই শ্রেণীর নাগরিকদের পাসপোর্টের আবেদন নিরীক্ষার মাপকাঠি ধরা হবে অনলাইনে নিবন্ধনকৃত জন্ম নিবন্ধন সনদ। চলুন, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স ব্যতীত ই-পাসপোর্ট পাওয়ার জন্য আবেদনের সামগ্রিক প্রক্রিয়াটি দেখে নেওয়া যাক।
অনলাইনে ই-পাসপোর্ট আবেদন করার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
• অনুর্ধ্ব ১৮ বছর বয়সী প্রার্থীর জন্য অনলাইনে নিবন্ধনকৃত জন্ম সনদপত্র (BRC English Version)
• প্রার্থী ১৮ থেকে ২০ বছর বয়সী হলে তার জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা অনলাইনে নিবন্ধনকৃত জন্ম সনদ (BRC English Version)
• ২০ বছরের অধিক আবেদনকারীদের জন্য এনআইডি কার্ড অত্যাবশ্যক। তবে অন্যান্য দেশে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশন থেকে আবেদনকারীরা তাদের অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ (BRC English Version) দিতে পারবেন।
• শিশুদের ক্ষেত্রে পিতামাতা প্রত্যেকের এনআইডি কার্ড
• বসবাসরত ঠিকানার সাম্প্রতিক ইউটিলিটির (গ্যাস, বিদ্যুৎ বা পানি) বিল প্রদানের রশিদ
• দত্তক কিংবা অভিভাবকত্ব গ্রহণকারীদের জন্য সুরক্ষা সেবা বিভাগ (স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়) কর্তৃক জারিকৃত আদেশ
• বিবাহ সনদ অথবা নিকাহনামা এবং বিবাহ বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে তালাকনামা (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
আরো পড়ুন: পাসপোর্টে পুলিশ ভেরিফিকেশনের প্রয়োজনীয়তা শিথিল করে পরিপত্র
বিভিন্ন পেশাজীবী আবেদনকারীরা যে নথিপত্র দেখাবেন
• ড্রাইভার, ইঞ্জিনিয়ার, ও ডাক্তারের মতো কারীগরি কিংবা প্রযুক্তিগত পেশাজীবীদের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কারীগরি সনদপত্র
• শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে তার সর্বশেষ শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ অথবা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান কর্তৃক প্রদানকৃত প্রত্যয়নপত্র বা নিদেনপক্ষে স্টুডেন্ট আইডি কার্ড
• বেসরকারী কর্মকর্তার জন্য তার প্রতিষ্ঠান থেকে সরবরাহকৃত আনুষ্ঠানিক প্রত্যয়নপত্র
• সরকারী চাকরিজীবিদের ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত যে কোনো একটি নথি (ইস্যূকারী কর্তৃপক্ষের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে নোটিশ হিসেবে প্রকাশিত হতে হবে):
o সরকারী আদেশ (জিও)
o অনাপত্তি পত্র (এনওসি)
o প্রত্যয়নপত্র
o অবসরোত্তর ছুটির আদেশ (পিআরএল অর্ডার)
o পেনশন বই
· কৃষক বা কৃষি কাজে নিযুক্ত থাকলে তার জমির পর্চা (অনুলিপি)
· ব্যবসায়ীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্স (অনুলিপি)
আরো পড়ুন: ২০২৫ সালে ভিসা ছাড়াই যেসব দেশে যেতে পারবেন বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীরা
আবেদন জমা দেওয়ার সময় উপরোক্ত নথিপত্রের সাথে আরও যা যা যুক্ত করতে হবে:
· বায়োমেট্রিক নিবন্ধনের নির্ধারিত সময়সহ আবেদনপত্রের সারাংশ (মুদ্রিত কপি)
· অনলাইন নিবন্ধিত পূর্ণ আবেদনপত্র (মুদ্রিত কপি)
· পাসপোর্টের ফি জমা প্রদানের রশিদ
· অনুর্ধ্ব ৬ বছর বয়সী শিশুর ক্ষেত্রে গ্রে ব্যাকগ্রাউন্ডে ল্যাবে মুদ্রিত সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের ছবি
· ৬ বছরের অধিক প্রার্থীর পৃথক ভাবে কোনো ছবি দেওয়ার দরকার নেই। আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় এই সকল নথিগুলো সত্যায়িত করার প্রয়োজন নেই।
আরো পড়ুন: আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস থেকে ই-পাসপোর্ট করবেন যেভাবে
ধাপে ধাপে ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদনের নিয়ম
.
