গাজায় ইসরাইলি হামলা
গাজায় ইসরাইলি হামলার প্রতিবাদে জাবিতে বিক্ষোভ মিছিল
যুদ্ধবিরতির চুক্তি লঙ্ঘন করে গাজার নিরপরাধ মানুষদের ওপর ইসরাইলি বাহিনীর বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও মার্চ ফর প্যালেস্টাইন কর্মসূচি পালন করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (১৯ মার্চ) রাত সোয়া ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকা থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে শহীদ মিনারে এসে একটি প্রতিবাদ সমাবেশের মাধ্যমে কর্মসূচি সমাপ্ত করা হয়।
এসময় নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের শিক্ষার্থী শোয়াইব হাসানের সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যের বুকে একটি সন্ত্রাসী রাষ্ট্র হিসাবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছে ইহুদিবাদী শক্তি। তারা আমেরিকার মদত পেয়ে বার বার আইন লঙ্ঘন করে চুক্তি অমান্য করে নিরপরাধ ফিলিস্তিনিদের উপর বর্বরোচিত হামলা চালিয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। সেইসাথে অনতিবিলম্বে এমন ন্যাক্কারজনক হামলা বন্ধে জাতিসংঘসহ বিশ্বশক্তিগুলোকে এগিয়ে আসার আহবান জানানো হয়।’
বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীদের, ‘জাস্টিস জাস্টিস, উই ওয়ান্ট জাস্টিস; স্টপ জেনোসাইড, জাস্টিস ফর প্যালেস্টাইন; নেতানিয়াহুর দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে; নেতানিয়াহুর আস্তানা, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও; অবৈধ ইসরায়েলের গদিতে, আগুন জ্বালো একসাথে; স্বৈরাচার নিপাত যাক, ফিলিস্তিন মুক্তি পাক; উই ওয়ান্ট জাস্টিস, ফ্রি ফ্রি ফিলিস্তিন; ফ্রম দ্যা রিভার টু দ্যা সী, প্যালেস্টাইন উইল বি ফ্রি’ এসব স্লোগান দিতে শোনা যায়।
এসময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাবি শাখার আহবায়ক আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি, আমাদের পবিত্র ভূমি ফিলিস্তিনকে একটি উন্মুক্ত কারাগারে পরিণত করেছে অবৈধ ইসরায়েলের দখলদার বাহিনী। তারা নির্বিচারে ফিলিস্তিনের মুসলমানদের হত্যা করছে। আমরা এ-ও দেখতে পাচ্ছি, কীভাবে বিশ্ব মোড়ল যুক্তরাষ্ট্র ইহুদিবাদীদের মদত দিয়ে যাচ্ছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা হুঁশিয়ার করে বলতে চাই, তোমরা যদি নিরপরাধ মানুষদের উপর বর্বরোচিত হামলা বন্ধ না করো, তাহলে দুইশত কোটি মুসলমান তোমাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।’
এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের শিক্ষার্থী আলী জাকি শাহরিয়ার বলেন, ‘ইহুদিবাদী ইসরায়েলের হাতে লাখো ফিলিস্তিনের রক্তের দাগ লেগে আছে। তাদের ইতিহাস বেইমানির ইতিহাস, তাদের ইতিহাস অবাধ্যতার ইতিহাস। তারা আল্লাহর সাথে বার বার বেইমানি, অবাধ্যতা করেছে। জাতি হিসাবে তারা অকৃতজ্ঞ, অভিশপ্ত। অথচ তারা আজ সভ্যতার নীতিকথা শোনায়। এটা অত্যন্ত লজ্জার।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা মুসলমান। আমরা মরতে ভয় পাই না, আমাদের ইতিহাস সমৃদ্ধ ইতিহাস, ইহুদিবাদী অপশক্তিকে রুখে দিয়ে পবিত্র ভূমি ফিলিস্তিনের মাটিতে আবারো আমরা শান্তি প্রতিষ্ঠা করবো।