শ্বাসকষ্ট
অ্যাজমা, শ্বাসকষ্ট বা হাঁপানি রোগের কারণ, লক্ষণ ও প্রতিরোধের উপায়
বৃষ্টির মৌসুমে বাতাসে আর্দ্রতা বাড়ায় মোল্ডসহ বিভিন্ন ধরনের ছত্রাক বা ব্যাকটেরিয়া জাতীয় অণুজীবের বংশবিস্তার ঘটে। ফলে স্যাঁতসেঁতে দূষিত বাতাস শ্বাসকষ্টজনিত স্বাস্থ্য জটিলতাগুলোকে আরও গুরুতর করে তোলে। এরমধ্যে যেকোনো বয়সের মানুষের মধ্যে সবচেয়ে বেশি যে রোগটি দেখা যায় সেটি হচ্ছে অ্যাজমা। মূলত এই রোগের কোনো প্রতিকার নেই, তবে এর লক্ষণগুলো নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। চলুন, অ্যাজমা রোগের কারণ, লক্ষণ, ও প্রতিরোধের উপায়গুলো সম্বন্ধে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
অ্যাজমা কি
ফুসফুসে বাতাস চলাচলের জন্য নির্ধারিত শ্বাসনালীগুলোতে দীর্ঘমেয়াদী প্রদাহজনিত রোগ অ্যাজমা বা হাঁপানি। এটি কোনো সংক্রামক ব্যাধি নয়, তবে হৃদরোগ বা ক্যান্সারের মতো বিশ্বের মারাত্মক ব্যাধিগুলোর একটি।
শ্বাসযন্ত্রের নিম্নদেশের শ্বাসনালীগুলো ব্রঙ্কি নামে পরিচিত। এগুলোর ছোট ছোট শাখাগুলোকে বলা হয় ব্রঙ্কিওল্স। হাঁপানির সময় বিশেষত এই ব্রঙ্কি এবং ব্রঙ্কিওল্সে দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ ঘটে, যার ফলে পার্শ্ববর্তী মসৃণ পেশীগুলো সংকুচিত হতে থাকে। এভাবে সংকোচনের পুনরাবৃত্তির ফলে নালীগুলো ফুসফুসে বাতাস পরিবহনের অযোগ্য হয়ে পড়ে। এরই চূড়ান্ত পরিণতি হচ্ছে অ্যাজমা।
অ্যাজমা বা হাঁপানির কারণ
মূলত পরিবেশ, বংশগতি ও নানা ধরনের স্বাস্থ্যগত সমস্যার ওপর ভিত্তি করে বিভিন্ন তীব্রতার অ্যাজমা সৃষ্টি হয়ে থাকে। এই তীব্রতা রোগের উপসর্গ ও চিকিৎসা উভয়কেই প্রভাবিত করে। জিনগত প্রভাবের কারণে ১২ বছর বয়সের আগে হাঁপানি শুরু হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। অপরদিকে, ১২ বছর বয়সের পরে এই ব্যাধি হওয়ার পেছনে অধিকাংশ ক্ষেত্রে দায়ী থাকে পরিবেশগত প্রভাব।
আরো পড়ুন: সার্কেডিয়ান রিদম বা দেহ ঘড়ি নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি
পরিবেশগত কারণ
এখানে মূল চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করে অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী পদার্থ বা অ্যালার্জেন এবং বায়ু দূষণসহ অন্যান্য পরিবেশগত রাসায়নিক উপাদান। অ্যাজ্মাজেন নামে পরিচিত পদার্থগুলোর মধ্যে রয়েছে অ্যামোনিয়া, ল্যাটেক্স, ফর্মাল্ডিহাইড, গ্লুটারাল্ডিহাইড ও অ্যানহাইড্রাইড্স। এছাড়াও রয়েছে কীটনাশক, ঝালাই ও ঢালাই থেকে উৎপন্ন ধোঁয়া, ধাতু বা কাঠের ধূলিকণা, যানবাহন মেরামতে ব্যবহৃত আইসোসায়ানেট স্প্রে, আঠা, রঞ্জক, ধাতব কাজ করা তরল, তেল, ও ছাঁচ।
কোনো ধূমপায়ীর ধোঁয়া তার আশেপাশে থাকা গর্ভবতী নারীর হাঁপানির কারণ হতে পারে। ট্র্যাফিক দূষণ বা উচ্চ ওজোন স্তর নিম্নমানের বাতাসের জন্য দায়ী। এমন পরিবেশে তীব্র অ্যাজমার ঝুঁকির মধ্যে থাকে এখানে বসবাসরত শিশুরা।
গৃহস্থালি বিভিন্ন উদ্বায়ী জৈব যৌগের সংস্পর্শে আসার মাধ্যমে ঘরের শিশু এবং প্রাপ্তবয়স্ক উভয়েরই অ্যাজমা আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ফর্মাল্ডিহাইড, প্লাস্টিকের সিন্থেটিক পলিমার হিসেবে প্রস্তুতকৃত পলিভিনাইল ক্লোরাইড বা পিভিসি।
সাধারণ গৃহস্থালি অ্যালার্জেনগুলো হলো ধুলিকণা, তেলাপোকা, পশুর পশম বা পাখির পালকের অংশ ও ছাঁচ। এছাড়া রেসপিরেটরি সিন্সিশিয়াল ভাইরাস এবং রাইনোভাইরাসের মতো শ্বাসযন্ত্রের কিছু সাধারণ ভাইরাল সংক্রমণ রয়েছে। এগুলো ছোট বাচ্চাদের অ্যাজমা হওয়ার ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
আরো পড়ুন: অটিজম কী? অটিজম সচেতনতা ও সহমর্মিতা কেন জরুরি?
