৫ আগস্ট
১৬ বছর জুলুমের পুঞ্জীভুত ক্ষোভের বহির্প্রকাশ ৫ আগস্ট: মঈন খান
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, ‘দীর্ঘ ১৬ বছর আওয়ামী দুঃশাসন ও স্বৈরশাসন বাংলাদেশের জনজীবন বিপর্যস্ত করে তুলেছিল। দীর্ঘ সময় ধরে তাদের এই জুলুম-অত্যাচারে মানুষের মধ্যে যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছিল, সেই পুঞ্জীভূত ক্ষোভের বহির্প্রকাশ ঘটে গত বছরের ৫ আগস্ট। তাই এ দিন ছাত্রজনতাসহ সারা দেশের মুক্তিকামী মানুষ ঢাকার রাজপথে নেমে আসে।’
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) সকালে গণঅভ্যুত্থানের একবছর পূর্তি উপলক্ষে নরসিংদী পলাশে বিএনপির ও এর অঙ্গ সংগঠনের আয়োজনে বিজয় র্যালিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় মঈন খান বলেন, আওয়ামী দুঃশাসনের সময় বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে লাখ লাখ মামলা দেওয়া হয়। এসব মামলা থেকে রক্ষা পায়নি তৎকালিক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ তৃণমূলের হাজার হাজার নেতাকর্মী।’
আরও পড়ুন: গণতান্ত্রিক উত্তরণ বিলম্বিত হলে জনগণ আবার ফুঁসে উঠতে পারে: ড. মঈন খান
তিনি বলেন, ‘বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, তারা প্রতিহিংসায় বিশ্বাস করে না। গণতান্ত্রিক পদ্ধতি ব্যাতীত কোনো সভ্য দেশ সৃষ্টি হতে পারে না। তাই অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে সেই গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত করবে।’
ঘোড়াশাল বাইপাস সড়ক থেকে শুরু করে বিজয় র্যালিটি নরসিংদী-২ নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এতে অংশ নেয় উপজেলা বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন— পলাশ উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুস সাত্তার, সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর সাইফুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. বাহাউদ্দীন ভুঁইয়া মিল্টন, সাংগঠনিক সম্পাদক আবুবকর, উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন, সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট কানিজ ফাতেমা ও আওলাদ হোসেন জনি প্রমুখ।
১২২ দিন আগে
ছেলের স্বপ্নের বাংলাদেশ দেখার অপেক্ষায় আবু সাঈদের মা
আজ ৫ আগস্ট, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের বছরপূর্তি। এই দিনে সারা দেশে বিজয় উৎসব হলেও ছেলের স্বপ্নের বাংলাদেশ দেখাই এখন একমাত্র ইচ্ছা বলে জানিয়েছেন জুলাই বিপ্লবের প্রথম শহীদ আবু সাঈদের মা মনোয়ারা বেগম।
মনোয়ারা বেগম বলেন, ‘আমার ছেলে যে স্বপ্ন নিয়ে জীবন বিসর্জন দিয়েছে, সেই স্বপ্নের বাংলাদেশ দেখার অপেক্ষায় আছি। যেন এ দেশে আর কোনো দিন ফ্যাসিস্টের জন্ম না হয়। এ দেশে আর যেন বৈষম্য, হানাহানি, খুনোখুনি না থাকে।’
পীরগঞ্জের বাবনপুর গ্রামের জাফরপাড়ায় শহীদ আবু সাঈদের পৈতৃক নিবাসে ছেয়ে আছে শূন্যতা। পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা রয়েছেন বাড়িতে, রয়েছে তার ব্যবহৃত জামা-কাপড়সহ অন্যান্য জিনিসপত্রও।
তবে প্রকৃতির নিয়মে সব আগের মতো চললেও বাবা-মায়ের কাছে আবু সাঈদের শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয়।
রংপুর শহর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে পীরগঞ্জ উপজেলার বাবনপুর গ্রামের জাফরপাড়ার একটি সাধারণ পরিবারের সন্তান ছিলেন আবু সাঈদ। বাড়িতে ঘরের পাশেই আবু সাঈদের কবরের সামনে নিষ্পলক দাঁড়িয়ে ছিলেন মা মনোয়ারা বেগম ও বাবা মকবুল হোসেন।
