থাইল্যান্ড
থাইল্যান্ডে প্রথমবারের মতো মোদি-ইউনূস বৈঠক
থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (৪ এপ্রিল) বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে দুই নেতার মধ্যে এই বৈঠক হয়। যা জুলাই অভ্যুত্থানের পর ঢাকা-দিল্লির সম্পর্কের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হিসেবে দেখা হচ্ছে।
প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেসসচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বার্তা সংস্থা ইউএনবি এমন তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, প্রধান উপদেষ্টার উচ্চপ্রতিনিধি খলিলুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি–বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সেক্রেটারি শফিকুল আলম ও পররাষ্ট্রসচিব মো. জসিম উদ্দিন বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর এই প্রথমবারের মতো অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদির বৈঠক হয়েছে।
এরআগে বৃহস্পতিবার বিমসটেক সম্মেলনের নৈশভোজে দুই নেতার সাক্ষাৎ হয় এবং তারা কুশলাদি বিনিময় করেন।
আরও পড়ুন: অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন করবো: প্রধান উপদেষ্টা
১৩ দিন আগে
ভূমিকম্পে মিয়ানমারে নিহত বেড়ে দেড় সহস্রাধিক, বাড়তে পারে আরও
মিয়ানমারে ভয়াবহ ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে এক হাজার ৬৪৪ জনে দাঁড়িয়েছে। এক বিবৃতিতে দেশটির জান্তা সরকার এমন তথ্য দিয়েছে।
শুক্রবার (২৮ মার্চ) দিনের মাঝামাঝিতে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশটির মধ্যাঞ্চলের সাগেইং শহরে সাত দশমিক সাত মাত্রার একটি ভূমিকম্প হয়েছে। পরবর্তীকে বেশ কয়েকটি আফটারশক (পরাঘাত) হয়েছে। এরমধ্যে একটি আফটারশকের মাত্রা ছিল ছয় দশমিক সাত মাত্রার।-খবর ডনের।
প্রতিবেশী দেশ থাইল্যান্ডও কেঁপে ওঠে ভূমিকম্পে। দেশটিতে ১০ জনের নিহতের খবর নিশ্চিত করা হয়েছে।
ভূমিকম্পে মিয়ানমারের বহু ভবন ও সেতু ভেঙে পড়েছে। রাস্তায় ফাটল ধরে চৌচির হয়ে গেছে। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তর শহর মান্দালয়। শহরটিতে এক কোটি ৭০ মানুষ বাস করেন।
জান্তা সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পে তিন হাজার ৪০৮ জন আহত হয়েছেন। নিখোঁজ রয়েছেন অন্তত ১৩৯ জন।
গেল একশ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ এই ভূমিকম্পে মিয়ানমারের যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ধ্বংসযজ্ঞের মাত্রা এখনো পুরোপুরি পরিষ্কার হওয়া সম্ভব হয়নি। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বিল্ডিং কোড-মহাপরিকল্পনা অনুসরণ না করলে বিপর্যয় ডেকে আনবে ভূমিকম্প
দেশটিতে কয়েক শত বছরের পুরোনো একটি প্যাগোডা মাটিতে মিশে গেছে। প্যাগোডার পাশেই তল্লাশিচৌকিতে দাঁড়িয়ে থাকা এক সেনা বলেন, ‘হঠাৎ করে কম্পন শুরু হয়েছে। পরে তা মারাত্মক রূপ নিয়েছে। মঠও ভেঙে গেছে। একজন সন্ন্যাসী নিহত হয়েছেন। কয়েকজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’
দীর্ঘদিন ধরে রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধকবলিত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে ব্যাপক মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে। ভূমিকম্পের ফলে সড়ক ও সেতু ভেঙে পড়ায় চলাচলও কঠিন হয়ে পড়েছে। এতে ত্রাণ কার্যক্রম চালানো যাচ্ছে না।
১৮ দিন আগে
ভূমিকম্পে থাইল্যান্ড ও মিয়ানমারে দেড় শতাধিক নিহত
সাত দশমিক সাত মাত্রার ভয়াবহ এক ভূমিকম্পে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দুই দেশ মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডে দেড় শতাধিক নিহত হয়েছেন। মিয়ানমারে অন্তত ১৪৪ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। দেশটির সবচেয়ে বেশি আঘাত হানা দুটি শহরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
এছাড়া প্রতিবেশী দেশ থাইল্যান্ডেও আটজন নিহত হয়েছেন। শুক্রবার (২৮ মার্চ) দিনের মাঝামাঝিতে ভূমিকম্পটি আঘাত হেনেছে, যার গভীরতা ১০ কিলোমিটার বলে জানিয়েছে মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস)।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) খবর বলছে, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তর শহর মান্দালয়ের কাছেই। পরে ছয় দশমিক চার মাত্রার একটি আফটারশক (দ্বিতীয় কম্পন) হয়েছে।
গৃহযুদ্ধকবলিত মিয়ানমারে তথ্যপ্রবাহ কঠিনভাবে নিয়ন্ত্রিত হওয়ায় ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের সঠিক তথ্য এখনো জানা যায়নি। শুক্রবার সন্ধ্যায় টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে মিয়ানমার জান্তা সরকারের প্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লেং বলেন, ‘এই ভূমিকম্পে অন্তত ১৪৪ জন নিহত ও ৭৩০ জন আহত হয়েছেন। হতাহতের শঙ্কা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।’আরও পড়ুন: ফিরেছেন মিয়ানমারের স্ক্যাম সেন্টারে বন্দি ১৮ বাংলাদেশি
সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়েপড়া রাজধানী নেপিদোর বিভিন্ন ছবিতে দেখা গেছে, সরকারি কর্মকর্তাদের আবাসন হিসেবে ব্যবহৃত বিভিন্ন ভবন মাটিতে মিশে গেছে। ধ্বংস্তস্তূপ থেকে আক্রান্তদের উদ্ধার করা হচ্ছে।
ভূমিকম্প ভয়াবহ আঘাত হানা এলাকাগুলোতে ‘জরুরিভিত্তিতে রক্তের’ চাহিদা বেড়েছে বলে জানিয়েছে মিয়ানমার সরকার। মান্দালয়ের সড়কগুলোতে বড় ধরনের ফাটল দেখা গেছে। একটি মহাসড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেতু ভেঙে পড়েছে। এতে কিছু এলাকায় উদ্ধারকারীদের পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়বে।
পৃথিবীর দরিদ্রতম দেশগুলোর একটি মিয়ানমারে আগে থেকেই ব্যাপক মানবিক সংকট রয়েছে। ভূমিকম্পের আঘাতে তা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিকে নির্মাণাধীন একটি বহুতল ভবন ভেঙে থাই রাজধানী ব্যাংককে আটজন নিহত হয়েছেন। মুহূর্তে বিপর্যয়ের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয় এলাকাটি।
খবরে বলা হয়, রাজধানীর কাছাকাছি জনপ্রিয় চাতুচাক মার্কেটে ৩৩ তলার একটি নির্মাণাধীন ভবন ক্রেনসহ ধসে পড়েছে। সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়েপড়া ভিডিওতে দেখা যায়, এতে চারপাশে বিস্তৃত ধুলোর মেঘ ছড়িয়ে পড়ে। আশপাশের লোকজনকে আতঙ্কে চিৎকার-চেঁচামেচি করে দৌড়াতে দেখা গেছে।
ব্যাংককের কেন্দ্রস্থলে সাইরেনের প্রতিধ্বনিত হচ্ছিল। যানজটে আটকাপড়ে ব্যস্ত সড়কগুলো। র্যাপিড ট্র্যানজিট সিস্টেম ও সাবওয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
ভূমিকম্প যে এলাকাটিতে আঘাত হেনেছে, সেটি ভূমিকম্পপ্রবণ। কিন্তু এসব ভূমিকম্প খুব বড় না। থাই রাজধানী থেকে যা টের পাওয়ার ঘটনাও বিরল। ব-দ্বীপের ওপর অবস্থিত ব্যাংককে ভূমিকম্পের ঝুঁকি মাঝারি।
প্রথমে ভূমিকম্পের বিষয়টি বুঝতে পারেননি বলে জানিয়েছেন ব্যাংককের একটি ভবনে কাজ করা অপরিল কানিচাওয়ানকুল। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয়েছিল, আমার মাথা ঘোরাচ্ছে।’ সহকর্মীদের নিয়ে ভবনের দশতলা থেকে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে যান তারা।
থাইল্যান্ডের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পুমথাম উইচাইয়াচি বলেন, ব্যাংককে ভবনধসে নিখোঁজ রয়েছেন ৯০ জন।