বংশগতি-সংক্রান্ত কারণ
জিনগত বৈশিষ্ট্য জীবদ্দশায় যে কোনো সময় অ্যাজমার দিকে পরিচালিত করতে পারে। যমজ সন্তানদের একজনের এই রোগ হলে, অপরজনেরও এতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ২৫ শতাংশ।
কিছু জিনগত বৈচিত্র্য শুধুমাত্র তখনই হাঁপানির কারণ হতে পারে, যখন সেগুলো নির্দিষ্ট পরিবেশগত অ্যালার্জেনের সান্নিধ্যে আসে। এর সবচেয়ে উৎকৃষ্ট দৃষ্টান্ত হলো এন্ডোটক্সিন ব্যাকটেরিয়া। এর সম্ভাব্য উৎস হলো তামাকের ধোঁয়া, কুকুর-বিড়াল, এবং গৃহপালিত পশুপাখির খামারসহ।
স্বাস্থ্যগত অবস্থা
অ্যাটোপিক এক্সিমা, অ্যালার্জিক রাইনাইটিস এবং অ্যাজমা- এই তিনের সমন্বিত ব্যাধিকে বলা হয় অ্যাটোপি। হাঁপানি হওয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী ঝুঁকির কারণ হলো অ্যাটোপিক রোগের ইতিহাস। যাদের এক্সিমা বা হে ফিভার আছে তাদের মধ্যে হাঁপানি অনেক বেশি হারে দেখা দেয়।
চর্বি জমা হওয়ার কারণে শ্বাসযন্ত্রের কার্যকারিতা কমে যাওয়ায় ফলে শ্বাসকষ্টের ঝুঁকি সৃষ্টি হয়।
আরো পড়ুন: থ্যালাসেমিয়া রোগের কারণ, লক্ষণ ও প্রতিরোধ
অ্যারিথমিয়া বা অস্বাভাবিক হৃদস্পন্দন স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ন্ত্রণে বেশ কার্যকরী একটি ওষুধ ক্যাটাগরি বিটা ব্লকার। মূলত প্রথম হার্ট অ্যাটাকের পরে দ্বিতীয় অ্যাটাক থেকে হার্টকে রক্ষা করতে এগুলো ব্যবহৃত হয়। এগুলোর মধ্যে বিশেষ করে প্রোপ্রানোলল সেবনকারী রোগীদের হাঁপানি হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এছাড়া অন্যান্য হাঁপানি সৃষ্টিকারী ওষুধগুলোর মধ্যে সর্বাধিক পরিচিত হলো অ্যাস্পিরিন। গর্ভাবস্থায় অ্যাসিড-প্রতিরোধী ওষুধ ব্যবহারের ফলে পরবর্তীতে শিশুর শ্বাসকষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
অ্যাজমা রোগের লক্ষণসমূহ
প্রাথমিক পর্যায়ে ঘন ঘন নিশ্বাস টানা, শ্বাসকষ্ট, বুকে চাপ অনুভব করা এবং ঘন ঘন কাশি হয়। ব্রঙ্কি থেকে উৎপন্ন কাশিতে শ্লেষ্মা থাকতে পারে, যা বের করা যথেষ্ট কষ্টসাধ্য। শ্বেত রক্তকণিকার উচ্চমাত্রার কারণে হাঁপানির আক্রমণের প্রতিরোধ করার সময় পুঁজের সৃষ্টি হতে পারে। সংক্রমণের সময় প্রদাহের জায়গায় তৈরি হওয়া সাদা-হলুদ, হলুদ বা হলদে-বাদামী বর্ণের এই পুঁজকে ইওসিনোফিল্স বলা হয়।
সাধারণত রাতে এবং ভোরে ব্যায়াম করা বা ঠান্ডা বাতাসের প্রতিক্রিয়ায় লক্ষণগুলোর অতি মাত্রায় বিকাশ ঘটে।
অ্যাজমার ধারাবাহিকতায় গ্যাস্ট্রোইসোফেজিয়াল রিফ্ল্যাক্স ডিজিজ বা জিইআরডি, রাইনোসাইনুসাইটিস ও অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপ্নিয়ার মতো ব্যাধিগুলো দেখা দিতে পারে। অধিকাংশ রোগীদের ক্যাভিটি দেখা যায়। এছাড়া এ সময় বিভিন্ন ধরনের মনস্তাত্ত্বিক ব্যাধির মাধ্যমে মানসিক স্বাস্থ্যেরও বিপর্যয় ঘটে।
আরো পড়ুন: রক্তের গ্রুপ: কে কাকে রক্ত দিতে পারবে?
