বিএনপি মহাসচিব
শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনে বিএনপি নৈতিক সমর্থন করে: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবিতে চলমান আন্দোলনে বিএনপি নৈতিকভাবে সমর্থন করে।
সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থার 'প্রত্যয়' স্কিমে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীদের অন্তর্ভুক্তির বিরুদ্ধে শিক্ষকদের আন্দোলন ও সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি পুনর্বহালের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিএনপি উস্কানি দিচ্ছে বলে ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের অভিযোগ নাকচ করে দেন তিনি।
আরও পড়ুন: রেল করিডোর ও ভারতের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক নিয়ে মিথ্যাচার করছে সরকার: ফখরুল
তিনি বলেন, 'তারা (আওয়ামী লীগ নেতারা) যা বলছেন তা অযৌক্তিক। আন্দোলনে বিএনপির উস্কানি দেওয়ার কোনো প্রশ্নই উঠে না এবং বিএনপি আন্দোলনকারীদের ওপর নির্ভর করছে না।’
তিনি বলেন, দায়িত্বশীল দল হিসেবে দেশের অভ্যন্তরে ঘটে যাওয়া ঘটনাবলী সম্পর্কে বিএনপি অবশ্যই প্রতিক্রিয়া জানাবে।
তিনি বলেন, 'তারা (শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা) তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন এবং তাদের প্রতি আমাদের নৈতিক সমর্থন রয়েছে । এখনও তা অব্যাহত থাকবে। আমরা কি ন্যায়সঙ্গত আন্দোলনকে সমর্থন করতে পারি না?
শিক্ষকদের জন্য 'প্রত্যয়' পেনশন স্কিম বাতিল এবং সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান ৫৬ শতাংশ কোটা যৌক্তিক পর্যায়ে নামিয়ে এনে আন্দোলনকারীদের দাবি পূরণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান ফখরুল।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে ভারতীয় রেল নেটওয়ার্ক আত্মঘাতী হবে: ফখরুল
ভারতের সঙ্গে 'রাষ্ট্রবিরোধী' চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকের প্রতিবাদে কর্মসূচি ঘোষণা করবে বিএনপি: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক ভারত সফরে হওয়া চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকের (এমওইউ) বিরুদ্ধে প্রতিবাদ কর্মসূচি ঘোষণা করবে দলটি।
মঙ্গলবার (২৫ জুন) এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক ভারত সফরে ১০টি চুক্তি সই হয়েছে, যার মধ্যে দুটি চুক্তি, ৫টি নতুন এমওইউ এবং তিনটি নবায়নকৃত চুক্তি রয়েছে।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, চুক্তিগুলোর কারণে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হতে পারে বলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।
বাংলাদেশের স্বার্থের জন্য ক্ষতিকর হওয়ায় বিএনপি এই চুক্তিগুলো প্রত্যাখ্যান করেছে বলে জানান তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, বিএনপি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বিএনপি প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেবে।
তিনি বলেন, আগামী ২৮ জুন এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করে প্রতিবাদ কর্মসূচি ঘোষণা করবে দলটি।
সোমবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠকের ফলাফল জানাতে মঙ্গলবার এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
উল্লেখ্য, ভারতে দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফর শেষে শনিবার দেশে ফেরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে শুক্রবার নয়াদিল্লি যান তিনি।
সফরের দ্বিতীয় দিনে, ঢাকা ও নয়াদিল্লি ১০টি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করেছে, যার মধ্যে সাতটি নতুন এবং তিনটি প্রতিবেশী দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সম্পর্ককে আরও সংহত করতে পুনর্নবায়ন করা হয়েছে।
টোপ নয়, রাঘববোয়ালদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে বাজেটে: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে দেশের সম্পদ নতুন করে লুটপাটের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
মাছ ধরার জন্য টোপ ব্যবহার করার বিষয়ে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কালো টাকা সাদা করার সুযোগ নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি করছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
বিএনপির এই নেতা বলেন, 'বাজেট দেখলেই বোঝা যাবে, রাঘববোয়ালদের জন্য খাবারের আয়োজন করা হয়েছে।’
অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের মতামতের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, নতুন বাজেট দেশের ক্ষতি ছাড়া আর কিছুই করবে না।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগকে রক্ষা করতে, ক্ষমতায় রাখতে সব প্রচেষ্টা চালিয়েছিলেন বেনজীর: ফখরুল
তিনি বলেন, ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি সাধারণ মানুষের জন্য সবচেয়ে বড় সংকট, কারণ দ্রব্যমূল্যের আকাশছোঁয়া দাম তাদের জীবন অসহনীয় করে তুলেছে।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করার বিধান রেখে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেন।
বাজেটে কালো টাকা বৈধ করার সিদ্ধান্তের প্রতি সমর্থন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কালো টাকা আগে বৈধ পথে আনতে হবে।
তিনি বলেন, ‘নামমাত্র (ট্যাক্স) দিয়ে প্রথমে অর্থ একটি উপযুক্ত জায়গায় (ব্যাংকিং চ্যানেলে) আনতে হবে। তাহলে তাদের (কালো টাকার মালিকদের) নিয়মিত কর দিতে হবে। মাছ ধরতে হলে টোপ ব্যবহার করতে হবে।’
মাছ ধরতে টোপ ব্যবহার নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য হাস্যকর বলে মন্তব্য করেন ফখরুল।
তিনি প্রশ্ন করেন, ‘এ ধরনের বক্তব্য দিয়ে আপনি আর কতদিন মানুষকে ধোঁকা দিতে পারবেন?’
মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক সিরাজুল আলম খানের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ-রব)।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষে সিরাজুল আলম খানের প্রতি শ্রদ্ধা জানান মির্জা ফখরুল।
সিরাজুল আলমের মৃত্যুর পর শোকবার্তা না দেয়ায় আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনা করেন তিনি। ‘ভেবে দেখুন, তারা কতটা অকৃতজ্ঞ হতে পারে। এমন একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতার মৃত্যুর পরও তারা কোনো শোক প্রকাশ করেনি। একই কারণে তারা জিয়াউর রহমানকে সহ্য করতে পারছে না।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশ এক ভয়াবহ সংকটে পড়েছে, তার অস্তিত্বকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। ‘সরকার ক্ষমতা দখল করে দেশের সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, সরকার বাংলাদেশের জনগণকে শোষণ ও নিপীড়ন করছে এবং প্রতিনিয়ত দেশের ভবিষ্যৎ নষ্ট করছে। ‘আমরা সবাই বাংলাদেশের এই ভয়াবহ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ চাই।’
গণতন্ত্র ও ভোটদান এবং জনগণের হারানো অধিকার ফিরিয়ে আনতে সব ভুল বোঝাবুঝি ও সিদ্ধান্ত পরিহার করে সব রাজনৈতিক দল ও সর্বস্তরের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
আরও পড়ুন: নতুন বাজেটে দুর্নীতির আশঙ্কা আরও বেশি: ফখরুল
লুটপাটের নতুন পরিকল্পনা নিয়ে এই বাজেট: ফখরুল
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষ দিশেহারা: ফখরুল
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে দেশের মানুষ দিশেহারা বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, 'তারা (সরকার) গত ১৫ বছরে দানবের মতো দেশ শাসন করে শুধু বাংলাদেশের রাজনীতিকেই ধ্বংস করেনি, দেশের অর্থনীতিকেও ধ্বংস করেছে। দ্রব্যমূল্যের অবস্থা কী? কোনো বাড়িতেই শান্তি নেই।’
সোমবার (৩ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, গ্যাস, বিদ্যুৎ, শাকসবজি, চালসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম এমনভাবে বেড়েছে প্রয়োজনীয় খাবার জোগাড় করাও এখন অসম্ভব হয়ে পড়ছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘মানুষ এখন বাচ্চাদের জন্য দুধ এবং ডিম কিনতে পারে না। প্রতি কেজি গরুর মাংসের দাম ৮০০ টাকা এবং লাউ ১২০ টাকা। অবিশ্বাস্য অবস্থা।’
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে দেশ স্বাধীনতা হারাবে: মির্জা ফখরুল
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) এক গবেষণার কথা উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, 'বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশে জিনিসপত্রের দাম বেশি। নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য জিনিসপত্রের দাম এতটাই বেড়ে গেছে যে তাদের পক্ষে বেঁচে থাকা কঠিন বলে মনে হচ্ছে। তারা গরুর মাংস কিনতে পারছে না, ইলিশ মাছ তো দূরের কথা, এমনকি দাম বেশি হওয়ায় তারা ভালো মানের সবজিও কিনতে পারছে না।’
তিনি আরও বলেন, ভারত, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামের চেয়ে বাংলাদেশে সয়াবিন তেল বা পাম তেলের দাম অনেক বেশি।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, 'আমরা সাধারণ মানুষ এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করছি এবং এক কঠিন সময় পার করছি। পুলিশ, বিজিবি ও প্রশাসনসহ রাষ্ট্রযন্ত্রকে অবৈধভাবে ব্যবহার করে গত ১৫ বছর ধরে বলপ্রয়োগ করে ক্ষমতায় থেকে আওয়ামী লীগ সরকার এই পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে।’
দেশের বর্তমান অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে এবং একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠায় বিএনপির মহিলা শাখার নেতাকর্মীদের সোচ্চার হয়ে রাজপথে নামার আহ্বান জানান দলটির মহাসচিব।