নিহতদের মধ্যে দুজন নির্মাণশ্রমিক। ভবন থেকে ইট-পাথরের টুকরা পড়ে তাদের প্রাণহানি ঘটেছে বলে জানিয়েছেন উদ্ধারকর্মীরা।
১৯ দিন আগে
থাইল্যান্ডে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১৭, আহত ৩২
থাইল্যান্ডের পূর্বাঞ্চলীয় প্রাচিনবুরি প্রদেশের একটি সড়কে বাস উল্টে ১৭ জন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরও ৩২ জন।
বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দেশটির স্থানীয় সড়ক নিরাপত্তা কেন্দ্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
বাস দুর্ঘটনার জায়গাটি তুলনামূলকভাবে ঢালু ছিল।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে সেনা অভিযানে ১০ জন নিহত
কেন্দ্রের মতে, স্থানীয় সময় ভোর ৩টার দিকে গাড়িটি উল্টে যায়। এসময় বাসটিতে ৪৯ জন যাত্রী ছিলেন। বাস উল্টে গেলে ঘটনাস্থলেই ১৬ জন নিহত হন। আর হাসপাতালে নেওয়ার পর আরও একজনের মৃত্যু হয়।
এছাড়া আহত ৩২ জনকে উদ্ধার করে নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
পুলিশের বরাত দিয়ে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, রাস্তার ওই অংশটি দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা। প্রাথমিক তদন্তে ধারণা করা হচ্ছে , বাসটির ব্রেক সিস্টেম কাজ না করার কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
৫০ দিন আগে
বন্যায় মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডে ৩০ জনের মৃত্যু, বাস্তুচ্যুত সহস্রাধিক
প্রবল বন্যায় মালয়েশিয়া এবং দক্ষিণ থাইল্যান্ডে ৩০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এতে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন আরও হাজার হাজার মানুষ। উভয় দেশ আরও প্রত্যাশিত ভারী বৃষ্টিপাতের আগে বাসিন্দাদের আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করছে।
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম জানিয়েছেন, দেশটির পূর্ব উপকূলে পাঁচ দিনের অপ্রত্যাশিতভাবে কেলানতান ও তেরেঙ্গানুতে ছয় মাসের সমপরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে। বন্যায় বিস্তীর্ণ ধানখেত ডুবে গেছে। এতে কৃষকদের কয়েক মিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়। রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি এবং সরকারি অবকাঠামোরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। উদ্ধারকারী দলগুলো ক্রমবর্ধমান পানির কারণে আটকে পড়াদের উদ্ধার ও প্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহে নৌকা ব্যবহার করে।
আরও পড়ুন: ‘সারা’র প্রভাবে হন্ডুরাসের উত্তর উপকূলে বন্যা ও ভূমিধসের সতর্কতা
বন্যার পানি অপ্রত্যাশিতভাবে বেড়ে যাওয়ায় নিজের জিনিসপত্র বাঁচানোর চেষ্টার ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করেছেন কেলানতানের টুমপাট জেলার শ্রমিক আইয়ুব ওথমান।
আরেকজন গ্রামবাসী আসমাহ ইব্রাহিম তার বাড়ি মেরামতের আর্থিক বোঝা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন। বাড়ি মেরামতে অন্তত ৪০ হাজার রিঙ্গিত (৯ হাজার ডলার) খরচ হবে বলে ধারণা করছেন তিনি।
আনোয়ার সংসদে বলেন, বন্যা সম্পর্কিত অবকাঠামো মেরামতের পরিমাণ ১ বিলিয়ন রিঙ্গিত (২২৪ মিলিয়ন ডলার) হতে পারে। বন্যায় যাদের সম্পদের ক্ষতি হয়েছে তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়টি সরকার বিবেচনা করবে। সপ্তাহের শেষদিকে বৃষ্টিপাত কমলেও আবহাওয়াবিদরা রবিবার থেকে নতুন করে বৃষ্টিপাত বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: সুমাত্রা দ্বীপে ভূমিধস-বন্যায় নিহত ১৬
ন্যাশনাল ডিজাস্টার কমান্ড সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী, মালয়েশিয়ার সাতটি রাজ্যের প্রায় ৮৫ হাজার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছেন। বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের অধিকাংশই কেলানতান ও তেরেঙ্গানু। এই বন্যায় মালয়েশিয়ায় ছয়জন এবং থাইল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলে ২৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
থাইল্যান্ডের দুর্যোগ প্রতিরোধ ও প্রশমন বিভাগ জানিয়েছে, বন্যায় তিন লাখেরও বেশি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক স্কুল ও ৯৮টি স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া ৩৪ হাজার ৩৫৪ জন মানুষ সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছেন।
কর্তৃপক্ষ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত আরও ভারী বৃষ্টিপাত মোকাবিলার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। এর অংশ হিসেবে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় উদ্ধারকারী দল এবং সরঞ্জাম মোতায়েন করছে।
বন্যার কারণে পর্যটন খাতেও ধস নেমেছে। মালয়েশিয়ার কর্মকর্তারা সতর্কতামূলকভাবে দক্ষিণ থাইল্যান্ডের জনপ্রিয় অবকাশ যাপনের গন্তব্যগুলোতে ভ্রমণ না করার পরামর্শ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: থাইল্যান্ডে বন্যায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৫
১৩৪ দিন আগে
থাইল্যান্ডের পাতায়া ভ্রমণ: যাওয়ার উপায় ও যাবতীয় খরচ
আন্তর্জাতিক পরিব্রাজকরা এশিয়ার যে দেশগুলো সবচেয়ে বেশি ভ্রমণ করে থাকেন সেগুলোর মধ্যে থাইল্যান্ড অন্যতম। শুধু শত বছরের ঐতিহ্য আর ভুবন ভোলানো প্রাকৃতিক নৈসর্গই নয়, দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার এই দেশটির সর্বত্রে ছড়িয়ে আছে এক অফুরন্ত প্রাণের ছোয়া। আদিম সৈকত থেকে এক প্রশান্তিদায়ক উষ্ণ পর্বত চূড়া, অত্যাধুনিক উদ্যান থেকে জনাকীর্ণ বাজার সবটাজুড়ে যেন আতিথেয়তা। এরই মাঝে সারা বিশ্বে এক টুকরো থাইল্যান্ডকে সগৌরবে তুলে ধরে চলেছে পর্যটনকেন্দ্র পাতায়া। এখন থাইল্যান্ড ঘুরতে যাওয়ার প্রসঙ্গ এলে অকপটেই চলে আসে দর্শনীয় স্থানটির নাম। চলুন, কোরাল দ্বীপটিতে ভ্রমণ সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়ে সবিস্তারে জেনে নেওয়া যাক।
পাতায়ার অবস্থান ও বিশেষত্ব
থাইল্যান্ড উপসাগরের পূর্ব উপকূলে অবস্থিত দেশের অষ্টম বৃহত্তম শহর পাতায়া। রাজধানী ব্যাংককের প্রায় ১০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে এর অবস্থান। পাতায়া বে এশিয়ার বৃহত্তম সৈকত রিসোর্টগুলোর মধ্যে একটি এবং ব্যাংককের পরে থাইল্যান্ডের দ্বিতীয় সর্বাধিক দর্শনীয় শহর।
পাতায়ার নামকরণের ইতিহাস
১৭৬৭ সালে রাজা ফ্রায়া তাক (পরবর্তীতে যিনি তাক্সিন নামেই বেশি পরিচিতি পেয়েছেন) তার সেনাবাহিনী নিয়ে আয়ুথায়া থেকে চান্থাবুরি পর্যন্ত অগ্রসর হন। এটি বার্মিজ আক্রমণকারীদের কাছে পূর্বের রাজধানী পতনের আগের ঘটনা।
বর্তমানে যেখানে পাতায়া সেই স্থানে ফ্রায়া তাকের সেনারা নাই ক্লোম নামে একজন স্থানীয় নেতা ও তার সৈন্যদের মুখোমুখি হয়। প্রথম দিকে আক্রমণাত্মক হলেও ক্লোম ফ্রায়া তাকের নেতৃত্ব এবং তার সেনাবাহিনীর মধ্যে কঠোর শৃঙ্খলা দেখে মুগ্ধ হন। অতঃপর তিনি বিনা লড়াইয়ে আত্মসমর্পণ করে সদলবলে ফ্রায়া তাক বাহিনীতে যোগ দেন।
আরো পড়ুন: থাইল্যান্ডের কোহ সামুই দ্বীপ ভ্রমণ: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
এই স্থানটি পরে পরিচিতি পায় ‘থাপ ফ্রায়া’ নামে, যার অর্থ ‘ফ্রায়ার সেনাবাহিনী’। থাপ ফ্রায়াকে পরে ‘পাতায়া’য় পরিবর্তন করা হয়, যার অর্থ ‘বর্ষার শুরুতে দক্ষিণ-পশ্চিম থেকে উত্তর-পূর্ব দিকে প্রবাহিত বাতাস’।
পাতায়ার জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থানগুলো
.