হাঁপানির রেশ ধরে পরবর্তীতে হৃদরোগ ও ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ বা সিওপিডি হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
হাঁপানি প্রতিরোধে করণীয়
অ্যাজমার কোনো প্রতিকার নেই, তাই এই ব্যাধির আক্রমণ এড়াতে এর কারণগুলোর দিকে খেয়াল রাখতে হবে। সেগুলো থেকে যথাসম্ভব নিজেকে দূরে রাখার মাধ্যমেই রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব হতে পারে। এক্ষেত্রে খাদ্যাভ্যাসে সতর্কতাসহ পরিবর্তন আনতে হবে নিয়মিত জীবনধারণে।
৩ মাস আগে
কুড়িগ্রামে অতিরিক্ত গরমে শ্বাসকষ্ট নিয়ে ২ শিক্ষার্থী হাসপাতালে
কুড়িগ্রামে ইংরেজি বিষয়ের পরীক্ষা চলাকালে অতিরিক্ত গরমে অসুস্থ হয়ে শ্বাসকষ্ট নিয়ে দুই শিক্ষার্থী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। বুধবার (৭ জুন) দুপুরে উপজেলার ফুলবাড়ী উপজেলার উত্তর রাবাইতারি উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
অসুস্থ দুই শিক্ষার্থী হলো- মো. আমিন আলী ছেলে মো. হাসান আলী এবং মো. হাছান-এর মেয়ে মোছা. হেলেনা। তাদের দুই জনের বাড়ি উত্তর রাবাইতারি বটতলা গ্রামে। তারা ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে প্রাথমিক বৃত্তি প্রাপ্তদের তালিকায় অনুপস্থিত শিক্ষার্থীর নাম!
ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সফিকুল ইসলাম সফিক জানান, বুধবার নবম শ্রেণির ইংরেজি পরীক্ষা চলছিল। কিছু সময় পর বিদ্যুৎ চলে যায়। এতে ওই পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে হেলেনার শ্বাসকষ্ট শুরু হয়।
তিনি আরও জানান, এ সময় তাকে পরীক্ষার হল থেকে অফিস কক্ষে নিয়ে এসে সেবা দেওয়া হয়। পরে সে আরও বেশি অসুস্থ হলে তাকে নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
এর কিছুক্ষণ পর একই শ্রেণির আরেক শিক্ষার্থী হাসান আলীর শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। পরে তার পরিবারের লোকজন তাকেও নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। সেখানে তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে।
চিকিৎসক মোহাম্মদ ইফতেখার উল ইসলাম জানিয়েছেন, বর্তমানে তাদের দুইজনের শারীরিক অবস্থা কিছুটা উন্নতি হয়েছে।
তিনি আরও জানান, অতিরিক্ত গরমের পাশাপাশি পরীক্ষার চাপ থাকায় মানসিক ও শারীরিকভাবে তারা অসুস্থ হয়ে পড়ে। আমরা সার্বক্ষণিক তাদের খোঁজ-খবর রাখছি।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবিতে অনশনে অসুস্থ শিক্ষার্থী হাসপাতালে
৯২ শিক্ষার্থী হাসপাতালে ভর্তি,রাবি কর্তৃপক্ষের মামলা
১ বছর আগে
যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে কিশোরের মৃত্যু
যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নিহত কিশোর সিরাজ ইসলাম (১৬) নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলার গোসাইগঞ্জ গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে।
যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক মঞ্জুরুল হাসান বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে চলতি বছরের ১৫ মার্চ সিরাজকে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়। গত ২৮ মে জ্বর, শ্বাসকষ্ট শুরু হলে একই দিন তাকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক আহমেদ তারেক শামস বলেন, কিশোর সিরাজ জ্বর, শ্বাসকষ্ট, রক্তস্বল্পতা ও জণ্ডিসে ভুগছিল। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টায় সে মারা যায়।
হাসপাতালের সমাজসেবা অফিসার রুবেল হাওলাদার বলেন, সিরাজের যাবতীয় চিকিৎসার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করা হয়েছে। তার মা-বাবার কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে কিশোরের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
চুয়াডাঙ্গায় গাছের ডাল ভেঙে কিশোরের মৃত্যু
২ বছর আগে
খুলনায় শিশুরোগ ও ডায়রিয়া বেড়েছে
খুলনায় শিশুসহ সব বয়সের মানুষ ডায়রিয়া, জ্বর-সর্দি, মাথা ব্যথা, শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হচ্ছে বলে জানা গেছে। শিশুদের মধ্যে নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কিউলাইটিসসহ নানা রোগ দেখা দিচ্ছে। ইতোমধ্যে খুলনা শিশু হাসপাতালসহ সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে।
