মানসিক সমস্যা
বাইপোলার ডিসঅর্ডার: কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার
একটি সুস্থ মানসিক অবস্থা একটি উন্নত জীবনযাত্রার রূপকল্প। অন্যদিকে, মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা ক্রমশ বিপর্যস্ত করে তুলতে পারে নিত্য দিনের জীবনধারাকে। শুধু তাই নয়, গুরুতর রোগের মতোই তা বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে মানবদেহের ওপর। বাইপোলার ডিসঅর্ডার মনস্তত্ত্বের ঠিক তেমনি একটি অবস্থা, যেখানে মেজাজের স্বাভাবিক কার্যকলাপে দেখা দেয় অসংলগ্নতা। চলুন, মানসিক এই সমস্যাটির কারণ ও লক্ষণ জানার পাশাপাশি এ থেকে উত্তরণের উপায় সম্বন্ধে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
বাইপোলার ডিসঅর্ডার কি
মেজাজের ভারসাম্যহীনতার মাধ্যমে যে মানসিক সমস্যার প্রকাশ ঘটে সেটি বাইপোলার ডিসঅর্ডার বা দ্বিপ্রান্তিক ব্যাধি নামে পরিচিত। ‘বাইপোলার’ শব্দটির মাধ্যমে মেজাজের দুই বিপরীত মেরুকে বোঝানো হয়, যার একটি উন্মাদনা, এবং অন্যটি বিষণ্নতা। উন্মাদনার মাধ্যমে ব্যক্তির মাঝে উচ্ছ্বাসের অপ্রতিরোধ্য অনুভূতি বিরাজ করে। অন্যদিকে, বিষণ্নতা মুহূর্তগুলোতে ব্যক্তি গভীর দুঃখ ও হতাশার ভেতর দিয়ে সময় কাটান।
বাইপোলার ডিসঅর্ডার রোগের কারণ
বাইপোলার ডিসঅর্ডার মূলত কতগুলো দীর্ঘ প্রক্রিয়ার সমষ্টি, যা ধীরে ধীরে ব্যক্তিকে অসামঞ্জস্য আচরণের দিকে ধাবিত করে। প্রধানত তিনটি কারণে এমন অবস্থার অবতারণা ঘটে। এগুলো হলো-
জিনগত কারণ
বাবা-মা এবং ভাইবোনদের মধ্যে একজনের এ সমস্যা থাকলে পরবর্তীতে অন্যজনের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। ওয়েবএমডি অনুসারে, বাবা বা মা যে কোনো একজনের এই ব্যাধি থাকলে তাদের সন্তানদের এই ব্যাধি হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ১০ থেকে ২৫ শতাংশ। আর দুজনেরই থাকলে এই সম্ভাবনা ৫০ শতাংশে উন্নীত হয়। যমজ ভাইবোনের মধ্যে একজনের এই ব্যাধি থাকলে অন্যজনের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ১০ থেকে ২৫ শতাংশ।
আরো পড়ুন: অটিজম কী? অটিজম সচেতনতা ও সহমর্মিতা কেন জরুরি?
