জুলাই সনদ
কিছু দল জুলাই সনদে স্বাক্ষর না করলেও নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে না: সালাহউদ্দিন
কিছু দল জুলাই সনদে স্বাক্ষর না করলেও তা নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমার জানা মতে, এনসিপি এবং চারটি বাম রাজনৈতিক দল স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে যেতে পারেনি। বলব না, স্বাক্ষর করেনি; স্বাক্ষর করার সুযোগ উন্মুক্ত আছে। আশা করি, তারা ভবিষ্যতে সনদে স্বাক্ষর করবেন। আগামী নির্বাচনের জন্য এটা বড় কোনো প্রভাব ফেলবে না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, সহনশীলতা সবার মধ্যে আসবে। হয়তো তাদের কিছু দাবি দাওয়া আছে। সেটা সরকারের সঙ্গে আলাপ করবে। এক পর্যায়ে তারাও জুলাই সনদে স্বাক্ষর করবেন বলে আমরা বিশ্বাস করি। আর গণতন্ত্রের মধ্যে তো সবাই একমত হবে এমন তো নয়। সেটা উন্মুক্ত আছে। ভিন্ন মত থাকতেই পারে।’
এ সময় ‘আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শক্তি’ এখনো নানা উপায়ে অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, যা শুক্রবার জুলাই সনদ স্বাক্ষরের আগেও স্পষ্টভাবে দেখা গেছে বলে অভিযোগ করেন সালাহউদ্দিন।
তিনি বলেন, ‘জুলাই যোদ্ধা নামে একটি সংগঠন আমাদের ও ঐক্যমত কমিশনের সঙ্গে কথা বলেছে। তাদের একটা যৌক্তিক দাবি ছিল। সেই যৌক্তিক দাবিটা পূরণের জন্য আমি নিজেও স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম, কথা বলেছিলাম। এবং সেটা ঐক্যমত কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রিয়াজ সঠিকভাবে এড্রেস করেছেন, সেটা প্রেসে বলেছেন এবং সংশোধন করেছেন। এরপরও তাদের অসন্তোষ থাকার কথা নয়।
‘যে সমস্ত বিশৃঙ্খলা হয়েছে আমরা খোঁজ নিয়েছি। এটা তদন্তনাধীন আছে। দেখা গেছে, এখানে জুলাই যোদ্ধাদের নামে কিছু সংখ্যক ছাত্র নামধারী, কিছু সংখ্যক উশৃঙ্খল লোক ঢুকেছে। সেটা ফ্যাসিস্ট সরকারের ফ্যাসিস্ট বাহিনী বলে আমি মনে করি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী ফ্যাসিস্ট বাহিনী যে এখনো সমস্ত জায়গায় এই বিভিন্ন ফাঁক-ফোকরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে, তা দৃশ্যমান হয়েছে। আমার মনে হয়, এখানে এটির সঙ্গে কোনো সঠিক কোনো জুলাই যোদ্ধা বা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সঙ্গে জড়িত কোনো সংগঠন অথবা কোনো ব্যক্তি জড়িত থাকতে পারে না।’
এর আগে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের (জেডআরএফ) ২৬তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।
৪৭ দিন আগে
উৎসবমুখর পরিবেশে জুলাই সনদে সই হবে, আশা প্রধান উপদেষ্টার
উৎসবমুখর পরিবেশে জুলাই সনদে সই হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জরুরি বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এ সময় রাজনৈতিক নেতা ও ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এর মাধ্যমে (জুলাই সনদ) ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর পরবর্তী অধ্যায় রচিত হলো। সংস্কারের কথা আমরা বলে যাচ্ছিলাম, কিন্তু আপনার সেই সংস্কার প্রকৃতপক্ষে করে দেখিয়ে দিয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে আমরা গোটা জাতি একটা বড় রকমের উৎসবের মধ্যে শরিক হব। যে কলমগুলো দিয়ে সই করলাম, সেগুলো জাদুঘরে রক্ষিত থাকবে। মানুষ তাদের ভুলতে পারবে না, ইতহাস ভুলতে পারবে না।’
‘এটা (জুলাই সনদ) গোটা জাতির জন্য মস্ত বড় একটা সম্পদ হয়ে রইল। সেজন্য আপনাদের সবাইকে অভিনন্দন।’
৫০ দিন আগে
১৫ নয়, জুলাই জাতীয় সনদ সই অনুষ্ঠান ১৭ অক্টোবর
জুলাই জাতীয় সনদ সই অনুষ্ঠান ১৫ অক্টোবরের (বুধবার) পরিবর্তে ১৭ অক্টোবর (শুক্রবার) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। জনসাধারণের অংশগ্রহণের সুবিধার্থে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে এ অনুষ্ঠান আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
শনিবার (১১ অক্টোবর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