খুলনা শিশু হাসপাতালের সিনিয়র মেডিকেল অফিসার ডা. এস আরফিন টুটুল জানান, প্রতি বছরই আবহাওয়া বা মৌসুম পরিবর্তনের কারণে শিশুদের মধ্যে জ্বর, সর্দি-কাশি, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা দেখা দেয়। দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারলে কোনও সমস্যা হয় না। এ সময় আক্রান্ত শিশুদের বাড়তি যত্ন নেয়ার পাশাপাশি পুষ্টিকর খাদ্য, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার প্রতি খেয়াল রাখতে হবে। সঠিক ওষুধ প্রয়োগসহ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসারে চলতে হবে।
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে ডায়রিয়ার প্রকোপ, বাড়ছে শিশু রোগীর চাপ
মহানগরীর বাস্তুহারার বাসিন্দা নুরজাহান জানান, সন্তানকে শিশু হাসপাতালের বহির্বিভাগে নিয়ে এসেছেন।শিশুটির কয়েকদিন ধরে জ্বর।
জ্বরে আক্রান্ত হয়ে পিরোজপুর ইকড়ি গ্রামের তানভীর গত ১২ দিন ধরে শিশু হাসপাতালের তৃতীয় তলায় অবস্থান করছে। তার মা তানিয়া বেগম বলেন, ‘এখানে আসার কয়েকদিন আগ থেকে তানভীরের জ্বর হয়। ওষুধ খেয়েও জ্বর ভালো হয়নি। এখানে এসে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানতে পারলাম নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। প্রথম দিকে রোগীর চাপে এখানে থাকার কোনও ব্যবস্থা ছিল না। বর্তমানে চাপ কম রয়েছে।’
শিশু হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. প্রদীপ দেব নাথ বলেন, ২৭২ শয্যা নিয়ে খুলনা শিশু হাসপাতালের সেবা কার্যক্রম চলছে। গত কয়েকদিন ধরে হাসপাতালে শিশু রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। দেনিক জ্বর, সর্দি-কাশি ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত পাঁচশর বেশি রোগীর সেবা দেয়া হচ্ছে। এছাড়া প্রতিদিন প্রায় ১৫ জনের মতো ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হচ্ছেন। যদিও অন্যান্য বিভাগের তুলনায় আক্রান্তের সংখ্যা কম তবে মে থেকে আগস্ট পর্যন্ত এ রোগের প্রকোপ সবচেয়ে বেশি থাকে।
এদিকে খুলনা সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে রোগীদের সামলাতে অনেকটা হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। রোগীদের চাপে অনেকে এ হাসপাতালের বারন্দায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আরও পড়ুন: বরগুনায় বেড়েই চলছে ডায়রিয়ার প্রকোপ
খুলনা সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে ভর্তি রোগী রায়ের মহল এলাকার বাসিন্দা মো. রবিউল ইসলাম বলেন, ২৬ মার্চ দুপুরে রাস্তার পাশের একটি দোকান থেকে শরবত কিনে খাওয়ার পর থেকেই পেটব্যথা ও পাতলা পায়খানা শুরু হয়। কোনোভাবে পাতলা পায়খানা না কমায় রাতে হাসপাতালে আসি। আমাকে ভর্তি করে নেয়া হয়। চারটি স্যালাইন দেয়ার পর এখন একটু সুস্থ হয়েছি। তবে শরীর এখনও খুব দুর্বল।
খুলনা সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালের ইনচার্জ ডা. মো. হাবিবুর রহমান বলেন, হঠাৎ গরমে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। প্রায় তিনশ রোগী ভর্তি হয়েছেন হাসপাতালটিতে। এ ছাড়া আমাদের পরামর্শে অনেকে বাড়িতে একই ধরনের চিকিৎসা নিচ্ছেন।
২ বছর আগে
অক্সিজেন খুলে দেয়ায় রোগীর মৃত্যু: ওয়ার্ডবয় আটক
বগুড়া জেলার সরকারি হাসপাতালে এক কিশোরের অক্সিজেন মাস্ক খুলে ফেলার পর কিশোরের মৃত্যুর অভিযোগে অভিযুক্ত এক ওয়ার্ড বয়কে আটক করেছে র্যাব।বৃহস্পতিবার ভোরে ঢাকার আবদুল্লাহপুর এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়।
আটক আসাদুল ইসলাম ধুলু গাইবান্ধা জেলার জয়নুদ্দিন মিয়ার ছেলে ।
র্যাব সদর দপ্তরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন সাংবাদিকদের জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-১২ এর একটি দল ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে বৃহস্পতিবার ভোররাতে ধুলুকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত তার দোষ স্বীকার করেছে।
আরও পড়ুন: বকশিস কম পেয়ে অক্সিজেন খুলে দেয়ায় রোগীর মৃত্যু!
