এইচএমপিভি
ক্রমাগত রূপান্তরে এইচএমপিভি প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে: ডা. সায়েদুর
হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাসে (এইচএমপিভি) সাধারণত মৃত্যু হয় না, কিন্তু ক্রমাগত রূপান্তর ঘটে এটি প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান। এইচএমপিভিতে আক্রান্ত হয়ে সানজিদা আক্তার নামের এক নারীর মৃত্যুর পর এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
ডা. সায়েদুর রহমান জানান, এক মাসের বেশি সময় ধরে অসুস্থ ছিলেন সানজিদা। প্রথমে নিজ বাসার আশেপাশেই চিকিৎসা নেন তিনি। পরবর্তীতে অবস্থার অবনতি হলে হাসপাতালে ভর্তি হন।
তিনি বলেন, ‘বৈজ্ঞানিক গবেষণা অনুসারে বলা যায়, এইচএমপিভির কারণে মৃত্যুর ঘটনা খুবই বিরল। তিনি ক্লেবসিয়েলা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হন এবং পরবর্তীতে তার মাল্টিঅর্গান ফেইলার হয়। এছাড়া তার স্থূলতা ছিল, থাইরয়েড ডিসফাংশনও ছিল। নিউমোনিয়া ও মাল্টিঅর্গান ফেইলারের কারণেই সানজিদার মৃত্যু হয়েছে। এসবের সঙ্গে রোগী দুর্ভাগ্যজনকভাবে এইচএমপি ভাইরাসেও আক্রান্ত ছিলেন।’
‘এই ভাইরাসে সাধারণত মৃত্যু হয় না। মৃত্যু হচ্ছেও না। আশপাশের দেশে এই ভাইরাসের বিস্তার ঘটছে। এ বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ আন্তর্জাতিক এজেন্সিগুলোর স্বাস্থ্যবিষয়ক কিছু গাইডলাইন আছে।’
এই অধ্যাপক বলেন, ‘এ সময়ে যদি কেউ ফ্লুতে আক্রান্ত হন, তিনি যেন জনসম্মুখে না আসেন। এলেও মাস্ক পরতে হবে। আবার কেউ অসুস্থবোধ করলে তিনি যেন ঘরে থাকেন।’
অসুস্থ হলে হাত ধোয়া ও জনসম্মুখে মাস্ক পরলে এইচএমপি ভাইরাস নিয়ন্ত্রণ করা যাবে বলে মন্তব্য করেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এই বিশেষ সহকারী।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, ‘ভাইরাসের যখন বিস্তার হতে থাকে, তখন সেটার প্রতিনিয়ত মিউটেশন বা রূপান্তর হতে থাকে। কোভিড-১৯ ভাইরাসও অনেক পুরোনো ভাইরাস ছিল। মিউটেশনের কারণে এটাও (এইচএমপিভি) ক্ষতিকর বা প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে। এ কারণেই এই ভাইরাসের বিস্তার রোধ করা দরকার।’
এখনও দূরত্ব বজায় রাখার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে না জানিয়ে ডা. সায়েদুর রহমান বলেন, ‘তবে কেউ যদি ফ্লুতে আক্রান্ত হন, তিনি যেন সাধারণ মানুষের সংস্পর্শে কম আসেন। অসুস্থ হলে তিনি যেন ঘরে থাকেন।’
প্রেস ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব সাইদুর রহমান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর, আইসিডিআরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
৬৬ দিন আগে
দেশে একমাত্র এইচএমপিভি আক্রান্ত রোগী মারা গেছেন
দেশে হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস (এইচএমপিভি) আক্রান্ত নারী সানজিদা আক্তার মারা গেছেন। মহাখালী সংক্রামক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্র এমন তথ্য নিশ্চিত করেছে।
তারা বলেন, ‘এইচএমপিভির একটা কেসই আমরা এ বছর পেয়েছি। এই রোগী গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় মারা যান। শুধু এইচএমপিভির কারণে মারা গেছেন, তা মনে হচ্ছে না।’
‘এর সঙ্গে আরও একটি অর্গানিজম পেয়েছি। এ ছাড়া তার অনেকগুলো জটিলতা ছিল। শুধু এইচএমপিভি ভাইরাসের কারণে তিনি মারা গেছেন এমনটি বলা যাবে না। এইচএমপিভি ভাইরাসে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।’
এ বিষয়ে দুপুর সোয়া ১ টায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ব্রিফ করবেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান।