অনলাইনে আবেদন ফর্ম পূরণ
সর্বপ্রথম ইন্টারনেটের ব্রাউজার ওপেন করে সরাসরি চলে যেতে হবে www.epassport.gov.bd ওয়েবসাইটে। অতঃপর ‘অ্যাপ্লাই অনলাইন’ ট্যাবে ক্লিক করলে প্রথমে আসবে আঞ্চলিক ই-পাসপোর্ট কার্যালয় নির্ধারণের পালা। স্ক্রিনে ড্রপ ডাউন লিস্ট থেকে প্রার্থীর অবস্থানরত জেলা ও থানার নাম বাছাই করতে হবে। এতে করে স্বয়ংক্রিয় ভাবে অধিভূক্ত ই-পাসপোর্ট কার্যালয়ের নামটি নির্ধারিত হয়ে যাবে।
এছাড়া আলাদাভাবে নিজের নিকটস্থ ই-পাসপোর্ট কার্যালয়ের চেনার জন্য এই লিঙ্কে যাওয়া যেতে পারে- https://dip.gov.bd/site/page/4d4ea063-50df-46ee-a326-492d8ef2dbb0/-।
পাসপোর্ট অফিস নির্ধারণের পরের কাজ হলো ই-পাসপোর্ট অনলাইন নিবন্ধন পোর্টালে অ্যাকাউন্ট খোলা। এর জন্য ই-মেইল ঠিকানা, এনআইডি বা জন্ম নিবন্ধন এবং মোবাইল নাম্বার দিয়ে একটি অনন্য পাসওয়ার্ড সেট করতে হবে। এভাবে অ্যাকাউন্ট খোলা হয়ে গেলে পরবর্তীতে এই ই-মেইল বা মোবাইল নাম্বার এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করা যাবে।
আবেদন ফর্মের প্রত্যেকটি তথ্য অবশ্যই জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী হতে হবে। ন্যূনতম তারকা চিহ্নিত তথ্যগুলো সফলভাবে প্রদানের পর আসবে পাসপোর্ট ফি প্রদানের অপশন। ফি তাৎক্ষণিকভাবে অনলাইনে পরিশোধ করা হলে রশিদ নাম্বার স্বয়ংক্রিয় ভাবে সংযুক্ত হয়ে যাবে।
এরপরের সেকশনে বায়োমেট্রিক নিবন্ধনের জন্য দিনক্ষণ ঠিক করতে হবে। স্ক্রিনে প্রদর্শিত ক্যালেন্ডার থেকে উপলব্ধ তারিখগুলো থেকে প্রার্থী নিজের পছন্দসই একটি তারিখ বাছাই করতে পারবেন।
তারপরেই চূড়ান্ত পর্যায়, যেখানে সাবমিট সম্পন্ন করার পর অ্যাপয়েন্টমেন্টসহ পুরো আবেদনের একটি সামারি দেখা যাবে। এই সামারি এবং সাবমিটকৃত পুরো অনলাইন নিবন্ধনের প্রিন্ট কপি অন্যান্য নথিগুলোর সাথে সংযুক্তি হিসেবে দিতে হবে।
ই-পাসপোর্ট ফি পরিশোধ
ফি পরিশোধের জন্য পাসপোর্ট ও ইমিগ্রেশন অধিদপ্তরের অনুমোদিত কিছু পেমেন্ট সিস্টেম রয়েছে। এগুলো হলো- ভিসা, মাস্টার, ও অ্যামেরিকান এক্সপ্রেস কার্ড, বিকাশ, নগদ, রকেট, ইউপে, ডিমানি, ওকে ওয়ালেট, এবং এমবিএল রেইন্বো। অনুমোদিত ব্যাঙ্কগুলো হলো- ব্যাঙ্ক এশিয়া, ব্র্যাক ব্যাঙ্ক, ইস্টার্ন ব্যাঙ্ক, সিটি ব্যাঙ্ক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাঙ্ক, আরব-বাংলাদেশ ব্যাঙ্ক, ডাচ-বাংলা ব্যাঙ্ক, এবং মিডল্যান্ড ব্যাঙ্ক।
আরো পড়ুন: প্রবাসী বাংলাদেশিরা কিভাবে ই-পাসপোর্ট করবেন: দেশের বাইরে থেকে পাসপোর্ট নবায়নের উপায়
৫ বছর / ১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট আবেদনের খরচ