নং নুচ বোটানিক্যাল গার্ডেন
থাইল্যান্ডের চনবুরি প্রদেশের ২ বর্গ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে বিস্তৃত এই পর্যটনকেন্দ্রটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৃহত্তম বোটানিক্যাল গার্ডেন। পুরো গার্ডেনটি কতগুলো ছোট ছোট গার্ডেনে বিভক্ত।
প্রবেশের মুখেই রয়েছে ক্যাক্টাস গার্ডেন, যেখানে একটি লম্বা কাঁচের ঘরে দেখা মেলে বিভিন্ন প্রজাতির ক্যাক্টাসের। দ্যা গার্ডেন ইন দ্যা স্কাইয়ে গেলে দেখা যাবে মাটি থেকে ঊর্ধ্বমুখী হয়ে এবং ছাদ থেকে ঝুলে রয়েছে বিভিন্ন জাতের উদ্ভিদ। ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এই বাগানটি ঘুরে দেখার জন্য রয়েছে একটি লিফট বা স্কাইওয়াক।
নং নুচে আছে দুটি ফরাসি বাগান, যেগুলো তৈরি হয়েছে ফ্রান্সের ভার্সাই বাগানের আদলে। ফ্রেঞ্চ গার্ডেন-২-এর পাশেই রয়েছে ডাইনোসর ভ্যালী, যেখানে পরিচিত হওয়া যাবে ১৮০ টিরও বেশি ডাইনোসরের প্রতিলিপির সঙ্গে।
আরো পড়ুন: বান্দরবানের মিরিঞ্জা ভ্যালি ভ্রমণ: ঘুরে আসুন দ্বিতীয় সাজেক
ইতালীয় বাগানে পুরোটাই বিভিন্ন ইতালীয় মার্বেল মূর্তিতে পরিপূর্ণ। স্টোনহেঞ্জের প্রতিরূপ দিয়ে বানানো হয়েছে স্টোনহেঞ্জ গার্ডেন। নং নুচের পূর্বদিকে রয়েছে দুটি হ্রদ, যেখানে দেখা যাবে আমাজন নদীর বিশেষ ধরনের মাছ অ্যারাপাইমাস গিগাস। পুরো বাগান ঘুরে দেখার পাশাপাশি পর্যটকদের জন্য রয়েছে ধর্মীয় অনুষ্ঠান, মার্শাল আর্ট এবং হাতির প্রদর্শনীর ব্যবস্থা। এমনকি এখানে থাকার জন্য আছে বেশ কিছু রিসোর্ট ও ভিলা এবং খাওয়া-দাওয়ার জন্য আছে রেস্তোরাঁও।
প্রাপ্তবয়স্ক বিদেশি পর্যটকদের জন্য নং নুচে প্রবেশ মূল্য জনপ্রতি ৬০০ থাই বাত বা ২ হাজার ৮১ টাকা (১ থাই বাত = ৩ দশমিক ৪৭ বাংলাদেশি টাকা)।
পাতায়া সমুদ্র সৈকত
শহরের কেন্দ্রের সমান্তরালে অবস্থিত এই সৈকতটি শহরের সব থেকে নান্দনিক স্থান। উপকূলকে একপাশে রেখে উত্তর থেকে দক্ষিণে প্রায় ২ দশমিক ৭ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সৈকত। দক্ষিণে সৈকতের সীমান্তে রয়েছে জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান ওয়াকিং স্ট্রিট।
উত্তর সৈকত দক্ষিণের তুলনায় সাধারণত একটু শান্ত থাকে। সারিবদ্ধ পাম গাছের এই অত্যাশ্চর্য সমুদ্র সৈকতটি সূর্যস্নান ও সাঁতারের জন্য বিখ্যাত।
আরো পড়ুন: ভিয়েতনামের হা লং বে দ্বীপপুঞ্জ ভ্রমণ: ঘুরে আসুন ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান
পাতায়ার সবচেয়ে বিখ্যাত নাইটলাইফ হাব। সূর্য অস্ত যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সৈকতের লাগোয়া ওয়াকিং স্ট্রীট ভরে ওঠে নিয়ন আলো, জমজমাট বার এবং পথশিল্পীদের কলাকৌশলে।
ফ্রা তাম্নাক পাহাড়
পাতায়া সৈকত এবং পাতায়ার দক্ষিণ দিকে জোমতিয়েন সৈকতের মাঝে অবস্থিত এই পাহাড়টি পর্বতপ্রেমিদের প্রিয় গন্তব্য। পাহাড়ে অবস্থিত চালোম ফ্রাকিয়াত পার্ক থেকে পাখির চোখে আশপাশের বিস্ময়কর দৃশ্যের পর্যবেক্ষণ করা যায়।
এই পাহাড়ের রয়েছে ওয়াত ফ্রা ইয়াই মন্দির, যার কারণে পর্বতটিকে বিগ বুদ্ধ হিলও বলা হয়ে থাকে। এই বৃহদাকার বুদ্ধের স্বর্ণ মূর্তিটি গোটা পাতায়ার ল্যান্ডস্কেপগুলোর একটি। এটি পাতায়া শহরের সর্বোচ্চ স্থান, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে যার উচ্চতা ৯৮ মিটার। পাহাড়ের উত্তর প্রান্ত দিয়ে নিচেই রয়েছে শহরের জনপ্রিয় ওয়াকিং স্ট্রীট এবং ফেরি ঘাট বালি হাই পিয়ার।
পাতায়া আন্ডারওয়াটার ওয়ার্ল্ড
সাগরে সাঁতার না কেটেও জলজ জগতকে খুব কাছে থেকে দেখার সর্বোৎকৃষ্ট উপায় হচ্ছে এই দৈত্যাকার অ্যাকোয়ারিয়ামটি। ১৫০ মিটার দীর্ঘ টানেল পরিদর্শনের সময় দেখা মিলবে প্রায় ২০০-এর অধিক প্রজাতির সামুদ্রিক প্রাণীর। বিশাল শঙ্কর মাছ থেকে শুরু করে হাঙ্গর পর্যন্ত প্রাণীগুলো দর্শনার্থীদের ঘিরে তাদের রাজকীয় উপস্থিতি জানান দিতে থাকে।
আরো পড়ুন: মালয়েশিয়ার ল্যাংকাউই দ্বীপ ভ্রমণ: দর্শনীয় স্থান, যাওয়ার উপায় এবং যাবতীয় খরচ
স্যাঙ্কচুয়ারি অফ ট্রুথ
এই জাদুঘরের অবকাঠামোটি মূলত মন্দির ও দুর্গের একটি সমন্বিত রূপ। স্থাপনাটি সম্পূর্ণভাবে কাঠের তৈরি।এর ভেতরের দর্শনীয় প্রতিটি বস্তুই কাঠের তৈরি। এই কাঠগুলো শত শত বছরের পুরনো। ধারণা করা হয় সবচেয়ে প্রাচীনতম ‘তাকিয়েন’ কাঠের বয়স প্রায় ৬০০ বছর।
জাদুঘর পরিদর্শনের পাশাপাশি এখানে থাই বোট রাইড, হাতির পিঠে চড়া, ঘোড়ার পিঠে বা ঘোড়া গাড়িতে চড়া, স্পিডবোট রাইড এবং থাই পোশাক ভাড়া নেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।
পাতায়ার বিখ্যাত যত উৎসব
থাইল্যান্ডের অনন্য প্রথা ও ঐতিহ্যের সিংহভাগই রয়েছে পাতায়াতে। বিশেষ করে এখানকার স্থানীয় উৎসবগুলো শত বছরের পুরনো; সেই সঙ্গে বিশ্ব পরিব্রাজকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু।