আরও পড়ুন: এইচএমপিভি নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা
রবিবার (১২ জানুয়ারি) রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) জানিয়েছে, ভাইরাসটিতে একজন নারী আক্রান্ত হয়েছেন, যার গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জের ভৈরব এলাকায় বলে জানা গেছে।
আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরীন বলেন, ‘এইচএমপিভি নামক ভাইরাসটিতে প্রতিবছরই দু-চারজন রোগী আক্রান্ত হচ্ছেন।’
চীনের উত্তরাঞ্চলে রোগটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে এতে আরেকটি মহামারির ঝুঁকি নেই বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এই ভাইরাস থেকে সুরক্ষায় নাগরিকদের পূর্বসতর্কতা অবলম্বন করতে বলেছে চীনের রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (সিডিসি)।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিয়াং বলেন, শীত মৌসুমে শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত রোগটির সংক্রমণ বেশি ঘটে। তবে আগের বছরগুলোর তুলনায় এবার কমই ছড়িয়েছে।
আরও পড়ুন: দেশে একজনের শরীরে এইচএমপিভি শনাক্ত
৬৬ দিন আগে
এইচএমপিভি নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা
দেশে হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাসের (এইচএমপিভি) প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে বেশ কিছু নির্দেশনা জারি করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সম্প্রতি এক বিজ্ঞপ্তিতে তারা জানিয়েছে, চীনসহ উপমহাদেশের বিভিন্ন দেশে ভাইরাসটি উদ্বেগজনকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে। বিশেষ করে ১৪ বছরের কম বয়সী শিশু ও ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সীদের মধ্যে এই সংক্রমণ দেখা যাচ্ছে।
‘সেই সাথে দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্য সমস্যা যেমন হাঁপানি বা ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, গর্ভবর্তী নারী ও দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য উচ্চ ঝুঁকি সৃষ্টি হতে পারে,’ বলছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
পৃথিবীর অন্যান্য অনেক দেশের মতো বাংলাদেশেও এই রোগের সংক্রমণ দেখা গেছে। কিন্তু রোগটি যাতে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়তে না পারে, সে জন্য বেশ কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সংক্রমণ প্রতিরোধে নির্দেশনা:
* শীতকালীন শ্বাসতন্ত্রের রোগ থেকে বাঁচতে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে
• হাঁচি কাশি সময়/বাহু/ টিস্যু দিয়ে নাক মুখ ঢেকে রাখুন
• ব্যবহৃত টিস্যুটি অবিলম্বে ঢাকনাযুক্ত ময়লা ফেলার ঝুড়িতে ফেলুন এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজার অথবা সাবান পানি দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলুন
* আক্রান্ত হয়েছেন এমন ব্যক্তিদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন এবং কমপক্ষে ৩ ফুট দূরত্ব বজায় রাখুন
* ঘনঘন সাবান ও পানি কিংবা হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধুইতে হবে(অন্তত ২০ সেকেন্ড)
* অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক, মুখ ধরবেন না
* আপনি জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হলে সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত বাড়িতে থাকুন। প্রয়োজনে কাছের হাসপাতালে যোগাযোগ করুন।