তিনি আরও বলেন, ‘এখন সময় এসেছে নিজেদের সংগঠিত করার। আমরা আমাদের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি এবং নির্যাতন ও কারাবাসের শিকার হচ্ছি। আমাদের মা-বোনেরা বারবার জেলে যাচ্ছেন, কিন্তু আমরা চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করতে পারিনি। এই চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করতে হলে আমাদের সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হবে। নিজেদের মধ্যে যে ছোটখাটো ভুল ও ভুল বোঝাবুঝি থাকে তা দূর করুন। আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে রাস্তায় নামতে হবে।'
আরও পড়ুন: জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ বিএনপির
এসময় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে তিনটি 'প্রহসনমূলক' জাতীয় নির্বাচন করে ক্ষমতাসীনরা দেশের নির্বাচনি ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এই বিএনপি নেতা বলেন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে সরকারকে বাধ্য করতে ৬৪ দলের সঙ্গে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে বিএনপি।
সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা এবং দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের দেশত্যাগ- সেনাবাহিনী ও পুলিশ বাহিনীর সুনাম ক্ষুণ্ন হওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করেন ফখরুল।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশকে আবারও তলাবিহীন ঝুড়ি বানিয়েছে আ. লীগ: মির্জা আব্বাস
আওয়ামী লীগের দুঃশাসনে জনগণ বিরক্ত: ফখরুল
আওয়ামী লীগ সরকারের ‘নিষ্ঠুর আচরণ ও নিষ্ঠুর দুঃশাসনে’ দেশের মানুষ বিরক্ত হয়ে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার (২৩ মে) এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন।
রাজধানীর বনানী থানায় দায়ের করা ৪টি ‘মিথ্যা মামলায়’ ঢাকা উত্তর মহানগর বিএনপি নেতা রেজাউল রহমান ফাহিমকে কারাগারে পাঠানোর বিষয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়ে এ বিবৃতি দেন তিনি।
বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, জনসমর্থনের অভাবে ৭ জানুয়ারির প্রহসনমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের পর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ আরও বেপরোয়া ও স্বৈরাচারী হয়ে উঠেছে।
বিএনপি নেতা বলেন, ‘স্বৈরাচারী শাসনের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য বিএনপি, এর সহযোগী সংগঠন এবং অন্যান্য বিরোধী দলগুলোর নেতা-কর্মীদের ওপর চরমভাবে দমন-পীড়ন শুরু হয়েছে।’
ফখরুল বলেন, ‘অবৈধ দখলদার’ আওয়ামী লীগ সরকারের মূল লক্ষ্য এখন বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো এবং আদালতকে ব্যবহার করে মিথ্যা মামলায় সাজা দেওয়া।
রেজাউল রহমান ফাহিমকে চারটি ‘মিথ্যা’ মামলায় জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো সরকারের সেই লক্ষ্যের অংশ বলে দাবি করেন তিনি।
ফখরুল বলেন, ‘সারাদেশে আদালতের মাধ্যমে জামিন নামঞ্জুর করে বিএনপি ও অন্যান্য বিরোধী দলের সদস্যদের কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় আমি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি।’
বিএনপি নেতা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘জনগণ সরকারের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। আওয়ামী ডামি সরকারের দীর্ঘদিন ধরে জনগণ ও বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ওপর অত্যাচার করে অবৈধ ক্ষমতা ভোগ করার স্বপ্ন কোনোদিন পূরণ হবে না।’
ফাহিমের বিরুদ্ধে দায়ের করা সব ‘মিথ্যা’ মামলা প্রত্যাহার করে অবিলম্বে তার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন মির্জা ফখরুল।