আরও পড়ুন: অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেই আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে: আইন উপদেষ্টা
মা মনোয়ারা বলেন, ‘আমার সন্তানের কারণে বাংলাদেশ নতুন করে স্বাধীন হয়েছে। আমার ছেলের মতো যেন আর কোনো মায়ের বুক খালি না হয়—এটাই সবার কাছে আমার দাবি। সে যে চেতনা নিয়ে বুকের রক্ত দিয়েছে, সেই চেতনার বাংলাদেশ দেখে মরলে শান্তি পাব।’
কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের বাড়িতে এখন সবাই আসেন, জানতে চান আমার ছেলের আত্মদানের কথা। সকাল হচ্ছে, সন্ধ্যা হচ্ছে, মানুষজন আগের মতোই বাড়িতে আসেন। কিন্তু হাজার মানুষের ভিড়েও আমার বুকে এক শূন্যতা বিরাজ করে। এক বুক হাহাকার নিয়ে প্রতিটি মুহূর্ত কাটে আমার। সেই শূন্যতা কে পূরণ করবে? আমি একজন মা হিসেবে আমার ছেলের স্বপ্নের নতুন বাংলাদেশ দেখার অপেক্ষায় আছি।’
বাবা মকবুল হোসেন বলেন, ‘আমার ছেলের আত্মদানের মাধ্যমে বাংলাদেশ জালিম সরকারের হাত থেকে মুক্ত হয়েছে। দেশের মানুষ স্বৈরশাসন থেকে মুক্তি পেয়েছে।’
আন্দোলনে তার ছেলের আত্মত্যাগের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ছেলেরা পড়াশোনা করে চাকরি না পাওয়ায় আন্দোলন করেছে। এটা ছিল ন্যায্য দাবি।’
আবু সাঈদের হত্যাকারীদের ব্যাপারে মকবুল হোসেন বলেন, ‘যে পুলিশ সদস্য আমার ছেলের বুকে গুলি চালিয়েছে, সেই পুলিশসহ অন্যান্য হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।’
১২২ দিন আগে
৫ আগস্ট পত্রিকা অফিসে ছুটি থাকবে
‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’ উপলক্ষে মঙ্গলবার দেশের সব পত্রিকা অফিসে ছুটি ঘোষণা করেছে নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব)।
তবে ওই দিন বিশেষ ব্যবস্থায় পত্রিকা প্রকাশ করতে পারবে কর্তৃপক্ষ।
সোমবার (৪ আগস্ট) এক ছুটির বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, নোয়াবের নির্বাহী কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
১২২ দিন আগে
রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্য হলে আগামী ৫ আগস্টেই জুলাই ঘোষণাপত্র: আসিফ মাহমুদ
রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্য হলে সরকার আগামী ৫ আগস্ট জুলাই ঘোষণাপত্র দেওয়ার চিন্তাভাবনা করছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীভ ভুঁইয়া।
শুক্রবার (১১ জুলাই) সন্ধ্যায় কুমিল্লা জেলা আইনজীবী সমিতির নতুন ভবন উদ্বোধন উপলক্ষে এক মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে কাজ চলছে। ইতোপূর্বে রাজনৈতিক দলগুলো থেকে প্রস্তাবনা নেওয়া হয়েছিল। তারা তাদের মত করে ঘোষণাপত্রের কপি সরকারকে দিয়েছে। এখন আবারও কার্যক্রম চলমান আছে। সরকারের পক্ষ থেকে চেষ্টা হচ্ছে আগামী ৫ আগস্ট যদি ঘোষণাপত্র দেওয়া যায়। তবে সেজন্য রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে আসা প্রয়োজন। আশা করি রাজনৈতিক ঐক্যমত শেষে ৫ আগস্ট জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ করা সম্ভব হবে।
পড়ুন: শান্তিপূর্ণ কোটা সংস্কার আন্দোলন সহিংসতায় রূপ নেয় ১১ জুলাই: উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ
এর আগে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আইনজীবী সমিতির মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কুমিল্লা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি মো. ইসমাইল, সাবেক সভাপতি কাজী নাজমুস সাদাত। অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ব করেন জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. শহীদুল্লাহ।