আরও পড়ুন: দেশে একজনের শরীরে এইচএমপিভি শনাক্ত
রোববার (১২ জানুয়ারি) স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলেন, বাংলাদেশের এক নারী এইচএমপিভি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তবে এইচএমপিভি না, নিউমোনিয়ার কারণে তার স্বাস্থ্যের অবস্থার অবনতি ঘটেছে। বর্তমানে ঢাকার একটি হাসপাতালে তিনি চিকিৎসাধীন আছে।
চীনের উত্তরাঞ্চলে রোগটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে এতে আরেকটি মহামারির ঝুঁকি নেই বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
এই ভাইরাস থেকে সুরক্ষায় নাগরিকদের পূর্বসতর্কতা অবলম্বন করতে বলেছে চীনের রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (সিডিসি)।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিয়াং বলেন, শীত মৌসুমে শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত রোগটির সংক্রমণ বেশি ঘটে। তবে আগের বছরগুলোর তুলনায় এবার কমই ছড়িয়েছে।
৬৯ দিন আগে
দেশে একজনের শরীরে এইচএমপিভি শনাক্ত
চীনে আতঙ্ক ছড়ানো হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস (এইচএমপিভি) জাপান, মালয়েশিয়া ও ভারতে ছড়িয়ে পড়ার পর এবার বাংলাদেশেও একজনের দেহে শনাক্ত হয়েছে।
রবিবার (১২ জানুয়ারি) রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
ভাইরাসটিতে একজন নারী আক্রান্ত হয়েছেন, যার গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জের ভৈরব এলাকায় বলে জানা গেছে।
আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরীন বলেন, ‘এইচএমপিভি নামক ভাইরাসটিতে প্রতিবছরই দু-চারজন রোগী আক্রান্ত হচ্ছেন।’
আরও পড়ুন: এইচএমপিভি ভাইরাস: কারণ, লক্ষণ, প্রতিকার, প্রতিরোধ ও চিকিৎসা
গত ৮ জানুয়ারি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, কোভিড-১৯ মহামারির পর চীনে বাড়ছে হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস (এইচএমপিভি)-এর সংক্রমণ, যা আরেক স্বাস্থ্য সংকটের উদ্বেগ সৃষ্টি করছে।
তাহমিনা শিরিন বলেন, ‘হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাসটি নতুন কোনো ভাইরাস নয়। তবে এটা শুধু চীনেই নয়, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেই পাওয়া যাচ্ছে। বাংলাদেশেও এই ভাইরাসের উপস্থিতি আরও আগে থেকেই আমরা পেয়েছি। কাজেই এটা নতুন কোনো ভাইরাস নয়।’
৭০ দিন আগে
ভারতে এইচএমপিভির প্রাদুর্ভাব, হিলি-বেনাপোলে নেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা
বিশ্বের কয়েকটি দেশের পর ভারতে হিউম্যান মেটানিউমো ভাইরাস বা এইচএমপিভির প্রাদুর্ভাবের খবর প্রকাশ হলেও বাংলাদেশে এই ভাইরাসের বিস্তার রোধে দিনাজপুরের হিলি ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ সীমান্তে কোনো ধরনের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা এখনও নেওয়া হয়নি। ফলে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়াই প্রতিদিন এই দুই চেকপোস্ট দিয়ে ভারত ও বাংলাদেশে যাতায়াত করছেন অসংখ্য পাসপোর্টযাত্রী।
প্রতিদিন শত শত পণ্যবাহী ট্রাক এই দুই গুরুত্বপূর্ণ স্থলবন্দর দিয়ে ভারত-বাংলাদেশ যাতায়াত করছে। ট্রাকগুলোর চালক ও হেলপাররাও এক দেশ থেকে এসে অন্য দেশে অবস্থান করছেন। তবে তাদেরও কোনোপ্রকার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে না।
এদিকে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোভিড-১৯ এর মতোই ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে এইচএমপিভি ভাইরাস।