পাসপোর্ট বইয়ের পৃষ্ঠা, পাসপোর্টের মেয়াদ, এবং বিতরণের সময়সীমার ভিত্তিতে ফি বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। প্রধানত রেগুলার, এক্সপ্রেস এবং সুপার এক্সপ্রেস- এই তিন ক্যাটাগরিতে ই-পাসপোর্ট সরবরাহ করা হয়।
সবচেয়ে দ্রুত সময়ে পাসপোর্ট পাওয়া যায় সুপার এক্সপ্রেসের মাধ্যমে, যার সময়সীমা বায়োমেট্রিক সংগ্রহের তারিখ থেকে মাত্র ২ কার্যদিবস। এক্সপ্রেস ক্যাটাগরিতে প্রক্রিয়াকরণের সময়কাল বায়োমেট্রিক নিবন্ধনের তারিখ থেকে ৭ কার্যদিবস থেকে সর্বোচ্চ ১০ দিন। সর্বাধিক সময়সীমা রেগুলার ক্যাটাগরিতে, যেখানে বায়োমেট্রিক প্রদানের তারিখ থেকে ন্যূনতম ১৫ কার্যদিবস বা ২১ দিনের মধ্যে পাসপোর্ট হাতে পাওয়া যায়।
৫ বছর মেয়াদ সম্পন্ন ৪৮ পৃষ্ঠা সম্বলিত ই-পাসপোর্ট
· ৫ বছর মেয়াদ সম্পন্ন ৪৮ পৃষ্ঠা সম্বলিত ই-পাসপোর্ট
· রেগুলার: ৪ হাজার ২৫ টাকা
· এক্সপ্রেস: ৬ হাজার ৩২৫ টাকা
· সুপার এক্সপ্রেস: ৮ হাজার ৬২৫ টাকা
৫ বছর মেয়াদ সম্পন্ন ৬৪ পৃষ্ঠা সম্বলিত পাসপোর্ট
· রেগুলার: ৬ হাজার ৩২৫ টাকা
· এক্সপ্রেস: ৮ হাজার ৬২৫ টাকা
· সুপার এক্সপ্রেস: ১২ হাজার ৭৫ টাকা
১০ বছর মেয়াদ সম্পন্ন ৪৮ পৃষ্ঠা সম্বলিত ই-পাসপোর্ট
· রেগুলার: ৫ হাজার ৭৫০ টাকা
· এক্সপ্রেস: ৮ হাজার ৫০ টাকা
· সুপার এক্সপ্রেস: ১০ হাজার ৩৫০ টাকা
১০ বছর মেয়াদ সম্পন্ন ৬৪ পৃষ্ঠা সম্বলিত পাসপোর্ট
· রেগুলার: ৮ হাজার ৫০ টাকা
· এক্সপ্রেস: ১০ হাজার ৩৫০ টাকা
· সুপার এক্সপ্রেস: ১৩ হাজার ৮০০ টাকা
আরো পড়ুন: ই-পাসপোর্টে ভুল তথ্য সংশোধন পদ্ধতি
আবেদন পত্রসহ নথিপত্র জমা ও বায়োমেট্রিক নিবন্ধন পদ্ধতি
উপরোল্লিখিত যাবতীয় কাগজপত্র নিয়ে পূর্বনির্ধারিত দিনে উপস্থিত হতে হবে সংশ্লিষ্ট পাসপোর্ট অফিসে। এই দিন আবেদনকারীর ছবি তোলা এবং হাতের আঙ্গুলের ছাপ নেওয়া হয়। বায়োমেট্রিক প্রক্রিয়ার সুবিধার্তে ছবি উঠানোর জন্য অবশ্যই রঙ্গিন পোশাক পরে পাসপোর্ট কেন্দ্রে যেতে হবে।
যাবতীয় কাজ শেষে প্রার্থীকে বিতরণের সম্ভাব্য তারিখ সম্বলিত একটি স্লিপ দেওয়া হবে। এই স্লিপটি প্রার্থীর বায়ো নিবন্ধনের প্রমাণপত্র, তাই এটি পাসপোর্ট সংগ্রহের দিন অবশ্যই সাথে রাখতে হবে।
অনলাইনে ই-পাসপোর্ট আবেদনের সর্বশেষ অবস্থা যাচাই করবেন যেভাবে
বায়ো নিবন্ধনের দিন থেকে পাসপোর্ট সংগ্রহের সম্ভাব্য দিনটির আগে অনলাইনে পাসপোর্ট আবেদনের অবস্থা যাচাই করা যায়। এর জন্য সরাসরি চলে যেতে হবে-
https://www.epassport.gov.bd/authorization/application-status- লিঙ্কে।
পাসপোর্ট অফিস থেকে দেয়া সেই বিতরণ স্লিপে ১৩ অঙ্ক বিশিষ্ট একটি অ্যাপ্লিকেশন আইডি পাওয়া যাবে। আবেদনের বর্তমান অবস্থা যাচাইয়ের জন্য এই আইডি অথবা আবেদন ফর্মে থাকা ওআইডি (অনলাইন রেজিস্ট্রেশন আইডি) ব্যবহার করতে হবে।