১৪৬ দিন আগে
‘৫ আগস্ট’ গণঅভ্যুত্থান ও ১৬ জুলাই’ জুলাই শহীদ দিবস পালিত হবে
আগামী ৫ আগস্ট ‘গণঅভ্যুত্থান’ দিবস উদযাপন করা হবে। এছাড়া ১৬ জুলাই ‘জুলাই শহীদ’ দিবস পালন করা হবে।
রবিবার (২৯ জুন) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে এমন তথ্য দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
তিনি বলেন, ৮ আগস্টের জন্য কোনো বিশেষ উদযাপন থাকবে না।
এর আগে সরকার ৫ আগস্টকে ‘জুলাই অভ্যুত্থান দিবস’ এবং ৮ আগস্টকে ‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল।
গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের অপসারণের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয় ৮ আগস্ট।
আরও পড়ুন: গণঅভ্যুত্থান দিবস উদযাপনে ৩৬ সদস্যের জাতীয় কমিটি গঠন
১৫৯ দিন আগে
৫ আগস্ট সরকারি ছুটি, ঘোষণা রবিবার: উপদেষ্টা ফারুকী
ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থান দিবস হিসেবে এখন থেকে ৫ আগস্ট সরকারি ছুটি পালন করা হবে বলে জানিয়েছেন সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে ফারুকী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, রবিবার উপদেষ্টা পরিষদ বৈঠকে ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলন দিবস হিসেবে জাতীয় দিবস ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
ফারুকী বলেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ঘিরে আগামী ১ জুলাই থেকে কর্মসূচি শুরু হবে, চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। আগামী সোমবার মাসব্যাপী কর্ম পরিকল্পনা নিয়ে বিস্তারিত জানানো হবে। ১৪ জুলাই থেকে জুলাই কর্মসূচির মূল আয়োজন শুরু হবে। আন্দোলনে যেভাবে দেশ ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল, একইভাবে সবাইকে নিয়ে এ কর্মসূচি পালন করা হবে।’ পাশাপাশি ফারুকী জানান, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন রেডিও বাংলাদেশ বেতার ও বিটিভিকে স্বায়ত্তশাসিত করার চিন্তা করা হচ্ছে। শিক্ষা উপদেষ্টা ড. সিআর আবরার এ বিষয়ে কাজ করছেন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, উপ প্রেসসচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ও সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: আমাকে প্রশ্ন করায় সাংবাদিকদের চাকরি গেছে, এটি হাস্যকর: ফারুকী
১৬৯ দিন আগে
৫ আগস্ট সংসদে থাকার দাবি পলকের, শাজাহানের বক্তব্যে আদালতে হট্টগোল
হত্যাকাণ্ডে জড়িত নয় দাবি করে গত বছরের ৫ আগস্ট সংসদ ভবনে ছিলেন বলে আদালতকে জানিয়েছেন সাবেক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
তিনি বলেন, ‘ওইদিন রাত আড়াইটায় স্পিকার, তাকেসহ ১২ জনকে সেনাবাহিনী উদ্ধার করে নিয়ে যায়।’
অন্যদিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটার তুরিন আফরোজ আদালতের কাছে দাবি করেছেন, তাকে রিমান্ডের সময় শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে।
অবশ্য জুনাইদ আহমেদ পলক ও তুরিন আফরোজের বক্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করে আদালতে বক্তব্য দিয়েছেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পিপি ওমর ফারুক ফারুকী। তিনি বলেছেন, হত্যাকাণ্ডের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত পলক ও তুরিন আফরোজ।
আরও পড়ুন: অভিনেত্রী শাওনসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