আজিজের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার জন্য দায়ী সরকার, সেনাবাহিনীর সুনাম কলঙ্কিত: ফখরুল
সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার জন্য সরকার দায়ী বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তিনি।
ফখরুল বলেন, একজন সাবেক সেনাপ্রধানের ওপর নিষেধাজ্ঞা জাতির জন্য অত্যন্ত লজ্জার বিষয়।
তিনি আরও বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার জন্য এই সরকার দায়ী। তারা সেনাবাহিনীকে অন্যায়ভাবে ব্যবহার করার চেষ্টা করায় এ ঘটনা ঘটেছে। তারা সেনাবাহিনীকে বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করত।’
জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে বর্তমান সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরানোর কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করেন বিএনপি মহাসচিব।
'উল্লেখযোগ্য দুর্নীতিতে' জড়িত থাকার অভিযোগে সোমবার সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ ও তার পরিবারের সদস্যদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর।
ফখরুল বলেন, ‘বিভিন্ন গণমাধ্যম বিশেষ করে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো জেনারেল আজিজের অনিয়ম নিয়ে প্রতিবেদন পরিবেশন করেছে। কিন্তু সরকার কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। জাতির বদনাম করার, তার মর্যাদা ও সম্মান হ্রাস করার অধিকার কারও নেই।’
আরও পড়ুন: জেনারেল আজিজের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে যা বললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
সেনাবাহিনীকে জাতির সবচেয়ে বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, শুধু সরকারের কারণে সেনাবাহিনীর সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে, এটা দেশের জনগণ মেনে নিতে পারে না।
র্যাবের কর্মকর্তাদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কথা উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সরকার এ থেকে কোনো শিক্ষা নেয়নি। বরং তাদের কয়েকজনকে আইজিপি পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। আমি জানি না এটা (নিষেধাজ্ঞা) কতটা প্রভাব ফেলবে।’
সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকতে দেশের অন্য শক্তিগুলো ব্যবহারের মাধ্যমে বলপ্রয়োগ করছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘এটা শুধু বাংলাদেশের জন্যই দুর্ভাগ্যজনক নয়, লজ্জা ও অস্বস্তিরও বটে।’
সরকার পরিকল্পিতভাবে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে ও দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ করেন ফখরুল।
উপজেলা নির্বাচন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘ভোট নিয়ে জনগণের আগ্রহ না থাকায় নির্বাচন নিয়ে তাদের মধ্যে কোনো উৎসাহ দেখছি না। নির্বাচনি ব্যবস্থার ওপর জনগণ আস্থা হারিয়ে ফেলায় কোথাও নির্বাচন নিয়ে জনগণের মধ্যে কোনো আলোচনা হচ্ছে না।’
আরও পড়ুন: উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় আরও ১৩ নেতাকে বহিষ্কার করল বিএনপি
সরকার বাংলাদেশকে পরনির্ভরশীল ও পরাধীন দেশে পরিণত করে জাতির আত্মাকে ধ্বংস করছে বলেও অভিযোগ করেন ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘তথাকথিত উন্নয়নের নামে ঋণের বোঝা ভারী হচ্ছে। সরকারের ব্যর্থতায় নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দামও বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে মানুষ কোথায় যাবে?'
সরকারদলীয় সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিমের মরদেহ উদ্ধারের বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘একজন সংসদ সদস্য যখন ভারতে গিয়ে নিখোঁজ হন, তখন বাংলাদেশ সরকার বা বন্ধুপ্রতিম দেশ ভারত এ বিষয়ে কোনো তথ্য দিতে পারেনি। তাহলে আমরা কী বিশ্বাস করব?’
