মধ্যনগরে পেঁয়াজের চাষ
সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে পেঁয়াজের চাষ বেড়ে দ্বিগুণ
লাভজনক হওয়ায় সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে বেড়েছে পেঁয়াজের চাষ। এ বছর উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার প্রায় দ্বিগুণ জমিতে পেঁয়াজের চাষ হয়েছে। দিনরাত একাকার করে খেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা।
নবগঠিত মধ্যনগর উপজেলার কৃষিবিভাগের কার্যক্রম পাশের ধর্মপাশা উপজেলা থেকে পরিচালিত হয়। তবে সমন্বয় ও কৃষকদের পরামর্শদানে উপজেলা কৃষিবিভাগের তৎপড়তা রয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, গতবছর মধ্যনগর ও ধর্মপাশা উপজেলায় ৪৫ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের চাষ করে লাভবান হয়েছিলেন চাষিরা। তাই চলতি অর্থবছরে শুধু মধ্যনগর উপজেলায় প্রায় ৪০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেছেন চাষিরা। এর মধ্যে উপজেলার বংশীকুন্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নে পেঁয়াজের চাষ করা হয়েছে প্রায় ২০ হেক্টর জমিতে। সারা উপজেলায় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬৪০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ।
আরও পড়ুন: ঝিনাইদহে সার সংকটে পেঁয়াজ চাষিরা, ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা
উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বংশীকুন্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নে ১০ জন কৃষককে বীজ ও সার সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
উপজেলার বংশীকুন্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নের দাতিয়াপাড়া গ্রামের মো. বাসেত ভূঁইয়া জানান, বাজারে চড়া দামে পেঁয়াজ বিক্রয় হওয়ায় অতীতের তুলনায় বেশি জমিতে পেঁয়াজের চাষ করেছি। কিন্তু এ বছর পেঁয়াজ চাষে বিঘা প্রতি খরচ বেড়েছে ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা।
কৃষি অফিস থেকে বীজ, সার, কীটনাশক সহায়তা পেয়েছি। জমিচাষ, চারা রোপণ, পরিচর্যাসহ প্রতি বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা খরচ হবে। আবহাওয়া ভালো থাকলে, প্রতি বিঘায় ৬০ থেকে ৭০ মণ ফলন পাওয়া যাবে বলে আশা করছি।
একই ইউনিয়নের তেলীগাঁও গ্রামের কৃষক রিপন মিয়া বললেন, এক বিঘা জমিতে চারা রোপণ করছি। এবার সাড়ে ৩ হাজার টাকার পেঁয়াজের বীজ কিনতে হয়েছে।
সবমিলিয়ে বিঘাপ্রতি খরচ ৫০ থেকে ৫৫ হাজার টাকা। প্রতি বিঘায় প্রায় ৬০ থেকে ৭০ মণ পেঁয়াজ পাব বলে আশা করছি। উপজেলার বংশীকুন্ডা উত্তর ইউনিয়নের রুপনগর গ্রামের রফিকুল ইসলাম নামের এক কৃষক বললেন, ভরা মৌসুমে কৃষকরা লোকসানে পেঁয়াজ বিক্রি করে চাষাবাদে হতাশ হয়েছিল। তবে শেষ সময়ে প্রতি মণ পেঁয়াজ ৫ থেকে ৬ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। অসময়ে ভালো দামে পেঁয়াজ বিক্রি করে বেশ লাভবান হয়েছেন বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মাসুদ তুষার বললেন, চলতি অর্থবছরে এ উপজেলায় প্রায় ৩৫ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে এবার মাঠের হিসাবে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে প্রায় ৪০ হেক্টরের অধিক জমিতে পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। এ উপজেলার কৃষকদের সবসময় কৃষি অফিস থেকে বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। গত বছর পেঁয়াজের চড়া দাম থাকায় এই বছর পেঁয়াজ চাষে আগ্রহ বেড়েছে কৃষকদের।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের অতিরিক্ত উপপরিচালক (উদ্যান) মো. আনোয়ার হোসেন বললেন, হাওরে মশলা ফসলের সম্প্রসারণের জন্য কৃষি বিভাগ কাজ করে যাচ্ছে, এ বছর মধ্যনগর উপজেলায় ৪০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ করা হয়েছে। ফ্রিপ প্রকল্পের আওতায় নতুন জাতের পেঁয়াজ প্রদর্শনীর বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: হিলি দিয়ে ফের পেঁয়াজ ও আলু আমদানি শুরু
৩১০ দিন আগে