প্রথমেই বলা যেতে পারে জানুয়ারির শেষ থেকে ফেব্রুয়ারির শুরু পর্যন্ত হওয়া চাইনিজ নববর্ষ অথবা বসন্ত উৎসবের কথা। এ সময় দেখা যায় পাতায়ার বৃহৎ থাই-চীনা সম্প্রদায়ের ড্রাগন প্যারেড, সিংহ নাচ ও আতশবাজি।
আরো পড়ুন: ইন্দোনেশিয়ার বাটাম দ্বীপ ভ্রমণ: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
স্থানীয়ভাবে ওয়ান লাই নামে পরিচিত পাতায়া সোংক্রান উৎসব উদযাপন করা হয় প্রতি বছর এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে। এই উৎসবের প্রধান কার্যক্রমগুলো হলো জল ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, সৌন্দর্য প্রতিযোগিতা, বাদ্যযন্ত্র পরিবেশন ও আতশবাজি।
থাই চন্দ্র ক্যালেন্ডারের দ্বাদশ মাসের পূর্ণিমাতে উদযাপিত আলোকের উৎসবটি লোই ক্রাথং নামে পরিচিত। ঐতিহ্যবাহী এই উৎসবের সময়কাল সাধারণত নভেম্বর মাসে পড়ে। এ সময় ক্রাথং বা ভাঁজ করা কলা পাতার ওপর প্রজ্বলিত মোমবাতি যুক্ত করে সন্ধ্যার দিকে পানিতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া রাতের আকাশে ফানুশও ওড়াতে দেখা যায়।
পাতায়া ভ্রমণের সেরা সময়
আবহাওয়া, উৎসব, এবং জল খেলার উপযুক্ত পরিবেশ সামগ্রিক বিচারে পাতায়া ঘুরে বেড়ানোর সেরা সময় হচ্ছে শীতকাল। সঙ্গত কারণেই নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারিতে থাকে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়। সেই সঙ্গে থাকা-খাওয়াসহ যাবতীয় বিনোদন সেবার দামও থাকে আকাশচুম্বী।
তাই যারা সাশ্রয়ী মূল্যে পাতায়া ঘুরতে যেতে চান তাদের অফ পিক মৌসুমগুলো বেছে নিতে হবে। এ জন্য মে থেকে অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়টা উপযুক্ত হতে পারে। অল্প ভিড় এবং বাজেট ভ্রমণ সম্ভব হলেও এ সময় হাল্কা বা ভারী বৃষ্টির বিড়ম্বনা পোহাতে হবে।
আরো পড়ুন: থাইল্যান্ডের গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গেলের চিয়াং মাই ভ্রমণ: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
বাংলাদেশ থেকে থাইল্যান্ডের পাতায়া যাওয়ার উপায়
পাতায়া ভ্রমণ পরিকল্পনার সর্বপ্রথম পদক্ষেপ হলো থাইল্যান্ডের পর্যটন ভিসার জন্য আবেদন করা। ভ্রমণের ন্যূনতম ২ সপ্তাহ আগে থেকে এই আবেদন কার্যক্রম শুরু করা উচিত। আবেদন প্রক্রিয়াকরণে সময় লাগে সাধারণত ৭ কর্মদিবস এবং ভিসা ফি ৩ হাজার ৫০০ টাকা।
ঢাকা থেকে সরাসরি ব্যাংককের বিমান আছে, যে যাত্রায় সর্বোচ্চ ৩ ঘণ্টার মধ্যে গন্তব্যে পৌঁছানো যায়।
ঢাকা - ব্যাংকক রাউন্ড ট্রিপ বিমান ভাড়া নির্ভর করবে কিছু বিষয়ের উপর যেমন এয়ারলাইন্স কোম্পানি, বুকিংয়ের সময়, বিভিন্ন অফার, ইত্যাদি।
ব্যাংককের বৃহত্তম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সুবর্ণভূমি বিমানবন্দর থেকে পাতায়া সড়কপথে প্রায় ১২০ কিলোমিটার। এ পথে সুখুমভিট রোড এবং মোটরওয়ে-৭ দিয়ে পাতায়ায় প্রবেশ করা যায়।
আরো পড়ুন: থাইল্যান্ডের ফুকেট ভ্রমণ গাইড: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
বাসে যেতে হলে ব্যাংককের উত্তর বাস টার্মিনাল বা মো চিত এবং পূর্বের একমাই থেকে বাস পাওয়া যাবে। এই বাসগুলো সুখুমভিট রোডের কাছে পাতায়া নুইয়ার (উত্তর পাতায়া রোড) প্রধান বাস স্টেশনে নামিয়ে দেয়।
ট্রেনে যাওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাংককের হুয়ালুমফং থেকে পাতায়া পর্যন্ত নিয়মিত রেলপথ পরিষেবা পাওয়া যায়। এছাড়া যাত্রার সময় আরও দ্রুততর করতে প্লেনে করেও পাতায়া যাওয়া যেতে পারে।
ভ্রমণকালে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা
পাতায়া ও জোমতিয়েন বীচসহ যেকোনো সৈকতের আশপাশের এলাকা এবং ওয়াকিং স্ট্রীটের আবাসিক হোটেলগুলো যথেষ্ট মান সম্পন্ন। তিন বেলা আহারের জন্য এগুলোর আশপাশে সাশ্রয়ী কিছু রেস্তোরাঁও রয়েছে। ফ্লোটিং মার্কেট খাবারের পাশাপাশি দর্শনীয় জায়গাও বটে।
পাতায়ায় ঘুরতে এলে যে খাবারটি সবাই চেখে দেখে সেটি হচ্ছে টম ইয়াম গোং। গোটা থাইল্যান্ডসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জনপ্রিয় এই স্যূপটি মূলত চিংড়ি, মাশরুম,টমেটো,লেবু,গালাঙ্গাল ও কাফির চুন পাতার সংমিশ্রণ।
আরো পড়ুন: হবিগঞ্জের রেমা-কালেঙ্গা অভয়ারণ্য ভ্রমণ: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
মশলাদার ও ক্রিমযুক্ত নারকেল দুধ,মুরগির মাংস বা তুলসী পাতাসহ নানা ধরনের সবজি দিয়ে বানানো গ্রিন কারি আরও একটি স্থানীয় ঐতিহ্যবাহী খাবার।
নিরামিষ খাবারের মধ্যে সেরা হচ্ছে সোম ট্যাম, যেটি মিষ্টি, টক এবং মশলাদার স্বাদের মিশ্রণে এক ধরনের পেঁপে সালাদ। এটি পরিবেশন করা হয় সাধারণত চিনাবাদাম এবং শুকনো চিংড়ির সঙ্গে।
ভারী মিষ্টান্নের মধ্যে রয়েছে ম্যাঙ্গো স্টিকি রাইস, যেখানে মিষ্টি আমের টুকরো নারকেল দুধের সঙ্গে মিশিয়ে ভাতের সঙ্গে খাওয়া হয়।