৫ আগস্ট সংসদে লুকিয়ে ছিলেন পলক
সময় তখন সকাল ১০টা ৩৫ মিনিট। পুলিশের একজন কর্মকর্তা জুনায়েদ আহমেদ পলকের নাম ধরে ডাকেন। তখন পলক তার ডান হাত উঁচু করেন। তার হাতে পরানো ছিল হাতকড়া।
পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, গত বছরের ৫ আগস্ট বাড্ডায় রংমিস্ত্রি আব্দুল জব্বার খুন হন। এ হত্যা মামলায় জুনায়েদ আহমেদ পলকের নাম রয়েছে। হত্যাকাণ্ডের রহস্য উৎঘাটনের জন্য তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসা করা জরুরি।
পুলিশ কর্মকর্তার বক্তব্য শেষ হওয়ার পর জুনায়েদ আহমেদ পলক হাত উঁচু করে কথা বলার জন্য আদালতের কাছে অনুমতি চান।
আদালতের অনুমতি পাওয়ার পর জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘গত ৫ আগস্ট বাড্ডার খুনের ঘটনার সঙ্গে আমি জড়িত। একটা বিষয় আপনাকে জানিয়ে রাখি। গত বছরের ৫ আগস্ট সকাল ১১টার সময় আমি সংসদে অবস্থান করি। একটা পর্যায়ে আমরা সংসদে আক্রান্ত হয়। একপর্যায়ে আমি, স্পিকার, ডেপুটি স্পিকারসহ ১২ জন সংসদের বিশেষ কক্ষে অবস্থান করতে বাধ্য হই। রাত আড়াইটার সময় সেনাবাহিনী আমাদের সেখান থেকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।’
পলক আদালতকে আরও বলেন, ‘যেখানে আমি সারা দিন সংসদে অবস্থান করেছিলাম, সেখানে ৫ আগস্ট কোনো হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আমার কোন দায় নেই। ইতোমধ্যে আমার ৮৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে। যদি জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন হয়, তাহলে আমাকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেওয়া হোক।’
অবশ্য জুনায়েদ আহমেদ পলকের বক্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী। তিনি বলেন, ‘আমরা বারবারই বলছি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতাকে যারা সরাসরি গুলি করে হত্যা করেছে, তাদের যে শাস্তি, একই শাস্তি, যারা এসব হত্যাকাণ্ডের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। জুনায়েদ আহমেদ পলক এসব হত্যাকাণ্ডের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত। ছাত্র জনতার আন্দোলনের সময় যে কয়েকজন ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার সঙ্গে মিটিং করেছেন, তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন এ জুনায়েদ আহমেদ পলক।’
পিপি ওমর ফারুক ফারুকী আদালতকে বলেন, ‘আমরা শুনেছিলাম, ৫ আগস্ট সংসদে স্পিকারসহ বেশ কয়েকজন লুকিয়ে ছিলেন। আজ জুনায়েদ আহমেদ পলক সেই ঘটনা বললেন। এখনো স্পিকার শিরিন শারমিন চৌধুরীকে বিচারের মুখোমুখি করা হয়নি।’
আদালত উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে জুনায়েদ আহমেদ পলকে তিন দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন।
কাঁঠগড়ায় কাঁদলেন, নির্যাতনের অভিযোগ করলেন তুরিন
সকাল ১০টা এক মিনিট। তখনো বিচারক এজলাসে আসেননি। কাঠগড়ায় পাশাপাশি দাঁড়িয়ে ছিলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের সাবেক প্রসিকিউটার তুরিন আফরোজ, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক ও সাবেক আইজিপি এ কে এম শহিদুল হক।
তুরিন আফরোজ কাঠগড়ার দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে সামনের দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় তিনি হাসানুল হক ইনুর কাছে আসেন। কাঁদতে কাঁদতে ইনুকে বলছিলেন, রিমান্ডের সময় তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। তখন ইনু তুরিন আফরোজকে বলতে থাকেন, ‘আপনার কথা আদালতের কাছে তুলে ধরেন। সাংবাদিকদের কাছেও তুলে ধরতে পারেন।’