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী ও গণ-অভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলনের জাবি শাখার আহবায়ক আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, ‘ফিলিস্তিনের নিরপরাধ জনগণ আজকে নিজ দেশে পরবাসীর মতো বসবাস করছেন। উদ্বাস্তু হয়ে বিশ্বের নানান প্রান্তে শরণার্থী শিবিরগুলোয় মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তারা আজ নিজ ভূমি হারিয়ে বাস্তুচ্যুত হতে বাধ্য হয়েছেন জায়নবাদী অপশক্তিদের কারণে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আফসোস করে বলতে হয়, যারা সভ্যতার বুলি আওড়ায় তারা ফিলিস্তিনের বেলায় চুপ হয়ে যায়। আমরা হুঁশিয়ার করে বলতে চাই যতদিন না ফিলিস্তিনের উপর হামলা বন্ধ হবে, ততদিন প্রতিবাদ চলমান থাকবে।’
২ দিন আগে
গাজায় ইসরাইলি হামলায় নারী ও শিশুসহ ১২ ফিলিস্তিনি নিহত
নতুন বছরের শুরুতে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় তিনটি ইসরাইলি হামলায় অন্তত ১২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। বুধবার (২ জানুয়ারি) স্থানীয় কর্মকর্তারা এমন তথ্য দিয়েছেন।
উত্তর গাজার বিচ্ছিন্ন এলাকা জাবালিয়ার একটি বাড়িতে প্রথম হামলার ঘটনা ঘটেছে। গেল প্রায় ১৫ মাস ধরে চলা এই যুদ্ধে উপকূলীয় অঞ্চলটিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জাবালিয়া। অক্টোবরের শুরুর দিক থেকে সেখানে ব্যাপক সামরিক অভিযান চালিয়ে আসছে ইসরাইলি বাহিনী। খবর এপির।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এক নারী ও চারটি শিশুসহ জাবালিয়ায় অন্তত সাতজন নিহত হয়েছেন। ইসরাইলি সামরিক বাহিনী বলছে, তারা হামাস যোদ্ধাদের নির্মূল করছে।
আরও পড়ুন: গাজার ২ স্কুলে ইসরায়েলি হামলায় ১৭ জন নিহত
আল-আকসা মার্টায়ারস হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, মধ্য গাজার বুরেইজ শরণার্থী শিবিরে আরেক ইসরাইলি হামলায় এক নারী ও একটি শিশু নিহত হয়েছে।
একটি শিশুর মরদেহ বহন করে নিয়ে যাওয়া এক ফিলিস্তিনি বলেন, ‘আপনারা কী নতুন বছর উদযাপন করছেন? উপভোগ করুন, যখন আমরা হত্যাকাণ্ডের শিকার হচ্ছি। গেল দেড় বছর ধরে আমাদের ওপর দিয়ে এই হত্যাকাণ্ড চালানো হচ্ছে।’
ইসরাইলি বাহিনী জানিয়েছে, রাতে বুরেইজ এলাকা থেকে ইসরাইলে রকেট হামলা করা হয়েছে। এই হামলার মাধ্যমে সেই জবাব দেওয়া হয়েছে।
তৃতীয় হামলাটি চালানো হয়েছে খান ইউনিসে। এতে অন্তত তিন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। স্থানীয় নাসের হাসপাতাল ও ইউরোপীয় হাসপাতালে তাদের মরদেহ পাঠানো হয়েছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলে অভিযান চালিয়ে এক হাজার ২০০ অবৈধ বসতিস্থাপনকারী ইসরাইলিকে হত্যা করে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস। এছাড়া আরও ২৫০ জনকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়। অপহৃতদের মধ্যে প্রায় ১০০ ইসরাইলি এখনো গাজায় বন্দি আছেন ও তিনজন নিহত হয়েছেন।
এরপর থেকে ইসরাইলি হামলায় অন্তত ৪৫ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। নিহতদের অর্ধেকের বেশি নারী ও শিশু।
আরও পড়ুন: গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ২৫ জন নিহত
৭৯ দিন আগে