পরিশেষে সামুদ্রিক খাবারের কথা আলাদা করে বলার অপেক্ষা রাখে না, যেখানে গ্রিল্ড স্কুইড বা শেলফিশে উদরপূর্তি না করলে পুরো ভ্রমণটাই অপূর্ণ থেকে যায়।
আরো পড়ুন: দার্জিলিংয়ের টংলু ও সান্দাকফু যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
পাতায়া ভ্রমণের সম্ভাব্য খরচ
এখানকার আবাসিক হোটেলগুলোতে থাকার জন্য প্রতিদিনের জন্য খরচ হতে পারে জনপ্রতি ৩৫৯ থেকে ৮৬৮ থাই বাত (১ হাজার ২৪৫ থেকে ৩ হাজার ১১ টাকা)।
শহরের অভ্যন্তরে বিভিন্ন জায়গায় যেতে স্থানীয় পরিবহন ভাড়া পড়তে পারে মাথাপিছু ১৮৮ থেকে ৪৪৫ থাই বাত (৬৫২ থেকে ১ হাজার ৫৪৪ টাকা)।
৫৯৭ থেকে ১ হাজার ৪০৩ থাই বাতের (২ হাজার ৭১ থেকে ৪ হাজার ৮৬৬ টাকা) মতো বাজেট রাখতে হবে প্রতিবেলা আহারের জন্য।
আর পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে বিভিন্ন বিনোদনমূলক কার্যক্রমগুলোর সম্ভাব্য খরচ ৩০৮ থেকে ৭৫৩ থাই বাত (১ হাজার ৬৮ থেকে ২ হাজার ৬১২ টাকা)।
সব মিলিয়ে একজনের জন্য প্রতিদিন ১ হাজার ৪৪৯ থেকে ৩ হাজার ১২ থাই বাত খরচের পরিকল্পনা রাখতে হবে পাতায়া ঘুরে বেড়ানোর জন্য। বাংলাদেশি টাকায় এই বাজেট প্রায় ৫ হাজার ২৬ থেকে ১০ হাজার ৪৪৭ টাকার সমান।
আরো পড়ুন: নেপালের অন্নপূর্ণা ট্রেকিংয়ে যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
ভ্রমণকালীন প্রয়োজনীয় সতর্কতা
• বাংলাদেশ থেকে রওনা হওয়ার পূর্বে কিছু থাই বাথ সঙ্গে নিয়ে যাওয়া উত্তম। এতে করে বিমানবন্দরে নেমেই নতুন সিম কেনা, ট্যাক্সি বা অন্যান্য পাবলিক পরিবহন ভাড়া করাতে সুবিধা হবে।
• ইতিপূর্বে একবার পাতায়াতে গিয়েছে এমন কাউকে সফরসঙ্গী করা হলে ভ্রমণ খরচ অনেকটা কম আসবে।
• পাতায়া শহরে দিনের উষ্ণতম সময়টা একটু বেশিই গরম। তাই শীত-গ্রীষ্ম যে মৌসুমেই যাওয়া হোক না কেন, সঙ্গে মানসম্মত সান প্রোটেকশন নেওয়া জরুরি।
• স্কুটি ভাড়া করে দ্বীপের সবগুলো বিচ সহজেই ঘুরে বেড়ানো যায়; সেই সঙ্গে এক ভিন্ন রকম আনন্দময় অভিজ্ঞতা পাওয়া যায়।
• বৌদ্ধ মন্দিরগুলোতে প্রবেশের সময় স্থানীয় প্রথা ও ভাবগাম্ভীর্যের প্রতি যথাযথ শ্রদ্ধাশীল হতে হবে।
আরো পড়ুন: ভুটান ভ্রমণ: জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান, যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
শেষাংশ
থাইল্যান্ডের পাতায়া ভ্রমণে উপসাগরীয় জনপদের জীবনকে খুব কাছ থেকে দেখার এক বিস্ময়কর অভিজ্ঞতা পাওয়া যায়। নং নুচ বোট্যানিক্যাল গার্ডেন, পাতায়া বীচ এবং ফ্রা তাম্নাক পাহাড়ের মত বৈচিত্র্যপূর্ণ জায়গাগুলো আলাদাভাবে উপস্থাপন করে দেশের প্রকৃতিকে। অথচ কোথাও সংস্কৃতি ও প্রাণের স্পন্দনে এতটুকু বিরাম থাকে না। চাইনিজ নববর্ষ এবং সোংক্রান উৎসবগুলো থাই সংস্কৃতিকে রাজকীয় ভঙ্গিমায় পরিবেশন করে পর্যটকদের সামনে। কেবল নিছক কোনো অবকাশ যাপন নয়, এ যেন প্রতিটি মুহূর্তে এক ভিন্ন জীবনধারাকে চেতনায় ধারণ করা, যা নিঃসন্দেহে কতক অবিস্মরণীয় স্মৃতির যোগান দেয়।
আরো পড়ুন: তুলনামূলক কম দামে বিমানের টিকিট কেনার কৌশল
১৪৪ দিন আগে
থাইল্যান্ডের কোহ সামুই দ্বীপ ভ্রমণ: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
এশিয়ার দক্ষিণ-পূর্ব অংশের দ্বীপাঞ্চলগুলো ভ্রমণের আকর্ষণীয় গন্তব্যগুলোর মধ্যে অন্যতম থাইল্যান্ড। বিশেষ করে দেশটির বিচিত্র জনপদ এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ভ্রমণপিপাসুদের এক অমোঘ আকর্ষণে কাছে টানে। এমন স্মরণীয় অভিজ্ঞতার হাতছানি দিয়ে যে দর্শনীয় স্থানগুলো দেশটির পর্যটন শিল্পকে এগিয়ে রেখেছে, সেগুলোর মধ্যে কোহ সামুই অন্যতম। দ্বীপটির একাধিক সৈকতের প্রাকৃতিক নৈসর্গ ও সর্বত্র জুড়ে ছড়িয়ে থাকা ঐতিহ্যবাহী স্থাপনাগুলো মুগ্ধ করে দর্শনার্থীদের। চলুন, কোহ সামুই দ্বীপের প্রধান পর্যটনকেন্দ্রগুলোর ব্যাপারে বিশদ জেনে নেওয়া যাক।
কোহ সামুই দ্বীপের অবস্থান ও বিশেষত্ব
স্থানীয়ভাবে সংক্ষেপে সামুই হিসেবে পরিচিত এই দ্বীপটি সুরত থানি শহরের প্রায় ৩৫ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে থাইল্যান্ডের উপসাগরে অবস্থিত। ভৌগলিকভাবে এটি সুরত থানি প্রদেশের অন্তর্ভুক্ত চুমফোন দ্বীপপুঞ্জের অংশ। ফুকেটের পর এই ২২৮ দশমিক ৭ বর্গ কিলোমিটারের দ্বীপটি থাইল্যান্ডের দ্বিতীয় বৃহত্তম দ্বীপ।
কোহ সামুই নামকরণের ইতিহাস
দ্বীপটির নামের উৎপত্তি নিয়ে স্পষ্ট তেমন কিছু জানা যায় না। তবে ধারণা করা হয়, ‘সামুই’ শব্দটি এসেছে সংস্কৃত-তামিল শব্দ থেকে, বাংলায় যার অর্থ ‘সমুদ্রের আবহাওয়া’। কেউ কেউ বলেন এটি আসলে একটি গাছের নাম, দক্ষিণ থাইল্যান্ডে যাকে ‘টন মুই’ (যার পুরো নাম টন সামুই) বলা হয়। স্থানীয়দের মধ্যে কারো কারো বিশ্বাস, ‘সামুই’ শব্দটি এসেছে মালয় শব্দ ‘সাবোয়ে’ থেকে, যার অর্থ ‘নিরাপদ আশ্রয়’। ‘কোহ’ বা ‘কো’ একটি থাই শব্দ এবং এর মাধ্যমে কোনও দ্বীপকে বোঝানো হয়।
আরও পড়ুন: ইন্দোনেশিয়ার বাটাম দ্বীপ ভ্রমণ: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