জ্বর, কাশি, নাক বন্ধ থাকা, গলা ব্যথা ও হাঁচির মতো সাধারণ ফ্লু-জনিত অসুস্থতার লক্ষণগুলোই এই ভাইরাসের উপসর্গ। তবে আক্রান্ত হওয়ার পর এটি গুরুতর আকার ধারণ করে। শিশু ও যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, এমন বয়স্ক মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে বেশি।
২০০১ সালে নেদারল্যান্ডসে প্রথম এই ভাইরাস শনাক্ত হয়। ২০০৭ থেকে ২০০৯ সালের মধ্যে কাম্বোডিয়ায় শিশুদের মধ্যে এই রোগের প্রকোপ দেখা দেয়। বিস্তার করতে করতে কিছুদিন আগে ভারতে এই ভাইরাসে দুই শিশু আক্রান্ত হয়েছে।
সম্প্রতি কলকাতায়ও এই ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর দেখা মিলেছে। এমতাবস্থায় মনে আতঙ্ক নিয়ে ভারত যাওয়া-আসা করছেন পাসপোর্টযাত্রীরা।
ভারতে যাওয়ার পথে হিলি চেকপোস্টে নওগাঁর শ্যামল চন্দ্র বলেন, ‘বিভিন্ন মাধ্যমে শুনেছি করোনার মতোই নতুন একটি ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। ভারতে কয়েকদিন আগে এই ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মনে আতঙ্ক থাকলেও কী করার, চিকিৎসার জন্য যেতেই হচ্ছে! ডাক্তারের সিরিয়াল নেওয়া আছে। আবার যদি ইমিগ্রেশনের কার্যক্রম বন্ধ হয় তাহলে চরম বিপদে পড়ব। তাই বাধ্য হয়ে যাওয়া।’
হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘সম্প্রতি এইচএমপিভি ভাইরাস সম্পর্কে জানতে পেরেছি। এজন্য আগাম সতর্কতা হিসেবে হিলি চেকপোস্টের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও ভারতে চলাচল করা পাসপোর্ট যাত্রীদের মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্য সচেতনতার জন্য পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে নির্দেশনা দিলে পরবর্তীতে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
আরও পড়ুন: এইচএমপিভি ভাইরাস: কারণ, লক্ষণ, প্রতিকার, প্রতিরোধ ও চিকিৎসা
৭৪ দিন আগে
এইচএমপিভি ভাইরাস: কারণ, লক্ষণ, প্রতিকার, প্রতিরোধ ও চিকিৎসা
চীনের সিডিসি (সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন) অনুসারে, গত ১৬ থেকে ২২ ডিসেম্বর দেশটিতে উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে এইচএমপিভি (হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস)-এর সংক্রমণ। শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত অসুস্থতার কারণে বেড়েছে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার হার, যা কোভিড-১৯, রাইনোভাইরাস বা অ্যাডিনোভাইরাসের চেয়েও বেশি। সাধারণত ১৪ বছর বা তার কম বয়সী শিশুদের মধ্যে এর প্রকোপ সবচেয়ে বেশি পরিলক্ষিত হয়েছে। সংক্রমণটি একদম নতুন না হলেও, এই ভাইরাসের বিষয়ে প্রাথমিক সচেতনতায় প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এই লক্ষ্যে চলুন, এইচএমপিভির প্রকৃতি, কারণ, লক্ষণ এবং এর প্রভাব কমানোর জন্য প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা ও চিকিৎসার উপায়গুলো জেনে নেওয়া যাক।
এইচএমপিভি কি
হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস বা সংক্ষেপে এইচএমপিভি এমন একটি বায়ুবাহিত ভাইরাস, যা মানুষের শ্বাসনালি (শ্বসনতন্ত্র) ক্ষতিগ্রস্ত করে। এটি সর্বপ্রথম শনাক্ত করা হয়েছিল ২০০১ সালে নেদারল্যান্ডসে। পরিবেশে থাকা এইচএমপিভি আক্রান্ত যেকোনো জৈব বা এমনকি জড় উপাদানের সংস্পর্শ থেকে ভাইরাসটি মানবদেহে প্রবেশ করে। অতঃপর অন্যান্য শ্বাসনালি ব্যবস্থার ভাইরাসের মতো মুখ নিঃসৃত তরল যেমন হাঁচি-কাশির মাধ্যমে একজন থেকে আরেকজনের মধ্যে এটি ছড়িয়ে পড়ে।
