কর্মী সম্মেলন
মতপার্থক্য থাকলেও দেশের স্বার্থে সবাই এক: তারেক রহমান
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘স্বৈরাচারের মাথাটা পালিয়ে গেছে, কিন্তু তার কিছু কিছু অবশিষ্ট এখনও দেশে রয়ে গেছে। বিভিন্ন সময় তারা ভিন্ন ভিন্ন আঙ্গিকে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার অপচেষ্টা করছে। যদি দেশকে রক্ষা করতে হয়, দেশের মানুষেকে রক্ষা করতে হয় তাহলে ঐক্যের বিকল্প নেই।’
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ আব্বাস উদ্দিন খান সোহাগপুর মডেল কলেজ মাঠে জেলা বিএনপির সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, ‘আমাদের মধ্যে মতপার্থক্য থাকতে পারে। তবে যারা দেশের জন্য কাজ করতে চাই, দেশের স্বার্থে দিন শেষে আমরা সবাই এক। আমাদের সামনে প্রচুর কাজ, দেশকে পুনর্গঠনের কাজ। আমরা ৩১ দফা দিয়েছি। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের শিক্ষার অধিকার, স্বাস্থ্যের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। বেকারত্ব দূরীকরণ, কৃষি ও শিল্পখাতে উন্নয়ন ৩১ দফায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আমরা কৃষককে ন্যায্যমূল্য দিতে চাই। তবে লাগমহীন দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতি যেন জনগণের মধ্যে নাভিশ্বাসের কারণ না হয়!’
তিনি বলেন, ‘অচল কল-কারখানাগুলো সচল করতে হবে। আমাদের অসংখ্য নদনদী ও খাল ভরাট হয়ে গেছে, এগুলো খনন করতে হবে।’
আরও পড়ুন: ৩১ দফা শুধু বিএনপির নয়, এটা সব দলের: তারেক রহমান
বিএনপির শীর্ষ এই নেতা বলেন, ‘আগামী দিনে সংসদের মেয়াদ কত হবে, সদস্য সংখ্যা কত হবে—গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে এই বিতর্ক থাকতেই পারে। তবে দিন শেষে আমরা এগুলো জনগণের ওপর ছেড়ে দেব। এ নিয়ে মাত্রতিরিক্ত বিতর্ক রাষ্ট্র মেরামতের কাজকে বিঘ্নিত করবে। তবে এর একমাত্র উপায় হলো জাতীয় নির্বাচন। জনগণের ভোটের মাধ্যমে এর ফয়সালা হবে।’
তিনি বলেন, ‘বিগত ১৫ বছর জনগণের ভোট দেওয়ার অধিকার ছিল না, জবাবদিহিতা ছিল না। অস্ত্রের মুখে সব অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। আমরা ডামি নির্বাচন ভোটারবিহীন নির্বাচন ও ভোট ডাকাতির নির্বাচন দেখেছি। উন্নয়নের নাম করে সামান্য জিনিস দৃশ্যমান করা হলেও এর মাধ্যমে লাখ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে। রাষ্ট্র্রের সমস্ত প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করা হয়েছে, দেশকে ধ্বংসের কিনারায় নিয়ে গেছে।’
বিএনপি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল উল্লেথ করে তিনি আরও বলেন, ‘এই দলের কর্মী হিসেবে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থেকে জাতিকে পথ দেখাতে হবে। শুধু আমাদের দলই নয়, দেশের যেসব রাজনৈতিক দলের এজেন্ডা এক, তাদের সঙ্গে নিয়ে দেশ ও দেশের মানুষের স্বার্থে ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। দেশকে এগিয়ে নিতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে—এটাই হোক এই সম্মেলনের প্রতিজ্ঞা ও শপথ।’
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নানের সভাপতিত্বে সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ মো. সেলিম ভুইয়া, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মোস্তাক আহম্মেদ, বিএনপির কেন্দ্রীয় অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামল, বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সায়েদুল হক সাইদ, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ মো. শামীম, সালাউদ্দিন শিশির, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম সিরাজ ও জেলা বিএনপি নেতা মো. কবির আহম্মেদ ভুইয়া প্রমুখ।