কোহ সামুই দ্বীপ ভ্রমণে কি কি দেখবেন
ওয়াত ফ্রা ইয়াই
এটি মূলত একটি বৌদ্ধ মন্দির, যার অবস্থান কো সামুইয়ের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ছোট এক দ্বীপ কো ফানে। এখানে রয়েছে ১২-মিটার উচ্চতার এক বিশালাকৃতির বুদ্ধ মূর্তি। মন্দিরটির কাছাকাছি সমুদ্র সৈকতের নাম ব্যাং রাক হলেও এই মূর্তির জন্য বিগ বুদ্ধ বিচ নামে ডাকা হয়। মন্দির প্রাঙ্গণে একটি বাজারে পর্যটন এবং বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের নানা ধরণের সামগ্রী বিক্রি করা হয়।
সিক্রেট বুদ্ধ গার্ডেন
এই দর্শনীয় স্থানটি বিভিন্ন নামে পরিচিত। যেমন ম্যাজিক গার্ডেন, হ্যাভেন্স গার্ডেন, খুন নিম পিক, এবং তার্নিম ম্যাজিক গার্ডেন। এটি মূলত পম পর্বতের চূড়ায় (সামুই দ্বীপের সর্বোচ্চ চূড়াগুলোর মধ্যে অন্যতম) নির্মিত একটি ব্যক্তিগত ভাস্কর্য পার্ক। স্থানটিতে বুদ্ধের অনেকগুলো মূর্তির পাশাপাশি দেখা যায় পাখি ও সাপসহ নানা ধরণের প্রাণী। বাগানে একটি ঝর্ণাও আছে। পবর্ত চূড়া পর্যন্ত উঠে যাওয়া বেশ কষ্টসাধ্য হলেও জায়গাটি দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে অনেক জনপ্রিয়।
মু কো আং থং জাতীয় উদ্যান
এই সামুদ্রিক উদ্যানটি থাইল্যান্ড উপসাগরের প্রায় ১০২ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত। এর মধ্যে প্রায় ৫০ বর্গ কিলোমিটার স্থলভাগে পড়েছে ৪২টি দ্বীপ এবং বাকি ৫২ বর্গ কিলোমিটারের সবটুকু পানি। দ্বীপগুলোর বিশেষত্ব হলো অত্যাশ্চর্য শিলা গঠন এবং নির্জন লেগুন। সাঁতার, ক্যানোয়িং এবং কায়াকিংয়ের জন্য এই স্থানগুলো সেরা।
দ্বীপগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় কো ফালুয়াই পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে একদম নতুন। তবে সবচেয়ে জনপ্রিয় হচ্ছে কো উয়া তালাপ। এর আও ফি সৈকতে একটি রেঞ্জার স্টেশন, বাংলো, দোকান এবং রেস্তোরাঁ রয়েছে।
১৪৭ দিন আগে
থাইল্যান্ডের গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গেলের চিয়াং মাই ভ্রমণ: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
এশিয়া-কেন্দ্রিক অবকাশ যাপন মানেই বিচিত্র সংস্কৃতি এবং ঐতিহাসিক স্থাপনার এক প্রাণবন্ত জগতে প্রবেশ করা। নির্জন সৈকত, পর্বত চূড়া এবং বনের গহীন থেকে শুরু করে জনাকীর্ণ বিপণীর গ্রাম পর্যন্ত সর্বত্র ছড়িয়ে প্রাণের স্পন্দন। এর মাঝেই বিস্ময় ও রোমাঞ্চগুলো অমূল্য প্রাপ্তি হিসেবে ধরা দেয়। এর সঙ্গে অকৃত্রিম সৌন্দর্য যোগ করলে অনায়াসেই খুঁজে পাওয়া যাবে এশিয়ার জনপ্রিয় পর্যটন শহর চিয়াং মাইকে। থাইল্যান্ডের বিখ্যাত গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গলের অন্তর্গত এই প্রদেশটি মন্দির এবং ঝর্ণার জন্য সুপরিচিত। চলুন, ঐতিহ্য ও প্রাকৃতিক ঐশ্বর্য্যে সমৃদ্ধ এই পর্যটন অঞ্চলে ভ্রমণপিপাসুদের জন্য কী কী অপেক্ষা করছে- তা জেনে নেওয়া যাক।
গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গেলের চিয়াং মাই-এর অবস্থান ও বিশেষত্ব
উত্তর-পূর্ব মায়ানমার, উত্তর-পশ্চিম থাইল্যান্ড এবং উত্তর লাওসে রুয়াক ও মেকং নদীর মিলনস্থলে অবস্থিত প্রায় ২ লাখ কিলোমিটারের এক বিস্তৃত পার্বত্য অঞ্চল গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গেল।
১৯৭১ সালে তৎকালীন মার্কিন কূটনীতিক মার্শাল গ্রিন আফিম ব্যবসাবিষয়ক একটি প্রেস কনফারেন্সে ‘গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গেল’ শব্দটি ব্যবহার করেন। দুই নদীর মাঝের সোপ রুয়াক নামের থাইল্যান্ডের অংশটি বর্তমানে একটি পর্যটক আকর্ষণে পরিণত হয়েছে। এখানে রয়েছে হাউস অফ আফিম মিউজিয়াম, একটি হল অব আফিম এবং গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গেল পার্ক।
থাইল্যান্ডের যে প্রদেশগুলো নিয়ে এই গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গেল গঠিত সেগুলোর মধ্যে বৃহত্তম হচ্ছে চিয়াং মাই। ব্যাংকক থেকে ৬৮৫ কিলোমিটার উত্তরে মায়ে পিং নদীর অববাহিকায় প্রদেশটি অবস্থিত। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর গড় উচ্চতা ৩০০ মিটার। থাই উচ্চভূমির পর্বতমালা পরিবেষ্টিত অঞ্চলটির ক্ষেত্রফল প্রায় ২২ হাজার ১৩৫ বর্গকিলোমিটার।
আরো পড়ুন: ভুটান ভ্রমণ: জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান, যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
চিয়াং মাইয়ের শাসক থাম্মালাংকা ব্যাংককের রাজা দ্বিতীয় রামাকে একটি সাদা হাতি উপহার দিয়েছিলেন। সেই থেকে সাদা হাতি থাইল্যান্ডের একটি রাজকীয় প্রতীক হিসেবে স্বীকৃত। প্রদেশটির সিলমোহরেও কাঁচের মণ্ডপে সাদা হাতি রাখা হয়েছে। তাছাড়া এটি চিয়াং মাইতে বৌদ্ধ ধর্মের বিকাশের বিষয়টিকেও প্রতিনিধিত্ব করে।
চিয়াং মাই-এর জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থানগুলো
.