বৈঠক শেষে কমিশন সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ জানান, জুলাই জাতীয় সনদ সই অনুষ্ঠান একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। আগ্রহী জনগণের অংশগ্রহণের সুবিধার্থে অনুষ্ঠানটি ১৭ অক্টোবর, শুক্রবার বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় অনুষ্ঠিত হবে। যদিও এর আগে কমিশনের তরফ থেকে জানানো হয়েছিল যে, ১৫ অক্টোবর বুধবার বিকেলে জুলাই সনদ স্বাক্ষরিত হবে।
আরও পড়ুন: ১৫-১৬ অক্টোবর জুলাই সনদে সই হবে: আশা আলী রীয়াজের
বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, জুলাই জাতীয় সনদ সই অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও জোটের প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন। এছাড়া বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানানো হবে এতে।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
৫৪ দিন আগে
১৫-১৬ অক্টোবর জুলাই সনদে সই হবে: আশা আলী রীয়াজের
আগামী ১০ অক্টোবরের মধ্যে সরকারের কাছে চূড়ান্ত সুপারিশ পেশ করবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এবং রাজনৈতিক দলগুলো ১৫ ও ১৬ অক্টোবরের মধ্যে ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’-এ আনুষ্ঠানিকভাবে সই করবে বলে লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
বুধবার (৮ অক্টোবর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পঞ্চম দিনের বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে এসব কথা জানান তিনি।
আলী রিয়াজ বলেন, “সব দল একভাবে সম্মতি না দিলেও জনগণের চূড়ান্ত মত নেওয়ার সময় এসব আপত্তির বিষয়গুলো স্পষ্টভাবে জানাতে হবে। জুলাই জাতীয় সনদে যে বিষয়গুলো আছে সেখানে যেহেতু কিছু ‘নোট অব ডিসেন্ট’ আছে, সেটাকে আমাদের বিবেচনায় নিতে হবে।
“সবগুলো বিষয় একভাবে বিবেচনা করা যাবে তা আমরা মনে করছি না। কারণ যেসব রাজনৈতিক দল ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দিয়েছেন তারা তাদের অবস্থানের দিক থেকে দিয়েছেন, তাদের শুধুমাত্র দলীয় অবস্থান নয়, আমরা আশা করি যে তারা অন্যান্য বিবেচনা থেকেও দিয়েছেন।”
তিনি বলেন, ‘জনগণের সম্মতি নিশ্চিত করার সময় এসব ভিন্নমত যেন যথাযথভাবে জানানো হয়, সেটিই হবে গণভোটের মূল উদ্দেশ্য। আমাদের দেখতে হবে জনগণের যে সম্মতি, সে সম্মতির ক্ষেত্রে যেন তারা এটা জেনেশুনেই সম্মতি নিতে পারেন যে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কিছু দলের এ বিষয়ে আপত্তি আছে।’
কমিশন সব দলের মতামত ও আপত্তির পর্যালোচনার ভিত্তিতে চূড়ান্ত প্রস্তাব তৈরি করে সরকারকে তা সুপারিশ করতে চায় বলে জানান জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি।
তিনি বলেন, ‘আপনাদের পক্ষ থেকে যদি সুনির্দিষ্ট সুস্পষ্ট একটি জায়গায় একটি প্রস্তাব আসে, কমিশন সরকারকে সেটাই উপস্থাপন করবে এবং কমিশন চাইবে যে সেটাই বাস্তবায়িত হোক।’
জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোটের বিষয়ে ইতোমধ্যেই রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মৌলিক ঐকমত্য তৈরি হয়েছে এবং কমিশন এখন চূড়ান্ত কাঠামো নির্ধারণে কাজ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের এই প্রচেষ্টায় অনেকদূর অগ্রগতি হয়েছে এই অর্থে যে গণভোটের ক্ষেত্রে আমরা সকলেই একমত জায়গায় আসতে পেরেছি।’
অধ্যাপক রীয়াজ বলেন, ‘১০ অক্টোবরের মধ্যে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবগুলো আমরা সরকারের কাছে দিতে চাই। আমরা আগামী ১৫-১৬ অক্টোবরের মধ্যে সইয়ের আয়োজনটা শেষ করতে চাই।
বৈঠকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি বাংলাদেশ (এলডিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিসহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
কমিশনের সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন— বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
৫৭ দিন আগে
জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি খুঁজতে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনায় ঐকমত্য কমিশন