৩০৭ দিন আগে
‘বৈষম্যহীন, দুঃশাসনমুক্ত বাংলাদেশ কায়েম না হওয়া পর্যন্ত জামায়াত থামবে না’
জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় মজলুম দল মন্তব্য করে দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘গত সাড়ে ১৫ বছর জামায়াতের নেতাদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসি দেওয়া হয়েছে, হাজারো নেতাকর্মীকে খুন করা হয়েছে। হাট-ঘাট, মসজিদ-মাদরাসা, এমনকি মন্দিরেও লুটপাট চালিয়েছে আওয়ামী লীগ ও তার দোসররা। কিন্তু ৫ আগস্ট ছাত্রজনতার আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ ও তার দোসররা চাটিবাটি গুটিয়ে পালিয়েছে। দুর্নীতিবাজ সবাই পালিয়েছে। তাই বৈষম্যহীন, মানবিক, দুর্নীতি দুঃশাসনমুক্ত বাংলাদেশ কায়েম না পর্যন্ত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী থামবে না।’
শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের টাউন মাঠে জেলা জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ছাত্র-জনতার অবদানকে স্মরণ করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘ছাত্র-জনতার নেতৃত্বে এই জাতি দেশবিরোধী যেকোনো ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দেবে ইনশাআল্লাহ। তরুণ-যুবসমাজ চাঁদাবাজমুক্ত, দখলবাজমুক্ত ও পেশীশক্তিমুক্ত নতুন দেশ চায়। আমরাও সাম্যের বাংলাদেশ চাই। এই প্রজন্ম বুকের রক্ত দিয়ে নতুন স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। প্রয়োজনে আমরাও রক্ত দিয়ে হলেও এই স্বাধীনতা ধরে রাখব ইনশাআল্লাহ।’
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আমরা কারও টাকার কাছে নিজেদের ভোট বিক্রি করব না। ষড়যন্ত্র চলছে, নির্বাচনকেন্দ্রিক সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হবে। আগামী নির্বাচন হতে হবে নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ। কালো টাকা ও পেশীশক্তির কাছে আমরা মাথা নত করব না। যারা কালো টাকা দিয়ে ভোটের মাঠে আসবে, তাদের ‘না’ বলে দিতে হবে।”
আরও পড়ুন: এদেশে আর কোনো মাইনরিটি-মেজরিটি শুনতে চাই না: জামায়াত আমীর
এ সময় আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনা করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘বিগত সাড়ে ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ ও তার দোসররা ২৬ লাখ কোটি টাকা বাংলাদেশ থেকে বিদেশে পাচার করেছে। এসব টাকা জাল ফেলে তন্ন তন্ন করে খুঁজে বের করে দেশে ফেরত আনতে হবে। আওয়ামী লীগ ও তার দোসরদের খুঁজে খুঁজে এনে ওই কাশিমপুর জেলে পাঠাতে হবে। তাদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।’
চুয়াডাঙ্গা জেলা জামায়াত আমির অ্যাডভোকেট রুহুল আমিনের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. জাহিদুল ইসলাম, জামায়াতে ইসলামীর নির্বাহী পরিষদের অন্যতম সদস্য ও যশোর-কুষ্টিয়া অঞ্চলের পরিচালক মোবারক হোসেন, যশোর-কুষ্টিয়া অঞ্চলের টিম সদস্য খন্দকার আলী মোহসিন, যশোর জেলা শাখার আমির অধ্যাপক গোলাম রসুল, ঝিনাইদহ জেলা জামায়াতের আমির আলী আজম, কুষ্টিয়া জেলা আমির মাওলানা অধ্যাপক আবুল হাশেম, মেহেরপুর জেলা আমির মাওলানা তাজ উদ্দীন খান, চুয়াডাঙ্গা জেল জামায়াতের সাবেক আমির আনোয়ারুল হক মালিক, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার আহ্বায়ক আসলাম অর্ক, জেলা জামায়াতের জয়েন্ট সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মাসুদ পারভেজ রাসেল প্রমুখ।
সম্মেলনে চুয়াডাঙ্গা জেলা জামায়াতের সব কর্মপরিষদের সদস্য, জেলার ৫টি থানার অধীনে সাংগঠনিক ৮ জন জামায়াতের থানা আমির ও স্থানীয় জামায়াত নেতারাসহ অসংখ্য কর্মী-সমর্থক উপস্থিত ছিলেন।
৩২২ দিন আগে