জিমি কার্টার
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টারের মৃত্যুতে ড. ইউনূসের শোক
নোবেল বিজয়ী ও সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টারের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) এক শোকবার্তায় ড. ইউনূস বাংলাদেশের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট কার্টারের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথা তুলে ধরে জিমি কার্টারকে একজন অসাধারণ নেতা, মানবাধিকারের রক্ষক এবং বিশ্বজুড়ে শান্তি ও গণতন্ত্রের প্রবক্তা হিসেবে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট কার্টার ছিলেন বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু। তার প্রেসিডেন্সিয়াল আমলে এবং তার পরেও বহুমাত্রিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক জোরদার ও বিস্তৃত হয়। কার্টার সেন্টারের মাধ্যমে বাংলাদেশে তার কাজ, বিশেষ করে নারীর ক্ষমতায়ন, সুশাসন নিশ্চিত করা এবং গণতন্ত্রের অগ্রগতিতে তার কাজ বাংলাদেশের মানুষের প্রতি তার ভালবাসা এবং আবেগের সাক্ষ্য দেয়। আমরা ১৯৮৬ সালে তার বাংলাদেশ সফরের কথা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি এবং এটি ছিল আমাদের জনগণের জন্য বিরাট অনুপ্রেরণার উৎস।’
ড. ইউনূস বলেন, 'প্রেসিডেন্ট কার্টার শুধু যুক্তরাষ্ট্র ও বৈশ্বিক রাজনীতির একজন আইকনিক ব্যক্তিত্বই ছিলেন না, তিনি আমার প্রিয় বন্ধুও ছিলেন। বছরের পর বছর ধরে নোবেল বিজয়ীদের সমাবেশে অসংখ্যবার তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার বিশেষ সম্মান আমার হয়েছে।’
আরও পড়ুন: পেছনে ফেরার কোনো সুযোগ আমাদের নেই: অধ্যাপক ইউনূস
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘মানবাধিকার ও সামাজিক ন্যায়বিচারের প্রতি তার দৃঢ় প্রতিশ্রুতি আমাকে সব সময় উৎসাহিত করেছে। আমাদের কথোপকথনগুলো তার গভীর নম্রতা, প্রজ্ঞা এবং জনগণের ক্ষমতায়নে দৃঢ় বিশ্বাসের বহিঃপ্রকাশ ছিল। তার উত্তরাধিকার আগামী প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করে চলেছে এতে কোনো সন্দেহ নেই।
বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের পক্ষ থেকে প্রধান উপদেষ্টা যুক্তরাষ্ট্রের জনগণ বিশেষ করে প্রেসিডেন্ট কার্টারের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানানোর পাশাপাশি তার বিদেহী আত্মার শান্তি প্রার্থনা করেন।
১ সপ্তাহ আগে
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার মারা গেছেন
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার মারা গেছেন।
স্থানীয় সময় রবিবার বিকেলে তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে কার্টার সেন্টার।
রবিবার কার্টার সেন্টার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ এ ক বার্তায় বলে, ‘আমাদের প্রতিষ্ঠাতা, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার, আজ বিকেলে জর্জিয়ার প্লেইন্সে মারা গেছেন।’
১৯৭৭ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৩৯তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন জিমি কার্টার। তার বয়স হয়েছিল ১০০ বছর।
কার্টারের প্রেসিডেন্ট থাকাকালে ১৯৭৮ সালের ডিসেম্বর মাসে চীন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি যৌথ বিবৃতি জারি করে। এতে গণপ্রজাতন্ত্রী চীন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ঘোষণা দেয়। ১৯৭৯ সালের ১ জানুয়ারি, উভয় দেশ আনুষ্ঠানিকভাবে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে।
কার্টার ১৯৭৭ সালে পানামা খাল চুক্তি স্বাক্ষর করেন, যা ২০০০ সাল থেকে পানামাকে পানামা খাল অঞ্চলের পূর্ণ অধিকার ফিরিয়ে দেয় এবং এর নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করে।
এছাড়াও, তিনি ১৯৭৮ সালে ক্যাম্প ডেভিড চুক্তি স্বাক্ষরের সাক্ষী ছিলেন। এটি তৎকালীন মিশরের প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদাত এবং ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী মেনাচেম বেগিন স্বাক্ষর করেছিলেন।
প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন শেষে, কার্টার ও তার স্ত্রী একটি বেসরকারি সংস্থা কার্টার সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেন।
কার্টার ১৯২৪ সালের ১ অক্টোবর দক্ষিণ-পূর্ব মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ছিলেন একজন কৃষক, যিনি বিশালা এলাকাজুড়ে বাদাম খেতের মালিক ছিলেন।
কার্টারের স্ত্রী রোজালিন ২০২৩ সালের নভেম্বরে মারা গেছেন। ৭৭ বছর ধরে বৈবাহিক সম্পর্কে ছিলেন তারা। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে কোনো প্রেসিডেন্টের সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী দাম্পত্য জীবন হিসেবে স্থান করে নিয়েছে।
কার্টার ছিলেন দেশের সবচেয়ে দীর্ঘজীবী সাবেক প্রেসিডেন্ট।
১ সপ্তাহ আগে