জুলাই জাতীয় সনদের আইনি বাধ্যবাধকতা নিশ্চিতকরণ ও কার্যকর বাস্তবায়নের জন্য একটি কার্যকর কাঠামো নির্ধারণের লক্ষ্যে আইন ও সংবিধান বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশন (এনসিসি)।
রবিবার (১০ আগস্ট) জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে কমিশনের সর্বশেষ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। পরে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় কমিশন।
আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন— অবসরপ্রাপ্ত সুপ্রিম কোর্ট বিচারপতি এম এ মতিন, বিচারপতি মাইনুল ইসলাম চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোহাম্মদ ইকরামুল হক, সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট ড. শরীফ ভূঁইয়া, ব্যারিস্টার তানিম হোসেন শাওন ও ইমরান সিদ্দিক।
পড়ুন: দেশের জ্বালানি খাতে বড় বিপর্যয়ের শঙ্কা বিশেষজ্ঞদের
কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রিয়াজ ও কমিশনের সদস্যরা বিচারপতি মোঃ এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বাদিউল আলম মজুমদার, সাফর রাজ হোসেন ও ড. মোঃ আয়ুব মিয়া এ সভায় অংশগ্রহণ করেন।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারও সভায় উপস্থিত ছিলেন।
১১৬ দিন আগে
‘জুলাই সনদ’ একটি ঐতিহাসিক অর্জন, এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে: অধ্যাপক ইউনূস
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘জুলাই সনদ’ একটি ঐতিহাসিক অর্জন, যা বাংলাদেশের শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর, স্বাধীনতা এবং জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা নিশ্চিত করবে।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, রাজনৈতিক দলগুলো শিগগিরই ‘জুলাই সনদ’ স্বাক্ষর করবে এবং এর বাস্তবায়নে একমত হবে, কারণ এটি নাগরিক অধিকার বাস্তবায়ন, জাতীয় সম্পদ ও সক্ষমতার সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করবে।
‘ঐকমত্য কমিশনের নেতৃত্বে এবং দীর্ঘ সময় ধরে সব রাজনৈতিক দলের ধারাবাহিক সংলাপের মাধ্যমে ‘জুলাই সনদ’ এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে,’ মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) রাতে জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া এক টেলিভিশন ভাষণে এসব কথা বলেন অধ্যাপক ইউনূস।
‘সংস্কারের দিক থেকে আমরা আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছেছি,’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর আমরা অনেক দূর এগিয়ে গেছি।
তিনি বলেন, ‘জুলাই সনদ’ শুধু রাজনৈতিক ইতিহাসেই নয়, বৃহত্তর রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটেও স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
‘শুধু দলিল নয়, এই সনদ তৈরির প্রক্রিয়াটিও স্মরণে রাখা হবে,’ বলেন অধ্যাপক ইউনূস।
জাতির পক্ষ থেকে অধ্যাপক ইউনূস সব রাজনৈতিক দলের নেতা ও ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের প্রতি, বিশেষ করে এই উদ্যোগের নেতৃত্ব দেওয়া অধ্যাপক আলী রিয়াজের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানান।
তিনি জানান, রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা শান্তিপূর্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে আলোচনায় অংশ নিয়েছেন।
আরও পড়ুন: নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে একটি গোষ্ঠী উন্মুখ: প্রধান উপদেষ্টা
‘মতপার্থক্য সত্ত্বেও সব দলের মধ্যে ঐকমত্যে পৌঁছানোর সম্মিলিত প্রয়াস ছিল,’ বলেন ইউনূস। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই ঐকমত্যের ভিত্তিতেই শিগগির রাজনৈতিক দলগুলো ‘জুলাই সনদ’ স্বাক্ষর ও বাস্তবায়নে একমত হবে।
তিনি বলেন, নিশ্চিত করতে হবে, কোনো ভবিষ্যৎ সরকার যেন আর কখনো ফ্যাসিবাদী হয়ে উঠতে না পারে।