বিচারক এজলাসে প্রবেশ করেন ১০টা ১৫ মিনিটে। এ সময় পুলিশের একজন কর্মকর্তা তুরিন আফরোজের নাম ধরে ডাকেন।
তখন একজন আইনজীবী আদালতের কাছে বলতে থাকেন, ‘তুরিন আফরোজের বক্তব্য রয়েছে। তিনি নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।’
এ সময় তুরিন আফরোজ হাত উঁচু করেন আদালতে কথা বলার জন্য। আদালতের অনুমতি দেওয়ার পর তুরিন আফরোজ বলেন, ‘আমি সবসময়ই আইন ও আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমি কখনো কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না। এখনো নেই। কেবলমাত্র পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য আমি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটরের দায়িত্ব পালন করেছিলাম।’
তুরিন আফরোজ আদালতকে আরও বলেন, ‘এমনিতেই আমি অসুস্থ। আমার হাঁটতে সমস্যা হয়। আমার পায়ে আঘাত করা হয়েছিল।’
তুরিন নাফরোজের বক্তব্য মিথ্যা বলে আদালতকে জানান ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পিপি ওমর ফারুক ফারুকী।
তিনি আদালতকে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সময় কোনো আসামিকেই নির্যাতন করা হয়নি। তুরিন আফরোজকে নির্যাতন করা হয়নি। নির্যাতনের মিথ্যা অভিযোগ করছেন।
পিপির বক্তব্য শেষ হওয়ার পর তুরিন আফরোজ আবারও আদালতে কথা বলেন। এ সময় তিনি পা দেখিয়ে আদালতকে বলেন, ‘আমি মিথ্যা বলছি না। আমার পায়ে নির্যাতন করা হয়েছিল।’
শাজাহানের বক্তব্যের পর আদালতে হট্টগোল
যাত্রাবাড়ী থানার আরিফ খান হত্যা মামলায় শাজাহানকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে পুলিশ। রিমান্ডের স্বপক্ষে আদালতে বক্তব্য তুলে ধরেন একজন পুলিশ কর্মকর্তা। আর রিমান্ডের বিরোধিতা করে আদালতে বক্তব্য তুলে ধরেন শাজাহান খানের আইনজীবীরা।
শাজাহান খানের একজন আইনজিবী আদালতকে বলেন, শাজাহান খান আটবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তার দাদাও ব্রিটিশ আমলে নেতা ছিলেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী যখনই আটবারের এমপি শাজাহান উচ্চারণ করেন, তখন আদালতে উপস্থিত বিএনপিপন্থী একদল আইনজীবী বলতে থাকেন, ভুয়া এমপি শাহজাহান।
এ পর্যায়ে পিপি ওমর ফারুকী আদালতকে বলেন, ‘শাজাহান খান অন্য দলে ছিলেন। তিনি আওয়ামী লীগ এসে সর্বোচ্চ প্রেসিডিয়াম পদ পেয়েছেন। তিনি ফ্যাসিস্ট হাসিনার অন্যতম সহযোগী।’
পিপির আইনজীবীর বক্তব্য শেষ হওয়ার পর শাজাহান নিজেই আদালতের কাছে হাত তোলেন কথা বলার অনুমতি দেওয়ার জন্য। আদালতের অনুমতি পাওয়ার পর শাজাহান আদালতকে বলেন, ‘আমার হার্টে পাঁচটি ব্লক। আমি অসুস্থ। আমাকে দুইবার হাসপাতালে যেতে হয়েছে। যদি জিজ্ঞাসাবাদ করতেই হয়, তাহলে আমাকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেওয়া হোক।’
শাজাহান খান যখন বক্তব্য দিচ্ছিলেন, তখন একদল আইনজীবী আদালতকে বলতে থাকেন, উনি পুলিশকেও মারার কথা বলেছেন। এ সময় আইনজীবীদের হট্টগোল শুরু হয়।
পিপি ওমর ফারুকী আদালতকে বলেন, ‘আদালতের পরিবেশ বজায় রাখার দায়িত্ব যেমন আইনজীবীদের, তেমনি আসামিদের। আসামিরা এমন কোনো কথা বলবেন না, যাতে আদালতের পরিবেশ নষ্ট হয়।’
পিপির কথা বলার সময়ও একদল আইনজীবী হট্টগোল করতে থাকেন। শাজাহান খানকে গালমন্দ করতে থাকেন।
আরও পড়ুন: খুলে দেওয়া হলো কুয়েটের আবাসিক হল
তখন শাজাহান খান আদালতকে বলেন, ‘আমরা কি কথা বলতে পারব না? আমাদের কি কথা বলার কোনো অধিকার নেই?’