ভারতে এমপির মৃত্যুর পেছনে কোনো ষড়যন্ত্র আছে কি না সে বিষয়েও তাদের দল নিশ্চিত নয় বলে জানান বিএনপি মহাসচিব।
আরও পড়ুন: এমপি আনোয়ারুলের হত্যাকারীরা বাংলাদেশি: ডিবি প্রধান
একাত্তরের স্বপ্ন এখন অধরা: মির্জা ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে জনগণ পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়লেও একাত্তরের স্বপ্ন এখন অধরা।
ফখরুল বলেন, বাঙালি ছাত্র, যুবক, কৃষক, শ্রমিক ও সৈনিকরা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়েছিল; স্বাধীন বাংলাদেশে মানুষের বাকস্বাধীনতা ও জনগণের সরকার এবং অর্থনৈতিক মুক্তি প্রতিষ্ঠা তাদের লক্ষ্য ছিল। কিন্তু দুঃখের বিষয় একাত্তরের স্বপ্ন এখন অধরা।
সোমবার দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বিএনপি আয়োজিত মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে তিনি এসব কথা লেন।
ফখরুল বলেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের আড়ালে দেশে একদলীয় শাসন কায়েম করেছে।
আরও পড়ুন: অবশেষে গাজা নিয়ে বিএনপির নীরবতা ভাঙলেন মির্জা ফখরুল
তিনি বলেন, 'জনগণের ম্যান্ডেটবিহীন সরকার গঠন করায় এবং ৭ জানুয়ারি একতরফা নির্বাচন দিয়ে দেশের মানুষকে শাসন করার তাদের কোনো সাংবিধানিক অধিকার নেই, যা আমাদের বিদেশি বন্ধুদের কাছেও গ্রহণযোগ্য ছিল না।’
তিনি দাবি করেন, বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডের ওপর নজর রাখতে সরকার আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। জনগণ যখন ক্ষমতাসীন দলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার চেষ্টা করে তখন তাদের দমন করার জন্য স্পাইওয়্যার ব্যবহার করে।
তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন সহজ নয়, কিন্তু আমরা ১৫ বছর ধরে তা চালিয়ে যাচ্ছি।’
গত দুই বছরে বিএনপির ২২ জন নেতা-কর্মী জীবন উৎসর্গ করেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপির হাজার হাজার নেতা-কর্মী কারাগারে রয়েছেন এবং তারা কারাগারে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, দেশে একটি স্বৈরাচারী সরকার ক্ষমতায় আছে, যেখানে নির্বাচন প্রহসনে পরিণত হয়েছে।
এছাড়াও বক্তব্য রাখেন বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা।
আরও পড়ুন: স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য সিঙ্গাপুর গেলেন মির্জা ফখরুল
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন চলবে: জেল থেকে বেরিয়ে ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিজয় না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের জনগণ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও ভোটাধিকারের জন্য শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাবে।
কারাগার থেকে বের হওয়ার পরপরই তিনি সাংবাদিকদের বলেন, 'জনগণের বিজয় অর্জন না হওয়া পর্যন্ত আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাব।’
আরও পড়ুন: প্রধান বিচারপতির বাসভবনে ভাঙচুরের মামলায় ফখরুল-খসরুর জামিন
বিএনপির এই নেতা দাবি করেন, ৭ জানুয়ারি একতরফা নির্বাচন করে সরকার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি বলেন, ‘বিএনপির কোনো ক্ষতি হয়নি, আন্দোলনেরও ক্ষতি হয়নি। ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।’
ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের মানুষ সব সময় গণতন্ত্র ও ভোটাধিকারের জন্য সংগ্রাম করেছে, সংগ্রাম করেছে। ‘ইনশাল্লাহ এই লড়াইয়ে তারা (জনগণ) জয়ী হবেই।’
এর আগে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে প্রায় গ্রেপ্তার হয়ে সাড়ে তিন মাস আটক থাকার পর জামিনে মুক্তি পান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, জামিনের আদেশ কেরাণীগঞ্জের কারা কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছানোর পর বিকাল ৩টা ৩৫ মিনিটে তারা কেরাণীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান।
জেলগেটে তাদের স্বাগত জানান দলের নেতাকর্মী ও দলের শীর্ষ দুই নেতার স্বজনরা।
ফখরুল ও খসরু কারা গেটে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে হাত নেড়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