জীবনের কোনো স্পর্শকাতর ঘটনা
যাদের পরিবারের পূর্বে কারো দ্বিপ্রান্তিক ব্যাধি রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে প্রচণ্ড মানসিক চাপ সৃষ্টিকারী ঘটনাগুলো ট্রিগার হিসেবে কাজ করতে পারে। তাছাড়া জিনগত বৈশিষ্ট্য না থাকলেও ট্রমাজনিত অভিজ্ঞতাগুলো এই ব্যাধির দিকে ধাবিত করতে পারে। যেমন শৈশবের কোনো অপ্রিয় ঘটনা, প্রিয়জনের মৃত্যু, জীবনের বড় পরিবর্তন, চাকরি, সম্পর্ক বা আর্থিক চাপ উন্মাদনা বা বিষণ্নতার দশাগুলোর সূচনা ঘটাতে পারে।
মাদকাসক্তি
উত্তেজক রাসায়নিক, ওষুধ বা অ্যালকোহল নেওয়া মেজাজের ভারসাম্যতাকে বিনষ্ট করে। শুধু মাদকের নেশাই নয়, প্রয়োজনীয় ওষুধ ঘন ঘন সেবনের ফলেও মেজাজের অসামঞ্জস্যতা সৃষ্টি হতে পারে।
এছাড়াও অনেক বাইপোলার ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত ব্যক্তি নিজেদের অবস্থার উন্নতির জন্য নিজে থেকে ঔষধ সেবনের দিকে ঝুঁকে পড়েন। এতে তাদের ব্যাধির উপসর্গগুলো উল্টো বেড়ে গিয়ে মানসিক অবস্থা আরও খারাপ হতে পারে।
বাইপোলার ডিসঅর্ডার রোগে কারা সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়
জিনগত কারণগুলো থেকে এই মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা প্রায় ৭০ থেকে ৯০ শতাংশ। শৈশবের কোনো অপ্রিয় ঘটনা এবং প্রিয়জনের ক্ষতি থেকে সৃষ্ট ট্রমা সবচেয়ে বড় ঝুঁকি তৈরি করে। মাদক সেবন থেকে এই মানসিক স্বাস্থ্য জটিলতার ক্ষেত্রে সর্বাধিক বিপদের মধ্যে রয়েছে তরুণরা।
আরো পড়ুন: রক্তের গ্রুপ: কে কাকে রক্ত দিতে পারবে?
বাইপোলার ডিসঅর্ডার রোগের লক্ষণ
মেজাজ ও কার্যকলাপের মাত্রার নাটকীয় পরিবর্তনটা দৃশ্যমান হতে শুরু করে উন্মাদনা ও বিষণ্নতা এই দুই ভিন্ন পর্যায়ে।
উন্মাদনাকেন্দ্রিক উপসর্গ
এই উপসর্গগুলোর মাধ্যমে মূলত ব্যক্তির শারীরিক সক্ষমতা ও কার্যকলাপের মাত্রার উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দৃষ্টিগোচর হয়।
· উচ্ছ্বাস বা বিরক্তি: কোনো কোনো সময় ব্যক্তি অতিরিক্ত উচ্ছ্বাস অনুভব করেন বা নিজেকে সর্বাধিক সুখী মনে করেন। এই অনুভূতির আরেক নাম ইউফোরিয়া। কিছু সময় (অনির্দিষ্ট) পরেই তিনি আকস্মিকভাবে প্রচণ্ড ক্রোধ অনুভব করেন। বিশেষ করে যখন কোনো চ্যালেঞ্জ অনুভব করেন তখন তিনি রীতিমতো আক্রমণাত্মক ভঙ্গিমায় অবস্থান নেন।
· চিন্তা ও কথাবার্তায় দ্রুততা: এ ধরনের ব্যক্তিরা একাধিক বিষয়ের চিন্তায় নিমজ্জিত থাকে। অথচ নির্দিষ্ট কোনো বিষয়ে তারা চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে ব্যর্থ হন। তার বহিঃপ্রকাশ তাদের কথাবার্তায়ও দেখা যায়। প্রতিটি বাক্য খুব দ্রুতগতিতে বলার কারণে প্রায় পুরোটা সময় শ্রোতাদের কাছে তা দুর্বোধ্য মনে হয়।
· আবেগপ্রবণতা এবং যে কোনো কিছু ভুলভাবে বিচার করা: এ সমস্যার ভূক্তভোগীরা আর্থিক সিদ্ধান্ত, সম্পদের অপব্যয় বা বেপরোয়া ড্রাইভিংয়ের মতো বিষয়গুলোতে আবেগের বশবর্তী হয়ে সিদ্ধান্ত নেন। এছাড়া জীবনের নানা লেনদেন বা প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করার সময় সবকিছুকে ভুল ব্যাখা দাঁড় করান।
· অনিদ্রা বা অতিরিক্ত ঘুম: এ সমস্যায় জর্জরিত ব্যক্তিদের কখনো স্বাভাবিকের চেয়ে কম ঘুমের দরকার হয়। আবার কখনো দেখা যায় যে, দীর্ঘক্ষণ যাবত ঘুমের পরেও জেগে থাকতে (বিশেষ করে দিনের বেলা) সমস্যা হচ্ছে।