আরো পড়ুন: পুরাতন পাসপোর্ট নবায়নের উপায়
পুলিশ ভেরিফিকেশন ছাড়া ই-পাসপোর্ট সংগ্রহ
পূর্বে বায়োমেট্রিক নেয়ার কিছুদিনের মধ্যে পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য কল করা হতো। এখন থেকে এই কার্যক্রমটি আর সম্পন্ন হবে না। ই-পাসপোর্ট সংগ্রহের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত হয়ে গেলে যথারীতি আবেদনপত্রে উল্লেখিত মোবাইল নাম্বার ও ই-মেইল ঠিকানায় নির্দিষ্ট তারিখ সম্বলিত বার্তা পাঠানো হবে। তদানুসারে বিতরণ স্লিপ ও এনআইডি কার্ড সঙ্গে নিয়ে সংশ্লিষ্ট পাসপোর্ট কার্যালয়ে হাজির হতে হবে।
পরিশিষ্ট
অনলাইনে আবেদন করে পুলিশ ভেরিফিকেশন ছাড়া ই-পাসপোর্ট করার এই পদ্ধতি পাসপোর্ট প্রাপ্তির সময়কে আরো কমিয়ে আনবে। এতদিন আবেদন ফর্ম পূরণ থেকে বায়োমেট্রিক পর্যন্ত প্রতিটি ধাপ বেশ সাবলীল ভাবে উতড়ে যাওয়া যেতো। কিন্তু বিড়ম্বনায় পড়তে হতো পুলিশ ক্লিয়ারেন্স পর্যায়ে এসে। এবার প্রতিটি স্তরের নাগরিকদের রেহাই মিলবে এই পুলিশি হয়রানি থেকে। উপরন্তু, পুরো প্রক্রিয়ার কেন্দ্রবিন্দুতে এনআইডি কার্ডকে রাখার ফলে নথিটি আপ-টু-ডেট রাখার ব্যাপারে সচেতনতা সৃষ্টি হবে জনসাধারণের মাঝে। সর্বসাকূল্যে, এটি পাসপোর্ট পরিষেবা তুলনামূলক সহজীকরণের অভিমুখে এক বিরাট পদক্ষেপ।
আরো পড়ুন: অনলাইনে ই-পাসপোর্ট আবেদনে ভুল হলে সংশোধনের নিয়ম
৩৪ দিন আগে
পাসপোর্টে পুলিশ ভেরিফিকেশনের প্রয়োজনীয়তা শিথিল করে পরিপত্র
পাসপোর্ট দেওয়ার ক্ষেত্রে পুলিশ ভেরিফিকেশনের প্রয়োজনীয়তা শিথিল করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি পরিপত্র জারি করেছে।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সুরক্ষা সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব কাজী গোলাম তৌসিফ স্বাক্ষরিত পরিপত্রে বলা হয়েছে, পাসপোর্ট সেবা সহজীকরণের লক্ষ্যে সরকার কয়েকটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আরও পড়ুন: জন্মনিবন্ধন, এনআইডি ও পাসপোর্টে হবে একই নম্বর: মন্ত্রীপরিষদ সচিব
সেগুলো হলো, নতুন পাসপোর্টের আবেদনের ক্ষেত্রে অনলাইনে যাচাইকৃত জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যের ভিত্তিতে আবেদনকারীকে পুলিশ ভেরিফিকেশন ব্যতিরেকে পাসপোর্ট দিতে হবে; বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিক এবং অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য পাসপোর্টের নতুন আবেদনের ক্ষেত্রে অনলাইনে যাচাইকৃত জন্ম নিবন্ধন সনদের তথ্যের ভিত্তিতে আবেদনকারীকে পুলিশ ভেরিফিকেশন ব্যতিরেকে পাসপোর্ট প্রদান করতে হবে।
