গ্রাহকদের লেনদেন
শেষ কর্মদিবসে ব্যাংকে গ্রাহকদের ভিড়, টাকা তোলার হিড়িক
ঈদুল আজহার ছুটির আগে শেষ কর্মদিবসে সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকে গ্রাহকদের তীব্র ভিড়ের মধ্যে লেনদেন সম্পন্ন হয়েছে। বেশিরভাগ গ্রাহক টাকা তুলতে এসেছেন ব্যাংকগুলোতে।
সরেজমিনে রাজধানীর বেশ কয়েকটি ব্যাংক ঘুরে দেখা গেছে, বুধবার (৪ জুন) সকাল থেকে টাকা তুলতে লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন গ্রাহকরা। অন্যান্য কর্মদিবসের তুলনায় আজ লেনদেনও হয়েছে তুলনামূলক বেশি।
ব্যাংক কর্মকর্তারা জানান, বেশিরভাগ গ্রাহকই এসেছেন টাকা তুলতে। মূলত কোরবানির পশু কিনতে গ্রাহকদের দরকার বড় অঙ্কের টাকা। কোরবানির খরচ ও ঈদের প্রয়োজন মেটাতেই খরচের টাকা তুলছেন গ্রাহকরা। ঈদের ছুটিতে ১০ দিন ব্যাংক বন্ধ থাকায় এই চাপ বেড়েছে।
রাজধানীর বনানী শাখার স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মঈনুল হাসান বলেন, ‘প্রতি বছরই কোরবানির আগের দিন ব্যাংকে টাকা তোলার চাপ বাড়ে। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। অনেকে সঞ্চয় ভেঙে টাকা তুলছেন। কোরবানির খরচ মেটাতে এ অর্থ উত্তোলন।’
গ্রাহকদের চাপে টাকা দিতে কোনো সমস্যা হচ্ছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের বনশ্রী শাখার ব্যবস্থাপক জসিমউদ্দিন বলেন, ‘ব্যাংকে পর্যাপ্ত টাকা আছে। গ্রাহকের চাপ থাকায় হয়ত কোনো কোনো শাখায় টাকা তুলতে দেরি হচ্ছে। তবে টাকার কোনো ঘাটতি নেই।’
তবে বিভিন্ন ব্যাংকের কয়েকজন গ্রাহক অভিযোগ জানিয়ে বলেন, ‘বড় অঙ্কের চেকের টাকা দিতে দেরি করছে ব্যাংক। অনেকেই দীর্ঘসময় অপেক্ষা করে হাতে টাকা পাচ্ছেন।’
বেসরকারি একটি ব্যাংকের গ্রাহক মীর হাসান বলেন, ‘সকালে দুই লাখ টাকার চেক নিয়ে এসেছিলাম। শুরুতে বলেছে লাঞ্চের পরে আসতে। লাঞ্চের পরে গিয়ে শুনি দুই লাখ টাকা একসঙ্গে দিতে পারবে না। এখন এক লাখ নিতে হবে, শেষ ঘণ্টায় গিয়ে বাকি এক লাখ টাকা নিতে হবে।’
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকেও একই চিত্র। সোনালী ব্যাংকের মতিঝিল শাখায় দীর্ঘ লাইনে গ্রাহকরা টাকা তুলছেন।
গ্রাহক মামুনুর রহমান বলেন, ‘কমলাপুর হাটে গরু কিনতে এসেছি। ভাবলাম ব্যাংক থেকে টাকা তুলে পরে হাঁটে যাই। ব্যাংকে এসে দেখি ব্যাপক ভিড়।’
আরও পড়ুন: ব্যাংকে নতুন নোট নেই, চড়া দামে মিলছে খোলাবাজারে
ব্যাংকের পাশাপাশি ভিড় জমেছে এটিএম বুথের সামনেও। কিছু কিছু এলাকায় বুথের ভেতরের লাইন এসে ঠেকেছে রাস্তা অবধি। এদিকে বুথে টাকা তোলার চাপে অনেক ক্ষেত্রে সার্ভারের সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন গ্রাহকরা।
গ্রাহক মাশায়েত প্রিয়তি বলেন, ‘আধঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে বুথের সামনে আবার পনেরো মিনিট দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে সার্ভারের সমস্যার কারণে। তাও ভালো শেষমেশ টাকা তুলতে পেরেছি।’
ব্যাংক লেনদেনে গ্রাহকদের চাপ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক এবং মুখপাত্র আরিফ হোসেন বলেন, ‘গ্রাহকদের চাপ কমাতে ডিজিটাল লেনদেনে উৎসাহিত করা হচ্ছে। বিশেষ করে পশুর হাটে ডিজিটাল লেনদেন অর্থ নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও সহায়ক।’
৭ জুন ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে বুহস্পতিবার (৫ জুন) থেকে ছুটি শুরু হচ্ছে ব্যাংক এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানে। আগামী ১৪ জুন পর্যন্ত টানা ১০ দিন ব্যাংক বন্ধ থাকবে। তবে পোশাক-কর্মীদের বেতন-বোনাস পরিশোধ ও আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমের সুবিধার্থে আগামী ৫, ১১ ও ১২ জুন শিল্প এলাকায় তফশিলি ব্যাংকের শাখা খোলা থাকবে।
২০২ দিন আগে