ওয়াত ফা লাত
ডোই সুথেপের লীলাভূমি বন পাহাড়ে অবস্থিত এই মন্দিরটি ‘গুপ্ত মন্দির’ বা ‘বন মন্দির’ নামেও পরিচিত। নামের মতো জায়গাটি সত্যিকার অর্থেই শহরের কোলাহল থেকে একদম মুক্ত। পুরোনো পাথরের কাঠামো, তাতে অপূর্ব খোদাই, ঝর্ণা এবং শান্ত বাগান সব মিলিয়ে জায়গাটিকে রহস্যময় করে তুলেছে।
ট্রেকারদের কাছে বহুল সমাদৃত পথ ‘মঙ্ক্স ট্রেইল’ ধরে এই মন্দির পর্যন্ত উঠে যাওয়া যায়। বনের মধ্য দিয়ে এঁকেবেঁকে চলে যাওয়া অপরূপ এই হাইকিং পথের শুরু হয় চিয়াং মাই ইউনিভার্সিটির কাছ থেকে। মোটামোটি সহজ এই পথটি হাইক করতে প্রায় ৩০ মিনিট সময় লাগে।
আরো পড়ুন: দিনাজপুরের রামসাগর দীঘি ভ্রমণ: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
দোই ইন্থানন জাতীয় উদ্যান
একসঙ্গে অনেকগুলো ঝর্ণা দেখতে হলে প্রবেশ করতে হবে এই উদ্যানে। দর্শনার্থীদের জন্য দোই ইন্থাননের প্রবেশ মূল্য ৩০০ থাই বাত বা ১ হাজার ৬১ টাকা (১ থাই বাত = ৩ দশমিক ৫৪ বাংলাদেশি টাকা)। যাওয়ার পথে দেখা মিলবে ওয়াচিরাথান জলপ্রপাতের। তারপর একদম ভেতরে রয়েছে ফা ডক সিউ জলপ্রপাত।
দোই ইন্থাননের চূড়া এবং টুইন প্যাগোডার সবথেকে কাছের গ্রাম বান খুন ক্লাং। এই গ্রামের প্রধান আকর্ষণ বিশাল জলপ্রপাত সিরিফুম। উদ্যান এলাকার বাইরে কাছেই রয়েছে মায়ে ইয়া, যেটি থাইল্যান্ডের সর্বোচ্চ জলপ্রপাতগুলোর একটি।
ওয়াত ফ্রা দোই সুথেপ
চিয়াং মাই-এর সবচেয়ে সমাদৃত মন্দিরগুলোর মধ্যে ওয়াত ফ্রা অন্যতম, যার অবস্থান দোই সুথেপ পর্বত চূড়ায়। ১৩৮৩ সালের দিকে স্থাপিত এই অত্যাশ্চর্য মন্দিরটির কেন্দ্রে রয়েছে একটি স্টুপা বা চেডি। ধ্যানের স্থান হিসেবে ব্যবহৃত হওয়া ঢিবির মতো অর্ধ গোলাকার এই স্থাপনাটি বহু বছর ধরে বুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে সংরক্ষিত। এখান থেকে পাখির চোখে চিয়াং মাই ও তার আশেপাশের গ্রামাঞ্চলের শ্বাসরুদ্ধকর মনোরম দৃশ্য অবলোকন করা যায়। সূর্যোদয় দেখার জন্য এই স্থানটি বেশ জনপ্রিয়।
আরো পড়ুন: সুন্দরবনের কটকা সমুদ্র সৈকত: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক ভ্রমণ খরচ
ওয়াত ফ্রা দ্যাত দোই খাম
টেম্পল অব দ্য গোল্ডেন মাউন্টেন নামে পরিচিত এই মন্দিরটি চিয়াং মাইয়ের ঠিক দক্ষিণ-পশ্চিমে একটি পাহাড়ে অবস্থিত। এখানকার ১৭-মিটার লম্বা বুদ্ধ মূর্তিটি বহুদূর থেকে চোখে পড়ে। প্রায় ১ হাজার ৩০০ বছরেরও বেশি পুরোনো এই মন্দিরের সর্বোত্তম অংশটি হচ্ছে পৌরাণিক নাগা সর্প ঘেরা লম্বা সিঁড়ি। সিঁড়ি ধরে যত ওপরে ওঠা যায় চিয়াং মাই ও পাশ্ববর্তী উপত্যকার মনোরম দৃশ্য ততই উন্মুক্ত হতে থাকে।
১৬১ দিন আগে
থাইল্যান্ডের ফুকেট ভ্রমণ গাইড: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
যে কোনো মৌসুমেই শীত ও উষ্ণতার আরামপ্রদ মেলবন্ধন খুঁজে পাওয়ার সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে সমুদ্র সৈকত। রৌদ্রস্নান বা রোদের আলোয় চকচকে পানিতে নৌকা নিয়ে উন্মত্ত জলরাশির বুকে ভেসে যাওয়া এক অনন্য জীবনের স্বাদ দেয়। এই দুঃসাহসিক জীবনের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে সাগর পাড়ের জনপদগুলোর স্বতন্ত্র সংস্কৃতি। বিশ্বজুড়ে এমন শত শত গন্তব্য থাকলেও সৌন্দর্য্য ও প্রাণবন্ততায় সেগুলোর সঙ্গে একদমই মেলানো যাবে না থাইল্যান্ডের ফুকেটকে। আন্দামান সাগরের বুকে টুকরো ভূ-খণ্ডগুলো যেন একেকটা চোখ ধাঁধানো বৈচিত্র্যের উপাখ্যান। চলুন, সৈকত পরিব্রাজকদের প্রিয় বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় এই পর্যটনকেন্দ্রটির ভ্রমণ বিষয়ক বিস্তারিত তথ্যাবলি জেনে নেওয়া যাক।
ফুকেটের অবস্থান
আন্দামান সাগরে থাইল্যান্ডের মূল ভূখণ্ডের পশ্চিম উপকূলে অবস্থিত একটি প্রদেশ ফুকেট। প্রদেশের অন্তর্গত ৩২টি ছোট ছোট দ্বীপের মধ্যে প্রধান ও বৃহত্তম দ্বীপটির নাম ফুকেট। এর দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত ফুকেট শহরটি গোটা প্রদেশের রাজধানী।
ফুকেটের জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থানগুলো
পুরো দ্বীপাঞ্চলটিকে প্রাণবন্ত করে রেখেছে এর ছোট-বড় সৈকতগুলো। শহরে অত্যাধুনিক পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে ঘুরতে এলেও পর্যটকরা সৈকতে একবার ঢুঁ মেরে যেতে একদমই ভোলেন না। তাছাড়া এই বালিয়াড়ির স্বর্গরাজ্যগুলোর আশেপাশেই রয়েছে মনোমুগ্ধকর কিছু জায়গা। চলুন, সেগুলোর মধ্য থেকে সর্বাধিক আকর্ষণীয় স্থানগুলোর ব্যাপারে সংক্ষেপে জেনে নেওয়া যাক।
ফি ফি আইল্যান্ড
মনোরম পরিবেশের এই দ্বীপটির দুটি ভাগে বিভক্ত: একটি ফিফি ডন ও আরেকটি ফিফি লে। নীলচে সবুজ পানির ওপর দিয়ে প্রতিদিনই এই দ্বীপে যাতায়াত করে ফুকেটের ক্রুজ। ক্রুজে চড়ার পাশাপাশি এখানে সুযোগ রয়েছে স্কুবা ডাইভিং, স্নোরকেলিং, সার্ফিং ও এনেমনে রীফসহ নানা ধরনের রোমাঞ্চকর রাইডের।
আরো পড়ুন: ভিয়েতনাম ভ্রমণ: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
ফাং এনগা বে
৪২টি দ্বীপের এই অগভীর উপসাগরটি ফুকেটের সবচেয়ে বৈচিত্র্যপূর্ণ জায়গাগুলোর মধ্যে অন্যতম। এর বনাঞ্চলের জলাভূমিতে রয়েছে নানা প্রজাতির ম্যানগ্রোভ, সমুদ্র ঘাসের বিছানা ও প্রবাল প্রাচীর। এগুলোর সঙ্গে চারপাশের গুহাগুলো যেন কতক রহস্যের পসরা সাজিয়ে রেখেছে।