প্রাথমিকভাবে উপসর্গগুলো সাধারণ ঠান্ডা, জ্বর, কাশির মতো হওয়ার কারণে অনেকেই এই ভাইরাসের সংক্রমণের ব্যাপারে উদাসীন থাকেন। এর সংক্রমণটি সাধারণত শীতের শেষের দিকে এবং বসন্তের শুরুর দিকে ঘটে। বয়স, লিঙ্গ নির্বিশেষে সব ধরনের মানুষের মাঝে ছড়ালেও সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয় শিশু এবং বয়স্করা। বর্তমানে বিশ্বব্যাপী শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত একটি ভয়াবহ সংক্রামকের নাম এইচএমপিভি। বিশেষত সাম্প্রতিক চীনের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রাদুর্ভাবের পর থেকে এটি উত্তর এশিয়ায় দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আরো পড়ুন: মুখের দুর্গন্ধ দূর করার ঘরোয়া উপায়
এইচএমপিভি সংক্রমণের কারণ
বায়ুবাহিত এইচএমপিভির মূল গন্তব্য থাকে মানুষের শ্বাসনালি। এই গন্তব্যে পৌঁছানোর মাধ্যমে পোষক দেহে প্রবেশের জন্য ভাইরাসটি বিভিন্ন ধরণের পরিবেশ ও পরিস্থিতিকে উপজীবিত করে নেয়। নিম্নলিখিত ক্ষেত্রগুলো সংক্রমণের জন্য সহায়ক অবস্থা সৃষ্টি করে।
শ্বাস-প্রশ্বাস ও সংস্পর্শ
দূষিত জৈব বস্তু বা জড়পৃষ্ঠের সংস্পর্শ: এইচএমপিভির মাধ্যমে দূষিত কোনো জীব বা জড়বস্তুর পৃষ্ঠ স্পর্শ করার পর মুখ, নাক বা চোখ স্পর্শ করলে সংক্রমণ হতে পারে। ভাইরাসটি নির্দিষ্ট কিছু জড় উপাদানের পৃষ্ঠে কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। দরজার হাতল, টেবিল এবং ইলেকট্রনিক ডিভাইসের মতো মানুষের ধরা-ছোয়ার মধ্যে থাকা জিনিসগুলো এই জীবাণুতে বেশি দূষিত হয়।
মুখ নিঃসৃত তরল: একবার কোনো ব্যক্তি এইচএমপিভিতে আক্রান্ত হলে তিনি অন্য ব্যক্তিদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠেন। বিশেষ করে সেই ব্যক্তির হাঁচি, কাশি, বা এমনকি কথা বলার সময় মুখ থেকে বের হওয়া অল্প তরলও সংক্রমণের কারণ হতে পারে। এগুলো অন্য সুস্থ ব্যক্তির গায়ে লেগে বা শ্বাসের মাধ্যমে সরাসরি শ্বাসনালি পর্যন্ত ঢুকে যাওয়ার শতভাগ আশঙ্কা থাকে।
আরো পড়ুন: থ্যালাসেমিয়া রোগের কারণ, লক্ষণ ও প্রতিরোধ
কারা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে
শিশু এবং বয়স্ক: রোগ প্রতিরোধ প্রণালী প্রাথমিক অবস্থায় থাকা বা দুর্বল হওয়ার কারণে শিশু এবং বয়স্করা সর্বাধিক সংবেদনশীল থাকে এই সংক্রমণের প্রতি। এছাড়াও পরনির্ভরশীলতার কারণে এরা প্রায়ই অন্যের সংস্পর্শে থাকতে হয়। তাই একটি বাড়ন্ত স্বাস্থ্যবান শিশুও সংক্রমিত হওয়ার যথেষ্ট আশঙ্কা রয়েছে।
স্বাস্থ্যগত জটিলতা: প্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে যাদের ক্যান্সার, হৃদরোগ বা শ্বাসনালি সংক্রান্ত দুরারোগ্য ব্যাধি রয়েছে, তাদের এইচএমপিভিতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক অবস্থা দুর্বল থাকায় কোনো ধরনের বাধা ছাড়াই নবাগত ভাইরাস গোটা শরীরকে গ্রাস করে নিতে পারে।
এইচএমপিভি সংক্রমণের লক্ষণ
ব্যক্তির বয়স, স্বাস্থ্যের অবস্থা এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উপর নির্ভর করে সংক্রমণের উপসর্গগুলো ভিন্ন রকম হতে পারে। এগুলো প্রধানত দুটি পর্যায়ে দেখা যায়, সেগুলো হলোঃ
· হালকা লক্ষণ
· সর্দি বা নাক বন্ধ
· কাশি এবং গলা ব্যথা
· হালকা জ্বর
· প্রচণ্ড ক্লান্তি
আরো পড়ুন: সার্কেডিয়ান রিদম বা দেহ ঘড়ি নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি
গুরুতর লক্ষণ
শ্বাসকষ্টজনিত জটিলতা
গুরুতর ক্ষেত্রে, বিশেষত শিশু ও বয়স্কদের মধ্যে নিম্নোক্ত উপসর্গগুলো বেশি পরিলক্ষিত হয়ঃ
· শ্বাসকষ্টের তীব্রতা
· বুক ব্যথা
· অবিরাম কাশি
সেকেন্ডারি ইনফেকশন
ভাইরাসের সংক্রমণ কোনো কোনো ক্ষেত্রে ব্রঙ্কিওলাইটিস বা নিউমোনিয়ার মতো জটিলতার সৃষ্টি করতে পারে।
৭৭ দিন আগে