‘রাষ্ট্রকে এমনভাবে পুনর্গঠিত করতে হবে, যাতে ফ্যাসিবাদের যেকোনো লক্ষণ তাৎক্ষণিকভাবে দমন করা যায়—যাতে আর কখনো ১৬ বছর অপেক্ষা করতে না হয়, এত জীবন হারাতে না হয়, আর কখনো একটি গণ-অভ্যুত্থানের প্রয়োজন না হয়,’ বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরে এসেছে, অর্থনীতি পুনরুদ্ধার হয়েছে এবং বহু সংকটের সমাধান হয়েছে।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্কসংক্রান্ত আলোচনা সফলভাবে শেষ হয়েছে, যা অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলেছে বলেও জানান তিনি। ড. ইউনূস বলেন, এক বছর আগে যখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেয়, তখন দেশ ছিল ১৬ বছরের ধ্বংস ও লুটপাটে বিপর্যস্ত। তখন অনেকেই বিশ্বাস করেননি যে এই অর্থনীতি আবার ঘুরে দাঁড়াবে।
‘কিন্তু মাত্র এক বছরের মধ্যেই আমরা এমন অগ্রগতি করেছি, যা কেউ কল্পনাও করতে পারেনি। অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এখন সময় এসেছে পূর্ণ গতিতে এগিয়ে যাওয়ার,’ বলেন ইউনূস। তিনি জানান, এখন সরকার নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের পথে এগোচ্ছে।
দায়িত্ব গ্রহণের চার মাস পর জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে অধ্যাপক ইউনূস জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৬ সালে আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দেন। তবে তার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ সম্পন্ন করতে হবে, যার মধ্যে রয়েছে ‘জুলাই ঘোষণা’ এবং ‘জুলাই সনদ’।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে জাতির সামনে উপস্থাপন করে ‘জুলাই ঘোষণা’। অধ্যাপক ইউনূস বলেন, এই ঘোষণায় জুলাই অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপট ও বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধসহ অন্যান্য ঐতিহাসিক ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের কথাও তুলে ধরা হয়েছে।
তিনি জানান, সরকার সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন—এই তিনটি মূল দায়িত্ব সামনে রেখে কাজ করছে।
জুলাই অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া ছাত্র, শ্রমিক ও সাধারণ জনগণ সারাদেশে দেয়ালে তাদের দাবি ও প্রত্যাশা লিখে গেছেন। এর মূল দাবি ছিল রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার গণতান্ত্রিক সংস্কার। এই লক্ষ্য পূরণে সরকার গঠন করে একাধিক সংস্কার কমিশন।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘মূল কমিশনগুলোর দেওয়া সুপারিশের মধ্যে আমরা ইতোমধ্যে বহু স্বল্পমেয়াদি ও জরুরি সংস্কার বাস্তবায়ন করেছি।’
এই সংস্কারগুলো অর্থনীতি, বিচারব্যবস্থা ও প্রশাসনে গতি আনবে; স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি বাড়াবে; দুর্নীতি, অনিয়ম ও হয়রানি কমাবে বলে জানান তিনি।
দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার বাস্তবায়নে সরকার গঠন করে জাতীয় সমঝোতা কমিশন। অধ্যাপক ইউনূস জানান, ৩০টির বেশি রাজনৈতিক দল ও জোট এতে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছে এবং তাদের মতামত দিয়েছে।
প্রাথমিক পর্যায়ে দুই মাসে ১৬৬টি সুপারিশ নিয়ে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে কমিশন। রাজনৈতিক ঐকমত্যের জায়গাগুলো চিহ্নিত করে ১৯টি মৌলিক সংস্কার নির্ধারণ করে।
পরবর্তী ২৩ দিনের আলোচনায় এই ১৯টি বিষয়ের প্রায় সব কটিতেই ঐকমত্যে পৌঁছানো গেছে। তবে কিছু বিষয়ে কিছু রাজনৈতিক দলের ভিন্নমত রয়েছে বলেও জানান অধ্যাপক ইউনূস।
এ সময়ে তিনি জুলাইয়ের শহীদদের জাতির গর্বিত সন্তান অভিহিত করে শ্রদ্ধাভরে তাদের স্মরণ করেন। ‘জুলাইয়ে যারা আহত হয়েছেন, চিরতরে পঙ্গু হয়েছেন বা দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন, তাদের প্রতি জাতির পক্ষ থেকে গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জানাই,’ বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: ফেব্রুয়ারির মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনে ইসিকে চিঠি দেব: প্রধান উপদেষ্টা
গত এক বছরে জাতি অনেক সংকট ও সম্ভাবনার মধ্য দিয়ে অতিক্রম করেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। ‘কয়েকটি দুর্ঘটনা ও শোকাবহ ঘটনা আমাদের গভীরভাবে আঘাত করেছে।’