জেমস বন্ড আইল্যান্ড
ফাং এনগা বের প্রধান আকর্ষণ এই দ্বীপটি। আসল নাম খাও ফিং কান। ১৯৭৪ সালের বিখ্যাত জেমস বন্ড মুভি ‘দ্য ম্যান উইথ দ্য গোল্ডেন গান’-এর কিছু দৃশ্যের শুটিং এখানে হয়েছিল। সেই থেকে দ্বীপটি জেমস বন্ডের নামেই অধিক পরিচিতি লাভ করে। এখানে পর্যটকদের জন্য সাঁতার কাটা, সেইলিং ও কায়াকিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে।
ফুকেট সৈকত
দ্বীপপুঞ্জের মধ্যে বৃহত্তম দ্বীপ হওয়ায় ফুকেটের সৈকতে দর্শনার্থীদের আনাগোনা থাকে অনেক বেশি। এখানে পর্যটকদের মূল আকর্ষণ থাকে সান বাথ, সাঁতার, স্নোরকেলিং, জেট স্কাইং, প্যারাসেইলিং, বানানা বোট ও হবি ক্যাট সেইলিংয়ের দিকে।
বিগ বুদ্ধা
দ্বীপের দক্ষিণে গেলে চোখে পড়বে নক্কার্ড পাহাড়ের চূড়ায় সাদা মার্বেলে গড়া বিশাল বুদ্ধের মূর্তি। এর উচ্চতা ৪৫ মিটার ও প্রস্থ ২৫ দশমিক ৪৫ মিটার। সিঁড়ি বেয়ে ওপরে ওঠার পর উত্তরে দেখা যাবে ফাং এনগা থেকে পুরো চালং উপসাগর। দক্ষিণে দৃষ্টিপটে বিস্ময়ের খোরাক যোগাবে কাতা সমুদ্র সৈকত। নিচে যাওয়ার পথে প্যানোরামিক বারগুলো থেকে চোখে পড়বে বার ক্যারন সৈকতে পাখিদের ঝাঁক।
আরো পড়ুন: ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপ ভ্রমণ: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
ফুকেট অ্যাকোয়ারিয়াম
সাঁতার জানা নেই অথচ পানির নিচের জগৎ দেখার অগাধ স্পৃহা। এমন পর্যটকদের জন্য সেরা গন্তব্য হচ্ছে এই ফুকেট অ্যাকোয়ারিয়াম। এখানে দর্শনার্থীরা বড় এক সুড়ঙ্গে প্রবেশ করে একটু সামনে এগোতেই সম্মুখীন হন সামুদ্রিক প্রাণীদের।
থাইল্যান্ডের পর্যটন ভিসার আবেদন পদ্ধতি ও খরচ
ফুকেট ভ্রমণে যেতে হলে প্রথমে থাই ট্যুরিস্ট ভিসা নিতে হবে। এর জন্য একক এন্ট্রি ভিসার জন্য আবেদন করা যেতে পারে, যার মেয়াদ থাকবে ৩ মাস পর্যন্ত। ভ্রমণের জন্য সম্ভাব্য তারিখের অন্তত দুই সপ্তাহ আগে থেকে এই আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করা জরুরি। একক এন্ট্রি ক্যাটাগরির জন্য ভিসা আবেদন ফি ৩ হাজার ৫০০ টাকা এবং ভিসা হাতে পেতে সময় লাগতে পারে সাধারণত ৭ কার্যদিবস।
আবেদন করার ফর্ম পাওয়া যাবে https://thaivisabd.com/forms/NewVisaApplicationForm.pdf-এই লিংকে।
আরো পড়ুন: ভুটান ভ্রমণ: জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান, যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
১৬৮ দিন আগে
শিগগিরই ষষ্ঠ যৌথ বাণিজ্য কমিটির বৈঠক করতে চায় ঢাকা-ব্যাংকক
বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ড যত দ্রুত সম্ভব ঢাকায় ষষ্ঠ যৌথ বাণিজ্য কমিটির (জেটিসি) বৈঠক আহ্বানের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেছে, এটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) আলোচনার পথ প্রশস্ত করবে।
সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্র সচিব জসিম উদ্দিনের সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত মাকাওয়াদি সুমিতমোরের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এসব বিষয়ে আলোচনা হয়।
থাইল্যান্ডের পক্ষ থেকে বলা হয়, রানোং বন্দর ও চট্টগ্রাম বন্দরের মধ্যে সরাসরি উপকূলীয় জাহাজের পরীক্ষামূলক যাত্রা শিগগিরই হতে পারে।
২০২৪ সালের ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে বাংলাদেশের অফিসিয়াল পাসপোর্টের জন্য 'ভিসা ছাড় চুক্তি' সক্রিয় করায় সন্তোষ প্রকাশ করেন পররাষ্ট্র সচিব।
এসময় থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত জানান, থাইল্যান্ড শিগগিরই ই-ভিসা সেবা চালু করতে যাচ্ছে। আবেদনকারীরা অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন এবং ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে ই-ভিসা নিতে পারবেন।
পররাষ্ট্র সচিবের দায়িত্ব নেওয়ায় জসিম উদ্দিনকে অভিনন্দন জানান এবং আগামী দিনগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারে থাইল্যান্ডের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন সুমিতমোর।
এসময় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, উপকূলীয় জাহাজ চলাচল, কৃষি ব্যবসা, পর্যটন ও জনগণের সঙ্গে জনগণের যোগাযোগের বিষয়ে পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা করেন তারা।
নিয়মিত দ্বিপক্ষীয় আলোচনা এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দ্বিপক্ষীয় চুক্তিগুলো চূড়ান্ত করার ওপর জোর দেন পররাষ্ট্র সচিব।
বৈঠকে উভয় পক্ষই শিগগিরই বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার বিষয়ে আশা প্রকাশ করেন।
আলোচনাকালে ২০২৪ সালের জুলাই মাসে থাই বাণিজ্য প্রতিনিধিদলের সফল বাংলাদেশ সফরের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত সুমিতমোর বলেন এই আয়োজন থাই ব্যবসায়ীদের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
পররাষ্ট্র সচিব বাংলাদেশের সুস্বাদু খাবারের প্রচার ও ব্র্যান্ডিংয়ের জন্য জ্ঞান, উদ্ভাবন ও দক্ষতা বিনিময়ে থাইল্যান্ডের সহযোগিতা কামনা করেন।
১৭০ দিন আগে