জিরো টলারেন্স নীতি
বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি: পরিবেশ উপদেষ্টা
বালু উত্তোলন ও বন দখলের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করা হবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
তিনি বলেন, ‘চুনতি অভয়ারণ্যের সীমানা নির্ধারণের কাজ এখন চলছে। বালু উত্তোলন ও বন দখলের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করা হবে।’
উপদেষ্টা বলেন, জেলা প্রশাসন ও পুলিশকে এই বিষয়ে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যেসব জায়গায় বালু উত্তোলন হয়, সেখানে এমন সুরক্ষা ব্যবস্থা নেওয়া হবে যাতে কেউ ঢুকতে বা বেরোতে না পারে।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি রেঞ্জ কর্মকর্তার কার্যালয়ে বন বিভাগের চট্টগ্রাম সার্কেলের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, অচিরেই একটি কর্মপরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নামা হবে। সীমানা নির্ধারণের পর বিদ্যমান বন রক্ষায় জোর দেওয়া হবে। অবৈধ দখলের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান চলবে। মানুষের দুর্ভোগ না বাড়িয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
হাতি-মানুষ দ্বন্দ্ব কমাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানান তিনি। বলেন, একসময় হাতির দাঁত ও হাড়ের জন্য হাতি মারা হতো। এই ধরনের সংঘবদ্ধ অপরাধ রোধে প্রয়োজনে গোয়েন্দা সংস্থাকে কাজে লাগানো হবে।
উপদেষ্টা বলেন, হাতি ও মানুষ দ্বন্দ্বের সমাধানে মাঠ পর্যায়ে কাজ করা হবে। বন রক্ষা, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও অপরাধ দমনে সরকার কঠোর অবস্থানে আছে।
পরে চট্টগ্রামের চুনতি রেঞ্জের আওতাধীন এলাকার পাহাড় কাটা ও অবৈধ দখলের স্থান ও কক্সবাজারের ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক পরিদর্শন করেন উপদেষ্টা।
আরও পড়ুন: অর্থনৈতিক অপরাধীদের বিচারে কমিটি গঠন হচ্ছে: রিজওয়ানা
তিনি পার্কে পরিবেশবান্ধব অবকাঠামো ও দর্শনার্থীবান্ধব সুযোগ-সুবিধা আরও বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেন। পাশাপাশি বন্যপ্রাণী পাচার ও অবৈধ শিকার রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন।
পরিদর্শনকালে উপদেষ্টার সঙ্গে চট্টগ্রাম বন সার্কেলের বন সংরক্ষক মোল্লা রেজাউল করিম, বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চলের বন সংরক্ষক মো. সানাউল্লাহ পাটোয়ারী, ডুলাহাজারা সাফারি পার্কের বিভাগীয় বন কর্তকর্তা, জেলা প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তর, বন অধিদপ্তর এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
২২৪ দিন আগে
সাম্প্রদায়িক হামলা বন্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে সরকার, গ্রেপ্তারের নির্দেশ
প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেছেন, দেশে যেকোনো ধরনের সাম্প্রদায়িক হামলার বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার জিরো টলারেন্স নীতির পুনরাবৃত্তি করে এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছে। একইসঙ্গে সরকার ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেবে বলেও ঘোষণা দিয়েছে।
শনিবার (১১ জানুয়ারি) একটি পুলিশ প্রতিবেদন তুলে ধরে তিনি এ কথা বলেন।
ধর্ম, বর্ণ, জাতি ও লিঙ্গ নির্বিশেষে মানবাধিকারের প্রতিষ্ঠা নিশ্চিত করতে সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, পুলিশ সাম্প্রদায়িক সহিংসতার অভিযোগ নেওয়ার জন্য একটি হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর চালু করেছে। তারা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে।
জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কোনো সাম্প্রদায়িক সহিংসতার অভিযোগ এলে পুলিশ সদর দফতরের একটি ফোকাল পয়েন্ট সেই অভিযোগ পরিচালনা করছে। প্রতিটি অভিযোগ সমাধানে পুলিশ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে বলেও জানান প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।
হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ দাবি করেছে যে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর মোট ১ হাজার ৭৬৯টি সাম্প্রদায়িক হামলা এবং ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ হামলা, ভাঙচুর এবং লুটপাটের ঘটনাগুলোতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জীবন, সম্পদ ও উপাসনালয় মিলিয়ে দুই হাজার ১০টি অভিযোগ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
বাংলাদেশ পুলিশ এ বিষয়ে পরিষদের প্রস্তুত করা অভিযোগের তালিকা সংগ্রহ করে অভিযোগে উল্লেখিত ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। এছাড়াও প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রতিটি স্থান ও প্রতিষ্ঠান পুলিশ সরেজমিনে পরিদর্শন করেছে।
ক্ষতিগ্রস্তদের অভিযোগ দায়ের করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তদন্তের ভিত্তিতে নিয়মিত মামলা, সাধারণ ডায়েরি (জিডি) এবং প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
২০২৪ সালের ৪ আগস্ট থেকে সাম্প্রদায়িক হামলা ও দাবির বিষয়ে পুলিশের প্রতিবেদন অনুসারে, এক হাজার ৭৬৯টি অভিযোগের মধ্যে পুলিশ এখন পর্যন্ত ৬২টি মামলা দায়ের করেছে। তদন্তের ভিত্তিতে অন্তত ৩৫ জন অপরাধীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অধিকাংশ ঘটনায় পুলিশ তদন্তে দেখেছে যে, হামলাগুলো সাম্প্রদায়িক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ছিল না বরং তা রাজনৈতিক প্রকৃতির ছিল।
পুলিশের তদন্তে দেখা গেছে, এক হাজার ২৩৪টি ঘটনা রাজনৈতিক, ২০টি ঘটনা সাম্প্রদায়িক এবং অন্তত ১৬১টি অভিযোগ মিথ্যা বা ভিত্তিহীন প্রমাণিত হয়েছে।
পরিষদের অভিযোগ অনুযায়ী, এক হাজার ৪৫২টি ঘটনা অর্থাৎ মোট অভিযোগের ৮২ দশমিক ৮ শতাংশ, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার দিন ঘটে। পরিষদের মতে, ৪ আগস্ট ৬৫টি এবং ৬ আগস্ট ৭০টি ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের কাছে পরিষদের প্রতিবেদনটির একটি কপি রয়েছে।
পরিষদের অভিযোগ ছাড়াও, পুলিশ ৫ আগস্ট ২০২৪ থেকে ৮ জানুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ১৩৪টি অভিযোগ পেয়েছে। এসব অভিযোগে পুলিশ সর্বোচ্চ গুরুত্ব সহকারে সাড়া দিয়েছে। এসব অভিযোগে অন্তত ৫৩টি মামলা দায়ের হয়েছে এবং ৬৫ জন অপরাধীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সব মিলিয়ে ৪ আগস্ট থেকে এখন পর্যন্ত সাম্প্রদায়িকতার ওপর হামলার অভিযোগে মোট ১১৫টি মামলা হয়েছে এবং অন্তত ১০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
৩২৮ দিন আগে