সাম্প্রতিক সময়ে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান দুর্ঘটনায় বহু মানুষের প্রাণহানি এবং অগ্নিকাণ্ডে আহতদের কথা স্মরণ করেন অধ্যাপক ইউনূস। তিনি বলেন, ‘এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় আমাদের নিষ্পাপ শিশুরাও প্রাণ হারিয়েছে। যারা এখনো চিকিৎসাধীন, তাঁদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করি।’
এই ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর সিঙ্গাপুর, চীন ও ভারতের চিকিৎসক ও নার্সেরা আহতদের সহায়তায় অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন জানিয়ে তিনি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। একই সঙ্গে যারা রক্ত দিয়ে সহায়তা করেছেন, তাঁদের প্রতিও ধন্যবাদ জানান।
১২১ দিন আগে
জুলাই সনদে যেকোনো সময় সই করতে প্রস্তুত বিএনপি: সালাহউদ্দিন
বিএনপি জুলাই জাতীয় সনদে যেকোনো সময় সই করতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। তিনি জোর দিয়ে বলেন, এই বিষয়ে যেকোনো বিভ্রান্তি ছড়ানো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
তিনি বলেন, ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তুত জুলাই জাতীয় সনদের চূড়ান্ত খসড়া যদি আগামীকাল আমাদের কাছে পাঠানো হয়—তাহলে আমরা একই দিনে সই করব। আমরা যেকোনো সময় সই করতে প্রস্তুত—এ নিয়ে কোনো বিরোধ নেই।’
সোমবার (৪ আগস্ট) গুলশানের বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
সালাউদ্দিন বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো যদি সনদের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করতে চায়—তাহলে বিএনপি এই ধরনের আলোচনায় অংশগ্রহণের জন্য উন্মুক্ত।
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, দলটি ইতোমধ্যেই তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। কিছু বিষয়ে ভিন্নমতের নোট যোগ করেছে এবং অন্য বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। ‘যখনই আমরা সম্মত বিষয় এবং আমাদের ভিন্নমতের নোট উভয়ই প্রতিফলিত করে নথিটি পাব—তখনই আমরা তাতে সই করব। আমরা সেই প্রতিশ্রুতি দিয়েছি এবং এ নিয়ে বিভ্রান্তির কোনো অবকাশ থাকা উচিত নয়,’ বলেন তিনি।
তিনি বলেন, জুলাই সনদে দেওয়া প্রতিশ্রুতিগুলো কি কেবল দলিলে সই করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে—নাকি এর বাস্তবায়ন নিয়ে আরও আলোচনা হবে—তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
সালাহউদ্দিন উল্লেখ করেন, কিছু দল সন্দেহ প্রকাশ করে বলেছে যে, এই বিষয়টি স্পষ্ট না হওয়া পর্যন্ত তারা সনদে সই করবে না।
তিনি বলেন, বিএনপি সহযোগিতা করছে না বলে একটি বিভ্রান্তিকর বক্তব্য প্রচার করা হচ্ছে। তবে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দলটি কীভাবে কাজ করেছে—তা জনগণের কাছে স্পষ্ট।
পড়ুন: জামায়াতের সঙ্গে জোটের সুযোগ নেই, তবে এনসিপির জন্য আলোচনার দরজা খোলা: সালাহউদ্দিন
বিএনপির এই নেতা বলেন, তারা নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে তাদের দলের অবস্থান এবং আলোচনার ফলাফল গণমাধ্যমের মাধ্যমে জানিয়েছেন।
সালাহউদ্দিন বলেন, ‘আমরা সর্বোচ্চ সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছি এবং তা অব্যাহত রাখছি। এই সংস্কারগুলো আমাদের নিজস্ব প্রতিশ্রুতির অংশ। আমরা অনেক আগেই জাতির কাছে ৩১ দফা কর্মসূচি বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। তাই আমাদের উদ্দেশ্য বা আন্তরিকতা নিয়ে কারো প্রশ্ন তোলা উচিত নয়। আমরা বিশ্বাস করি, যে বিভ্রান্তি তৈরি করা হচ্ছে—তা সম্পূর্ণ ইচ্ছাকৃত এবং রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নিরাপত্তাহীনতার অনুভূতি প্রতিফলিত করে।’
তিনি বলেন, বিএনপি চায় নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ততার মাধ্যমে সবকিছু আইনসম্মত ও সাংবিধানিকভাবে করা হোক।
বিএনপি নেতা বলেন, ‘আমরা সকল আলোচনায় অংশ নিতে প্রস্তুত। বিএনপি জাতির সামনে ঘোষণা করেছে এবং স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা এবং সংস্কারের মাধ্যমে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের জন্য দলটি যেকোনো প্রক্রিয়াকে সমর্থন করবে এবং সকল ধরণের আলোচনায় যোগ দেবে।’