এছাড়া পাসপোর্ট পুনঃইস্যুর ক্ষেত্রে বিদ্যমান পাসপোর্টের সাথে চাওয়া মৌলিক তথ্যের (নিজ নাম, পিতা-মাতার নাম, জন্ম তারিখ, জন্ম স্থান) পরিবর্তন হলে জাতীয় পরিচয়পত্রে প্রদত্ত তথ্য দিয়ে পাসপোর্ট ইস্যু করা যাবে বলে জানানো হয়েছে পরিপত্রে।
৪৮ দিন আগে
পাসপোর্ট পেতে লাগবে না পুলিশ ভেরিফিকেশন: প্রধান উপদেষ্টা
পাসপোর্ট পেতে নাগরিকদের এখন থেকে আর পুলিশের ভেরিফিকেশন লাগবে না বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। রবিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীতে তার কার্যালয়ে জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের উদ্বোধনের সময়ে তিনি এমন কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সরকার নতুন নিয়ম চালু করেছে যে এখন থেকে আর পুলিশ ভেরিফিকেশন লাগবে না। পাসপোর্ট পাওয়া নাগরিকদের একটি অধিকার। জন্মসনদ বা এনআইডির জন্য যদি পুলিশ ভেরিফিকেশনের দরকার না পড়ে, তাহলে পাসপোর্টের বেলায় সেটা লাগবে কেন?
এ সময়ে সরকারকে একটি টিম হিসেবে কাজ করতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এটা টিমওয়ার্ক, পুরো টিমের সফলতাকে বাধাগ্রস্ত করে এমন কিছু আমাদের এড়িয়ে যাওয়া উচিত।’
ডিসি সম্মেলনে তিনি বলেছেন, ‘এটা মহাশক্তিধর একটি সমাবেশ। আমরা যা করি, যা চিন্তা করি, যা পরিকল্পনা করি, সেটাই সরকার, সেটাই সরকারের চিন্তা, সরকারের ভাবনা। সেটাই সরকারের কর্তব্য। কাজেই এই মহাশক্তি নিয়ে আমরা কী কাজ করব, কী কাজের জন্য আমরা তৈরি, কী কাজে আমরা সফল, কী কাজে আমরা বিফল, সেগুলোই আজকের সমাবেশের আলোচ্য বিষয়।’
আরও পড়ুন: জাতীয় ঐকমত্য কমিশন: রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক শনিবার
‘সেখানে কাউকে স্তুতি দিয়ে সময় নষ্ট করার কোনো সুযোগ নেই। এই স্তুতি বাক্য পরিহার করার আমরা একটা সিদ্ধান্ত নিলাম। সভা-সমিতিতে স্তুতি বাক্য খুব অগ্রহণযোগ্য জিনিস বলে আমরা চালু করব,’ যোগ করেন তিনি।
রোববার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের শাপলা হলে তিন দিনের ডিসি সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছিলেন ইউনূস।
সরকার পরিচালনাকে খেলার দলের সঙ্গে তুলনা করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে যা কিছু করণীয়, সেই করণীয়র দায়িত্বে আমরা সবাই আছি; এমনভাবে চিন্তা করুন, আমরা একটা খেলার- ক্রিকেট বা ফুটবল খেলার খেলোয়াড়।’
৫০ দিন আগে
পুলিশ ভেরিফিকেশনে রাজনৈতিক মতাদর্শ না দেখার সুপারিশ কমিশনের