আরো পড়ুন: বন্যা পরবর্তী পানিবাহিত রোগ থেকে সতর্ক থাকার উপায়
বিষণ্নতার উপসর্গ
মানসিক অবস্থার এই পর্যায়ে মেজাজ এবং আচরণের অসঙ্গতি পরিলক্ষিত হয়।
· ক্রমাগত দুঃখ বা হতাশা: এক্ষেত্রে ব্যক্তি দীর্ঘ সময় ধরে হতাশার মাঝে নিমজ্জিত থাকেন এবং সর্বদা দুঃখী অনুভব করেন।
· আগ্রহ বা আনন্দ কমে যাওয়া: এক সময় যে বিষয়গুলো অত্যন্ত উপভোগ্য ছিল, সেগুলোর প্রতি আর ভালো লাগা কাজ করে না।
· ক্লান্তি: প্রতিদিনের সাধারণ এবং সহজ কাজগুলোতে অত্যধিক ক্লান্তি অনুভূত হয়। সেই সঙ্গে স্পৃহা না থাকায় সব মিলিয়ে সামগ্রিকভাবে কর্মদক্ষতা লোপ পায়।
· মনোযোগ নিবদ্ধ করতে অসুবিধা: সুনির্দিষ্ট কোনো বিষয়ে মনোযোগে অপারগতা দেখা দেয়। এর ফলে ব্যক্তি যথেষ্ট প্রচেষ্টার পরেও যথাসময়ে সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ হন।
মিশ্র উপসর্গ
অধিকাংশের মধ্যে এই বিষণ্নতা এবং উন্মাদনা একই সঙ্গে শুরু হয়। এতে করে এমন এক মানসিক অস্থিরতা সৃষ্টি হয়, যেখানে ভুক্তভোগী অযাচিত কোনো ভুল করে বসেন বা বড় কোনো ঝুঁকি নিয়ে ফেলেন। মনের এই মিশ্র অবস্থা সবথেকে গুরুতর, কেননা চরম পর্যায়ে এটি ওই ব্যক্তিকে আত্মহত্যার দিকেও ঠেলে দিতে পারে।
আরো পড়ুন: এমপক্সের কারণ, লক্ষণ, প্রতিরোধ ও চিকিৎসা
বাইপোলার ডিসঅর্ডার রোগের প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা
জিনগত বৈশিষ্ট্যের ক্ষেত্রে বাইপোলার ডিসঅর্ডার এড়ানোটা জটিল। তবে সম্পূর্ণ প্রতিরোধ করা না গেলেও এর ক্ষতির মাত্রা কমানো যেতে পারে। যে পদক্ষেপগুলো এখানে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে সেগুলো হলো-
· নিয়মিত সঠিক ব্যায়াম, ইয়োগা ও ধ্যান করার অভ্যাস করা
· প্রতিদিনই পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে সুন্দর সময় কাটানো
· যে কোনো মূল্যে মাদক থেকে বিরত থাকা
· মেজাজে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে এমন ওষুধ এড়িয়ে চলা
· নিয়মিত ঘুমের সময়সূচি বজায় রাখা
· সুষম খাদ্যাভ্যাস চালু রাখা
· সৃজনশীল কাজে নিয়োজিত হওয়া
· ইতিবাচক সম্পর্ক লালন করা
আরো পড়ুন: অ্যাজমা, শ্বাসকষ্ট বা হাঁপানি রোগের কারণ, লক্ষণ ও প্রতিরোধের উপায়
বাইপোলার ডিসঅর্ডার রোগ প্রতিকারের উপায়
শারীরিক ব্যাধির মতো এই মানসিক অবস্থার আসলে নির্দিষ্ট কোনো প্রতিষেধক নেই। তবে জীবনযাত্রার উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনসহ কিছু থেরাপিতে অংশ নেওয়ার মাধ্যমে মানসিক অবস্থার উন্নতি করা যায়। এই প্রতিকারমূলক ব্যবস্থার মধ্যে রয়েছে-
ওষুধ
এ ক্ষেত্রে সাধারণত যে ওষুধগুলো গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয় সেগুলো হলো- মুড স্টেবিলাইজার, অ্যান্টিসাইকোটিক্স ও অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট্স। এখানে লিথিয়ামের মতো মুড স্টেবিলাইজারগুলো মিশ্র উপসর্গগুলো প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
অন্যদিকে, অ্যান্টিসাইকোটিকগুলো উন্মাদনাকে নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হয়। এখানে খেয়াল রাখা উচিত যে, ওষুধগুলোর অনিয়ন্ত্রিত ডোজ সেবনে উল্টো উন্মাদনাকে ত্বরান্বিত করতে পারে। তাই এগুলো ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করে নেওয়া অত্যাবশ্যক।