তিনি বলেন, জুলাই ২০২৫ সালের জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের প্রতিটি পর্যায়ে পূর্ণ আইনি ও সাংবিধানিক সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবের সঙ্গে বিএনপি একমত।
২০২৪ সালের জুলাইয়ের ছাত্র আন্দোলন এবং বৈষম্যের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক অভ্যুত্থানের কথা উল্লেখ করে সালাহউদ্দিন বলেন, এই ঐতিহাসিক ঘটনাগুলোকে সংবিধানে যথাযথভাবে স্বীকৃতি দিতে হবে। ‘আমরা এই প্রস্তাবের সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত এবং ৩০ জুলাই রাতে আমাদের প্রতিক্রিয়া জমা দিয়েছি।’
সকলকে ঐক্যবদ্ধ থেকে ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্যকে সমুন্নত রাখার এবং একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সেই ঐক্যকে শক্তিতে রূপান্তর করার আহ্বান জানান বিএনপির এই নেতা।
তিনি সাংবাদিকদের আরও জানান, দ্বিতীয় পর্যায়ে ঐকমত্য কমিশনে ১৯টি মূল সংস্কার বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে—যার মধ্যে ১২টিতে বিএনপি একমত হয়েছে এবং বাকি ৭টিতে ভিন্নমতের পত্র জমা দিয়েছে।
জুলাই ঘোষণা সম্পর্কে তিনি বলেন, বিএনপি অনেক আগেই এ বিষয়ে তাদের মতামত জানিয়েছে এবং আসন্ন ঘোষণা অনুষ্ঠানে এখনও আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণের অপেক্ষায় রয়েছে।
তিনি বলেন, জুলাই ঘোষণার উল্লেখযোগ্য ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক মূল্য রয়েছে। ‘বিএনপি ফেব্রুয়ারিতে ঘোষণায় প্রদত্ত প্রস্তাবগুলোতে সাড়া দিয়েছে।’
সালাহউদ্দিন বলেন, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে জুলাই ঘোষণা অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এতে যোগ দেবেন। ‘কিন্তু বিএনপি এখনও অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য আমন্ত্রণ পায়নি।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপি এখনও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের অপেক্ষায় রয়েছে। তিনি যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জাতি এবং নির্বাচন কমিশনকে তার পূর্বের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ফেব্রুয়ারিতে পরবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে জানাবেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, তারা জানতে পেরেছেন যে জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকীতে জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের সময়সূচি ঘোষণা করতে পারেন। ‘আমরা সেই অপেক্ষায় আছি।’
১২২ দিন আগে
জুলাই ঘোষণাপত্র ও জুলাই সনদের দাবিতে ‘জুলাই শহীদ পরিবার’র শাহবাগ অবরোধ
জুলাই ঘোষণাপত্র ও জুলাই সনদের সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবিতে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছেন জুলাই যোদ্ধারা।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সকাল ৯টা থেকে ‘জুলাই শহীদ পরিবার ও জুলাই যোদ্ধা (আহত)’ ব্যানারে একদল আন্দোলনকারী শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন।
আন্দোলনকারীরা বলেন, জুলাই মাসের আন্দোলনে নিহত ও আহতদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিতে হবে এবং তাদের সামাজিক ও আইনগত সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।
জুলাই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিচারের জন্য একটি নির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিও জানান তারা।
পড়ুন: ডাকসুর খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ, ৬ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ
আন্দোলনের নেতৃত্বে রয়েছেন মাসুদ রানা সৌরভ। তিনি গত বছরের জুলাই আন্দোলনের সময় মহাখালী এলাকায় আহত হয়েছিলেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের দাবি আদায় না হওয়া বা সরকারের আশ্বাস না পাওয়া পর্যন্ত আমরা রাস্তা ছাড়ব না।’