পুলিশ ভেরিফিকেশনে রাজনৈতিক মতাদর্শ না দেখার সুপারিশ করেছে পুলিশ সংস্কার কমিশন। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে প্রতিবেদন জমা দেন পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন।
এতে চাকরিপ্রার্থী যদি বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতা সংক্রান্ত কোনো কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকলে তা ভেরিফিকেশন রিপোর্টে প্রতিফলিত করতে হবে বলে সুপারিশ করেছে কমিশন।
আরও পড়ুন: স্বচ্ছ কাঁচের ঘরে রিমান্ডের সুপারিশ পুলিশ সংস্কার কমিশনের
সুপারিশে বলা হয়েছে, জাতীয় পরিচয়পত্রধারী (এনআইডি) চাকরিপ্রার্থীদের স্থায়ী ঠিকানা অনুসন্ধানের বাধ্যবাধকতা রহিত করা যেতে পারে। চাকরিপ্রার্থীর বিভিন্ন শিক্ষাগত যোগ্যতা/শিক্ষা সনদপত্র/ট্রান্সক্রিপ্ট/মার্কশিট ইত্যাদি যাচাই-বাছাই করার দায়-দায়িত্ব নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের ওপর বর্তাবে। এগুলো পুলিশ ভেরিফিকেশনের অংশ হবে না।
এতে আরও বলা হয়েছে, পুলিশ ভেরিফিকেশনের ক্ষেত্রে চাকরিপ্রার্থীর রাজনৈতিক মতাদর্শ যাচাই-বাছাইয়ের প্রয়োজনীয়তা রহিত করাসহ এতদসংক্রান্ত সংশ্লিষ্ট বিধিমালা সংস্কার করা যেতে পারে। তবে চাকরিপ্রার্থী বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতা সংক্রান্ত কোনো কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকলে তা ভেরিফিকেশন রিপোর্টে প্রতিফলিত করতে হবে।
সুপারিশে বলা হয়েছে, চাকরির জন্য সকল পুলিশ ভেরিফিকেশন সর্বোচ্চ এক মাসের মধ্যে সমাপ্ত করতে হবে এবং অতিরিক্ত সময়ের প্রয়োজন হলে সর্বোচ্চ ১৫ দিন পর্যন্ত সময় বৃদ্ধি করা যেতে পারে।
এতে আরও বলা হয়েছে, ব্রিটিশ আমলে প্রণীত কিছু কিছু আইন ও প্রবিধান যুগের প্রয়োজনে সংস্কার/হালনাগাদ করা জরুরি হয়ে পড়েছে।
আরও পড়ুন: ‘জনবান্ধব পুলিশিং ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পুলিশ সংস্কার জরুরি’
এতে আরও বলা হয়েছে, ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮; বলপ্রয়োগ ও মানবাধিকার সুরক্ষায় এ আইনের প্রয়োজনীয় পরিবর্তনের সুপারিশ করা হলো। পি আর বি, ১৯৪৩; জনবান্ধব ও জবাবদিহিমূলক পুলিশ বাহিনী গঠনে এ প্রবিধানমালায় সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে পরিবর্তন/পরিমার্জন অথবা নতুন প্রবিধানমালা প্রণয়ন করা যেতে পারে।
৮২ দিন আগে
পুলিশ ভেরিফিকেশনে থাকছে না রাজনৈতিক বিবেচনা: সফর রাজ হোসেন
পুলিশ সংস্কার কমিশন পুলিশ ভেরিফিকেশনে রাজনৈতিক পরিচয় তুলে দেওয়ার সুপারিশ করেছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন।