আমীর খসরু বলেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ক্ষমতা দখল করেছে, কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে। ‘নির্বাচনে তারা জনগণের কাছে নৈতিকভাবে পরাজিত হয়েছে।’
তিনি বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। ‘গণতন্ত্র ও জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সরকার ফিরে না পাওয়া পর্যন্ত এটা অব্যাহত থাকবে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করে বাংলাদেশের জনগণ গণতন্ত্রের পক্ষে রায় দিয়েছে।
আরও পড়ুন: ফখরুল-খসরু জামিনে মুক্ত
নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকার বিএনপি নেতাকর্মীদের কারাগারে পাঠিয়েছে বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, রাজপথে সরকারবিরোধী আন্দোলন পরিচালনার জন্য বিএনপিসহ সব গণতন্ত্রপন্থী দলের মনোবল যথেষ্ট শক্তিশালী।
এর আগে বৃহস্পতিবার ঢাকার একটি আদালত গত বছরের ২৮ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশ চলার সময় প্রধান বিচারপতির বাসভবন ভাঙচুরের মামলায় মির্জা ফখরুল ও খসরুকে জামিন দেন আদালত।
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক ফয়সাল আতিক বিন কাদের আবেদনের শুনানি শেষে জামিন মঞ্জুর করেন।
গত ২৯ অক্টোবর ফখরুল, খসরুসহ বিএনপির ৫৯ নেতাকর্মীকে আসামি করে মামলা করে পুলিশ।
সমাবেশে সহিংসতার ঘটনায় ফখরুলের বিরুদ্ধে ১১টি ও খসরুর বিরুদ্ধে ১০টি মামলা হয়। গত ২৯ অক্টোবর ফখরুল ও ৩ নভেম্বর গুলশানের বাসা থেকে খসরুকে আটক করে পুলিশ। দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা সব মামলায় আদালত থেকে জামিন পেয়ে তাদের মুক্তির পথ সুগম হয়।
আরও পড়ুন: আজ মুক্তি পেতে পারেন ফখরুল-খসরু
মির্জা ফখরুলের মুক্তির দাবি ৬৮ জন বিশিষ্ট নাগরিকের
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন দেশের ৬৮ জন বিশিষ্ট নাগরিক।
এক যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেন, রাজনৈতিক সহিংসতা পরিহার এবং সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পথ তৈরিতে ফখরুলের মুক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
গত ২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষে এক পুলিশ কনস্টেবলসহ দুইজন নিহত হন। এর একদিন পর গুলশানের বাসা থেকে বিএনপি মহাসচিবকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পরে ঢাকা মহানগর হাকিম রাশিদুল আলম জামিন আবেদন নামঞ্জুর করলে তাকে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
আরও পড়ুন: চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে গেলেন মির্জা ফখরুল
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘জাতি এখন একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় আগ্রহী। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নিজেও এই অঙ্গীকারের কথা বলেছেন।’
এতে আরও বলা হয়, আগামী তিন মাসের মধ্যে নিরপেক্ষ সরকারের তত্ত্বাবধানে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার দাবি জোরালো হচ্ছে।
তারা বলেন, 'এই মুহূর্তে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে গ্রেপ্তারের ফলে শান্তিপূর্ণ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন প্রক্রিয়া বিপন্ন হয়েছে। আমরা দেখেছি, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে দৃঢ় বিশ্বাসী।’
তারা আরও বলেন, রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে ফখরুলের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। ‘আমরা বিশ্বাস করি, মির্জা ফখরুলের মুক্তি রাজনীতিতে সংঘাত পরিহার এবং গণতান্ত্রিক রীতিনীতি ফিরিয়ে আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।’
বিএনপি মহাসচিবকে অবিলম্বে মুক্তি দিয়ে সরকার শান্তিপূর্ণ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পথ সুগম করবে বলে আশা প্রকাশ করেন বিশিষ্ট নাগরিকরা।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন লেখক বদরুদ্দীন ওমর, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, অধ্যাপক আনোয়ারুল্লাহ চৌধুরী, অধ্যাপক আহমেদ কামাল, অধ্যাপক সাইদুর রহমান, অধ্যাপক এটিএম নুরুল আমিন, অধ্যাপক সাদরুল আমিন, অধ্যাপক আকমল হোসেন, অধ্যাপক এ এফ এম ইউসুফ হায়দার, অধ্যাপক তাজমেরী ইসলাম, অধ্যাপক চৌধুরী আবরার, অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী ও অধ্যাপক মোরশেদ হাসান খান।