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত শাহবাগ মোড়ে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে এবং আশপাশের এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
১২৬ দিন আগে
জুলাই সনদ একটি সামাজিক চুক্তি, কোনো পক্ষ এটি ভাঙবে না: সালাহউদ্দিন
ঢাকা, ৩০ জুলাই (ইউএনবি): জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ একটি মহান বাধ্যতামূলক সামাজিক চুক্তি হিসাবে বর্ণনা করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, কোনো দল এটি অমান্য করার সাহস করবে না, কারণ এটি একটি স্বচ্ছ জাতীয় সংলাপের মাধ্যমে প্রস্তুত করা হয়েছে এবং পরবর্তী সংসদের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা আবশ্যক।
বুধবার (৩০ জুলাই) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন (এনসিসি) আয়োজিত দ্বিতীয় দফা সংলাপের ২২তম অধিবেশনে চা বিরতির সময় সালাউদ্দিন সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘কোনো রাজনৈতিক দল কি এটি ভঙ্গ করার সাহস করবে? কোনো দল কি সেই ঝুঁকি নেবে? আমি মনে করি না এর চেয়ে বড় ঐকমত্য, সমঝোতা স্মারক বা সামাজিক যোগাযোগ বা চুক্তি হতে পারে। এটি জাতি, জনগণ, রাজনৈতিক দল এবং সকল অংশীদারদের মধ্যে একটি চুক্তি। এবং আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে এটি বাস্তবায়নের একমাত্র স্থান হলো জাতীয় সংসদ।’
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সনদের তাৎক্ষণিক বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার জন্য একটি আইনি কাঠামোর দাবির বিষয়ে বিএনপির অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি এই মন্তব্য করেন।
সালাহউদ্দিন বলেন, ‘কেউ কেউ বলছেন এটি একটি আইনি দলিল হওয়া উচিত। কিন্তু আমি বলব এই পুরো প্রক্রিয়াটি—দীর্ঘ, স্বচ্ছ, সরাসরি সম্প্রচারিত আলোচনায় অনেক রাজনৈতিক দলকে জড়িত করা—একটি উন্মুক্ত আদালতের বিচারের মতো। জাতি দেখেছে কে কী বলেছে। এখন যখন প্রধান উপদেষ্টা, সংস্কার কমিশনের প্রধান, এনসিসির সদস্য, জাতীয় নেতা এবং সকল দলের প্রতিনিধিদের সই নিয়ে একটি সনদ প্রস্তুত করা হয়—এবং এটি অনলাইনে এবং সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়—তখন কি কোনো দল এটি লঙ্ঘনের সাহস করতে পারে? আমি তা মনে করি না।’
তিনি বলেন, জুলাই-আগস্ট ছাত্র অভ্যুত্থানের পর সনদ জাতির সম্মিলিত চেতনাকে প্রতিফলিত করে। ‘কোনো রাজনৈতিক দল কি জাতির আকাঙ্ক্ষা এবং ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর রাজনৈতিক নেতাদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি উপেক্ষা করতে পারে... আমি বিশ্বাস করি না যে এটি সম্ভব,’ বলেন তিনি।
পড়ুন: অন্তর্বর্তী সরকারকে ভুল পদক্ষেপ, গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্তের বিষয়ে সতর্ক করলেন তারেক
সালাউদ্দিন জোর দিয়ে বলেন, বিএনপি নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছে এবং সনদ কীভাবে বাস্তবায়ন করা উচিত সে বিষয়ে এনসিসির প্রস্তাবগুলোর সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত। তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, জাতীয় সংসদই এই সনদ বাস্তবায়নের একমাত্র স্থান।’
তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, সনদের একটি ধারা স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে সংসদ গঠনের দুই বছরের মধ্যে সম্মত প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে হবে। ‘আমরা সেই অনুভূতি এবং প্রস্তাবের সাথে শতভাগ একমত।’
সালাহউদ্দিন আরও বলেন, সনদ সই হওয়ার আগেই অধ্যাদেশ এবং উপদেষ্টা পর্যায়ের পদক্ষেপের মাধ্যমে অনেক সংস্কার বাস্তবায়ন শুরু হয়ে গেছে।
বিএনপি সংস্কার গ্রহণ করে না এমন অভিযোগের বিষয়ে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার কমিশনের মোট ৮২৬টি প্রস্তাবের মধ্যে আমরা মাত্র ৫১টির সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছি। এত বিশাল ঐকমত্য গঠনের প্রক্রিয়ার পরে কেউ কীভাবে বলতে পারে যে বিএনপি সংস্কারের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ নয়?’