তিনি বলেন, আমরা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা করেছি। অক্টোবরের ৬ তারিখ থেকে আমরা কাজ শুরু করেছি।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে উপদেষ্টার নিজ দপ্তরে পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রথম সভা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।
তিনি বলেন, চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর কমিশনের রিপোর্ট দাখিল করার কথা রয়েছে। আমরা মোটামুটি মধ্য সময় এসেছি। প্রাথমিক পর্যায়ে বেশকিছু কাজ করেছি। এটাকে একটা খসড়ার চূড়ান্ত রূপ বলা যায়।
আরও পড়ুন: পুলিশ বাহিনীর নিজেদের প্রমাণ করার এখনই সময়: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
সফর রাজ হোসেন বলেন, আমরা যেসব সুপারিশ করছি এর কিছু কিছু বিষয় স্বল্প সময়ে বাস্তবায়ন করা সম্ভব। কিছু কিছু বিষয় রয়েছে যেগুলো বাস্তবায়ন করতে দীর্ঘ সময় প্রয়োজন। কিছু সুপারিশ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অর্থের প্রয়োজন। কিছু ক্ষেত্রে সরকার আইন ও বিধিবিধান পাল্টাতে হবে৷ আমরা এগুলো সুপারিশ করছি৷ আমরা শুধু সুপারিশ করার মালিক। এছাড়া সরকারি, আধা সরকারি কিংবা ব্যাংকের চাকরির জন্য পুলিশ ভেরিফিকেশন করতে হয়। এই পদ্ধতি ১৯২৮ সাল থেকে হয়ে আসছে। এটা প্রায় ৯৬ বছর ধরে চলছে বলে জানান সফর রাজ হোসেন।
তিনি আরও বলেন, ব্রিটিশ আইনের ম্যানুয়াল অনুযায়ী এখানে কয়েক ধরনের প্রশ্ন এবং তদন্ত করা হয়। এতে অনেক সময় অনেক চাকরিপ্রার্থী বাদ পড়ে। আরেকটি বিষয় আছে আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে কেউ রাজনীতি করে কিনা এবং রাষ্ট্রবিরোধী কেউ আছে কিনা। এটা ব্রিটিশদের আঙ্গিকে চিন্তা করা হতো। সম্প্রতি একটি অভিযোগ এসেছে যে, কারও আত্মীয়-স্বজন রাজনীতি করে কিন্তু সরকারি দল করে না, তাদের ক্ষেত্রে এসব যুক্তি দেখে চাকরি দেওয়া হয়নি৷ দেখা গেছে রাজনৈতিকভাবে তাদের খালা, ফুফা বা অন্য কেউ রাজনীতিতে জড়িত৷ পরিবারের কেউ না হলে চাকরি বঞ্চিত হয়েছেন৷ আমরা এই প্রথাকে বাদ দেওয়ার সুপারিশ করছি।
আরও পড়ুন: ২৮ পুলিশ কর্মকর্তাকে বদলি
তিনি বলেন, ব্যাংকের গার্ড থেকে ক্লার্ক সবার চাকরি গুরুত্বপূর্ণ৷ অনেক সময় নাম পরিচয় পরিবর্তন করে কেউ চাকরিতে ঢুকতে পারে৷।পরবর্তীতে দেখা যায় সে অপরাধের সঙ্গে জড়িত। সুতরাং ভেরিফিকেশন জরুরি।
তিনি আরও বলেন, যেভাবেই হোক এ পুলিশ ভেরিফিকেশনে যাতে ভোগান্তি না হয় সেই বিষয়ে সুপারিশ করেছি। সুতরাং পুলিশ ভেরিফিকেশন হবে কিন্তু সেখানে আত্মীয়স্বজনের রাজনৈতিক বিবেচনা আমলযোগ্য হবে না।
আরও পড়ুন: পুলিশ-জনগণের সম্পর্ক পুনঃস্থাপন জরুরি: নৌপরিবহন উপদেষ্টা
১৪০ দিন আগে