শাজাহান খানের বক্তব্যের পর পর আদালতের অনুমতি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি তানভীর হাসান আদালতে কথা বলতে শুরু করেন।
তানভীর আদালতকে বলেন, ‘আমি ছাত্রলীগ করি।’
ছাত্রলীগ শব্দ উচ্চারণ করার পর পরই একদল আইনজীবী বলতে থাকেন, ‘জঙ্গি ছাত্রলীগ’ ‘নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ’ এমন সব শব্দ উচ্চারণ করতে থাকেন। এ সময় তানভীর হাসান তার কথা বলতেই থাকেন। এ সময় আইনজীবীরা জঙ্গি ছাত্রলীগ, নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ বলে চিৎকার করতে থাকেন।
২২৬ দিন আগে
৫ আগস্ট পরবর্তী সরকার দুর্নীতিমুক্ত: দুদক চেয়ারম্যান
৫ আগস্টের পরবর্তী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তবর্তী সরকার দুর্নীতিমুক্ত বলে মন্তব্য করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান আব্দুল মোমেন।
সোমবার (২১ এপ্রিল) লালমনিরহাট জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে গণশুনানিতে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
‘রুখবো দুর্নীতি গড়বো দেশ, হবে স্বপ্নের বাংলাদেশ’ এই স্লোগানে সমন্বিত জেলা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) লালমনিরহাট জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় এ গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: দুদক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়া যায় না: চেয়ারম্যান
তিনি বলেন, ‘শতভাগ লোক বলে দুর্নীতি চাই না, তাহলে দুর্নীতি কীভাবে হয়? দুদকেরও বদনাম ও দুর্নীতি রয়েছে। আপনারা সেটি ধরে দেবেন, আমরা ব্যাবস্থা নেব।’
এছাড়া দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়তে আমরা আপনাদের সহযোগিতা চাই বলে জানান তিনি।
আব্দুল মোমেন বলেন, ‘অনেক কর্মকর্তা সৎ, ভালো কিন্তু কাজ করেন না। এটিও কাম্য নয়। এছাড়া আগে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়েও ঘুষ দিতে হতো। বর্তমান সরকার দুর্নীতিমুক্ত সরকার।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি প্রতিরোধে কর্মকর্তাদের আরও আন্তরিক হতে হবে। সেবা গ্রহীতাদের চাহিদার বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। প্রতিটি প্রকল্পের কাজে ঠিকাদারবান্ধব নয়, বাংলাদেশবান্ধব হতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘এছাড়া কয়েকটা গণশুনানিতে গিয়ে আমার একটা বড় অভিজ্ঞতা হয়েছে। সেটা হচ্ছে আমাদের যে সমস্যাগুলো আছে সেগুলো আসলে কোনো দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা না। আমরা চাইলে সে সমস্যাগুলো তাৎক্ষণিকভাবে সমাধান করতে পারি।’
এ সময় দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় কুড়িগ্রামের আয়োজনে ও লালমনিরহাট জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত এ গণশুনানিতে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ গণশুনানিতে বিশেষ অতিথি ছিলেন দুদকের কমিশনার মিয়া মুহাম্মদ আলী আকবর আজিজী, লালমনিরহাট পুলিশ সুপার ও তরিকুল ইসলাম।
দুদকের এ গণশুনানিতে জেলায় কর্মরত ৩৩টি সরকারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ১০৬টি অভিযোগ জমা পড়ে। এতে সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান ও সেবা গ্রহীতার উপস্থিতিতে গণশুনানি হয়।
আরও পড়ুন: দুদক চেয়ারম্যানের সাথে সাক্ষাৎ সারজিস-হাসনাতের, ‘অতি গোপনীয়’ অভিযোগ
শুনানিতে বিভিন্ন সরকারি অফিসে সেবা গ্রহীতারা সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে যে সমস্ত হয়রানির শিকার হন, তারা সেগুলো গণশুনানিতে সেবা দাতাদের মুখোমুখি হয়ে কমিশনের সামনে তুলে ধরেন।
এ সময় গণশুনানিতে উত্থাপিত সমস্ত অভিযোগের অনেকগুলো আমলে নিয়ে সেবাদাতাদের দ্রুত সমাধানের নির্দেশ দেওয়া হয়।
২২৮ দিন আগে