তিনি জানান, বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে (এসজেডএমসিএইচ) ১৭ বছর বয়সী অষ্টম শ্রেণির ছাত্র বিকাশ চন্দ্র দাসের মৃত্যুর ঘটনায় বগুড়া সদর থানায় অভিযোগের একদিন পর ধুলুকে আটক করা হয়ধুলু গত ছয় বছর ধরে এসজেডএমসিএইচ-এ দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করছেন। তার কাজ ছিল বহির্বিভাগ থেকে রোগীদের স্ট্রেচারে করে অন্য ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়া।
কমান্ডার খন্দকার বলেন, বিকাশের মৃত্যুর পর, ধুলু প্রথমে নওগাঁয় পালিয়ে যায় এবং তারপর চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে ঢাকায় আসে। তাকে ঢাকায় আটক করা হয়।
আরও পড়ুন: দুটি মেডিকেল অক্সিজেন প্ল্যান্ট নিয়ে ভারতের ‘আইএনএস সাবিত্রী’ চট্টগ্রাম বন্দরে
ধুলু বিকাশকে সার্জারি বিভাগে নিয়ে যাওয়ার জন্য তার পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে টিপ হিসাবে ২০০ টাকা দাবি করেছিল বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিকাশের স্বজনরা তাকে ১৫০ টাকা দিলে সে ক্ষিপ্ত হয়ে অক্সিজেন মাস্ক খুলে ফেলে।
অক্সিজেন মাস্ক অপসারণের পরপরই বিকাশের শ্বাসকষ্ট দেখা দেয় এবং রাত ১০ টা ৩০ এর দিকে সে মারা যায়।
৩ বছর আগে
কুষ্টিয়ায় ভোটকেন্দ্রে প্রিজাইডিং অফিসারের মৃত্যু
কুষ্টিয়ার মিরপুরে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে কেন্দ্রে থাকা অবস্থায় এক প্রিজাইডিং অফিসারের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার দিবাগত মধ্যরাত ১২ টা ২০ মিনিটের দিকে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড রামনগর তিঁতুতলা কেন্দ্রে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত জয়নাল আবেদিন মিরপুর উপজেলার আমলা ইউনিয়নের নিমতলা কলেজের শিক্ষক ছিলেন।
ওই কেন্দ্রের সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার আনোয়ারুল ইসলাম মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, রাত সাড়ে ১১টার দিকে প্রিজাইডিং অফিসার জয়নাল আবেদীন তার শরীরিক অসুস্থতার কথা জানান । এ সময় তার শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। একটু পরেই পরে তিনি ভোট কেন্দ্রের মধ্যেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। পরে স্থানীয় চিকিৎসক এসে তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
আরও পড়ুন: চতুর্থ ধাপে ৮৪০ ইউপি নির্বাচনের ভোট ২৩ ডিসেম্বর
কুর্শা ইউনিয়ন নির্বাচনের রির্টানিং কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম নান্নু জানান, হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে কুর্শা ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসারের মৃত্যু হয়েছে।
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ ইউনিয়নে গত কয়েক দিন ধরে ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ, জাসদ ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা চলে আসছে।
প্রসঙ্গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে আজ বৃহস্পতিবার কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে এবং ভেড়ামারা উপজেলার ৬ টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ইউপি নির্বাচন: লালমনিরহাটে স্বামী-স্ত্রীর লড়াই
৩ বছর আগে
মানিকগঞ্জে করোনা উপসর্গে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু
মানিকগঞ্জে করোনা উপসর্গে এক স্কুলছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার দুপুরে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় আনার পথেই তার মৃত্যু হয়।
মৃত রোদেলা মানিকগঞ্জ এস. কে সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। এই স্কুলের দশম শ্রেণির অন্য এক শিক্ষার্থীও করোনায় আক্রান্ত।
রোদেলার স্বজনরা জানায়, ১৫ সেপ্টেম্বর প্রথম ক্লাস করার পর দিন থেকেই তার জ্বর ও গলাব্যাথা দেখা দেয়। পরে স্থানীয়চিকিৎসকের কাছে নেয়া হয়। চিকিৎসক তাকে গলা ব্যথার ঔষধ দেন। পরের দিন বুধবার দুপুরে তার হঠাৎ শ্বাসকষ্ট শুরু হয়।