সাইকোথেরাপি
জ্ঞানগত-আচরণগত থেরাপি (সিবিটি) ব্যক্তির চিন্তাভাবনা এবং আচরণগত অসামঞ্জস্যতাগুলোর চিকিৎসায় বেশ কার্যকর। ইন্টার্পাসনাল ও সোশ্যাল রিদম থেরাপি দৈনন্দিন রুটিন বজায় এবং সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা করে। এই কৌশলগুলো ব্যক্তির ঘুম, খাবার ও অন্যান্য কার্যকলাপের সময়সূচি স্থিতিশীল করতে সাহায্য করে।
আরো পড়ুন: এসির বাতাসে শিশুকে নিরাপদ রাখবেন যেভাবে
জীবনধারার পরিবর্তন
এই ডিসঅর্ডার থেকে আরোগ্য লাভের সবচেয়ে মোক্ষম উপায় হলো জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনা। তবে এটি বেশ সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। নিয়মিত ব্যায়াম দীর্ঘ মেয়াদে মেজাজকে স্বাভাবিক ও আবেগকে স্থিতিশীল রাখতে এবং মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। স্বাস্থ্যকর ঘুম ও পুষ্টিকর খাবার সর্বাঙ্গীনভাবে মানসিক সুস্থতাকে বিকশিত করে।
মানসিক সমর্থন
জীবনধারাকে পরিবর্তিত করতে যে বিষয়টি হাতিয়ার হিসেবে কাজ করে তা হলো পরিবার, বন্ধু ও থেরাপিস্টের মানসিক সমর্থন। দ্বিপ্রান্তিক ব্যাধির মূল চিকিৎসাটিই হচ্ছে এই সমর্থন নিশ্চিত করা। এগুলো অধিকাংশ ক্ষেত্রে ব্যক্তির মনস্তত্ত্বে অনেকটা সাপ্লিমেন্টের মতো কাজ করে।
শেষাংশ
বাইপোলার ডিসঅর্ডার সনাক্ত করার জন্য এর কারণ ও লক্ষণগুলো গুরুত্বের সঙ্গে যাচাই করা প্রয়োজন। মানসিক সমস্যাটির নেপথ্যে রয়েছে জিনগত বৈশিষ্ট্য, মানসিক আঘাত ও মাদকাসক্তি। লিঙ্গ বা বয়স নির্বিশেষে প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই উপসর্গগুলোকে সূচনালগ্নেই খেয়াল করা উচিত। এর ফলে প্রাথমিক অবস্থাতেই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়।
অপরদিকে, এরইমধ্যে এই সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের ওষুধ ও থেরাপির পাশাপাশি দরকার মানসিক সমর্থন। উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা স্বাস্থ্যসম্মত জীবনধারা বজায় রাখার সার্বিক প্রচেষ্টাকে সফল করে তুলতে পারে।
আরো পড়ুন: ভিমরুলের কামড় কতটা ভয়ংকর? সাবধানতা ও করণীয়
১ মাস আগে
লালমনিরহাটে ২ নারীর লাশ উদ্ধার
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলায় পৃথক ঘটনায় দুই নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার দুপুর ১২টায় উপজেলার দলগ্রাম ইউনিয়নের উত্তর দলগ্রাম ও মদাতী ইউনিয়নের উত্তর মুশরত মদাতী এলাকা থেকে লাশ দুটি উদ্ধার করা হয়।
নিহতরা হলেন- ফারিয়া বেগম (২২) ও রূপালী খাতুন (২৫)।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, সকালে দলগ্রাম ইউনিয়নের উত্তর দলগ্রাম এলাকায় যৌতুকের টাকার জন্য স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ির নির্যাতনের শিকার হয়ে ফারিয়া বেগম নামে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় তার স্বামী সুজন মিয়া (৩০), তার বাবা শাহাজাহান আলী ও মা ফরিফা বেগম পলাতক আছেন। খবর পেয়ে কালীগঞ্জ থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