১২৭ দিন আগে
‘জুলাই সনদ’ ঘোষণার আহ্বান ফখরুলের, সংস্কারে ঐকমত্যকে স্বাগত
১২ দফা মৌলিক সংস্কার প্রস্তাবে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যকে ইতিবাচক অগ্রগতি হিসেবে উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অবিলম্বে ‘জুলাই সনদ’ ঘোষণা করে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের পথ সুগম করার আহ্বান জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি ভালো কিছু ঘটছে। আমি আজ (মঙ্গলবার) পত্রিকায় দেখেছি, সব রাজনৈতিক দল ১২ দফা সংস্কার প্রস্তাবে একমত হয়েছে। এটি একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ।’
তিনি জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রিয়াজ ও তার দলের কঠোর পরিশ্রমের জন্য প্রশংসা করেন, যারা সংস্কার ইস্যুতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে কাছাকাছি আনতে কাজ করেছেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই—সংস্কারগুলো বিলম্ব না করে সম্পন্ন করুন এবং অবিলম্বে (জুলাই জাতীয়) সনদ ঘোষণা করুন। দয়া করে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে লন্ডনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে যে তারিখে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, সেই অনুযায়ী নির্বাচন দিন। জাতি সেখানে আশার আলো দেখেছে, অনুপ্রেরণা পেয়েছে। জনগণকে তাদের ভোটাধিকারসহ অন্যান্য অধিকার ফিরিয়ে দিন।’
জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি শফিউল বারী বাবুর পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শফিউল বারী বাবু স্মৃতি সংসদ এই অনুষ্ঠান আয়োজন করে।
ফখরুল বলেন, অনেকে বিএনপিকে সমালোচনা করে বলেন, দলটি নাকি সংস্কার চায় না। ‘কিন্তু সংস্কারের ধারণা আমাদের কাছ থেকেই এসেছে—আমরাই এটা শুরু করেছি।’
তিনি বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান বাকশালের একদলীয় শাসনব্যবস্থা বিলুপ্ত করে বহুদলীয় গণতন্ত্র চালু করেন এবং গণমাধ্যম ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেন, যা ছিল তার রাজনৈতিক সংস্কারের অংশ।
অর্থনৈতিক সংস্কারের অংশ হিসেবে তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান রুদ্ধ ও ব্যর্থ অর্থনৈতিক মডেল থেকে বেরিয়ে এসে মুক্তবাজার অর্থনীতি চালু করেন, যার ফলে মাত্র সাড়ে তিন বছরে দেশের আর্থিক অবস্থার উন্নতি হয়।
তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া রাষ্ট্রপতি শাসনব্যবস্থার পরিবর্তে সংসদীয় গণতন্ত্র চালু করেন। তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাও প্রবর্তন করেন এবং নারী ক্ষমতায়নসহ বিভিন্ন খাতে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার বাস্তবায়ন করেন।
‘তাই বিএনপি কখনো সংস্কারকে ভয় পায়নি—আমরা সবসময় সংস্কারকে স্বাগত জানিয়েছি,’ বলেন ফখরুল।
১২টি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে ঐকমত্য গঠনে সম্পৃক্ত সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তবে কিছু প্রস্তাব নিয়ে আমাদের উদ্বেগ রয়েছে, যেমন—আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতি। এটি বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের কাছে অপরিচিত।’
আরও পড়ুন: জনগণের জীবনমান উন্নয়নে রাষ্ট্র সংস্কারের আহ্বান ফখরুলের
তিনি বলেন, ‘সংসদের নিম্নকক্ষে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের মতো প্রস্তাব এসেছে—যা আমাদের জনগণ বোঝে না। তারা এখনো ইভিএম ভোটিং নিয়ে বিভ্রান্ত—তাহলে পিআর পদ্ধতি কীভাবে বুঝবে?’
কিছু রাজনৈতিক দল পিআর পদ্ধতি ছাড়া নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার শর্ত দেওয়ায় ফখরুল সমালোচনা করে বলেন, ‘এই ধরনের বিভ্রান্তিকর ধারণা থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। জনগণকে এমন একটি ভোটিং ব্যবস্থা দিতে হবে, যা তারা বোঝে এবং যা তাদের যথার্থ প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করে।’
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, বাংলাদেশের বাস্তবতা ও রাজনৈতিক সংস্কৃতির সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ বিদেশি ধারণা দিয়ে দেশের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা উচিত নয়।
১২৮ দিন আগে