আরও পড়ুন: খেলতে গিয়ে পতাকার স্ট্যান্ড মাথায় পড়ে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু
রোদেলার স্বজনরা আরও জানায়, গত বুধবার দুপুরে শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে তাকে দ্রুত মানিকগঞ্জের মুন্নু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসকরা সিটি স্ক্যান করে তার ২৬ ভাগ ফুসফুস ক্ষতি হয়েছে বলে জানান। অবস্থা খারাপ দেখে তাকে দ্রুত ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। ঢাকার কাছাকাছি পথেই শ্বাসকষ্ট বেড়ে মারা যায় সে।
এদিকে রোদেলার মৃত্যুর খবরে বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। সন্তানদের স্কুলে পাঠাবেন কিনা সে নিয়েও ভাবছেন অভিভাবকরা।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে ৩ কলেজছাত্রী করোনা আক্রান্ত
স্কুলের শিক্ষকরা জানান, সম্পুর্ণ স্বাস্থ্যবিধি মেনেই তারা বিদ্যালয়ের পাঠদান করাচ্ছেন। গত ১৫ সেপ্টেম্বর দশম শ্রেণির এক ছাত্রীর করোনা পজেটিভ হলে ওই শ্রেণির বাকি ৫৬জন শিক্ষার্থীর করোনা পরীক্ষা করানো হয়। তাদের নেগেটিভ আসে। এরপর এক সপ্তাহের জন্য ওই ক্লাসটি বন্ধ রাখা হয়। এছাড়া অন্য কোন শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কোন ধরনের সমস্যা হয়নি বলে জানান শিক্ষকরা।
স্থানীয় প্রশাসন ও শিক্ষা বিভাগের পরামর্শে সরকারি নীতি অনুযায়ী ক্লাস করাচ্ছেন বলে জানান উক্ত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আরজু খানম।
এদিকে জেলা প্রশাসক মো. আবদুল লতিফ বলেন, তারা প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিবিড় পর্যবেক্ষণ করছেন। নতুন করে কোন প্রতিষ্ঠানে সংক্রমণের খবর পাননি। যদি শিক্ষার্থীদের মাঝে সংক্রমণ দেখা দেয় তবে অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
৩ বছর আগে
বিশ্বনাথে করোনা ও শ্বাসকষ্ট রোগীদের ‘অক্সিজেন বন্ধু রুহুল’
সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা ও পৌর এলাকায় করোনা রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলছে। অনেকেই আবার আক্রান্ত না হয়েও শ্বাসকষ্টে ভুগছেন। যে কারণে এই উপজেলায় অক্সিজেন সঙ্কট তৈরি হচ্ছে। করোনার এই দুঃসময়ে উপজেলা ও পৌরবাসীকে অক্সিজেন সহায়তা দিতে বিশ্বনাথ সদর ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য সচিব ও বিশ্বনাথ নতুন বাজার বণিক কল্যাণ সমিতির ২নং ওয়ার্ডের কমিশনার সুন্দর আলী রুহুল ‘ফ্রি অক্সিজেন সার্ভিস’শুরু করেছেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ফোন করলেই করোনা ও শ্বাসকষ্ট রোগীর বাড়িতে অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে হাজির হচ্ছেন আলী রুহুল। সেটা রাত হোক কিংবা দিন। গত এক মাস থেকে নিজের অর্থায়নে মানুষকে এ সেবা দিয়ে যাচ্ছেন রুহুল। ইতোমধ্যে উপজেলা ও পৌর এলাকার প্রায় অর্ধশতাধিক রোগীকে অক্সিজেন সেবা দিয়েছেন। অক্সিজেনের পাশাপাশি সুন্দর আলী রুহুল অ্যাম্বুলেন্স সেবাও দিয়ে যাচ্ছেন। প্রচারবিমুখ যুবলীগ নেতার বন্ধু-বান্ধবরা এখন তার নাম দিয়েছেন ‘অক্সিজেন বন্ধু রুহুল’।
যুবলীগ নেতা সুন্দর আলী রুহুল জানান, প্রথমে তার অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসের জন্য ছোট দুটি অক্সিজেন সিলিন্ডার কিনেন। পরে গত জুলাই মাসের শেষের দিকে বিশ্বনাথে করোনা রোগীর সংখ্যা বেড়ে যায়। ফলে অক্সিজেন সংকট দেখা দেয়। এরপর থেকেই তিনি ছোট আরও চারটি ও বড় একটি সিলিন্ডার কিনে ফ্রি সার্ভিস শুরু করেন। প্রতিটি বড় সিলিন্ডার রিফিলে তার ব্যয় হয় ১ হাজার ৫০০ টাকা, ছোট সিলিন্ডারে ২০০ টাকা করে। তবে অক্সিজেন সিলিন্ডার রিফিলে বেশ কষ্ট করতে হয়।
আরও পড়ুন: মমেক হাসপাতালে ১৩৪২ সিলিন্ডার অক্সিজেন দিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী
আর গ্রামের রোগীদের বাড়িতে মাঝ রাতে নিজের কাঁধে করে সিলিন্ডার নিয়ে পৌঁছে দেয়ার অভিজ্ঞতার গল্পও শেয়ার করেন তিনি।