আরও পড়ুন: যমুনায় ২ স্কুলছাত্র নিখোঁজ: এক জনের লাশ উদ্ধার
অপরদিকে উপজেলার মদাতী ইউনিয়নের উত্তর মুশরত মদাতী এলাকা থেকে রূপালী খাতুন নামে এক নারীর অগ্নিদগ্ধ লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি উত্তর মুশরত মদাতী ৬নং ওয়ার্ডের রফিকুল ইসলামের মেয়ে। নিহত ওই নারী তালাকপ্রাপ্ত হয়ে বাবার বাড়িতে বসবাস করে আসছেন।
রূপালীর বাবা রফিকুল ইসলাম বলেন,দুই বছর আগে মেয়ে তালাকপ্রাপ্ত হয়ে বাড়িতে আসে। কয়েকদিন থেকে তার একটু মানসিক সমস্যা ছিল।
বিষয় দুটি নিশ্চিত করে কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম রসূল বলেন, আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তবে বাড়ির অদূরে কিভাবে রূপালী খাতুন সুপারি বাগানে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা গেলো বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরও পড়ুন: সিলেটে গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
২ বছর আগে
লালবাগে তিন তলার ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে গৃহবধূর আত্মহত্যা!
রাজধানীর লালবাগে তৃতীয় তলার ছাদ থেকে পড়ে নাসরিন আক্তার (৪০) নামে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার বিকালে লালবাগ ৮ নং গলিতে এ ঘটনা ঘটে।
স্বজনদের ধারণা, মানসিক অবসাদগ্রস্ততা থেকেই নাসরিন ছাদ থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
নিহত নাসরিন মো. জাফরের স্ত্রী। জাফর নিলক্ষেত পেট্রোল পাম্পে চাকরি করেন। লালবাগ ৮ নং গলিতে নিজস্ব তিন তলা ভবনের তৃতীয় তলায় স্বামীর সাথে নাসরিন থাকতেন।
আরও পড়ুন: প্রেমিকার আত্মহত্যার খবরে ভবন থেকে লাফ দিলেন প্রেমিক
স্বজনরা জানায়, ছাদ থেকে পড়ে গুরুতর আহত অবস্থায় স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসক পরীক্ষা নিরিক্ষার পর বিকাল সোয়া চারটায় তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মো. জাফর জানান, ঘটনার সময় তিনি ঘুমিয়ে ছিলেন। এ সময় নাসরিন ছাদ থেকে পড়ে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
আরও পড়ুন: বিষপানে কুড়িগ্রামে স্কুলশিক্ষিকার ‘আত্মহত্যা’
তিনি বলেন, নাসরিন বেশ কিছু দিন ধরে অসুস্থ ছিল। সে করোনা আক্রান্ত হয়েছিল। তার মানসিক সমস্যা দেখা দিয়েছিল। ডাক্তারও দেখিয়েছি। সে বলতো আমি বাঁচবো না, মরে যাবো।
নিহত নাসরিনের আরেক আত্মীয় জানিয়েছেন, তিনি শান্ত প্রকৃতির ছিলেন। সব সময় হাসিখুশি থাকতেন। ১৯ বছরের সংসার জীবনে তাদের কোন সন্তান না হওয়ায়, অনেকে অনেক কথা বলতো, এ নিয়ে তিনি মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। তার ধারণা, হয়তো নাসরিন নিজেই ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেছেন।
এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাড়ির সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আব্দুল খাঁন। তিনি বলেন, গৃহবধূর লাশ হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে অবহিত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রে শাবিপ্রবি শিক্ষকের আত্মহত্যা
৩ বছর আগে
দেশে ৬০ ঊর্ধ্ব প্রায় ৮ শতাংশ মানুষ ডিমনেশিয়ায় ভুগতে পারে: গবেষণা