বিবৃতিটি বিএনপির মিডিয়া সেল থেকে সাংবাদিকদের কাছে পাঠানো হয়েছিল। তবে, ৬৮ জন নাগরিক এতে স্বাক্ষর করেছেন কি না- সে বিষয় ইউএনবি স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি।
আরও পড়ুন: গুলশানের বাসা থেকে মির্জা ফখরুল আটক
মির্জা ফখরুল সিঙ্গাপুর থেকে দেশে ফিরেছেন
চূড়ান্ত আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত হোন, পেছনে ফিরে তাকানোর সময় নেই: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সোমবার (১৬ অক্টোবর) বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটাতে শিগগিরই চূড়ান্ত পর্যায়ের আন্দোলন শুরু করতে যাচ্ছে বিএনপি।
তরুণদের সমাবেশে তিনি রাজপথে সর্বশক্তি প্রয়োগ করে আন্দোলন সফল করতে সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য বিএনপির নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করেছে: ফখরুল
তিনি বলেন, ‘আমাদের একমাত্র লক্ষ্য বর্তমান সরকারের পতন নিশ্চিত করা এবং অপ্রতিরোধ্য আন্দোলনের মাধ্যমে আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর জন্য মুক্ত করা।’
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, বিএনপির যুব শাখার বিশাল সমাবেশ দুর্গাপূজার কয়েক দিনের মধ্যে শুরু হওয়া বিরোধী দলের চূড়ান্ত আন্দোলনকে শক্তিশালী করতে সহায়তা করবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে লড়াই করছি, কারণ আমাদের অনেক ভাই তাদের জীবন ও রক্ত উৎসর্গ করেছে, আমাদের অনেক মা-বোন নির্যাতিত হয়েছে, আমাদের অনেক শিশু তাদের বাবাকে হারিয়েছে এবং আমাদের অনেক মা তাদের সন্তানদের হারিয়েছে। সুতরাং, আমাদের পিছনে ফিরে তাকানোর সময় নেই।’
খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবিতে এবং সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচনসহ বিএনপির এক দফা দাবিতে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এই সমাবেশের আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী যুবদল।
বিজয়নগর থেকে ফকিরাপুল ক্রসিং পর্যন্ত চলা এই র্যালিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লাল-সবুজ টুপি পরিহিত হাজার হাজার যুবক-যুবতী অংশ নেন। তাদের অনেককে মাথায় সাদা কাফন পড়ে সমাবেশে বসে থাকতে দেখা গেছে।
তরুণদের বিশাল সমাবেশকে ‘ঐতিহাসিক’ আখ্যায়িত করে ফখরুল বলেন, এই সমাবেশ অবশ্যই দেশের জনগণকে নতুন উদ্যম ও আকাঙ্ক্ষা নিয়ে চূড়ান্ত আন্দোলনে অংশ নিতে অনুপ্রাণিত করবে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা এই ভয়ানক ফ্যাসিবাদী সরকারকে পরাজিত করতে সক্ষম হব, যারা আমাদের বুকের ওপর বড় পাথরের মতো বসে আছে।’
শর্ত প্রত্যাহার করলে বিএনপির সঙ্গে সংলাপের বিষয়ে ক্ষমতাসীন দলের মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার সাংবিধানিকভাবে বৈধ কিনা, আপনাদের (আওয়ামী লীগ) এটা প্রমাণ করতে হবে। আমি বলছি আপনারা সাংবিধানিকভাবে বৈধ নন।’
সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী অসাংবিধানিকভাবে এনে সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতায় রয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
বিএনপি নেতা বলেন, সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক প্রথমে দেশ ও জনগণের স্বার্থে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আরও দুটি জাতীয় নির্বাচন হতে পারে বলে একটি সংক্ষিপ্ত রায় দিয়েছিলেন।
এই আওয়ামী লীগ পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের আগেই জনগণকে সম্পূর্ণ প্রতারিত করে সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী পাস করেছে। আপনারা যেমন বলছেন, নির্বাচন সংবিধানের ভিত্তিতে হওয়া উচিত; তাই আপনাদেরকে (সরকারকে) প্রথমে পদত্যাগ করতে হবে, কারণ আপনারা অবৈধ।
সংবিধান লঙ্ঘন এবং জনগণকে ধোঁকা দিয়ে ক্ষমতায় থাকার জন্য জনগণ বর্তমান সরকারকে ক্ষমা করবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।
আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের মাধ্যমে ক্ষমতা ছাড়তে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব।
আরও পড়ুন: সঠিক পথে আন্দোলন, এবার ভোটার ছাড়া নির্বাচন হবে না: ফখরুল
পর্দার আড়ালে আসলে কিছুই হয়নি: ফখরুল