এই কাজগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার না করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রোগীর কাছে সিলিন্ডার নিয়ে যাওয়ার সময় নিজেরও আক্রান্তের ঝুঁকি থাকে। তাই যেখানে যাই শুধু কাজ করেই চলে আসি। আর রোগীর সামনে গেলে তাদের দেখে নিজের ছবি তোলার কথা মাথায়ই আসে না।
সুন্দর আলী রুহুল বিশ্বনাথের অন্যতম মুক্তিযোদ্ধা সংগঠক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের সভাপতি মনু মিয়ার ভাতিজা।
তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধের সময় আমার পরিবার অনেক ত্যাগ করেছে। এই করোনাযুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলীয় নেতাকর্মীদের আহ্বান জানিয়েছেন যার যার অবস্থান থেকে করোনাযুদ্ধ মোকাবিলা করার জন্য। আর এ কারণেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শের একজন কর্মী হিসেবে মানুষের প্রতি থাকা ভালবাসা থেকেই নিজস্ব অর্থায়নেই উদ্যোগ নিয়েছেন বলে জানান যুবলীগ নেতা সুন্দর আলী রুহুল।
সেবা পাওয়া রোগীর স্বজন জানাইয়া গ্রামের কাওছার আলী জানান, অনেক জায়গায় খোঁজ করে অক্সিজেন সিলিন্ডার টাকা দিয়েও পাইনি। ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া আরও দুই-তিনটি ফ্রি অক্সিজেন সেবা দেয়া সংগঠনের সাথে যোগাযোগ করেও অক্সিজেন পাইনি। অবশেষে এক ফোন কলে সুন্দর আলী রুহুল ফ্রি অক্সিজেন সার্ভিসটি আমাদের দিয়েছেন। তার মানবিকতার কাছে আমরা কৃতজ্ঞ।
সেবা গ্রহীতা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যগ্ম-আহ্বায়ক মুহিবুর রহমান সুইট জানান, ফোন করার আধা ঘণ্টার মধ্যে অক্সিজেন নিয়ে বাড়িতে হাজির হয়েছেন রুহুল। যুবলীগ নেতা রুহুলের মানবিক এ কাজকে স্যালুট জানাই।
আরও পড়ুন:ফোন দিলেই করোনা রোগীর বাড়িতে পৌঁছে যাবে অক্সিজেন
আলী রুহুল বলেন, রাত ৪টার দিকে বৃষ্টিতে ভিজেও আমরা রোগীর বাড়িতে বিনামূল্যে অক্সিজেন পৌঁছে দিয়েছি। এছাড়া দুটি অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসেও কোন ডিমান্ড থাকে না আমাদের কর্মীদের। তাই করোনা, শ্বাসকষ্ট ও বার্ধক্যজনিত রোগে আক্রান্তের কারো শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে আমাদের ০১৭১২-৩০১৭৫২ এই নাম্বারে যোগাযোগ করলে বিনা খরচে আক্রান্ত রোগীর বাড়িতে অক্সিজেন সিলিন্ডার পৌঁছে যাবে ইশাআল্লাহ।
৩ বছর আগে
রাজশাহী মেডিকেলে করোনায় আরও ১৮ মৃত্যু
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে করোনা পজেটিভ ছিল ৮ জনের। বাকিদের মধ্যে ৯ জন শ্বাসকষ্টসহ করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা যান। এছাড়া একজন করোনামুক্ত হওয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ।
বুধবার সকাল ৬টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় এসকল চিকিৎসাধীন রোগীর মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুনঃ কুমিল্লাতে করোনায় ২৪ ঘণ্টায় ৭ মৃত্যু
রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানান, গত একদিনে মৃতদের মধ্যে ১৪ জন পুরুষ ও ৪ জন নারী।
আরও পড়ুনঃ বিশ্বে করোনায় মোট মৃত্যু ৪০ লাখ ছাড়াল
পরিচালক আরও জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৭০ জন। একই সময়ে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ৪৮ জন। বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ৪৫৪ বেডের বিপরীতে চিকিৎসাধীন আছেন ৪৮৫ জন। আইউসিইউতে চিকিৎসাধীন ২০ জন।
আরও পড়ুনঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় করোনায় মৃত্যু ৩, নতুন শনাক্ত ১০৩
শামীম ইয়াজদানী আরও জানান, রাজশাহীর ৪২৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১১৪ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। আগের দিনের চেয়ে ৪ দশমিক ৬৫ শতাংশ বেড়ে শনাক্তের হার ২৬ দশমিক ৫৭ শতাংশ। যা আগের দিন ছিল ২১ দশমিক ৯২ শতাংশ।
৩ বছর আগে
টিকা নেয়ার পর আক্রান্ত হলেও স্বাস্থ্যঝুঁকি কম: গবেষণা
করোনার টিকা নেয়া ব্যক্তিরা আক্রান্ত হলেও তাদের স্বাস্থ্যঝুঁকি অনেক কম বলে এক গবেষণায় প্রমাণ মিলেছে।
চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড অ্যানিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) এক গবেষণায় দেখা গেছে, টিকা নেয়ার পর আক্রান্তদের মধ্যে ৮২ দশমিক ৫ শতাংশ রোগীকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে যেতে হয়নি। টিকা নেয়ার পর আক্রান্ত ১৭ দশমিক ৫ শতাংশ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হলেও তাদের মধ্যে কোনো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি পরিলক্ষিত হয়নি।
টিকা নেয়ার পর করোনায় আক্রান্ত হওয়া ২০০ রোগীর ওপর চালানো গবেষণায় দেখা যায়, তাদের মধ্যে ৮৮ শতাংশের বেশি রোগীর শ্বাসকষ্ট ছিল না। ৯২ শতাংশ রোগীর অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়নি।
বয়স্ক ও কো-মরবিডিটির কারণে কিছুসংখ্যক রোগীর শ্বাসকষ্ট ও অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়েছে। টিকার প্রথম ডোজ নেয়া পর আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে মাত্র একজন রোগীর।
গবেষণায় দেখা গেছে, আক্রান্তদের অধিকাংশ টিকা নেয়ার অন্তত ৩২ দিন পর আক্রান্ত হয়েছিলেন। তাদের শরীরের গড় তাপমাত্রা ছিল ১০১ ডিগ্রি। লিঙ্গ ও বয়সভেদে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন মাত্রা ছিল যথাক্রমে ৯৯ ডিগ্রি থেকে ১০৪ ডিগ্রি।
আরও পড়ুন: করোনা টিকার ২য় ডোজ নিলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী
চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড অ্যানিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গৌতম বুদ্ধ দাশের নেতৃত্বে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার প্রথম ডোজ নেয়া করোনা আক্রান্তদের স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে চট্টগ্রাম অঞ্চলে করা একটি গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে। গবেষক দলে অন্যদের মধ্যে ছিলেন অধ্যাপক ড. শারমিন চৌধুরী, ডা. ইফতেখার আহমেদ রানা, ডা. ত্রিদীপ দাশ, ডা. প্রনেশ দত্ত, ডা. সিরাজুল ইসলাম এবং ডা. তানভীর আহমদ নিজামী।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত এই গবেষণা চালানো হয়। যাদের ওপর এই গবেষণা চালানো হয়, তারা ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে টিকার প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছিলেন।
করোনা আক্রান্তদের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য উপসর্গ হলো শ্বাসকষ্ট। এই শ্বাসকষ্ট ও ফুসফুসে সংক্রমণের কারণে অধিকাংশ রোগীর মৃত্যু ঘটে। তবে এই গবেষণায় দেখা যায়, করোনা টিকা নেওয়াদের মধ্যে ১৭৭ জনের কোনও শ্বাসকষ্ট পরিলক্ষিত হয়নি। তবে বয়সের তারতম্য, বার্ধক্যজনিত কারণ ও বিভিন্ন কো-মরবিডিটির কারণে মাত্র ৮ শতাংশ রোগীর শ্বাসকষ্ট ও অতিরিক্ত অক্সিজেন সরবরাহ করতে হয়েছে বলে গবেষণায় উঠে এসেছে।
করোনা আক্রান্তদের প্রাথমিক উপসর্গ হচ্ছে জ্বর, হাঁচি ও কাশি। গবেষণায় দেখা যায়, প্রথম ডোজ নেয়া রোগীদের ক্ষেত্রে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর লিঙ্গভেদে পুরুষ ৪৪ দশমিক ৫ শতাংশ এবং ৯১ শতাংশ নারীর মধ্যে কোনো ধরনের কাশি ও হাঁচি পরিলক্ষিত হয়নি। একই সাথে ৫৬ দশমিক ৫ শতাংশ পুরুষ ও ৫৫ দশমিক ৫ জন নারী রোগীর যথাক্রমে স্বাদ ও ঘ্রাণে কোনও পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়নি।
গবেষণার ইতিবাচক দিক হচ্ছে প্রথম ডোজ টিকা নেয়ার পর আক্রান্ত ২০০ রোগীর মধ্যে মাত্র একজনকে আইসিইউতে ভর্তির প্রয়োজন হয়। তবে ছয় দিন পর ওই রোগীর মৃত্যু হয়। মৃত ওই ব্যক্তির দুই বছর আগে কিডনি প্রতিস্থাপন হয়েছিল বলে জানা যায়।
গবেষক দলের প্রধান সিভাসু উপাচার্য অধ্যাপক গৌতম বুদ্ধ দাশ বলেন, গবেষণায় প্রমাণ হয়েছে টিকা নেয়ার পর করোনা আক্রান্ত হলেও মৃত্যুঝুঁকি কমে আসে। টিকার প্রথম ডোজ নেয়ার পর আক্রান্ত ২০০ জনের মধ্যে মাত্র একজনের মৃত্যু হয়েছে। এই হার শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ। মৃত ওই ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে কিডনিজনিত জটিলতায় ভুগছিলেন। এ ছাড়া তার বিভিন্ন রোগ ছিল। আক্রান্ত হওয়ার পর তার আইসিইউর প্রয়োজন হয়েছিল। তবে টিকার প্রথম ডোজ নেয়া অন্যরা ভালো আছেন।
৩ বছর আগে