একটি জাতীয় সমীক্ষায় বলা হয়েছে যে, বাংলাদেশে ৬০ বছর বা তার বেশি বয়সী প্রতি ১২ জনের মধ্যে একজন মানুষ অর্থাৎ মোট জনসংখ্যার ৮ শতাংশ মানুষের ডিমনেশিয়া হওয়ার প্রবণতা রয়েছে। ডিমনেশিয়া হল এমন একটি মানসিক সমস্যা, যা বয়স বাড়াল কারণে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার ফলে মানুষ সঠিক ভাবে তথ্য মনে রাখতে পারে না এবং কথা বলতে পারে না।
বুধবার আইসিডিডিআর,বি, স্বাস্থ্য অধিদফতর(ডিজিএইচএস) এবং ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স অ্যান্ড হসপিটালের (এনআইএনএস) এর যৌথ উদ্যোগে ‘বাংলাদেশে বয়স্কদের মধ্যে স্মৃতিচারণের বোঝা’ শীর্ষক ভার্চুয়াল ওয়েবিনারের আয়োজন করে। আলোচনায় সাম্প্রতিক গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
আরও পড়ুন: জাবিতে বরাদ্দ বেড়েছে গবেষণায়, কমেছে চিকিৎসায়
অন্যান্য বিভাগের তুলনায় ডিমনেশিয়া হওয়ার প্রবণতা রাজশাহীতে ১৫% এবং রংপুরে ১২% বেশি। শহরে এবং গ্রামীণ অঞ্চলে এই প্রবণতার পার্থক্য ৮%।
গবেষণায় বলা হয়, পুরুষদের চেয়ে নারীদের মধ্যে ডিমনেশিয়া হওয়ার প্রবণতা বেশি। এছাড়া, ২০২০ সালে বাংলাদেশে মোট ডিমনেশিয়া রোগীর সংখ্যা প্রায় ১.১ মিলিয়ন হতে পারে বলে ধারণা করা হয়। যার মধ্যে ০.২৮ মিলিয়ন পুরুষ এবং ০.৮৩ মিলিয়ন মহিলা রয়েছে।
আরও পড়ুন: করোনা আক্রান্ত রোগীর শরীরে ৬৫ শতাংশ এন্টিবডির উপস্থিতি রয়েছে: গবেষণা
গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, ২০২৫ সালের মধ্যে এই সংখ্যা বেড়ে ১.৩৭ মিলিয়ন হতে পারে এবং ২০৪১ সালে এই সংখ্যা দ্বিগুণ ২.৪ মিলিয়ন হতে পারে। যথাযথ কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
ডিমনেশিয়া, এমন একটি লক্ষণ যেখানে স্মৃতিশক্তি, চিন্তাভাবনা, আচরণ এবং প্রতিদিনের কার্যকলাপ সম্পাদন করার ক্ষমতা হ্রাস পায়।
আরও পড়ুন: দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় গবেষণা অপরিহার্য : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে, বিশ্বব্যাপী প্রায় ৫০ মিলিয়ন মানুষের ডিমনেশিয়া রয়েছে এবং তাদের মধ্যে ৬০ শতাংশ হলেন নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশের।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশিদ আলম।
আইসিডিডিআর,বি এর নির্বাহী পরিচালক ড. তাহমিদ আহমেদ এবং এনআইএনএসের পরিচালক অধ্যাপক কাজী দ্বীন মোহাম্মদ বিশেষ অতিথি হিসেবে আলোচনায় যুক্ত ছিলেন।
৩ বছর আগে
গলায় ফাঁস দিয়ে খুবি শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা
নিজ বাসায় গলায় ফাঁস দিয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন।
৩ বছর আগে
বিভাগীয় কারণে আনিসুল করিমের মানসিক সমস্যা হয়নি: ডিআইজি হাবিবুর
বিভাগীয় কোনো কারণে পুলিশের সিনিয়র এএসপি আনিসুল করিম শিপনের মানসিক সমস্যা হয়নি বলে জানিয়েছেন ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান।
৪ বছর আগে
রাউফুন নাহারের প্রথম বইয়ের মোড়ক উন্মোচন
মানসিক সমস্যা সমাধান নিয়ে ঢাবির এডুকেশন অ্যান্ড কাউন্সেলিং সাইকোলজি বিভাগের প্রভাষক রাউফুন নাহারের লেখা ‘মনের যত্ন’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে।
৪ বছর আগে